#সুখের_সন্ধানে
#পর্ব_৮
সেলিম যা করছে সেটা জানার পর ওর কাছে যাবার এক বিন্দুও ইচ্ছে নেই আমার। কিন্তু কিছুই করার নেই। এভাবে হেরে যেতে চাই না আমি। চেষ্টা না করেই এভাবে হেরে যাবার কোনো মানে হয় না।
আমি রামপুরা থেকে সরাসরি রওয়ানা হলাম পুরান ঢাকাতে আমার ছোট বোনের বাসার উদ্দেশ্যে । কত বছর পর আমি ওর কাছে যাচ্ছি। ও আমাকে দেখে রাগ করবে নাকি খুশি হবে জানি না। আমি ওর বাচ্চাদের জন্য কিছু কেনাকাটা করলাম। বাচ্চা দুটি নিশ্চয়ই আমাকে চিনবে না। সেই যে ছোট ছোট দেখেছি শেষবার। এ ক’বছরে নিশ্চয়ই অনেক বড় হয়ে গেছে। পুরান ঢাকার যে পরিমাণ অলিগলি তাতে এক হিসেবে ওর বাসার ঠিকানাও ভুলে গেছি। তবে স্মৃতির খাতা এতটা অমলিন এখনো হয়নি। জিজ্ঞেস করে করে ঠিকই পৌঁছে যেতে পেরেছি।
পুরানো আমলের ছোট একটা তিনতলা বাড়ি। নিচ তলাতে কারখানার জন্য ভাড়া দেওয়া আর দোতলা তিনতলা মিলিয়ে ওরা থাকে। বাড়িটা ঠিক আগের মতই আছে। কোনো মেরামতের কাজবাজ করানো হয় না বোধ হয় বহু বছর। বাসার গেটটাও বদলায়নি। বাড়ির ভেতরে ঢুকতে গেলে মাথায় গুতা খেতেই হবে। আমি যতদিন এসেছি খেয়েছি। এ নিয়ে কতবার বলেছি, তোদের গেটটা পালটা তো। এই আদিম যুগের গেইট কি এখন চলে? মাথা নিচু করে বাসার ভেতর ঢুকতে হয়।
অবশ্য যারা প্রতিদিন যেতে অভ্যস্ত তাদের কোনো সমস্যা হয় না। আমার মতো নতুনদেরই যত জ্বালা।
এ কথা বলার পরে আমার ছোট বোন টুম্পা আমাকে হেসে হেসে বলত , তোর জামাইয়ের মতো তো আর জামালের কাড়ি কাড়ি টাকা পয়সা নেই যে চাইলেই খরচ করতে পারবে। দাদা শ্বশুর এই ভাঙ্গাচোরা বাড়িখান রেখে গেছেন বলে তাও থাকছি। কোনোদিন হাতে টাকা পয়সা হলে বদলাব। এখন কষ্ট করেই নিচু হয়ে আয়। তুই আসিসই বা কয়দিন! এই নিয়ে হাতেগোণা তিন চার বার তোর পায়ের ধুলা পড়েছে এই গরিবের দুয়ারে। আর বড়লোক দুলাভাই তো সেই যে বউ ভাতে এলো আর কোনোদিন দেখতে এলো না তার শালিটা কই আছে, বেঁচে আছে না মরে গেছে। তাও ভাগ্য ভালো যে বৌভাতটা বাসার ছাদে করেছিল। কমিউনিটি সেন্টারে করলে তো তার আর এ বাড়ির চৌকাঠ মারানো হতো না দুলাভাইয়ের।
গেট থেকে ঢুকতেই চোখ পড়ল কারখানার ভেতরের দিকে। খেয়াল করতেই দেখলাম ভেতরে জামালের মত কাউকে দেখতে পেলাম যেন! আমি আর উঁকিঝুঁকি না মেরে সরু অন্ধকার গলি মাড়িয়ে সিড়ির দিকে চললাম। হাতড়াতে হাতড়াতে এগুতে লাগলাম। এখানে একটা লাইট পর্যন্ত লাগায় না। এত হিসেব এদের! বিশেষ করে টুম্পার শ্বশুর । হাড়কিপ্টে যাকে বলে।
কলিং বেল বাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছি বেশ কিছুক্ষণ । দরজা না খোলায় দ্বিতীয়বার বাজাতে যাব ঠিক সে সময়ে দশ বারো বছরের মত বয়সের একটা মেয়ে এসে দরজাটা খুলল।
– কে আপনি?
