সেই সন্ধ্যা পর্ব-২৬

0
1836

#সেই_সন্ধ্যা
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_২৬
.
মেডিকেলে ঢুকে আশেপাশে দেখতে লাগলো স্নিগ্ধ। নাহ সকালকে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না সে। আফিও আসেনি আজ। ঘড়ি দেখে সকালের নম্বরে আবারও কল দিল। কিন্তু এখনো ফোনটা বন্ধ বলছে অপর পাশে থাকা মেয়েটি। এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের কেবিনের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। কি যেন একটা ভাবলো সে। পরক্ষণেই আবার উল্টো ঘুরে বেরিয়ে গেল মেডিকেল থেকে।

সকাল ঘুম থেকে উঠে দেখে নয়টা বাজে। ফোনটা হাতে নিতেই মনে পরলো গতকাল রাতে সে ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়েছিল। ফোনটা অন করতেই মিসড কল অ্যালার্ট আসলো। সেখানে স্নিগ্ধর নম্বর দেখে না চাইতেও মনটা ভালো হয়ে গেল সকালের। মনে মনে তো এই মানুষটার কলের কথা ভাবছিল সে। ১-২ বার নয়, স্নিগ্ধ পুরো ১৭ বার কল দিয়েছে তাকে। সকালের এখন নিজের ওপরেই বিরক্ত লাগছে ফোন বন্ধ করে ঘুমানোর জন্য। কিন্তু যখনি মনে পরলো গতকালও স্নিগ্ধ তার বলা ভালোবাসি ম্যাসেজের জবাব দেয়নি তখনি আবারো একরাশ অভিমান এসে জমা হলো ওর মনে।
সকাল তৈরি হয়ে চুলগুলো বাঁধছিল এমন সময় ওর ফোন বেজে উঠলো। কল রিসিভ করে লাউড স্পিকারে দিয়ে আবারো চুল বাঁধতে লাগলো সে। আফি ওপাশ থেকে বললো,
-“কল রিসিভ করতে এত দেরি হলো কেন?”
-“চুল বাঁধছিলাম।”
-“আচ্ছা মেডিকেলে আসবি না!”
-“হ্যা আসবো। প্রথমে ভেবেছিলাম যাবো না। কিন্তু বাসায় ভালো লাগছে না একা একা। তাই আসছি আমি। আর শোন! আজ মেডিকেল থেকে বেরিয়ে রেস্টুরেন্টে যাবো খেতে। সেখান থেকে শপিংমলে যাবো। কিছু কেনাকাটা করবো। তারপর একটু ঘুরাঘুরি করে বাসায় আসবো, ওকে!”
-“ঠিক আছে আমি রাজি। এমনিতেও তোর সাথে আমার পার্সোনাল কিছু কথা আছে।”
-“হ্যা বল শুনছি আমি।”
-“এখন না পরে বলবো।”
-“আচ্ছা ঠিক আছে। রাখছি তাহলে এখন।”

