হুজুরের বউ যখন ডক্টর পর্ব-১৫

0
1049

হুজুরের বউ যখন ডক্টর

রাইটার : রাকিবুল ইসলাম

পর্বঃ১৫

স্ত্রীর অধিকার টা চাইতাম নাহ,তবুও তো উনার
মায়াবি মুখটা দেখতে পেতাম।

নাসরিন : কিরে বার বার ঘুরে তাকাচ্ছিস

জাফরী : না কিছুনা

নাসরিন : চল তাড়াতাড়ি বস

জাফরী : হুমমমমমমমমম……!!!!!
__________________
জাফরী বাংলাদেশে পৌছে গেল নিজের বাবা
মায়ের কাছে গেল।
আর এইদিকে জাফরীকে বিয়ে দেওয়ার জন্য
তার পরিবার পাত্র রেডি করেছে…..!!!

জাফরীর মা : তোর জন্য পাত্র ঠিক করছি

জাফরী : নাহ আমি বিয়ে করব না।ইচ্ছা নাই।

জাফরীর মা : কেন…!!! যে মারা গেছে তার কথা ভুলে যা।
জাফরী : মা ও মরে নি ও বেচে আছে

জাফরীর মা : কি বলছিস কি (অবাক সুরে)

জাফরী : হ্যা আম্মু ঠিক বলছি
কিন্তু হুজুর আমাকে অস্বীকার করেছে।
আচ্ছা আম্মু ঠিক আছে আমি একটু ঘুমাবো
পরে কথা হবে ইনশাআল্লাহ।

জাফরী মা : মেহেদি তাহলে কোথায়

জাফরী : এ বিষয় নিয়ে তোমার সাথে পরে কথা হবে।

এই কথা বলে জাফরী কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো
______________
স্ত্রী : তুমি কান্না করছো কেন

স্বামী : নাহ কান্না করব কেন,, এমনি মন খারাপ।
শুধু ওই মেয়েটার কাথা ভাবছি।
আচ্ছা ওনি এখন দেশে চলে গেছে তাইনা…..

স্ত্রী : হ্যা যেতেই পারে ওরা তো বাংলাদেশের মানুষ তাইনা।

স্বামী : তবুও কেন যেন ওই মেয়েটির কথা মনে পড়ছে কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।

স্ত্রী : শুধু ওই মেয়েটির কথা ভেবে তোমার কি লাভ
তোমার যে মেহমান আসতে চলেছে তার একটু
কথা তো ভাবো।

স্বামী : হুমমমমম তাইতো,,,,আমি কেন শুধু শুধু
একটা অপর মেয়ের কথা ভাবতে যাচ্ছি।

স্ত্রী : যাক বাদ দাও ওসব কথা।
_______________
এইদিকে জাফরী রাত্রিবেলা টায়াড ছিলো
তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে।
ফজরের নামাজে যখন ডেকে তুলতে যাবে
মা বার বার দরজায় ডাকছে কিন্তু জাফরী
দরজা খুলছে না।
মা টোনশনে পড়ে গেল যে মেয়ে আমাদের ডেকে তুলে দেয় ঘুম থেকে নামাজের জন্য।
আজকে সেই মেয়েকে ডাকছি দরজা খুলছে না
কেন…..!!!
মা টেনসনে পড়ে গিয়ে জাফরীর আব্বুকে ডাকলেন। জাফরীর আব্বুও এসে ডাক দিলো
কিন্তু জাফরী দরজা খুলছেনা।

মা : জাফরী তাড়াতাড়ি দরজা খুল মা।
জাফরী জাফরী।

বাবা : জাফরী দরজা খোল মা তাড়াতাড়ি।

বাবা মা দুজনেই ডাকছে কিন্তু জাফরী দরজা
খুলছেনা। এমন। সময় মা বললেন তাড়াতাড়ি দরজা ভেঙ্গে দাও।
জাফরীর বাবা তাড়াতাড়ি দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেঙ্গে ফেলল।গিয়ে দেখে জাফরীর গায়ে কম্বল
দেয়া….!!!!!
মা গিয়ে জাফরীর গায়ে হাত দিলো দেখছে গোটা
শরীর প্রচন্ড গরম হয়ে গেছে।
মা বার বার ডাকছে জাফরী চোখ খুলছেনা
জাফরী কি হয়েছে মা তোর, চোখ খুল মা।
জাফরী চোখ খুল,,, মা কি হয়েছে তোর…!!!!

ওগো তুমি তাড়াতড়ি নাসরিন কে ফোন দাও
আমার মেয়ে চোখ খুলছেনা কেন…!!!

