#হুজুরের_বউ_যখন_ডক্টর
রাইটার :রাকিবুল ইসলাম
পাঠঃ ১১
একই রকমের চলাফেরা সাইচ।
এ আমি কি দেখছি,আমি কি কোন স্বপ্ন দেখছি নাতো।সেই আগের মেহেদি দেখছি।
এটা কি করে সম্ভব।নিজের হাতে মেহেদিকে
কবর দিয়েছি।আজ সেই মেহেদি আমার সামনে দাড়িয়ে।এটাই যদি মেহেদি হয় তাহলে
ও এখানে কি করছে……!!!!
ওর বাড়ি তো বাংলাদেশে।
আর ও এখানে কি করছে, আর ও জাফরীকে ছাড়া এতোদিন কি করে আছে।
ছেলেটা : ভাই ওভাই,, ওই ভাই
নয়ন : উহ
ছেলেটা : কি ভাবছেন
নয়ন : অনেক কিছু ভাবতেছি। আমি কি স্বপ্ন দেখছি নাকি বাস্তব।আমিতো এখনো বিশ্বাস করতে পারছিনা।
আরে ভাই বেচে থাকা কি করে সম্ভব।
নিজের হাতে ওকে আমি কবর দিচি।
আমার মাথা ঘুরছে ভাই,,, কি করব আমি।
ছেলেটা : এবার তো বিশ্বাস করলেন নয়ন ভাই
নয়ন : আমি তো নিজের হাতে মেহেদিকে কবর দিয়েছি। এটা কি করে সম্ভব।
ও বেচে আছে কিভাবে।
ছেলেটা : তা আমিও ভাবছি ও বেচে গেল কিভাবে
নয়ন : ওর মাথায় যেভাবে আঘাত করেছি বেচে থাকার কথা ছিলোনা। ওকে বাচিয়ে রাখা যাবেনা।
ছেলেটা : নয়ন ভাই একটা জিনিস চিন্তা করেন
নয়ন : কি চিন্তা করব
ছেলেটা : কোনদিন যদি প্রকাশ হয়ে যাই আপনি মেহেদিকে হত্যা করছেন।তাহলে নাসরিন আপনার কি করতে পারে ভেবে দেখেছেন।
নয়ন : এইজন্য তো ওকে বাচিয়ে রাখা যাবেনা।
আমার মনেহয় কি এটা মেহেদি না।
যদি হতো আজকে সাত বছর হয়ে যাচ্ছে
তারপরও তো একবারো আসলো না
জাফরীর কাছে।
ছেলেটা : যদি ওটা মেহেদি হয়….!!!
নয়ন : আচ্ছা চলতো গিয়ে দেখি ও কোথায় যায়।
____________________
খাদিজা : আন্টি তোমার কপালে কি হয়েছে
জাফরী : মা একটু আঘাত পেয়েছি।
বাচ্চা : আচ্ছা আন্টি তুমি আর কতোদিন থাকবে এখানে।
জাফরী : এইতো আর বারোদিন থাকবো বারোদিন পর বাংলাদেশে চলে যাবো
বাচ্চা : তুমি সত্যি চলে যাবে।
তুমিতো আমার বন্ধু তুমি যদি চলে যাও তাহলে কাকে নিয়ে গল্প করব বলো।
জাফরী : কি করব মা বলতো। তোকে ছাড়া আমাকেও ভাল লাগবেনা। কিন্তু যেতে তো হবেই তাইনা।
বাচ্চা : আমি যেদিন তোমার মত বড় হবো
সেদিন আমি যাবো বাংলাদেশে তোমার সাথে দেখা করতে।আন্টি আমি তুমাকে আজ আমাদের বাসায় নিয়ে যাবো,,, যাবে আমার সাথে..??
