“হালাল প্রেম”
পর্ব- ১৭
(নূর নাফিসা)
.
.
পরবর্তী সপ্তাহের রবিবার খুব ভোরে উঠে শারমিন রান্নাবান্না সেড়ে নিলেন। গত রাতে শারমিনের চাচী মারা গেছে, তাই তিনি ও শারমায়ার বাবা গ্রামে যাবেন। শারমায়া সাফওয়ানাকে নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে ডেকে তিনি তৈরি হয়ে গেলেন। খালু, খালামনি ও খালাতো ভাইও যাবে তাই তারা সাড়ে ছয়টায় গাড়ি নিয়ে হাজির। এদিকে শারমায়ার বাবা-মা নাস্তা সেড়ে নিয়েছেন। অতপর একসাথে বেরিয়ে গেলেন। বাসায় শারমায়া ও সাফওয়ানা একা। তারা উভয়ে নামাজ পড়ে কুরআন পড়লো। বাবা-মা বেরিয়ে যাওয়ার পরপর আজ একটু তারাতাড়িই নাস্তা করে নিলো। সাফওয়ানার সকালে কোচিং থাকায় প্রতিদিনই এ সময়ে নাস্তা করা হয় কিন্তু শারমায়া নাস্তা করে নয়টা দশটার দিকে। আজ বাসায় একা থাকায় পরে খেতে ইচ্ছে না-ও হতে পারে তাই সাফওয়ানার সাথে নাস্তা সেড়ে নিলো। অতপর সাফওয়ানা চলে গেলো কোচিংএ। তবে বাসা থেকে প্ল্যান করে গেছে আজ কোচিং শেষে ছুটি নিয়ে চলে আসবে। অতপর খালামনির বাসায় চলে যাবে। ফারিয়া আপুও বাড়িতে নেই, সুতরাং সারাদিন এভাবে বাসায় থাকা ইম্পসিবল। শারমায়াও তার প্রস্তাবে রাজি হলো।
আটটা বাজতে চলেছে অথচ আজ এখনো জোভানের কল আসেনি। প্রতিদিন ছয়টা-সাতটার মধ্যে তার কল আসে। কিন্তু আজ আসেনি বিধায় শারমায়া অধীর অপেক্ষায় আছে, এই বুঝি ফোনটা বেজে উঠলো, এই বুঝি জোভানের কল এলো। দুইবার নিজেই ডায়াল করতে চাইলো, কিন্তু সে ঘুমাচ্ছে ভেবে আর ডায়াল করলো না। আবার ভাবছে এতোক্ষণ তো ঘুমাবে না, হয়তো কোনো কাজে ব্যস্ত। সময় কাটাতে সে কিছুক্ষণ বই পড়লো। অতপর ড্রয়িংরুমে টিভি অন করে বসলো। সাফওয়ানাটা না থাকলে টিভি দেখাও জমে না। একের পর এক চ্যানেল পাল্টাতে লাগলো শারমায়া। মনে হচ্ছে কতক্ষণ ধরে টিভি দেখছে অথচ ঘড়িতে তাকাতেই জানতে পারলো নয়টা পয়ত্রিশ বাজে! সাফওয়ানার কোচিং শেষ হতে আরও পঁচিশ মিনিট বাকি! তার বাসায় ফিরতে সময় লাগবে মিনিমাম পনেরো মিনিট! তারউপর আবার ছুটি নিতে সময় লাগবে নাহলেও পাঁচ-দশ মিনিট। সবমিলিয়ে আরও প্রায় একঘন্টা বাকি! তা ভাবতেই শারমায়ার ঘুম পেয়ে যাচ্ছে। সে টিভি অফ করে গোসল করতে চলে গেলো।
গোসল শেষে শারমায়া বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলো এখন সময় দশটা বেজে ছয় মিনিট। চার মিনিট আগে জোভানের নম্বর থেকে দুইটা কল এসেছে। এতোক্ষণে সাহেবের সময় হলো তাহলে! কাপড়চোপড় বারান্দায় রেখে শারমায়া ডায়াল করলো জোভানের ফোনে। কিন্তু রিসিভ হলো না। হয়তো আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তাই ফোন রেখে দিলো। মিনিট খানেক পরই কল এলো জোভানের। শারমায়া ফোন হাতে নিয়ে মৃদু হাসলো, এ যেনো লুকোচুরি খেলা চলছে ফোন কলের!
“আসসালামু আলাইকুম।”
“ওয়ালাইকুমুস সালাম। কেমন আছো মিসেস?”
“আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?”
“কি আমি?”
“আপনি কেমন আছেন?”
“আলহামদুলিল্লাহ। গুড মর্নিং সুইটহার্ট।”
“এতোক্ষণে গুড মর্নিং!”
