মেঘে_ঢাকা_চাঁদ পর্ব ৪৫

0
1116

#মেঘে_ঢাকা_চাঁদ (পর্ব ৪৫)
সায়লা সুলতানা লাকী

গ্রাম থেকে সত্যি সত্যিই দুজন সাহায্যকারী আনা হল হিমেলদের বাসায়। এদের একজনের কাজ হল শুধু রেহেনা বেগমকে দেখাশোনা করা। নিয়মিত থেরাপি পড়ায় রেহেনা বেগম কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেন অল্প সময়ের মধ্যেই। এখন হাত দিয়ে কোনো কিছু শক্ত ভাবে ধরতে পারছেন তিনি এসব । তার অবস্থার উন্নতি দেখে লাবন্যের নানির মন ভালো হয়ে গেল। সুমুর বরের সাথে কথা বলে এমনিতেই মনটা অনেক হালকা হয়েছিলো যখন জেনে ছিলেন যে সুমুর বরই সমস্যাটার সমাধান খুঁজে তা মিটানোর চেষ্টা করছে। এদিকে জামাইয়ের চেষ্টা কতটুকু কাজ করছে তা জানার জন্য রেহেনা বেগমের ছটফটানিটা যতটুকু বোঝা যায় তা লাবন্যের নানির মধ্যে দেখা যায় না। আসলে নানি প্রচন্ড রকমের শক্ত হওয়ায় তার টেনশন বাহির থেকে বোঝা যায় না। কিছু দিন পর জানা গেল, একটা কর্পোরেট অফিসের রিসিপশনে সুমুর একটা চাকরি যোগাড় করেছে ওর বর। এখন আর সুমু বাসায় থাকছে না সবসময়। তাই ওকে আর অন্যের কাজ করতে হয় না। উল্টো ওর বাচ্চাকেও সুমুর শাশুড়িকেই দেখতে হবে তার মেয়ের বাচ্চাদের সাথে। এখন শুধু অপেক্ষা সুমু নতুন চাকরিতে কত দ্রুত অভ্যস্ত হতে পারে তা দেখার জন্য । এমনিতে নতুন চাকরি পেয়ে সুমু বেশ খুশি। নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করছে বলে বেড়াচ্ছে সবার কাছে।

হোমায়রা প্রতিদিনই ভিডিও কল দিয়ে মায়ের সাথে কথা বলে দিনের একটা নিদিষ্ট সময়ে। কি কথা বলে তা কখনও লাবন্য বা ওর নানি শুনতে চায় না তাই কখনও আড়ি পাতে না শোনার জন্য। কিন্তু নাজমুল সাহেব মাঝে মধ্যেই উচ্চ স্বরেই তার বিরক্তির জানান দেন কিছু কিছু বিষয়ে কথা বলার সময়। একদিন বেশ রাগ নিয়েই বললেন “এখনি সময় আছে এসব কানপড়া নেওয়া ছাড়ো, না হলে একেবারে একা হয়ে পরবে। মেয়েরা নিজের সংসার নিয়ে পরে আছে দূর দূরন্তে। তোমার প্রয়োজনে ওদের ডাকলেও কাছে পাবে না। আর ওদের কথায় সব দায়িত্ব কাজের মানুষের উপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তেও থাকতে পারবে না। নিজের কষ্ট নিজেকেই ভোগতে হবে। তাই সবার মতো তুমিও তোমার আখের গোছাও। যারা কানপড়া দিয়ে দিয়ে কানকে ভারি করছে তারা ওই কাজ ছাড়া আর কোন উপকারেই আসতে পারবে না জীবনে। এটা অন্তত বোঝার বয়স ও সময় দুটোই পেয়েছো। কারো কথায় নিজোর পায়ে নিজে কুঁড়াল মেরো না। নিজের ভালো বুঝতে শিখো। কার কথা শুনবা আর কাকে এভোয়ড করবা তা ঠিক করো সময় থাকতেই।” ইনডাইরেক্টলি কথা গুলো বেশ কয়েকবার বলেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন রেহেনা বেগম কে। শেষ বার তিনি আর একটু বেশি রেগে গিয়ে বলে বসলেন “বাসার ওয়াই ফাইটাই যত নষ্টের নারোদ, ভাবছি সংসারের আগাম শান্তির জন্য এটা বন্ধ করে দিব। না থাকবে বাঁশ আর না বাঁজবে বাশুরী। টাকা খরচ করে যখন কথা বলতে হবে তখন কথার ও হিসাব থাকবে।এত যন্ত্র মন্ত্র তখন আর চলবে না। ”

