শুভ বিবাহ পর্ব-২৯

0
686

#শুভ_বিবাহ
লেখা #AbiarMaria

২৯

আমি কণাপুর কল কেটে বসে বসে কাঁদছি। কান্নায় মাথা ধরে গেছে। বাথরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে আসলাম। কিছুটা স্বাভাবিকভাবে বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখলাম আম্মু আমার ঘরে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাকে দেখে বলল,
❝শুভ চলে যাচ্ছ, তোর সাথে দেখা করবে। ড্রয়ইংরুমে আয়❞
আমার জবাবের অপেক্ষা না করে আম্মু চলে গেল। আমার রাগ লাগছে। সে কি এখন আজ সারাদিন যেসব পাগলামি করলো সেসব আব্বু আম্মুর সামনেই করবে? ওড়না দিয়ে মাথা ঢেকে ড্রইংরুমের দরজায় পর্দা ধরে দাঁড়ালাম। ছোট বেলায় যখন মেহমানদের সামনে যেতে সংকোচ হতো, তখন এভাবে পর্দার আড়ালে দাঁড়াতাম। এখনো সে অভ্যাস যায়নি। শুভ ভাইয়া দাঁড়িয়ে আব্বুর কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিল৷ হাসিমুখে আমার দিকে ফিরলো। উনার চোখে চোখ পড়তেই আমি নামিয়ে নিলাম। কলেজে অনেক কিছু বলেছি। এখন আব্বু আম্মুর সামনে উনি যাইই বলুক, আমার মুখ থেকে কিছু বের হবে না। আমি মাটির দিকে চেয়ে ভাবছি, মাটির ভেতর লুকিয়ে থাকতে পারতাম। কিংবা অদৃশ্য হয়ে যেতে পারতাম!

শুভ ভাইয়া আমার দিকে একটু এগিয়ে এসে বলল,
❝তেঁতুল ফুল, আসি❞

আর কিছু না বলে উনি চলে গেলেন। আমার বিষয়টা হজম হচ্ছে না। আমাকে তেমন কিছু না বললেও নিশ্চয়ই আব্বু আম্মুকে অনেক কথা বলে বসেছে। আমি থমথমে কন্ঠে উনাদের বললাম,
❝আমি কিন্তু উনাকে বিয়ে করব না❞

আমার কথা শুনে আব্বু বেশ অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো,
❝কাকে বিয়ে করবি না?❞
আমি চোখ পিটপিট করে দুজনের মুখ দেখলাম। তারা দুজনে একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
❝শুভ ভাইয়া তোমাদের কি বলল এতক্ষণ?❞
❝শুভ তো বলতে এসছিল ওদের ফ্যামিলি ম্যাটার নিয়ে। ওর আব্বু নাকি ফ্ল্যাট কিনবে। ওরা এখন যেটায় থাকে, ঐ বিল্ডিংয়ের মালিককে অফার করেছে। ওদের এখনকার ফ্ল্যাট সহ আরও তিনটা ফ্ল্যাট কিনবে। ওর বাবার নাকি বসিলায় জমি আছে। তবে সেখানে বাড়ি করার ঝামেলা এই মুহূর্তে করা সম্ভব না। পরে শুভকে করতে হবে। আপাতত এখানে ফ্ল্যাট কিনা লাভজনক হবে কিনা, সেসব নিয়ে আলোচনা করে গেল❞

আমি হাঁফ ছাড়লাম। বিয়ে নিয়ে বলা কথাটা হয়ত ঘাটাবে না। আমি ঘুরতে নিতেই আম্মু বলল,
❝তুই কাকে বিয়ের কথা বলতেছিলি?❞
দ্রুত বললাম,
❝কাউকে না। পড়তে পড়তে মাথা খারাপ হয়ে গেছে আমার❞