“ওফ্ফ! দশটায় ঘুম থেকে উঠলাম। তাই লেট হয়ে গেছে।”
“আজ এতোক্ষণ ঘুম কেন? অসুস্থ?”
“উহুম। সারারাত অফিসে থাকতে হয়েছে। রাত আড়াইটায় প্রোডাক্ট এসেছে। সমস্ত বন্দোবস্ত করে বাসায় ফিরেছি ভোর পাঁচটায়। নামাজ পড়ে দশটার এলার্ম দিয়ে ঘুমিয়েছি। জেগেই তোমাকে খুজলাম বাট পেলাম না।”
“গোসল করছিলাম, তাই রিসিভ করতে পারিনি।”
“সিরিয়াসলি? আমিও গোসল করছিলাম। ওফ্ফ! ফার্স্ট কাপল বাথ! কিন্তু বাথরুমে তোমাকে দেখতে পেলাম না কেন?”
“গোসল করেছেন, এখনো ঘোর কাটেনি!”
জোভান হেসে বললো,
“ঘোর তোমাকেই কাটাতে হবে, সুইটহার্ট । আমি তো বড্ড অপেক্ষায় আছি তুমি কবে আমার কাছে আসবে আর ঘোরের গভীরতা মায়ার সুতোয় কাটবে।”
“বাসার সবাই কেমন আছে?”
“ইগনোর করে লাভটা কি শুনি? আমি কিন্তু চেঞ্জ হচ্ছি না। তোমাকে আমার অভ্যস্ত হতে হবে।”
“ওকে।”
“হাসির শব্দটা অনেক মিষ্টি।”
“আমি শব্দ করে হাসিনি।”
“তবুও শুনেছি আমি। আলহামদুলিল্লাহ, বাসার সবাই ভালো আছে। আমার শ্বশুরবাড়ির সবাই কেমন আছে?”
“আলহামদুলিল্লাহ।”
“সাফওয়ানা কি করছে? চার-পাঁচদিন যাবত কথা হয় না তার সাথে। তার কথার স্পিড আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।”
“সাফওয়ানা স্কুলে। আমার ভালো লাগে না তার বকবক তবুও মিস করছি। একা একা বোরিং লাগছে।”
“কেন, আন্টি বাসায় নেই?”
“উহুম। আম্মু-আব্বু নানাবাড়ি গেছে।”
“তোমরা যাওনি কেন?”
“স্কুল কোচিং আছে বিধায় আমাদের নিয়ে যায়নি। আমরা গেলে তো আর একদিনে চলে আসবো না। তাছাড়া আব্বু আম্মুও এখন যেতো না। গতরাতে নানু মারা গেছে, তাই যাওয়া।”
“তোমার নানু আছেন, আমি জানতাম না!”
“আপন না। আমার আম্মুর চাচী।”
“আচ্ছা, তোমাকে লক্ষ্য করলাম একবার আম্মু বলো, একবার মা বলো! আসলে সরাসরি ডাকো কোনটা?”
শারমায়া হেসে জবাব দিলো,
“দুইটাই।”
“তাহলে আমি কোনটা ডাকবো!”
“দুইটাই…!”
জোভান হেসে বললো,
“দুইটাই? আংকেল আন্টি কি শিখিয়েছিলেন?”
“ছোট থেকে আম্মু আব্বুই ডাকতাম। তিন-চার বছর ধরে সাফওয়ার রোগ আক্রমণ করেছে। সে এলোমেলো ডাকতে শুরু করলো আর আমিও তার মতো এলোমেলো হয়ে গেলাম।”
“ভালোই। বাসায় একা আছো, বোরিং লাগছে তো চলো বাইরে ঘুরতে যাই দুজন। ইট’স এ পারফেক্ট চান্স ফর আস, সুইটহার্ট।”
“ইশ! সাফওয়ানা চলে আসবে কোচিং শেষে।”
“তাহলে সাফওয়ানাও যাবে আমাদের সাথে।”
“ভাবছিলাম দুজন খালামনির বাড়ি যাবো।”
“বেশি প্রয়োজন না হলে আজ ক্যান্সেল করে দাও।”
“দেখি, সাফওয়ানা আসুক।”
“সাফওয়ানা মোটেও দ্বিমত পোষণ করবে না। তাহলে বাইরে লাঞ্চ করছি আমরা, হুম?”
“লাঞ্চ! আম্মু, এতোকিছু রান্না করে রেখে গেছে এগুলো খাবে কে! নষ্ট হবে না!”
“তুমি যদি খালামনির বাসায় যাও তাহলে কে খাবে?”