জাফরীর বাবা নাসরিনকে ফোন দিলো।

নাসরিন : আস্সালামুআলাইকুম আংকেল ভোরবেলা ফোন দিছেন যে।

জাফরীর বাবা : মা জাফরী চোখ খুলছেনা এতো ডাকছি চোখ খুলছে না।
কি হলো আমার মেয়ের (কান্না)

নাসরিন : আংকেল আপনি কান্না করিয়েন না
আমি তাড়াতাড়ি আসতেছি।

জাফরীর ওমন খবর শুনে নাসরিন তাড়াতাড়ি
চলে আসলো।

জাফরীর মা : নাসরিন দেখো মা আমার মেয়ে কথা বলছেনা কেন….!!! কি হলো আমার মেয়ের।

নাসরিন : আন্টি দাড়ান আমি দেখছি।
চিন্তা করিয়েন না।

নাসরিন জাফরীর গায়ে যখন হাত দিলো।
(ও মাই কট) তাড়াতাড়ি নাসরিন ফোন দিলো
এ্যাম্বুলেন্স আনতে।

নাসরিন : আন্টি আমি ফোন দিচ্ছি দাড়ান

নাসরিন তাড়াতাড়ি ফোন দিয়েছে এ্যামবুলেন্স আনতে।
নাসরিন বললো আন্টি জাফরী ওষুধ কোথায় রাখে।
আন্টি : হ্যা দাড়াও বক্স আনতেছি।

নাসরিন কে বক্স এনে দিলো, নাসরিন বক্স
খুলে একটা ইংজেকশন করলো জাঠরীর
শরীরে।
এ্যামমবুলেন্স আসলো জাফরীকে এ্যামবুলেন্স করে নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে।

জাফরীও তো ডাক্তার, জাফরীর অসুস্থতার খবর
শুনে ডাক্তারের টিম হাজির হয়ে গেল।
শিপ্ট করা হলো জাফরীকে………!!!!!!
ডাক্তার চেকআপ করছে মুখে অক্সিজেন দেয়া
হলো।তারপর অনেক ডাক্তারি পরিক্ষা করা
হলো কিন্তু জাফরীর কোন পরিবর্তন দেখা
যাচ্ছেনা।যেন জাফরীর জীবন বিপদ সীমার
উপর দিয়ে অতিক্রমণ করছে।

ডাক্তারের একটা টিম আলোচনার বৈঠক
করলো।আসলে আমরা সব কিছু পরিক্ষা করে
দেখলাম কিন্তু জাফরীর শরীরে কোন প্রবলেম
ধরা পড়ে নাই।কিন্তু এতো ওষুধ দেয়া হচ্ছে
তারপরও জাফরীর কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা
এখন এখানে কিছু করার নাই।
জাফরীকে সিংঙ্গাপুর নিতে হবে…!!! আমাদের পক্ষ থেকে সব কিছু করা শেষ।

নাসরিন : আমাদের তাই করতে হবে।
আমি আজই সব ব্যাবস্থা করছি…!!!

জাফরীর মা বাবা কান্না করতে করতে পাগলের
মতো হয়ে গেল।জাফরী ছিলো সরকারি ডাক্তার
তাই জাফরীকে সিংঙ্গাপুর নিতে কোন সমস্যা হলোনা।
সব কিছু ঠিক ঠাক এবার জাফরীকে নেয়া হলো
সিংঙ্গাপুরে…!!!!!

সেখানকার ডাক্তার গুলো সব কিছু পরিক্ষা মতো
যা করার দরকার সব করলো।
সেখানে ডাক্তার রুিপোর্ট দিলো আমাদের থেকে
যা করার দরকার আমরা করেছি।
এখন আর কিছু করার নাই.!!!!!
এখন একটাই উপায় আল্লাহকে স্বরণ করে দোয়া করা।।।।
জানিনা কি এমন হয়েছে যে অসুখ ধরা পড়ছেনা
অতচ অসুস্থতা পিছু ছাড়ছেনা।

এইভাবে প্রায় এক মাস চলে গেল,বাবা মা জায় নামাজে জাফরীর জন্য সব সময় দোয়া করছে
হে আল্লাহ আমার মেয়েকে সুস্থ করে দাও
নাসরিন রেহেনা সব বান্ধবীরা কেন যেন আগের
মতো হাসি ঠাট্টা করেনা। তাদের মুখে কোন
আনন্দ নাই।
কেন জাফরী সুস্থ হচ্ছেনা, হে আল্লাহ কি অপরাধ
করেছে জাফরী,,,, যে এতো কষ্ট পেতে হচ্ছে।

নাসরিন আর জাফরীর মা আই সি ইউ তে
বসে আছে।

নাসিরন : আন্টি এখন কি করবেন

জাফরীর মা : জানিনা মা কি করব

নাসরিন : আন্টি একটা কথা বলি

জাফরীর মা : হুমমম বলো

নাসরিন : আপনি জানেন কিনা জানি না।
মেহেদি ভাই এখনো বেচে আছে

জাফরীর মা : জাফরী আমাকে বলেছে আমিও প্রথমে শুনে অবাক হয়ে গেছি।

নাসরিন : হাজারো হোক সে তো আপনার বাড়ির জামাই তাইনা।

জাফরীর মা : হুমমমমম

নাসরিন : আমার মন কেন যেন বলছে মেহেদি ভাইকে আনলে হয়তো জাফরী সুস্থ হবে।

জাফরীর মা : কিন্তু…..

