হঠাৎ পাওয়া সুখ পর্ব-২

0
1712

#হঠাৎ_পাওয়া_সুখ
(২য় পর্ব)
শারমিন মিশু

আরে ভাই কি বলবি বল না?
লাবণ্যর কথায় মারজুকের হুশ ফিরলো। পানি খেয়ে এতক্ষণ ও মনে মনে নিজেকে শক্ত করছিলো।
-মন খারাপ করে,, তুই আমাকে ভাই ডাকছিস কেন? আমি তোর ভাই না!!!
-আচ্ছা আপনি আমার ভাই না! এখন কি বলবেন বলুন?
-না মানে বলছিলাম কি….
-কিছুই তো বলিসনি…
-না মানে…
-এই না মানে না মানে করতে করতে আধাঘন্টা পার করেছিস। তারপরও বলিসনি!
-সাহস পাচ্ছিনা!
-সাহস করে বল! তোর কথা শেষ হলে আমারও একটা কথা আছে। একটা আনন্দের সংবাদ দিবো তোকে!
-তাহলে আগে তুই বল..
-মারজুক!!! কথাটা আগে তুই বলতে চেয়েছিলি!
-না সমস্যা নেই। আগে তোর কথা বল পরে আমি বলবো!
-বলবো?
-হুম!
-আচ্ছা তাহলে আজিমকেও ডেকে নিই।
-আমাদের কথার মধ্যে আজিমকে আনছিস কেন?
-আরে বোকা তোরা দুজনেই আমার বন্ধু! তাই গুড নিউজটা দুজনের শুনার দরকার আছে বলে লাবন্য আজিমকে ডাক দিলো।

আজিম এসেই মারজুকের দিকে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করলো বলেছে কিনা। মারজুক মাথা নেড়ে না বললো।

লাবন্য বললো,, শুন দোস্ত কথাটা হলো, আগামী মাসের সতেরো তারিখে আমার বিয়ে!
-মারজুক আর আজিম একসাথে বলে উঠলো,, বিয়ে!!!
-লাবন্য ওদের তাকিয়ে বললো চমকাচ্ছিস কেন? আমার বিয়ে হতে পারেনা?
-আজিম বললো,,,না মানে বলা নাই কওয়া নাই হুট করে…..
-হুম হুট করেই হলো।
-সত্যি তোর বিয়ে!!!
-হুম সত্যি! আর আমি মিথ্যে বলবো কেন?
মারজুকের চারপাশে ঘুরতে লাগলো। কি শুনছে এটা। লাবন্যর বিয়ে!!! চোখ দুটো ঘোলা হয়ে আসছিলো। নিজেকে সামলাতে অন্য দিকে ঘুরে গেলো।

লাবন্য বলে যাচ্ছে,,,ছেলে বাবার পরিচিত। বাবার কলিগের ছেলে। পেশায় ডাক্তারই লন্ডনে সেটেল্ড। কোন এনগেজমেন্ট টেন্ট হবেনা সোজা বিয়ে। জুয়েলের সাথে আমার আগে থেকে পরিচয় আছে। তাই আর কোন দেখাদেখি হবেনা। দুই মাসের জন্য দেশে আসবে। বিয়ে করে আবার আমায় সাথে করে নিয়ে যাবে।
-মারজুক নিজেকে সামলে বললো,,, ভালো তো! আমরা ও একটা দাওয়াত খেতে পারবো। অনেকদিন এসব বিয়ের দাওয়াত টাওয়াত খাওয়া হয়না তাই নারে আজিম?

-আজিম মারজুকের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে ও স্বাভাবিক আছে নাকি?
-লাবন্য বললো,, তাতো দাওয়াত দিবোই।তবে আমায় কিন্তু দামি কিছু গিফট না করলে তোদের খাওয়া বন্ধ।
-তোর বিয়েতে আমি গিফট দিবো। নো ওয়ে!! আমি কোন গিফট দিতে পারবোনা। যাবো খালি হাতে খেয়ে সোজা চলে আসবো।
-আজিম বললো,,, হ্যা রে লাবন্য তোর তো এখনো ডাক্তারি শেষ হতে ছয়মাস বাকী। কমপ্লিট না করেই বিয়ে করবি?
-দেখ ওসব ডাক্তারি আমার দ্বারা হবেনা। মায়ের চাপে পড়ে পড়তে হয়েছে। নয়তো এতো এতো পড়ার কোন ইচ্ছে আমার ছিলোনা। বিয়ে করবো সংসার করবো! এতো পড়ে হবে কি? এখন যখন একটা সুযোগ পেয়ে গেছি তখন হাতছাড়া করি কি করে। আর তাছাড়া ছেলে প্রতিষ্ঠিত। সব দিক দিয়ে স্যাটেল আছে। এরকম পাওয়া যায় নাকি?
আজ অবদি কোন ছেলেকে পছন্দ করিনি বিয়ের পর শুধু নিজের হাজবেন্ডকে ভালোবাসবো বলে। নিজের আবেগ অনুভূতি শুধুমাত্র সেই একজনকে দিবো বলে। জুয়েল ভালোবাসার মত একটা ছেলে।
আর মেয়েদের বয়স বেশি হলে তখন আর এরকম পাত্র পাওয়া যায় না।সময় থাকতে নিজের সব গুছিয়ে নেয়া ভালো।
আর জুয়েল যদি জোর করে ডাক্তারি শেষ করার জন্য তাহলে তাই করবো!