হিমেল বারাবারই এসব বিষয়ে চুপ থাকে। বাবাকে বা মা’কে কাউকেই কিছু বলে না। লাবন্য অবশ্য এসব কথা যখন হয় তখন খুব অস্বস্তিবোধ করে। ওর সাথে ওর নানিও খুব সমস্যায় পড়েন বলে চেহারা জানান দেয় তার। তবে আর যাই হোক নাজমুল সাহেবের কথায় একটু একটু ফল পেতে দেখা গেল । মাঝে মাঝেই শোনা যায় রেহেনা বেগম কথা বলতে বলতে একটু রেগে যান মেয়ের সাথে , উচ্চস্বরে বলে উঠেন “তোর এতসব কথা বলার কি দরকার? কে কি করবে তা কি তোকে জিজ্ঞেস করে করবে নাকি? আমার সংসারের জন্য কি তোর কাছ থেকে বুদ্ধি নিতে হবে? তুই চুপ থাক। নিজেরটা দেখ। এদিকে তাকাতে হবে না।”
লাবন্য তখন চুপ চাপ বসে হাসে। ওর কাছে কেন জানি বেশ মজা লাগে। মনের অজান্তেই নিজেকে প্রশ্ন করে “আম্মু বেঁচে থাকলে কি আমিও এমনটাই করতাম? কি জানি হয়তো করতাম হয়তোবা না।”

বেশ কিছুদিন এভাবে চলার পর একটা সময় আবার ওরা নিজের বাসায় ফিরে আসে। রুশের কান্নাকাটিতে ওর নানুমনি মনে হল একটু বেশিই নরম হয়ে গিয়েছিলেন তাই হয়তো হিমেলের পীড়াপীড়ি সত্বেও লাবন্যদের বাসায় ফিরে আসেন তিনি। ওখানে থাকার সময়টাতে তিনি খুব একটা সাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না। সবসময় বড় জামাইয়ের সামনে কেমন একটা সংকোচবোধ হত। যা লিখনের সামনে হয় না। লিখন কেমন জানি একটা মানুষ।সবসময় একটু বেশি গা ঘেঁষা টাইপের। সব বিষয় নিয়েই তার শরণাপন্ন হয়। বুদ্ধি পরামর্শ করে।অন্তত তার একটা মতামতের জন্য অপেক্ষা করে। প্রচন্ড রাগ,ঘৃণা, ক্ষোভ থাকা সত্তেও ওকে কখনও আম্মা বলে না ডাকতে চাপ দিতে পারেন নাই তিনি।

আজ ক’দিন ধরেই ঘুমটা কম হয় লাবন্যের। লিখন অফিস থেকে আগে এ বাসায় আসে, রুশের সাথে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে তারপর রাত দশটা কিংবা এগারোতে বাসা থেকে বের হয়। লিখন যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ লাবন্য আর নিজের রুম থেকে বের হয় না। ওর আব্বু যাওয়ার পর ও খাওয়া দাওয়া করে রুশের পড়া নিয়ে বসে। ইদানীং রুশও বেশ মনমতলবি করে পড়া নিয়ে। সারাক্ষন তার খেলা, আর এই খেলা নিয়েই যত বায়না। টিভিতে যত রকমের ক্রিকেট খেলা হবে তার সবটাই সে দেখবে। তাই পড়াটা ফাঁকেঝোকে বাকি থেকে যায়। সেজন্য নানির কড়া নির্দেশ দিলেন রাতে মিনিমাম এক ঘণ্টা রুশকে নিয়ে বসতেই হবে লাবন্যকে। রুশের পড়া হয় আর না হয় তবে এই বসাতে ওদের দুই ভাইবোনের বন্ধনটা কিন্তু আরও দৃঢ় হচ্ছে ধীরে ধীরে । দুজন তখন সারাদিনের ঘটে যাওয়া নানান সুখ দুঃখ ভাগ করে দুজনের সাথে। কাজটা যদিও লাবন্য নিজ থেকেও করত চাইতো কিন্তু করি করি করে আর করা হয়ে উঠতো না। নানির কঠিন নির্দেশটা পেয়ে এখন এটা অনিবার্য হয়ে গেল, আর তার সাথে নানির প্রতি শ্রদ্ধাটা আরও বেড়ে গেল।
সময় নিয়ে নানির সাথে বসে একটু টিভি ওয়াচ করে ওরা দুইভাইবোন যা কখনোই ওর আম্মুর সাথে করতো না। এখন চেষ্টা করে বাহিরে সময় না দিয়ে বাসায় নানিকে পর্যাপ্ত সময় দিতে। এসবের কারনে ওদের নানিও বেশ আনন্দিত। নিজের বাড়িতে সবার কাজেই সে কাজি থাকতেন কিন্তু তার বেলায় কেউ কাছে থাকতো না৷ সবাই সবার দায়িত্বে কি পরে তার হিসাব নিয়েই দরকষাকষিতে ব্যস্ত থাকতো বলে নানির মনে হত। এখানে সেই দরকষাকষির ঝামেলাটা উপলব্ধি হয় না। এটাই যেনো তার জন্য অনেক বড় শান্তি।

