হুজুরের বউ যখন ডক্টর পর্ব-১০

0
1110

হুজুরের বউ যখন ডক্টর

রাইটার :রাকিবুল ইসলাম
১০ ম পর্ব

এইবলে নয়ন ছেলেটার মাথায় মদ ঢেলে দিলো
যত্তোসব আজগবি কথা বলস।
আবে হালা মেহেদিকে তো আমরা খালাস করে দিছি।

ছেলেটা : ভাই বিশ্বাস করুণ সত্যি আমি নিজের
চোখে দেখেছি।

নয়ন : তারমানে তুই বলতে চাচ্চিস মেহেদি মরে গিয়েও বেচে উঠেছে।
হা হা হা হা হা হা

ছেলেটা : ভাই বিশ্বাস করুণ আমি দুজন চোখ দিয়ে ওকে বার বার দেখেছি।

নয়ন : তুই এবার তোর মুখ বন্ধ কর।আরে আমি
নিজের হাতে ওকে কবর দিয়েছি।
ও কি করে আসবে…
জাফরীকে পাওয়ার জন্য এতকিছু করলাম কিন্তু
কি হলো। শেষে জাফরী আমাকে ধরিয়ে দিল
পুলিশের কাছে।
জাফরী যদি আমার সাথে বিয়ে করতে রাজি হয়
তাহলে ওর কপাল ভাল।
আর নয়ত ওর জীবন নরক করে তুলব।

ছেলেটা : কিন্তু ভাই..

নয়ন : তুই চুপ করতো ভাই,,, মেহেদি যদি বেচে থাকত সে অবশ্যই জাফরীর কাছে আসত
কারণ তাদের দুজনের সম্পর্ক টা আলাদা
বোকা ছেলে এখনো তোর মাথায় বুদ্ধি হলো না

ছেলেটা : এতো বড় আমি ভুল দেখলাম কি করে।

নয়ন : আচ্ছা তুই কোথায় দেখেছিস ওকে

ছেলেটা : ওই কাচা বাজারে দেখেছি ওকে

নয়ন : আচ্ছা ঠিক আছে তুই আর আমি গিয়ে ঘুরে আসব কেমন…!!!!
দেখি ও কিভাবে বেচে থাকে,
___________
জাফরী : আমি তো ক্যাম্পাসের পিছনে ফুল
তুলতে গেছিলাম

সুমাইয়া : আমি তোকে অনেকবার খুজেছি দেখতে পাইনাই।
জাফরী : তাইনা কি…

নাসরিন : আর তুই পারিস বটে,,,তোকে আমরা তন্ন তন্ন করে খুজতেছিলাম।
খামাখা দারোয়ান গুলোকে গালি দিলাম..!!!

জাফরী : আসলে সত্যি বলতে আমি পিছনে খেলতেছিলাম।ওই ছোট বোরখা পরা মেয়েটার সাথে।

নাসরিন : তাই বলে তুই

বান্ধবীরা যখন জাফরীকে একটু বকা দিতেছে
এমন সময় খাদিজা মানে সাত বছরের বাচ্চা মেয়েটা দৌড়ে আসল।

বাচ্চা : তোমরা আন্টিকে বকতেছো কেনো গো,,
সুধু তো আমরা খেলতেছিলাম একটু।

নাসরিন : তুমি কে আর এই সময় কেন… (রাগি)

বাচ্চা : রাগ করছো কেন গো… বচ্চাদের সাথে কেমন ব্যাবহার করতে লাগে তোমরা জানো না হুম

দারোয়ান : এই বাচ্চা তুমি ঢুকলে কি করে।

বাচ্চা : কি করব বলো,,, তোমরা তো দরজার
চেয়ারে বসে নাক ডেকে ঘুম পাড়ছিলে…
কে গেল কে আসলো….!!!!
তোমরা তো খবর রাখোনা, কিয়ামতে সর্বপ্রথম
আল্লাহ কাজের হিসাব নিবে।
দায়িত্ব পালনে যদি অবহেলা করো কিয়ামতে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে,,,,,,, তোমরা জানোনা।

দারোয়ান এই কথা সোনার পর চুপ হয়ে গেল
বান্ধবীরা অবাক নজরে তাকিয়ে আছে
এতো ছোট বাচ্চা কয় কি…!!!!!