নাসরিন : আন্টি আমি তা বলছিনা আপনারা বিষয়টি বিবেচনা করেন।

জাফরীর মা : মেহেদি কে কোথায় পাবো।

নাসরিন : ও তো বাংলাদেশে নাই মুম্বাই আছে

জাফরীর মা : সে কি মুম্বাই কেন

নাসরিন : জানিনা আন্টি সব কিছু রহস্য ময়
আমাকে নিজেও মনে হচ্ছে।
জানি না আসলে মেহেদি ভাইয়ের হয়েছে টা কি।
সে ওখানে কি করে গেল।আর জাফরীকে
কেন অস্বীকার করছে।কিছুই বুঝতে পারছি না।
যেন পুরোটাই একটা সিনেমার মতো।

হঠাৎ নাসরিন নজর করে দেখছে জাফরীর মুখে
অক্সিজেন লাগা অঙ্গান হয়ে আছে প্রায় একমাস। কিন্তু চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি বের হচ্ছে।
গড়িয়ে বালিশ ভিজে যাচ্ছে।

নাসরিন : আন্টি দেখতে পাচ্ছেন যেদিন থেকে জাফরীকে আই সি ইউ তে রাখা হয়েছে।
প্রায় দেখি চোখ দিয়ে পানি পড়ে জাফরীর।
আন্টি আমার মনে হয় ওর ভিতরে মনের আঘাত
বেশি পরিমান হয়ে গেছে।
মনের কোন জোর নেই এইজন্য জাফরী মনে হয়
সুস্থ হতে পারছেনা।

আন্টি কারণ টা বুঝতে পারছিনা কিন্তু আমার মন
বলছে জাফরী সুস্থ হতে পারে।
মেহেদি ভাইয়ের অসিলায়, হাজারো হোক তাদের
বিয়েটা আপনারা মেনে নেন নাই।
কিন্তু তারা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী স্বামী স্ত্রী।

জাফরীর মা : আমি নিজেই মেহেদিকে আনতে
ব্যাবস্থা করব।কিন্তু কিভাবে তোমাকে একটু হেল্প করতে হবে।

নাসরিন : আমি জাফরীর জন্য সব করতে রাজি আছি আন্টি,,আমি চাই আমার বান্ধবী তাড়াতড়ি
সুস্থ হয়ে যাক।আমি আজকেই মুম্বাই যাওয়ার
ব্যাবস্থা করছি।

জাফরীর মা : ওকে মা তাই করো।
________________

খাদিজা :আব্বু আন্টি টা খুব ভাল ছিলো তাইনা
যাওয়ার আগে আমার সাথে দেখা করে গেলনা।
খুব পচা আন্টি।

খাদিজার আব্বু : তুমি কি তোমার জাফরী আন্টিকে খুব ভালবাসো।

খাদিজা : হুমমমমম আব্বু খুব ভালোবাসি।
আব্বু জানো ওনার স্বামী নাকি হুজুর ছিলো
কিন্তু জাফরী আন্টির স্বামী ম্নে আংকেল কে আর খুজে পায়নাই।

খাদিজার আম্মু : সারাদিন শুধু জাফরী আন্টি,,,
যা গিয়ে পড়তে বস।নয়তো এক থাপ্পড় দেব।

খাদিজার আব্বু : আহ,,, তুমি খাদিজার সাথে এমন করে কথা বলছো কেন…..!!!

খাদিজার আম্মু : যে চলে গেছে ওদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই।
তাহলে ওই মেয়ের কথা বার বার উঠবে কেন বাড়িতে।

খাদিজার আব্বু : রিলাক্স বেশি উত্তেজিত হবেনা
যদি বেশি উত্তেজিত হও তাহলে তোমার পেটে
আমার সন্তান কষ্ট পাবে।

খাদিজার আম্মু : আগে কথা দাও ও মেয়ের কথা
আর উচ্চারণ করবেনা।

খাদিজা : আচ্ছা আম্মু তুমি এমন কেন
তুমি জাফরী আন্টির কথা শুনতে পারোনা কেন

খাদিজার আম্মু : চুপ কর,, যা পড়তে বস।
ছোট মানুষ বেসি বেশি কথা বলিস।

খাদিজা : আমি কথা বললেই বেশি হয় তাইনা

খাদিজার আম্মু : এক চড় মারব বেয়াদব মেয়ে
যা পড়তে বস।

খাদিজা মন খারাপ করে ঘরে চলে গেল

খাদিজার আব্বু : আচ্ছা তুমি মেয়েটার সাথে ওমন করো কথা কেন বলো তো।

খাদিজার আম্মু : তুমি বুঝবেনা। আগে কথা দাও
ওই মেয়েটার কথা তুমি উচ্চারণ করবেনা।
কেমন….

