মোহঘোর”পর্বঃ১৭

0
511

#মোহঘোর
#পর্বঃ১৭
লেখনীতেঃতাজরিয়ান খান তানভি

হঠাৎ মেয়েলী চিৎকারে বিভ্রান্ত হয় ইনজাদ। ঘোর কেটে তাকাতেই দেখে একজন কাস্টমার স্টাফকে বকাবকি করে যাচ্ছে। ইনজাদ কথা বলছিল মানানের সাথে। কথা থামিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। একজন সুশ্রী নারীর এমন ব্যবহারে কিঞ্চিৎ হকচকিয়ে যায় ইনজাদ। ঘটনার বিস্তৃত জানতেই অবাক হয় সে। তিমনের সাথে ভদ্রমহিলার বাচ্চার ধাক্কা লেগে খাবারগুলো বাচ্চাটির গায়ে মেখে যায়। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হোন ভদ্রমহিলা। ইনজাদ সচেতন চোখে তাকাল তিমনের দিকে। নব্য যুবা ছেলেটির শরীর জুড়ে কম্পন। ইনজাদের দৃষ্টিগোচর হলো তা। তিমন কাঁপছে। ভয়ে তার চোখে টলটল জল। ঝিমুনি দিয়ে উঠছে শরীর। ভদ্রমহিলা গলা ফেড়ে বললেন—

” এইটা কী ধরনের সার্ভিস আপনাদের? এসব কেয়ারলেস ছেলেদের কেনো রাখেন আপনারা? দেখুন তো কী অবস্থা হয়েছে আমার বাচ্চাটার।”

চোখ উপচে কান্না এলো তিমনের। থরথরিয়ে যাচ্ছে সে। ইনজাদ সচল চোখে তাকাল। দৃষ্টি স্থির করে রইল। ছেলেটির মুখ লালিমায় রাঙানো। ভয়ে যেন প্রাণপাখি পাখা ঝাঁপটাচ্ছে! রেস্তোরাঁর অন্য টেবিলে বসা কাস্টমাররা উদগ্রীব হয়ে চেয়ে আছে। কৌতূহলের ভরা যমুনা তাদের চোখে। বাচ্চাটি মায়ের পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে মৃদু শব্দে কেঁদে যাচ্ছে। ইনজাদ শ্বাস ফেলল। উরুর উপরের জায়গায় প্যান্টের অংশ হালকা টেনে নিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে শূন্যে বসল। বাচ্চাটির নাকের ডগা রঞ্জিত। চোখ অতল সাগর। ইনজাদ মিষ্টি করে হাসল। মোহনীয় সুরে বলল—

“কাম বেবি, ডোন্ট ক্রাই।”

বাচ্চাটি মায়ের দিকে তাকাল। মায়ের দেওয়া সাহসে ইনজাদের দিকে এগিয়ে গেল। ইনজাদ বাচ্চাটির কাঁধের দুই পাশে হাত রেখে মোলায়েম হেসে বলল—

“কী নাম তোমার?”

কাঁদো কাঁদো গলায় প্রত্যুত্তর করে বাচ্চাটি।

“মিহি।”

“চমৎকার নাম তো! কী খেতে পছন্দ করো তুমি?”

“আইসসীম, নুডুস, কোক।”

“বাব্বাহ! কত কিছু। আইসক্রীম নিয়ে আসি আঙ্কল?”

বাচ্চাটি মাথা দুলাল। ইনজাদ হাসল। তিমনকে উদ্দেশ্য করে বলল—

“যাও তিমন, ওর জন্য আইসক্রীম নিয়ে এসো। গো ফাস্ট।”

তিমন দেরি করল না। পা চালাল দ্রুত। ইনজাদ গাঢ় হাসল। বাচ্চাটির মা জোর গলায় বললেন—

“আইসক্রীমের প্রয়োজন নেই। আপনারা আপনাদের সার্ভিস সিস্টেম ডেবলপ করুন।”

ইনজাদ ঠোঁটের কোণ ছড়াল। উচ্চবাচ্য করল না। সজীব গলায় প্রশ্ন করল বাচ্চাটিকে—

“ভাইয়া তোমাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছে?”

