সুইটহার্ট-পর্ব:১২

0
1064

#সুইটহার্ট
#Sohani_Simu
১২.

বিকেলে রুমের মধ্যে টেবিলে বসে পড়ছিলাম তখনই দরজায় টোকা পড়লো।আমি দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি শুভ নামের সেই ছেলেটা আবার এসেছে।তবে আজ একটু ভাল হয়ে এসেছে।নীল কালার টিশার্ট আর নীল জিন্স প্যান্ট পরে আছে। চুল গুলো কপালে পরে আছে।থুতনিতে কালো তিলটা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির মধ্যেও ভালই বোঝা যাচ্ছে।হাতের ব্রেসলেট গুলোও খুলে রেখে একটা কালো ঘড়ি পরে আছে।আমি কিছু বলার আগেই ছেলেটা ভেতরে আসতে আসতে বলল,

“কি করছো?আমাদের সাথে যাবা?আপু আর আমি বাহিরে ঘুরতে যাচ্ছি,তুমিও চলো?আপু রেডি হচ্ছে।”

ঘুরতে তো আমার খুবই ভাল লাগে কিন্তু এখন যদি ঘুরতে যাই শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে আর আস্ত রাখবেনা।এখন চারটে একান্ন বাজে পাঁচটা বাজলে শ্রাবণ ভাইয়ার কাছে যেতে হবে,প্রোগ্রামে তাই লিখা আছে।আমি শুভর দিকে তাকিয়ে বললাম,
“না যাবোনা,আপনারা যান।”

বলেই আমি বইয়ের দিকে তাকালাম।শুভ আমার গালের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত হয়ে বলল,
“গালে কি হয়েছে তোমার?এভাবে লাল হয়ে আছে কেন?কে মেরেছে?”

প্রায় দেড়ঘন্টা আগের ছয় নাম্বার থাপ্পড়ের কথা মনে হতেই আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।তাও আমি গালে হাত দিয়ে শান্ত কন্ঠে বললাম,”কিছু হয়নি।
শুভ আমার পাশে চেয়ার টেনে বসে বলল,”কিছু হয়নি বললেই হলো?আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আঙুলের ছাপ।কে মেরেছে একবার বলো আমাকে,আমি তাকে দেখে নিবো।”

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,”কি দেখবেন?আপনিও তাকে থাপ্পড় মারবেন?”

শুভ বলল,”থাপ্পড় মারার মতো মানুষ হলে অবশ্যই মারবো।তুমি বলো কে মেরেছে?কেন মেরেছে?”

আমি একটু নড়ে চড়ে বসে বললাম,”আপনি সত্যি তাকে মারতে পারবেন?আমার তো মনে হচ্ছে আপনি তার এক ধমক খেলে এক দৌঁড়ে বাপ বাপ বলে নিজের বাসায় চলে যাবেন।”

শুভ ভাব নিয়ে বলল,”তুমি আমাকে চিনো না তাই এমনটা বলছো।তোমাকে একদিন আমার সাথে ঘুরতে নিয়ে যাবো তখন দেখো আমি কি।পুরো ভার্সিটি আমাকে ভয় পায়।”

আমি মনে মনে ভাবলাম তাহলে একে দিয়ে শ্রাবণ ভাইয়াকে একটু শায়েস্তা করলে কেমন হয়?হুম খুব ভাল হয়।আমি শয়তানি হেসে বই বন্ধ করে শুভর দিকে তাকিয়ে বললাম,
“আপনি তাকে ছয়টা থাপ্পড় মারতে পারবেন?”

শুভ ভাব নিয়ে বলল,”মনে হয় পারবোনা কারন আমার একটা থাপ্পড় খেলে কেউ আর সেন্সে থাকেনা।আমি আবার সেন্সলেস মানুষদের মারতে পারিনা।”

আমি খুশি হয়ে বললাম,”ওয়াও তাহলে তো আপনাকেই আমার দরকার।”

শুভও খুশি হয়ে বলল,”ইয়াহ আমি তো তোমারই,তুমি শুধু একবার বলো কে মেরেছে তারপর দেখো আমি কি করি।”
তখনি শ্রাবণ ভাইয়া দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলল,”ওকে আমি মেরেছি?”

