#হুজুরের_বউ_যখন_ডক্টর
রাইটার :রাকিবুল ইসলাম
6 Part
মেহেদি বললো ভাইয়া আমার অপরাধ কি
কেন আমাকে এভাবে নিয়ে যাচ্ছেন।
ছেলে গুলো বললো বেশি কথা বলিস না
নয়তো অবস্থা খারাপ করে দেব।
মেহেদিকে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হলো।কিন্তু মেহেদি বুঝতে পারছে না তাকে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মেহেদিকে একটা রুমে নিয়ে গেল মেহেদি মনে
মনে চিন্তা করছে আমাকে কি হত্যা করার পরিকল্পনা করছে নাকি,কিন্তু না ছেলে গুলো মেহেদিকে আর কিছুই বলল না।
একটা চেয়ারে নিয়ে গিয়ে বসালো।
চেয়ার কিছু নাস্তা পানির ব্যাবস্থা করা আছে
মেহেদি বললো আপনারা আমাকে এখানে নিয়ে আসার কারণ কি জানতে পারি।
একজন ছেলে বললো নিয়ে আসার কারণ
তোমাকে কিছু কথা বলা হবে
আমাদের বন্ধু আসুক,,,,হঠাৎ বাহির থেকে
মটর সাইকেলের আওয়াজ আসলো
মেহেদি চেয়ারে বসে আছে…!!!
একটা ছেলে আসলো চোখে চশমা পরা
দেখতে বোঝা যাচ্ছে বয়সে মেহেদির বড়
ছেলেটা : আস্সালামুআলাইকুম
মেহেদি : ওয়ালাইকুমুস্সালাম
ছেলেটা : হুজুর আমার নাম নয়ন
মেহেদি : আপনাকে আমি চিনি
নয়ন : তাইনা কি,,, কোথায় দেখেছেন
মেহেদি : কলেজে
নয়ন : আচ্ছা আপনিও কি পড়াশোনা করেন
মেহেদি : জ্বী
নয়ন : কোন ইয়ারে
মেহেদি : আমি এবার এস এ সি দেব
নয়ন : এতো ভারি বয়সে এস এ সি দিবেন
মেহেদি : ক্বওমী মাদ্রাসায় পড়েছি তাই জেনারেল এগোতে পারিনি
নয়ন : গুড ভালোকরে পড়াশোনা করেন
তবে হুজুর আপনাকে একটা প্রস্তাব দিচ্ছি আপনার অভাব দূর হয়ে যাবে।
আপনার কোন কষ্ট থাকবে না।কারণ আমি চাই
আপনি হুজুর মানুষ তাই আপনাকে সম্মান দিয়ে এখানে নিয়ে আসা
আচ্ছা আপনার বয়স কতো
মেহেদি : ২১ বছর
নয়ন : তাহলে তুমি আমার ছোট ভাইয়ের মত
তাই তোমার আমি ভালো চাই।
নয়ন তার একটা বন্ধুকে বললো ব্যাগ টা নিয়ে আয়।নয়নের বন্ধু ব্যাগ টা টেবিলে রাখলো
ব্যাগটা খোলা হলো ব্যাগের ভিতরে অনেক টাকা
নয়ন বললো এই দেখ ছোট ভাই এখানে প্রায় দশ লক্ষ টাকা আছে।
এই সব টাকা তোমার, তবে একটা শর্ত আছে
মেহেদি : জাফরীকে তালাক দিতে হবে তাইতো
নয়ন : ঠিক তাই একদম ঠিক ধরেছো
মেহেদি : আমি জাফরীকে তালাক দিবো
ছেড়ে দেব ওকে।
_______________
জাফরী : তেমার বাড়িঘর নাই মানে
মেয়েটি : জ্বী আপু
জাফরী : বাচ্চা তাহলে কার এটা
মেয়েটি : আমার স্বামীর, কিন্তু উনি আমাকে তালাক দিয়ে বাড়িথেকে বের করে দিয়েছে
জাফরী : কি বলছো এসব
মেয়েটি : জ্বী আপু
জাফরী : একটু খুলে বলো তো কি হয়েছে
মেয়েটি : আপু আমি যখন ছোট ছিলাম আমার দাদি আমাকে এতিম খানা মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয়।কারণ জন্মের পর থেকে মায়ের মুখ দেখতে পারি নাই।
মহিলা মাদ্রাসায় থেকে কষ্ট করে কোরআনের হাফেজা হয়েছি।
কিন্তু টাকার অভাবে কিতাব খানায় পড়তে পারিনি
আমার দাদি আমাকে একটা ছেলের সাথে বিয়ে দেয় তখন আমার বয়স ১২ বছর।
কিন্তু যার সাথে বিয়ে দেয়া হয়েছে ওই লোকটা খুব বাজে মানুষ।
প্রেম ভালোবাসা তেমন কিছু বুঝতাম নাহ
প্রতি রাতের নির্যাতন সইতে পারতাম না
তাই বার বার দাদির বাড়িতে পালিয়ে যেতাম