“না। হাত লেগে পড়ে গেছে।”

“কার হাত?”

“আমার।”

“ওওও, তাই বুঝি। ব্যথা পেয়েছ তাই না। তাই তো ভাইয়াকে শাস্তি দিয়েছি। আইসক্রীম এনে দেবে তোমায়। খেলেই ব্যথা ফু ফু। উড়ে যাবে। গুড গার্ল।”

বাচ্চাটির গালে হাত ছোঁয়ায় ইনজাদ। উঠে দাঁড়ায় স্বগৌরবে। পকেটে হাত ঢুকিয়ে টানটান বুকে দাঁড়িয়ে বলল—

“দোষ আমার স্টাফের নয়, দোষ আপনার বাচ্চার। তার চেয়ে বড়ো দোষী আপনি। বুঝলাম তিমন ভুল করেছে, আপনি অভিযোগ করতে পারতেন। কিন্তু এভাবে অপদস্ত করতে পারেন না। যতটুকু ভয় আপনার বাচ্চা পেয়েছে, ঠিক ততটুকু ভয় তিমন ও পেয়েছে। ভুল কিন্তু সে করেনি। তবুও সে চুপ ছিল। নীরবতাকে কেন দুর্বলতা ভেবে নেন আপনারা?”

ভদ্রমহিলা সরোষে চিৎকার করে বললেন—

“কী বলতে চান আপনি? ওইটুকু ছেলেকে কেন রাখবেন এসব ফর্মে? আবার দোষ দেখাচ্ছেন! ম্যানেজার বলে মাথা কিনে নিয়েছেন? আপনার স্টাফ দোষ করেছে মানতে কেন চাইছেন না?”

ইনজাদ লাজুক হাসল। ভদ্রমহিলা বিচলিত হলেন। অক্ষিকোটর ক্ষীণ করলেন। ততক্ষণে তিমন এসে দাঁড়িয়েছে। ইনজাদ আইসক্রীম নিয়ে বাচ্চাটির হাতে তুলে দেয়। বাচ্চাটি আনন্দের সাথে তা লুফে নেয়। ইনজাদ সরব গলায় বলল—

“ভুলতো হয়েছে। তবে আমার স্টাফের নয়। তিমন আপনার বাচ্চার চেয়ে কয়েক বছরের বড়ো হবে। কিন্তু আপনি যে কথাগুলো ওকে বলেছেন সেগুলো ওর সাথে সাথে আপনার বাচ্চার মস্তিষ্কেও নেগেটিভ ভিউ তৈরি করবে। ক্ষমা মহৎ গুন, জানেন তো! আপনার উচিত ছিল ওকে বুঝিয়ে বলা না কী এভাবে চিৎকার -চেঁচামেচি করে সবাইকে ডিস্টার্ব করা। দেখুন সবাই আপনাকেই দেখছে।”

ভদ্রমহিলা পুরো রেস্তোরাঁয় চোখ বুলাল। লজ্জিত চোখ নত করল। পার্স থেকে টাকা বের করে ধুম করে টেবিলে রাখল। ইনজাদ ছোট্ট করে হাসল। বলল—

“টাকা নিয়ে যান। এইটা আপনার ক্ষতিপূরণ। তিমনের বেতন থেকে কাটা হবে। আসতে পারেন আপনি।”

ভদ্রমহিলা চোখ-মুখ খিঁচে ফেলল। বাচ্চার হাত শক্ত করে ধরে হনহন করে বেরিয়ে গেল।
ইনজাদ বাকি কাস্টমারদের বলল—

“প্লিজ!”
,
,
,
অনবরত কেঁদে যাচ্ছে তিমন। ইনজাদ এক হাতের আঙুলের ভাঁজে অন্য হাতের আঙুল ঢুকিয়ে কনুইতে ভর করে বিবশ নয়নে চেয়ে আছে। প্রশ্নের উত্তর চাই তার।

“আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি তিমন। কী হয়েছে বলো?”