জবাব না দিয়ে দ্রুত রুমে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে উঠে বসে বই খুললাম। চোখের সামনে বইয়ের লেখা গুলো নেচে বেড়াচ্ছে। কোনো কোনো অক্ষর আবার একে অপরকে চুমুও খাচ্ছে। আমি এমন অদ্ভুত বিছরি দৃশ্য দেখছি কেন? এসময় আমার ফোনের মেসেজ টোন বেজে উঠল। ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম শুভ ভাইয়া মেসেজ দিয়েছে। উনার নাম্বারটা সেভ করে রেখেছিলাম শায়লার জন্য। শায়লা মাঝে মাঝ ভাইয়ার নাম্বার থেকে আগে কল দিত৷ কিন্তু শুভ ভাইয়া এই প্রথম এই নাম্বারের অস্তিত্ব স্বীকার করল। সেখানে মেসেজ এসে আছে,
❝তেঁতুল ফুল, একদিন বুঝবে আমি মিথ্যা বলিনি। তোমার কণা আপু মিথ্যা বলেছে৷ সেদিন সহ্য করতে পারবে তো?❞

শুভ ভাইয়ার মেসেজ দেখে এবার আরও রাগ হলো। একজন মেয়ে কখনো নিজের ইজ্জত নিয়ে মিথ্যা বলতে পারে? তাও আবার অপরিচিত একটা মেয়ের কাছে? আমি সেসব বিশ্বাস করিনা। একটা মেয়ে কখনোই নিজ থেকে অন্যকে বলবে, ওর সাথে আমার সব হয়ে গেছে! ছেলেরাই মিথ্যা বলে। কারণ ওদের কাছে যার তার সাথে যখন তখন শোয়াটা কোনো ব্যাপার না। অন্তত শুভ ভাইয়ার জন্য এসব কিছু না। বিরক্ত আমি তার মেসেজ স্ক্রিন থেকে সরিয়ে রাখলাম। উনার জন্য আজকের সব ক্লাসের পড়াগুলো মাথায় ঠিক মত গাঁথেই নি। আজকে সার্জারীর কয়েকটা ইম্পর্টেন্ট লেকচার ছিল। সারাটা দিন বরবাদের পর এখন রাতটাও বরবাদ করতে চাচ্ছি না।

আমি মানুষটা পড়ালেখার মাঝে বেশি ডুবে থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব একটা একটিভ থাকি না। এ কারণে কয়েকদিন অনলাইনেই যাইনি। কয়েকদিন পর অনলাইনে গিয়ে দেখলাম। শুভ ভাইয়ার মেসেজ। উনি কথা বলতে চায়। আমি সেটা দেখেও না দেখার ভাণ করলাম। শুভ ভাইয়া মাঝে মাঝেই টেক্সট পাঠায়, আমি খুলি না। ভয় হয়। খুললে যদি ভাবে আমি তাকে পাত্তা দিতে শুরু করেছি? একদিন বিকালে কল করলেন উনি। আমি রুমে শুয়ে উবু হয়ে একটা গল্পের বই পড়ছিলাম। যদিও মেডিকেলের বই পড়তে পড়তে চোখের পাওয়ার কমে গিয়েছে, তবুও গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে আমার। অন্য একটা কল্পনার জগতে ডুবে যাই সব ভুলে। এ সময় কারো আগমন স্বভাবতই বিরক্তিকর। আমি বিরক্তি নিয়ে শুভ ভাইয়ার কল রিসিভ করলাম।
❝হ্যালো?❞
❝কেমন আছো তেঁতুল ফুল?❞
বিরক্তি আরেক ডিগ্রি বাড়িয়ে বললাম,
❝আপনাকে না নিষেধ করেছি এই নামে ডাকবেন না?❞
ওপাশ থেকে হাসির শব্দ পেলাম।
❝নাম না ডাকলে তো তুমি রাগ দেখাও না। তোমার রাগ দেখার জন্য এই নামে ডাকি তেঁতুল ফুল❞
❝কি সমস্যা আপনার বলেন তো? কি জানতে চান?❞
❝কথা বলতে চাই তোমার সাথে। আসলে কি জনো, পাশাপাশি বাসায় থেকেও কখনো সেভাবে কথা বলিনি, জানার চেষ্টা করিনি। কেন যেন সবসময় তোমাকে ধমক দিতে ভাল্লাগতো!❞
❝এমন ভাবে বলতেছেন যেন জানেনই না কেন আমাকে বকতেন!❞
উনি ওপাশে হাসছেন। মনে হচ্ছে যেন খুব ভালো মানুষ! আমার গা জ্বলে যাচ্ছে। একটা মানুষের গায়ে যে কত রঙ! আমি পূর্বের মত বিরক্তি মেশানো কন্ঠে বললাম,
❝আপনি অকারণে সবসময় আমাকে বকতেন। আসলে অকারণে না, আপনার মাঝে একটা ডমিনেটিং টেন্ডেন্সি আছে। এজন্য সবসময় আমাকে দৌড়ের উপর রাখতে চাইতেন। আপনার ভালো লাগতো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে। আসলে…আসলে…আসলে আপনি একটা সেডিস্ট!❞
❝সেডিস্ট?!❞
❝হ্যাঁ, সেডিস্ট। অন্যকে কষ্টে দেখতে ভালো লাগে। একটা পৈশাচিক আনন্দ লাগে। আপনি হচ্ছে এমন মানুষ❞

