সেলাই মেশিন (৬)

সেলাই মেশিন

(৬)
————-
মৌরি যখন দাদিকে জানালো সে বড় কলেজে পড়ার জন্য আবার বাবার কাছে ফেরত যেতে চায়, তখন দাদির মুখ অন্ধকার হয়ে গেলো। দাদি ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন, “এইখানে গ্রামের কলেজে পড়লে ক্ষতি কী?”

“এইখানে কলেজ তো এত ভালো না দাদি। ভালো টিচার নাই, যারা আছে তারাও ঠিক মতো আসে না, ঠিক মতো পড়ায় না। ভালো একটা টিচারের কাছে যে প্রাইভেট পড়বো, সেইটাও তো হইবো না। ইন্টারমিডিয়েটে ভালো করতে না পারলে ভালো জায়গায় পড়তে পারবো না।”

সব শুনে দাদা গম্ভীর গলায় বললেন, “এত পড়ার কী আছে? এইখানে পড়, কলেজ পাশ দিলে ভালো পোলা দেইখা বিয়া দিয়া দিমু। তোর বিয়ার জন্য আলাদা কইরা টাকা রাখছি।”
মৌরির দাদা জেদি আর রাগী মানুষ, তার কথার ওপর মৌরি কথা বললো না কিন্তু দাদির কাছে গিয়ে কান্নাকাটি শুরু করলো। দাদি অনেক বুঝিয়ে দাদাকে রাজি করালেন মৌরিকে নিয়ে ছেলের বাসায় যাওয়ার জন্য।

তখন সবার হাতে হাতে এত মোবাইল ফোন ছিল না। গঞ্জে ফোনের দোকান থেকে বাবার অফিসে ফোন করে দাদা জানিয়ে দিলেন তিনি মৌরিকে নিয়ে আসছেন। মৌরির বাবা তেমন প্রতিক্রিয়া দেখালেন না। যথাসময়ে মৌরি বাবার বাসায় গেলো এবং খুব ভালো মতোই বুঝলো ওই বাড়িতে তাকে দেখে কেউ খুশি হয়নি। অবশ্য দাদি আগেই তাকে এমন কিছু হবার ইঙ্গিত দিয়েছেন আর মৌরীও মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েই এসেছে, বাবা মা যতই অবহেলা করুক, ও এখানে কলেজে পড়বে। স্বপ্ন পূরণের জন্য যেকোনো অবহেলা অপমান সহ্য করার মানসিক শক্তি ওর মাঝে তৈরী হয়ে গেছে।

পরদিন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাবা তাকে কলেজে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হলেন। একটা রিকশায় মৌরিকে নিয়ে উঠে এদিক ওদিক ঘুরতে লাগলেন।
মৌরি অবাক হয়ে বললো, “আমরা কলেজে যাইতেছি না বাবা?”
“না রে মা। আমি তোর সাথে একলা নিজের মতো কিছু কথা বলবো, তাই বাইরে নিয়া আসলাম। চাইনিজ খাবি?”
“আগে কলেজ ভর্তির ঝামেলা শেষ হোক, তারপর খাই?”
“আগে খাই চল। অনেকদিন চাইনিজ খাই না। তোর রেজাল্ট দেয়ার পর মনে মনে ঠিক করে রাখছিলাম, তুই এইখানে আসলে চাইনিজ খাইতে যাবো।”

বাবা একটা সস্তা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে গেলেন। ঘন থাইস্যুপ, ওনথন আর ফ্রাইড রাইসের অর্ডার করলেন। টেবিলে খাবার আসার পর কিছুই খেলেন না, প্লেটের খাবার নাড়াচাড়া করতে লাগলেন। তাকে দেখে মনে হলো না অনেকদিন ধরে চাইনিজ খাবার খাওয়ার ইচ্ছে তার মাঝে ছিল। মৌরি অবশ্য আয়েশ করে স্যুপ খাওয়া শুরু করলো। জীবনে হাতে গোনা কয়েকবার রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সুযোগ হয়েছে। চাইনিজ খাবার তার খুবই পছন্দ, কিন্তু গ্রামে কি আর ওসব পাওয়া যায়? তৃপ্তি করে খাচ্ছিলো মৌরি।

“মৌরি, তোরে গ্রামের কলেজেই ভর্তি কইরা দেই রে মা। এই বাড়িতে থাকলে তোর পড়ার ক্ষতি হইবো। ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা ঘরে, একটা আবার অসুস্থ।”

