#ভরসার_দুহাত
#শোভা_আক্তার(লাভলী)
#পর্ব_৭
রাশিদ খান নিজেকে ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করছে আয়নায়। আজ আবার দেখা হবে উমায়ের এর সাথে। পরিপাটি হওয়া জরুরি। আজ যাচ্ছে উমায়েরকে সারাজীবনের জন্য তুলে নিয়ে আসতে। না, সে উমায়েরকে বিয়ে করবে না। বেশ বাজে কিছু ভেবে রেখেছে। হঠাৎ দরজায় ঠকঠক করার শব্দ আসলো। রাশিদ খান ভেতরে আসতে বলল। দরজা ঠেলে ববি আসলো ভেতরে।
“ছোটো বস, গাড়ি তৈরী চলুন যাওয়া যাক।”
“হুম, যা যা বুঝিয়েছি সব মনে আছে?”
“জি”
“বুরাক কোথায়?”
“বুরাক বাহিরে অপেক্ষা করছে আমাদের।”
“চল যাওয়া যাক।”
রাশিদ খান আর ববি বের হলো। হলরুমে খালিদ খান হেলান দিয়ে সোফায় বসে আছে। রাশিদকে দেখে বাঁকা হাসি বলল-
“আজ আমার ভাইকে রাজা লাগছে।”
“আমি রাজার ভাই রাজা না।”
খালিদ খান উঠে এগিয়ে আসলো। রাশিদের গালে হাত রেখে বলল-
“আব্বাকে ওয়াদা করেছিলাম তোকে কখনো কষ্ট দিব না। তুই যা চাইবি তা এনে দিব।”
“আর আপনি যা বলেছেন তা করছেন।”
“তুই আমার ছেলে আগেই বলেছি।”
রাশিদ খান হাসলো। তখনই দরজার পাশ থেকে বুরাক বলে উঠলো-
“ছেলে আজ মহান কাজ করতে যাচ্ছে। ইচ্ছে মতো আদর করে দিন বস।”
দুই ভাই বুরাকের দিকে তাকাল। বুরাক পকেটে হাত দিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে রেখেছে। খালিদ খান হেসে বলল-
“তুই আয় তোকেও আদর করে দিই।”
“আমি আপনার গোলাম, ছেলের স্থানটা ছোটো বসেরই থাকুক।”
রাশিদ খান বলল-
“এইতো নিজের জায়গা আজ ও বুঝে নিয়েছে।”
“আমার জায়গা আমি চিনি। তোকে তোর জায়গা চেনাবো।”
শেষ কথাটা বুরাক একটু নিচু স্বরে বলল বলে কেও ঠিক মতো শুনতে পায় নি। ববি হাসিমুখে বলল-
“এমন ভাই যদি সবাই পেতো। দেখ না বুরাক, ছোটো ভাই মার্ডার করে একটা মেয়েকে তুলে নিয়ে আসতে যাচ্ছে আর বড়ো ভাই গর্বিত হয়ে তাকে আদর করে দিচ্ছে। বাহ ভাই বাহ আমি মুগ্ধ হলাম।”
বুরাক বাঁকা করে হাসলো। ববি তাদের পিন্চ করে বলেছে কথাটা তারা বুঝেনি। খালিদ খান হেসে বলল-
“কি করবো বল? আমি ওর কোন আশা অপূর্ণতা রাখতে চাই না।”
রাশিদ খান বলল-
“আমি কি শুধু নিজের জন্য যাচ্ছি? আমরা খুব শিগগিরই নিজের ব্যবসা শুরু করবো। দেশ বিদেশে আমাদের ব্যবসা থাকবে। বিদেশী পার্টনাররা আসলে তাদের জন্য অনেক আয়োজন করতে হয় জানিস না? উমায়ের বেডরুমে তাদের সেবা করবে দিন-রাত।”
