হুজুরের বউ যখন ডক্টর
রাইটার :রাকিবুল ইসলাম
পর্বঃ১৪
নয়ন : নাহ হুজুর সমস্যা নাই আমি বের হয়ে
চলে যাচ্ছি।পুলিশ ডেকে আনার দরকার নাই।
নয়ন ওখান থেকে বের হয়ে চলে গেল…..!!!
খাদিজার আব্বু জাফরীর পিছনে দাড়িয়ে
এক নজর তাকিয়ে আছে…!!!
মেয়েটি যে ধরনের বোরখা পরে আছে এই
রকম বোরখাই খাদিজার আম্মু কে কিনে দিতে হবে……!!!
খাদিজার আব্বু যখন পিছনে মুখ ঘুরে যাচ্ছে জাফরীও
তখন ঘুরে তাকালো।খাদিজার আব্বু চলে
গেল……!!!কিন্তু জাফরী মুখটা দেখতে পেল না।
নাসরিন : কিরে এই দিকে আয়
জাফরী : দাড়া আসছি
নাসরিন : বলতো এই শাড়িটা কেমন মানাবে
জাফরী : সুন্দর লাগবে তোকে।তোর মা বাবার জন্য কিছু নিবি না।
নাসরিন : হুমমম নেব চলতো,,, সামনে একটু,,,
____________
স্ত্রী : তুমি কোথায় গেছিলা
স্বামী : একজনকে শায়েস্তা করলাম
স্ত্রী : মানে…??
স্বামী : না কিছুনা
স্ত্রী : এই বোরখা টা কেমন হবে দেখো তো
স্বামী : এটাও নাইচ,,, তবে আমি একটা বোরখা খুজতেছি।কিন্তু পাচ্চি কই।
স্ত্রী : কেমন
স্বামী : ভাই ওই বোরখা বের করুন তো।
_______________
রেহেনা : এই জাফরী শোন না রে
জাফরী : হুমমম বলেক
রেহেনা : চল তো সামনে বোরখা দেখি
নাসরিন : বাহ… বোরখা কি করবি রে
রেহেনা : কেন পরব
নাসরিন : বাপরে তুই তো
জাফরী : চুপ করতো তুই।মেয়েটা বোরখা পরতে চেয়েছে আর তুই সয্য করতে পারছিস না
চল আমি তোকে পছন্দ করে দেব…!!!
জাফরী আর রেহেনা এগোচ্ছে বোরখার দোকানে।
খাদিজার আব্বু আম্মু সেই বোরখার দোকানে
দাড়িয়ে আছে।
খাদিজার আব্বু : এই দেখো এই বোরখা তোমাকে খুব মানাবে।
খাদিজার আম্মু : সত্যি বলছো
খাদিজার আব্বু :হুমমম একদম পারফেক্ট
আর উপর দিক দিয়ে জাফরী আর রেহেনা হেটে আসছে বোরখার দোকানের কাছে…!!!
খাদিজার আব্বু : ভাই এটা প্যাক করে দিন
দোকানদার : জ্বী হুজুর..!!!!!
জাফরী গিয়ে খাদিজার আব্বুর পিছনে দাড়িয়ে
আছে..!!!!!!
বোরখার দর দাম করে যখন টাকা দিয়ে মুখ ঘুরিয়েছে। তখনই জাফরীর চোখের সামনে পড়ে গেল খাদিজার আব্বু।
জাফরীও বোরখা পরা ছিলো।
এমন সময় জাফরীর চোখ গুলো বড় বড় হয়ে গেল…… গোটা শরীর থর থর করে কাপছে।
জাফরীর ঠোট দুটো কাপছে, চোখ দিয়ে অশ্রু
পড়া শুরু হয়ে গেল।
খাদিজার আব্বু : ম্যাডাম একটু সাইট দেন
কিন্তু জাফরীর চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি
পড়ছে….খাদিজার আব্বু যখন সাইড দিয়ে চলে যেতে ধরলো।
এমন সময় জাফরী শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে
চিৎকার দিয়ে উঠলো।জাফরীর চিৎকারে গোটা শপিংমল ধমকে গেল…!!!