তিমন হুরহুর করে কেঁদে বলল—

“কিছু হয়নি।”

“মিথ্যে বলা আমি পছন্দ করি না।”

ইনজাদের কঠিন স্বরে দৃষ্টি তুলল তিমন। কান্না গিলে নিল। চোখ পরিষ্কার করে বলল—

“আমার পরীক্ষা স্যার। এখনো বেতন ক্লিয়ার হয়নি। বাবা হঠাৎ করে অ্যাকসিডেন্ট করায় অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এখন…।”

“তিমন আর কিছু বলতে পারল না। ঝরঝর করে বাচ্চাদের মতো কাঁদতে লাগল। ইনজাদ উঠে দাঁড়াল। তিমনের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে তার কাঁধে হাত রেখে বলল—

“কত টাকা লাগবে?”

“ছয় হাজার।”

“ওকে। অ্যাকাউন্ট করতে বলেছিলাম, রুলস এখানের, করেছ?”

“জি স্যার।”

“অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ো আমায়। টাকা পাঠিতে দেবো। তবে ধার। শোধ করতে হবে। আর বি কেয়ারফুল। তোমাদের কাজের খুশিতে মাস শেষে যেমন প্রণোদনার ব্যবস্থা আছে, ঠিক তেমন ভুল হলে শাস্তিও। তোমার স্যালারির তিন পার্সেন্ট কেটে নেওয়া হবে। এটাই রুলস। তাই সাবধান। এখানে সবাই তোমরা একটা পরিবার। প্রবলেম শেয়ার করবে। ওকে?”

তিমন চোখের পানি মুছে নিল। তার প্রাণ জুড়ে জোরালো হাওয়া বইল। মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিলো।
ইনজাদ বলল—

“যাও এখন। কাজে মনোযোগ দাও। কাজে গাফেলাতি আমার একদম পছন্দ নয়।”

বিনা শব্দ করে ইনজাদের ব্যক্তিগত কক্ষ থেকে বের হয় তিমন। ইনজাদ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। মধ্যবিত্তদের টানা-পোড়েন তার জানা আছে। হোস্টেলে থাকতে কত বন্ধুদের দেখেছে সারা বছর দুটো শার্টে পার করে দিতে।

মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে দেখল বিকাল তিনটা। চট করেই মস্তিষ্কের টনক নড়ল। মেয়েটা খেয়েছে তো? ইনজাদ কল করবে ভাবল। কিন্তু তাতে লাভ কী? মেয়েটা রিসিভ তো করবে না। কথা বলা ছেড়ে দিয়েছে, তাকানো ছেড়ে দিয়েছে, এমনকি দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়েছে বিছানায়। এত জেদ! এত রাগ। এই দহনে বাঁচা যে দায়! তবুও বেহায়া মন বোঝে না। ডায়াল নাম্বারে গিয়ে আর স্থির থাকতে পারল না। কল করল। রিং হচ্ছে। তবে ওপাশের অভিমানীনি রাগ ভাঙল না, মন গলল না প্রেমিক পুরুষের অন্তর্দহনে। সে নিরুত্তাপ। কল কেটে গেল। ইনজাদ আবেশিত দৃষ্টিতে চাইল মোবাইলের স্ক্রিনে। সকাল হতে ছত্রিশবার কল করেছে সে। রিসিভ করেনি তার বিষবাণ। স্বগতোক্তি করল ইনজাদ—এতটা নির্দয় হয়ো না বিষবাণ, ভাবতে বাধ্য কোরো না ভালোবেসে ভুল করেছি। যে দহনে জ্বলছি আমি, দেরি করো না, সময় চলে গেল শুধু ধ্বংসস্তুপ মিলবে তোমায়, আমায় পাবে না।”

