লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:২৩

0
2318

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি(Tanjina Akter Misti)
#পর্বঃ- ২৩

পুরো বাসা গেস্ট দিয়ে ভরপুর সোহেল চৌধুরীর একমাএ মেয়ের বার্থডে বলে কথা। মেয়েকে তিনি জান দিয়ে ভালোবাসে। কখনো মেয়েকে দুঃখ পেতে দেয় নি।মা নেয় বলে আর ও বেশি শাসন ছাড়া বড় করছে। দুই ছেলে মেয়েকে তিনি কখনো শাসন করে দেখেনি স্বাধীন ভাবে চলতে দিয়েছে যখন যা চেয়েছে তাই দিয়েছে কখনো কোন চাওয়া অপূর্ণ রাখে নি। আজকে ও সে তার মেয়ের কথা মেনে নিয়ে কাল যখন রাতে এসে মারু বলল,, সে একজনকে ভালোবাসে যাকে ছাড়া বাচবে না। কাল নাকি ছেলেটি আসবে এনগেজমেন্ট কালকেই করবে। মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে সোহেল চৌধুরী কিছুক্ষণ হতদম্ব হয়ে গেছিল এমন কথা এতো ইজিলি করে বলল তার মেয়ে। এটা কি তার স্বাধীনতা দেওয়ার ফল। মেয়ে আমার কাছে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে আসে। একবার জিগ্গেস পযর্ন্ত করে না আমার দিকে থেকে নিজের ইচ্ছে মতো বলছে। কিন্তু কি করবে কিছু বলে নি মেয়ের সুখ চিন্তা করে রাজি হয়। কিন্তু এখন কি হচ্ছে তার মস্তিষ্কে ঢুকছে না মেয়ে তা গম্ভীর হয়ে ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে আছে।
কেন বসে আছে সে তো মেয়ের কথা মেনে নিয়েছে তাহলে এমন একটা দিনে সে এমন করে আছে কেন? সব গেস্টরা অপেক্ষা করছে কিন্তু মারু নিচে যাচ্ছে না না কেক কেটেছে আর না বের হচ্ছে। দরজায় বাইরে থেকে কিছু ক্ষণ ডেকে উঠলো মেয়েকে কিন্তু উপর পাশে থেকে সারা না পেয়ে নিচে নেমে এলো। সে এখন বড় মাপের মানুষ সবাই তাকে এক নামে চেনে তার পরিবারে এসব হচ্ছে মেয়ে জম্মদিন কেক না কেটে ঘর বন্ধি হয়ে আছে এসব সবাই জানতে পারলে সকালেই ব বড় নিইজ টিভি পএিকায় এসব খারাপ বলে বুঝানো হবে। কিভাবে সবাইকে সামাল দেবে সে।
নিচে নেভে আসতেই সবাই ঘিরে ধরলো তাকে। সাথে সাংবাদিক রাও কি বলে বুঝ দিবে মাথায় আসছে না। হঠাৎ ই তার ছেলে সুজয় এর দিকে চোখ পরলো তার ছেলেটা ও কি এমন একটু চিন্তা আছে নেই নিজের মতো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে যাচ্ছে। এতো বড় একচা বিপদে পরেছে সে কাউকে পাশে পাচ্ছে না। চোখ জ্বলে উঠলো কি কমতী রেখেছে এই ছেলে মেয়ে দুটোর জন্য কিন্তু কেউ তাকে বুঝে না। হঠাৎ পাশে থেকে কেউ বলে উঠলো তাতে সোহেল চৌধুরী অবাক হয়ে তাকালো একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। তার পাশে দেখতে শ্যামলা বর্ণের লম্বা দেহের গঠন ভালো। চেহারা টা খুব মায়াবী তার কথায় কিছুটি সস্থী পেলাম।

পেস রা চলে গেল আমি তার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকালাম কে এই ছেলে এই কি মারিয়ার সেই যাকে বিয়ে করতে চায়। নাকি অন্য কেউ এই হলে আমি রাজি মেয়ে আমার যেমনই হোক না কেন মানুষ ঠিক চয়েজ করেছে।

–আন্কেল আপনি ঠিক আছেন?

–হুম বাবা তোমার নাম কী রাজ?