জাফরী : দেখ একটা ছোট মেয়ে কত সুন্দর কোরআন হাদিস দিয়ে কথা বলতে পারে।
এইজন্য তো আমি খাদিজার সাথে বন্ধুত্ব করেছি তাইনা মামুনি

বাচ্চা : একদম ঠিক বলেছো আন্টি
আর তোমার বান্ধবীদের পর্দা করতে বলবে
তারা কি দেখতে পায় না আমি তাদের ছোট হয়ে
সব সময় বোরখা পরে বের হই।
আর তোমার অনেক গুলোর বান্ধবীর মাথায় কাপড় নেই।
এই আন্টির বান্ধবীরা তোমরা পর্দা করো।
পর্দা করা ফরজ….!!!! সুরা আহযাব ৩৩
আয়াতে আল্লাহ বলেছে তোমরা জাহিলিয়াত
যুগের মেয়েদের মত রুপ সুন্দর্য করে বের হবেনা

আর তোমরা আল্লাহর আইন অমান্য করে
মাথায় কাপড়টা ঠিকমত দেওনি

নাসরিন : আহ পাকা মেয়ে একটা এতো কথা কোথায় শিখেছিস মা তুই….!!!

রেহেনা : নিশ্চয় ওর বাবা মা খুব পরহেজগার
তাই সন্তান টা এমন হয়েছে…!!!!

জাফরী : শুধু কি তাই….বাবা একজন আলেম
আর মা কোরআনের হাফিজা।
তাহলে সন্তান তো খুব ভাল হবে..!!!!!!
_________________
এইভাবে কেটে গেল দুইমাস, জাফরীর সাথে
খাদিজার মানে বাচ্চা মেয়েটার সাথে ভাল মিল
হয়েছে।আর মাত্র পনেরো দিন মুম্বাই থাকবে
জাফরী।তারপর আবার তারা বাংলাদেশে চলে যাবে….সত্যি কি জাফরীর সাথে মেহেদির দেখা হবে।জাফরী কি সত্যি মেহেদিকে ফিরে পাবে…!!
নাকি আর কোনদিন দেখাই হবে নাহ।
নাকি মেহেদি সত্যি সত্যি দুনিয়ার জমিন ছেড়ে
চলে গেছে।
কি হবে জাফরীর, কি হবে জাফরীর ভবিষ্যাত
চলুন পাঠক বন্ধুরা আমরা একটু দেখে আসি
জাফরীর শেষ পরিনতি কি হয়…!!!
_________________
জাফরি খুব ভাল একজন ডাক্তার
এবং মেধাবি।বসে বসে রুগি চেকআপ করছে।

নাসরিন : চল যাবিনা

জাফরী : তোরা এগো আমি এই চাচির চেকআপ টা সেরে নেই।

নাসরিন : আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আয়।
বেশি দেরি করিস না কেমন..!!!!

জাফরী : আচ্ছা…

নাসরিন আর তার বান্ধবিরা চলে গেল
শুধু জাফরী একাই বসে রইলো।
কাজ শেষ করে জাফরী ক্যাম্পাসের দিকে
রওয়ানা নিলো।
লিফটে উঠে জাফরী নিচে নামতেছে।
লিফটের দরজা খোলার সাথে সাথে
একজন কালো কাপড় পরা লোক মুখ ঢাকা
দেয়া।
সাথে সাথে জাফরীর বোরখার নিকাব টান দিয়ে খুলে মুখে রুমাল লাগিয়ে দিলো।
তারপর জাফরীর আর কোন হুশ নাই….!!!!
__________
রেহেনা : এই নাসরিন জাফরীকে একটা ফোন দেতো তাড়াতাড়ি আসতে

নাসরিন : আমার ফোনে টাকা নাই তুই দে

রেহেনা : তুই ডাক্তার,,, নাকি ডেলিভারী,,,,,,,,, তোর ফোনে টাকা নাই মানে….!!!

নাসরিন : আরে দে ভাই তাড়াতাড়ি ফোন….