মোবাইলের পাশে বসে অনবরত কেঁদে যাচ্ছে রেহাংশী। পাঁজর ভেঙে যাচ্ছে তার। রক্তিম চোখ জোড়ায় ঝাপসা সব। অসাঢ়তা গ্রাস করছে তাকে। আঙ্গার দেহে হতপ্রায় এক নারী। শরীরের দূরত্ব বাড়লেও মনের দূরত্ব তো বাড়েনি। আত্মার আত্মীয় পর হয় কী করে? ঘুম চোখে আসে না তার। পাশে থাকা পুরুষের আদুরে স্পর্শের জন্য ছটফটায় তার কোমল দেহ। রন্ধ্রে রন্ধ্রে তৃষ্ণা জেগে ওঠে। জ্বলতে থাকে বিনিদ্র রজনী। তবুও দূরে থাকা। কেন চরিত্রে দাগ লাগবে তার! সব তো উজাড় করে দিয়েছে সে, ভরসা করেছে, ভালোবেসেছে। তাহলে কেন এই সন্দেহ? জ্বলে যাক, পুড়ে যাক সব, আঙ্গার হয়ে যাক সমস্ত প্রেমানুভূতি। বারবার মৃত্যুর চেয়ে একবার মরে যাওয়া ভালো।
হাঁটুতে মুখ গুজে দেয় রেহাংশী। কামড়ে ধরে কান্না থামানোর জন্য। ক্রন্দন থামার নয়। কণ্ঠদেশ বিদীর্ণ করে বেরিয়ে আসছে তারা।
,
,
,
দগদগে রোদ মাথায় নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছেন পারভেজ মির্জা। চোখের পাতায় তপ্ত অনুভূতি। চোখ মেলে গগন পানে চাইতে গিয়েও পারলেন না। বন্ধ করে নিলেন আঁখি জোড়া। বাড়ির সদর দরজা ছেড়ে পা বাড়াতেই দেখলেন নুহাশকে। থমকালেন তিনি। উৎসুক চোখে চেয়ে থেকে বললেন—

“এই নুহাশ! বাজারে যাচ্ছ না কি?”

নুহাশ এলোথেলো চিন্তায় মগ্ন হয়ে হাঁটছিল। আচানক ভেসে আসা কণ্ঠে স্থবির হয়ে দাঁড়ায়। সতেজ চোখে তাকাল। পারভেজ মির্জা তুষ্ট হাসলেন। বাজারে যাওয়ায জন্য একজন সঙ্গী হলো!

নুহাশ ধীর পায়ে সামনে এগিয়ে আসে। পারভেজ মির্জা নির্মল হেসে বললেন—

“বাজারে যাচ্ছ বুঝি?”

“না, দোকানে। ”

“ওও। খন্দকার সাহেবের এখন অবস্থা কেমন?”

নুহাশ অসন্তুষ্ট। কিন্তু বাইরে তা প্রকাশ না করে সাবলীল গলায় বলল—

“আগের চেয়ে ভালো।”

পারভেজ মির্জা চটজলদি প্রশ্ন করলেন—

“নুপূর কেমন আছে?”

“জি,ভালো। এহসাস খারাপ ছেলে নয়। ব্যস, ওর পরিস্থিতি ভালো ছিল না।”

পারভেজ মির্জা ব্যথাতুর গলায় বললেন—

“তবে রেহাংশীর সাথে যা করেছে তা ঠিক করেনি। আর মিসেস খন্দকার! আমি অবাক হয়েছি। এমন কেউ করে?”

