সিন্ধু ইগল – (১৩) ইসরাত জাহান দ্যুতি

সিন্ধু ইগল – (১৩)
ইসরাত জাহান দ্যুতি

৩৩
বিরক্তিকর আওয়াজ বেজে চলেছে কানের কাছে অনর্গল। থামাথামির কোনো লক্ষণ নেই। এদিকে আবার মনে হচ্ছে গালের ওপর কারও গরম নিঃশ্বাস পড়ছে৷ চোখ বন্ধ অবস্থাতেই মাধু চেহারা কুঁচকে বিরক্তি প্রকাশ করে খেঁকিয়ে উঠল জাদুর ওপর, ‘স্টপ ইট ক্রাম্মি গার্ল!’
তাতে যেন এবার আওয়াজটা মাধুর আরও কাছে এসে বাজতে লাগল। চোখদু’টো খুলতে বাধ্য হলো সে। বুবন তার কাছেই তার মুখের পাশে ফ্লোরে মুখটা পেতে চেয়ে আছে তার দিকে। অ্যালার্ম ঘড়িটা পা দিয়ে টেনে তার আরও কাছে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। মাধুর আর বুঝতে বাকি নেই, জাদু বুবনকে এমনটা করতে শিখিয়ে দিয়ে গেছে। রাগ আর বিরক্তি নিয়ে ফ্লোর থেকে উঠে বসল সে। কাল রাতে বরফ কুচি আর পানি ছাড়া ড্রিঙ্কস গলায় ঢেলে আর বসে থাকতে পারেনি৷ গলা, বুক জ্বলতে জ্বলতে পেটের ভেতর যেন নেমে যাচ্ছিল মদটুকু। শুয়ে পড়ার পর কখন যে ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিল, তা টেরও পায়নি। মাথা ভার হয়ে আছে তার এখনো। থম ধরে কিছুক্ষণ মাথা নত করে বসে থেকে তারপর দৃষ্টি ঘরের চারপাশে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে বুঝল, সবে মাত্র ভোর হয়েছে। এত জলদি জাদু রোজ কীভাবে যে ওঠে, তা সে কোনোভাবেই ভেবে পায় না। অথচ, নেশাটা জাদু তার চেয়ে বেশি করে। শারীরিকভাবে প্রচুর খাটাখাটুনিও জাদুই বেশি করতে পারে তার থেকে৷ বলা যায় মানসিক আর শারীরিক দু’ভাবেই জাদু তার থেকে বেশি শক্তপোক্ত৷