খাদিজার আব্বু : কিন্তু

খাদিজার আম্মু : কোন কিন্তু না আমাকে কথা দাও
খাদিজার আব্বু : কিন্তু জাফরী মেয়েটার নাম নিলে কি এমন সমস্যা।

খাদিজার আম্মু : বুঝেছি তুমি আমাকে কথা দিতে পারবেনা তাই তোমার সাথে আরি

খাদিজার আব্বু : রাগ করছো কেন কিন্তু এটা তো বুঝিয়ে দাও জাফরীর সমস্যা টা কী।

খাদিজার আম্মু : আপনার সাথে আরি আরি
ওই মেয়েটা সুবিধার না।দেখলে তো সেদিন তোমার সামনে শপিং মলে কি করলো।
সবার সামনে চিৎকার দিয়ে বলছে তুমি মেহেদি
কিন্তু তুমি কী সত্যিই মেহেদি।

খাদিজার আব্বু : এই জন্য কি তুমি ওনার নাম শুনতে চাও না নাকি।

খাদিজার আম্মু : ঠিক তাই

খাদিজার আব্বু : বেশ,,, আর উচ্চারণ করব না।

খাদিজার আম্মু : এইতো আমার লক্ষী বর
একটু কাছে আসবেন।
_______________
নাসরিন : আন্টি বিকাল তিনটায় আমাদের ফ্লাইট
আমরা সন্ধা হতে হতেই মুম্বাই পৌছে যাব

জাফরীর মা : হুমমমম যে করেই হোক মেহেদিকে
আনতেই হবে।

নাসরিন : হুমমমমম।

জাফরীর মা বাবা আর নাসরিন তিনজন চলছে
মুম্বাই এর উদ্দেশ্যে।কারণ তারা জাফরীকে আগের
মতো দেখতে চায়।
তারা চায় জাফরীকে সুস্থ করতে,কিন্তু মেহেদির
অসিলায় কি সুস্থ হবে।সুস্থ করার মালিক তো
একমাত্র আল্লাহ।কি আছে জাফরীর কপালে…!!
___________
খাদিজার আব্বু : তোমার মাথার চুল গুলো কতো
এলোমেল হয়ে আছে।

খাদিজার আম্মু : তো একটু মাথায় তেল দিয়ে দাও
তুমি তো বেনি করতে পারো

খাদিজার আব্বু : দাড়াও লেখাটা শেষ করে নেই
কারণ কাজের চাপ একটু বেশি হয়ে গেল।
দিন দিন তোমার মাথার চুলের যত্ন তো আমাকেই
নিতে হবে।

হঠাৎ দরজার কলিংবেল বেজে উঠলো।

খাদিজার আম্মু : এখন আবার কে এলো

খাদিজার আব্বু : তুমি বসো আমি দেখছি।

খাদিজার আব্বু দরজা খুলে দিয়ে দেখছে
নাসরিন আর দুজন বয়স্ক পুরুষ আর মহিলা
খাদিজার আব্বুকে সালাম দিলো….!!!!
খাদিজার আব্বু সালামের জবাব নিয়ে বললো আপনি ওই মেয়েটার বান্ধবী তাইনা।

নাসরিন : জাফরীর বান্ধবী আমি

খাদিজার আব্বু : প্লিজ ভিতরে আসুন।
_______________

রেহেনা আর জাফরীর কিছু বান্ধবী
আই সি ইউ তে আছে।
জানিনা কি হবে, একটা মাস হতে ধরলো জাফরী
কোন কথাই বলছে না।শুধু মাঝে মাঝে চোখ
দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে।
হে আল্লাহ কি হয়েছে জাফরীর, কি এমন পরিক্ষা
নিতেছো জাফরীর।আমরা ডাক্তার।
তুমি তো সবার চেয়ে বড় ডাক্তার,তুমি বাচাও
তুমি মূত্যু দান করো।দয়া করে জাফরীকে সুস্থ করে দেন আল্লাহ।
____________
জাফরীর মা : বাবা আমরা তো মনে করেছিলাম
তুমি মারা গেছো।কিন্তু তুমি যে বেচে আছো এতেই
আমরা অনেক অবাক হয়ে গেছি।
বাবা তুমি হাজারো হোক আমাদের বাড়ির জামাই

খাদিজার আব্বু : আপনি কোথাও ভুল করছেন
আমি মেহেদি না। আমি আপনার বাড়ির জামাই আবার কোনদিন হলাম।

জাফরীর বাবা : বাবা আমি নিজে থেকেই বলছি
তুমিই মেহেদি।তুমি যতোই অস্বিকার করোনা কেন
আমি সিওর তুমি মেহেদি

খাদিজার আব্বু : আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে
আমি মেহেদি নাহ।