বুরাক হাত মুঠো করে ফেলল এই কথা শুনে। ববির ইচ্ছে করছে নিজের কানে গরম তেল ঢেলে ফেলতে৷ এত বাজে ভাবনা কখনো তারা ভাবেনি। খালিদ খান আর রাশিদ খান হাসিঠাট্টা করতে ব্যস্ত। ববি বুরাকের দিকে তাকাল। বুরাক রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাশিদ খানের দিকে। বুরাক এখন আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে গেলে সমস্যা। ববি দ্রুত গিয়ে বুরাকের সামনে দাঁড়াল।
“নিজেকে শান্ত রাখ”
“যতটুকু ভেবেছিলাম তার থেকেও ভয়ংকর শাস্তি দিব আজ ওকে।”
“ঠিক আছে এখন চুপ থাক।”
বিদায় নিয়ে রাশিদ খান এগিয়ে আসলো। বুরাক তার দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে বলল- “শেষ দেখা দেখে নে নিজের ভাইকে। কারণ এটা ছিল তোদের শেষ দেখা।”
উমায়ের মাত্র গোসল করে বের হলো। আজ খুব গরম লাগছে। সামনেই পরীক্ষা, সে পড়াশোনা কিছুই করছে না ঠিক মতো। খাটে বসে পরীক্ষার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলো। তখনই দরজা ঠেলে উসমান আর উজ্জ্বল আসলো। উমায়ের তাকে দেখে হাসিমুখে হাত বাড়ালো। দুই ভাই দৌড়ে এসে উমায়েরকে জড়িয়ে ধরে। দুজন দুগালে চুমু দিয়ে খাটে বসলো।
“হোমওয়ার্ক করেছো তোমরা?”
দুজন একসাথে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াল। উমায়ের তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল-
“গুড বয়, ডিনার রেডি?”
উজ্জ্বল বলল-
“আম্মু বলল আরো এক ঘন্টা লাগবে। তুমি তো দুপুরে খাও নি ক্ষুধা পেয়েছে তাই না?”
উমায়ের ঠোঁট উল্টে মাথা নাড়াল।
“আমি তোমার জন্য আপেল নিয়ে আসি।”
“না লাগবে না, এখানে আসো। আর বলো আজ কি কি করেছো তোমরা।”
উসমান বলল-
“আপি আজ জানো কেক খাওয়া কম্পিটিশন করেছি আমরা।”
“তাই? কে জিতলো?”
“উজ্জ্বল জিতেছে, আমি পারি নি।”
“আহারে আমার বাচ্চা মন খারাপ করে না।”
উজ্জ্বল হেসে বলল-
“ও তো সবসময় হারে।”
“একদম না, এরপর পিজ্জা খাওয়া কম্পিটিশন করবো। দেখিস আমিই জিতবো।”
“দেখা যাবে দেখা যাবে।”
উমায়ের তার দুইকে টেনে আরো কাছে এনে বসিয়ে বলল-
“একদম ঝগড়া করে না। তোমরা না একসাথে জন্ম হয়েছো? তো ঝগড়া করা মানা।”
উসমান আর উজ্জ্বল মাথা নাড়াল। উসমান লজ্জামাখা হাসি দিয়ে বলল-
“আপি জানো, একটা মেয়ে আজ আমাদের গাল ধরে কিউট বয়’স বলেছে।”
উমায়ের দু’বার চোখের পলক ফেলে উজ্জ্বলের দিকে তাকাল। উজ্জ্বল দাত বের করে হেসে বলল-
“মেয়েটা খুব সুন্দর ছিলো।”
“এই তোরা এই বয়সে এইসব কি বলছিস? মেয়েটা কি তোদের ক্লাসের?”
