হুজুরের বউ যখন ডক্টর পর্ব-৭

0
1080

#হুজুরের_বউ_যখন_ডক্টর,

রাইটার :রাকিবুল ইসলাম,

7 Part

জাফরী ফোনটা হাতে নিয়ে মেহেদিকে ফোন দিচ্ছে বাট ফোনটা রিসিভ হচ্ছে নাহ।
বার বার কেটে যাচ্ছে,জাফরীর মনে একটা দাগ
বসে গেল কি ব্যাপার হুজুর তো কখনো এমন করে নাহ।তাহল ফোন ধরছে না কেন।
ফোন বেজেই চলছে ফোন ধরছে নাহ মেহেদি।

কিচুক্ষণ পর শ্বাশুড়ী মা জাফরীকে ফোন দিলো
জাফরী ফোনটা রিসিভ করে কানে লাগিয়ে
সালাম দিলো।

মেহেদীর মা : বউমা মেহেদীকে একটু ফোন দাও তো আমার মনটা কেমন যেন অশান্তি লাগছে।

জাফরী : মা আমিও আপনার ছেলেকে ফোন দিচ্ছি ফোন বেজেই চলছে,, ফোন ধরছে নাহ

মেহেদীর মা : এতক্ষনে তো অর বাড়ি আসার কথা কেন এখনো আসলো নাহ।

জাফরী : আচ্ছা আমি দেখতেছি দেখি কি করা যায়।আসলে আপনার ছেলেটাও মাঝে মাঝে পাগলামী করে।
মাকে এমন শান্তনা দিয়ে জাফরী চিন্তা করতে করতেই পৌছিয়ে গেল কলেজে।
বিকাল গড়িয়ে আসলো। আবার মেহেদির ফোনে ফোন দিলো এবার ফোনটা বন্ধ দেখাচ্ছে।
এবার জাফরীর মনে একটা দাগ লেগে গেল
জাফরী টেনশনে পড়ে গেল।আমার হুজুর তো আমাকে সেই সকালে গাড়িতে তুলে দিছে।
সে বলেছিল আমাকে বার বার ফোন দেবে
আর আমার সেই হুজুরের বন্ধ

জাফরী তাড়াতাড়ি শ্বাশুড়ি মাকে ফোন দিলো
ফোনে শুনতেছে শ্বাশুড়ী মায়ের কান্নার আওয়াজ
জাফরী বলল মা কি হয়েছে কান্না করছেন কেন

মেহেদীর মা : সেই সকালে বের হল মেহেদি কিন্তু এখনো তো আমার ছেলেটা বাড়ি আসলো নাহ

জাফরী টেনশনে পড়ে গেল।জাফরীর একটা খুব ভাল বান্ধবী ছিলো নাম (নাসরিন)

জাফরী নাসরিন কে গিয়ে বলছে দোস্ত
আমার হুজুর ফোন ধরছে নাহ
ফোন বন্ধ,জানি না ওনি কোথায় আছে।
আর আমার শ্বাশুড়ি মা কান্না করছে কি করব
দোস্ত বল তো….!!!!

নাসরিন : চল আমি আর তুই তোর শ্বশুড় বাড়িতে যাব।আমি বাবাকে বলছি আমাদের একটা গাড়ি পাঠিয়ে দিতে।

জাফরী : একটু তাড়াতাড়ি কর,,, ওনার কিছু হয়ে গেলে আমি বাচবনা নারে।

নাসরিন তাড়াতাড়ি গাড়ির আনলো, বের হচ্ছে আবার যাবে বাড়িতে।
এমন সময় নয়ন জাফরীর সামনে এসে দাড়ালো

নয়ন : জাফরী কোথায় যাও

জাফরী : আমার পথ ছাড়ুন,

নয়ন : যদি না ছাড়ি কি করবে তুমি

জাফরী : রাস্তা ছাড়ুন বলছি

নয়ন : না ছাড়বো নাহ।জাফরী দেখো তোমাকে ছাড়া আমি বাচবনা। প্লিজ আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে নাহ।

নাসরিন : নয়ন রাস্তা ছেড়ে দে বলছি নয়তো

নয়ন : নয়তো কি করবি তুই

নাসরিন : নয়ন কি করতে পারি সেটা তুই ভালকরে জানিস। রাস্তা ছেড়ে দে

নয়ন : নাহ ছাড়ব না জাফরীর সাথে আমার কিছু কথা আছে।

নাসরিন : কোন পর পুরুষের অধিকার নেই কোন মেয়ের এইভাবে রাস্তা আটকানো।
আর একবার যদি জোর করিস আমার বাবাকে সবকিছু বলে কিন্তু,,,,।ভুলে যাস না তোর বাবা আমাদের অভিসের ম্যানেজার।
বাপের চাকরী খেতে না চাইলে সর বলছি।

এই কথা বলতেই নয়ন রাস্তা ছেড়ে দিলো।
জাফরী আর নাসরিন চলে গেল
কিন্তু দূর ভাগ্য মেহেদিকে কোথাও খুজে পাওয়া গেল না।
শুধু মেহেদির সাইকেলটা টিকিট কাউন্টারের পার্শে দাড় করানো।
কিন্তু মেহেদি নাই…….!!!! অভিযোগ দায়ের করা হলো থানায়। কিন্তু নাহ মেহেদির কোন খবর পাওয়া গেল নাহ।গ্রামে একটা হৈ চৈ পড়ে গেল
মেহেদি নিখোঁজ।
সবাই মেহেদির ভাল ভাল গুন আলাপ আলোচনা করা শুরু করে দিলো।
এই ছেলেটা এতো ভদ্র ছিলো মাদ্রাসায় পড়তো।
কিন্তু ছেলেটা কোথায় হারিয়ে গেল কোথাও খুজে পাওয়া গেল নাহ।