আচ্ছা বাদ দে! আজ আমায় তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে। তোদের দুজনকে কিন্তু অগ্রিম দাওয়াত দিয়ে রাখলাম। ঘটা করে কার্ড চাপিয়ে তোদের দাওয়াত দিতে পারবোনা। তবে গিফট ছাড়া যদি একটাও আমার বিয়েতে আসিস ঠ্যাং ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো।
ভালো থাকিস বলে লাবন্য চলে গেলো।

আজিম মারজুকের দিকে তাকাতেই দেখলো ও চোখের পানি মুছে তা আড়াল করার চেষ্টা করছে।
আজিমের দিকে তাকিয়ে বললো,, আমি যাইরে। পরে দেখা হবে।
-আজিম মারজুকের কাঁধ চেপে ধরলো।
-মারজুক সহাস্যে বললো,, আরে আমি ঠিক আছি। তুই কাঁদছিস কেন?
-কিছুনা বলেই আজিম ওখান থেকে চলে গেলো।

মার্জিয়া বাসায় আসার পর থেকে লক্ষ্য করছে মারজুক রুম থেকে বের হয়নি। বাবা মা দুজনের কেউ আজ বাসায় নাই। ওদের বাবা মুনতাসির আহমেদ অফিসের কাজে চিটাগাং গেছে আর মা সেলিনা আহমেদ স্কুল থেকে তিনদিনের ট্রেনিংয়ে গেছে। বাসায় ওরা দুজন একা। উনারা দুজনে চাকরি করার কারনে বাসায় বাঁধা কাজের লোক রাখা হয়নি। কি জানি কখন কোন অঘটন ঘটে। ছুটা বুয়া আছে সকালে আর বিকালে এসে ভারী কাজগুলো করে দিয়ে যায়।
মার্জিয়া রাতের খাবারের জন্য মারজুককে ডাকতে আসলো। দরজার বাহিরে থেকে ডাকার পর কোন আওয়াজ না পেয়ে রুমের ভিতরে ডুকলো। মারজুক মার্জিয়ার আসার আওয়াজ পেয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লো।
মার্জিয়া অসময়ে ভাইকে শুয়ে থাকতে দেখে পাশে এসে বসলো,,, ব্যাকুল চিত্তে বললো,,, ভাইয়া তুই অসময়ে শুয়ে আছিস কেন? শরীর খারাপ করেনি তো? বলে কপালে হাত রাখলো।
-মারজুক চোখ বন্ধ রেখে মার্জিয়ার হাত ধরে বিমর্ষ কন্ঠে বললো,, আরে না তেমন কিছু হয়নি। মাথা একটু ধরে আছে তাই! -সত্যি করে বলতো কি হয়েছে?
-আরে কিছুই হয়নি!
-ভাইয়া!! তোর চোখমুখ ফুলে আছে!! তোর কথা কেমন ভাঙা ভাঙা!! মনে হয় এক্ষুনি কাঁদছিলি! আর তুই বলছিস কিছু হয়নি!
-আরে বললাম তো আমার কিছু হয়নি!
-ভাইয়া আমি তোকে চিনি! ছোটবেলা থেকে তোকে দেখে আসছি! তোর নাড়ি নক্ষত্র সব আমার জানা আছে। তোর কখনো একটু অসুস্থতা হলে বা মন খারাপ থাকলে আমি বুঝতে পারি জেনেও তুই আমার সাথে মিথ্যা বলছিস?
আচ্ছা,, লাবন্য আপুর আবার কোন ঝামেলা বাঁধাস নি তো?
একথা শুনে মারজুকের আবারো জোয়ার বেঁধে কান্নার ঢল নামলো। মার্জিয়ার হাত চেপে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলো।
-মার্জিয়া ব্যতিব্যস্ত হয়ে বললো,,, ভাইয়া কাঁদছিস কেন? খারাপ কিছু নয়তো? কি হয়েছে আমাকে বল?
-মারজুক ধরা গলায় বললো,, লাবন্যর বিয়ে!
-লাবন্যর বিয়ে মানে!!! তুই না ওকে ভালোবাসতি?
-হুম বাসতাম কিন্তু ও কখনোই আমাকে ভালোবাসেনি। ও নিজ ইচ্ছায় বিয়েটা করছে!
-ভাইয়া তুই আপুকে বলিসনি তোর কথা?
-নারে বড্ড দেরি হয়ে গেছে!!
-এখনো সময় আছে ভাইয়া!
-নারে আমি শুধুই ওকে একতরপা ভালোবাসতাম! এতে ওর কোন দোষ নেই।
-তুই উনাকে বুঝালে নিশ্চয় বুঝবে তোকে!
-মেয়েটা একটা স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে কি করে আমি তাকে বাধা দেই?
-ভাইয়া তোর কি হবে?
-দূর পাগলী আমার কি হবে? আমি এখন যেমন আছি তেমনই থাকবো!
-পারবি নিজেকে স্বাভাবিক করতে?
-মার্জিয়া! আমি এতোটা দুর্বল হয়ে যায়নি! ভালোবাসা পাইনি বলে হতাশ হয়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মতো বোকা আমি নই!
কখনোই না! আমার জীবনের এখনো অনকটা সময় বাকী
এতদিন লাবন্যকে ভালোবাসতাম ওকে পাওয়ার চেষ্টা করতাম! আর আজ থেকে লাবন্য অন্য কারো ভালোবাসা মনে করে ওকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবো!
এটা আমার আবেগ ছিলো ! একটা ভুল স্বপ্ন দেখেছি মনে করে সব ভুলে যাবো।
চিন্তা করিস না আমায় নিয়ে। তোর ভাইয়ের মনটা অনেক শক্ত আছে!
যা এখন অযথা কান্নাকাটি না করে টেবিলে খাবার লাগা ক্ষিধে পেয়েছে! আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি বলে মারজুক খাট থেকে নেমে গেলো।
মার্জিয়া কতক্ষণ দম মেরে বসে থেকে এক বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে গেলো।