হিমেল ওর মায়ের অসুস্থতার আগে যে একটু রাগ রাগ অবস্থা বিরাজ করছিলো ওর মায়ের সাথে তা এখন আর নাই। অফিস থেকে এসেই মায়ের রুমে বাকিটা সময় কাটায়। মাঝে মাঝে মায়ের সাথে বসে লুডু খেলে। এ নিয়ে রেহেনা বেগমের আনন্দ যেনো আর ধরে না। মেয়েদের সাথে মোবাইল কলে কথা বলতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন এই সব গল্প শোনাতে যেয়ে।

এই সবের মধ্যে হোমায়রা একসময় বলে বসে
“আম্মু ছেলে যখন এখন তোমার উপর এত তুষ্ট তখন সুযোগটা কাজে লাগাও। সুন্দরী কোন পাত্রী ধরে বিয়েটা করিয়ে দাও। ওর মাথা থেকে ওর ওই বন্য নামের ভুতটা নামিয়ে দাও। না হলে এই ভুত তোমার ঘাড় মটকাবে দেখো!”

“তাই নাকি? তুই জানিসতো ভালো মতো? শুধু ঘাড়টাই মটকাবে? আর কিছু করবে না?” রেহেনা বেগম একটু ব্যঙ্গ করেই প্রশ্নগুলো করেন বড় মেয়েকে। কারন তিনি এখন আর তেমনটা মনে করেন না। অসুস্থ হলে প্রকৃত আপনজন চেনা যায় কথাটা একেবারে সত্য, তা তিনি জানেন।

“আম্মু তুমি আসলে এখন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছো দিনেদিনে! কেমন সব আজব আচরণ করো আমার সাথে। তুমি নিজে….”

“শোন আমার কি মনে হয় জানিস? আমার মনে হয় হিমুর মাথার ওই বন্য ভুতটা একটু একটু করে আমার মাথাটাকেও কব্জা করেছে, তোর আব্বুরটাও। সবাই ওই বন্য ভুতের আছরে আছি, বুঝলি? বলতো এখন কি করি?”

“কি সাংঘাতিক? আম্মু এসব কি বলছো তুমি তাও আবার হাসছো? তোমার দুর্দিনতো তাহলে শুরু হল বলে মনে হচ্ছে । ”

“হুমম আমার দুর্দিনে কি তুই পাশে থাকবি নাকি গা ঢাকা দিবি? বেশি ভয় পেলে গা ঢাকা দিতে পারিস, আমি খুঁজবো না একটুও।” কথাটা একটু শক্ত গলাতেই বললেন রেহেনা বেগম, ঠিক যেনো বুঝিয়ে দিলেন তার বিরক্তিটাকে।

সেদিনের পর বেশ কয়েকদিন আর হোমায়রা কল দেয়নি। এর পর যখন দিয়েছে তখন নিজের দুই একটা কথা বলে রেখে দেয়। সুমু চাকরিতে ঢুকে একটু বেশিই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, খুব একটা সময় পায় না মায়ের সাথে গল্প করার জন্য ।