ততদিনে ঝুনুর জন্ম হয়েছে, তার বয়স তখন তিন বছর, রুনুর ছয়। রুনুর কী হয়েছে জানতে ইচ্ছা করলো না মৌরির। বাবার কথা শুনে খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। চোখ দুটো অকারণেই ঝাপসা হয়ে গেলো। তার ক্ষুদ্র জীবনে অসংখ্যবার হতাশা এসেছে, তবু বাবার কাছ থেকে পাওয়া দুঃখগুলোর ভার অনেক বেশি । আর সেই সাথে মায়ের ওপর অভিমান আরও বাড়ে। সব কিছু এলোমেলো করে দিয়ে অসময়ে মা কেন চলে গেলো?
বাবা মৌরির অজান্তে আলগোছে চোখ মুছলেন।
“তোর হাতে কিছু টাকা দিয়া দিতেছি। কাওরে কিছু বলার দরকার নাই। এত ভালো রেজাল্ট করছস, ভালো কিছু কিনিস। চল তোরে ভালো ভালো কিছু বই কিন্না দেই। সাথে কইরা নিয়া যা। আর ওইখানে কলেজের জন্য যদি কোনো বই লাগে, আমারে বললে কিন্না পাঠায় দিবো।”
“টাকা লাগবো না বাবা। আমি তো তোমার সাথে থাকতে আসছিলাম। রাখতে পারবা না?”

বাবা মৌরির দিকে তাকালেন। ওই চোখের দিকে তাকিয়ে মৌরি অসীম অসহায়ত্ব দেখতে পেলো। ও আর কিছু বললো না। বাবা যখন মেয়েকে নিজের কাছে রাখতে অপারগ, তখন আর কিছু বলার থাকে না। বাবা মেয়ের একসাথে চাইনিজ খাওয়া হলো না। দুই দুঃখকাতর মানুষ একসাথে বসে আনন্দ করে খেতে পারে না।

বাসায় ফিরে মৌরি সব গোছগাছ করে নিলো। দাদাকে কিছুই বলতে হলো না। রাতেই মৌরিকে নিয়ে গ্রামে ফেরার বাস ধরলেন। যতক্ষণ মৌরি বাবার বাসায় ছিল, শাহেদা ওর সাথে খুব একটা কথা বলেনি, অসুস্থ রুনুকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল। মৌরি অবশ্য শাহেদার কাছে কিছু আশাও করে না। শুধু ভাবে, আর কতবার বাবার কাছে আশাহত হবার কষ্ট নিয়ে ফিরতে হবে? হয়তো আরো অনেকবার।

মৌরি গ্রামের কলেজেই ভর্তি হলো। কলেজে যাওয়া আসা করতে হয় বাসে , ফলে কবির চাচাকে আর পাহারা দিতে মৌরির পেছন পেছন আসতে হয় না। কবির চাচার শরীরটাও কেমন খারাপ হয়ে পড়েছিল, বিশ্রী কাশি হয়েছে লোকটার। বাসে কলেজে যাতায়াত, বাড়িতে পড়ালেখা নিয়ে মৌরি নিজেকে ব্যস্ত রাখতো। যে বিষয়টা বুঝতো না সেটা শিক্ষকদের কাছে আলাদা ভাবে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করতো। শিক্ষক বিরক্ত হলেও পাত্তা দিতো না। কলেজের অনেকেই মৌরির অতি উৎসাহ দেখে হাসাহাসি করতো, দেখলে অনেকেই বলতো, “ওই যে ম্যাডাম জজ ব্যারিষ্টার হইবো।” কিন্তু মৌরি ওসব কানে তুলতো না ,কলেজে ছেলের তুলনায় মেয়ের সংখ্যা ছিল নগন্য। যা ছিল তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মেয়েদের স্বপ্ন ছিল কলেজ পাশ দিয়ে ভালো ঘরে তাদের বিয়ে হবে, সংসার হবে আর মৌরির স্বপ্ন ও অনেক বড় ডাক্তার হবে, অনেক সম্মান কুড়াবে, বাবা আর শাহেদার সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। মৌরির সফলতার আলোতে যেন তাদের চোখ ঝলসে যায়। ওকে আরেকবার অবজ্ঞা করতে যেন তাদের বুক কাঁপে। এই বড় মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার সাহস পাবে কোথায় তখন? এই প্রত্যাশার জেদ এত বেশি ছিল যে মৌরি আর কোনো দিকে তাকানোর ইচ্ছাও হয়নি। কলেজে কোনো ছেলে ওর প্রতি আগ্রহ দেখালেও মৌরি ওসব এড়িয়ে চলতো।