ওপাশে শুভ ভাইয়া হাসছে। হাসতে হাসতে বললেন,
❝তোমার কথাটা আংশিক সত্যি। তবে আমি তোমাকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পাই না। তবে তোমাকে কাঁদলে অনেক কিউট লাগে। তখন দেখতে ভাল্লাগে!❞

মেজাজ আমার তুড়ুং করে গরম হয়ে গেল। এসব কোন জাতের ফাজলামো?!
❝মজা করেন আমার সাথে। তাই না? আমি কাঁদলে ভালো লাগে?! আনবিলিভেবল! আমি একটা সেডিস্ট এর কাছে কথা বলতেছি? ছিঃ!❞
ওপাশে শুভ ভাইয়া গা জ্বালানো হাসতেছে। আমি ফোন কাটার আগেই উনি ওপাশ থেকে বলে উঠলেন,
❝একদম ফোন কাটবে না তুতুন!❞
❝কেন? কাটলে কি করবেন? আমি এখন আর আপনাকে ভয় পাই না❞
❝যদি ফোন কেটে দাও, তাহলে কিন্তু একদম বরপক্ষ নিয়ে তোমার বাসায় হাজির হয়ে যাবো!❞
আমি তার কথা শুনে রেগে ফোন কেটে দিলাম। বিড়বিড় করে নিজে নিজে বললাম, এবার বরপক্ষ নিয়ে আয় তুই! অসভ্য লোক!

…………….

তুতুন রাগ করে ফোন ডিসকানেক্ট করে দিয়েছে। আমি শুয়ে শুয়ে হাসছি। মেয়েটা রাগাতে বেশ লাগে। রেগে গিয়ে ওর ফর্সা ছোট্ট মুখটুকু লাল হয়ে যায়। চশমার ওপাশে চোখ জোড়া ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাকায়। আমার হাসি পেলো। বিকাল বেলাটায় জ্বালানো তো হলো। আবার রাতে জ্বালাবো। এই ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুম ভাঙলো আম্মুর খিটমিট শুনে। জোরে জোরে আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে ডাইনিং এ হাঁটছে আর বলছে,
❝এই অবেলায় ঘুমায় আছে, শরীর খারাপ করে নাকি তাও বুঝি না! আজকাল কথাও শুনতে চায় না। বিয়া শাদীর কথা কইলে ছ্যাত কইরা ওঠে! বয়স হইছে না তোর? চাকরি বাকরি করস, আল্লায় দিলে ভালো কামাস। বিয়া শাদী করা লাগব না? আমি কি নাতি নাতনীর মুখ দেখমু না? আল্লায় জানে আমার কপালে কি আছে!❞
আমি মুচকি হেসে আম্মুর গলা পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
❝আমি তো বিয়ে করবই। পাত্রীও রেডি। শুধু পাত্রী একটু রাজী হোক❞
আম্মু অবাক হয়ে আমাকে দেখলো।
❝কার কথা বলতেছিস?❞
❝বলতেছি একজনের কথা। দেখি কি হয়। তোমার কিছু বলার দরকার নাই। এমনিই তুমি আগাইছো। আমি চাই না আর আগায় ঝামেলা হোক। মেয়ে রাজী হইলে আগায়ো❞
❝কার কথা বলিস? তুতুন নাকি?❞