নেশার ভাব তো পুরোপুরি কাটেইনি। শরীরটাও বড্ড দুর্বল লাগছে। আজ কীভাবে দিন শুরু করবে সে কে জানে! মনে হলো ঘরে জাদু ঢুকেছে। মাথা তুলে দেখতে পেল, জগিং স্যুট পরে জাদু হাতে করে গ্লাস আর মগ নিয়ে এগিয়ে আসছে তার দিকে। দাঁড়িয়ে পড়ল সে। জাদু তার কাছে এসে প্রথমে এক গ্লাস লেবু পানি দিলো। কোনো প্রশ্ন না করেই মাধু তা ঢকঢক করে গিলে ফেলল। টি-টেবিলে কফির মগটা ঢেকে রেখে জাদু বলল, ‘তুই দিন দিন ফুলে যাচ্ছিস।’
কথাটা শুনে মাধু মাথা চুলকাতে চুলকাতে চেহারায় বিরক্তিভাবটা ফুটিয়ে রেখেই জানালার বাইরে চেয়ে বলে উঠল, ‘আমার ফিটনেস ঠিক করতে রোজ রোজ এক্সারসাইজের প্রয়োজন নেই। এত ভোরে ডেকে তুললি কী কারণে?’
-‘মনে হলো আজ থেকে তোরও দৌড়াতে যাওয়া উচিত।’
অসহ্য বিরক্তিভরা চাউনিতে মাধু তাকাল জাদুর দিকে। আর তারপরই জাদুর স্নেহপূর্ণ মুখটা দেখে কপালের ভাঁজটা মসৃণ হলো তার। কতটা উজ্জ্বল আর আনকোরা দেখাচ্ছে জাদুর মুখটা! কে বুঝবে, কাল এই মেয়েই নেশায় বিভোর ছিল? হঠাৎ মাধুর চোখ পড়ল জাদুর ঠোঁটের ওপর। এই তিনদিনে আবার কোনোভাবে আহত হয়েছিল না কি ও? জিজ্ঞেস করল, ‘তোর ঠোঁটে কী হয়েছে? আবারও কি কোনো ঝামেলা হয়েছিল?’
জাদু কথাটাকে গুরুত্বহীন ভাবে নিয়ে বলল, ‘নাহঃ!’
-‘তাহলে ঠোঁটের ভেতর রক্ত জমে অমন কালো হয়ে আছে কেন?’
ট্রাওজারের পকেট থেকে ফোনটা বের করে সময় দেখতে দেখতে সে বলল, ‘আরে ধুরঃ! কী নিয়ে পড়লি? গত পরশু রাতের পর থেকে দেখছি এই অবস্থা ঠোঁটের।’
তারপর ফোন থেকে নজর তুলে সেটা আবার পকেটে ঢুকিয়ে নিতে নিতে বলল, ‘আমি বের হচ্ছি। চাইলে আসতে পারিস।’
বলেই এগিয়ে গেল দরজার দিকে। মাধু ঠিক জাদুর মতো অত সহজ করে নিতে পারল না ঠোঁটে রক্ত জমাট হওয়ার বিষয়টা। পেছন থেকেই ওকে ডেকে আবার জিজ্ঞেস করল, ‘গত পরশু রাতে তুই বাসায় ছিলি?’
-‘হুঁ, একটু রাত করে ফিরেছিলাম।’
-‘তারপর কী করেছিলি?’
জাদু দরজার মুখে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। মাধুর দিকে ভ্রু কুঁচকে চেয়ে ভার কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, ‘কী হয়েছে?’
-‘কিছু না। এমনিই জিজ্ঞেস করছি।’
-‘গলা ভেজাতে ভেজাতে বুবনকে নিয়ে কখন যেন লনেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম ঘাসের ওপর।’
-‘আমি যাওয়ার পর তুই আর বাংলোর কোথাও লাইট জ্বালিয়ে রাখিসনি, তাই না?’
-‘অত আমার খেয়াল থাকে না। এত জেরা করছিস কেন হঠাৎ? বিরক্ত লাগছে।’
বলে চলে গেল সে৷ মাধু চিন্তিত চেহারায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ফ্রেশ হতে চলে গেল। নেশা ভাবটা যেন পুরোপুরি কেটে গেছে এইটুকু সময়ে।

আজ সেও দৌড়ানোর জন্য রেডি হয়ে বাইরে চলে এল। বাংলোর মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে মেইন রাস্তায় এসে দাঁড়াতেই দেখতে পেল জায়িনকে। কালো টি শার্ট আর ট্রাওজারে জায়িনকে দিনের আলোয় যেন নতুন রূপে আবিষ্কার করল সে। দৌড়ে আসছে জায়িন তার বাসার দিক থেকে। সে নজর সরাতে ভুলে গেল কী করে? কারণ, এর মাঝেই জায়িন তাকে দেখে তার কাছে চলে এসেছে। তার সুন্দর হাসিটা দিয়ে বলে উঠল, ‘সুপ্রভাত সুন্দরী দুই।’
মুগ্ধতা থেকে বেরিয়ে মাধু হালকা হেসে বলল, ‘সুপ্রভাত।’ তারপর জিজ্ঞেস করল, ‘সুন্দরী দুই কী?’
জায়িন মাধুর মৃদুহাস্য ঠোঁটটার দিকে এক ঝলক চেয়ে বলল, ‘মাধু। এবার নিশ্চয়ই ভুল নই?’
মাধু উত্তরে হাসল আরও বেশি করে। উত্তর দিলো, ‘একদম সঠিক। কিন্তু ওই যে আগের সম্বোধনটা কী ছিল?’
-‘দুইবোনই সুন্দরী। তাই একজন এক, আরেকজন দুই। তো প্রথমে সুন্দরী দুই সম্বোধনটাই চলে এলো মুখে।’
মাধুর ঠোঁটের কোণ থেকে আজ হাসি সরছে না। আবার জায়িনের ওপর থেকেও আজ নজর সরছে না।