ফোনটা কেটে দিয়ে চুলগুলো সুন্দর করে সামনে এনে একটা বেনী করে নিলো। মুখের সামনের ছোট চুলগুলোকে আজ আর ছেড়ে রাখলো না। ক্লিপ দিয়ে চুলগুলো পাশে আটকে রাখলো। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগিয়ে হাতে ঘড়ি পড়তে পড়তে আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, “ডাক্তার সাহেব আমার টিচার জেনেও আমি উনার সাথে যতটা ফ্রি, অন্য কোনো টিচারদের সাথে তো ততটা ফ্রি না আমি! তাহলে কেন উনার সাথে একদম বন্ধুর মতো মিশি? আমি কারো সাথে অভিমান বা রাগ করে থাকতে পারিনা। তবে কেন ডাক্তার সাহেবের ওপর আমার অভিমান আর রাগ হয়! উনার স্পর্শগুলো আমার মনে এক অন্যরকম অনুভূতি জাগিয়ে তোলে যা আগে অন্য কারো স্পর্শ পেয়ে হয়নি। তবে কি একেই ভালোবাসা বলে!”
-“এত কি ভাবছে আমার মামনিটা?”
পেছন ঘুরে আরিফুল ইসলামকে দেখে সকাল খুশিতে দৌড়ে যেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো। আরিফুল হেসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
-“তুমি কখন এসেছো পাপা?”
-“এইতো মামনি আসা মাত্রই তোমার ঘরে এলাম।”
-“পাপা জানো সকাল তোমায় এত্তগুলো মনে করেছে।”
-“আমার মামনির কথাও আমার অনেক পড়েছে।”
-“আগামী এক মাস তোমার দেশের বাইরে যাওয়া বন্ধ।”
-“আহা মামনি রাগ করো কেন! পাপা তো কাজের জন্যই যাই তাই না!”
-“তাই বলে এতদিন করে থাকতে হবে কেন ওখানে?”
-“আচ্ছা মামনি এরপর থেকে আর কখনো এতদিন করে থাকবো না।”
-“পিংকি প্রমিস!”
-“হ্যা পাক্কা।”
-“এইতো আমার হ্যান্ডু পাপা।”
মেয়ের কথায় হেসে উঠলেন আরিফুল ইসলাম। হাসলো সকাল নিজেও।
-“মামনি কি মেডিকেলে যাচ্ছো?”
-“হ্যা।”
-“আচ্ছা সাবধানে যেও।”
-“ঠিক আছে। পাপা আমার কিছু টাকা লাগবে। শপিংয়ে যাবো আজ। তাছাড়া আমার কার্ডের টাকা শেষ।”
-“আচ্ছা আমার কার্ড নিয়ে যাও।”

আরিফুল ইসলামের কার্ড নিয়ে সকাল বেরিয়ে গেল। ফোনের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির জন্য। ড্রাইভার গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করেনি আজ। মেইন গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে সকাল ফোন টিপছে। একটা পরিচিত গলার আওয়াজ শুনে চমকে উঠলো সে। সামনে তাকিয়ে দেখে স্নিগ্ধ গাড়িতে বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে। অবাক হয়ে তার দিকে তাকালো।
-“গাড়িতে এসে বসো।”
স্নিগ্ধর কথাটা কানে পৌঁছাতেই সকাল চোখ দু’টো ছোট ছোট করে ফেললো।
-“আমি কি আপনাকে চিনি!”
সকালের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেল স্নিগ্ধ। ভ্রু জোড়া কিঞ্চিৎ উঁচু করে বললো,
-“স্মৃতিশক্তি কি সব লোপ পেয়েছে না-কি!”
-“না তো। আমার স্মৃতিশক্তি ঠিকই আছে। কিন্তু আপনার মনে হয় লোপ পেয়েছে। ভালো ডাক্তার দেখান। হুহ্!”
সকালের গাড়ি আসতেই সে গাড়িতে উঠে চলে গেল। স্নিগ্ধ তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। “আচ্ছা তার মানে ম্যাডামের অভিমান হয়েছে। আমার ওপর যে ম্যাডাম বেশিক্ষণ রাগ বা অভিমান কোনটাই করতে পারেনা তা হয়তো তিনি ভুলে গিয়েছেন। যাক ব্যাপার না। এবার সারপ্রাইজ দিয়ে রাগ ভাঙ্গাবো আপনার মিস বিকাল। এতগুলো বছর যখন আমার জন্য অপেক্ষা করতে পেরেছেন, তখন আপনাকে তো এই অপেক্ষার সুমিষ্ট ফল দিতেই হবে। নাহলে যে আমি শান্তি পাবো না।”