রেহেনা জাফরীর ফোনে দিলো কিন্তু ফোন বেজেই
চলছে।ফোন ধরছেনা। আহ এই মেয়েটা যা করে না।ফোন ধরছে না এখনো।
দেখতো নাসরিন এতবার ফোন দিচ্ছি জাফরীতো
ফোন ধরছে না।

নাসরিন : ফোন দিতে থাক…..!!!!!

জাফরীকে ফোন দেয়া হচ্ছে কিন্তু জাফরী ফোন ধরছেনা।নাসরিন বললো চলতো গিয়ে দেখি জাঠরী ফোন ধরছেনা কেন…!!!
নাসরিস আর রেহেনা লিফটের কাছে যাওয়া মাত্রই রেহেনা তাকিয়ে দেখছে।
জাফরীর ফোন টা লিফট এর কাছে পড়ে
আছে।
নাসরিন : কি ব্যাপার জাফরীর ফোন এখানে পড়ে আছে মানে।

জাঠরীকে তন্ন তন্ন করে খুজা হলো কিন্তু জাফরী কোথাও নাই।
সবাই টেনশনে পড়ে গেল,,, এই মেয়েটা হঠাৎ কোথায় যেন হারিয়ে গেল।

রাত বারোটা বাজতে চলল কেউ কোন খাওয়া দাওয়া করে নাই।
সবাই চুপ করে বসে আছে

রেহেনা : চুপ করে বসে থাকলে হবে,, নাকি কিছু একটা করতে হবে

নাসরিন : কি করবি

রেহেনা : থানায় ইনফরমেশন দিতে হবে তো।
এমনি মেয়েটার খোজ পাওয়া যাচ্ছে না।

হঠাৎ নাসরিনের পার্সনাল ফোনে একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসল।

________________
খাদিজাহ : আম্মু,,,,, আব্বু কোথায় এখনো আসছেনা কেন।

খাদিজার আম্মু : সেটাই তো রাত বারোটা বাজতে
চললো এখনো তোর বাবা আসলো না কেন।

খাদিজা : বাবা তো এতো রাত করেনা আম্মু তাহলে বাবা কোথায় গেল।

খাদিজার আম্মু : সেটা তো আমিও ভাবছি।
তোর বাবা তো এতো রাত করেনা।
খুব টেনশন হচ্ছে মা…!!!!

হঠাৎ দরজায় কে যেন নক করলো।
খাদিজা দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিল
দরজা খুলে দেখে আব্বু দাড়িয়ে।
খাদিজা বলল আব্বু এতো দেরি করে কেন আসলে।
খাদিজার আব্বু : এইতো মা একটা সমস্যার কারণে দেরি হলো

খাদিজার আম্মু : তোমার পান্জাবিতে
এতো রক্ত লেগে কেন,,, কি করেছো তুমি…!!!

খাদিজার বাবা মাথা নিচু করে আছে কোন
কথা বলছেনা।মনটা অনেক ভার করে আছে,

খাদিজার আম্মু : কি গো চুপ করে আছো কেন কি হয়েছে বলো।

খাদিজার আম্মু : আর বলিও না আজ একটা মেয়েকে দুজন ছেলে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলো।
আমি তখন আসতেছিলাম,দেখে মনে হলো মুসলিম পরিবারের মেয়ে……!!!
আর ছেলে দুটো মেয়েটার সর্বনাশ করতে চেয়েছিল বাট আমার কারণে পারেনি।
যদি সময় মতো না আসতাম তাহলে কি হতো ভাবতে পারছো।
________________
নাসরিন ফোনটা রিসিভ করেই শুনতে পেল জাফরীর কন্ঠ।নাসরিন উত্তেজিত সুরে বললেন
জাফরী তুই কই…!!!

জাফরী : আমি হাসপাতালে।

নাসরিন : দাড়া আমি যাচ্ছি…!!!!

নাসরিন রেহেনা সহ এগারো জন চলে গেল হাসপাতালে।নাসরিন হাসপাতালে গিয়ে তাকিয়ে দেখছে জাফরী বেডে সুয়ে আছে।
মাথায় একটু আঘাত…!!!!

