লুকোচুরি ভালোবাসা💖পর্ব:২৪

0
2180

#লুকোচুড়ি_ভালোবাসা💖
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্বঃ- ২৪

–তুই কি করে পারলি আমাকে এতো কষ্ট দিতে রাজ। আমি কতো অপেক্ষা করেছি তোর জন্য তোর জন্য আমি কেক অবধি কাটি নি। তুই গেলি না কেন আমাকে এতো কষ্ট দিলি কেন? কি হলো বল?

মারিয়া রাজের সামনে দাড়িয়ে কথা গুলো বলে যাচ্ছে। রাজ গেটের কাছে মারিয়ার ও কথা বলার মাঝে রাজের পাশে মিষ্টি কে দেখেই মারিয়া আর ও রেগে উঠলো,,, মিষ্টি দিকে তাকিয়ে ফুস করে উঠলো, মিষ্টি নিশ্চয়ই রাজকে আসতে দেয় নি ও তো জানতো আমি পাপার সাথে রাজ কে মিট করাব এটা জানে। ও রাজকে পছন্দ করে এই জন্য এই গুলো সহ্য করতে না পেরে রাজকে আটকে দিয়েছে। ওকে আমি মেরে ফেলবো। কাদোকাদো মুখ করে রাজের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,

–ওই মেয়ের জন্য তুই যাস নি তাই না। ওই মিষ্টি তোকে মিথ্যা বলে আটকে ছে যেতে আমি জানতাম ও এমন কিছু করবে। ও তো তোর সাথে আমাকে সহ্য করতে পারে না হিংসা করে আমাদের। ওকে আমি ছারবো না।

বলে মারিয়া মিষ্টি দিকে এগিয়ে গেল। মিষ্টি ভয়ে ভয়ে মারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। মারিয়া এসেই চর মারতে হাত উঠায় মিষ্টি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে,, কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে যায় কিছু না হওয়ায় কাপঁতে কাপঁতে চোখ মেলে তাকায়, রাজ রক্ত লাল চোখ দিয়ে মারিয়ার হাত ধরে দাড়িয়ে আছে।

–মারু তোর সাহস কি করে হলো ওর গায়ে হাত তোলার।

–কি বলছিস রাজ ওর জন্য আমি এতো কষ্ট পেলাম ওর জন্য তোর সাথে আববু কে মিট করাতে পারলাম না আববুর সামনে কতোটা নিচু হয়েছি জানিস। তোর আর আমার কথা একবার বলাতেই আববু রাজি হয়ে গেছে আর শেষে কিনা তুই যেতে পারলি না। সবার সামনে কতো টা নিচু হয়েছি আমরা জানিস সব এই মেয়ের জন্য। ওই জানতো আববু কে তোর আর আমার বিয়ের কথা বলেছি এটা জেনে ও ইচ্ছে করে তোকে বাধা দিয়েছে তাই না।

–ও যদি বাধা দিতো আমার থেকে কেউ খুশি হতো না কিন্তু ও তা না করে আমাকে জোর করেছে যেতে বুঝেছিস।

–মানে

রাজ মিষ্টি কে এক হাতে কাছে টেনে জরিয়ে ধরে। আচমকা রাজ এমন জরিয়ে ধরায় হা করে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে। এদিকে মারিয়া রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।

–কাল আমি আমার ভালোবাসার মানুষটার সাথে সময় কাটাতে চাইছিলাম। কিন্তু সে তো তোর ওই মিথ্যা কথার জন্য আমাকে ভুল বুঝে বসে আছে আমি জানতাম ও না। কাল ও পরিস্থিতি না আসলে জানতাম ও না।

–হোয়াট ভালোবাসার মানুষ সেটা আবার কে কি বলছিস। তুই তো আমাকে ভালোবাসিস। আর আমি তো কাল তোর সাথে ছিলাম না। আর আমি কি মিথ্যা কাকে বলেছি।