খাদিজার আব্বু পিছন ঘুরে তাকালো জাফরীর চিৎকার শুনে।
এমন সময় জাফরী দৌড়ে গিয়ে খাদিজার আব্বুকে জড়িয়ে ধরলো……!!!!চারপাশে মানুষ
জড় হয়ে গেল।নাসরিন রেহেনা দেখে চমকে গেল
এই সেই মেহেদি,,, যে এতোদিন ধরে জাফরী খুজতেছে।কারণ নাসরিন রেহেনা মেহেদিকে চিনে।
খাদিজার আব্বুকে জড়িয়ে ধরে বলছে এতোদিন কই ছিলেন…..!!!! জানেন আপনাকে আমি কতো খুজেছি।কই ছিলেন এতোদিন (কান্না করে)
খাদিজার আব্বু কিছুই বুঝতে পারছেনা আসলে এসব হচ্ছে টা কী…..???
চারপাশে মানুষ দেখছে ছি ছি,,,
স্ত্রী : এই মেয়ে আমার স্বামীকে ছাড়ুন
জাফরী : আপনি কে…..!!! এটা আমার হাজবেন্ড
(চিৎকার)
স্ত্রী : ছাড়ুন তো আপনি যত্তোসব…!!!
আপনি শুধু খামাখা আমাদের ডিস্টার্ব করছেন কেন……!!!!
ছাড়ুন আমার স্বামীকে, এই বলে জাফরীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
দেখতে পাচ্ছেন আমরা দুজন স্বামী স্ত্রী…..!!!
আপনি আমার হাজবেন্ডকে জড়াই ধরলেন এই এতো মানুষের সামনে ছিছি ছি।
পর্দার কিছুই রাখলেন না….!!!
নাসরিন : আরে মেহেদি ভাই আপনি কই থেকে বের হলেন।আমার বান্ধবী আপনার জন্য পাগল।
আর বাংলাদেশ থেকে এখানে কি করে…!!
আর আপনার পাশে এই মেয়েটি কে!!!
স্ত্রী : আরেহ আপনারা আমাদের ডিস্টার্ব করছেন কেন আর আমার হাজবেন্ড মেহেদি বলছেন কেন
আমার হাজবেন্ড এর নাম (ওমর ফারুক)
রেহেনা : মেহেদি ভাই আপনি কি আমাদের চিনেন না,,, কতো কতোবার ভার্সিটিতে দেখা করতে এসেছেন জাফরীর সাথে…!!! আর জাফরীতো
আপনার বিয়ে করা বউ
স্ত্রী : ধ্যাত চলো তো তুমি এখান থেকে
খাদিজার আব্বু : চলো….!!!
জাফরী : হুজুর আমাকে রেখে চলে যাবেন
আপনি কি এই সাত বছরের ব্যাবধানে আমাকে
ভুলে গেলেন…!!!
কি গো আপনি চুপ করে আছেন কেন…!!!
স্ত্রী : আচ্ছা আপু আপনি আমার হাজবেন্ড কে
ডিস্টার্ব করছেন কেন….!!!
আপনার কি একটু জ্ঞান বোধ নেই,,, কেন আপনি
আমার হাজবেন্ড ডিস্টার্ব করছেন।
জাফরী : না আপনি মিথ্যা বলছেন উনি আমার হুজুর।
জাফরী গিয়ে খাদিজার আব্বুর দুই গালে হাত
দিয়ে বলছে কি গো হুজুর আমাকে চিন্তে
পারছেন না।আমি আপনার জাফরী।
প্লিজ একটা বার কথা বলুন
স্ত্রী : আজব মানুষ তো আপনি
আমার বরকে এভাবে ডিস্টার্ব করছেন কেন,,,
হুজুর চলুন তো এখান থেকে
স্বামী : হুমমমম চলো
খাদিজাব আব্বু যখন চলে যেতে ধরলো
তখন জাফরী খাদিজার আব্বুর হাত টেনে
ধরে বলছে হুজুর আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেন….!!!
আমি আপনার জাফরী (উত্তেজিত সুরে)
এই দেখুন আমার মোবাইলে এখনো আপনার
একটা ছবি আছে।এই দেখুন।
তারপর আপনার রুমাল আর একটা পাঞ্জাবী
সব সময় আমার কাছে থাকে।
এই দেখুন সেই রুমাল,,, আপনি আমাকে কানের
দুল পরিয়ে দিছিলেন সেই দূল এখনো আমার কানের মধ্যে আছে…..!!!
