#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
পর্ব : ২৬
🌼
বাতাসে লম্বা চুলগুলো উড়ছে।সেই সাথে উড়ছে গায়ের টকটকে লাল ওড়নাটা।চোখ দুটো ভিষন জ্বালা করছে।কাঁন্না করতে ইচ্ছে করছে না আর।সব কিছু বিষাক্ত মনে হচ্ছে।অন্ধকার থেকে চোখ সরিয়ে চোখ বুজলো রোশনি।লম্বা শ্বাস টেনে ভেতরটা ঠান্ডা করার সূক্ষ্ম চেষ্টা চালালো।ক্ষনিকের জন্যে ভেতরটা ঠান্ডা হয়ে আবারো তেতে পুড়ে ছাই হতে শুরু করলো।পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়েও চোখ মেলে তাকাতে ইচ্ছে করলো না ।চারদিকে ভয়াবহ নিরবতা আর জমাট বাধা অন্ধকার।দূর থেকে ভেসে আসা কিছু ঝিঝি পোকার বিরামহীন ডাক ।কিছুক্ষন নিরব থেকে চোখ বুজেইই প্রশ্ন ছুড়লো রোশনি,
-বিয়েটা তাহলে করছেন?
রোশনির কথায় চোখ তুলে তাকালো অধির।রেলিং এ ভর দিয়ে অন্ধকারে চোখ রাখলো।বললো,
-হুম।
রোশনি চোখ খুললো না।আগের মতোই শান্ত গলায় বললো,
-বিয়েটা করে কি লাভ হবে আপনার? জোর করে কি ভালোবাসা হয় মিষ্টার চৌধুরি? এই সম্পর্কে কে ভালো থাকবে? আপনি,আমি,জয় কিংবা দিদাম কেউই ভালো থাকবো না।এটা আপনিও জানেন।তাহলে এই বিয়ের মানে কি?
অধির হাসলো।রোশনির অগোচরেই সেই হাসি মিলিয়ে গেলো অন্ধকারে।
-কে ভালো থাকবে কে খারাপ থাকবে সেটা দেখার দায়িত্ব আমার না রোশনি।এই মুহূর্তে আমার ভাল থাকাটাই বেশি ম্যাটার করছে।কথাটা হয়তো স্বার্থপরের মত শোনাচ্ছে।কি করবো বলো? মাঝে মাঝে নিজেকে ভালো রাখতে যদি স্বার্থপর হতে হয় তবে একটু আধটু স্বার্থপর হতে দোষ নেই।তুমি যে কাউকে প্রশ্ন করো,,,,, ভিষন ভালবাসে এমন পাঁচজনের নাম জিজ্ঞাসা করো।দেখবে তারা বাবা,মা,ভাই,বোন,ছেলে-মেয়ে,ফ্রেন্ডস এমন অনেক নাম নেবে।কিন্তু নিজের নামটাই নেবে না।শুধু পাঁচ জন কেন? তুমি যদি তাদের একশো জনেরও নাম নিতে বলো পুরো এলাকার মানুষের নাম নিয়ে নিবে তবুও নিজের নামটা বলবে না।এটাই আমাদের সমস্যা।বাকি সবাইকে ভালবাসতে গিয়ে নিজেদের ভালবাসতে ভুলে যায়।অন্যের ভাল দেখতে গিয়ে আমরা নিজে ভাল থাকতে ভুলে যায়।আমিও ভুলে গেছিলাম।গত কয়েক দিন ধরে বুঝতে পেরেছি আমি ভালো নেই।বুঝলাম আমার ভালো থাকা উচিত।যতো বারই ভালো থাকতে চেয়েছি ততোবারই তোমার কথা মনে হয়েছে।মনে হয়েছে তোমাকে ছাড়া ভালো থাকা সম্ভব নয়।এখন যদি প্রশ্ন করো আমি তোমায় ভালবাসি কি না? তাহলে বলবো প্রশ্নটা স্কিপ করে যাও।এর উত্তর আমার নিজেরও জানা নেই।তবে এটুকু জেনে রাখো আমি তোমাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।কখন কিভাবে সেটাও জানা নেই।লন্ডনে যাওয়ার পর প্রতিটা মুহূর্ত তোমায় মিস করেছি।অনুভব করেছি।তোমার জন্যে উন্মাদ হয়েছি।হয়েছি বেপরোয়া।তোমাকে ছাড়া আমার পক্ষে থাকা আর সম্ভব নয়।
তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো রোশনি।হাসলো অধিরও।
রোশনি চোখ খুলে দূরের অন্ধকারে তাকালো।বললো,
-ওই যে জমাট বাধা অন্ধকার দেখছেন মিষ্টার চৌধুরি? নিস্তব্ধ কালো অন্ধকার।আমার জিবনটাও ঠিক ওই অন্ধকারে এসে থেমেছে।যেখানে সবকিছু অন্ধকারেই ঢাকা থাকবে।আলোর দেখা মিলবে না আর।
অধির হাসলো।রোশনির দিকে একপলক তাকিয়ে আবারো দুরের অন্ধকারে দৃষ্টি রাখলো।বললো,
-তোমার চোখে শুধু অন্ধকারই পড়লো রোশনি? তাহলে তো বলতে হয় তোমার দৃষ্টি শক্তি একেবারেই নেই।ওই দেখো দুরের ওই জমাট বাধা অন্ধকারকে বিন্দু বিন্দু আলো দিয়ে সাজিয়ে তুলছে এক ঝাঁক জোঁনাকি।
আমিও নাহয় তোমার অন্ধকার জিবনে জোঁনাকি হয়ে আসবো।আলোকিত করবো তোমার মনের অন্ধকার শহরকে।
রোশনি কিছু বললো না।একে বুঝিয়ে লাভ নেই।যে নিজেই প্রতিজ্ঞা করে বসে আছে সে বুঝবে না তাকে কি করে বুঝাবে রোশনি।আবারো নিরবতায় ঢেকে গেলো পরিবেশ।কিছুক্ষন পর মুখ খুললো রোশনি,
-নকুলকে কি বেশি কষ্ট দিচ্ছেন?
অধির রেলিং এ ভর দিয়ে দাড়ালো।বললো,
-আপাততো ও সেইভ আছে।কতোক্ষন সেইভ থাকবে সেটা তোমার সিদ্ধান্তের উপর ডিপেন্ড করছে।
রোশনি তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।বললো,
-আমি কি ওর সাথে একটু কথা বলতে পারি?
-সেটা এখন সম্ভব নয়।আগে বিয়েটা হোউক তারপর যতো ইচ্ছে কথা বলো।
রোশনি আর কিছু বললো না।ভেতর থেকে বিষাক্ত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।আজ নিজেকে সবচেয়ে অসহায় মনে হচ্ছে।আর সামনে দাড়ানো ব্যক্তিটিকে সবচেয়ে জঘন্য।
-একটু খাবার পাওয়া যাবে? বড্ড খিদে পেয়েছে।
অধির চমকালো।তার খেয়ালই ছিলো না রোশনির খাবারের ব্যাপারে।সেই দুপুর থেকে মেয়েটা না খেয়ে।কে জানে সকালের খাবারটাও খেয়েছিল কি না?
-কি খাবে বলো।
-খেয়ে বেঁচে থাকার মত কিছু একটা হলেই চলবে।
অধিরের বুক কাঁপলো।খুব গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।বললো,
-আমি পাস্তা আর কফি করে আনছি।
প্রায় পনেরো মিনিটের বেশি সময় পর অধির খাবার হাতে রুমে এলো।রোশনিও বিনা বাক্যে খেতে শুরু করলো।অধির শুধু তাকিয়েই রইলো ওর দিকে।মনের মধ্যে একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। কোথাও সে ভুল করছে না তো? মেয়েটাকে কি সে কষ্ট দিয়ে ফেলছে? পারবে তো মেয়েটার মুখে আবার হাসি ফুটাতে? কোথাও ভুল হচ্ছে না তো? পরোক্ষনেই মন উত্তর দিলো নিজের ভালা থাকাকে ভুল বলে না আর নাই খারাপ বলে।সবারই ভালো থাকার অধিকার আছে।
রোশনি খাবার শেষ করে পানি খেলো।নাক আর উপরের ঠোঁটের মাঝ বরাবর লেগে থাকা পানিটুকু হাত দিয়ে মুছে বলে উঠলো,
-বিয়েটা কখন করছেন ?