জাফরীর মা : বাবা আমার মেয়েটা আজ একমাস ধরে অজ্ঞান।এখনো জ্ঞান ফিরেনি বাবা।
শুধু মাঝে মাঝে চোখ দিয়ে পানি পড়ছে…..!!!
জানিনা এমন টা কেন হচ্ছে।

খাদিজার আব্বু : কি হয়েছে আপনার মেয়ের
(উত্তেজিত)

জাফরীর মা : ও সেদিন বাসায় ফিরে শুধু একটু
ফলের রস খেয়ে শুয়ে পড়েছে।
তারপর থেকে আর উঠেনি বাবা….!!!!চোখ টাও খুলেনি।

খাদিজার আব্বু : ডাক্তার কি বলছে

নাসরিন : ভাই সব জায়গায় দেখলাম আমরা এতো গুলো ডাক্তার নিজেও বুঝতে পারছিনা
আসলে ওর অসুখটা কি….!!!
সিংঙ্গাপুর নিয়ে গেছি ওখানে বড় বড় ডাক্তার বলছে আমাদের যা করার ছিলো আমরা করেছি।
এখন উপরওয়ালাকে ডাকা ছাড়া উপায় নাই,
কি করব ভাই কিছুই বুঝতে পারছিনা….!!!
নিজেকে খুব খারাপ লাগছে,ও আমার সেই
পুরোনো দিনের বান্ধবী।সাত বছর ধরে শুধু মনের কষ্ট নিয়ে,, অন্য জনের সৃতি ধারণ করে বেচে ছিল
মেয়েটি।সেই ক্ষত টা মনে হয় সয্য করতে পারেনি
তাই হয়তো এমন হয়েছে।
প্লিজ ভাই আপনি একটু ইহসান করুণ
জাফরীর কাছে আপনি গেলে হয়তো সুস্থ হতে
পারে।

এই কথা বলার পর খাদিজার আম্মু রেগে গিয়ে
বললো এসব আপনাদের প্লান।
আমার স্বামীকে কেড়ে নেয়ার প্লান করছেন আপনারা।শুনুন আমার বর কোথাও যাবেনা
এটা কেমন কথা একটু জনের জন্য আরেক জন
সুস্থ হবে।আমাদের বোকা পেয়েছো।

জাফরীর মা : বাবা তোমার পায়ে পড়ি প্লিজ তুমি
চলো আমার মেয়ের কাছে।

খাদিজার আব্বু : নাহ আমার দ্বারা তা সম্ভব নাহ।
আপনারা মিথ্যা বলছেন।আপনারা আমাকে ফাসানোর প্লান করছেন।আমি যাবোনা বাংলাদেশে….!!!!

নাসরিন : আমি জানতাম এমন টাই হবে
তাইতো নিজে প্রমাণ হাতে নিয়ে এসেছি
এই দেখুন মেহেদি ভাই জাফরীর সেই রিপোর্ট

খাদিজার আব্বু : আমি জানি আপনারা ডাক্তার।
আপনারা এসব নকল কাগজ তৈরী করেছেন
আমাকে কখনো আমার স্ত্রীর থেকে আলাদা করতে পারবেন না।
প্লিজ আমাদের ডিস্টার্ব করবেন না।

জাফরীর বাবা : বাবা আমি তোমাকে অনুরোধ করছি প্লিজ আমার মেয়ের সাথে এমন টা
করোনা। আমার মেয়ে তোমাকে পাগলের মত
ভালোবাসে। তুমি একটু চলো বাবা।
আমি কথা দিচ্ছি তোমার স্ত্রীর কাছ থেকে আমি
আলাদা কখনোই করব না।

খাদিজার আম্মু : আপনারা যতোই কথা বলুন না
কেন,,, আমার স্বামী কোথাও যাবেনা।

নাসরিন : আংকেল আন্টি চলুন এদেরকে বলে
কোন লাভ নাই।চলেন আমরা চলে যাই।
জাফরীর কপালে যা আছে তাই হবে….!!!!
পৃথিবীতে জাফরীর হালাল ভালোবাসাটা ছিল
একটা মিথ্যা।জাঠরীর কপাল খারাপ
সে একটা ভুল মানুষ ভালোবেসে ছিল।
আন্টি চলুন আমরা আজকেই দেশে ফিরে যাবো।