কিন্তু লোকটা আমাকে প্রতিদিন নির্যাতন চালাতো
দাদির বাড়ি থেকে টেনে হিছড়ে নিয়ে আসতো
যদি আমার বাবা মা বেচে থাকত তাহলে আমার আর এ রকম হতো নাহ।
প্রায় দুই বছর ধরে ওনার নির্যাতন সয্য করে
এসেছি।আজ উনি নিজে ইচ্ছায় তালাক দিয়ে
আমাকে আর আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
জাফরী : এই চৌদ্দ বছর বয়সে মেয়ের মা হয়েছো আপু তোমার তো কেউ নাই তাইনা
তুমি আমার সাথে থাকবে কেমন,কিন্তু মেয়েটি
চুপ করে আছে কোন কথা বলছে না আর
জাফরী বললো আপু কি খেয়েছো
মেয়েটি মাথা নেড়ে বললো কিছু খায় নাই
বাসটা একজায়গায় দশ মিনিটের জন্য দাড়ালো
জাফরী নেমে দোকানে কিছু খাবার কিনতে গেল
মেয়েটার জন্য।জাফরী খাবার কিনে বাসে উঠলো
এমন সময় সিটে তাকিয়ে দেখছে মেয়েটি নাই
_____–_______
নয়ন : গুড ভেরি গুড
মেহেদি : আপনি এটা ভাবলেন কি করে আমি জাফরীকে তালাক দেব,আপনারা বড়লোক মানুষ সেটা আমরা জানি, কিন্তু আমাদের ভালোবাসা টাকার কাছে কখনো বিক্রি হয় নাহ
জাফরী আমাকে ভালোবাসে,আর আমিও জাফরীকে ভালোবাসি, সুতারাং আমরা হালাল ভাবে বিবাহ করেছি।আমরা দুজন স্বামী স্ত্রী।
আমাদের দুজনের ভিতর আপনি কখনো আসবেন না,,, পরিস্কার করে বলে দিলাম।
আর হ্যাঁ টাকা দেখাচ্ছিলেন আমাকে, সবকিছু টাকা দিয়ে কেনা যায় না।মাথায় রাখবেন।
এইবলে যখন মেহেদি বের হতে গেল এমন সময়
মেহেদির মাথায় রড দিয়ে এতো জোরে বাড়ি দেয়া হলো।সাথে সাথে জমিনে পড়ে গেল মেহেদি,
গোটা দুনিয়া যেন ঘুরছে, মাথার ভিতরে কেমন যেন একটা বিকট শব্দ হচ্ছে।সবকিছু যেন ঘোলা দেখাচ্ছে।মাথা দিয়ে রক্ত বয়ে পড়তেছে।
মেহেদি চোখ খুলে আছে বাট কথা বলার মত জবান টা বন্ধ হয়ে আসতেছে।শ্বাস নালী যেন বন্ধ হয়ে আসতেছে।গোটা শরীরটা যেন অভাস হয়ে
যাচ্ছে।
আকাশের পাখি গুলোর ডাক যেন অনেক ভারি হয়ে গেল।চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল
কলা গাছের মতো থপ করে মাঠিতে পড়ে গেল
মেহেদি।হাত পা কাপতেছে,গলাকাটা মুরগির মতো
হাত পা নড়াচড়া শুরু হয়ে গেল।
__________
জাফরী পাগলের মতো মেয়েটাকে খুজতেছে
কিন্তু মেয়েটাকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না
জাফরী পাশে বসে থাকা লোকদের বলছে এই সিটে একটা মেয়ে বসে ছিলো, সেই মেয়েটাকে কেউ দেখেছো।
কেউ কিছু বলতে পারছে না মেয়েটা কোথায়।
একজন মহিলা বললো আমি দেখলাম
মেয়েটি বাস থেকে নেমে চলে গেছে
জাফরী তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে চারদিকে তাকালো মেয়েটি কেথাও নাই।
হেলপার বললো ম্যাডাম বাস ছাড়ার সময় হয়ে গেছে তাড়াতাড়ি বাসে উঠেন।
জাফরী ভারআক্রান্ত মন নিয়ে বাসে উঠলো
কি হবে ওই মেয়েটির জীবন,আর কোথায় বা চলে গেল মোয়েটি।
এই চিন্তা করে জাফরী বাসে উঠে যখন সিটে বাসবে।তখন মনে হলো মেহেদির কথা
ওহ হুজুরটা ফোন দিচ্ছে না কেন।।।।
জাফরী ফোনটা হাতে নিয়ে মেহেদিকে ফোন দিচ্ছে বাট ফোনটা রিসিভ হচ্ছে নাহ।
বার বার কেটে যাচ্ছে,জাফরীর মনে একটা দাগ
বসে গেল কি ব্যাপার হুজুর তো কখনো এমন করে নাহ।তাহল ফোন ধরছে না কেন।
চলবে…?