জায়িন মাধুর দৃষ্টি লক্ষ করে জিজ্ঞেস করল, ‘আজ কি খুব হ্যান্ডসাম লাগছে আমাকে?’
-‘হ্যাঁ, স্বরূপে এসেছ আজ নির্দ্বিধায়। তাহলে আমার সন্দেহটাই ঠিক ছিল, তাই তো?’
জায়িন মিটিমিটি হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করল, ‘প্রেমে পড়ে যাওনি তো আবার?’
এ কথাতেও মাধুর ঠোঁটে হাসি লেগে থাকল, ‘সুন্দরের দিকে নজর আটকাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। ধন্যবাদ, স্বরূপে এসে দেখা দেওয়ার জন্য।’
জায়িন উত্তর দিলো না। মৃদুহাস্য চেহারায় চেয়ে ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করল দৌড়াতে যাবার জন্য।

৩৪
বাসায় ফিরেই জায়িন সকালের নাশতা করে ঢাকায় উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দেয়। সারা বাড়িতে সিসি ক্যামেরা জুড়ে দিয়েছে এ ক’দিনে। গার্ডের সংখ্যাও বাড়িয়ে দিয়েছে। সে বাড়া থাকাকালীন রেজা তার কাজ সামান্য কিছুটা এগিয়ে রেখেছে। রাজিয়ার মৃত্যুর পেছনের কারণ নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। জায়িনের সে নিয়ে অবশ্য একটুও মাথাব্যথা নেই। মৌপ্রিয়ার মৃত্যুর পর সেই খবর যখন তার বাড়ি এসেছিল, জান্নাতি বেগম তা শুনে মৌপ্রিয়াকে দেখার জন্য যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জায়িন তাও যেতে দেননি তাকে। সে যেমন নির্বিকার রূপ দেখিয়েছিল, মা’কেও তেমনই থাকতে বলেছিল।