নাসরিন আর জাফরীর বাবা মা অনেক আশা
নিয়ে এসেছিলো।কিন্তু খাদিজার আব্বু তা
ফিরিয়ে দিলো।তারা আবার পুনরায় বাংলাদেশে
চলে গেল।
মেডিকেল টিমটা কেন যেন শষাণ হয়ে গেছে
নাসরিন রেহেনা জাফরীর সব বান্ধবীরা কেন
জানি আর প্রাণ খুলে হাসেনা।
জাফরী চোখ বন্ধ করেছে একমাস আগে এখনো
খুলেনি।চোখ দিয়ে টপ টপ করে পড়ছে সেই
চোখের পানি।
কেউ বুঝতে পারছেনা আসলে জাফরীর জ্ঞান নেই
কিন্তু চোখ দিয়ে পানি টপ টপ করে পড়ছে
কেন………!!!!!জাফরী কি আর কোনদিন চোখ
খুলবেনা না। নাকি সারা জীবন এই হাসপাতালের
বিছানায় এমন ভাবেই কেটে যাবে দিন।
নাকি সে আধারের পর পাবে আলো।কি হবে জাফরীর দিন।
এই ভাবে কেটে গেল আটমাস।তারপরও জাফরীর
বুঝি চোখ খুলার সময় হয়নি।
চলুন পাঠক বন্ধুরা শেষ পরিনতি টা জেনে আসি

ডাক্তারের তরফ থেকে আর কিছু করার নেই
জানিনা কবে হুশ ফিরবে জাফরীর
এবং জ্ঞান নাও ফিরতে পারে, জাফরীর চোখের
পানি শুকিয়ে গেছে।চোখ দুটো অন্য রকম রক্তের মতো হয়ে গেছে।
ডাক্তার রিপোর্ট দিয়েছে আর কয়েকটা
মাস যদি এমন চোখ বন্ধ অবস্থায় থাকে
তাহলে চোখ দুটো অন্ধ হবার সম্ভাবনা আছে।
কি আর করার,,,,, এইভাবে চলছে দিন পথ।
কেউ জানেনা জ্ঞান ফিরবে কিনা……!!!!
_______________________

খাদিজার আম্মুর এই দিকে ডেলিভারি হবার
সময় হয়ে গেছে।এই দিকে খাদিজার আব্বু
অনেক ব্যাস্ত।

খাদিজার আব্বু : এই তো তোমার জন্য খাবার
এনেছি তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও।

খাদিজার আম্মু : এতো খাবার খেতে পারবনা তো।

খাদিজার আব্বু : খেতেই হবে কারণ পেটে নতুন মেহমান কে কষ্ট দেয়া যাবেনা।

খাদিজার আম্মু : নাহ খাবো না।

খাদিজার আব্বু : খেতেই হবে হা করুণ বলছি

এইভাবে জোর করে খাইয়ে দিচ্ছে, এমন সময়
ইশ আর খেতে পারব না গো।
স্বামী বললো আরে আমার নতুন মেহমান আসবে
কয়দিন পর। আমিতো আর তোমাকে না খেয়ে
রাখতে পারব না।
স্ত্রী জবাব দিলো ওহ বুঝেছি আমার পেটে এখন তোমারবাচ্চা আছে।এইজন্য আমাকে এতো আদর যত্ন করছো।নয়তো আদর যত্ন করতে না তাইতো।
স্বামী বললো আরে পাগলী ব্যাপারটা তাই নয়…!!
তুমি না খেলে যে আমিও খেতে পারি না।
আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।

একটা কথা বলব তোমাকে।

স্ত্রী : হ্যা বলো

স্বামী ওইযে তোমার পেটে যে আমাদের নতুন মেহমান ওকে একটু চুমু খেতে দেবে আমাকে

স্ত্রী জবাব দিলো- আপনার স্বরম করেনা আপনি
আমার পেটে চুমু দিতে চাচ্ছেন লুচু লোক।
আমার লজ্জা করেনা বুঝি, স্বামী প্লিজ তোমার
পেটে একটু চুমু দেব মানে আমার সন্তান কে চুমু
দেব।স্ত্রী আচ্ছা চুমু দাও।
এবার খাদিজার আব্বু যখন পেটে একটা চুমু দিয়ে
কানটা পেটে লাগিয়ে দিলো।
এই খাদিজার আম্মু তোমার পেটে তো আমার
বেবি নড়ছে।আর কি বলছে জানো

স্ত্রী : কি বললো

স্বামী : আমার বেবিটা বললো আব্বু আমি দুনিয়াতে আগে যাই। তারপর আম্মুকে ছেড়ে তোমার কাছে আসবো।কারণ আম্মু খুব বাজে পচা
তোমাকে চুমু দিতে দেয় না আমাকে।

স্ত্রী : ওরে দুষ্টু খুব ফাজিল আপনি।

স্বামী : দেখতে হবেতো কার হাজবেন্ড

স্ত্রী : তোমাকে বিয়ে না করে ইবলিশ শয়তানকে
বিয়ে করা ভাল ছিলো।

স্বামী : তা কোনদিনও সম্ভব না, কারণ ভাইবোনের বিয়ে যায়েয নাই।

স্ত্রী : মানে

স্বামী : ভেবে দেখ তুমি শয়তানকে বিয়ে করতে চাইলে।আর আমি বল্লাম ভাইবোনের বিয়ে যায়েয নাই।
স্ত্রী : ওহ এবার বুঝেছি। আমি তাহলে শয়তানের বোন তাইতো।

স্বামী : হুমমম ঠিক তাই।

স্ত্রী : হুজুর একটা কথা বলব তোমাকে

স্বামী : হুমমমম বলো

স্ত্রী : জাফরীর কথা কি এখনো মনে পড়ে না তোমার

স্বামী : বহুদিন পর জাফরীর নামটা উচ্চারণ করলে কারণ টা কী…???

