#তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
পার্ট:৩
#পিচ্চি_লেখিকা
শুভ আরিয়ার হাত শক্ত করে ধরায় আরিয়া ব্যাথায় ককিয়ে উঠে।হাতটা পিছন দিকে থাকায় আরিয়া হাত ছাড়িয়েও নিতে পারছে না,,দূর থেকেই আরুশ সবটা দেখেছে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে চোয়াল শক্ত করে সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে সবটা দেখছে আরিয়ার ককিয়ে উঠা দেখে সাথে সাথে সে গাড়ি থেকে নেমে আরিয়া আর শুভর দিকে এগিয়ে যায়,,আরুশ রাগে ফুসছে তবুও শুভর সামনে গিয়ে শান্ত গলায় বললো,,
“” ওর হাত ছাড় শুভ,,
“” আরে আরুশ আরফান তুই এখানে?
“” ওর হাত ছাড়,,
“” যদি না ছাড়ি?
“” আমি ছাড়িয়ে নিতে জানি,,
বলেই একটান দিয়ে আরিয়ার হাত ছুটিয়ে নিয়ে সামনে হাটা ধরলো আর শুভ ওখানে দাড়িয়েই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাগে ফোস ফোস করছে,,
আরুশ আরিয়া কে নিয়ে গাড়ির সামনে এসে দাড়ায় আর আরিয়ার মাথার উপর দিয়ে সবটা যাচ্ছে আরিয়া দাড়িয়ে রেগে বললো,,,
“”এই যে এখানে কি করতে এসেছেন?
“” আজব মেয়ে তো তুমি,,তোমাকে ওর কাছ থেকে ছুটিয়ে আনলাম কোথায় ধন্যবাদ দেবে,,না তা তো তুমি দিলেয় না আবার আমার সাথেই রেগে কথা বলছো,,
“” হ্যা আমি আজবই,,,আর ওর থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন কেন?আমি নিজেই ছুটতে পারতাম,,
‘””তা ছুটছিলে না কেন?ছেলেদের গায়ে ঘেষতে বুঝি খুব ভালো লাগে?
“”” সাট আপ ওকে,,মুখ সামলে কথা বলবেন,,অবশ্য আপনাদের মতো গুন্ডারা মুখ সামলে কথা বলবেন কি করে?তা ওই গুন্ডাটাও বুঝি আপনার দলেরই?
আরুশ রহস্যমাখা হাসি দিলো,,
“” ভার্সিটি যাও,,তোমার লেইট হচ্ছে,,
আরিয়া দেখলো সত্যি তার লেইট হচ্ছে তাই আর কথা না বাড়িয়ে রিক্সা ডেকে চলে গেলো ভার্সিটিতে আর আরুশ মুচকি হেসে অফিসের দিকে গেলো,,আরিয়া ভার্সিটিতে ঢুকেই দিশার সামনে পড়লো,,
“” ওই ছেমরি এতো লেইট করছস কেন?
“”” আরে ধুর আর বলিস না,,ওই শুভ উগান্ডার গুন্ডাটা আছে না!ওই উগান্ডা আজ আবারও আমার রাস্তা আটকেছিলো,,
“” কি বলিস?
“” হুম রে,,,ইচ্ছা করে ওকে মেরে উগান্ডা পাঠিয়ে দেয়,,
“” আচ্ছা তোর কি সমস্যা?তুই ওকে এক্সেপ্ট কেন করিস না?
“” এই চুপ এক থাপ্পড় দিয়ে তোকে নেটওয়ার্কের বাইরে ফেলবো,,তোর ভালো লাগলে তুই যা প্রেম কর,,
“” আমি তো পারলে করতামই তবে ওই শুভর সাথে না আমার একমাত্র ক্রাশ আরুশের সাথে,,
“” আরে থাম থাম তোর ওই উগান্ডা ক্রাশ আর ওই শুভ ২ টাই গুন্ডা,,একে অপরকে চিনে,,
“”” এ্যাাাা,,
“”” হ্যা,,শোন তোর জন্য টাক্কু কাকু এনে দিবো তাও এই ২ উগান্ডার দিকে তাকায়ছ না,,
“” সর কুত্তি,,
“” চল ক্লাসে চল,,
আরিয়া আর দিশা ক্লাসে চলে গেলো,,
________________
আরুশ অফিস এসে আগে 5th ফ্লোরে গেলো,,,রাসেল পিছন পিছন গেলো,,,আরুশ সব গুলো কেবিন ভালো করে একবার দেখলো,,রাসেলকে বললো,,
“”” কি বুঝলি?