হিমেল সেদিন পেছনে দাঁড়িয়ে মায়ের আর হোমার কথপোকথনগুলো শুনেছিলো শেষ পর্যন্ত। কথাগুলোতে কি যে এক শান্তি লুকিয়ে ছিল তা ও বুঝাতে পারবে না কাউকে তবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলো পুরোপুরি। সে রাতেই ও ওর বন্যকে কল দিয়ে সেই শান্তির পরশ ছুঁয়ে দিয়েছিলো ওর অন্তরে।
কথা বলতে বলতে একটা সময় লাবন্য কেঁদে ফেলে। হিমেলকে বলে
“জানো খালামনি একদিন এমন হবে তা সবসময়ই আম্মুর বিশ্বাস ছিলো। আম্মু বলতো খালামনির মনটা খুব নরম। তিনি মানুষকে ভালোবাসতে জানেন।সে নিশ্চয়ই একটা সময় আমাকে আপন করে নিবেন, আমাকে ভালোবাসবেন। আজ তোমার কথাগুলো শুনে বারবার আম্মুর কথাই মনে পড়ছে। আম্মু বেঁচে থাকলে আমাকে ডেকে বলতো দেখ লাভ আমি বলছিলাম না আপা তোকে একটা সময় গিয়ে মেনে নিবে। দেখেছিস তা সত্য হল।”

“কাঁদিস না, শুধু খালামনির জন্য দোয়া কর। দোয়া করা ছাড়াতো আর কিছু করার নাই। এভাবে খালামনি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে তা কে জানতো? আল্লাহর ইচ্ছা, তিনি যা ভালো মনে করেন তাই করেন। আমারা মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই ভালো মন্দ সামনে থেকে দেখেও বুঝাতে পারি না !”

“মাঝে মাঝে ভাবি, খুব বেশি কি চেয়েছিলাম আল্লাহর কাছে? ”
“উঁহু, আল্লাহতো চাইতেই বলেছেন সেক্ষেত্রে কম আর বেশি কি?”
“তবে কেন আমার জীবনটা হঠাৎ করেই এমন এলোমেলো হয়ে গেল? শান্ত এই জীবনটা কেন এমন অশান্ত হয়ে ফুঁসে উঠল? কেন আমার সাজানো গোছানো স্বপ্নগুলো এতসব বিভৎস সময় পার করল? এমনতো হওয়ার কথা ছিলো না, ছিলো কি?”

“আবার সব অশান্ত গুলোকে শান্ত করে জমে থাকা ধূলাবালি ধুয়েমুছে নতুন করে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য এমনটা হয়ে ছিলো মনে কর। এখন সব ঝকঝকে চকচকে হবে তোর স্বপ্ন গুলো। যার ঝলকানিতে, যার আলোতে সব অন্ধকার দূর হবে। সাথে আমিও আলোকিত হব, কি বলিস এটা মন্দ কি?”

“কিন্তু সেখানে যে আমার আম্মু নামের পুতুলটাই নাই। আম্মু ছাড়া সে স্বপ্ন যে অসম্পূর্ণই থেকে যাবে।”
“কিছু স্বপ্ন অসম্পূর্ণকে পূর্ণ বলে মেনে নিতে হয়। এভাবেই মেনে নেয় মানুষ, এরপর একটা সময় গেলে দেখে স্বপ্নটা আর অসম্পূর্ণ নাই কেউ না কেউ এসে তা পূর্ণ করে দিয়েছে। এটাই জীবন, এভাবে চলে । তুই আর আমি এর বাহিরে না। ভালোবাসা, আর বিশ্বাস দিয়ে নতুন করে সাজাবি এখন তোর স্বপ্ন যেখানে আমি নিশ্চিন্ত মনে ডুব দিতে পারব।”

“তুমি যেনো কেমন করে কথা বলো, আমি একটা ঘোরের মধ্যে চলে যাই।”
“ভালোবাসিস তা বললেই হয়, এত ঢং করিস কেন?”
“এই শুরু হল তোমার…”
“আমি কিছু চাইলেই তুই…”