নাসরিন জনগনের উদ্দেশ্যে বললো আপনারা দাড়িয়ে কি দেখছেন যান গিয়ে সবাই নিজের কাজ করুণ।
সবাই চলে গেল
নাসরিন গিয়ে বলছে মেহেদি ভাই আমি নিজের
চোখে বিশ্বাস করতে পারছিনা আপনি এখনো বেচে আছেন।কিন্তু আপনি জাফরীকে কেন অস্বীকার করছেন।সে তো ,, আপনার বিয়ে করা বউ..
খাদিজার আম্মু : তুমি এদের কথা বিশ্বাস করিয়োনা এরা মিথ্যা বলছেন।
জাফরী : মিথ্যা তো আপনি বলছেন,,,,,, কি করেছেন আমার বরকে।
খাদিজার আম্মু : আপু আমার বর আমারই থাকবে,,, আপনি আমাদের স্বামী স্ত্রীর ভিতরে বাধা দিতে পারেন না।
জাফরী : আমি নিজের মুখে হুজুরের কাছে শুনতে চাই,,,, উনিই বলে দেবে আমাকে চিনতে পারে কিনা। সাথে সাথে জাফরী বোরখার নিকাব টা আসতে করে খুলে দিলো।
খাদিজার আব্বু এক নজর জাফরীকে দেখে নিল
জাফরী : এবার বলুন প্লিজ হুজুর
নাসরিন : মেহেদি ভাই চুপ করে কেন বলুন
খাদিজার আম্মু : তুমি ওদের কথায় কান দিওনা
চলো এখান থেকে…..!!!!!
জাফরী : আপনি চুপ করুণ আমি হুজুরের মুখে শুনবো।
খাদিজার আব্বু : আমি আপনাকে চিনি না….
এই কথা বলতেই জাফরী দাড়িয়ে থাকার শক্তি হারিয়ে ফেললো।ঠোট দুটো থর থর করে কাপছে।
থপ করে মাঠিতে বসে পড়লো…..!!!!
কান্না করা শুরু করে দিলো…!!!
খাদিজার আব্বু : এই চলো এখান থেকে।
খাদিজার আম্মু : আচ্ছা চলো।
জাফরী এবার হামাগুড়ি দিয়ে খাদিজার আব্বুর পা জড়িয়ে বলছে হুজুর প্লিজ আপনি আমাকে আপনার পায়ের তলায় রাখেন।
তবুও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন নাহ…!!!
আমি আপনাকে ছাড়া বাচবো না, আপনি আমার
সব।আমি এতোদিন আপনাকে পাগলের মতো খুজেছি।আপনি আমাকে মারেন বকা দেন
যা ইচ্ছা তাই করেন…!!
প্লিজ আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দিয়েন না..!!!!
এইভাবে বলে নিজের মাথাটা খাদিজার আব্বুর পায়ের সাথে লাগিয়ে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে
প্লিজ হুজুর,,,, প্লিজ হুজুর।
আপনাকে ছাড়া আমি এবার বোধহয় বাচতেই পারব না।আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না।
এই কথা বলতেই খাদিজার আব্বু এমন জোরে পা ঝটকা দিয়ে সরিয়ে নিলো।সাথে সাথে জাফরীর ঠোট ফেটে রক্ত বের হতে লাগলো।
ছিটকে গেল একদিকে জাফরী,,,,,
নাসরিন : মেহেদি ভাই আপনি কি মানুষ
কেউ এইভাবে পা দিয়ে ধাক্কা মারে নাকি…!!!
জানিনা আপনি কেন এমন পরিবর্তন হলেন
আপনি জাফরীকে পাগলের মত ভালোবাসতেন
সেই জাফরীর সাথে এমন ব্যাবহার করছেন..??
