মেঘে ঢাকা চাঁদ পর্ব-২৫

0
1066

#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ২৫)
সায়লা সুলতানা লাকী

লাবন্য নিজের খরচের ব্যাপারে এখন বেশ হিসাবী হয়ে উঠেছে। আগের মতো বন্ধু বান্ধব নিয়ে যখন তখন ঘুরাঘুরি খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারটায় বেশ যত্নশীল হয়েগেছে আজকাল। তারচেয়েও বড় কথা এখন আর ওসবে তেমন একটা মনও টানে না। বন্ধুরা কোথাও বসে আড্ডা দেওয়ার কথা বললে ও রুশের কথা বলে এড়িয়ে চলে আসে। মাঝে মাঝে ভাবে ওর আম্মু কত সময় বলত “এসব আড্ডায় বসে সময় নষ্ট করিস না।” কিন্তু তখন এসব কোন কথাই কানে ঢুকতো না। অথচ এখন ওকে বাঁধা দেওয়ার কেউ নাই কিন্তু মনে হয় নিজেরেই ইচ্ছেগুলো মরে গেছে। এসবের জন্য একটুও মন কাঁদে না এখন ওর।

ক্লাস শেষ হতেই সরাসরি বাসায় চলে আসে। সবাই তখন ঘুমে থাকে তাই ও নিজেও খেয়ে কিছুটা সময় ঘুমায়। এখন বাসার সব কিছুই কেমন জানি টাইমিং মেনে চলে। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর প্রায় সময় রুশ ওর নানুর সাথে বসে লুডু খেলে। যে সময়টাতে আগে ও কোনো ডিভাইস নিয়ে বসে থাকতো এখন সে নানুর সাথে বসে খেলবে না হয় গল্প শুনবে। ওল্ড লেডি বেশ ডিসিপ্লিন মেনে চলেন তা লাবন্য ওর মায়ের কাছেই শুনেছে এখন খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হচ্ছে। নানুর আদর শাসন সবটাই যে এতটা মধুর তা আগে জানা ছিলো না। লাবন্যকে কড়া গলায় বলে দেওয়া হয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য। রুশের জন্য একজন আরবি শিক্ষক খোঁজ করছেন তিনি। গার্ডকে বলেছেন এই বিল্ডিংএ যদি কোন হুজুর আসেন আরবি পড়াতে তবে যেন তাকে জানানো হয়। এসব দেখে ও মনে অনেক শান্তি পায়। নিজের উপর দায়িত্বের ভারটা অনেকটা কমে গেছে বলে মনে হয় লাবন্যের।

দেখতে দেখতে নানি এ বাসায় এসেছেন তা প্রায় সপ্তাহ পার হয়ে গেল। এক শুক্রবার দুপুরে যখন তিনজন ডাইনিংএ বসে খাচ্ছিলো তখন নানির মোবাইলটা বেজে উঠল। কয়েকবার বাজার পর তাসলিমা মোবাইলটা এনে টেবিলে দিল। লাবন্য আড় চোখে একবার মোবাইল স্ক্রিনের উপর দেখল ওর বড় মামার নাম। নানি খুব বিরক্ত হয়েই কলটা রিসিভ করলেন

“হ্যালো”
“আম্মা আপনে কল ধরেন না কেন?”
“খাচ্ছিলাম। তুই জানিস এই টাইমটা দুপুরের খাওয়ার সময়।এই সময়তে কল দিলি কেন?”
“আম্মা দরকার বলেইতো দিলাম।”
“রাখ এখন আমি ফ্রী হয়ে কল দিব। খাওয়ার চেয়ে দরকার আর কিছু নাই।” বলেই কলটা কেটে দিলেন তিনি।