মৌরির প্রবল জেদের কারণে ইন্টারমিডিয়েটের ফল ভালো হলো। তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেলো বহুগুন। এবার ঢাকায় গিয়ে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা দেবার পালা। কিন্তু এবার দাদা সত্যিই বেঁকে বসলেন, কিছুতেই ঢাকায় একা একা পড়তে যেতে পারবে না মৌরি। তার কথা হচ্ছে ঢাকায় ভালো একটা ছেলে দেখে মৌরির বিয়ে করিয়ে দিলেই ভালো হয়, বিয়ের পর স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে মৌরি শহরে পড়তে পারে। তাছাড়া ঢাকায় পড়ার অত খরচই বা কিভাবে জোগাড় করা সম্ভব?
মৌরি দাদাকে অনেক বোঝালো। শেষে বললো, “দাদা, আপনি যে আমার বিয়ের জন্য আলাদা কইরা টাকা রাখছেন, বুঝলাম। আমি যদি নিজের পায়ের নিচের মাটিই শক্ত না করি, ওই টাকা দিয়া বিয়া কইরা আমার লাভ কী?”
“লাভ লোশকান বুঝি না। এমন একলা একলা আবিয়াত্যা মাইয়া ঢাহা শহরে গিয়া থাকবি ক্যামনে?”
“ক্যান? হলে থাকবো নাইলে বাসা ভাড়া কইরা থাকবো।”
“ঢাহা শহরে কত খরচ, তুই জানোস?”
“আমার জানোনের দরকার নাই। টাকা আপনে আমার জন্য রাখছেন, আমার জন্য খরচ করেন। শুনেন দাদা, গত কয়েক বছর আমি খালি একটাই স্বপ্ন দেখছি, আমি ডাক্তার হইছি, আপনার আর দাদির চিকিৎসা করতেছি। আপনাগো কোনো অসুখ থাকবো না, ওষুধের কষ্ট হইবো না, সব আমি দেখমু। এইযে আমার কোমরে ব্যাথা করে, দাদি চোখে কম দেখে, ডাক্তারের কাছে যাইতে আপনাদের কত বাহানা, ডাক্তার এত্তগুলি টাকা নিবো, এত্ত টাকার ওষুধ লাগবো। চিন্তা কইরা দেখেন, আমি ডাক্তার হইলে আপনাগো সব ভিজিট ,ওষুধ ফ্রি ফ্রি ফ্রি।”
“এহ, ফ্রি! ডাক্তর হউন এতই সোজা?”
“সোজা না, কিন্তু আমি যদি চাই, পারবো। ক্যান, গ্রামের স্কুল কলেজ থেইকা ভালো করি নাই? দাদা, আর জিদ কইরেন না। খালি ঢাকায় একটা থাকার ব্যবস্থা করলেই হইবো। বাকিটা আমি দেখবো।”
“ক্যামনে দেখবি, বললেই হইলো? ঢাহায় থাকনের কত খরচ।”
“একটা ব্যবস্থা আমি করমুই দাদা। আপনার কোনো ঝামেলা হইবো না।”
পেছন থেকে দাদি সায় দিয়ে বললেন, “আমাগো মৌরির মাথা ভরা বুদ্ধি, ও ঠিকই দেখবেন নিজে নিজে সব ব্যবস্থা কইরা নিবো। ট্যাকার লাইগা আপনার এত চিন্তা করন লাগবো না। তাছাড়া ওর বাপ চাচারা আছে না? মাইয়ার লেখাপড়ার জন্য তারা কিছুই করবো না?”
“আর বাপ চাচা।” মাথা নেড়ে আক্ষেপ করে বললেন দাদা। তারপর জোর গলার বললেন,”অল্প বয়সী মাইয়া শহরে একা এক থাকলে গ্রামের মানুষ কী কইবো?”
“গ্রামের মানুষ যখন দেখবো আমি ডাক্তার হইয়া তাগো চিকিৎসা করতেছি তখন দেখবেন সবার মুখ বন্ধ। একবার খালি আমার উপর ভরসা করেন দাদা। বড় কলেজে পড়তে চাইছিলাম, পারি নাই। এইবার বড় জায়গায় পড়তে দেন।”
“তাইলে তোর বাপের কাছে জিগা, সে রাজি হইলে আমার আর কিছু বলার নাই।”

বাবার সাথে গত দুই বছর অভিমান করে খুব একটা যোগাযোগ করেনি, একবারও বাবার কাছে বেড়াতে যায়নি। ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বাবাকে জানাতে অনেকবার অনুরোধ করলেন দাদা দাদি। কিন্তু মৌরি গো ধরে রইলো, যা করার সে করবে, বাবাকে এর মাঝে টানবে না। শুধু বাবাকেই না, চাচা ফুফু কাওকেই কিছু জানাবে না। মেডিকেলে ভর্তি হলে তবেই সবাইকে জানাবে। দাদা দাদির কাছে থাকতে আসার পরে হাতে গোনা কয়েকবার চাচা আর ফুফুদের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছে, প্রতিবার অবহেলা পেয়েছে। সবার চোখে মুখে ওর প্রতি করুনা ঝরে পড়ে। আহারে উহুরে করেই তাদের কথা শুরু হয়। বাবা যখন মৌরিকে বাড়িতে রাখতে অস্বীকার করলেন, তখন দাদি ছোট ফুফুকে একবার বলেছিলো, “মৌরিরে তোর কাছে রাইখা পড়ালেখা করা। ও তোর বাচ্চাগুলিরে পড়াইবো, তার বদলে ওরে তোর বাসায় রাখ।” কিন্তু ফুফু রাজি হয়নি। একে একে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মৌরি ওসব ভেবে কতটা মানসিক কষ্ট পায়, সেটা ওরা কোনোদিন বুঝবে না।