– আমাকে তো চিনবে না মামণি। টুম্পা বাসায় নেই?
– আম্মু বাসায় আছে । আপনি দাঁড়ান আমি ডেকে দিচ্ছি।
– তুমি মিথিলা ,মামণি? আমি অবাক হয়ে ভাবছি নিজের ভাগ্নী অথচ চিনতে পারছি না। কত বড় হয়ে গেছে মেয়েটা।
– জি , কিন্তু আপনি আমার নাম জানেন কী করে?
– আমাকে চিনতে পারছিস না , মা। আমি তোর খালামণি। তোর রূম্পা খালামণি।
– রুম্পা খালামণি? উনি এখানে কেন আসবেন? উনারা তো বেশ বড়লোক । উনারা এখানে আসেন না। আপনি দাঁড়ান। আমি আম্মুকে ডেকে নিয়ে আসছি।
মেয়েটা এক ছুট দিয়ে চলে গেল। মাত্র মিনিট খানেকের ব্যবধানে ও ওর মাকে নিয়ে আসলো। আমি টুম্পাকে দেখে চিনতেই পারছি না। কী শুকিয়ে গেছে। চোখ দুটির নিচে কালি পড়েছে। আমার সামনে এসে ভূতের মতো দাঁড়িয়ে আছে । ও হয়তো বিশ্বাস করতে পারছে না। ওর চোখ দুটি ছলছল করছে। আমি এত বছর পর ওকে দেখে নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না। হাতের ব্যাগগুলি নিচে পড়ে গেল মুহূর্তেই। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই টুম্পা আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়ল। আমিও টুম্পাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম। মনে হলো বহুদিন পরে আম্মুর শরীরের গন্ধ অনুভব করলাম। খুব আপন গন্ধ। কতদিন এই গন্ধ টের পাই না আমি। আমি কী করে এই মায়া মাখা গন্ধকে উপেক্ষা করে এত দূরে পড়ে ছিলাম। দু’বোন মিলে এতদিনের জমানো কষ্ট কেঁদে কেটে কতক্ষণ চোখের পানিতে দূর করলাম। দু’জনের কারো মুখে কোনো কথা নেই। টুম্পা আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল ভেতরে। সোফায় বসিয়ে আমার হাত দু’খানা ওর হাতের ভেতর চেপে রেখে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল, এই বুঝি মনে পড়ল আমার কথা , আপা? খুব কী তাড়াতাড়ি হয়ে গেল না?
আমি একটা হাত ছাড়িয়ে ওর চোখ মুছতে মুছতে বললাম, কাঁদছিস কেন রে পাগলী? বাচ্চারা দেখ তাকিয়ে আছে। কী ভাবছে ওরা? আমি তো তবু এসেছি। তুই তো ভেবেছিলি আপা বুঝি মরেই গেছে। কোনো খোঁজখবর নিস নি কোনোদিন।
– কী বলছ , আপা? আমি এমন কেন ভাবব?
– এমন না ভাবলে খোঁজখবর তো নিতিস।
– আমি অনেকবার সাহস করেছি , আপা। কিন্তু অন্যায় তো আমিই করেছিলাম তোমার সাথে। কত বেশি বেশি বলেছি তোমাকে। ভেবেছিলাম যদি তুমি ফিরিয়ে দাও। সেই ভয়ে আমি আগাতে পারিনি।
– দূর বোকা! কিসের অন্যায়? এমন কথা কাটাকাটি কাদের না হয়? কিন্তু আমিও তোকে কত কীই না বলেছি। অথচ তোর খোঁজখবর নেইনি একবারের জন্যও। মাফ করে দিস বোন। আমার চোখ খুলে গেছে। আসল সমস্যা হচ্ছে আমাদের ইগো। আমাদের ইগোর কারণে আমরা এতটা দিন দূরে সরে থেকেছি। কিন্তু আর না। কিন্তু তুই এমন শুকিয়ে গেছিস কেন রে? আজকাল মানুষ সব মিষ্টিকুমড়ার মতো গোলগাল হয়ে যাচ্ছে আর তুই হচ্ছিস পাটকাঠি। ব্যাপার কী?