আর এইদিকে মেহেদির মা মেহেদির শোক সইতে
না পেরে।হার্ড এট্যাক করলো।
কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মা দুনিয়ার জমিন থেকে বিদায়।

জাফরীকে আর কতো সয্য করতে হবে
শ্বাশুড়ী মা মারা গেল, এক দিকে স্বামী নিখোজ
কি আছে জাফরীর ভাগ্যে,,,,, তার কি ডাক্তার হওয়া হবে।নাকি সে স্বামীকে হারিয়ে অন্য কাউকে জীবন সংগী করে বেচে নেবে।
কি আছে জাফরীর কপালে,কারণ স্বামী নামক
ছায়া টুকু নাই,বেচে আছে নাকি,,,, মরে গেছে জাফরী কিছুই জানে না।

এক বছর, দুই বছর, তিন বছর,এইভাবে সাত বছর অতিবাতিত হয়ে গেল।
সাত বছর সময় অতিবাহিত হয়ে গেল,,, কিন্তু মেহেদি নামক ছেলেটার কোন খোজ পাওনয়া গেল নাহ।

জাফরী এখন সাত বছরে অনেক বড় ডাক্তার হয়ে গেছে।অনেক জায়গায় বিয়ের প্রস্তাব আসে।
বান্ধবীরা বার বার করে বুঝায় মেহেদি হয়তো বেচে নেই কেউ মেরে ফেলেছে।
যদি বেচে থাকত তাহলে হয়তো তোর কাছে এতোদিন আসতো।এইভাবে জাফরীর বান্ধবীরা জাফরীকে বুঝাতে লাগলো।
জাফরীর মা বাবা বার বার করে বুঝাচ্ছে
যা হবার হয়ে গেছে মা…. কালকে তোকে ছেলে দেখতে আসবে। আবার নতুন করে শুরু কর।
শুধু কি মেহেদির শ্রীতি নিয়ে বেচে থাকবি।

জাফরী : আচ্ছা মা তোমাকে একটা কথা বলি

মা : হমমমমম বল

জাফরী : তোমরা আমার আর হুজুরের বিয়েটা মেনে নিতে পারো নি।আজকে সাত বছর হয়ে গেল ওনার কোন খোজ নেই।
এখন যদি ওনি ফিরে আসে তাহলে কি তুমি
মেনে নেবে আমাদের দুজনের

জাফরীর এই প্রশ্নে মা চুপ করে রইলো

জাফরী : কি হল মা চুপ কেন উত্তর দাও

মা : আমার অনেক কাজ আছে এখন

জাফরী : জানি তুমি এড়িয়ে যাচ্ছো। তোমরা এখনো মেনে নিতে পারবে নাহ।
কারণ উনি গরিব মানুষের সন্তান বলে
কিন্তু মা ভালকরে শুনে নাও উনি যতোটা ভালোবাসা, যতোটা আমাকে বুঝেছে।
আমি ওনাকে কোনদিন ভুলতে পারব নাহ

আই লাভ ইউ হুজুর,,,, আই লাভ ইউ হুজুর,,,,, আই লাভ ইউ হুজুর….

মা জানো আমার স্বামীকে ভালোবাসি কোন পর পুরুষকে বাসি নাহ।
আমার ভালোবাসা পবিত্র, আমার মোনাজাত আমার আল্লাহ ঠিক একদিন কবুল করবে

মা : এসব বাদ দে মা,,,,, কালকে তোকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে।পিছনে তাকাতে নেই মা নতুন করে শুরু করতে হয়।
★★★★★★★★★
জাফরীর চাকরি টা সরকারি। আর চাকরির
মাঝে মাঝে বাহিরের দেশে যেতে হয়
জাফরী বাহিরে দেশে যাবে (মুম্বাই)
চিকিৎসা দেয়ার জন্য।
কারণ তার চাকরিটা সরকারি।

তাদের ব্যাসে সতেরো জন মেয়ে ডাক্তার বাংলাদেশ থেকে মুম্বাই পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে
তার ভিতরে জাফরী একজন মেধাবী ডাক্তার
সরকারি ভাবে তারা চলে যাচ্ছে মুম্বাই
সাথে তার ভাল বান্ধবী নাসরিন আছে
প্লেনে বসে আছে দুজন এক সাথে

নাসরিন : হ্যারে জাফরী তোর ব্যাগে সাদা কাপড় টা কার
জাফরী : কেন তুই যেনে কি করবি

নাসরিন : নাহ এমনি বললাম রে দোস
যদি সমস্যা থাকে বলিস না থাক,,,

জাফরী : কেন বলব না বল।তুইতো আমার সুখ দূঃখের সাথী

নাসরিন : তাহলে এটা কার জুব্বাহ।

জাফরী : এটা আমার হুজুরের পান্জাবী

নাসরিন : তা ঠিক,,, কিন্তু তোর কাছে সব সময় রাখিস কেন।

জাফরী : যতোক্ষন এই জুব্বাহ টা আমার কাছে থাকে। ততক্ষণ আমি আমার নাকের কাছে আমার হুজুরের গায়ের গন্ধ পাই।

নাসরিন : আহ তোর কথা শুনে চোখে পানি চলে আসলো রে। আসলে রিয়েল ভালোবাসা গুলো এমনই হয় বুঝি।
ছয় থেকে সাত বছর হতে চলছে তারপরও তুই ওকে ভুলিস নাই।

জাফরী : দোস্ত বিশ্বাস কর আমি ওনাকে

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here