–তোকে ভালোবাসি আমি সেটা কবে বলেছি।

মারিয়া চুপ করে গেল।

–ফ্রেন্ড বলে কিছু বললাম না। নেক্মট এমন মিথ্যা কথা ছরালে ছেড়ে দেবো না। আর কাকে ভালোবাসি শুনবি শুন তাহলে এই যে যাকে আর পাশে আমার সাথে দেখছি ওকে ভালোবাসি তোর জন্য ও আমাকে ভুল বুঝেছে। তোর জন্য ওর মনে ভুল ধারনা তৈরি হয়েছিল কাল সব জানাতে চেয়েছিলাম আমার মনের অনুভূতি সেখানেও তোর কথা বলাতে মেজাজ গরম হয়ে যায় আমার। তুই জাস্ট আমার ভালো একজন ফ্রেন্ড এর একে আর কিছু মনে করি না। আমি শুধু একজন কেই ভালোবাসি আর সারাজীবন তাকে ভালোবাসবো। আমি শুধুই মিষ্টি কে ভালোবাসি।

মিষ্টি এতো মুখ হা করে রাজের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। বলে কি রাজ রাজ আমাকে ভালোবাসে মারিয়া আপুকে না। এতো দিন আমি ভুল বুঝে এসেছি তাহলে।

–কি হলো এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেন?

–আপনি কি বললেন?

–তুমি কানে শুনো না?[ ভ্রু কুচকে]

–কানে শুনবো না কেন? অবশ্যই শুনি কেন আপনার বলার সাথে কানের কি সম্পর্ক।

–অনেক সম্পর্ক।

কিছু বলবে মারিয়া চিৎকার করে উঠে।

–এটা হতে পারে না রাজ তুই এই মেয়েকে ভালোবাসতে পারিস না। [ চিৎকার করে মারিয়া] আমি তোকে ভালোবাসি পাপাকে ও বলেছি সব। তোকে ছাড়া বাচতে পারব না রাজ প্লিজ বুঝার চেষ্টা কর।

— মিষ্টি ক্লাসে যাও।

— কিন্তু আপু তো

–তোমাকে যেতে বলেছি।

মিষ্টি আর কথা বাড়ায় না। ধীর পায়ে মাঠে দিকে এগিয়ে যায় ওর কাকে একটা কথায় বাজছে রাজ ওকে ভালোবাসে। কিন্তু এতো দিনে একটু ও বুঝতে পারে নি। মারিয়া আপুকে আমাকে মিথ্যা কেন বলল, কতো বাল বলেছে মিথ্যা যখনই মনে হয়েছে রাজ আমাকে ভালোবাসে তখনই তিনি এসে বলেছে তাকে ভালোবাসে।

এখন বুঝেছি সে জানতে তাই আমাকে ভুল বুঝিয়েছে যাতে আমি কখনো রাজকে সত্যি না বলি। আর কাল রাজ ভালোবাসার কথা বলতে ওইখানে নিয়ে গেছিলো আর আমি কি না কি ভাবলাম একবার ও আমার ভনে এলো না রাজ এই কথা বলতে পারে।এত বোকা আমি কতো সুন্দর ডেকোরেশন করেছিলো রেস্টুরেন্টে আচ্ছা মিনা ও কি সব জানে। মনে হয় ও নিশ্চয়ই এগুলো সব জানে জানে বলেই তো আমাকে জোর করে সাজানো মিথ্যা বলে নিয়ে যাওয়া।

মারিয়া আপু তো খুব রেগে আছে খুব। একবার পেছনে ফিরে তাকালো মিষ্টি মারিয়া কি যেন বলছে। বলতে বলতে রাজের কলার টেনে ধরলো আচমকা জরিয়ে ধরলো সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি চোখ বেয়ে পানি পরলো কষ্ট হচ্ছে এতো কাছে অন্য মেয়েকে দেখে রাজ সাথে সাথে সরিয়ে হাত উঠালো কিন্তু চর দিলো না। আগে আগে পা ফেলে তাদের আড্ডা রুমে যেতে লাগলো। মারিয়া সেদিকে তাকিয়ে থেকে নিজের গাড়ি নিয়ে চলে গেল। মিষ্টি কিছু বুঝতে পারলো না কি হলো কোথা থেকে।