তার পরের দিনগুলো সেই আগের মত করে কাটানোর চেষ্টা করলো মারজুক। লাবন্য যাতে বুঝতে না পারে মারজুকের দুর্বলতা সেদিকে খেয়াল করে লাবন্যর সাথে আগের মতই হাসিখুশি সময় কাটাতে লাগলো।
আজিম অবশ্য বারবার বলছিলো,, মারজুক এখনো সময় আছে! তুই মনের কথাটা ওকে বলে দে। ও নিশ্চয় তোকে বুঝবে!
তুই না পারলে আমি বলি!
-মারজুক ওকে এ পর্যন্ত থামিয়ে রেখেছে। দেখ, আমি ওকে ভালোবাসতাম। এখন ও অন্য কারো ঘরণী হওয়ার জন্য প্রস্তুত! আমি এখন ওকে কোন আঘাত দিতে চাইনা। কোন রকমে ভুল বুঝাবুঝি হয়ে বন্ধুত্বে ফাটল ধরুক তা আমি চাইনা!
যে দুদিন লাবন্য আছে এভাবেই থাকার চেষ্টা কর।
ওর বিয়ে শুনেতো আমি নাওয়া খাওয়া ছেড়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে পড়ে থাকিনি তাহলে কিসের এতো বাড়াবাড়ি! বাদ দে এসব! আমি যেমন ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি তুইও ভুলে যা!

লাবণ্য বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে ক্লাসে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। বিয়ের শপিং টপিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিয়ের আগের দিন হুট করে এসে বললো,,তোরা যদি না আসিস আমি ভীষন রাগ করবো মারজুক!
-মারজুক সহাস্যে বললো,,, অবশ্যই যাবো। আমি ফ্রী তে পাওয়া দাওয়াত মিস করবোনা।
-আজিম বললো,,, আমি যেতে পারবোনা লাবন্য!
-কেন তোর আবার কি হলো?
-ওসব খাবার আমার পেটে সইবেনা!
-থাপ্পড় চিনোস! না আসলে বুঝবি তখন বলে লাবন্য চলে গেলো।