জাফরী : কিন্তু
বাচ্চা : তুমি চলো আমার সাথে।
______________
নয়ন আর ছেলেটা খাদিজার আব্বুর পিছন ফলো করতেছে দেখি ছেলেটা কোথায় যায়।
খাদিজার আব্বু বাজারের ব্যাগ নিয়ে হাটতেছে
কোরআন তেলাওয়াত করতেছে আর হাটছে।
আর নয়ন পিছু পিছু হাটছে…!!!!
হঠাৎ খাদিজার আব্বু দাড়িয়ে গেল
দাড়িয়ে গিয়ে পিছন ঘুরে তাকালো
কে যেন ফলো করছে, কই কাউকে তো দেখছিনা।
আবার হাটতে শুরু করলো,নয়ন পুনরায় পিছন
থেকে হাটা শুরু করলো।হঠাৎ নয়ন তাকিয়ে দেখছে ওকে আর দেখা যাচ্ছে না।
নয়ন : কি ব্যাপার,,, কোথায় হারিয়ে গেল মেহেদি
ছেলেটা : তাইতো ভাই কথাই হারিয়ে গেল।
নয়ন : চল,,,,, আবার আগামিকাল লক্ষ করে দেখবো
ওখানে একটু বৃষ্টি হয়েছে, রাস্তাঘাট কাদা হয়ে গেছে।পাহাড়িয়া রাস্তা,
হঠাৎ নয়ন পা স্লিপ করে গর্তে পড়ে গেল।
ছেলেটা নয়ন ভাই বলে চিৎকার মারলো
হাটু গেড়ে বসে গেল,,, ওই গর্তে পড়ে যাওয়া মানে মৃত্যু নিশ্চিত।
ছেলেটি ভয়েভয়ে একপা দুপা করে এগিয়ে গেল
গর্তের কাছে।গিয়ে তাকিয়ে দেখছে।
নয়ন একটা গাছের ডাল জড়িয়ে ধরে বসেআছে।
ছেলেটি : নয়ন ভাই মরেন নি
নয়ন : আরে সালা তাড়াতড়ি একটা দড়ি নিয়ে আন।লোকজন দের ডেকে আন নয়তো
ডাল ভেঙ্গে পড়ে যাবো…!!!
ছেলেটি : আচ্ছা দাড়ান ।
হঠাৎ খাদিজার আব্বু দাড়িয়ে বলছে কোনো
হেল্প লাগবে ভাই।
ছেলেটি : আ আ আপনি (ভয়ে)
খাদিজার আব্বু : আমি বার বার করে নজর করে দেখছি আপনারা দুজন আমাকে ফলো করছেন
নাকি চুরি করার মতলব।
ছেলেটি : বা বাবা ভাই……
খাদিজার আব্বু : তোতলা মি বাদ দেন,,,,, ফলো করছিলেন কেন বলুন
নয়ন : কিরে তাড়াতড়ি আমাকে উঠা নয়তো ডাল ভেঙ্গে পড়ে যাবো।
খাদিজার আব্বু নিচে তাকিয়ে দেখে মাথার পাগড়ী খুলে ঝুলিয়ে দিলো।নয়ন সেটা ধরে বেয়ে বেয়ে উঠলো।আহ বাচা গেল,
নয়তো আমি আজই শেষ হয়ে যেতাম।
নয়ন ভয়ে ভয়ে দাড়িয়ে আছে কারণ মেহেদি আমাকে দেখে ফেলেছে।
হয়তো আমাকে চিন্তে পেরেছে।
খাদিজার আব্বু : এই ভাই আপনি আমাকে ফলো করছিলেন কেন
নয়ন : সরি ভাই।
এই মেহেদি কী আমাকে চিন্তে পারে নি (মনেমনে)
খাদিজার আব্বু : চুরি করার মতলব নাকি আপনার।
নয়ন : সরি ভাই ভুল হয়ে গেছে।
খাদিজার আব্বু : এই চুরির পেশা বাদ দিন
রোজগার করে খান বুঝলেন
খবরদার কারো এইভাবে পিছু নিবেন নাহ
এইবলে দুজনকে পাচশত টাকা করে
দিয়ে খাদিজার আব্বু চলে গেল
নয়ন : আরে সালা এ তো মেহেদি না
ছেলেটা : তাইতো দেখছি ভাই
নয়ন : যদি ও মেহেদি হতো তাহলে আমাকে ঠিকই চিন্তে পারতো।আল্লাহর কি নিলা খেলা ঠিক মেহেদির মতোই হুবহু দেখতে।
এমন এক অবাক করা দৃশ্য দেখলাম রে ভাই…!!