উসমান বলল-
“না আপি, আমাদের সাথে একটা ইলিয়াস নামের ছেলে পড়ে তার বড়ো বোন। মেয়েটা অনেক সুইট।”
“মেয়েটা কি? আপু বল আপু।”
উজ্জ্বল বলল-
“না আমাদের একটা আপু আছে আর লাগবে না।”
উমায়ের উজ্জ্বলের গাল ধরে টেনে বলল-
“বেয়াদবের হাড্ডি, দড়ি দিয়ে বেঁধে স্টোররুমে ফেলে রাখবো বলে দিলাম।”
“আস্তে আপি ব্যাথা পাচ্ছি তো। ছেড়ে দাও প্লিজ।”
“একদম ভালো হয়েছে।”
উজ্জ্বল গাল ডলতে ডলতে মুখ লটকালো। উমায়ের হেসে উজ্জ্বলের গালে চুমু দিয়ে কান ধরলো। উজ্জ্বল হেসে উমায়ের এর পায়ে মাথা রেখে শুয়ে পরলো বিছানায়। তারটা দেখে উসমানও তাই করলো। দুজনের আবদার গল্প শোনাতে। উমায়ের তার দুই ভাইয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে গল্প শোনাতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ বাহির থেকে চিৎকার চেচামেচির শব্দ শোনা গেল। উসমান আর উজ্জ্বল লাফ দিয়ে উঠে বসলো। উমায়ের তারাতাড়ি খাট থেকে নেমে বারান্দায় গেল। নিচের দিকে উঁকি দিয়ে দেখে বডিগার্ডদের সাথে কারা যেন ঝগড়া করছে। এক সময় হাতাহাতি লেগে গেল। তখনই ফিরোজ দ্রুত হেটে গেল সেখানে। উমায়ের বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে ওখানে। হঠাৎ সে রাশিদ খানকে দেখতে পেল। উমায়ের এর বুকের বা পাশ মোচড় দিয়ে উঠলো। ভয় করছে তার রাশিদ খানকে দেখে। তার বাবা হঠাৎ বাড়ির ভেতরে এগিয়ে আসতে লাগলো। তার পেছনে রাশিদ খান এবং দু’টো ছেলে। তারা চেহারায় মাস্ক পড়ে আছে তাই চেহারা দেখতে পারলো না উমায়ের। উমায়ের দ্রুত হেটে ঘরে আসলো। এসে দেখে উসমান উজ্জ্বল নেই। তারা ঘর থেকে চলে গিয়েছে। উমায়ের ধপ করে খাটে বসলো। নিচে কি হচ্ছে দেখতে যাবে? তার তো ভয় করছে। আর যদি তারা তার বাবা মা আর ভাইদের ক্ষতি করে?
ফিরোজ আনোয়ার রাশিদ খানকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। নুসাইফা বেগম হলরুমেই ছিলো ফিরোজ আনোয়ার ইশারায় বললেন ঘরে চলে যেতে। নুসাইফা বেগম চুপচাপ ভেতরে চলে গেলেন। ফিরোজ আনোয়ার রাশিদ খান আর তার সাথের দুজনকে বসতে বললেন। রাশিদ খান শুধু বসলো। বুরাক আর ববি দাঁড়িয়ে আছে সোফার পাশে। ফিরোজ আনোয়ার তাদের দুজনকে ভালো মতো দেখে বলল-
“তো তুমিই মানুষ পাঠিয়েছিলে আমাদের মারার জন্য?”
রাশিদ খান হাসলো। ফিরোজ আনোয়ার লম্বা নিশ্বাস ফেলে বলল-
“ভদ্রতার খাতিরে আমার ঘরে তোমাদের মতো অমানুষদের জায়গা দিয়েছি। কি কথা বলার আছে বলো।”
“ফিরোজ আনোয়ার, বলার মতো অনেক কিছু আছে। কিন্তু কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারছি না।”
“তোমাদের মতো গুন্ডা কিছু বলার আগে হকচকিয়ে যায় প্রথমবার দেখলাম।”
“গুন্ডা হওয়ার আগে আমি একজন মানুষ।”
“ঠিক, তুমিও একজন মানুষ। রক্ত মাংসের তৈরী মানুষ। তোমাকে চড় মারলে তুমি ব্যাথা নিশ্চয়ই পাবে।”
“হ্যাঁ ঠিক, কিন্তু আমাকে চড় মারার সাহস কার মধ্যে আছে?”
“এত গর্ব করো না। পরে দেখবে নিজের চ্যালাপ্যালাদের হাতেই একদিন মরে পড়ে আছো। আর তোমার লাশ তোলার মতো কেও নেই।”
ববি বুরাকের কানের কাছে ফিসফিস করে বলল-
“উমায়ের এর বাবা রাশিদ খানের ভবিষ্যত কিভাবে জানলো?”
