#সেই_সন্ধ্যা
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_২০
.
স্নিগ্ধ মেডিকেলে ঢুকে আশেপাশে তাকাতে লাগলো। সকালকে কোথাও দেখতে না পেয়ে হাঁপ ছেড়ে বাঁচল এমন একটা চেহারা বানিয়ে নিজের কেবিনে চলে গেল।
আফি উদাসীন ভাবে ঘাসের উপর বসে এক ধ্যানে ঘাসের দিকে তাকিয়ে আছে। পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে তাকিয়ে দেখলো সকাল এসে বসছে ওর পাশে। আফি কিছু বললো না, শুধু মলিন হাসলো। সকাল জিজ্ঞেস করলো,
-“আন্টি কেমন আছে?”
-“ভালো আছে। তবে একটু অসুস্থ।”
-“ডক্টরের কাছে নিয়ে যাস নি?”
-“না। আজ বিকেলে যাবো।”
-“আচ্ছা। তোর মন খারাপ কেন?”
-“পলাশ ফোন দিয়েছিল।”
-“কি বলেছে?”
-“কিছুদিন পর ওর বিয়ে। আমাকে ইনভাইট করলো।”
-“তুই কি বলেছিস?”
-“কি আর বলবো! বরাবরের মতো একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি। ভুলটা তো আমারই। ওকে কিছু বলে কি হবে?”
-“দেখ! মন খারাপ করিস না। যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। সামনে নিশ্চয়ই এ-র থেকে ভালো কিছু অপেক্ষা করছে তোর জন্য। তাই অতীত নিয়ে বসে না থেকে সামনে এগিয়ে যা। নিজের বর্তমানটাকে উপভোগ কর আর ভবিষ্যৎ-কে সুন্দর করে সাজা।”
-“তুই দেখি হঠাৎ করে অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস। এত বড় বড় জ্ঞান দিচ্ছিস। কে শিখিয়েছে তোকে এসব?”
-“গতকাল আম্মুকে বলতে শুনেছিলাম। তাই তোর উপর ট্রাই করলাম।”
-“তবে রে…
সকালকে আর পায় কে! সে দিল এক ভৌ দৌড়। আফি হালকা হেসে উঠে দাঁড়াতেই খেয়াল করলো, আজ পরশ আসে নি মেডিকেলে। যদি আসতো তাহলে এতক্ষণে ওদের সাথে দেখা অবশ্যই করতো। হয়তো গতকাল সকালের কথায় কষ্ট পেয়েছে, তাই নিজেকে স্বাভাবিক করতে সময় নিচ্ছে। আবারও এক দীর্ঘশ্বাস ফেললো আফি। বিরবির করে বললো, “ভালোবাসা জিনিসটা বড়ই অদ্ভুত! যে পায়, সে দুনিয়ার সব থেকে সুখী ব্যক্তি হয়। আর যে পায় না, তাকে হাজারো কষ্ট, যন্ত্রণা ও বেদনার ভীড়ে পিষে তিলে তিলে নিঃশেষ হতে হয়।”
সকাল ক্লাসে বসে চোখ বড় বড় করে স্নিগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে। সব থেকে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আজ একবারও স্নিগ্ধকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে নি সকাল। হঠাৎ এই ডাক্তার সাহেবের হলোটা কি ভাবতে ভাবতেই স্নিগ্ধর দিকে নাক-মুখ কুঁচকে তাকালো সকাল। ভীষণ বিরক্ত লাগছে তার। এভাবে তাকে উপেক্ষা করার কারনটা খুঁজে পাচ্ছে না সকাল। গতকাল তো স্নিগ্ধর আস্কারা পেয়েই তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল সে। তবে আজ কেন এত ভাব দেখাচ্ছে স্নিগ্ধ? সকাল ভেবে পেলো না।
আড়চোখে সকালের দিকে তাকিয়ে ওর গতিবিধি লক্ষ্য করছে স্নিগ্ধ। সকালের চেহারা দেখে প্রচুর হাসি পাচ্ছে ওর। কিন্তু ক্লাসে এভাবে সবার সামনে হাসতে চাইছে না সে। তবুও ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো। এমন একটা মেয়ের প্রেমে কেউ কি করে না পরে থাকতে পারে? হঠাৎই স্নিগ্ধর মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। আবারও সকালের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ফেললো। ও নিজেও জানে না আজ ও কি করবে। সকালকে কিভাবে বলবে নিজের মনের কথাটা। পরক্ষণেই নিজেকে ধিক্কার দিতে মন চাইলো স্নিগ্ধর, এমন একটা মেয়েকে পছন্দ করার জন্য যে কি-না তার ছাত্রী।