“ভালোবাসা হয় না কভু তোমার আমার কথায়।
ভালোবাসা বসত করে ভালো মন পায় যেথায়।”
“উঁহু হলো না।”
“মানে?”
“ভালোবাসা হয় না কভু তোর আর আমার কথায়।
ভালোবাসা বসত করে হেথায়
যেথায় মনের সাথে মনের মিলন দেখতে পায়।”
“ওয়াও, গুরু ওয়াও।” দারুণ বলেছোতো বলে লাবন্য হিহিহি করে হেসে উঠল।
হিমেল চুপচাপ ওর বন্যের বাঁধ ভাঙা সেই হাসি মন ভরে শুনেছিল।

এদিকে নাজমুল সাহেব নিজের থেকেই লিখনের সাথে যোগাযোগ করলেন একদিন। কলটা দিতেই লিখন রিসিভ করল
“হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম ভাই। ”
“ওয়ালাইকুম আস সালাম, কেমন আছো?”
“আলহামদুলিল্লাহ, ভাই আপনি আমাকে কল দিয়েছেন, আমিতো নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না। ভাই বাসার সবাই ভালোতো? আপনি ভালো আছেনতো?”
“আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সবাই ভালো, আর আরও ভালো থাকতে চাচ্ছি বলেই কলটা দিলাম। একটা জরুরি বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম তোমার সাথে ।”
“জি ভাই বলেন, বলেন ভাই আমি শুনছি।”
“সব কথা মোবাইলেতো হয় না। সাক্ষাতে বলতে হবে। তুমি বাসায় থাকো কখন? আমরা আসব কথা বলতে।”
“ভাই আপনি যখন আসতে চান বলেন আমি তখনই থাকবো বাসায়। ”
“ঠিক আছে সামনের শুক্রবার বিকেলে আসব।”
“ভাই বিকেলে কেন সকালেই আসেন। দুপুরে একসাথে খাব। আমাদের শাশুড়ি আম্মা খুব ভালো বিরিয়ানি রান্না করেন। একসাথে বসে খাবো।”

“না না না তাকে কষ্ট দেওয়ার দরকার নাই। আমরা বিকেলেই আসব, তুমি থেকো বাসায় তখন।” আর বিশেষ কিছু বললেন না। কলটা কেটে দিলেন নাজমুল সাহেব। কিন্তু অপরপ্রান্তে লিখনের মনে নানান রকম চিন্তার উদয় হতে শুরু করল তিনি বাসায় আসবেন শুনে, কখনও মনে হতে লাগল শুভ কিছুই হবে, যেমনটা ওর মেয়ে চায় তেমনটা। আবার মনে হতে লাগল, যেহেতু আপা বা তার মেয়েরা রাজি না এই সম্পর্ক নিয়ে তাই হয়তো কঠিন কিছু বলবে এসে। আড যদি ঘটনা তাই হয় তখন কীভাবে সামাল দিবে এই পরিস্থিতি? লাবুকে কীভাবে বোঝাবে? ওর মনের অবস্থা তখন কেমন হবে? এক আঘাত এখনও থকথকে আছে তার উপর আরেকটা বড় আঘাত কি মেয়েটা নিতে পারবে?এমন দোটানায় বেশিক্ষণ থাকতে পারল না নাজমুল সাহেবের কথাগুলো লাবন্যের নানিকে জানিয়ে দিল সাথে সাথে। কিন্তু তাতেও শান্তি মিলল না। সন্ধ্যা হতেই বাসায় ফিরলো বিষয়টা নিয়ে তার সাথে কথা বলার জন্য। লিখনকে দেখেই লাবন্যের নানি বুঝলেন ওর মনের অবস্থাটা। নামাজ পড়ে এই সময়তে কোরআন পড়েন তিনি বেশ কিছুর সময় নিয়ে কিন্তু আজ আর তা করলেন না। কয়েকপাতা পড়েই উঠে গেলেন।

চলবে

**** আসসালামু আলাইকুম, আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই গল্পের পাঠকদের কাছে। পারিবারিক কারনে এই পর্বটা দিতে দেরি করলাম। আসলে আমি ঢাকার বাহিরে ছিলাম, সেখানে নেটওয়ার্ক খুবই দূর্বল ছিলো। লিখা এবং পোস্ট করা অসম্ভব ছিলো। অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্বের জন্য ক্ষমা করবেন। ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here