রেজা জায়িনের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন তথ্য জানিয়ে যাচ্ছে ল্যাপটপে দেখিয়ে দেখিয়ে। জায়িনের পুরো টিম এক রকম পরিকল্পনা করে রেখেছে টেরোরিস্ট চক্রটাকে ধরার জন্য। আর রেজা এবং সে ভেতরে ভেতরে আরেকরকম পরিকল্পনা সাজিয়ে নিচ্ছে এর মাঝে। দু’টো পরিকল্পনা নিয়ে তারা অতি শীঘ্রই নেমে পড়বে। ওদের কাজের মাঝে সিফাত একবার জায়িনের কেবিনে এসে কয়েক মিনিটের জন্য দেখা করে গেছে। কাজ শেষে রেজা দু’মগ কফি নিয়ে এল। জায়িনকে এক মগ এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘রাজিয়া ম্যামের মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায়ভার তো হাফিজ স্যারের শত্রুপক্ষের ওপর যাচ্ছে।’
জায়িন কফির মগে চুমুক দিতে দিতে জবাব দিলো, ‘স্বাভাবিক, সন্দেহের তিরটা ওদিকেই যাবে।’
-‘রাজিয়াকে খুন করার প্রধান কারণটা কী ওদের দু’বোনের? শুধু কি এটাই, যে আপনাকে আপনার মিশন থেকে ইনঅ্যাটান্টিভ করার জন্য আর ভয় দেখানোর জন্য?’
জায়িন হালকা কাশি দিয়ে গলাটা ঝেরে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসল। এক হাতের আঙুলের ফাঁকের আরেক হাতের আঙুল গুঁজে আঙুলগুলো নাড়াতে নাড়াতে জবাব দিলো, ‘সেদিন সকাল থেকেই লক্ষ করেছিলাম দু’তিনজন লোক আমার গাড়ির আশেপাশেই ঘুরছে। আমি ব্যাপারটা হাতেনাতে ধরার জন্য না বোঝার ভান করেছিলাম। এর মাঝেই রায়হান স্যার এসে ডাকতেই ওনার সঙ্গে কথা বলতে বলতে দূরে গিয়ে দাঁড়াই। তখন একজন এসে আমার গাড়ির জানালার কাছে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল৷ আমি চোখের পলক দু’মিনিটের জন্য সরাতেই দেখি সে আর নেই। তারপর গাড়িটা দু’জন কনস্টেবলকে দিয়ে ভালোভাবে চেক করাই। ওরা সন্দেহজনক কিছুই পায় না। আমি নিজেও গাড়ির ভেতর ভালোভাবে চেক করি। তেমন কিছুই চোখে পড়ল না। বুঝতে পারলাম, ওরা আমাকে নজরে নজরে রাখছিল শুধু। রাজিয়ার সঙ্গে দেখা হবার পর ও যখন এসে আমার কোলে বসে রোম্যান্সে ব্যস্ত তখন আমার নজর গাঁথল ওর শাড়ির আঁচলে। শাড়িটাও ছিল কালো। স্পাই ক্যামেরা কী করে যেন ফিট করে রাখা ছিল, তা সহজে বোঝা যাচ্ছিল না। যতক্ষণে ওটা টান দিয়ে খুলে নিই, ততক্ষণে সিনেমা ওদিকে দেখা শুরু হয়ে গেছে।’
-‘তার মানে ওরা আপনার ওপর কতজন মিলে নজরদারি করছে তা আমরা চাইলেও জানতে পারব না আর বুঝতে পারব না?’
-‘উহুঁ, আমার ওপর নজরদারি করে বিশেষ ফায়দা পাবে না। সমস্যাটা হয়েছে এই স্লাটগুলোকে নিয়ে। যখন তখন যেখানে সেখানে দেখলে গায়ের ওপর হামলে পড়ে। রাজিয়াকে সন্দেহ করার কারণ ছিল। এর মাঝে যতবারই ওর সঙ্গে দেখা হয়েছে আনফরচুনেটলি, ততবারই ডানে বামে না দেখে এসে জাপটে ধরেছে। এটাই ওদের চোখে পড়েছে। আর আমি শিওর। সিফাত, ফারজানা, এদের ব্যাপারেও অলমোস্ট জেনে গেছে ওরা। আমার এখন ভাবনা হচ্ছে, ওরা এরপর কী করতে পারে? রাজিয়া আজ কিংবা কাল হলেও আমার হাতেই মরত। তাই এভাবে ওর মৃত্যু হওয়াতে আমারই হাত নোংরা হওয়া থেকে রেহাই পেলো।’
-‘তাহলে এবার গেমটা খেলা হবে কী করে ওদের সঙ্গে? অন্য মেয়ের সঙ্গে দেখার পর নিশ্চয়ই আপনার হবুবউ সিন ক্রিয়েট করবে?’
জায়িন রেজার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে স্মিতহাস্য চেহারা করে বলল, ‘এই গেমের সব থেকে মজার ব্যাপারটা এখনো বুঝলে না? আমিও জানি ওরা ক্রিমিনাল। আর ওরাও জানে আমি ডিটেক্টিভ এজেন্ট। কিন্তু তারপরও আমরা কেউ কারও থেকে দূরে থাকতে পারছি না। কারণ হলো, আমি আমার প্রেমের ফাঁদে অলমোস্ট একজনকে আটকে ফেলেছি। তবে অন্যজন ভীষণ চতুর। দেখতে হবে না? সে জায়িন মাহতাবের রানি বলে কথা! আমার সমকক্ষ না হলে কি হয়?’
-‘শেষ পর্যন্ত কে যে কট খাবে আল্লাহ পাক জানেন।’
অনিশ্চিত চিন্তাধারা প্রকাশ পেল রেজার কণ্ঠে।
জায়িন তাগিদ দিয়ে উঠে পড়ল, ‘ওদের নেক্সট প্ল্যানটা সম্পর্কে আইডিয়া করতে হবে। প্রচুর কাজ আছে। সবাইকে কনফারেন্স হলে চলে আসতে বলো তো।’