সকাল বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করেও যখন স্নিগ্ধর মনোযোগ নিজের দিকে নিতে পারলো না, তখন সে হাল ছেড়ে দিয়ে পড়ায় মনোযোগ দিল। কিন্তু মনে মনে বেশ খারাপ লাগলো ব্যাপারটা সকালের। অপমানিতবোধ করতে লাগলো সে। স্নিগ্ধর দিকে এক পলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। হাসি-খুশি মুখটাতে নিমিষেই ঘন কালো মেঘের ছায়া এসে ভর করলো। বইয়ের দিকে তাকিয়ে পড়ায় এতটাই বুদ হয়ে গিয়েছিল যে খেয়ালই করে নি ক্লাস কখন শেষ হয়ে গিয়েছে। আফির ধাক্কায় হুঁশ ফিরলো সকালের। বইখাতা গুছিয়ে নিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে স্নিগ্ধকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেও, না দেখার ভান করে স্নিগ্ধর পাশ কাটিয়ে চলে গেল সকাল।
স্নিগ্ধ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সকালের যাওয়ার দিকে। মেয়েটা ওকে উপেক্ষা করলো! ভাবতেই স্নিগ্ধর চোখ জোড়ায় যেন বিস্ময় আরও বেশি করে ছেয়ে গেল। হঠাৎ এমন কি হলো যে সকাল ওকে উপেক্ষা করছে? ভেবে পেলো না স্নিগ্ধ। ক্লাসের শুরুর দিকে সকালকে অনেক খুশি দেখাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ ক্লাসের মাঝের দিকে সকালকে দেখলো বইয়ে মুখ গুঁজে থাকতে। এ-র মাঝে এমন হলোটা কি! যে, সকাল ওর সাথে এমন আচরণ করলো? স্নিগ্ধ এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের কেবিনে গিয়ে বসলো। গ্লাস থেকে একটু পানি খেয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বুঁজে নিলো। আজ সকালের দিকে সরাসরি একবারও তাকায়নি স্নিগ্ধ। এ-র কারনটা অবশ্য ওর নার্ভাসনেস। কি করে সকালকে নিজের মনের কথাটা বলবে সেই চিন্তা। আর কথাটা বলা উচিৎ হবে কি-না সে চিন্তাটাও আছে। হঠাৎই স্নিগ্ধ চোখ মেলে ঠিক হয়ে বসলো। ভাবতে লাগলো ক্লাসে সকালকে আজ ও উপেক্ষা করেছিল বলে কোনো ভাবে সকালের মন খারাপ হয়নি তো!
মেরিল্যান্ড শহরের এক বড় পাঁচ তারকা হোটেলের বিলাস বহুল একটি রুমে বসে আছেন আরিফুল ইসলাম আর তার সাথে আছেন তার সবথেকে বিশ্বস্ত লোক রিয়াজ। আরিফুল ইসলাম বারবার নিজের হাতঘড়িটা দেখছেন। অপেক্ষায় আছেন তার বসের। মেয়েটার বয়স কম হলেও এই বিজনেসে তার বুদ্ধিমত্তা খুবই ভালো। বেশ কিছুক্ষণ পর তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে রুমে ঢুকলো টিলি। আরিফুল ইসলামের সামনের সোফায় এসে বসলো সে। চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে রিয়াজের দিকে একবার তাকিয়ে আরিফুলের দিকে তাকালো। বললো,
-“কি খবর মিস্টার আরিফুল? সবকিছু ঠিকঠাক!”
-“জ্বি। সিআইডি অফিসারেরা যা যা মাল আটক করেছিল, সব উদ্ধার করা হয়েছে। এতে অবশ্য সিআইডি ডিপার্টমেন্টের হেডকে বেশ মোটা অংকের টাকা দিতে হয়েছে।”
-“ব্যাপার না। যে টাকা গিয়েছে, তার থেকে পঞ্চাশ গুণ বেশি টাকা মালগুলো ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিলে পেয়ে যাবো।”
-“তা ঠিক বলেছো।”
-“আর মেয়েগুলো!”
-“মেয়েগুলোকে আবারও অপহরণ করা হয়েছে। এইবার আর কোনো সমস্যা হবে না। কারন এইবার মেয়েগুলোকে কিডন্যাপ করার আগের পুলিশকে টাকা দেয়া হয়েছে। এখন যদি মেয়েগুলোর অভিভাবক হাজারবার কমপ্লেইন লিখায়! তবুও পুলিশরা কোনো কাজ করবে না।”
-“গ্রেট! এখন কোথায় মেয়েগুলো আর মালগুলো?”