–নাহ আন্কেল রাজ আসে নি তো দেখলাম না আশেপাশে। আমি রাজ মারিয়ার ফ্রেন্ড সবুজ। আর ওরা ও।

বলে কিছুটা দূরে দাড়িয়ে থাকা চার পাচঁ জনকে দেখালো। একা মেয়ে ও তিনটা ছেলে দাড়িয়ে গল্প করছে। এই রাজ না তাহলে এই ছেলে মারুর পছন্দের না রাজ কে আর কোথায় তার জন্যই কি মারু ঘর বন্ধি।

–রাজ আসবে না।

–জানি না আন্কেল আসবে তো বলেছিলো কিন্তু আসছে না কেন কে জানে? ফোন করেছিলাম ফোন ও অফ আছে।

–অহ।

বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এগিয়ে গেল রুমের দিকে ছেলেটাই সামাল দিয়েছে মারু অসুস্থ এইটা বলে এখন সবাই খাওয়া দাওয়া করে চলে যাবে। তাই তিনি রুমে চলে আসতে লাগলো আর ভাবছে এই রাজের জন্য এতো ডেস্পারেট হয়েছে মারু ছেলেটা কি মারুকে পছন্দ করে না করলে আসল না কেন?

মারিয়া ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে আছে রাগে লাল হয়ে উঠছে সাথে কষ্ট বুক ফেটে যাচ্ছে রাজ এলোনা। ও কি একটু আমাকে ভালোবাসে না। মিষ্টি ও তো আর ওর মনে নাই তাহলে কেন এলো না আর রাজ তো জানতো ও না এনগেজন্ট এর খবর তাহলে শুধু মিষ্টি কে বলেছিলাম ও কি বলে দিয়েছে। যার জন্য রাজ এলো না মিষ্টি কে তো রাজ সহ্য করতে পারে না তাহলে ওর কথা শুনতেই বা যাবে কেন? সুজন কে দিয়ে ইচ্ছে করে ওইসব করিয়ে ছিলাম যাতে রাজ ওকে ঘৃণা করে কিন্তু এখন যদি সব ঠিক থাকে তাহলে আমার এতো পরিশ্রম কি বৃথা গেছে না। মিষ্টি কে আমি ছারবো না এমন হতে পারে রাজকে মিষ্টি ইচ্ছে করে আসতে দেয়নি ও জানতে আজ রাজ আমার হয়ে যাবে তাই ইচ্ছে করে করেছে ওকে আমি ছারবো না। ওর জন্য আমার সব মাটি হয়ে গেল আমি এতো কষ্ট পাচ্ছি ওকে আমি এর শাস্তি দিতে না পারলে আমার নি ও মারিয়া না।

.
.

এদিকে
গাড়িতে বসে আছে মিষ্টি পেছনের সিটের বসেছে। মুখ দেখে কিছু বুঝতে পারছে না মিনা হা করে তাকিয়ে বুঝতে চাইছে সব কি ঠিক মতো হয়েছে নাকি। মুখে তো হাসির কোন রেখা নাই। এসেই ভিতরে ঢুকে গেছে মিষ্টি মিনা বাইরেই দাড়িয়ে আছে। কি হয়েছে বুঝতে ভাইয়াকে খুজছে পেছনে ঘুরতেই রাজ বেরিয়ে আসে। রাজের মুখ দেখেই কিছু গন্ডগোল হয়েছে বুঝা গেল রেগে আছে ভাইয়া তাহলে কি ভাইয়ার কথায় ঠিক হলো। আপু তো ভাইয়াকে ভালোবাসে আচ্ছা ভাইয়া বলার পর কি আপু রিজেক্ট করে দিয়েছে। আপু তো ভালোবাসে ভাইয়াকে রিজেক্ট কেন করলো?

–ভাইয়া [মিনা]

–মিনা গাড়ি গিয়ে বসো।[রাজ]

–আপনার সাথে কথা ছিলো। বিশ্বাস করেন আপু আপনাকে ভালোবাসে আপু নিজে আমাকে বলেছে। কিন্তু আজ কেন রিজেক্ট করলো বুঝতে পারছি না। আমি আপুকে রাজি করাবোই দেখেন।[মিনা]

রাজ মিনার দিকে অবাক চোখে তাকালো রিজেক্ট আমি প্রপোজ কখন করলাম। আর রিজেক্টই বা কখন করলো বলে কি মেয়ে?

–আমি আপনার কষ্ট টা বুঝতে পারছি আপুকে আমি বুঝাবো কষ্ট পাবেন না। আমি আছি তো আপনাদের এক না করে যাচ্ছি না।[ মিনা]

–আর ইউ ম্যাড। কি যা তা বলছো?[রাজ]

–আপনার জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে আর আপনি আমাকে পাগল বলছেন। এটা কিন্তু ঠিক না।[মিনা]

–সেটা না মিনা কি সব ভাবছো তুমি? মিষ্টি আমাকে রিজেক্ট কেন করবে?[রাজ]

–রিজেক্ট করেন নি বলছেনতাহলে আপনি খুশি নন কেন আর আপু ওমন করে রেখেছে কেন মুখ?[মিনা]

–খুশি কি করে হবো আমি তো আমারনে কথা বলতেই পারি নি।[রাজ]

–মানে [মিনা]