– আমার ডায়াবেটিকসের কারণে খুব নিয়মের মধ্যে চলি রে আপা। খাবার দাবার খুব সীমিত। আরো নানান সমস্যা আছে। সবই বলব। এত ব্যস্ত হোস না। তুই তো এখনো কুড়ি একুশে আছিস । যে কেউ বলবে তুই আমার ছোট বোন আর আমি তোর বড়। আচ্ছা, দুলাভাই , প্রিয় ওরা কোথায়? নিয়ে আসলি না কেন?
– তোর দুলাভাই ব্যস্ত মানুষ। সিলেটে আছে এখন।আর প্রিয় হোস্টেলে। ক্যাডেটে পড়ছে। জানিসই তো!
কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বাচ্চাদের দিকে চোখ পড়ল। হাত বাড়িয়ে কাছে ডাকলাম। ছেলেটা মনে হয় পাঁচ বছর হবে। কী যে কিউট হয়েছে বাচ্চা দুইটাই দেখতে , মা শা আল্লাহ! ওরা গুটিগুটি পায়ে আমার কাছে এসে বসল। ছেলেটাকে কোলে আর মেয়েটাকে পাশে বসিয়ে আদর করলাম। টুম্পা আমাকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। টুকটাক কথা বলতে বলতে আধা ঘণ্টার মধ্যেই খাতির হয়ে গেল দুইজনের সাথে। আমি ব্যাগ খুলে ওদের সামনে সব খেলনা , চকলেট বের করে দিলাম। কী খুশি ওরা দু’জনই। আমি নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছি কী করে এতগুলি দিন আমি এদের থেকে দূরে থেকেছি। আসল ভালোবাসা ছেড়ে আমি নকল দুনিয়াদারী নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম এতদিন।
টুম্পা টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে আমাকে সেখানে নিয়ে বসাল।
– কী করেছিস বোকা? এতকিছু কখন রেডি করলি?
– করাই ছিল কিছু আপা। তুমি খাও তো!
– তোর শশুর শাশুড়ি আর দেবর কই ? দেখছি না যে!
– টুম্পা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, উনারা উপরে থাকেন । নিচে আসেন না বললেই হয়। সব ভাগাভাগি করে দিয়েছে দুই ছেলের মধ্যে। উনারা ছোট ছেলের সাথেই থাকেন। অনেক অনেক কাহিনী আপা। শোনাব সবই। কত কষ্টের কথা জমা আছে। বুকটা খুলে যদি দেখাতে পারতাম। কষ্ট জমে জমে কলিজা পুড়ে অঙ্গার হয়ে আছে। কাউকে বলতে পারলে হয়তো জমানো কষ্ট কিছুটা হালকা হতো। এখন তোকে পেয়েছি মনের সব কষ্ট বের করে হালকা হবো।
– কেন রে? কী হলো এমন? তুইই তো দেখতি সবাইকে। আর জামালকে মনে হলো নিচে কারখানায় দেখে এলাম। ও চাকরি করছে না এখন? আজ তো হলিডে না।
– চাকরি বাকরি সব শেষ রে আপা। বললাম না কাহিনী আছে অনেক। পরে শুনিস। আগে খাবার মুখে দে। জামাল এখন এই কারখানা চালায়। আর ওই যে বললি শ্বশুর শাশুড়ির কথা। একটা কথা জানিস আপা, যে করে বেশি , তার বদনাম বেশি। এখন আমার পায়ে পায়ে দোষ খোঁজে তারা। আমি একদমই ভালো বউ না তাদের চোখে। আমি অপারগ তাদের মন জয় করতে। দেবরের বিয়ের পরও বেশ কিছুদিন ছিলাম একসাথে। নানান ঝামেলায় শেষ পর্যন্ত আলাদা হয়ে গেলাম। চেষ্টা করেছিলাম সংসারটা একসাথে রাখার । পারিনি। আচ্ছা , ওইসব কথা বাদ দে। এবার বল দুপুরে কী খাবি?