আমার কোন চিন্তা নাই জাফরী শুধু আমার
__________________
জাফরী : কোথায় নিয়ে যাচ্ছো
খাদিজা : চলো আমাদের বাসায়
জাফরী : কিন্তু মামুনি আমার কাজ আছে
বাচ্চা : কোন কাজ না যেতেই হবে
এই বলে খাদিজা হাত ধরে জাফরীকে নিয়ে গেল
খাদিজা দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে..!!!
জাফরী : ওয়াও তোমাদের এত বড় বাড়ি,,,
বাচ্চা : হুমমমমমমমমম আন্টি।
আম্মু দরজা খুলো তাড়াতাড়ি
খাদিজার আম্মু দরজা খুলে দিলো,দরজা খুলে দিয়ে জাফরীর মুখের দিকে নজর করে আছে।
জাফরীর বোরখা পরা আছে।
তবুও কেন যেন অবাক নজরে তাকিয়ে আছে
খাদিজার আম্মু।
খাদিজা তার আম্মুর হাত ধরে বলছে মা….
আমার নতুন ফ্রেন্ড,আমার নতুন আন্টি।
খাদিজা এই কথা বলা মাত্রই খাদিজার আম্মু
খাদিজাকে জোরে একটা থাপ্পড় মেরে দিলো।
সব সময় শুধু টই টই করে ঘুরিস ভালকরে
পড়াশোনা করিস না।
অচেনা লোকদের বাড়ি আনিস।
খাদিজাকে এমন জোরে চড় মেরেছে পাচটা দাগ
বসে গেছে খাদিজার গালে।
জাফরী : আমাকে নাহয় আপনার মেয়ে ভুল করে
টেনেই এনেছে।তাই বলে কি এইভাবে চড় মারবেন মেয়েকে।
খাদিজার আম্মু : আমি আমার মেয়েকে কি করব সেটা আমার ব্যাপার তাতে আপনার কী…!!!
জাফরী : আপু আমার ভুল হয়েছে আমি এখানে আসবনা। প্লিজ মেয়েটাকে আর মাইরেন না।
খাদিজার আম্মু : আপনাদের একটা বিবেক থাকা
উচিত,,, ছোট বাচ্চাদের সাথে অচেনা লোকের বাসায় এসেছেন কেন।
জাফরী : না আপু আমার ভুল হয়েছে ভালো থাকবেন (আস্সালামুআলাইকুম)
আমাকে মাফ করে দেবেন।
জাফরী মনে কষ্ট নিয়ে ঘুরে চলে যাচ্ছে
আর অপর দিক দিয়ে খাদিজার আব্বু আসতেছে।
জাফরী চিন্তা করছে মেয়েটার ব্যাবহার কথা বার্তা খুব সুন্দর।কিন্তু খাদিজার মা আমার সাথে এমন ব্যাবহার করলো কেন।
আর অন্য দিকে খাদিজার আব্বু বাজার থেকে
আসতেছে….!!!!এমনভাবে আসতেছে যেন দুজনের দেখা হয়ে যাবে।
কিন্তু না,,,, জাফরী অন্য রাস্তায় ঢুকে গেল আর
খাদিজার আব্বু নিজের বাড়ি চলে গেল।
অল্প একটুর জন্য দেখা হলো না…!!!!!
খাদিজার আব্বু বাড়ির কলিংবেল বাজালো
সাথে সাথে
চলবে……..
হুজুরের বউ যখন ডক্টর পর্ব ১১