বিয়ের দিন আজিম কিছুতেই যাবেনা। মার্জিয়াকে ও দাওয়াত দিয়েছে লাবন্য। কিন্তু ও যাবেনা। মারজুক আজিমের বাসায় বসে আছে ঘন্টাখানেক ধরে। কিন্তু এ ছেলে কিছুতেই যাবেনা। শেষে অনেক তোষামোদি করে রাজি করিয়ে তবে দুজনে বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।

লাবন্য ষ্টেজে বউ সেজে বসে আছে ওর বরের পাশে। লাবন্য ঠিকই বলেছে জুয়েল সব দিক থেকে পারফেক্ট। যেমন সুদর্শন তেমনি কথা বলার স্টাইল।
জুয়েলের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে লাবন্যের দিকে গিফটের প্যাকেটটা বাড়িয়ে ধরলো।
লাবন্য ওটা হাতে নিতে নিতে বললো,,, এখানে কি আছেরে মারজুক? এতো ওজন কেন?
-তোর বিয়ের গিফট আমার পক্ষ থেকে আমার পছন্দের বই।
-আচ্ছা তুই কিরে মারজুক? সারাজীবন তুই আমাকে বই গিফট করলি! মার্কেটে কি অন্য কোন গিফটের অভাব পড়ছে?
-শুন বই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম গিফট! এর থেকে বড় কোন গিফট থাকতেই পারেনা!
আর শুন,, এখানে কিছু রান্না শিখার বইও আছে। বাসায় একা বসে কি করবি নিত্য নতুন রান্না শিখবি আর ভাইয়াকে রান্না করে খাওয়াবি!
জুয়েলের দিকে তাকিয়ে বললো,,, ভাইয়া আপনার কিন্তু পোড়া কপাল! আপনার বউ একটা অকর্মার ঢেঁকি!
কোন কাজই সে পারেনা!
জুয়েল হেসে বললো,, সমস্যা নেই আমি শিখিয়ে দিবো আমার সব রান্না জানা আছে!
-মারজুক!
-আস্তে কথা বল আজ তোর বিয়ে! লোকে কি বলবে! বেহায়া মেয়ে লজ্জা শরম নাই!
-আমার ইচ্ছে করছে তোকে তাজা চিবিয়ে খাই! আর রান্নার জন্য তুই আমায় বই কেন দিবি ইন্টারনেটে কি রেসিপির অভাব পড়ছে যে আমায় বই দেখে রান্না করতে হবে!
-আরে তুই যে অলস! আর ইন্টারনেট দেখে রান্না করলে তুই খেতে পারবিনা।
বই পড়ে রান্না শিখলে তোর জ্ঞান চর্চা ও হবে এদিকে রান্নাও শিখে ফেলবি!
-শয়তান তোকে আমি!! তুই যা তো এখান থেকে!
-আস্তে আস্তে!!! যাচ্ছিতো!
পরক্ষণে মারজুক কিছুটা মন খারাপ করে বললো,,, ভালো থাকিস লাবন্য। তোদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক!!
বলে স্টেজ থেকে নেমে এলো।

লাবন্য মারজুকের এরকম আচরণে অবাক হয়ে গেলো। কি হলো হঠাৎ ওর? মনে হলো কান্না করছে কথাটা এমনভাবে শুনালো! তবে কি!!!!
মনে মনে উফ!!!লাবণ্য কি ভাবছিস তুই!!! মারজুক এমন ছেলেই না!!

আজিম একবারো লাবন্যর সাথে দেখা করেনি। হয়তো মুখ ফসকে মারজুকের কথাটা বলে দিতে পারে!
ওরা দুজনে স্টেজের ঠিক বরাবর সামনে বসে ছিলো। লাবন্যকে যখন কবুল বলতে বলা হলো লাবন্য চোখে তুলে মারজুকের দিকে একবার তাকালো।
মারজুকের বুকের ভিতরে ছিনছিনে ব্যথার সৃষ্টি হলো। মনে হচ্ছে কেউ যেনো হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে বুকটাকে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। এখানে বসে থাকার শক্তি আর যে নেই। চোখগুলো ভিজে উঠেছে। মারজুক উঠে হন হন করে চোখের পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো। পিছন পিছন আজিমও বেরিয়ে গেছে।

লাবন্য ওই দিকে স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে। ওদের হলোটা কি? মারজুক কাঁদছে কেন? এদিকে বারবার ওকে বলা হচ্ছে কবুল বলার জন্য। ওর সেদিকে কোন খেয়াল নাই। জুয়েল লাবন্যর হাত ধরে নাড়া দিতে দিতেই ও চমকে উঠলো ……….
চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here