খাদিজার আব্বু : আমি অনেক ক্ষণ ধরে সব সয্য করছি।আপনার বান্ধবী মানে জাফরীর নাম কয়েকবার শুনেছি দেখিনাই।কিন্তু আজ দেখা মাত্রই আমাকে জড়িয়ে ধরছে।এতো মানুষের সামনে,,, একটা পর পুরুষকে জড়িয়ে ধরতে ওনার কি একটুও লজ্জা হলোনা
আর আমি বলছি তো ওনাকে চিনি না
আমার স্ত্রী আছে এইযে দেখুন আমার স্ত্রী এই মেয়েটি।জাফরী বলে কোন মেয়ে আমার জীবনে ছিলোনা।এবং এখনো নেই।এবং আমার একটা মেয়ে আছে সাত বছর বয়স… খাদিজা নাম তার।
এবং আমার স্ত্রীর পেটে আরেক টা বাচ্চা।
সুতারাং আমাদের সংসার টা জাফরী নষ্ট করার চেষ্টা যেন না করে।
প্লিজ আর কেউ ডিস্টার্ব করবেন না….!!!!
চলো খাদিজার আম্মু…..!!!
এই বলে খাদিজার আব্বু খাদিজার আম্মুর হাত
শক্ত করে ধরে হেটে যাচ্ছে।
আর জাফরী রক্ত মাখা মুখ টা নিয়ে ডান হাত
উচু করে ডাকতে চাচ্ছে।
কিন্তু মুখে আওয়াজ যেনো বের হচ্ছেনা জাফরী কথা বলার জবান টা যেন হারিয়ে ফেলেছে।
গোটা শরীর থর থর করে কাপছে……!!!!
নাসরিন যখন জাফরী বলে কাধে হাত দিল
সাথে সাথে জাফরী নাসরিন কে জড়িয়ে ধরে
বলছে আমি ওনাকে ছাড়া বাচবোনা রে।
আমি ওনাকে ছাড়া বাচবোনা।
উনি যদি আমাকে কাজের লোক করে রাখে
তবুও আমি থাকবো।আমি ওনাকে ছাড়া
বাচবোনা।
নাসরিন : এই চুপ কর কাদিস না,,, সব একদিন ঠিক হবে।
জাফরী : কি ঠিক হবে,, উনি আমাকে ছেড়ে চলে গেল
নাসরিন : বিশ্বাস কর জাফরী,,,, আমি নিজেই কল্পনা করতে পারিনি। তুই মেহেদি ভাইকে এতো টা ভালোবাসিস।
কিন্তু মেহেদি ভাই তো তোকে পরিচয় দিচ্ছেনা
আর মেহেদি ভাই কেনই এমন টা করছে।
আর দ্বিতীয় কথা হলো মেহেদি ভাই বাংলাদেশ ছেড়ে মুম্বাই কি করে আসলো….!!!!
জাফরী : আমি যাবো (উত্তেজিত)
নাসরিন : কই যাবি
জাফরী : ওনার কাছে যাবো… ওনাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে।
প্রয়োজনে ওনার পা সারাজীবন ধরে থাকব।
নাসরিন : তোর গায়ে কি মানুষের চামড়া নেই।
ও নিজেই বললো তোকে চিনেনা।
জাফরী : না আমি ওনার কাছে যাবো উত্তেজিত সুরে।
নাসরিন : ঠাসসসসসস
জাফরী : তুই আমাকে মারলি?🥺🥺
নাসরিন : তুই তো দেখলি বোন,,, ও নিজেই বলেছে
তোকে চিনেনা। তাহলে তুই কেন ওর কাছে যেতে চাচ্ছিস।
জাফরী : ও তাইতো যে আমাকে চিনেনা তার জন্য কেন আমি কান্না করবো।নাহ আমি কান্না করবো না। কিন্তু আমার চোখের যে বাধ মানছেনা
(কান্না কান্না)
নাসরিন : কাদিস না সব কিছু একদিন ঠিক হয়ে যাবে।
_____________
স্ত্রী : কি ব্যাপার চুপ করে বসে আছো যে
স্বামী : ভাবছি
স্ত্রী : কি
স্বামী : ওই মেয়েটার কথা
স্ত্রী : বাদ দাও তো।ওসব মেয়ে তোমাকে ফাসানোর চেষ্টা করছে
স্বামী : কিন্তু মেয়েটা আমার পা শক্ত করে জড়িয়ে
ধরে কান্না করছিলো কোন কারণে।
স্ত্রী : এসব নিয়ে ভেবোনা।এইযে তোমার জন্য চা নিয়ে এসেছি খেয়ে নাও
_________________
রেহেনা : কিরে জাফরী উঠেনি
নাসরিন : না রে সারারাত কান্না করছে মেয়েটা
তাই এখনো একটু ঘুমাচ্ছে।
রেহেনা : আমি মেহেদি দুলাভাইয়ের একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছি,, যা তোরা লক্ষ করে দেখিস নাই সেটা নিয়ে খুব ভাবছি…!!!