“”” স্যার বিশ্বাসঘাতক আছে,,কাল রাতে ঠিক মতো চেক করে দেখলাম 1st ফ্লোর থেকে সব ফ্লোরের ক্যামেরার তার কাটা,,
“” ফুটেজ গুলো নিয়ে আমার কেবিনে আয়
“” আচ্ছা,,
কিছুক্ষণ পর রাসেল আরুশের কেবিনে সব ফুটেজ নিয়ে গেলো,,আরুশ সব গুলো ঠিক মতো চেক করে দেখলো লাস্ট ক্যামেরার ফুটেজে কারো আবছা মুখ দেখা যাচ্ছে তখনই সব অন্ধকার হয়ে গেলো,,আরুশ আরো সিউর হওয়ার জন্য ওই ফ্লোরটাই গেলো,,,আরুশের চোখে মুখে রাগ স্পষ্ট,,চুপচাপ আবার 5th ফ্লোরে এসে কে কে absent আছে তা দেখার জন্য কম্পিউটারের কাছে গেলো,,,সবার presence আছে শুধু একজন বাদে আরুশের সন্দেহ আরো গাঢ়ো হলো,,,আরুশ কিছু না বলেই চুপচাপ একটা কেবিনে গেলো,,ওই কেবিনটা আসাদ নামের একজনের,,আরুশ ধীর পায়ে কেবিনটাই ঢুকে দেখলো কেউ নাই তবুও কয়েকমিনিট দাড়িয়ে আবারও চলে আসতে গিয়েই কারো ধীর কন্ঠ পেলো,,
“”” দেখো আমি ৫ টা ফ্লোরের সব ক্যামেরার তার কেটে দিয়েছি,,আমার টাকা রেডি রাখো,,বাঘের খাচা থেকে বের হতে হবে নয়তো আমি আজই শেষ,,,
“” ৫টা ফ্লোরের তার কাটার জন্য কত টাকা পেয়েছিস?
আসাদ আরুশের কন্ঠ পেয়েই ভয়ে অসাড় হয়ে যায়,,আমতা আমতা করে বললো,,
“” স স্যার আম আমাকে মাফ করে দেন স সস্যার
বলেই আসাদ আরুশের পায়ে বসে পড়লো,,
“”” তোর টাকার দরকার হলে আমাকে বলতে পারতি কিন্তু তুই তো এই আরুশ আরফানের সাথে ডিরেক্ট বেইমানি করে দিলি,,তুই তো ভালো ভাবেই জানিস আমি সবাই কে ক্ষমা করলেও বেইমানদের ক্ষমা করি না,,শাস্তি তো তুই পাবি ই,,,
“”” প্লিজ স্যার ছেড়ে দেন আমায়,,
আরুশ আর কিছু বলতে না দিয়ে আসাদকে টেনে তুলে চাকু দিয়ে আসাদের গালে একটা পোচ মেরে দেয়,,,আসাদ গাল ধরে ছটফট করতে থাকে,,আরুশ একটা গান( gun)বের করে সপাসপ কয়েকটা গুলি মেরে ঝাঝড়া করে দিলো,,রক্তের কয়েক ফোটা এসে আরুশের মুখে পড়লো,,আরুশ প্যান্টে হাত গুজে দাড়িয়ে গেলো তখনই রাসেল আসলো,,
“” লাশটা সরিয়ে দে,,
“” আচ্ছা বস,,
আরুশ মুখ মুছে নিয়ে কিছু না বলে বাইরের দিকে হাটা দিলো,,,
_______________
আরিয়া আর দিশা ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাসে আসলো,,আরিয়া আর দিশা কিছুক্ষণ গল্প করতেই আরিয়ার হঠাৎ জবের কথা মনে পড়লো,,
“” দিশা,,
“” হুম বল,,
“” আমার একটা জব দরকার,,
“” জব কেন করবি তুই?