ছুটির পর

–এতো কি ভাবছিস বলতো? কেমন চিন্তিত লাগছে তোকে।

–কিছু না এমনি।

–কিছু তো হয়েছে বল না আর আশেপাশের কাকে খুজছিস।

–কাউকে না চল।

বলেই মিষ্টি এগিয়ে গেল। আশেপাশে রাজ কে খুজছে কিন্তু নেই চলে গেছে বোধহয়।

গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে তিথি ভাইয়ার সাথে চলে গেছেনিতে আসছিল আজ। ” উঠে আসো ” হঠাৎ কথায় আওয়াজ শুনে পেছনে তাকিয়ে দেখে রাজ গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

–কি হলো কথা কানে যায় না। উঠে আস তারাতারি।

–আপনি এখন ও যান নি।

–না গেলে কি এখানে থাকতাম তারাতারি আস।

মিষ্টি মাথা নিচু করে আছে লজ্জা করেছে খুব। ভালোবাসি কথাটা জানার পর থেকেই এই লজ্জা এসে আটকে ধরেছে ওকে আগে যেটা ভয় ছিলো তা লজ্জায় পরিণত হয়েছে।

__________________

–আই লাভ ইউ মিষ্টি। কখন কিভাবে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি জানি না। কিন্তু ভালোবাসি সেটা জানি তোমার সাথে রুড বিহেভ করেছি অনেক তা শুধুমাত্র কষ্ট থেকে তোমাকে মনের কথা যতবার জানাতে চেয়েছে। একটা না একটা জামেলা হয়েছে তুমি আসো নি বা ইগনোর করেছো তার জন্য পরে তোমাকে কষ্ট দিয়ে নিজের কষ্টের ভাগ তোমাকে দিয়েছি। অন্য কোন ছেলে তোমার দিকে তাকালে তাকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করেছে। কেউ তোমার দিকে তাকালে রাগে আমার শরীর জ্বলে উঠেছেকেন তাকাবে তোমাকে শুধু আমি দেখবো অন্য অন্য কেউ না। সাজলে এতো সুন্দর লাগে যে আমি চোখে ফিরাতে পারিনা তোমার ওই মায়াবি চোখ থেকে। মন চায় জরিয়ে ধরে কিছু করে ফেলে। কিন্তু আমি এভাবে তোমার কাছে যেতে চাই না নিজেকে সংযত রাখী কষ্ট হয় অনেক তাই তোমাকে সাজতে নিষেধ করি। জানি আমার এসবে তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছো কিন্তু তোমার থেকে যে আমি বেশি কষ্ট পায়। বারবার বলতে চেয়েছি মনে জমানো সব কিন্তু বলতে পারিনি। শেষে মিনার সাহায্যে বলতে চাইলাম সেখানেও মারিয়া কে টেনে আনলে। তুমি ওকে নিয়ে আমাকে ভাবতে রাগে কি যে করতে মন চায় বলে বুঝাতে পারবো। কি ভাবে ভাবলে ওকে আমি ভালোবাসি আমি কি কখনো ওর সাথে বয়ফ্রেন্ড এর মতো আচরণ করেছি। সব কিছুতে তোমার ওই অবুজ গীরী আমাকে কষ্ট দেয় তুমি কি আমার বিহেভে কখনো বুঝনি আমি তোমাকে ভালোবাসি।

মিষ্টি কিছু রাজ মিষ্টি কাধ ঝাকিয়ে বলছে। মিষ্টি কিছু না বলে রাজ কে জরিয়ে কেদে দেয়।

চলবে❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here