–মানে মিষ্টি কি কিছুই বলা হয় নি। তার আগেই মেজাজ খারাপ হয়েগেছে।[রাজ]

–বলেন নি তার মানে আপুকে আপনি ভালোবাসেন এটা বলেনই নাই। [মিনা]

–হ্যা, তোমার আপুকে এতো বোকা সেটা আমি আবার টের পেলাম। বলে কিনা মারিয়াকে আমি ভালোবাসি। আর কি বললে রিজেক্ট তাও আমাকে এতো বড় সাহস কারো আছে বুঝি। আমাকে রিজেক্ট করবে মিষ্টি আর ও করলে ও কি আমি থামবো নিজের জিনিস কিভাবে আদায় করতে হয় আমি খুব ভালো করে জানি শুধু অনূভুতি প্রকাশ করতে অক্ষম আমি। মিষ্টি ভালোবাসলে ও আমার না বাসলে ও আমার বুঝেছো তাই তোমাকে এতো বুঝিতে হবে না ওকে ও না চাইলো আমার হয়েই থাকতে হবে। আর কেউ ওকে ভুল বুঝিয়েছে সেটা কালকেই ভাঙাবো সাথে একজকনকে উচিত শিক্ষা দেব।[রাজ]

–কাকে ভাইয়া? আর মারিয়া টা আবার কে কিছু তো বুঝলাম না।[ মিনা ]

–পরে বলি চলো এখন বাসায় যাওয়া যাক। [রাজ]

–আচ্ছা।[মিনা]

.
.

রাতে ❤

মিষ্টি গালে হাত রেখে আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছে। গাল কিছুটা লাল ও ফুলে আছে রাজ আগে ও মেরেছে কিন্তু আজকের মারটা বেশ লেগেছে । কেন মারলো কি ভুল বলেছি আমি যে মারলো। সে তো মারিয়া আপুকে ভালোবাসে আর মারিয়া আপু ও সেটাই তো বলেছি তা বলতেই এতো রেগে গেল কেন? কি জন্য বা ঔখানে নিয়ে গেল কি এমন কথা যা বাসায় বলা যায় না বাইরে যেতে হয়। আজ তার গালফ্রেন্ড এর বার্থডে আর সে নিজেই গেল না। তার থেকে আমাকে বলাটা জরুরি ছিলো কেন? মাথা ব্যাথা করছে ভাবতেই ভালো লাগছে না। মিনা মার সাথে গেস্ট রুমে শুয়েছে কেন শুলো জানি ও না। কথা ও বেশ বলল না আমার সাথে কি রাগ করেছে করতেই পারে ও বেচারি যেতে চাইলো কোথায় আর গেলাম কোথায়? আর রাজের সাথে কথা বলার সময় ওকে আশেপাশে দেখি নি কি করেছে ও তখন। ও কি জানে কি বলতো রাজ জিগ্গেস করতে চাইছিলাম কিন্তু উপায় হলো না সময় বুঝে কেটে পরেছে।

হঠাৎ কেউ আমার ভাবনার মাঝেই আমার গালে রাখা হাত সরিয়ে দিলো। আচমকা ঘটনায় নরেচরে উঠে মিষ্টি ভালো করে আয়নার দিকে তাকিয়ে আতকে উঠে,,,
ঢোক চেপে পেছনে ঘুরতে যায় কিন্তু রাজ নরতে দেয় না। শক্ত করে পেছনে থেকে জরিয়ে ধরে। পেটে হাত রেখে জরিয়ে ধরেছে। থুতনি আমার কাধে রেখেছে এমন ঘটনায় আমি স্তম্ব হয়ে গেছি। রাজের শ্বাস আমার ঘারে পরছে আমি আর সহ্য করতে পারলাম না ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরাতে চাইলাম।

–কি হচ্ছে কি ছারুন? কি অসভ্যতামি আপনি এতো রাতে আমার রুমে এসে এমন জাপটে ধরেছেন কেন?

কথাটা বলতেই রাজ রাগে চোখ মুখ শক্ত করে আয়নায় আমার দিকে তাকালো,, তার তাকানো দেখেই আমার আত্মা শুকিয়ে এলো। ভয়ে কাপছি সাথে ধাক্কা ও দিচ্ছি।

–কি বললে আমি অসভ্যতামি করছি? কি করছে জরিয়ে ধরেছি বলেই এতো কিছু। কিন্তু তুমি জানো আমার যখন যা ইচ্ছে হয় আমি তাই করি। মাথাটা প্রচণ্ড গরম আছে মাথাটা একটু টিপে দাও।

চুপ করে মাথা নিচু করে ছুটানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু তার আগেই রাজ আমাকে ছেড়ে খাটে শুয়ে পরলো,,

–কি হলো এসো?

রাজ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে মিষ্টি তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছি রাজের দিকে।

চলবে❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here