হেসে আম্মুর গাল টেনে দিলাম।
❝এই না হলে আমার মা! বলার আগেই বুঝে গেছ!❞
❝তুতুন রাজী না এরকম কিছু কি বলছে?❞
❝আসলে ও তো আমাকে ওভাবে কখনো দেখে নাই, এজন্য বোধহয় রাজী না। আমিও তো ওকে সারাক্ষণ বকাবকি করতাম। এজন্য আর কি…❞
❝তাতে কি? আমার ছেলে কি খারাপ নাক?❞
আম্মুর কনফিডেন্স লেভেল দেখে পুলকিত অনুভব করলাম। ঘরে ঘরে আমার মত ছেলেদের ঢাল সবসময় তার জন্মদাত্রীই হয়ে থাকেন। তারা ঢাল হোন বলে সমাজের মানুষ কলংক লেপতে পারে না। তবে আমার মনে চলছে অন্য কিছু। কেন যেন তুতুনকে নিয়ে ভাবার পর থেকে অন্য কোনো মেয়ের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করছি না। স্কুলের নুসরাত ম্যামের সাথে খাতির হয়েছিল বেশ কিছুদিন। কিন্তু তাকেও এখন তেমন একটা ভালো লাগে না। আমার মাথায় কেবল তুতুন ঘোরে। নিষ্পাপ মিষ্টি একটা মুখ। বিয়ের কথা বলার আরও আগে থেকে, মূলতঃ এক্সিডেন্ট এর পর থেকে ওর প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। আম্মু বিয়ের কথা বলার পর থেকে লজিক পাচ্ছি। তুতুনকে আমি অবেচতন মনে অনেক আগে থেকে পছন্দ করি। অনেক আগে বলতে কণারও আগে থেকে, ঠিক যেদিন ওকে ছাদে গল্পের বই পড়তে দেখে ভয় দেখালাম। সেই যেই ওর মুখ খানা আমার মানসপটে ছেপে গেছে, আজও তেমনই রয়ে গেছে। কেবল আমিই বুঝিনি। এদিক ওদিক কত মেয়ের সাথে কথা বলেছি, শান্তি পাই নি। আজ তুতুন আমার প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছে ফোনে। তবুও ওর কন্ঠ শোনে যে ভালোলাগা অনুভব করেছি, বোধকরি এটাই সত্যিকার প্রেম।

এত ভালো খবরের মাঝেও কণার কথায় চিন্তা হচ্ছে। আমি কোনোভাবেই বুঝতে পারছি না কণা কখন তুতুনকে এভাবে হাত করলো। কিংবা ওকে পেলো কি করে? জানি তুতুনকে প্রশ্ন করলেও জবাব দিবে না। আর কণাকেও পাবো না কারণ সে আমাকে ব্লক করে রেখেছে। এই মেয়ে অনেক চালাক জানতাম, কিন্তু এতটা তা বুঝিনি। আমি মনে হয় কখনো সজ্ঞানে কিংবা অজ্ঞানেও তুতুনকে নিয়ে তেমন কোনো কথা বলেছি। তাহলে ও কি করে তুতুনকে আন্দাজ করলো? নাকি ও এই দেশে কোনো স্পাই লাগিয়ে রেখেছে আমার উপর? কি চায় কণা? প্রতিশোধ? হয়ত। ওকে কম জ্বালাইনি। তবে সবচেয়ে বড় ভুল করেছি বন্ধুত্বকে প্রেমে রূপ দিয়ে। শালা জাহিদের কাছে গিয়েছিলাম পরামর্শ চাইতে! এই শালাই ডুবালো। তবুও তেমন খারাপ হতো না যদি পরের ঘটনাগুলো ঘটতো। সব মিলিয়ে চার বছর পরও কণা যে এসে আমার মুন্ডু চটকাবে, সেটা ভাবতে পারিনি।

তুতুনের সাথে ঘনঘন কথা বলতে হবে। হয়ত তখন ও আমাকে বিশ্বাস করবে। জানি নাহ। চেষ্টা চালিয়ে যাবো। এই বয়সেও অনেকে এক সাথে কয়েকটা প্রেম চালায়। আমিও এসব খুব করেছি এক সময়। কিন্তু এখন আর সম্ভব না।