– আমি তোর হাতের ভর্তা ভাত খেতে এসেছি রে। কিছুই তড়িঘড়ি করিস না। হালকা কিছু কর। আর জামালকে ডাক। একটু দেখা করি। আমি আবার চলে যাব খুব তাড়াতাড়ি। সিলেট যাচ্ছি । এয়ার টিকেট করা । তোর এখান থেকেই সরাসরি চলে যাব এয়ারপোর্টে। তাই হাতে কিছু সময় নিয়ে বের হতে হবে। রাস্তায় যা জ্যাম জানিসই তো।
– এটা কী হলো ? এত অল্প সময় নিয়ে এসেছিস কী করতে?
– আরে বোকা ! সিলেট থেকে ফিরে আবার আড্ডা হবে। এটুকু যে তোর সাথে দেখা হয়েছে তাতেই বুকের ভেতর কতটা প্রশান্তি বয়ে যাচ্ছে তুই বুঝতে পারবি না। আচ্ছা, তোর শ্বশুর শাশুড়ির সাথে দেখা করা দরকার তো! উনাদের কাছে নিয়ে চল।
– এখন যেতে হবে না। ফের যখন আসিস তখন যাস। উনারা বাসাতে নেই। শুধু দেবরের বউ আছে। ওর সাথে দেখা করতে যাবার দরকার নেই। আস্ত একটা বেয়াদব।
– আচ্ছা, তবে জামালকে ডাক দেখা করি। আমার হাতে খুব বেশি সময় নেই।
– ওকে খবর পাঠিয়েছি। আমি ফোন করেছিলাম। বাজার সদাই নিয়ে আসছে। তুই রুমে যেয়ে বস। আমি দ্রুত তোর জন্য কিছু খাবার দাবার রেডি করি।
ঘণ্টা দুয়েক ছিলাম ওখানে। টুম্পার কাছ থেকে বেরিয়ে আসার পর কী যে নির্ভার লাগছে বোঝাতে পারব না। মনে হচ্ছে বুকের ভেতর থেকে একটা পাথর নামিয়ে ফেললাম। কী যে ভালোলাগা কাজ করছে। চোখদুটি ভিজে আসছে বারবার। ইস, ঠিক এভাবেই জয় করতে পারতাম সব সমস্যাকে। মমতাজ আপার কাছে কী যে কৃতজ্ঞ আমি। উনি সেদিন ওভাবে জোর করে বস্তিতে নিয়ে না গেলে জীবনবোধের অনেক জ্ঞান সম্পর্কেই অজ্ঞাত থাকতাম।
সেলিমরা যে রিসোর্টে থাকছে আমি সেখানে পৌঁছে জানলাম সেলিম রিসোর্টে নেই। সে কী একটা কাজে সুনামগঞ্জে গেছে। ফিরতে বেশ রাত হবে। তবে আজ যে ফিরবে এটা নিশ্চিত। এবং হেলেন নামের ওই ডাইনি যে তার সাথে যায়নি এটা নিশ্চিত হলাম। ডাইনি তবে রিসোর্টেই আছে । যাক , ভালোই হলো। সেলিম আসার আগেই ওকে একবার ডোজ দেওয়া গেলে ভালোই হবে। আমি উনাদেরকে জানালাম আমার কথা সেলিমকে না জানাতে। আমি তাকে সারপ্রাইজ দিতে চাই। একজন আমাকে সেলিমের রুমের দিকে নিয়ে চলল। আমি রুমের সামনে পৌঁছে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে মোচড় দিতেই খেয়াল করলাম ভেতর থেকে লক করা। কয়েকবার নক করার পর দরজা খুলল। দরজা ধাক্কা দিতেই দেখি ভেতরে একটা মেয়ে। বুঝতে পারলাম এটাই ওই ডাইনি। রুম সার্ভিস চলে গেল লাগেজ রেখে। আমি লাগেজ হাতে নিয়ে তাকে পাত্তা না দিয়ে ভেতরে হরহর করে ঢুকে যাচ্ছি দেখে সে অবাক হলো।
– হেই, কে আপনি? এখানে কি চাই?