লাবন্য আগ বাড়িয়ে আর কিছু বলল না। কিন্তু রুশ ওর কথা কন্টিনিউ করল
“নানুমনি তুমি এত মজা করে বিরিয়ানি রান্না করেছো। দারুন হইছে৷ অনেক মজা।”
“নানি তুমি আবার কষ্ট করে রাঁধতে গেলা কেন? খালাই রাঁধতো।”
“তাসলিমাই রাঁধবে, আজ একটু দেখিয়ে দিলাম। আমার নানাভাই এত পছন্দ করে জানলেতো আমি আরও আগে তাকে রেঁধে খাওয়াতাম।” বলে একটু হেসে আবার খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন তিনি।

ছুটিরদিন বলে দুপুরে রুশ আবার নানুর পাশেই শুয়েছিলো গল্প শুনতে। লাবন্যও এসে যোগ দিল তাতে। তখনও কয়েকবার রিং বাজল মোবাইলে। তখনও নানি তেমন একটা গুরুত্ব দিল না সেখানে। লাবন্য একবার চাইলো নানি কে কিছু জিজ্ঞেস করতে। কিন্তু কেন জানি সাহস পেলো না। মনে মনে টের পেতে লাগল নানির উপর সবার চাপটার ধরন। আর নানি সেই চাপ খুব সবধানে এড়িয়ে যাচ্ছেন সন্তর্পণে ।

রাতে আটটার দিকে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বড় মামা এসে হাজির হলেন লাবন্যদের বাসায়। তার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে তিনি খুব বিরক্ত হয়ে আছেন। তাই আর ওরা দুইভাইবোন তার সামনে খুব একটা আসলো না। সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করে নিজেদের রুমে চলে গেল। এরপর শুরু হল মা আর ছেলের কথাবার্তা —

