#তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
পার্ট :৫
#পিচ্চি_লেখিকা
আরিয়ার ভার্সিটি কাছে হওয়ায় সে হেটেই যায় যেদিন খুব তাড়া থাকে সেদিন রিক্সা নিয়ে যায়,,,এই রাস্তায় তেমন লোকজন দেখা যায় না,,,আরিয়া আপন মনে হাটছে আর গুনগুন করে গান গায়ছে,,,সামনে তাকাতেই হঠাৎ একটা ছেলেকে দেখলো,,কাচুমাচু হয়ে বসে আছে ব্যাপারটা আরিয়ার কাছে কেমন লাগলো,,,দেখে মনে হচ্ছে কলেজের স্টুডেন্ট,,,আরিয়ার ভার্সিটির সাথেই কলেজ,,হয়তো ছেলেটা সেই কলেজেরই,,,ছেলেটাকে দেখে মনে হচ্ছে ছেলেটা খুব ভয় পেয়েছে,,,আরিয়া ভাবলো যাবে কি যাবে না,,পরে ভাবলো ছেলেটা যদি কোনো বিপদে পড়ে থাকে তার যাওয়া উচিত,,,ভেবেই আর আরিয়া দাড়ালো না তাড়াতাড়ি ছেলেটার কাছে গেলো,,ছেলেটা এখনো কাচুমাচু হয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে,,,ফর্সা গায়ে কিছু মারের দাগ স্পষ্ট,,,কয়েকটা জায়গা বাজে ভাবে কেটে গেছে,,,দেখেই মনে হচ্ছে কেউ মেরেছে খুব,,,আরিয়া ছেলেটার এই অবস্থা দেখে বললো,,
“”” শুনছেন,,আপনি এভাবে কেন বসে আছেন?
ছেলেটা কিছু না বলে ভয়ে আরো গুটিয়ে নিচ্ছে নিজেকে,,,
“”” আরে আরে ভয় পায়েন না,,,আমি আপনাকে কিছু বলবো না আমাকে বলেন কি হয়ছে,,,হাতে এত চোট কিভাবে পেলেন?
ছেলেটা এবার আরিয়ার দিকে তাকালো,,,ছেলেটার মুখ দেখেই আরিয়ার বুকের ভেতর ধক করে উঠলো,,একদম বাচ্চা টাইপের ছেলেটা,,,গায়ের রং একদম ধবধবে সাদা,,,কান্না করেছে হয়তো মুখটা লাল হয়ে আছে গালে ৪ আঙ্গুল এর স্পষ্ট ছাপ,,,আরিয়ার মুখের দিকে ছেলেটা প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে,,,
“” ভয় পেয়ো না মে বি তুমি পাশের কলেজ টাই পড়ো তাই না?
ছেলেটা মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিলো হুম,,,
‘””আমি তোমার বড় তাই তুমি করেই বলছি রাগ করো না কেমন,,,
“”” হুম,,,
“” তোমার নাম কি?
“”” আয়ান,,(ভাঙ্গা কন্ঠে)
“”অনেক সুন্দর নাম তো তোমার,,,একটা কথা বলো তোমার এই অবস্থা কি করে হলো?
“”” আব ও ওই ওরা আম আমাকে মেরেছে,,
“” তুমি নির্ভয়ে বলো,,আমাকে বিশ্বাস করতে পারো,,,
আয়ান এবার করুন চোখে আরিয়ার দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বললো,,
“”সিনিয়ররা আমাকে দিয়ে বাজে কাজ করাতে চেয়েছিলো আমি করবো না বলাতে মেরেছে,,,
আরিয়ার এবার বেশ রাগ হলো,,শুধু শুধু ছেলেটা কে মেরেছে ওরা,,
“”” তোমার কাছে ফাস্ট এইড আছে?
“” না,,,
“” তো তুমি বাড়ি না গিয়ে এখানে কি করছো?
“” আসলে আমার ভাইয়া খুব রাগী,,,ছোট বেলা থেকে ভাইয়া আর ফুপি সবসময় আমাকে ভালোবেসেছে কখনো কষ্ট দেয়নি বকেওনি কখনো,,,আমাকে মেরেছে জানলে ভাইয়া ওই ছেলেগুলোকে অনেক মারবে,,তাই ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছি না,,,
আরিয়া ভাবছে কত ভালো একটা ছেলে ওকে ওই ছেলেগুলো মারছে তবুও ওদের মার খাওয়াবে না বলেই বাড়িতে যাচ্ছে না,,
“” তোমার চোখ মুখ অনেক লাল হয়ে আছে,,,তুমি আমার সাথে আসো,,,
“” না মানে কো কোথায় যাবো আপ আপনার সাথে?