৩৫
কাজ শেষে রাত করে হলেও জায়িন ঢাকাতে থাকে না। চলে আসে গাজীপুর। ভোরের দিকে আজ বাড়ি পৌঁছল সে। তবে তার শরীর আর মন দুটোই ভীষণ করে পাশের বাংলোর সুন্দরী মেয়েটাকে পেতে চাইছে আর দেখতেও ইচ্ছা করছে। জামা কাপড় পালটে ফ্রেশ হয়েই অতি দ্রুত সে জাদু মাধুর বাংলোতে গিয়ে হাজির হলো। কলিংবেল চেপে ভেতরে ঢোকার জন্য ধৈর্য নেই তার একেবারেই। জাদুর ঘরের জানালাটা সব সময়ই খোলা থাকে। খুব সহজেই সেই জানালা টপকে ঘরে চলে আসা যায়। তা মাথায় আসতেই দেরি না করে জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ল সে। আলো আঁধারি ঘরটাতে দেখতে পেল বিছানার এক কোণে গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে জাদু। মাথার কাছেই বুবন শুয়ে আছে। এগিয়ে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসল সে, জাদুর মুখোমুখি। স্লিভলেস লেডিস টি-শার্ট পরনে বলে ফর্সা গলা, ঘাড়, বাহু সবই দেখতে পাচ্ছে জায়িন। আজ ভালো করে সে এটাও দেখতে পেল, জাদুর বাম বাহুতে গুলি লাগার শুকিয়ে যাওয়া কালো একটি ক্ষত৷ কত সময় ধরে চেয়ে রইল ওই ক্ষতের দিকে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে সেই ক্ষতের জায়গায় স্পর্শ করল সে।

প্রতিদিন এই সময়েই জাদুর ঘুম আপনাআপনি ভেঙে যায়। আজও তাই হলো৷ তবে সেটা গায়ে কারও স্পর্শ পেয়েই। ঘুম ঘুম চোখে হঠাৎ করে কোনো ছেলেকে দেখেই চমকে উঠল সে। চমকে ওঠার ফলাফলস্বরূপ নিচে পড়ে যেতে চাইল তখন। বিছানার এক কোণায় ছিল বলেই জায়িন চট করেই ওকে ধরে ফেলল। আর বলল, ‘এত বড়ো বিছানার এই এক কোণটায় বেশি পছন্দ না কি?’

এমন মুহূর্তে জায়িনকে দেখে আর তার এত সহজ স্বাভাবিক চেহারায় কথাটা শুনে বিস্ময় ক্ষণ কাটিয়ে উঠতে পারল না। জায়িনও নিষ্পলক চেয়ে রইল ওর দিকে। তারপরই আরেক বিস্ময়কর কাণ্ড ঘটাল সে। জাদুর হতবাক মুহূর্তের সুযোগ নিয়ে টুপ করে ওর গালে চুমু খেয়ে ছোটো করে একটা কামড়ও বসিয়ে দিলো। তারপর বলল, ‘কামড়টা ছিল রাতে আমার ভিডিয়ো কল পিক না করার জন্য।’

_______
***পড়ার পর কি পাঠকরা মন্তব্য করার মতো কিছুই খুঁজে পান না?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here