আমি চমকে দরজার দিকে তাকালাম।শ্রাবণ ভাইয়া একটা কালো থ্রি কোয়াটার প্যান্ট আর সাদা কালো ডোরাকাটা ফুলহাতা টিশার্ট পরে বুকে হাত গুজে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।উনার হাব ভাব দেখে তো মনে হচ্ছে উনি অনেক আগেই এখানে এসেছেন।আমি উনার দিকে তাকিয়ে মিথ্যে হাসার চেষ্টা করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,
“আপনি চলে এসেছেন?আমি এই শুভ ভাইয়ার জন্য পড়া কমপ্লিট করতে পারিনি,এখন কি হবে?”

শুভও চেয়ার টেনে দাঁড়িয়ে রাগী কন্ঠে বলল,”আপনি কে?কেন মেরেছেন ওকে?”

শ্রাবণ ভাইয়া সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললেন,”আমি শাহরিয়ার শ্রাবণ ওর ফুপ্পির ছেলে।”

শুভ উনার কাছে যেতে যেতে বলল,”অহ আপনিই শ্রাবণ?তা ভাই ওকে এভাবে মেরেছেন কেন?ওর নিজের ভাই ওকে মারেনা আর আপনি ফুপাতো ভাই হয়ে ওকে কোন সাহসে মারলেন?”

শ্রাবণ ভাইয়া হালকা হাসলেন তারপর আমার কাছে আসতে আসতে বললেন,”আমি ওকে মেরেছি ওর নিজের ভাইয়ের আমার এ্যাগেন্সটে কোনো কমপ্লাইন নেই আপনি ওর ভাবির খালাতো ভাই হয়ে কমপ্লাইন করছেন?”

উনি আমার কাছে এসে প্যান্টের পকেট থেকে একটা মলম বের করে আমার গালে লাগিয়ে দিলেন।মলমটা ঠান্ডা হওয়ায় আমার খুব আরাম লাগছে।শুভ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে হালকা রেগে বলল,
“ওর ভাই আপনাকে কিছু বলেনা দেখে আপনি ওকে এভাবে মারবেন?ও একটু চঞ্চল।যদি কোন ভুল করে একটু বুঝিয়ে বলবেন,এভাবে গায়ে হাত তুলবেন কেন?”

শ্রাবণ ভাইয়া হাতের মলমটা টেবিলের উপর রেখে এক হাত দিয়ে আমার হাত ধরে শুভর দিকে তাকিয়ে বললেন,”আমি বুঝতে পারছি আপনার খারাপ লাগছে,আমারও খারাপ লাগছে।তবে নিজের উপর বিশ্বাস আছে, আমার খরগোশকে আমি যতটা পেইন দিবো তার থেকে হাজার গুন বেশি প্লাজার দেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে।”

শুভ আমার হাতের দিকে চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে।ভাবি এসে শুভর পাশে দাঁড়াতেই আমি বললাম,
“ভাবস তুমি এখনও রেডি হওনি?”

ভাবি বলল,”নাতো,কেন রেডি হবো?”
আমি অবাক হয়ে বললাম,”তোমরা নাকি ঘুরতে যাবা?”
ভাবি শুভর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল,”তুই এখানে কখন এসেছিস?আসবি আমাকে যানাসনি কেন?”