-“মেয়েগুলো এই হোটেলের দশ তলায় আছে। আর মালগুলো পাশের রুমটাতে আছে। রিয়াজ বাংলাদেশ থেকে খুব সাবধানতা অবলম্বন করে এই মেয়েগুলো আর মালগুলোকে এখানে এনেছে।”
-“গুড জব রিয়াজ। তোমাকে এর জন্য অবশ্যই পুরস্কৃত করা হবে।”
রিয়াজ বেশ হাসি হাসি মুখ নিয়ে বললো,
-“ধন্যবাদ ম্যাডাম।”
দরজা খোলার শব্দে সেদিকে তাকালো সবাই। একজন লোক ভেতরে ঢুকছে। বয়স তার ৩২ থেকে ৩৫ এর কাছাকাছি হবে। ওদের সামনে এসে পায়ের উপর পা তুলে বসলো সে। টিলি হেসে তাকে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলো,
-“আরেহ মিস্টার স্টিফেন যে! কেমন আছেন আপনি?”
-“ভালো না। আমার মাল কোথায় টিলি? গতমাসে মাল আমার কাছে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গতমাস তো দূরের কথা, এই মাসেও মাল হাতে পেলাম না। এর কারন কি?”
-“ওহ মিস্টার স্টিফেন, জাস্ট রিল্যাক্স। সবুরে মেওয়া ফলে জানেন তো! ভালো কিছু পেতে হলে অপেক্ষা একটু বেশিই করতে হয় সব সময়।”
-“আমি এতকিছু শুনতে আসি নি। আমি আমার মাল নিতে এসেছি। তোমাকে আমি এডভান্স আগে দিয়েছি যাতে তুমি আমার মাল যথাসময়ে আমার কাছে পৌঁছে দাও। কিন্তু তুমি এখনো দিলে না। তার জন্য আমি অনেক অসন্তুষ্ট হয়েছি।”
-“আপনি আর অসন্তুষ্ট হবেন না। আপনার জন্য একটা উপহার আছে। আগে উপহারটা দেখে নিন, তারপর নাহয় কথা হবে।”
স্টিফেন টিলির কথায় বেশ উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালো ওর দিকে। টিলি আর আরিফুল ইসলাম হেসে উঠলো উনার উৎসুক দৃষ্টি দেখে। টিলি আরিফুলকে ইশারা করতেই আরিফুল রিয়াজকে ইশারা করলো। রিয়াজ মাথা ঝাঁকিয়ে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। বেশ কিছুক্ষণ পর রিয়াজ একটা মেয়েকে টানতে টানতে নিয়ে এলো। মেয়েটা কেঁদে কেঁদে চোখ-মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। হাত দু’টো পেছনে বাঁধা রয়েছে। মুখটাও একটা কাপড় দিয়ে বাঁধা। টিলি স্টিফেনের উদ্দেশ্যে বললো,
-“আপনার জন্য একটা ছোট্ট উপহার। দেখুন তো পছন্দ হয় কি-না!”
স্টিফেন মেয়েটার দিকে তাকিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। স্টিফেনের চোখ দেখে টিলি আর আরিফুল ইসলাম একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসলো। কারন মেয়েটিকে যে স্টিফেনের পছন্দ হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। স্টিফেন সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে টিলিকে বললো,
-“তোমার সাথে আমার যে ডিল হয়েছিল, তার থেকে দ্বিগুণ টাকা দিব আমি তোমাকে এত সুন্দর একটা উপহার আমাকে দেয়ার জন্য।”
-“ধন্যবাদ।”
স্টিফেন দু’টো ব্রিফকেস এগিয়ে দিল টিলির দিকে। টিলি রিয়াজকে ইশারা করতেই রিয়াজ ব্রিফকেস দু’টো নিয়ে খুলে দেখালো। দু’টো ব্রিফকেস ভরতি টাকা। টিলি মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো। স্টিফেন বললো,
-আমি কি ওকে ছুঁয়ে দেখতে পারি?”
-“অবশ্যই। আপনার জিনিস আপনি ছোঁবেন না তল কে ছোঁবে? এই মেয়েরি এখন আপনার কেনা গোলাম। আপনার যা মন চায় করুন ওর সাথে। আই ডোন্ট কেয়ার।”
টিলি রিয়াজকে ইশারা করলো। রিয়াজ মেয়েটিকে টেনে স্টিফেনের সামনে এনে ধাক্কা দিয়ে স্টিফেনের কোলে বসিয়ে দিল। মেয়েটি কাঁদছে কিন্তু ওদের কাছে এই কান্না দেখার সময় নেই। স্টিফেন মেয়েটির শরীরে বাজে ভাবে স্পর্শ করছে। মেয়েটি স্টিফেনের হাত সরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। কারন ওর হাত দু’টো বাঁধা। স্টিফেন বাঁকা হেসে টিলির উদ্দেশ্যে বললো,
-“আমি তাহলে আসছি। আমার জিনিস আমি পেয়ে গিয়েছি। এখন এই পাখিকে নিয়ে এখানে বসে থেকে আমি শান্তি পাবো না।”
টিলি আর আরিফুল ইসলাম হেসে সম্মতি জানালেন। স্টিফেন মেয়েটিকে টানতে টানতে নিয়ে চলে গেল। টিলি সোফায় আরাম করে বসে আরিফুলের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“নিন আরিফুল সাহেব আপনার সব পয়সা উসুল হয়ে গিয়েছে।”
-“হ্যা।”
-“বাকি মেয়েগুলোকে আর মালগুলোকে সঠিক জায়গায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করুন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।”
-“ঠিক আছে। তুমি চিন্তা করে না।”
রিয়াজের ফোনে কল আসতেই ও অন্যদিকে চলে গেল। একটু বাদেই ফিরে এসে বললো,
-“একটা খারাপ খবর আছে।”
টিলি আর আরিফুল ইসলাম রিয়াজের দিকে তাকালো। আরিফুল ইসলাম জিজ্ঞেস করলেন,
-“কি হয়েছে?”