স্ত্রী : না জানতে ইচ্ছা হলো তাই।বলুন প্লিজ জাফরীর কথা কি মনে পড়ে তোমার

স্বামী : নাহ

স্ত্রী : আমাকে শান্তনা দেয়ার জন্য বললেন মনেহয় তাইনা।

স্বামী : আরে না

স্ত্রী : আমি ছোট বাচ্চা না,,, যে আমাকে যা বুঝাবেন আমি তাই বুঝবো।

স্বামী : কি বুঝাতে চাইছো।

স্ত্রী : নাহ কিছু বুঝাতে চাইনি,, বাট এটা লক্ষ করে
দেখেছি জাফরীর প্রতি তোমার একটা কেমন
যেন টান টান ভাব আছে।

স্বামী : ওসব কথা বাদ দাওতো তুমি

স্ত্রী : আমি কিন্তু আমার উত্তর পাইনি

স্বামী : কিসের উত্তর

স্ত্রী : এইযে জাফরীর কথা মনে পড়ে কিনা তোমার

স্বামী : কি শুরু করলে বলো তো তুমি।

স্ত্রী : নাহ আমি কিছু শুরু করি নাই।আমি আপনার চোখে জাফরীকে দেখেছি।
তুমি যখন জাফরীর নাম শুনতে পাও খাদিজা
যখন বার বার ওই মেয়েটার নাম বলে।
আমি তখন নজর করে দেখেছি তোমার চোখে
পানি ছলমল করছে।
আমি জাফরীর প্রতি ভালোবাসা দেখতে পেয়েছি
আপনার।আপনি মুখে তা স্বীকার না করলেও
আমি বুঝেছি।
আমি আট বছর ধরে তোমার সংসার করছি
তোমার হাজারো কষ্ট হলেও আমাকে বুঝতে দাও
না।কিন্তু আমি এমন একটা মেয়ে যে কিনা স্বামীর
কোন কষ্ট বুঝতে সক্ষম।
প্লিজ এবার তো বলো জাফরীর কথা তোমার
মনে পড়ে কিনা।

স্বামী : ইয়ে মানে

স্ত্রী : ভয় নেই তোমার মনের কথাটা আমাকে শেয়ার করতে পারো।

স্বামী : আসলে আমার কেন এমন হচ্ছে জানিনা গো।আমার মনটা খুব ছটফট করে ওনার জন্য।
ওনি আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরার আকুতি
গুলো আমার শুধু মনের ভিতরে বাজে।
যেন ওনার ছোয়া আমার কাছে খুব চেনা চেনা
মনেহয়।আর ওনি যখন আমার কাছে কান্না করে
আমার পা জড়িয়ে ধরেছিলো।
তখন আমার খুব কান্না পাচ্চিলো।মনটা চেয়েছিল
ওকে একটু বুকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু ও তো বেগানা নারী।এটা শয়তানের পাতানো ফাদ হতে পারে।
কিন্তু কেন জানি ওনার মুখটা কথা বলার ধরন টা খুব চেনা গো।কিন্তু এমনটা কেন হচ্ছে
কিছুই বুঝতে পারছিনা গো।খুব কান্না পায় মাঝে
মাঝে।কিসের এতো টান ওনার প্রতি।
যাকে চিনি না জানিনা। ওনার যখন অসুস্থতার কথা জানলাম তখন নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিনা। এই খাদিজার আম্মু প্লিজ তুমি কিছু
মনে করিয়োনা কেমন…..
আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবোনা।
তুমি আমার সব।তোমার মাঝে আমি আমার মাঝে তুমি আর দ্বিতীয় কেউ থাকবে না।
কিন্তু আমার মনের কথাটা জানালাম তোমাকে।

স্ত্রী : হুমমমম বুঝলাম। আমি কিছু মনে করিনাই।
আমিও তোমাকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি
ভালোবাসি।তাইতো তোমার কোন যেন কষ্ট না হয় তার জন্য আমি কিছু করতে চাই।

স্বামী : কি করবে তুমি

স্ত্রী : তা পরে বুঝতে পারবে।আর এটা ১০০% সত্য
তুমি জাফরীকে খুব ভালোবাসো

স্বামী : কিহ

স্ত্রী : হ্যা এটাই সত্যি। আমি তো আমার বরটাকে
চিনি। যে নিজের কষ্ট আড়াল করে রাখে
যেন আমাদের কষ্ট না হয়।কিন্তু আজ আমার
বরটাকে একটা সত্য প্রকাশ করব….!!!!