নাসরিন উত্তেজিত সুরে বললো জাফরী কি হয়েছে দোস্ত।তোর এই অবস্থা কি করে হলো।
জাফরী ভালোকরে কথা বলতে পারছেনা

নার্স : ম্যাডাম ওনাকে একটা হুজুর রেখে গেল

নাসরিন : কি নাম তার বাড়ি কই

নার্স : তা জানিনা কিন্তু হুজুরটা খুব বকাবকি করতেছিল।আর বলল নিজেকে রক্ষা করতে পারে নাহ।তো একা একা রাস্তায় বের হয় কেন।
এই বকা দিয়ে হাসপাতালে সিপট করে চলে গেল

নাসরিন : আচ্ছা জাফরী তোর কি হয়েছিল বলতো।

জাফরী : আমি যখন লিফট থেকে নামলাম তখন দুইজন লোক মুখ বাধা ছিলো তাদের।
তারা আমাকে বেহুশ করে তারপর জানি না কি হয়েছে………!!!!!

নাসরিন : দুজন ছেলে তোকে বেহুশ করলো
আবার একজন হুজুর তোকে সম্মানের সহিত
হাসপাতালে ভর্তি করে দিলো।
এর মানে টা কি…???

জাফরী : তা তো জানি না।

নাসরিন : তুই দেখেছিস ওই হুজুর টাকে

জাফরী : নাহ দেখতে পাইনাই আমি তো তখন অচেতন ছিলাম।

নাসরিন : ছেলে দুটোকে দেখেছিলি।

জাফরী : নাহ তাদের মুখ ঢাকা ছিলো।

নাসরিন : তাহলে এসবের মানে কিহ….!!!
আমি সিওর নয়ন এসব করেছে।
___________
দুজন ছেলে এসে বলছে নয়ন ভাই আমরা
জাফরীকে গাড়ি করে নিয়ে আসতেছিলাম
এমন সময় তিনজন হুজুর আমাদের কাছে
কেড়ে নিয়েছে…..!!!!

নয়ন : তোমাদের যে দশ হাজার টাকা দিয়েছিলাম
টাকা ফেরত দাও।
তোমরা স্থানীয় লোক হয়ে মেয়েটাকে আনতে পারলে না। সামান্য দুই টাকার মৌলভীর ভয়ে তোমরা ওকে ছেড়ে পালিয়ে গেলে ছিহ।
আমার টাকা ফেরত দাও…….!!!!!

একজন ছেলে দৌড়ে এসে বলছে নয়ন ভাই
আমি সেদিন বলেছিলাম মেহেদিকে দেখেছি।
আমি খোজ নিয়ে দেখেছি লোকটি আমাদের আশেপাশে আছে।

নয়ন : কি সুরু করলি আবার…….
আরে ভাই ওকে নিজে হাতে কবর দিয়েছি
ও কি করে ফিরে আসবে বলতো।

ছেলেটা : কালকে আপনাকে বাজারে দেখিয়ে দেব নিজের চোখে দেখিয়েন।

নয়ন : আচ্ছা আমিও দেখবো…!!!!
ওটা মেহেদি নাকি অন্য কিছু!!!
____________
খাদিজার আব্বু মন খারাপ করে বসে আছে।
ছাদের উপরে বসে থেকে চিন্তা করছে…!!!
আমাকে এমন লাগছে কেন, কালকে রাত্রিবেলা
মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে গেলাম।কিন্তু মেয়েটার মুখটা এতো বার বার মনে পড়ছে কেন….!!!
যেন মেয়েটাকে আগে কোথাও দেখেছি,
যেন মেয়েটাকে আমি বহুদিন ধরে চিনি।
আর মনটা এতো ছটফট করছে কেন…!!!!
আর ওই মেয়েটার মুখটা এতো মায়া লাগছে কেন আমার,,, কি হয়েছে আমার।
ধ্যাত এসব শয়তানের ধোকা, একটা বেগানা নারীর কথা বার বার মনে পড়ছে।
খাদিজার আব্বু বার বার মনকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছুতেই মনটাকে শান্ত রাখতে পারছেনা।যেন ওনাকে আগে থেকেই চিনি।
যেন অনেক কাছের মানুষ,,,ধ্যাত এসব কেন মনে হচ্ছে আমার….!!!!!
আর ওনার মুখটা এতো মায়াবি লাগতেছে কেন
আচ্ছা আমিতো মেয়েটাকে হাসপাতালে ভরতি করে দিয়েছি।
যাই গিয়ে দেখি মেয়েটার কেমন হালত..!!!
খাদিজার আব্বু বাসা থেকে বের হতে যাবে
এমন সময় স্ত্রী ডাক দিয়ে বলছে খাদিজার আব্বু কই যাচ্ছো।
স্বামী : কালকে যে মেয়েটাকে হাসপাতালে রেখেছি ওর একটু খোজ নিতে যাবো।