ভাবির কথা শুনে আমি অবাক।ভাবি তো কিছু জানেই না দেখছি,শুভ তাহলে আমাকে মিথ্যে কথা বলছিল।শুভ কথা ঘুরানোর জন্য রুম থেকে যেতে যেতে বলল,”আরে আপু আমি তোমাকে কতবার ফোন দিয়েছি জানো?চলো তোমার সাথে কথা আছে।”

বলেই ওরা দুজন চলে গেল।ওরা যেতেই শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আমার দুই কাঁধে হাত রেখে বলল,”ওর সাথে হাত মিলিয়ে আমার সাথে শত্রুতা করতে চেয়েছিলি?”
আমি মুখ কাচুমাচু করে বললাম,”আপনি আমার শত্রুই,নতুন করে কি শত্রুতা করবো?”

শ্রাবণ ভাইয়া মাথা হেলিয়ে আমার মুখের সামনে মুখ এনে আমার চোখে চোখ রেখে বলল,”আমাকে তোর শত্রু মনে হয়?”

আমি পেছন দিকে সরে যেয়ে বই গোছাতে গোছাতে বললাম,”মনে না হওয়ার কি আছে?স্কুল থেকে আমাকে বাসায় এনে কেমন ধোলাই দিলেন,ভুলে গেলেন?রকির বাইকে উঠেছি তাতে আপনার কি?আমি যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাবো আপনার তাতে কি?আমার জায়গায় অন্য কোন মেয়ে থাকলে আপনার সাথে কথায় বলতোনা।তবে আপনি ভাববেন না আমি আপনাকে ভয় পাই।আমি এখানে থাকবোনা মানে থাকবোনা।কাল স্কুলে গেলে সবার আগে ওই রিক্সা মামার মাথা ফাটাবো তারপর ওকে আর ওর রিক্সাকে বুড়িগঙ্গাতে চোবাবো তারপর আমি ট্রেনে করে যেখানে ইচ্ছে চলে যাবো।”

উনি আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললেন,”তুই প্রমিস করেছিস একা একা কোথাও যাবিনা।”

আমি রাগী কন্ঠে বললাম,”প্রমিস ক্যান্সেল,মাইরও খাবো আবার প্রমিসও করবো?কখনও না।মাইর যখন খেয়েছি কিছুতেই প্রমিস করবো না,আমার যেখানে ইচ্ছে আমি সেখানে যাবো।”

উনি আমাকে দ্বিতীয় দফায় শাসিয়ে ছেড়ে দিলেন।আমি মুখ ফুলিয়ে বসে থাকলাম।সন্ধ্যায় শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে ছাদে নিয়ে গিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করলেন।নিচে এসে নাস্তা করেই পড়া শুরু।শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে পড়া দিয়ে নিজের ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন।আজও আমি দশটার আগেই ঘুমিয়ে গেলাম।কি এক সমস্যা,দুপুরে না ঘুমালে দশটার বেশি রাত জাগতেই পারিনা।
.
স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে সেই রিক্সা মামাকে খুঁজছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না।লোকটা কি তাহলে খুব বেশি ভয় পেয়ে গেল?আমার ভয়ে আজ এখানে আসলো না?আমি হাসতে হাসতে পেছনে শ্রাবণ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,”ওই রিক্সা মামাটা আসেনি।”

আমার কথা শুনে উনি বিরক্ত হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন,”শোন আমার আসতে লেইট হলে এখানেই দাঁড়াবি,একদম পাকনামি করে একা একা কোথাও যাবিনা আর টিফিনে আইসক্রিম খাবিনা আমি কিন্তু তোর টিফিন বক্স চেইক করবো।না খেয়ে থাকলে পড়তে পারবিনা না আর পড়া না পারলে আমার মাইর একটাও মাটিতে পরবেনা।”

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,”তুমিই সবসময় পাকনামি করো।আগে নিজে ঠিক হও তারপর অন্যকে জ্ঞান দিতে এসো।”

উনি আমার দিকে রাগী চোখে তাকাতেই আমি এক দৌঁড়ে স্কুলের ভেতরে চলে গেলাম।হেমার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে হেমা আমাকে শ্রাবণ ভাইয়ার ব্যাপারে জানার জন্য ফুসলিয়ে যাচ্ছে।আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,”এমন করছিস কেন?তোর না আলফির ভাইকে পছন্দ?”