“আম্মা রেডি হোন। সপ্তাহের বেশি হয়েগেছে। আর কতদিন বেড়ায় মানুষ? অন্যের বাসায় আর কত দিন থাকবেন। চলেন বাসায় চলেন।”
” তোকে কে বলল যে আমি এখানে বেড়াতে এসেছি? এক কথায় বলতে পারিস এটা এখন আমার একটা ঠিকানা। যেমনটা তোরা বলিস বর্তমান ঠিকানা।”
” আম্মা বয়স হইছে আপনার? এখন এসব পাগলামি সাজে না আপনার? নিজের বাসা রেখে এখন মেয়ের বাসায় আপনার ঠিকানা বানানোর কোন দরকার নাই।”
” হুমম তাইতো, বয়স হয়েছো আমার। আমি যে এখন কোন কিছু না বুঝে ডিসিশন নেই নাই তা নিশ্চয়ই বুঝিস? আমার এখন ঠিক যেমনটা করার দরকার ঠিক তেমনটাই করছি। এখন নিশ্চয়ই তোরা ঠিক করে বলে দিবি না আমি কি করব আর কি না করব! ”
” এইটা কোনো কথা হল? আপনে এখন রেশমার সংসার তদারকি করবেন? মানুষ শুনলে কি বলবে আমাদের?”
” তোদের মানুষকে বলোতো আমার রেশমাকে ফিরিয়ে আনতে? পারবে? তাহলে আমি কেন সে সব মানুষের কথা শুনব?”
“আম্মা বিষয়টা একটু বোঝেন? আমাদের একটা মানসম্মান আছে? আপনে চাইলেই যা খুশি তা করতে পারেন না!”
” এই অযুহাত আর কত দেখাবি? এই এক সম্মান সম্মান করে তোরা আমার মেয়েটাকে দূর করছোস আমার কাছ থেকে, এতটাই দূর যে মেয়েটা ছটফট ছটফট করতে করতে মরেই গেল, কিছুই করতে পারলাম না। আর কি চাস তোরা আমার কাছে?
“ইন্না-লিল্লাহ, কি বলেন আম্মা? আমরা ওকে দূর করলাম কীভাবে? ওইতো বাসা ছাড়লো আমাদের মুখে চুনকালি লেপে।”
“আমার মেয়েটা নয়ত একটা ভুল করে ফেলেছিলো। তোরা বড় ভাইবোনগুলো তখন কি করেছিস? ছোটবোনের ভুলটাকে শুধরানোর কোন চেষ্টা করেছিলি? করিসনি। বরং মনে মনে খুশিই হয়েছিলি, ওর নাম নিশানাটা খুব সহজেই মিটিয়ে দিয়েছিলি মন থেকে। বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলি ওর দায়িত্ব থেকে। আমাকেও তখন আটকে ফেলেছিলি তোদের সিস্টেমে। আমিও তখন ভাবতাম থাক মেয়েটা দূরে আছে তবু ভালোতো আছে, বেঁচেতো আছে, সুখেতো আছে। কিন্তু কখনওই ওর ভেতর দেখার সুযোগ পাইনি।ও যতটুকু দেখিয়েছিল ততটুকুই দেখেছিলাম। কিন্তু ভুলটা ধরার সাথে সাথে যদি সংশোধনের চেষ্টা করতি তবে হয়ত আজ অন্যরকম একটা দিন দেখতে পেতাম। তোদেরতো কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নাই ওর মৃত্যুতে। যা হয়েছে তা আমার হয়েছে। আমি মা, আমি বেঁচে আছি অথচ আমার নাড়িছেড়া ধন এক বুক কষ্ট সহ্য করতে করতে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।এ যে কি কষ্ট, প্রতিনিয়ত কি যে কষ্ট আমার বুকটাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।তা কোনদিনও তোরা বুঝতে পারবি না। যদি না কোনদিন সেই কষ্টের মুখোমুখি দাঁড়াস , আমি দোয়া করি আমি যে কষ্ট পাচ্ছি তা যেনো আমার কোন সন্তানই না পায় তাদের জীবন দশায়।
– আপনার এখন বয়স হয়েছে আম্মা, এখন আপনি আরাম করবেন, এখন কি আপনার এইসব কাজ করার সময়?
– বাবারে এখানে আমি নতুন কিছু করছি না। বাসায় যা করতাম এখানেও তাই করছি শুধু পাত্রটা ভিন্ন। তোদেরটা যখন করতাম তখন তোদের চোখে পড়তো না কেন তাই বুঝলাম না। আমি নতুন কোন দায়িত্ব নেই নি যে আমার কষ্ট হবে!
” আপনার চিকিৎসা, ডাক্তার এগুলো কে দেখাবে? বাসায় আপনে ওদের হেল্প করতেন, ওরাও আপনাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াতো। এখানে থাকলে কে আপনাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করবে?”
“হুমম তাইতো, আমি করতাম বলে ওরাও প্রতিদান দিত। জিনিসটাতো আগে খেয়াল করিনি। আমি ভাবতাম ওরা বুঝি ভালোবেসে করতো। ভালো জিনিসটা বুঝিয়ে দিলিতো! যা আমাকে নিয়ে তোদের আর ভাবতে হবে না। আমি আমারটা দেখে নিতে পারবো। তোদেরকে দায় মুক্ত করলাম।”
“সত্যি সত্যিই দায় মুক্ত করলেন? রেশমার ছেলেমেয়ে এখন আপনার কাছে বেশি বড় হয়ে গেল? আমর সব তুচ্ছ! ”
“আমিতো কাউকে তুচ্ছ বলিনি। আমি শুধু প্রয়োজন বুঝি। দায়িত্ব বুঝি। এতদিন তোমাদেরকে শ্রম দিয়েছি এখন না হয় বাকিজীবনটা যাকে এতদিন বঞ্চিত করেছি তার জন্য ব্যয় করবো!”
” আম্মা বুঝে বলেন, এটা কি আপনার শেষ কথা”
” হুমম, মনে হয় এটাই আমার শেষ কথা।”
“তাহলে থাকেন আপনে আপনার রেশমার সংসারে। আমাদের আর কখনও ডাকবেন না। রাত বিরাতে অসুখ বিসুখ হলেও না। আপনাকে নিয়ে হাসপাতাল ডাক্তারখানা কোনটাতে যেতেই ডাকবেন না। থাকেন আপনে। বলে উঠে গেলেন তিনি।”
লাবন্যের নানি আর থামালেন না, আর কোন কথাও বললেন না। ঠান্ডা মাথায় তাকে বিদায় জানিয়ে নিজের রুমে গিয়ে চুপচাপ শুয়ে রইলেন।