নাসরিন : কি জিনিস
রেহেনা : ওনার মাথার কাছে একটা ক্ষত দেখলাম
এর আগে তো ক্ষত ছিলোনা
নাসরিন : হয়তো কোনভাবে আঘাত পেয়েছে
রেহেনা : ওইভাবে আঘাত পেয়েছে আমার তা মনে হচ্ছেনা। এমনি আঘাত পাওয়ার দাগ ওমন না
আমার মনে হয় কোন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
নাসরিন : কি বুঝাতে চাইছিস তুই
রেহেনা : সেটাই তো বুঝতে পারছি না
________________
সকাল হলো জাফরীর যাওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে
আজ বিকালবেলা জাফরী তার দেশে চলে যাবে।
বিকাল চারটায় ফ্লাইট,,,,
সবাই যার যার ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে।
জাফরী জানালার কাছে মন খারাপ করে দাড়িয়ে
আছে….!!!!
আর কালকের কথা গুলো মনে করে কান্না করছে।
এমন সময় নাসরিন আসলো
নাসরিন : কিরে দাড়িয়ে কেন…!!!
জাফরী : কি বল
নাসরিন : কান্না করছিস কেন…!!!
জাফরী : কই নাতো কান্না করব কেন
নাসরিন : এইভাবে কি কান্না করলে হবে।
যে তোকে ভুলে যায় তুইও তাকে ভুলে যা
জাফরী : এই দোস্ত একটা কথা বলি
নাসরিন : বল
জাফরী : আগে বলতো আমাদের ফ্লাইট কয়টায়
নাসরিন : চারটায় কেন…???
জাফরী : এখনো তিন ঘন্টা বাকি আছে তাইনা
নাসরিন : হুমমম
জাফরী : চল না রে একটু হুজুরের বাসায় যাই
ওনাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে
নাসরিন : আবার…..!!!
জাফরী :চল প্লিজ দোস্ত
নাসরিন : আচ্ছা ঠিক আছে….!!!!
_________________
স্ত্রী : আমার যদি ছেলে হয় তাহলে ছেলের নাম রাখবো (খালিদ সাইফুল্লাহ)
স্বামী : আল্লাহ মেয়ে দেবে নাকি ছেলে দেবে কেমন করে বলবে।দেখি কি হয়।
স্ত্রী : যাক দোয়া করিয়ো গো এবার যদি ছেলে হয়।
হঠাৎ করে দরজার কলিংবেল বেজে উঠলো
খাদিজার আব্বু গিয়ে দরজা খুলে দিলো
তাকিয়ে দেখছে দুজন বোরখা পরা মেয়ে…!!!
খাদিজার আব্বু : কে
জাফরী : আস্সালামুআলাইকুম আমি জাফরী
খাদিজার আব্বু : তো কি মনে করে আসছেন
জাফরী : আসলে হুজুর খাদিজার সাথে এবং আপনার সাথেই একটু দেখা করতে এসেছি
খাদিজার আব্বু : ভিতরে আসুন
জাফরী : নাহ বেশিক্ষণ থাকা যাবেনা তো
চারটার দিকে ফ্লাইট আছে দেশে ফিরতে হবে।
তো খাদিজা কই
খাদিজার আব্বু : ঘুমাচ্ছে
জাফরী : তো আপনার স্ত্রী
খাদিজার আব্বু : ও ঘরে
নাসরিন : মেহেদি ভাই আপনি
জাফরী : চুপ……… একদম চুপ
খাদিজার আব্বু : ভিতরে আসুন
জাফরী : নাহ
খাদিজার আম্মু : কে আসলো গো
খাদিজার আব্বু : কালকের মেয়েটি
স্ত্রী এসে বলছে এইযে জাফরী ম্যাডাম কি মনে আসছেন।আমি আগেই বলতেছি
আমার স্বামী মেহেদি নাহ…..
জাফরী : ও তাই,,,, জানেন আপু আমার হুজুরের
একবার গরম পানি দিয়ে পা পুড়ে গেছিলো।
তো আপনার হাজবেন্ড এর ও বুঝি গরম পানি দিয়ে পা পুড়ে গেছে……!!!!