-কিছুক্ষন পরেই।
ঘড়িতে তখন আটটা বাজে।ড্রয়িংরুমের সোফায় কাজি আর একজন উকিল বসে আছেন।ওনাদের ঠিক সামনের সোফায় বসে আছে অধির।তার পাশেই শিড় দাড়া সোজা করে দাড়িয়ে আছে শাহিন সহ আরো দুজন গার্ড।কাজি নড়ে চড়ে বসলেন। অধিরের দিকে তাকিয়ে বললেন,
-অনেকক্ষন তো হলো।এবার পাত্রীকে ডাকুন।
অধির ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে উঠতে যেতেই চোখ গেলো সিড়ির দিকে।রোশনির গায়ে আগের জামাটা দেখেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো। সে জানতো রোশনি বিয়ের শাড়ি চুড়ি পড়বে না।রোশনি কিছু না বলে সোজা এসে অধিরের পাশে বসলো।দেহে যেন প্রান নেই।জিবন্ত এক রোবট।চোখে মুখে অনুভূতি নেই।
-বিয়েটা শুরু করুন কাজি সাহেব।
শাহিনের কথায় সোজা হয়ে বসলেন কাজি । অধিরের দিকে তাকিয়ে ইতস্তত করে বলে উঠলেন,
-কিন্তু উনি তো বিয়ের সাজ সাজে নি।উনি কি রাজি নয় বিয়েতে? মেয়ে রাজি না থাকলে বিয়েটা আমি…
কাজি সাহেবকে কথা শেষ করতে দিলো না শাহিন।চোখের পলকে কাজি সাহেবের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সোজা হয়ে দাড়ালো সে।কাজি পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ মুখের ঘাম মুছলেন।এরটর কাবিন নামা তৈরি করতে শুরু করলেন।অধিরের বাবা মার নাম সহ আরো যা যা তথ্য লাগলো সব কিছুই শাহিন সামলালো।কাজি সাহেব এবার রোশনির বাবা মার নাম জানতে চাইলেন।শাহিন নিচু গলায় অধিরকে বললো,
-স্যার ম্যামের বাবা মার নাম জানতে চাইছেন উনি।যদি বলে দিতেন।
অধির রোশনির দিকে তাকালো।রোশনি আগের মতোই রোবট স্টাইলে বসে আছে।
-রোশনি তোমার বাবা মার নামটা তো আমার জানা নেই। কান্ডলি যদি বলতে।
রোশনি নির্বিকার ভঙ্গিতে বলে উঠলো,
-আমার বিষয়ে এতো কিছু জানেন আর এটা জানেন না? খোঁজ করা দরকার ছিলো।
-রোশনি এখন খোঁজ নেওয়ার সময় নেই।আর তুমি থাকতে আলাদা করে খোঁজ নিতে যাবো কেন?নামটা বলো প্লিজ।
রোশনি তাছিল্যভরা হাসি হাসলো।আবারো আগের মতো বসলো।অনুভূতি শূন্য সুর তুলে বললো,
-আমি জানি না।
-রোশনি প্লিজ নামটা বলে দাও।বিয়েটা তোমার করতেই হবে।সো অযথা আমাকে রাগিও না।
-মিথ্যে বলছি না মিষ্টার চৌধুরি।সত্যিই জানি না আমার বাবা মার নাম।বাবা মা থাকলে আজ কি আমার ভাগ্য আমায় এখানে এনে দাঁড় করাতো?আমার কোনো পরিচয় নেই।আশ্রমে বেড়ে ওঠা পরিচয়হীন এতিম মেয়ে আমি।
-আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।তুমি যদি তোমার বাবা মা সম্পর্কে নাই জানো, যদি ছোট থেকে আশ্রমেই বড় হও তাহলে আয়াশ কিভাবে?