নুহাশ বিমর্ষ গলায় বলল—

“জানা নেই আমার। তখন আমি ছিলাম না। আর থাকলেও আমি কী করতাম? তাদের বাড়ি, তাদের মেয়ে। আমি অতিথি মাত্র।”

“তবুও তো ও তোমার বোন।”

‘বোন’ শব্দ শুনতেই বুকটা মোছড় দিয়ে উঠল নুহাশের। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোঝার ক্ষমতা হওয়ার পর থেকে রেহাংশীকে ভালোবেসে নুহাশ। মেয়েটার সারল্য, চাঞ্চল্য আর কিশোরীপনায় নিজেকে হারিয়েছে বারে বারে। মায়ের সাথে অনেকটা জবরদস্তি করেই রেহাংশীর কাছাকাছি থাকার জন্য এই বাড়িত উঠেছে সে। কিন্তু মেয়েটা তাকে কখনোই বুঝলই না। আর একা ফেলে চলে গেল! দীর্ঘশ্বাস ফেলল নুহাশ। সহজ সুরে বলল—

“আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন। হয়তো ওর কপালে এত সুখ লেখা ছিল বলে আগে এত কষ্ট পেয়েছে। এই বাড়িতে সুখ না হয় পেল না, আপনার বাড়ির পুত্রবধূ হয়ে নাহয় বাকি জীবনটা সুখে কাটাক। ইনজাদকে আগলে রাখতে বলবেন ওকে। ভালোবাসার কাঙ্গাল তো মেয়েটা! একটু আপন করে নিয়ে দেখুন, আপনাদের সবাইকে মাথায় করে রাখবে। সুখি করবে ইনজাদকে, আসি।”

নুহাশ দাঁড়াল না। বুকের ভেতর চাপা কষ্ট গলা ভেদ করতে চাইছে। কণ্ঠ জমে যাচ্ছে তার। হয়তো চোখ উপচে পানিও এসেছে! মুছে নিল তা। পারভেজ মির্জা অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছেন। ছেলেটার কণ্ঠ কেমন অপরিচিত ঠেকল!
,
,
,
কলিং বেল না বাজিয়েই দরজার নব ঘুরালো মেহমাদ। তটস্থ হয়ে ভেতরে ঢুকতেই থমকে গেল। রেহাংশী হাতে কিছু একটা নিয়ে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। মেহমাদকে দেখেই আবার ত্রস্তে রান্নাঘরে গিয়ে ঢুকল। মেহমাদ ঢোক গিলল। অপ্রস্তুত গলায় মিহি সুরে বলল—

“সসসরি ভাবী। আসলে এতদিনের অভ্যাস তাই ভুল হয়ে গেছে। আই এম এক্সট্রিমলি সরি।”

রেহাংশী রান্নাঘরের দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রইল। ভয়ে তার আত্মারাপ কাঁপাকাঁপি করছে। বাসায় কেউ নেই। সবে সন্ধ্যা ঘনিয়েছে। ইনজাদ আসতে আসতে সেই রাত এগারোটা। রেহাংশীর গলা শুকিয়ে এলো। শাড়ির আঁচল খামছে ধরে ক্ষীণ শ্বাস ফেলে যাচ্ছে। মেহমাদ কোনো সাড়া না পেয়ে বলল—

” আপনি কী ভয় পাচ্ছেন ভাবী? প্লিজ ভয় পাবেন না।আমি আমার রুমে চলে যাচ্ছি। এখানে একটা ব্যাগ রাখলাম। নিয়ে যাবেন প্লিজ। আসলে আম্মাকে আপনার কথা বলেছিলাম। তাই কিছু জিনিস পাঠিয়েছে। গ্রামের মানুষ তো তাই। কিছু পুলি পিঠা, নারিকেলের চিড়া আর ইনজাদের জন্য কিছু নাড়ু পাঠিয়েছে। আম্মার হাতের নাড়ু ও আবার খুব পছন্দ করে। ও আসলে দিয়েন ওকে।”

মেহমাদ সোজা নিজের কক্ষের দিকে চলে যায়। দরজা লাগানোর শব্দ হতেই উঁকি দিলো রেহাংশী। ধাতস্থ হয়ে ছোটো ছোটো পায়ে এসে দরজার কাছ থেকে ব্যাগটা নিয়ে রান্নাঘরে রাখল। তারপর হুড়মুড়িয়ে নিজের কক্ষে ছুট লাগায়।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here