স্ত্রী : ওহ

স্বামী : মুখটা ভার করলে যে

স্ত্রী : নাহ কিছু না।আপনি যান।যেহেতু মেয়েটাকে বখাটে ছেলের হাত থেকে রক্ষা করেছেন
তার খোজ নেয়াটাও তো আপনার দায়িত্ব তাইনা।
আমি আপনাকে বিশ্বাস করি…..!!!
আমি বলছি আপনি যাবেন..!!

স্বামী : হুমমমম আমি আসছি তাহলে
এক ঘন্টার ভিতরেই ফিরে আসব…!!!!

স্ত্রী : হুমমমম

খাদিজার আব্বু বের হয়ে চলে গেল
হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির খোজ নিচ্ছে
কালকে যে নার্স এর কাছে দিয়েছে
সেই নার্স কে গিয়ে বললো ম্যাডাম কালকে যে মেয়েটাকে ভর্তি করে দিলাম সেই মেয়েটাকে কোন বেডে রাখছেন..!!!

নার্স : হুজুর মেয়েটা তো কাল রাতেই চলে গেছে

খাদিজার আব্বু : কিহ

নার্স : কারণ মেয়েটার অনেক বান্ধবী আছে তারা সবাই ডাক্তার,এবং মেয়েটাও ডাক্তার।

খাদিজার আব্বু : মেয়েটা ডাক্তার (মনে মনে)

নার্স : হুজুর কিছু ভাবছেন

খাদিজার আব্বু : নাহ কিছুনা। আচ্ছা ঠিক আছে ধন্যবাদ।

নার্স : মেয়েটা বার বার আপনার কথা বলছিলো
যে আমাকে রক্ষা করলো তার মুখটা দেখতে পারলাম নাহ।

খাদিজার আব্বু : কপালে নাই দেখা করা,,, তাই
হয়তো আমিও এসে দেখা করতে পারলাম নাহ

নার্স : আপনি যদি বলতেন সকালে আসবেন
তাহলে বলে দিতাম।আর যেতোনা।

খাদিজার আব্বু : আচ্ছা ঠিক আছে নো প্রবলেম
আচ্ছা ভাল থাকেন ম্যাডাম।

এই বলে খাদিজার বাবা হাসপাতাল থেকে বাড়ি এসে দেখছে স্ত্রী কান্না করতেছে।
খাদিজার আম্মু কিন্তু স্বামীকে দেখতে পায়নি।
পিছন থেকে যখন কাধে হাত রাখলো।
স্ত্রী মাথা ঘুরে তুমি এতো তাড়াতাড়ি।

খাদিজার আব্বু : কান্না করছো কেন কি হয়েছে
_________________
নাসরিন : কিরে মন খারাপ করে কেন
মাথায় যে আঘাত পেয়েছিস, ওষুধ একটু খেতে হবেতো নাকি।

জাফরী : দোস্ত যে লোকটা আমাকে হাসপাতালে দিয়ে গেল ওই লোকের মুখটা যদি দেখতে পাইতাম।

নাসরিন : লোকটা তোর মন চুরি করে নিলো নাকি।

জাফরী : ধ্যাত কি বলিস,, কোন পর পুরুষ আমার মন চুরি করতে পারবে নাহ।
কিন্তু লোকটাকে দেখতে পেলে খুব ভাল হতো।
কেন যেন মনটা একটু ছটফট করছে…!!!

এই কথা বলতেই বান্ধবীরা হাসাহাসি শুরু করে
দিলো।আরেহ তুই কি জাফরী নাকি অন্য কেউ তোর ভিতরে ভর করছে।
তুই যাকে চিনিস না, জানিস না, তাকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছে।দারুণ ব্যাপার।

জাফরী : ধ্যাত তোরা কি যে বলিস না।
________________
খাদিজার আম্মু : তোমাকে হারানোর ভয়টা আমার এদানিং বেড়ে গেছে।
তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না গো…!!!
আমার কেউ নেই একমাত্র তুমি ছাড়া!!

