তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি সূচনা_পর্ব

পুরো ক্যাম্পাসে শুধু মাইরের শব্দে থমথম করছে সবার মাঝেই চলছে নিরবতা ইউনিভার্সিটির কারো সাহস নেই আরুশ আরফানের মুখের উপর কিছু বলার তাই সবাই চুপচাপ দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে,,,আরিয়ার আজ ইউনিভার্সিটি আসতে লেইট হওয়ায় সে তাড়াহুড়ো করে ঢুকতেই দেখলো সবাই এক জায়গায় জড়ো হয়ে কিছু দেখছে আরিয়া ভ্রুকুচকে একবার থেমে আবারও যাওয়া শুরু করলো যেখানে সবাই জট পাকিয়ে আছে সেখানেই,,,ধীর পায়ে আরিয়া এগোতেই দেখলো একটা ছেলেকে আরেকটা ছেলে জঘন্য ভাবে মেরেই যাচ্ছে আরেকটু মারলে হয়তো ছেলেটা মরেই যাবে,,,আরিয়া এটা দেখেই রেগে সবার মধ্য দিয়েই গিয়ে আরুশকে টেনে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় মারলো,,,সবাই অবাক দৃষ্টিতে আছে আরুশ আর আরিয়ার দিকে,,,আরিয়া কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই বলে উঠলো,,

“” এই যে মিষ্টার কি পেয়েছেন আপনি?এটা একটা ইউনিভার্সিটি আপনার গুন্ডা গিরির জায়গা নয়,,,

আরুশ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আরিয়ার দিকে আজ পর্যন্ত আরুশের সাথে কেউ গলা তুলেও কথা বলার সাহস পায় না আর এই মেয়ে তাকে সরাসরি থাপ্পড় দিয়ে দিলো,,,

“”” এই আপনি কানে শুনেন না?প্রথমত ভার্সিটিতে হাঙ্গামা করছেন,,,আবার কিছু জিজ্ঞেস করলে তার আন্সারও দিবেন না,,,

আরিয়া কে এভাবে দেখে দিশা তাড়াতাড়ি আরিয়ার কাছে এসে বললো,,

“” আরিয়া চল এখান থেকে,,,

“” তুই চুপ,,আর আপনারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেন না আপনারা শুধু তো দর্শকের মতো সারাজিবন দেখেই গেলেন কিছু তো বলার সাহস আপনাদের নেই,,

“” দেখ আরিয়া উনি এমনিতে কাউকে মারে না নিশ্চয় ওই ছেলে কোনো দোষ করছে তাই উনি মেরেছে,,,

“” এই তুইও ওই গুন্ডাটার সাপোর্ট নিচ্ছিস,,,আচ্ছা মানলাম ছেলেটা দোষ করেছে তাই বলে এভাবে আধমরা করবে,,ছেলেটার দিকে তাকা দেখ আর একটু মার খেলে মরেই যাবে,,,

এতক্ষণ আরুশ সব শুনছিলো আর আরিয়ার দিকে সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো,,আরুশের একজন গার্ড এগিয়ে আসতে নিলেই আরুশ তাকে হাত দেখিয়ে থামিয়ে দেয়,,,আরুশ দেখতে চাচ্ছে মেয়েটা আর কি কি করে,,,
এবার আরিয়া তুর্য(যে এতক্ষণ মার খেলো)কে উদ্দেশ্য করে বললো,,

“”আর আপনি আপনার গায়ে শক্তি নাই,,,খাবার খান না নাকি,,,মার তো খাইলেন এখনো এখানে কি করছেন ভাগেন,,,হসপিটালে যান নয়তো একটু পর আপনাকে আর খুজে পাওয়া যাবে না,,,

তুর্য কথা টা শুনেই কোনোরকমে উঠে দাড়ালো কিন্তু এক কদম যাওয়ার শক্তিও তার নেই,,আরুশ এতক্ষণ চুপ থাকলেও এবার গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,,

“” ওকে হসপিটাল নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা কর,,

“” বাহ বাহ এ তো দেখি গরু মেরে জুতো দান…

আর কিছু বলতে পারেনি আরিয়া দিশা এক ধমক দিয়ে টানতে টানতে ক্যান্টিনে নিয়ে যায়,,,আরুশ আরিয়ার যাওয়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার দৃষ্টি সরিয়ে নেই গম্ভীর মুখ করে উঠে চলে যায়,,,