“” মামা মামির ঘাড়ে আর কতদিন খাবো বল,,
“” কিন্তু জব কি মুখের কথা কই পাবি জব?
“” জানি না,,তবে খুজতে হবে,,দেখি কি হয়,,
“” হুম,,বাসাই যাবি?
“” হুম,,
আরিয়া আর দিশা বাড়ি আসার উদ্দেশ্যে বের হলো,,দিশা রিক্সা নিয়ে বাড়ির দিকে চলে গেলো,,,আরিয়ার ভালো লাগছে না তাই ভাবলো আজ হেটেই যাবে বেশি দূর তো না,,,
কিছুক্ষণ আনমনে হেটেই চলেছে হঠাৎ পিছন থেকে তাকে ডেকে উঠলো,,,
“” ওই বাঘিনী,,
আরিয়া এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই তার মানে তাকেই কি কেউ ডাকছে,,পিছনেই তাকাতেই আরিয়া আরুশকে দেখলো,,,কিঞ্চিত ভ্রুকুচকে তাকালো,,
“”” বাঘিনী কাকে বললেন?
“”” এখানে কি তুমি ছাড়া অন্য কেউ আছে?
“” না,,
“”” তাহলে?
“” আমাকে কেন বললেন বাঘিনী?
“” কারণ তুমি সত্যিই বাঘিনী,,
“” আজব তো,,আপনি কি উগান্ডা থেকে আসছেন নাকি,,একটা জলজ্যান্ত মানুষকে বাঘ বানিয়ে দিচ্ছেন,,
“”” উগান্ডা থেকে তো আসিনি,,তবে তোমাকে নিয়ে আমি যাবো,,
“”” কি বললেন?
“” এই না কিছু বলিনি,,তোমাকে একটা কথা বলাার জন্য আসলাম,,
“” কি কথা?
“”” শুনলাম তোমার নাকি জব দরকার,
আরিয়া আবারও ভ্রুকুচকে বললো,,
“”” আপনি কিভাবে জানলেন?
“” সেইটা ফেক্ট নয়,,তোমাকে একটা জবের খোজ দিতে পারি যদি করো আর কি,,
“”” আপনার অফিসে?
“”” হুম😌,,
“” খেয়ে আমার কাজ নেই না আপনার অফিসে যাবো জব করতে এই ভাগেন,,
“” বাহ রে,,মানুষের ভালো করতে নাই,,
“”” আপনার আমার ভালো করতে হবে না,,উগান্ডার খচ্চর কোথাকার,,গুন্ডা একটা,,,তেলাপোকা আর টিকটিকি কেটে খাইয়ে দেবো ভাগেন এখান থেকে,,,
আরিয়া বকতে বকতে হাটা দিলো,,আর আরুশ আরিয়ার বকা শুনে হাসতে লাগলো,,তারপর বাকা হেসে বললো,,
“”” আরে আমার আরুজান,,তোমার জব তো আমার অফিসেই হবে,,দেখে নিও
বলেই সানগ্লাস পড়তে পড়তে চলে গেলো আরুশ,,আরিয়া বাসাই যাচ্ছে আর আরুশ কে বকছে,,
“”” কোথাকার কোন গুন্ডা রে আসছে আমাকে জব দিতে,,খচ্চর বেডা,,,আর একদিন আমার সামনে আসলে তোর মুখ ভেঙে দেবো,,উগান্ডায় বেচে দেবো তোকে,,টিকটিকি আর তেলাপোকার খাবার খাওয়াবো তোকে,,আচ্ছা এই খচ্চর আমাকে কেন ফলো করছে,,কালকের মাইরের প্রতিশোধ নিতে আসেনি তো,,উগান্ডার খচ্চর,,আয় খালি প্রতিশোধ নিতে,,বুঝাবো এই আরিয়া কি জিনিস,,হুহ,,
আরিয়া বকতে বকতে বাড়ি চলে এলো,,বাড়িতে ঢুকতেই আরিয়ার চোখ কপালে….
চলবে…..
(আসসালামু আলাইকুম,,,ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,,,ভেবেছিলাম গল্পটা বাদ দিবো কিছুদিন কিন্তু সবাই ওই গল্পের পাশাপাশি এটাও চাইছে তাই দিলাম,,❤️❤️❤️❤️❤️)