“চুপচাপ দাঁড়া”
রাশিদ খান হো হো করে হেসে উঠলো। ফিরোজ আনোয়ার পায়ের উপর পা তুলে হেলান দিয়ে বসে বলল-
“তারাতাড়ি বলো যা বলার। রাত ৯ টার পর আমি আমার বাড়িতে কাওকে আসতে দেই না। এখন ১১ টা বাজতে চলেছে।”
“রিলাক্স ফিরোজ আনোয়ার রিলাক্স। তুমি জানো আমি আজ কেন এসেছি।”
“না আমি জানি না।”
“আচ্ছা বলে না করে দেখাই।”
ফিরোজ আনোয়ার ভ্রু কুঁচকালো। রাশিদ খান পায়ের উপর পা তুলে জিন্স হালকা তুলে জুতার ভেতর থেকে রিভলবার বের করে ফিরোজ আনোয়ারের দিকে ধরলো। ফিরোজ আনোয়ার চমকে দাঁড়িয়ে গেল। বডিগার্ডরা তাদের চেক করেছিল কিন্তু কিছু পায় নি। বুরাক আর ববি একে অপরের দিকে তাকিয়ে তারাও পা থেকে রিভলবার বের করে ফিরোজ আনোয়ারের দিকে ধরে দাঁড়াল। ফিরোজ আনোয়ার কিছু বলার আগেই ববি বলল-
“একদম চিৎকার করবেন না ফিরোজ আনোয়ার। নাহলে আপনার পুরো পরিবারকে মৃত্যুর ঘুম পাড়িয়ে দিব।”
রাশিদ খান বিরক্ত হয়ে বলল-
“এত ইজ্জত দেয়ার কি আছে?”
“এটাই প্রথম আর এটাই শেষ তাই ভাবলাম একটু সম্মান তো দেয়াই যায়।”
“তুই আজ প্রমাণ করে দিলি তুই আমার চ্যালা।”
রাশিদ খান আবার ফিরোজ আনোয়ারের দিকে তাকাল। সে তার রিভলবার নিচু করে বলল-
“তোরা এনাকে গানপয়েন্টে রাখ। আমি দেখি গিয়ে আমার প্রিয়তমা কোথায়।”
ববি বুরাক মাথা নাড়াল। রাশিদ খান হাঁটা ধরতেই ফিরোজ আনোয়ার দ্রুত এসে রাশিদ খানের কলার চেপে ধরে বলল-
“তোর জান টেনে বের করে ফেলবো আমার মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকালে।”
“তোরা দাঁড়িয়ে কি দেখছিল। গুলি করে ক্ষতবিক্ষত করে ফেল একে।”
বলেই রাশিদ খান সজোরে ধাক্কা দিলো ফিরোজ আনোয়ারকে। ফিরোজ আনোয়ার গিয়ে সোফার উপর পরলো। ববি বলল-
“ছোটো বস আপনি যান। এনার ব্যবস্থা আমরা করছি।”
“গুড জব”
রাশিদ খান হাসিমুখে এগিয়ে গেল। ফিরোজ আনোয়ার উঠতে নিলো তার আগেই ববি আর বুরাক কাছে এসে রিভলবার ধরে রাখলো ফিরোজ আনোয়ারের মাথায়। রাশিদ খান একবার পেছনে ফিরে পরিস্থিতি দেখে আবার এগিয়ে যেতে লাগলো। ফিরোজ আনোয়ার রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামনে থাকা দুই ব্যক্তির দিকে। রাশিদ খান এক এক করে সব ঘর চেক করছে। হঠাৎ সামনে থাকা একটা গোলাপি রং এর দরজা দেখতে পেল। তার মন বলছে এই ঘর উমায়ের এর। রাশিদ খান রিভলবার পকেটে রেখে গিয়ে দরজা খুলল। হঠাৎ দরজা খোলায় উমায়ের চমকে দরজার দিকে তাকাল। উমায়েরকে দেখে রাশিদ খান বিশ্ব জয় করার মতো হাসি দিলো। উমায়ের দাঁড়িয়ে দু কদম পিছিয়ে গেল। রাশিদ খান দরজা দিয়ে প্রবেশ করে বলল-
“হাই বেবি গার্ল, ভেজা চুলে তোমাকে আরো বেশী আর্কষণী দেখায়। এখন ভাবছি তোমাকে বাসায় নিয়ে যাব না-কি এখানেই কাজ সেরে ফেলবো।”
উমায়ের এর মাথা কাজ করছে না। ঝিমঝিম করছে কান। রাশিদ খান উমায়ের এর দিকে এগিয়ে যেতেই উমায়ের খাটে উঠে বলল-
“দূর হও, একদম কাছে আসবে না।”
“আরে ভয় পাচ্ছো কেন? আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না।”
“আব..আব্বু আব্বউউউউ”
উমায়ের চিৎকার চেচামেচি করছে। রাশিদ খান হেসে বলল-
“কেও আসবে না, অকারণে চিৎকার করছো।”
“আমার আব্বু কোথায়?”