হেমা আমার কাছে এগিয়ে এসে বলল,”শ্রাবণ ভাইয়াকে বেশি ভাল লাগছে।আচ্ছা উনার গার্লফ্রেন্ড আছে?”

আমি ভাব নিয়ে বললাম,”হুম আছে,সুইটহার্ট আছে।গার্লফ্রেন্ডকে সবসময় সুইটহার্ট বলে।”

হেমা হতাশ হয়ে বলল,”ধূর যাকে একটু ভাল লাগে তারই গার্লফ্রেন্ড থাকে।গার্লফ্রেন্ড ছাড়া কোন ছেলেই নেই ইয়ার।”

আমি ফোন টিপাই ব্যস্ত তাই ওর কথার উত্তর দিলাম না।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে হেমা আবার বলল,”শোন না।”
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,”বল।”
হেমা বলল,”শ্রাবণ ভাইয়ার সাথে প্রেম করিয়ে দিবি?”

আমি ওর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললাম,”শ্রাবণ ভাইয়া নিজের গার্লফ্রেন্ড ছেড়ে তোর সাথে প্রেম করবে?”

হেমা আমাকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,”হুম করবে,তুই করিয়ে দিবি।আমি জানি তুই পারবি।”
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,”আমি কিভাবে করিয়ে দিবো?আমি পারবোনা।”
হেমা বলল,”তুই যদি পারিস আমি সিজান ভাইয়াকে বলে তোর বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে দিবো আমি কিন্তু পারবো।”

আমি আমার কাঁধ থেকে হেমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম,”আগে বানিয়ে দে তারপর দেখা যাবে।”

ক্লাসে স্যার চলে আসায় আর কোন কথা হলো না।দুটোর সময় স্কুল ছুটি হয়ে গেল।হেমা শ্রাবণ ভাইয়াকে দেখার জন্য আমার হাত ধরে আমার সাথেই বেড়িয়ে আসলো।বাহিরে এসে দাঁড়াতেই আমরা গাড়ির কাছে শ্রাবণ ভাইয়াকে দেখতে পেলাম।ফু্ল কালো ড্রেস পরে উনি আমাদের দিকে মুখ করে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।উনার চোখে কালো সানগ্লাস থাকায় আমি বুঝতে পারছিনা উনি এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে কি দেখছেন।হেমা আমার হাতে খোঁচা দিয়ে বলল,
“দোস্ত শ্রাবণ ভাইয়াকে তো সেইরকম জোশ লাগছে।আল্লাহ্ উনি এত লম্বা কেন?উনার পাশে আমাকে তো একদম লিলিপুট লাগবে।”

আমি ব্যাগ থেকে পানির পট নিয়ে বললাম,”কি দেখে যে তুই ওই বদটাকে পছন্দ করছিস তুই ভাল জানিস।শুধু সুন্দর হলেই মানুষ ভাল হয়না….।”

আর কিছু বলার আগেই হেমা তেঁতে উঠে বলল,”তুই চুপ কর।তোর বয়ফ্রেন্ড আমারটার চেয়ে কম সুন্দর বলে তোর হিংসে হচ্ছে আমি বেশ বুঝতে পারছি।”

আমি এক ঢোক পানি খেয়ে বললাম,”আমি কাউকে হিংসে করিনা।তুই যদি শ্রাবণ ভাইয়াকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে চড় থাপ্পড় দিয়ে উনার লাইফ হেল করতে পারিস আই প্রমিস শ্রাবণ ভাইয়াকে তোর বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে দিবো,আজকে তুই বাসায় যেয়ে ভাব কাল আমাকে জানাবি।”