– এই প্রশ্ন আমার করার কথা। তুমি কে? এখানে তুমি কী করো?
– হাউ ডেয়ার ইউ। আমাকে উত্তর না দিয়ে পালটা প্রশ্ন করছ? জাস্ট গেট আউট ফ্রম হিয়ার।
– এক্সকিউজ মি! ইউ জাস্ট গেট আউট।
– হাউ রুড! ডু ইউ নো হু এম আই?
– নো! ইউ টেল মি , প্লিজ! হু আর ইউ? প্রাইম মিনিস্টার অর প্রেসিডেন্ট?
– ডিসগাস্টিং! কোথা থেকে এসব পাগল ছাগল চলে আসে। আমি মিঃ সেলিমের পি এস!
– ওয়াও । তাই নাকি! তো ওনার বেড রুমে কী করছ তুমি, ব্লাডি বিচ!
– হাউ ফানি! ডোন্ট ইউজ এনি চিপ ওয়ার্ড! আমি মিঃ সেলিমের সাথে এই রুমেই থাকছি। এবার বল তুমি কে? কল গার্ল? সেলিম ডেকেছে?
এমনটাই চেয়েছিলাম। ও রেগে যেয়ে আমাকে দু’একটা বাজে কথা বলবে দেন আমি আমার পরিচয় দিব। আমি একদম প্রস্তুতি নিয়েই ছিলাম। হাতের পাঁচ আঙ্গুলের দাগ একদম বসিয়ে দিলাম মেকাপ করা গোলাপি গালটার ডানপাশটায়।
একদম অপ্রস্তুত হয়ে গেল সে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এমন নাস্তা জুটবে কপালে বেচারি আন্দাজই করতে পারেনি। এক থাপ্পড়ের ঝটকা কেটে ওঠার আগেই বাকী গালটাও দিলাম লাল করে। দুই থাপ্পড় খেয়ে সুন্দরীর দাঁত খুলে পড়ে যাবার অবস্থা। যারপরণাই অবাক হয়ে কিছু বলতে যাবে অমনি আমি চিৎকার করে উঠলাম ।
– কাদের, কাদের?
কাদের আমার মোটামুটি বিশ্বস্ত লোক। বেশ পুরানো। সেও আছে এখানে। কাদেরর কাছে এসেই সবকিছু শুনেছি। কাদের এতদিন সেলিমের ভয়ে আমার কাছে সব লুকিয়ে রেখেছিল। কাদেরকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে এসেছিলাম। দুই ডাক দিতেই ভেতরে চলে আসল।
– ইয়েস ম্যাডাম!
– এসব নোংরা ডাস্টবিন সেলিমের রুমে কী করছে? তোমরা সবাই কী করছ? ধাক্কা মেরে এটাকে এখনই এখান থেকে বের করে দাও। ওর মুখ দেখতে চাই না। পারলে ওকে সিলেট ছাড়া করে দাও।
– ইয়েস ম্যাডাম। বাট উনি আমাদের ইমপ্লয়ী। স্যারের অনুমতি ছাড়া উনাকে বের করা সম্ভব না।
– ওকে ফাইন। তবে ওটাকে রিসোর্টের বাইরে রাখো আপাতত। আমি যেন ওর ছায়াও না দেখি।
– ইয়েস ম্যাডাম।
হেলেনের এবার বোঝা হয়ে গেল আমার পরিচয়। চোরের মত কুতকুত করে আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি চোখ গরম করে তাকাতেই সে উধাও। সেই তেজ একদম গায়েব। দুই থাপ্পড়েই বেচারির খারাপ অবস্থা।
চলবে…….