“তোমার আব্বু…”
রাশিদ খান কথা শেষ করার আগেই গুলি করার শব্দ আসলো। উমায়ের অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার হাত পা কাঁপছে। তখনই আবারো গুলির শব্দ আসলো। পর পর ৫ বার গুলি করার শব্দ আসলো। উমায়ের এর বা অবশ হয়ে আসলো। ধপ করে বসে পরলো বিছানায়। রাশিদ খান গিয়ে উমায়ের এর পাশে বসে বলল-
“তোমার বাবা আর নেই উমায়ের। কিন্তু তুমি চিন্তা করো না। আমি আছি তো।”
বলেই রাশিদ খান উমায়ের এর কাঁধে হাত রাখলো। উমায়ের রাগে সজোড়ে থাপ্পড় মেরে দিলো রাশিদ খানকে। রাশিদ খান রাগী দৃষ্টিতে উমায়ের এর দিকে তাকাল। উমায়েরও রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাশিদ খান হঠাৎ উমায়ের এর চুল ধরে বলল-
“এত সাহস তোর? তোর মতো মেয়েকে আমি প্রতিদিন বিছানা নিয়ে ঘুমাতে পারি। আর তুই না-কি আমার গায়ে হাত দিস।”
রাশিদ খান উমায়েরকে টেনে ঘর থেকে বের করলো। উমায়ের চিৎকার করছে কিন্তু কেও এগিয়ে আসছে না। হলরুমে ববি দাঁড়িয়ে আছে। রাশিদ খান আসতেই ববি বলল-
“শাহরিয়ার উমায়ের এর মা আর ভাইদের মারতে গিয়েছে।”
উমায়ের অবাক হয়ে গেল। রাশিদ খান চারপাশে চোখ বুলিয়ে বলল-
“ফিরোজ আনোয়ার কোথায়?”
“ছোটো বস আপনি সেটার চিন্তা না করে ওকে নিয়ে বের হোন। বাহিরে ড্রাইভার অপেক্ষা করছে। গুলির শব্দ হয়েছে পুলিশ এসে পরবে নাহলে।”
“তোরা সাবধানে ফিরে আসিস।”
“হ্যাঁ আসছি আমরা আপনি যান।”
রাশিদ খান উমায়েরকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো বাড়ি থেকে। বাহিরে গিয়ে দেখে সব বডিগার্ডরা মরে পড়ে আছে। উমায়ের সবাইকে দেখে অবাকের উপর অবাক হচ্ছে। রাশিদ খান গিয়ে দেখে গাড়ির ড্রাইভারের গুলি লেগেছে। সেও মারা গিয়েছে। রাশিদ খান গাড়ির সামনের দরজা খুলে উমায়েরকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ফেলে ঘুরে গিয়ে ড্রাইভারকে টেনে বের করে মাটিতে ফেলে দিলো। নিজের ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো। বাম হাত দিয়ে উমায়েরকে ধরে ডান হাত দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। উমায়ের অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু নিজেকে ছাড়াতে পারছে না। রাস্তা নিরব, চারপাশে অন্ধকার। মাঝখানে চলছে রাশিদ খানের গাড়ি। যত দ্রুত সম্ভব বাসায় যেতে হবে। হঠাৎ পেছন থেকে ফুল স্পিডে একটা বাইক আসলো। রাশিদ খানের গাড়িকে পেছনে ফেলে বাইকটা রোডের মাঝে গিয়ে ব্রেক করলো। এমন কান্ড দেখে রাশিদ খান সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করলো। বাইকে বসা ছেলেটা হেলমেট পড়ে আছে বলে সে চিনতে পারছে না। উমায়ের ভালো মতো ছেলেটাকে দেখলো। ছেলেটার জামা দেখে তার চোখ গড়িয়ে পানি পরলো। কিন্তু ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটে উঠেছে।
চলবে…..