“”” আরে ভয় পেয়ো না আমি তোমার বড় আপুর মতো,,,আসো আমার সাথে,,ভার্সিটির সাথে ফার্মেসি আছে ওখান থেকে তোমাকে স্প্রে দিয়ে ব্যান্ডেজ করিয়ে দেবো চলো,,,
আয়ান ভয় পেলেও ওর আরিয়া কে খারাপ মনে হয়নি তাই আরিয়ার সাথে যাওয়ার জন্য দাড়ালো,,,আরিয়া খেয়াল করলো আয়ান পায়েও ব্যাথা পেয়েছে,,,খুড়াচ্ছে একটু,,,ওর বুঝতে বাকি রইলো না খুব খারাপ ভাবে মার খাইছে আয়ান,,,আরিয়া আয়ানকে ধরলো,,,তারপী ধীরে ধীরে ফার্মেসিতে নিয়ে গেলো,,,তারপর আয়ানকে বসিয়ে কাটা জায়গা গুলো তে স্প্রে করে ব্যান্ডেজ করে দিলো,,,
“”” আয়ান তোমাকে তো হাতে মুখে ব্যান্ডেজ করে দিলাম বাড়ি গিয়ে আরো যেখানে লেগেছে সেখানে কিন্তু ব্যান্ডেজ করে নিবা,,,
“” আচ্ছা আপু,,
“” গুড বয়,,,আমার ভার্সিটিতে যাবে,,,চলো ঘুরে এসো,,
“” না আপু পরে একদিন যাবো আজ কলেজ যায়,,ক্লাস করতে হবে,,,
“”” এই শরীর নিয়ে কলেজ যেতে হবে না,,,গাড়ি আছে নাকি রিক্সা ডাকবো?
“”” গাড়ি আছে,,,তুমি যাও আমি চলে যাবো,,
“”সত্যি তো?
“” হুম সত্যি,,,
আয়ান আর আরিয়ার এর মধ্যেই ভাব জমে গেছে,,আয়ান তাই আরিয়ার কথা শুনে বাড়ি চলে গেলো,,আর ড্রাইভারকে নিষেধ করে দিলো আরুশ কে কিছু বলতে,,,আরিয়া ভার্সিটিতে ঢুকতেই দেখলো দিশা ক্যাম্পাসে ঘাসের উপরে একা বসে আছে,,,আরিয়া দিশার কাছে গিয়ে বসে পড়লো,,
“”” কি রে উগান্ডির ফকিন্নি এখানে কি করস,,
“” ঘাস খায়,,
“” খা খা বেশি করে খা,,ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্ছা,,,হাহাহা,,,
“” ওই ছেরি চুপ,,,এত লেইট করলি কেন?
“”” আরে আর বলিস না,,,
আরিয়া দিশাকে আয়ানের বিষয়ে সবটা বললো,,দিশা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,
“” এমন ভদ্র ছেলেও হয় রে,,
“”” হুম হয়,,
“” যাক গে ছাড়,,তুই আরেকটু আগে আসলে আমার আরুশকে দেখতে পাবি,,,(খুশিতে গদগদ হয়ে)
“” মানে?
“” আরুশ এসেছিলো আমার সাথে কথাও বললো,,,ইসস,,
আরিয়ার মাথায় কিছুই ঢুকলো না তাই আবারও জিজ্ঞেস করলো দিশাকে,,,
“” ওই উগান্ডার খচ্চর কেন এসেছিলো?আর তোর সাথে কেন কথা বললো?
“” আরে আরুশ নাকি কাউকে দেখতে আসছিলো,,আর আমার সাথে কথা বললো তোর কথাও জিজ্ঞেস করলো,,,ইসস তুই যদি আরেকটু আগে আসতি,,
“”” ওই চুপ ছেরি,,,তোর ওই উগান্ডার টিকটিকি কে দেখার কোনো শখ নাই আমার,,গুন্ডা,লুচু,তেলাপোকা,টিকটিকির লেজ😤
“” সব বুঝলাম লুচু কেন বললি বুঝলাম না,,
আরিয়া রাতের সবটা খুলে বললো,,,সব শুনে দিশা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে,,
“” সিরিয়াসলি আরু,,,তুই আরুশ আরফানকে তাড়িয়ে দিয়েছিস এক প্রকার,,,ওকে দেখার জন্য মেয়েরা পাগল হয়ে থাকে আর তুই,,,
“”” ওরে আমার কি রে,,,ওই গুন্ডাকে দেখার এত শখ কেন সবার যত্তসব,,
“” আচ্ছা আরু সাপোস তোর সাথে আরুশের রিলেশন বা বিয়ে হলে তুই কি করবি?