বলেই হেমাকে ওখানে রেখে দ্রুত পায়ে শ্রাবণ ভাইয়ার কাছে গেলাম।চুপচাপ ফ্রন্ট সিটে বসে সিটবেল্ট লাগিয়ে বসে থাকলাম।উনিও দেরি না করে গাড়িতে বসে ড্রাইভ করতে লাগলেন।একটু পর আমাকে বললেন,”টিফিন বক্স দেখা।”

আমি সিটে হেলান দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বললাম,”টিফিনে আইসক্রিম আর কিটক্যাট খেয়েছি।”

উনি রেগে বললেন,”এখন থেকে তুই আর এক টাকাও পাবিনা।”

আমি ভাব নিয়ে বললাম,”আপনার টাকায় খাইনা তাই নিজের মুখ বন্ধ রাখুন।”

উনি আমার দিকে রাগী চোখে তাকালেন তারপর সামনের দিকে তাকিয়ে বললেন,”নিজের টাকায়ও তো খাসনা তাও ভাব দেখলে মনে হয় কুইন এলিজাবেথ।”

আমি তেঁতে উঠে বললাম,”এই আপনি সব সময় আমার সাথে এমন করেন কেন?”

উনি সামনের দিকে তাকিয়ে বললেন,”কেমন করি?”
আমি কোন কথা না বলে মুখ ফুলিয়ে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকলাম।হঠাৎ একটা ফার্মেসি চোখে পরতেই আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,”থামুন,থামুন,গাড়ি থামান।”

উনি ভ্রু কুচকে বললেন,”হুয়াই?”
আমি বললাম,”উফ্ থামান আগে।”
উনি গাড়ি সাইডে নিয়ে থামালেন।আমি গাড়ি থেকে নামতে নামতে বললাম,”আপনি এখানে দুমিনিট ওয়েট করুন আমি এক্ষণি আসছি।”

উনিও গাড়ি থেকে নামতে নামতে বললেন,”কোথায় যাবি?এনি প্রবলেম?”

ততক্ষণে আমি ফার্মেসিতে প্রায় চলে এসেছি।ফার্মেসিতে এখন খুব ভীর,আমি ব্যাগ থেকে প্রেসক্রিপশন বের করে হাতে নিতেই পেছন থেকে শ্রাবণ ভাইয়া আমার হাত থেকে ছো মেরে প্রেসক্রিপশনটা নিয়ে দেখলেন।আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
তোর মেডিসিন এগুলো?এখানে তোর নাম লিখা আছে।”

আমি উনার হাত থেকে প্রেসক্রিপশন টা নিয়ে দোকানিকে দিয়ে মেডিসিন দিতে বললাম।তারপর শ্রাবণ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,

“ভাইয়াকে বলবেন না,বললে কিন্তু আপনার মুখ গাম দিয়ে আটকে দিবো।”

উনি চিন্তিত হয়ে বললেন,”কি হয়েছে তোর?”
আমি ব্যাগ থেকে টাকা বের করতে করতে বললাম,”কিছু হয়নি।ভাইয়া সেদিন আমাকে মেডিসিন গুলো এনে দিয়েছিল কিন্তু আমি তো রাগ করে সেগুলো ফেলে দিয়েছিলাম তাই এখন আবার কিনতে হচ্ছে।”

উনি আমার দুই কাঁধে হাত রেখে আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আবার বললেন,”কি হয়েছে তোর?”

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,”আরে বললাম তো কিছু হয়নি।এগুলো এলার্জির মেডিসিন,শীত আসছে সামনে তাই এগুলো সব সময় কাছে রাখতে হবে।একটু ঠান্ডা লাগলেই তো প্রবলেম হয়।”

উনি আমাকে টেনে নিয়ে গাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে দিলেন আর নিজে গিয়ে মেডিসিন কিনে আনলেন।আমাকে বাসায় দিয়ে উনি উনাদের ফ্ল্যাটে চলে গেলেন আর যাওয়ার আগে ভাবির কাছে থেকে আমার নতুন পুরাতন সবগুলো প্রেসক্রিপশন নিয়ে গেলেন।

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here