স্বামী : কি সত্য (অবাক)

স্ত্রী : জানিনা আমার কতোটুকু ঠিক হবে।
তবে আজ আমার মনে হচ্ছে তোমার জানা জরুরি এই সত্যটা।
______________________
জাফরীকে খাওয়ানো হয় মেশিনের মাধ্যমে
কারণ নয় মাস পেরিয়ে গেল জাফরীর এখনো
জ্ঞান ফিরেনি। চোখের পানি যেন শুকিয়ে গেছে
মেয়েটির।হঠাৎ জাফরীর চোখের দিকে নজর
করে দেখা যাচ্ছে চোখের গোড়া দিয়ে ঘা বের
হচ্ছে।কারণ যে চোখ দিয়ে সব সময় টপ টপ করে
পানি পড়ে।সেই চোখে ঘা ধরা স্বাভাবিক।
দিন দিন জাফরীর অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।
চোখ দিয়ে পানি পড়া বন্ধ হয়ে গেছে….!!!
এখন সমান্য একটু রক্ত বের হবার মত অবস্থা
হয়েছে চোখ দুটোর।
ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী আর তিন মাসে যদি জাফরীর জ্ঞান ফিরে তাহলে তো ভালোই।
আর যদি না ফিরে চোখ দুটো নষ্ট হবার সম্ভাবনা
আছে।
_________________
স্বামী : কি এমন সত্য যে আমি জানি না

স্ত্রী : হুম বলছি তার আগে কথা দাও আমি যা বলব তাই করবে।

স্বামী : হুমমমম কথা দিলাম তোমাকে,,, এবার বলো কি এমন সত্য,, যে আমার জানা নাই।

স্ত্রী : জাফরী যে তোমাকে মেহেদি বলতো
আসলে জাফরী সত্য কথা বলেছে তুমিই আসল মেহেদি।

স্বামী : কিহ বলছো এসব এ হতে পারেনা (উত্তেজিত সুরে)

স্ত্রী : কেন পারেনা এটাই সত্যি

স্বামী : এটা কি করে সম্ভব। আর জাফরীর বাড়ি বাংলাদেশে।আমিই বা এখানে মু্ম্বাই কেন।
আর জাফরী যদি সত্যি আমার বিয়ে করা বউ
হয়,,, তাহলে আমার মনে নাই কেন।
এই তুমি কি আমার সাথে ফান করছো। (উত্তেজিত)

স্ত্রী : তোমাকে সব বলছি।তুমি আমার কাছে এসো।
আর আমার কোলে মাথাটা রাখো।
।তোমাকে সব বলছি।

খাদিজার আব্বু এবার স্ত্রীর কোলে মাথাটা দিয়ে
বলছে এবার বলো কি হয়েছে।

স্ত্রী : তাহলে শুনো :

আমি তোমাকে চিনি একটা গাড়ি থেকে।
একবার তুমি জাফরিকে গাড়িতে তুলে দিয়েছিলে
কারণ জাফরী বিয়ের পর মেডিকেল কলেজে
ভর্তি হয়েছিল।আর তুমি তার পড়াশোনার খরচ
চালাতে।কারণ তুমি তার স্বামী।
যখন তাকে গাড়িতে তুলে দিলে তখন তোমাকে
এক নজর দেখেছিলাম।
জাফরী মেয়েটা খুব একটা ভালো মেয়ে।
আল্লাহর ফায়সালা জাফরী আমার পাশেই সিটে
বসেছিলো।আমার তো বোরখা পরা ছিলো হাত
মোজা পা মোজা। তাই জাফরী আমার মুখটা দেখতে পায় নাই।আমাদের গাড়িটা এক জায়গায়
দাড় হয়ে যায়।আমার পেটে কোন খাবার ছিলোনা
তাই জাফরী আমাকে বললো আপু তুমি এই সিটে
একটু বসে থাকো আমি তোমার জন্য হোটেল
থেকে খাবার নিয়ে আসছি।
জাফরী দোকানে গেল আমার জন্য খাবার আনতে
তখনই আমি বাস থেকে নেমে চলে যাই।
তারপর জাফরীর কি হয়েছে জানি না

আমার কোলে তিন মাসের বাচ্চা খাদিজাহ
এই মেয়েটাকে নিয়ে আমি একাই একটা নারী কোথায় যাবো। কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম
নাহ।তখন আমার নিজের বয়স মাত্র ১৬ বছর।

সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াই তিন মাসের
বাচ্চা নিয়ে।আমার ছোট্ট মেয়ে খাদিজা যখন
কান্না করতো তখন বুঝতাম ওর দুধ খাবার সময় হয়ে গেছে।
তাই একটু রাস্তার পাসে জঙ্গলে বসে মেয়েকে
দুধ দিতাম।এইভাবে আমার চলে গেল একদিন
পেটে প্রচন্ড ক্ষুদা আর হাটতে পারিনা।
তাই ডাসবিনের কাছে গিয়ে দেখি কোন পচা
খাবার পাই কিনা।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here