“সেটা ভাবিনি তখন।”
“এতো ভাবার প্রয়োজন নেই। ফ্রিজে রেখে দাও। আমি ব্রেকফাস্ট সেড়ে আসছি।”
জোভান কল কেটে দিলো। শারমায়া নিজে নিজেই বললো,
“আমিও তো এখন এটাই ভাবছিলাম যে ফ্রিজে রেখে দিবো।”
কিছুক্ষণ পরেই কলিং বেল বেজে উঠলো। শারমায়া নিশ্চিত ছিলো সাফওয়ানা এসেছে। কিন্তু দরজা খুলে দেখতে পেল জোভান এসেছে। শারমায়া বিস্ময়ের সাথে হেসে বললো,
“এতো তারাতাড়ি কিভাবে সম্ভব!”
“তারাতাড়ি কোথায় , দু’মিনিটে এসেছি নাকি?”
“না, তবে দশ মিনিটের বেশি মনে হচ্ছে না।”
জোভান ঘরে প্রবেশ করতে করতে ফোন দেখে বললো,
“বাইকে এসেছি, সতেরো-আঠারো মিনেটের রাস্তা এগারো মিনিটে অতিক্রম করেছি।”
“বাইক চালাতে পারেন?”
“পারি, তবে এখন আমি চালাইনি। মিরাজের সাথে এসেছি, সে এদিকেই যাচ্ছিলো ।”
“বাসায় নিয়ে এলেন না!”
“মাথা খারাপ! যদি জানে তাহলে আমাকে খুজতে এনি টাইম চলে আসবে এখানে।”
জোভানের মস্করায় শারমায়া মৃদু হেসে দরজা লক করতে করতে বললো,
“তাই বলে নিয়ে আসবেন না কখনো!”
“হুম, আসবো। অন্যসময়। আর ভয় পেয়ো না, তারা আমাকে ছাড়া আমার শ্বশুর বাড়ি আসবেনা।”
“আমি বলেছি নাকি ভয় পাই! সব নিজেই বলেন।”
“কি করবো, তুমি তো কিছুই বলো না৷ তাই আমাকেই বলতে হয়।”
“আজ বেড়াতে না গেলে কি হতো? রাতে ঘুম হয়নি দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আরেকটু ঘুমালে ভালো হতো না?”
“সাড়ে চার ঘন্টা ঘুমিয়েছি।”
“সুস্থ থাকার জন্য ছয়-আট ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। আট ঘন্টা ঘুমাতে পারলেই সব চেয়ে ভালো।”
বলতে বলতে শারমায়া কোন রুমের দিকে যাবে বুঝতে পারছে না তাই জিজ্ঞাসা করলো,
“টিভি দেখবেন? নাকি রেস্ট নিবেন?”
“আমার বউ বোরিং ফিল করছে আর আমি এলাম বোরিং নেস দূর করতে। তুমি কি না আমাকে টিভি দেখার অফার করো!”
“তাহলে কোনটা ব্যাটার?”
“নাস্তা করা হয়নি আমার। নাস্তা করতে করতে গল্প করি আমরা। ”
শারমায়া বিস্মিত হয়েই বললো,
“এতো তারাহুরো করে আসার তো কোনো প্রয়োজন ছিলো না।”
“কেন, আন্টি যে রান্না করে রেখে গেছেন সব শেষ করে ফেলেছো?”
“মাত্র ফ্রিজে রেখে দিলাম।”
বলতে বলতে শারমায়া কিচেনের দিকে যেতে যেতে বললো,
“মুরগির মাংস রান্না করে দিবো? বিশ-পঁচিশ মিনিট লাগবে।”
“আমি রান্না করে খাওয়াতে বলিনি। যা রান্না আছে তা-ই দাও।”
জোভান ড্রয়িংরুমে এসে টিভি অন করে বসেছে। শারমায়া প্লেটে ভাত ও বাটিতে আলু দিয়ে ডিম ভুনা নিয়ে এলো। জোভান বললো,
“অর্ধেক ভাত রেখে এসো। এতো খাবো না। আমি খেয়ে এসেছি।”
“এখন না বললেন নাস্তা করা হয়নি!”
“মিথ্যে বলিনি তো। নাস্তা করা হয়নি মানে সম্পূর্ণ করা হয়নি৷ অর্ধেক করেছি। মা রুটি বানিয়েছে। একটা রুটি আর একটা ডিম ভাজি খেয়েছি। এখানে এসেও দেখছি ডিম। সকাল সকাল ডিম আর ডিম! হোয়াট এ ডে!”