আরিয়া দিশার কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলে,,
“”” দিশু কি বললি তুই,,,
“” এই রে মামলা গরম ভাগ দিশু ভাগ,,,
বলেই দিশা এক দৌড়ে চলে গেলো,,,আরিয়া ফোসফোস করতে করতে বললো,,,
“”” দিশু তোকে শুধু সামনে পায় দেখ কি করি তোকে,,,জিবনে তো বিয়েই করবো না আর ওই গুন্ডাকে তো প্রশ্নই আসে না,,,
বলেই হাটা দিলো ক্লাসের দিকে,,,,
__________________
আরুশ আরিয়াকে দেখার জন্য ভার্সিটি গিয়েছিলো,,,কিন্তু দেখতে পায়নি,,,মন খারাপ করে অফিসে বসে আছে হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো,,,
“” হ্যালো,,,
“” বস আজকে আয়ান স্যারকে কিছু ছেলে খুব মেরেছে,,,স্যার কে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটতে দেখে খোজ নিয়ে জানলাম খুব মেরেছে কয়েকটা ছেলে,,,
মুহূর্তেই আরুশের রাগ আকাশ সমান হয়ে গেলো,,,রেগে দাতে দাত চেপে বললো,,,
“”” তোরা কি মরেছিলি,,,তোদের কেন রেখেছি হ্যা,,,তোদের একটাকেও ছাড়বো না যদি আমার ভাইয়ের গায়ে খুব বেশি আঘাত হয়,,,কার এতো বড় কলিজা,,আরুশের কলিজায় হাত দিছে,,হাত কেটে নিবো ওর আমি,,,
বলেই ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিলো,,,কিছু ফেলার আওয়াজে রাসেল আরুশের কেবিনে ছুটে এলো,,,আরুশের চোখের দিকে তাকিয়ে ভয়ে একটা ঢোক গিলে বললো,,
“”কি হয়েছে বস,,,কে কি করেছে?
“”চল,,
বলেই আরুশ হাটা দিলো,,,রাসেলকে কিছু বলার সুযোগ দেয়নি,,রাসেল বুঝলো আজ বড় কিছু হয়েছে তাই এতো রেগে গেছে আরুশ,,,আরুশ গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো,,,বেশিরভগ সময়ই আরুশ গাড়ি চালায়,,,আরুশের গাড়ি সোজা তার বাড়ির সামনে থামালো,,,দ্রুত পায়ে বাড়ির ভেতর ঢুকেই দেখে আয়ান আর ওর ফুপি লিভিং রুমে বসে আছে,,,আরুশ আয়ানের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বললো,,,
“” কারা মেরেছে তোকে?
আরুশের কথায় ভয় পেয়ে গেলো আয়ান,,,তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বললো,,,
“” কই ভাইয়া কে কাকে মেরেছে?
“” মিথ্যা বলছিস কাকে?তুই লুকানোর চেষ্টা করলেও তোর চোখ মুখ বলে দিচ্ছে কষ্ট হচ্ছে তোর,,,আচ্ছা তোকে কেউ মারেনি তাই তো?
আয়ান আমতা আমতা করে বললো,,
“””আব ন না,,
“” ঠিক আছে রুমে যা,,
আয়ান বুঝতে পারছে কেন তাকে রুমে যেতে বললো,,আরুশের কাছে নিশ্চয় কথাটা গিয়েছে,,ভয়ে আরেক ঢোক গিলে বললো,,
“”প পরে যাবো আমি,,
আরুশ আর কিছু না বলে আয়ানকে উঠিয়ে আস্তে করে নিয়ে এলো,,,আরুশের ফুপি অনেক ডেকেছে কি হয়েছে জানতে চেয়েছে কিন্তু আরুশ কিছুই বলেনি,,,আরুশ আয়ান কে নিয়ে চলে গেলো,,,
আরিয়া আর দিশা কলেজ শেষ করে বাড়ির দিকে যাচ্ছে,,দিশা রিক্সা নিয়ে চলে গেলো,,আর আরিয়া আবারও আপনমনে হেটে যাচ্ছিলো,,,মনোরম পরিবেশ খুবই ভালো লাগছিলো ওর,,হঠাৎ দেখলো এক জায়গায় অনেক লোক জড়ো হয়ে দাড়িয়ে আছে,,,আরিয়া ভ্রুকুচকে তাকিয়ে সেদিকে গেলো,,,সবার মাঝ দিয়েই যা দেখলো তাতে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো,,,
চলবে…..
(আসসালামু আলাইকুম,,ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,,,একজন পাঠিকা বললেন আমি নাকি গল্পটা কপি করছি,,একটা গল্পের পার্ট আরেকটা গল্পের সাথে একটু মিলে গেলেই আপনারা যদি এমন কথা বলেন তাহলে আর গল্প লিখে কি লাভ,,,কষ্ট করে লিখে এই কথা শুনতে হলে আর লিখবো না এই গল্প,,,ভালো থাকবেন❤️❤️❤️❤️)