-আয়াশ আমার কেউ না মিষ্টার চৌধুরি।রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই ওর সাথে।যেটা আছে সেটা আত্মা আর ভালবাসার সম্পর্ক।আমার প্রান।আমার সেই প্রানটাকেই আটকে রেখেছেন আপনি।
কথাটা শেষ হতেই রোশনির চোখ থেকে একফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো।তবুও আগের মতোই রোবট হয়ে বসে রইলো।রোশনির কথায় থমকালো অধির।থমকালো শাহিন।অধিরের বুকের ভেতর যেন দুমরে মুচরে যাচ্ছে ক্রমাগত।এটা সে কি করলো?যার সাথে রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই তাকেই আটকে রেখে রোশনিকে বাধ্য করছে বিয়ের জন্য? অধিরের চোখ টলমল করে উঠলো।আয়াশকে রোশনি এতোটাই ভালোবাসে যে সে এই বিয়েটাও করে নিচ্ছে।এতেই প্রমান হয় সে আয়াশকে ঠিক কতোটা ভালবাসে।অধির দুহাতে মুখ ঢেকে লম্বা শ্বাস নিলো।নিজেকে সামলে কাজির দিকে তাকালো।
-বাবা মার নাম ছাড়াই বিয়ে হবে কাজি সাহেব।আপনি শুরু করুন।
-কিন্তু বাবা পিতা মাদার নাম ছাড়া কিভাবে…
কাজিকে কথা শেষ করতে না দিয়ে বললো অধির,
-বিয়েটা ওর সাথে আমার হচ্ছে।ওর নামটাই যথেষ্ট।আপনি শুরু করুন।
কাজি সাহেব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।এভাবে তিনি কোনো বিয়ে সম্পন্ন করেন নি।ভাগ্যের ফেরে আজ তাকে এটাও করতে হচ্ছে।
অবশেষে বিয়েটা সম্পন্ন হলো।উকিল কিছু পেপার এগিয়ে অধির আর রোশনির সিগনেচার নিয়ে বেরিয়ে গেলেন।কাজিও গেলেন পিছনে পিছনে।রোশনি আগের মতোই সোফায় বসে আছে।চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে।একটুও নড়ছে না মেয়েটা।শক্ত হয়ে বসে আছে।চোখের পলকও পড়ছে না।কবুল বলার সময় মনে হচ্ছিলো কেউ তার কলিজা ধরে টান দিচ্ছে।রোশনির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো অধির।মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো রোশনির চোখ থেকে পানি ঝরতে দেবে না সে।নিজের ভালবাসায় এমন ভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নেবে যে রোশনিও বাধ্য হবে তাকে ভালবাসতে।আজ অধির যেমন তার ভালবাসায় সব সীমা পার করে দিয়েছে তেমন রোশনিও অধিরের ভালবাসায় আসক্ত হয়ে সব সীমা পার করে দেবে একদিন।সেই দিনটার অপেক্ষা শুধু।অধির জানে সেই দিনটা খুব কাছেই।অধির রোশনিকে কোলে তুলে নিয়ে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলো।রোশনি কোনো রিয়্যাক্ট করলো না।চোখ তুলেও তাকালো না।রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দরজা লক করতেই উঠে দাড়ালো রোশনি।অধিরকে কাছে আসতে দেখে চেঁচিয়ে উঠলো,
-বিয়েটা তো জোর করে করেই নিলেন।এখন জোর করে পুরুষত্ব দেখাবেন বুঝি? এই সুন্দর শরিরটার জন্যেই তো এতো কিছু।তাহলে দেরি কেন? ঝাপিয়ে পড়ুন আমার উপর।খুবলে খুবলে খেতে শুরু করুন হিংস্র পশুর মত।