টেবিলের ওপর মাথা নামিয়ে রেখেছে সকাল। মনটা তার ভীষণ খারাপ। স্নিগ্ধর সাথে ক্লাসে আজ বারবার চোখাচোখি হয়েছে ওর। যতবারই ও স্নিগ্ধর দিকে তাকিয়েছে, ততবারই স্নিগ্ধ শুধু নিজের মনভোলানো হাসিটা দিয়েছে। যা দেখে সকালের বিরক্তির শেষ নেই। ক্লাসের সবগুলো মেয়ে যখন স্নিগ্ধকে নিয়ে গুণগান গাইছিল তখন তার মন চাইছিল সবগুলো মেয়েকে হিমালয় পর্বতে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে। আর বারবার স্নিগ্ধকে হাসতে দেখে মন চাইছিল তার দাঁত ভেঙে ফেলতে। এত কিসের হাসি তার! ভেবে পায়না সকাল। ক্লাস শেষে স্নিগ্ধকে দেখেও না দেখার মতো করে চলে এসেছে সে আফিকে নিয়ে। মেডিকেল থেকে বের হতেই সামনে শিহাবকে দেখে চমকে উঠলো সকাল। চোখে-মুখে একরাশ ভয় জড়ো হলো। আফির হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো সে। আফি কিছুই বুঝলো না সকালের হঠাৎ এমন ভয়ের কারণ। শিহাব সকালের সামনে এসে মাথা নিচু করে বললো,
-“গতকালের জন্য স্যরি। আমার উচিৎ হয়নি আপনার সাথে বাজে ব্যবহার করা। পারলে মাফ করে দিয়েন। আমি আর কখনো আপনার সাথে ওমন ব্যবহার করবো না। আমি আবারো স্যরি বলছি।
শিহাব সকালকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চুপচাপ মাথা নিচু করে হেঁটে চলে গেল। সকাল হ্যাবলার তাকিয়ে রইলো। আফি সকালকে ধাক্কা দিতেই হুঁশ ফিরলো সকালের। ড্যাবড্যাব করে আফির দিকে তাকিয়ে বললো,
-“ব্যাপারটা কি হলো!”
-“কে ছেলেটা!”
-“তোকে বললাম না একটু আগে গতকাল একটা ছেলে আমাকে ডিস্টার্ব করেছিল! ইনিই তিনি।”
-“মানে স্নিগ্ধ ভাইয়ার কাজিন!”
-“হ্যা।”
-“তোকে আজকে স্যরি বললো। আবার তার চেহারার দেখলাম বারোটা বেজে আছে। তার মানে তোর ডাক্তার সাহেব এই ফটকাবাজের মেরামত করে দিয়েছে। তাই আজ তার এত উন্নতি।”
-“উফফ… উনার কথা বাদ দিয়ে চল তো এখান থেকে।”
রেস্টুরেন্টে বসে খাবার অর্ডার করার পর সকাল খেয়াল করলো আফি আজ অনেক চুপচাপ। তা দেখে সকাল সোজা হয়ে বসলো।
-“আজকে এত চুপচাপ কেন তুই!”
-“(……)”
-“আজব! কথা বলছিস না কেন!”
-“(……)”
-“এক মিনিট! পলাশের সাথে কথা হয়েছে?”
-“থাপ্পড় মেরে গাল লাল করে ফেলবো। কখন থেকে কথা বলতে বলছি তোকে! ক্লাসেও তুই অমনোযোগী ছিলি। কিছু একটা ভাবছিলি আমি খেয়াল করেছি। এবার কি তুই বলবি কি হয়েছে!”
হঠাৎ আফিকে কাঁদতে দেখে সকাল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। ড্যাবড্যাব করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে মিনমিনে গলায় বললো,
-“স্যরি দোস্ত। আমি বুঝতে পারিনি আমার একটু বকা দেয়ায় তুই কেঁদে দিবি। প্লিজ কাঁদিস না।”
বেশ অসহায় গলায় বললো সকাল। আফি এই কান্নার মাঝেও হেসে ফেললো সকালের কথায়। পরক্ষণেই আবারও কেঁদে দিল।
-“আমি তোর কথায় কাঁদছি না।”
-“তাহলে কেন কাঁদছিস!”
-“আস..আসলে….”