লাবন্য সবটাই শুনলো কিন্তু তাদের মা ছেলের মাঝখানে কোন কথা বলতে আসল না। নানির জন্য মনটা কেমন জানি করে উঠল। ওদের জন্য কতটা যুদ্ধ করতে হচ্ছে তার সেই কথা ভেবে।

রাতে খেতে এসে দেখল নানি এখনও আসেনি টেবিলে তাই লাবন্য নিজেই গেল ডাকতে। জায়নামাজে বসেছিলেন তিনি, লাবন্য আস্তে করে তার পাশে গিয়ে বসল।

“নানি আসো, খাবে না?”
“হুমম,খাবোতো অবশ্যই।”
“তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের জন্য। ”
“তোদের জন্য কথাটা ঠিক না৷ আমার নিজের মনের জন্য। আমার মন যা করতে চাইলো আমি তাই করছি এখন বুঝলি।আগে সাহস করে আগাতে পারতাম না। মনে হত পিছুটানটা বেশি ছিল। এখন চেষ্টা করছি পারার।”
“মামার অনেক কটু কথা শুনতে হল তোমার। তোমার উপর বুঝতে পারছি বড়ধরনের একটা ঝড় বইছে।”
“যে কোন পরিবর্তনের সময় এমনটা হয়। স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটা খুব কষ্টের। কিন্তু তোর লক্ষ্য যদি থাকে বিপরীতে তাহলে ওই কষ্টটাতো সহ্য করতেই হবে। না হলে লক্ষ্যে পৌছাবি কীভাবে?”

“তুমি বিপরীতে ছুটছো, এমনটা সাহস কিন্তু সবাই করে না।”
“তারা ভেতরে ভেতরে জ্বলে পুড়ে মরে না ছুটতে পেরে। একটা মায়ের জন্য সব সন্তান সমান। সবার জন্যই তার মন কাঁদে। কিন্তু যে সন্তান বেশি দুর্বল তার জন্য মনটা বেশি পুড়ে। কিন্তু সবলরা তা মেনে নিতে চায় না। সবাই সবার ভাগেরটা বুঝে নিতে চায় কড়ায়গণ্ডায়। ”

“মামার কথায় কষ্ট পাচ্ছো? মামা রেগে আছেন তাই এভাবে বলছেন।”
“হঠাৎ করেই মনে হল আমি ব্যর্থ। লিখন ওর মায়ের জন্য নিজের সন্তানদের নিরাপত্তা ভুলে গেল। রেশমাকে ভুলে গেল। এতকিছু ঘটে গেল ওর জীবনে তবুও মা’কে ছাড়লো না। মায়ের সাথেই আছে এখনও। আর আমার ছেলেমেয়েগুলা শুধু নিজেদের স্বার্থ, নিজেদের ইগোকেই দেখল আমার কথা, ওদের মায়ের মনটাকে বুঝল না একবারও।”
“আরে ধুর নানি! তুমি কিসের মধ্যে কি যে তুলে আনো, বুঝি না। লিখন সাহেব যা করছেন তা সম্পূর্ণটাই নিজের জন্য করছেন, মা হচ্ছে গিয়ে তার একটা সাইনবোর্ড। সবার সিমপ্যাথী পাওয়ার ট্রাম কার্ড। যদি মায়ের জন্য টান থাকতো তবে সে নিজেই মায়ের সেবাযত্ন করতো।অন্য কোন মহিলার ঘাড়ে ফেলতো না। মাকে সে রাখে , কিন্তু করেছে কোনদিন মায়ের কোন কাজ? করেনি, সব আমার আম্মু করেছে। এখন নতুন বিয়ে করেছে যাতে নতুন জন তার মায়ের সেবা করতে পারে। এসবই হলো মানুষের আই ওয়াস করা। এছাড়া আর কিছুই না। যত্তসব ভন্ডামি। আমার আম্মু তার জীবনটা পুরাই ধোকার মধ্যে কাটিয়ে গেছে, বুঝলা।”