নিজের গাঁ থেকে ওড়নাটা ছুঁড়ে ফেলে দিতেই কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে ওড়নাটা তুললো অধির।রোশনির এমন রিয়্যাক্ট করাটা স্বাভাবিক।ওড়নাটা নিয়ে রোশনির মাথায় দিতেই অধিরের বুকে ধাক্কা দিলো রোশনি।এক পা পিছিয়ে গেলেও খুব সাবধানে সামলে নিলো নিজেকে।অধির করুন চোখে তাকালো।রোশনি ছুটে এসে অধিরের গলার কাছে টি-শার্ট খামচে ধরলো।বললো,
-কেন করলেন এটা আমার সাথে? কেন করলেন? কি দোষ করেছিলাম আমি? কি দোষ করেছে জয় আর আয়াশ? কেন সবাইকে কষ্ট দিচ্ছেন? নিজের সুখের জন্যে আপনি বাকি সবাইকে অন্ধকার গর্তে ফেলে দিলেন?কেন এলেন আমার জিবনে? আমার জিবনটাই কেন তছনছ করে দিলেন?আমার ভাইটাকে অবধি ছাড়লেন না।মানুষ এতোটা নিচে কি করে নামতে পারে? কি করে? কেন করলেন আমার সাথে এমন? আমি আপনাকে কক্ষনো ক্ষমা করবো না।কক্ষনো না।
কথাগুলো বলতে বলতেই শব্দ করে কেঁদে উঠলো রোশনি।আর সেই সাথে অধিরের বুকে কিল-ধাক্কা দিতে লাগলো।অধির মুখ বুজে সব সহ্য করছে।দোষটা তো তারই।রোশরিকে শান্ত করতে অধির রোশনির হাতদুটো পেছনে ঘুরিয়ে কোমরের পেছনের দিকে চেপে ধরলো।রোশনির চিৎকার করা কান্নার আওয়াজে বুকের ভেতর তোলপাড় হচ্ছে অধিরের।সুুঁচের মত বিঁধছে প্রতিটা কথা।রোশনি কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে অধিরের বুকে মাথা রাখলো।এতোক্ষন হাহা করা বুকটা একটু যেন শান্তির ছোঁয়া পেল।রোশনি নিজের শরিরের ভর ছেড়ে দিতেই দুকদম পিছিয়ে গেলো অধির।দেওয়ালে পিঠ আটকে রোশনিকে মিশিয়ে নিলো নিজের সাথে।রোশনির পা দু’টো অবশ হয়ে আসছে।এতো মানসিক চাপ সহ্য হচ্ছে না শরিরে।রোশনির পা ভেঙে আসতেই অধির রোশনিকে নিয়ে ওখানেই বসে পড়লো।রোশনির মাথাটা তখনও অধিরের বুকে।এখনো কেঁদে চলেছে সে।অধির দুহাতে ভালো করে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।কাঁদদে কাঁদতে একটা সময় ঘুম নেমে এলো চোখের পাতায়।ক্লান্তি আর মানসিক চাপে শরির অনেকটাই দূর্বল তার।ঘুমের মাঝেও ফুপাতে লাগলো মেয়েটা।রোশনির মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো অধির।রোশনির মাথায় শুভ্র চুমু দিয়ে দেয়ালে হেলান দিলো।গত দুদিন ধরে ঘটা ঘটনা গুলো ভেসে উঠলো চোখের পাতায়।একটা সময় সেও পাড়ি জমালো ঘুমের রাজ্যে।নিয়তি বড্ড অদ্ভুদ।নিজের নিয়মের বাইরে সে চলতেই চায় না।এতে কে ভালো থাকলো আর কে খারাপ তাতে তার বিন্দু মাত্র যায় আসে না।যার জন্যে রোশনির নিয়তি আজ এখানে এসে দাড়িয়েছে।যে রোশনিকে কষ্ট দিচ্ছে নিয়তি আজ তার বুকেই এনে ফেলছে তাকে।যেই মানুষটা কষ্ট দিচ্ছে তার বুকেই মাথা রেখে নিজের কষ্ট কমাতে চাইছে।
চলবে…….