খাদিজার আব্বু স্ত্রীর গালে একটা চুমু দিলো
চুমু দেয়াতে চোখের গড়িয়ে যাওয়া পানি
স্বামীর ঠোটে গিয়ে লাগলো,
দুইহাত দিয়ে।মুখটা চেপে ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে বলছে তোমাকে কখনো ছেড়ে যাবোনা।
কারণ তোমাকে ছাড়া আমিও থাকতে পারবনা গো।
তুমি আমার সব, তোমাকে রেখে যদি চলে যাই
তাহলে আমার মাথার ক্ষত জায়গায় কে
ফু দিয়ে দেবে।
কে আমার ওই ক্ষত জায়গায় চুমু দেবে বলো।
স্বামীর মুখে এই কথা শোনার পর খাদিজার আম্মু আরো জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে আছে……!!!
আই লাভ ইউ………
_____________
নয়ন আর নয়নের বন্ধু বাজারের এক কোনায় দাড়িয়ে আছে।

নয়ন : কি রে কই মেহেদি

ছেলেটা : ভাই বিশ্বাস করেন আমি কোন মিথ্যা কথা বলি নাই।
জানিনা এখনো কেন আসতেছেনা।
____________
খাদিজার আব্বু : শুধু জড়িয়ে ধরে কান্না করলে হবে।বাজারে তো যেতে হবে ব্যাগটা দাও

খাদিজার আম্মু : নাহ ছাড়ব না তোমাকে।
সারাজীবন এইভাবে ধরে রাখতে চাই।

খাদিজার আব্বু : আচ্ছা ধরে থেকো আমি দাড়িয়ে আছি।বাড়িতে সদায় পাতি না আনলে রান্না করবে কি দিয়ে।তোমার মেয়ে না খেয়ে কষ্ট পাবে তো।
ছাড়ো বাজার যেতে হবে…!!!!

খাদিজার আম্মু : একটা সুখবর আছে

স্বামী : কি সু খবর

স্ত্রী : আমার পেটে তোমার নতুন মেহমান আসতে চলেছে।
স্বামী : কিহ তাইনা কি,, হুররে,,,,,,,

স্ত্রী : কি করছো পড়ে যাবো তো নামাও আমাকে

স্বামী : কেন নামাবো আমাদের নতুন মেহমান আসতে চলেছে।
আজ আমি খুব খুশি….!!!!! আজ সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবো।

স্ত্রী : এবার তো কোল থেকে নামাও
যাও বাজারে যাও।
আর আমার জন্য একটু টক কিছু নিবা
কেমন

স্বামী : ওকে সোনা….!!!!
________________
নয়ন : বাদ দে ভাই,, তোর বাটপারি গল্প বাদ দে

ছেলেটা : আরে ভাই আরেকটু ওয়েট করেন..,,,

নয়ন : আরে ভাই মেহেদি বেচে থাকবে কি করে
ও তো মারা গেছে….!!!!

দুজনে তর্ক করতেছে,এমন সময় খাদিজার আব্বু
বাজারে ঢুকলো।
কিন্তু দুজনে তর্ক করতে করতে হঠাৎ নয়ন নজর করে দেখলো সেই অবিকল একটা (মেহেদি)
এইটা দেখার পর নয়নের চোখ বড় বড় হয়ে গেল
মুখে একই রকমের দাড়ি,একই রকমের মোটা,
একই রকমের চলাফেরা সাইচ।
এ আমি কি দেখছি,আমি কি কোন স্বপ্ন দেখছি নাতো।সেই আগের মেহেদি দেখছি।
এটা কি করে সম্ভব।নিজের হাতে মেহেদিকে
কবর দিয়েছি।আজ সেই মেহেদি আমার সামনে দাড়িয়ে।এটাই যদি মেহেদি হয় তাহলে
ও এখানে কি করছে……!!!!
ওর বাড়ি তো বাংলাদেশে।

চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here