আকাশে সন্ধ্যাতারা ভেসে উঠেছে। মসজিদে মাগরিবের নামাযের জামাত চলছে। আমার মত ফাঁকিবাজ মুসুল্লি বাসায় বসে নামাজ আদায় করেছে। নামায শেষে ফোন তুলে তুতুনকে কল দিলাম। প্রথম দুবার রিসিভ হলো না। তৃতীয় বার ভীষণ বিরক্ত হয়ে তুতুন বলল,
❝আপনি আবার কল করেছেন? আমাকে না হুমকি দিয়েছেন বরপক্ষ নিয়ে হাজির হবেন বলে? কোথায় আপনার বরপক্ষ?❞

আমি হেসে দিলাম।
❝এখন বরপক্ষ নিয়ে তোমাদের বসার ঘরে অপেক্ষা করলে ভালো হতো? ভালোমতো ভেবে চিন্তে বলো। আমি তাহলে আম্মুকে বলব। উনি আজকেও ছেলের বিয়ের চিন্তায় খুব চিন্তিত হয়ে অনেক কথা বললেন!❞
❝দেখেন৷ এসব কথা আমাকে বলবেন না। আন্টি বিয়ে করাতে চায়, করেন। আমাকে এসব শুনিয়ে লাভ নেই। আমি আপনার ব্যাপারে সব জানি। সব জেনেও আগানো সম্ভব না❞
❝তুমি সব জানো, কিন্তু ভুল। শুধু কণার কথাই শুনে সবটা বিশ্বাস করে নিলে? আমার কথা শুনতে চাইলে না? আমার দিক থেকেও তো অনেক কথা আছে!❞
❝আমার দরকার নেই। আপনাদের মাখামাখি প্রেম ছিল, থাকতেই পারে। আপনি আপুর সাথে চিট করেছেন, করতেই পারেন। আবার ব্রেকাপ করতে মন চাইলো, করলেন। সবটাই আপনাদের ইচ্ছা। কিন্তু আপনাদের এসব দেখে আমি আগাতে চাই না। আপনার প্রতি অবশ্য আমার কখনোই আগ্রহ ছিল না। আশা করি ভবিষ্যতেও হবে না!❞
❝তুতুন, আমরা কিন্তু কেউ জানি না ভবিষ্যৎ। আমিও কখনো ভাবিনি তোমাকে নিয়ে বিয়ের কথা ভাববো। কিন্তু বেশ অনেক দিন ধরে নিজের ভেতরে ফিল করি, বিয়ে করতে হলে আমার তোমাকেই করা উচিত। আর নাহলে চিরকুমার থাকব। কি, বিয়ে করবা?❞

ওপাশে তুতুন তাচ্ছিল্য ভরে জোরে জোরে হাসলো আর বলল,
❝আপনি আমাকে বিয়ের করার চিন্তা না করে কোনো একটা চিরকুমার সংঘের খোঁজ করেন। কাজে দিবে। আমি আপনাকে বিয়ে করবো না। এবং এর জন্য আমি সরিও নই!❞

খট করে ওপাশে লাইন কেটে গেছে। এই প্রথম আমি তুতুনকে জিজ্ঞাসা করেছি, বিয়ে করবা? আমি জানতাম তুতুন রাজী হবে না। তবুও লেগে থাকবো। জানি না কণার সাথে করা ভুলের মাশুল হিসেবে ওকে হারিয়ে ফেলি কিনা!

চলবে…

(আমার পরীক্ষা চলছে। তবে তার চেয়েও বড় কথা, আমি এই গল্পের পুরো খেই হারিয়ে বসে আছি। যে কারণে দুই, তিন সপ্তাহ পরে একটা পর্ব দিচ্ছি। আমি জানি, এ অন্যায়। আমি পাঠকদের কষ্ট দিচ্ছি। এই গল্পের এখন একটা খেই পেয়েছি। আশা করি নিজের মত করে যেভাবে সবটা ভেবেছিলাম, সেভাবেই সমাপ্তি টানতে পারব। আমার মত পেইনফুল লেখকের লেখার জন্যও যেসব পাঠকরা এত এত সময় নিয়ে অপেক্ষা করছেন, তাদের প্রতি অন্তরের গভীরতম স্থান থেকে কৃতজ্ঞতা! আপনাদের ভালোবাসাই আমাকে বারবার লিখতে বাধ্য করে। নাহলে কবেই লেখালেখি ছেড়ে দিতাম! আশা করি এই মাসটা আমাকে সময় দিবেন যেহেতু ফাইনাল পরীক্ষা। ভালোবাসা সবাইকে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here