আফি সবটা বলার পর সকাল ‘থ’ হয়ে বসে আছে। আফির ওপর যেমন রাগ হচ্ছে তেমনই আবার মায়াও হচ্ছে। মেয়েটা ছোট থেকেই কষ্ট পেয়ে পেয়ে বড় হয়েছে। তবে কখনো নিজের কষ্টটা কাউকে বুঝতে দেয়নি। তবে পলাশকে সে সত্যি ভালোবেসেছিল। তাই ভেঙে পড়েছিল আফি। কিন্তু এখন নিজেকে কীভাবে সামলাবে সে! সকাল আফিকে জড়িয়ে ধরে শান্ত হতে বললো। কিন্তু এই চোখের পানি এত সহজে থামবার নয়। বেশ কিছুক্ষণ পর আফি একটু স্বাভাবিক হলে চোখে-মুখে পানি দিলে অনেকটা ভালো লাগবে ভেবে সকাল আফিকে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল। আফি ওয়াশরুমের ভেতরে ঢুকতেই সকাল এক দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
ওয়াশরুমের বাইরে দাঁড়িয়ে এক ধ্যানে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে সকাল। হঠাৎ কে যেন ওর হাত ধরে টেনে পাশের দেয়ালের পেছনের দিকে নিয়ে গিয়ে চেপে ধরলো। সকাল ভীত চোখে সামনে তাকিয়ে আগুন্তক ব্যক্তিকে দেখে অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেল।
-“আপনি!”
-“আমাকে উপেক্ষা করছো কেন?”
-“আমার ইচ্ছে। আমার যা ইচ্ছে হবে আমি তা-ই করবো।”
-“মিস বিকাল তোমার মধ্যে ইদানীংকালে একটু বেশিই অভিমান কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে না তোমার!”
-“তাতে আপনার কি! আমি কি আপনাকে বলেছি যে আসুন ডাক্তার সাহেব আমার অভিমান ভাঙ্গান!”
-“বাহ্! এত অভিমান, এত রাগ আমার ওপর!”
-“নাহ্! আপনার ওপর কোনো রাগ বা অভিমান আমার নেই। সমস্ত রাগ আর অভিমান তো আমার নিজের ওপর। আপনার মতো একটা প্যাঁচালো মানুষকে ভালোবেসেছি কি-না তাই।”
-“তোমার এমন রূপ-ও আছে তা তো জানা ছিল না আমার।”
-“আমার আরো অনেক রূপই আপনার অজানা। আর আপনি এখানে কি করছেন! ক্লাস নেই আপনার? হসপিটালে যেতে হবে না!”
-“সেই চিন্তা তোমাকে করতে হবে না।”
-“ঠিক আছে করলাম না। আমি তো আপনার কেউ না। শুধু শুধু আপনার ব্যাপারে নাক গলানোর কোনো অধিকার আমার নেই বুঝেছি। এবার হাত ছাড়ুন আমার। আমি এখানে আপনার সাথে থাকতে ইচ্ছুক নই।”
-“সত্যিই কি আমার সাথে থাকতে ইচ্ছুক নও!”
সকাল কিছু বলতে পারছে না। স্নিগ্ধ তার এতটাই কাছে চলে এসেছে যে শ্বাস নেওয়াটাও কঠিন মনে হচ্ছে তার কাছে। চোখ বন্ধ করে রেখেও স্নিগ্ধর গরম নিঃশ্বাস নিজের মুখের ওপর অনুভব করতে পারছে। বড় করে দু-তিনটে শুঁকনো ঢোক গিলে নিলো। স্নিগ্ধর মতিগতি কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। লোকটা আসলে কি চায় সেটা পরিষ্কার ভাবে বললেই তো পারে তাকে। স্নিগ্ধ সকালের গালে একহাত রেখে তার নাকের পাশে নিজের নাক চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বললো,
-“আগামীকাল মেডিকেল বন্ধ। তাই দেখা হবে না তোমার সাথে। তবে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। তাই দেখা হলেও হতে পারে।”
কম্পিত কণ্ঠে সকাল জিজ্ঞেস করলো,
-“ক..কি সারপ্রা..প্রাইজ!”
-“টপ সিক্রেট।”
মুহূর্তেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল সকালের ধাক্কা দিয়ে স্নিগ্ধকে সরিয়ে দিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“থাকেন আপনি আপনার টপ সিক্রেট নিয়ে। কথায় কথায় টপ সিক্রেট টপ সিক্রেট শুরু করেন কেন আজব! ধুর আমি আপনার সাথে কথাই কেন বলছি!”
সকাল রেগে চলে যেতে গেলেই স্নিগ্ধ তার হাত ধরে তাকে কাছে নিয়ে এসে কানেকানে বললো,
-“ডাক্তারদের এত রাগ করতে নেই মিস বিকাল ওরফে হবু ডাক্তার সাহেবা।”

রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে সকাল। তার পুরো শরীর ভয়ঙ্করভাবে কাঁপছে। স্নিগ্ধ যখন কথাগুলো বলছিল, তখন তার ঠোঁট জোড়া বারবার সকালের কানেরলতি স্পর্শ করছিল। সকাল পিটপিট করে চোখ খুলে স্নিগ্ধর দিকে একবার তাকিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে চলে গেল সেখান থেকে। স্নিগ্ধ প্যান্টের দুই পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে হাসতে লাগলো।
সকাল ওয়াশরুমের সামনে এসে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। এই অনুভূতির সাথে ও পরিচিত নয়। সম্পূর্ণ নতুন এক অনুভূতি, একদম ভিন্ন। এই অনুভূতিটা গতকালও হয়েছে। তবে কি এটাই ভালোবাসা! আশেপাশে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমের ভেতরে ঢুকে গেল সে। বেসিন থেকে পানি নিয়ে মুখে ছিটিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। বারবার স্নিগ্ধর কাছে আসার দৃশ্যটা ভেসে উঠছে চোখের সামনে। সকাল আবারো মুখে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে এলো। টেবিলের সামনে গিয়ে দেখলো আফি চিন্তিত হয়ে বসে আছে। আফির সামনে যেয়ে বসতেই আফি তাকে প্রশ্ন করা শুরু করে দিল, সে কোথায় গিয়েছিল, কেন গিয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। সকাল কোনোমতে সামলে নিলো আফিকে।
বইয়ে মুখ গুঁজে বসে আছে সকাল। এমন সময় রেহেনা বেগমকে তার ঘরে ঢুকতে দেখে অবাক হলো সকাল।
-“কিছু বলবে মাম্মা!”
-“কি করছো তুমি!”
-“পড়ছি। সামনেই পরীক্ষা আছে।”
-“ওহ আচ্ছা। যা বলতে এসেছিলাম তা শোনো।”
-“হুম শুনছি আমি, তুমি বলো।”
-“বিকেলে কিছু মেহমান আসবে তোমাকে দেখতে।”
-“আমাকে দেখতে আসবে মানে!”
-“মানে পাত্রপক্ষ আসবে তোমাকে দেখতে।”
-“কিহ্! মাম্মা আমি এখনো ছোট!”
-“শুধু শুধু চেঁচামেচি করবে না। দেখতে আসলেই বিয়ে হয়ে যায় না। তাই সুন্দর মতো তৈরি হয়ে নিচে নামবে বিকেলে।”
নিজের মায়ের এমন কাঠখোট্টা কথা শুনে সকাল হতভম্ব হয়ে বসে রইলো। পরক্ষণেই ফোন হাতে নিয়ে স্নিগ্ধর নম্বরে কল দিল সে।

চলবে….

নোটঃ আসসালামু আলাইকুম। আমি কিছুদিন যাবৎ নিয়মিত গল্প দিতে পারছি না বলে আপনারা অনেকেই মনে মনে অসন্তুষ্ট। কিন্তু আপনারা ভালো মতোই জানেন যে আমি নিয়মিত গল্প দিই। এখন যখন অনিয়ম হচ্ছে তার মানে নিশ্চয়ই আমি কোনো ঝামেলার মাঝে অথবা ব্যস্ততার মাঝে আছি! সেটা অনেকেই বুঝেন না, যার ফলে আমার ইনবক্সের বারোটা বাজিয়েছেন অনেকে। সে যাই হোক, আমি সত্যি কিছুদিন ধরে খুব ব্যস্ত সাথে একটু ঝামেলার মধ্যেও আছি। তাই কিছুদিন গল্প দেয়ায় অনিয়ম হবে। তবে ব্যস্ততা কেটে গেলেই আবার নিয়মিত গল্প দেয়া শুরু করবো। আমি বর্তমানে যে ব্যস্ততার মাঝে আছি তা আপনাদের জন্যই। এই ব্যস্ততার কারণ আপাতত বলা যাবে না। টপ সিক্রেট!🤫 ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই একদিন জানাবো এ-র কারণ। আপাতত আমাকে গালাগালি করা থেকে বিরত থাকুন। একটা বাচ্চা মানুষকে গালাগালি করতে লজ্জা করে না আপনাদের! এই বাচ্চা মানুষটা তো আপনাদের কাছ থেকেই ভালো-মন্দ শিখবে তা-ই না! তাই গালাগালি করবেন না।🤭😁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here