শারমায়া হেসে বললো,
“বলেছি না, রান্না করে দেই।”
“আমি তো খাবার কমানোর জন্য খেতে চাইলাম। তুমি রান্না করে তো আরও বাড়িয়ে দিবে।”
“সবটুকু খেয়ে নিন, একটু বেশি কমবে।”
“সম্ভব না। অর্ধেক কাট করো।”
শারমায়া খাবার কমিয়ে দিলো। জোভান হাত ধুয়ে খাবার নিলো। প্রথম লোকমাটা তুলে ধরলো শারমায়ার দিকে। জোভান আসার পর থেকে এমনিতেই অস্বস্তি লাগছে, এখন হঠাৎ করেই তা বহুগুণে বৃদ্ধি পেল। সে মুখে সামান্য হাসি ফুটিয়ে বললো,
“আমি কিছুক্ষণ আগে খেয়েছি, এখন খেতে ইচ্ছে করছে না।”
“একবার নাও।”
না পারছে মুখে নিতে আর না পারছে তার আবদার ফেলতে! শারমায়া পাশে বসে মুখে নিয়েই নিলো খাবার। পানি খেতে যাবে, জোভান হাত ধরে ফেললো,
“আমার পক্ষ থেকে আরেকবার।”
“ওটা কার পক্ষ ছিলো?”
“আমাদের।”
“আর খাবো না, প্লিজ।”
“এটাই লাস্ট।”
এমনি কলিং বেল বেজে উঠলো। শারমায়া বসা থেকে দাড়াতে দাড়াতে উৎফুল্লতার সাথে বলে উঠলো,
“সাফওয়ানা এসে গেছে। দরজা খুলে দিয়ে আসি।”
“সাফওয়ানার সামনে তুমি খাবে না, আমি জানি। মুখে নিয়ে যাও।”
“খেতেই হবে?”
“বললাম তো, এটাই লাস্ট।”
শারমায়া এবারও মুখে নিয়ে বেরিয়ে এলো। তবে গেলো কিচেনের দিকে। খাবার চিবিয়ে পানি পান করে মুখ মুছে তারপর মেইন দরজার কাছে গেলো। ওদিকে একাধারে কলিং বেল বাজিয়েই যাচ্ছে সাফওয়ানা। শারমায়া দরজা খুলতেই কর্কশ কণ্ঠে বললো,
“সকাল সকালই ঘুমিয়ে খালাস! এতোক্ষণ লাগে দরজা খুলতে!”
“আস্তে কথা বল।”
“না, জোরে জোরে বলবো। প্রয়োজনে মসজিদ থেকে মাইক এনে বলবো। জানতে হবে দেশবাসীকে, তুমি যে কতটা ধ্যান্ধ্যা!”
শারমায়া দাতে দাত চেপে সাফওয়ানার মুখ চেপে ধরে বললো,
“বান্দুরী, চুপ কর! তোর ভাইয়া এসেছে।”
সাফওয়ানা বিস্মিত হয়ে শারমায়ার হাত সরিয়ে বললো,
“জোভান ভাইয়া?”
শারমায়া মাথা ঝুলাতেই সাফওয়ানা জিভ কেটে শারমায়ার হাতে ব্যাগ দিয়ে ড্রয়িংরুমে এসে সালাম দিলো। মুখের খাবার গিলে জোভান সালামের জবাব দিয়ে বললো,
“ভালো এনাউন্সমেন্ট করতে পারো। ডিবেটিংয়ে পার্টিসিপ্যান্ট করো নাকি?”
“করেছিলাম একবার ক্লাস এইটে থাকতে। রানার্সআপ হওয়ায় বাদ দিয়ে দিছি।”
“পারফরম্যান্স ভালো, বাট ধৈর্য কম। নেক্সট টাইম ফার্স্টও হতে পারতে।”
“ভাইয়া, আপুর সাপোর্টার হয়ে আপনি আমার তিরস্কার করছেন না তো! আমি কিন্তু এমনিতেই বলছি। মসজিদ থেকে মাইক আনতে গেলে আমাকে পিটিয়ে দিবে।”
জোভান মুচকি হেসে খাওয়ায় মনযোগ দিয়ে বললো,
“বসো, ব্রেকফাস্ট করো।”
“ব্রেকফাস্ট তো আরও তিনঘন্টা আগেই ফিনিশ। লাঞ্চের টাইম হয়ে যাচ্ছে।”
“তাহলে তৈরি হয়ে নাও, আমরা বাইরে বেড়াতে যাবো। লাঞ্চ বাইরে হবে।”
“আপু যাবে?”
“যাবে না কেন?”
“একজায়গায় যাওয়ার প্ল্যান করেছিলাম।”
“সেটাও ফুলফিল হবে। তারউপর তোমার সাথে অন্য একটা প্ল্যান করা বাকি আছে আমার।”
“কি?”
“সিক্রেট, তোমার আপু জানবে না।”
সাফওয়ানা দরজার পাশে এসে উঁকি দিয়ে দেখলো শারমায়া রুমে আলমারি খুলে জামাকাপড় ঘাটছে। এই সুযোগে তারা তাদের প্ল্যান সাজিয়ে নিলো। জোভানের খাওয়াও কমপ্লিট।