খাদিজার আম্মু : কি কি বুঝাতে চাইতেছো তুমি
জাফরী : কিছুনা আপু,, তবে এটোকুটুই বলব
আল্লাহ আমার কপালে যা রাখছে সেটাই হবে।
খাদিজার আম্মু :কি বুঝাতে চাইছেন (জোরে)
খাদিজার আব্বু : আসতে কথা বলো পেটে চাপ লাগবে।
জাফরী : ওহ আপনার স্ত্রী বুঝি প্রেগন্যান্ট
খাদিজার আব্বু : জী
জাফরী : হুজুর আজকে চলে যাচ্ছি নিজের খেয়াল রাখবেন।আপনার নতুন মেহমান আসতে চলেছে।তার খেয়াল রাখবেন।আর হয়তো মুম্বাই কোনদিনও আসব না।আর হ্যা আপনার যে ঠান্ডা এলার্জি আছে। একটু সতর্ক ভাবে চলবেন।
এই এলাকায় তো খুব ঠান্ডা… নয়তো শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাবে।
খাদিজার আব্বু : আমার শ্বাস কষ্ট আপনি কি করে জানলেন
জাফরী : আমার বরের শ্বাস কষ্ট ছিলো।
নিশ্বাস নিতে পারতোনা, সারারাত ওনার বুকে তেল মালিশ করে দিতাম।
ওষুধ কাজ করতোনা, আচ্ছা হুজুর ভাল থাকিয়েন আপনার সংসারটা সুখের হোক।
বুবু ভাল থেকো নিজের স্বামীর যত্ন করিও
হুজুর ভালো থাকিয়েন,আপু ভাল থাকিয়েন।
(আস্সালামুআলাইকুম)
এইবলে জাফরী কান্না লুকিয়ে মুখ ঘুরে হেটে যাচ্ছে।খাদিজার আব্বু দরজায় দাড়িয়ে আছে
পাথরের মতো।যতোদূর জাফরীকে দেখা যায় ততোদূর জাফরীর দিকে তাকিয়ে আছে।
নিজের অজান্তে খাদিজার আব্বুর চোখে
পানি চলে আসলো।
আচ্ছা খাদিজার আম্মু উনি কি করে জানলো আমার শ্বাসকষ্ট আছে।
স্ত্রী : ডাক্তার মানুষ এইজন্য হয়তো দেখেই বুঝতে পারছে।
_______________
সবাই বেড়িয়ে পড়েছে এয়ারপোর্টে যাবে
ছয়টা কার গাড়ি দাড়িয়ে জাফরীও ব্যাগ
নিয়ে গাড়ির দিকে এগোচ্ছে।
জাফরী গাড়িতে উঠলো,, জানালার পাশে বসলো
বার বার ক্যাম্পাস এর দিকে তাকিয়ে আছে।
তারপর খাদিজার আব্বু যে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে সেই রাস্তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে
আছে।
যেন তার মনটা চাচ্ছে আর একবার যদি আমার
হুজুরটাকে দেখতে পেতাম।
চলে গেল এয়ারপোর্টে সবাই….!!!!!
জাফরীও মন মরা হয়ে হাটতেছে
সিড়ি দিয়ে প্লেনে যখন জাফরী উঠতেছে বার বার শুধু পিছন ঘুরে তাকাচ্ছে।
তাকিয়ে দেখছে চারদিকে, এই বুঝি হুজুর আমাকে পিছন দিক দিয়ে একবার ডাকবে জাফরী বলে।কিন্তু না,,,,
জাফরীর চোখেও পানি ছল ছল করছে
কেউ তাকে মায়াবী কন্ঠে ডাকছে না
যদি হুজুর একবার আমাকে ডাকতো
সারা জীবন ওনার পায়ের কাছে পড়ে থাকতাম
কিছু চাইতাম ও না।
স্ত্রীর অধিকার টা চাইতাম নাহ,তবুও তো উনার
মায়াবি মুখটা দেখতে পেতাম।
নাসরিন : কিরে বার বার ঘুরে তাকাচ্ছিস
জাফরী : না কিছুনা
নাসরিন : চল তাড়াতাড়ি বস
চলবে……