আরিয়া আফরিন,,এবার অনার্স ২য় বর্ষে,,বাবা মা কেউ নেই,,,২ বোন আরিয়ারা,,,ছোট বোন আইরা তাবাসসুম,,এসএসসি পরীক্ষার্থী,,আরিয়া কখনো অন্যায় সহ্য করে না,,প্রচুর চঞ্চল প্রকৃতির একটা মেয়ে সব সময় সবাইকে মাতিয়ে রাখে,,,আর আরুশ আরফান শহরের সেরা বিজনেসম্যান সবার ক্রাশ,,মাফিয়া লাইফও আছে তার,,,আরুশ আরিয়ার বিপরীত সব সময় গম্ভীর মুখ নিয়ে থাকে তবে রাগ যেন আকাশ পরিমান,,আরুশের ছোট ভাই আয়ান আরফান,,বাাকিটা গল্পে জানবেন,,,

দিশা আরিয়াকে ক্যান্টিনে এনে শান্ত গলায় বুঝাচ্ছে,,

“” দেখ আরু আরুশ কখনো নিরপরাধ কারো গায়ে হাত তুলে না যারা দোষ করে শুধুই তাদের শাস্তি দেয়,,

“” এই তুই থাম,,,ওই গুন্ডার পক্ষ নিয়ে একদম কথা বলবি না,,আর শোন শাস্তি দেওয়ার জন্য দেশের আইন আছে আর যদিও না থাকে কাউকে মারার একটা লিমিট আছে,,তুই দেখেছিস লোকটা আধমরা হয়ে গেছে,,,

“”আচ্ছা ঠিক আছে আরুশের দোষ,,এবার বল তো তুই ওকে মারলি কিভাবে?

“” কিভাবে আবার হাত দিয়ে,,আজব তো তুই কি সব উলটা পালটা প্রশ্ন করিস,,

“”” আরে আমি বলতে চাইছি এই আরুশ আরফান কে থাপ্পড় মারলি যার সাথে কি না কেউ চোখ তুলেও কথা বলে না,,তাকে তুই মারলি,,,

“” হ্যা মারছি তো,,শোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আমার আছে,,আর আরুশ আরফান তো বড়লোক তাই বিগড়ে গেছে অবশ্য বড়লোকরা এমনই হয়,,

“” আরু তুই এভাবে বলছিস আর এই শহর শুধু এখানকার কেন কত মেয়ের যে ক্রাশ উনি তা তুই ভাবতেও পারবি না,,,

“” ভাবতে চায়ও না,,তুই ক্লাসে যাবি নাকি আমি একাই যাবো,

“” এই এই থাম থাম আমিও যাবো চল,,

আরিয়া আর দিশা ক্লাসে চলে গেলো,,,এই পুরো কলেজ আর ভার্সিটিতে দিশা আরিয়ার একমাত্র ফ্রেন্ড+বেষ্টি,,আরিয়া ছেলেদের থেকে সবসময় দূরে থাকে তাই ওর ছেলে ফ্রেন্ডও নাই,,

এদিকে আরুশের মনে চলছে তুফান,,,এই শহরের কারো সাহস নেই তাকে মারার আর ওই মেয়ে মেরে দিলো কত বড় সাহস,,,আরুশ কেন তাকে কিছু বললো না,,,রাগে তার পুরো গা জ্বলছে,,,

আরুশের গাড়ি এসে থামে এক বিশাল আলিসান বাড়ির সামনে,,বাড়ির সামনেটাও অনেক বেশি সুন্দর,,,২ পাশে অনেক ফুলগাছ লাগানো বাগান ফুল ফুটে গন্ধে ম ম করছে,,,তার ভিতর দিয়েই সরু একটা রাস্তা দিয়ে রাগে গিজগিজ করতে করতে বাড়ির ভেতর ঢুকলেই সামনে তার ভাই আয়ান আর তার ফুফি এসে দাড়ায়,,,আরুশ যতই রেগে থাকুক আয়ান আর তার ফুফির সাথে কখনোই সে রেগে কথা বলে না,,,

তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
সূচনা_পর্ব
#পিচ্চি_লেখিকা

(আসসালামু আলাইকুম,,ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন❤️❤️❤ উৎসাহ পেলে পরের পার্ট দেবো❤️❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here