-“কিছুদিন আগে ম্যাম বাংলাদেশ গিয়েছিলেন। কিভাবে যেন সেই খবর পুলিশ পেয়ে গিয়েছে। এখন ম্যামকে খুঁজছেন উনারা। স্পেশাল ফোর্স রেডি করা হয়েছে ম্যামকে খুঁজে বের করে অ্যারেস্ট করার জন্য। এয়ারপোর্ট থেকে ম্যামের ব্যাপারে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন উনারা। ম্যাম যে এখন মেরিল্যান্ডে আছে সেই খবরও পেয়ে গিয়েছে।”
টিলি একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললো,
-“এদের কি আর কোনো কাজ নেই? আমার পেছনে কেন পরেছে এরা? আমি তো শুধু বাংলাদেশের জনসংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছি। কেন যে এরা নিজেদের ভালো বুঝে না!”
আরিফুল ইসলাম বললেন,
-“আমার মনে হয় তোমার কিছুদিন আত্মগোপন করা উচিৎ। এতে করে তোমার জন্যও ভালো, সাথে আমাদের জন্যও ভালো।”
-“আত্মগোপন সিরিয়াসলি!”
-“হ্যা। আমার মনে হয় তোমার উচিৎ কিছুদিন নিজের পরিবারের সাথে গিয়ে থাকা।”
কথাটা টিলির কানে যাওয়া মাত্রই ও অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো আরিফুল ইসলামের দিকে। প্রায় সাথে সাথেই আরিফুল ইসলাম মাথা নিচু করে ফেললেন। টিলি বললো,
-“আমার ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপারে যেহেতু কিছু জানেন না, তাই আমার পরিবারের ব্যাপারেও কিছু বলবেন না। আমার খেয়াল আমি নিজে রাখতে পারবো। আপনি নিজের চরকায় তেল দিন। দ্বিতীয় বার যদি কখনো আমার পরিবার শব্দটা উচ্চারণও করেন তবে আপনাকে গুলি করতে আমার এক সেকেন্ডও লাগবে না।”
টিলি রেগে নিজের রুমে চলে গেল। আরিফুল ইসলাম বেশ অপমানিত বোধ করলেন। কিন্তু কিছু বলার মতো সাহস তার নেই। এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে গেলেন বের হওয়ার জন্য। রিয়াজও তার মালিককে অনুসরণ করে যেতে লাগলো।
স্নিগ্ধ মেডিকেলের ভেতরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে বারবার নিজের ঘড়ি দেখছে। এখনো সকাল বা আফি কেউ আসছে না দেখে মনে মনে বেশ বিরক্ত হচ্ছে স্নিগ্ধ। সাথে অনেক নার্ভাস হয়ে আছে। ঠিকভাবে সকালকে নিজের মনের কথাটা বলতে পারবে তো! বুঝতে পারছে না। এখনি এত নার্ভাস লাগছে, তাহলে তো সকাল আসলে মনে হয় ভুলেই যাবে কি যে স্নিগ্ধ ঠিক কি বলতে চাইছিল। দু’টো শুকনো ঢোক গিলে নিলো স্নিগ্ধ আবারও ঘড়ি দেখতে লাগলো। হঠাৎ মেডিকেলের গেটের দিকে তাকিয়ে স্নিগ্ধ দাঁড়িয়ে গেল কালো জামা পরিহিতা এক অপ্সরীকে দেখে। আজ প্রথমবার স্নিগ্ধ তার মিস বিকালকে খোলা চুলে দেখলো। হাঁটু ছাড়িয়ে গিয়েছে তার ঘন কালো লম্বা চুলগুলো। দু’হাত ভরতি কালো চুড়ি। কপালে ছোট একটা কালো টিপ। চোখে চিকন করে কাজল দেয়া। এছাড়া আর কোনো সাজ নেই। স্নিগ্ধ সকালকে দেখে চোখ সরাতে পারছে না। হা করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
চলবে….