মৌরির পীড়াপীড়িতে দাদা নিমরাজি হলেন। গ্রামের চেয়ারম্যান সাহেবের ভাইয়ের ছেলে নাকি মালিবাগ থাকে। তার বাসায় কিছুদিন মৌরির থাকার ব্যবস্থা করা হলো। পরে মৌরি অন্য কোথাও থাকার জোগাড় করবে।

নির্ধারিত দিনে দাদার সাথে ঢাকায় রওয়ানা হলো মৌরি। সেদিন দাদির কান্না মাখা মুখটা এখনও চোখে ভাসে। কবির চাচা গায়ে জ্বর নিয়ে ওকে বিদায় জানাতে এলেন। মৌরিরও ভীষণ কষ্ট হচ্ছিলো। এতদিনে চেনা জানা আপন পরিমণ্ডল থেকে ছিটকে গিয়ে বিশাল এক চ্যালেঞ্জ নিতে যাচ্ছে এমন এক শহরে যাচ্ছে যার সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তার ওপর দাদির কান্নাকাটিতে ও আরো দুর্বল হয়ে পড়লো। কবির চাচা ইশারা করে বললেন, মৌরি যেন জলদি ডাক্তার হয়ে এসে তার চিকিৎসা করে। মৌরির এমন কষ্ট লাগছিলো কবির চাচার মলিন মুখটা দেখে! ও বললো, “চাচা আপনি তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখান, কী অবস্থা হইছে আপনার?” কবির শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো।

ঢাকায় পৌঁছে মালিবাগে মৌরিকে রেখে পরদিন গ্রামে ফিরে গেলেন দাদা। ওই বাসায় থাকে চেয়ারম্যান সাহেবের ভাইয়ের ছেলে হাবিব আর তার পরিবার। মৌরির থাকার খরচ বাবদ দাদা হাবিবকে কিছু টাকা দিয়ে এসেছিলেন। হাবিব জানিয়ে দিলো মৌরিকে একা একাই সবখানে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে, আর এক মাসের মধ্যেই যেন অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করে নেয়।

হাবিবরা থাকে খুবই ছোট ফ্ল্যাট। মৌরিকে বসার ঘরের চৌকিতে থাকতে দেয়া হলো। সেখান গোপনীয়তা বলে কিছু নেই। সবাই সবসময় আসা যাওয়া করছে, টিভি চলছে। মৌরি ভর্তি পরীক্ষার জন্য পড়তে পারে না। এর মাঝে একা একা ঠোকর খেতে খেতে মেডিক্যাল, বুয়েট আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সব খোঁজ খবর নিলো। যদিও মেডিক্যাল তার প্রথম পছন্দ তবু দ্বিতীয় তৃতীয় পছন্দ ঠিক করে রাখতে হয়। হাতে টাকাও সীমিত। কোচিং সেন্টারে পড়ার মতো টাকা ওর কাছে নেই, থাকার ব্যবস্থাও করা লাগবে। এতদিন কেউ না কেউ ইচ্ছে বা অনিচ্ছাতে ওর মাথায় ছাতা ধরে রেখেছে, এখন মৌরি পুরোপুরি একা। হাবিবের মেয়েকে পড়াতে আসতো ঢাকা ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যার এক ছাত্রী। তার কাছে খুঁটিনাটি অনেক কিছু জেনে নিতো মৌরি। তার বিভিন্ন পরামর্শ মন দিয়ে শুনতো। মেয়েটি মৌরির থাকার ব্যাপারে একটা বুদ্ধি দিলো। কাঁটাবনে একটা লেডিজ হোস্টেল আছে, খরচ খুব বেশি না। ঢাকার বাইরে থেকে আসা অনেক ছাত্রী আর কর্মজীবী মেয়েরা ওখানে থাকে।

মৌরি সেখানে গিয়ে নিজের থাকার আয়োজন করে ফেললো। সেদিন যে ওর কী আনন্দ হয়েছিল! নিজের একক ঠিকানায় গিয়ে সারাদিন মেডিক্যালে ভর্তির জন্য পড়তো।

কিন্তু মৌরির স্বপ্ন পূরণ হলো না। বাংলাদশের কোনো মেডিক্যালে মৌরি ভর্তির সুযোগ পেলো না।

(ক্রমশ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here