লাবন্যের কথার স্বরে ওর নানি স্তব্ধ হয় গেলেন। ওর মনে ওর আব্বুর প্রতি ক্ষোভের পরিমানটা টের পেয়ে মনে হল নিজেই থমকে গেলেন। এই মেয়ের মন থেকে এই ক্ষোভ আদৌও কি সরানো সম্ভব? এতটা ক্ষোভ নিয়ে ও সামনের দিনগুলো সুস্থ মন মানসিকতা নিয়ে চলবে কীভাবে? এসব চিন্তা যেন আরও পোক্ত হয়ে গেঁথে গেল তার মনে।

সকালে নাস্তা শেষ করে বের হবে ঠিক তখনই রুশের ক্লাস টিচারের কল এল রেশমার নাম্বারে। মোবাইলটা লাবন্যের টেবিলেই রাখা। লাবন্য কলটা রিসিভ করে তার সাথে কথা বলল। রুম থেকে বের হয়ে এসে রুশকে ডাকতে লাগল।

রুশও ব্যাগ নিয়ে রুম বের হল স্কুলে যাওয়ার জন্য।

“কিরে রুশ গত সপ্তাহে পেরেন্টস মিটিং ছিল। মিস তোকে বারবার বলছে আমাদেরকে ইনফর্ম করতে, তুই নাকি করিসনি। গতকালও তুই বলছিস আমাদের বলতে ভুলে গেছিস। ঘটনাটা কি বলতো?”

“আপু মিস বারবার পেরেন্টসকে ইনফর্ম করতে বলছেন। আমারতো আম্মু নাই আর…… আমি কালে ইনফর্ম করবো? এসব কেন মিস বোঝে না।

“হুমম আম্মু নাই তাতে কি আমরা আছি না?”

“তুমিতো আর আম্মু না।”

“আমি তো আছি। আমি আম্মু না তবে আমি গ্রেন্ড মাদার। তাই না? আমাকে বললেইতো হত। আচ্ছা অসুবিধা নাই আমি আজ ছুটির সময় মিসের সাথে দেখা করে আসব। এরা নিয়ে এখন আর কথা নাই বলি।” বলে দুজনকে নিয়েই বের হয়ে গেল।

সারারাস্তায় দেখলেন রৌশন কেমন মুখচোখ ফুলিয়ে বসে রইল। বুঝলেন ওকে বারবার আম্মু আব্বুর কথা বলায় ও বেশ বিরক্ত হয়েছে মিসের উপর।

ছুটির পর মিসের সাথে দেখা করে বিস্তারিত সবটা জেনে আসলেন রুশের প্রোগ্রেস সম্পর্কে সাথে ওর আব্বুর নাম্বারটাও দিয়ে আসলেন বললেন কখনও দরকার হলে তাকে নক করতে, তাহলে তিনি আসবেন। রৌশনের আম্মু নাই কিন্তু আব্বু আছেন। তিনি ছেলের যেকোনো প্রয়োজনে ডাকলেই আসবেন। আর যদি তিনি আসতে না পারেন তবে রৌশনের প্রতিনিধি হিসাবে ওর নানি থাকবেন সব মিটিংএ। সাথে এটাও বলে আসলেন বেশ কৌশল করে যেন কেউ কখনও ওকে সরাসরি ওর আম্মু আব্বুকে নিয়ে কোন প্রশ্ন না করে। যেন ওর সামনে কেউ কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি না করে । যাতে ওর মানসিক অশান্তি হয়। এটা এক ধরনের টর্চার, যা একেবারে অনুচিত কোন বাচ্চার সাথে করা তার অগোচরে ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here