#সুপ্ত_প্রেমাসুখ
#ইলোরা_জাহান_ঊর্মি
#পর্বঃ৫
রাতে খাবার টেবিলে বসে এরেনের মনের অজান্তেই তার দু’চোখ শুধু একটা আকাঙ্ক্ষিত মুখের খোঁজ করেছে। কিন্তু সে অপেক্ষা করেও নিরাশ হয়েছে। সকাল সকাল এরেনকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মিজানুর রহমান তাড়া দিয়ে বললেন,“একটু তাড়াতাড়িই চলো বাবা। আমি তো আর এক কাজে বসে থাকতে পারব না। ওখান থেকে এসে আমার নিজেরও তো কাজ আছে। তাড়াতাড়ি যাব, তাড়াতাড়ি ফিরব। আমি খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য। তাড়াতাড়ি এসো। খাওয়া শেষ করেই বেরিয়ে পড়ব।”
অনিচ্ছা সত্ত্বেও এরেন কম্বলের ওমের মায়া ত্যাগ করে তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হলো। খাবার টেবিলে বসতেই গতরাতের মতো আজও সে নিরাশ হলো। আশেপাশে কোথাও ইলোরার ছায়াও দেখা গেল না। খাবার শেষ করেই মিজানুর রহমান তাড়া দিলেন। এরেন নিজের ব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বেরোতে বেরোতে ভাবল, যাওয়ার আগে কি মেয়েটার সাথে তার একবারের জন্যও দেখা হবে না? মাত্র এক রাতের ব্যবধানে অপরিচিত একটা মেয়ে তার স্ত্রী হয়ে গেল। আর এখন সে চলে যাওয়ার পর মেয়েটার সাথে হয়তো আর কোনদিনও দেখা হবে না। ধীরে ধীরে হয়তো তারা ভুলেও যাবে এই হঠাৎ জুড়ে যাওয়া সম্পর্কটা। পরক্ষণেই এরেন নিজের মনকে শাসিয়ে বুঝাল, এই হঠাৎ জুড়ে যাওয়া সম্পর্কটা শুধুই একটা এক্সিডেন্ট। এটা নিয়ে ভাবার কোনো মানে হয় না। যত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া যায় ততই ভালো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে মিজানুর রহমানের সাথে বাড়ির বাইরে পা রাখল এরেন। পেছনে পড়ে রইল তার হঠাৎ জুড়ে যাওয়া এক ভিত্তিহীন সম্পর্ক।
•
ভরদুপুরে সাকিব এসে উপস্থিত হলো মামার বাড়ি। তাকে দেখে আলিয়া বেগম আর অনন্যা অবাক হলেন। হুট করে বোন এসে উপস্থিত হলো। আবার এখন ভাইও হুট করে উপস্থিত। ইলোরা অবশ্য একটুও অবাক হলো না। কারণ তার ভাই যে তাকে নিতে চলে আসবে তা সে ভালোভাবেই জানত। সাকিব বাড়িতে ঢুকেই ইলোরা আর ডালিয়াকে ডেকে বলল,“নিজেদের ব্যাগ গুছিয়ে নে। আমরা বিকেলেই রওনা দেবো।”
আলিয়া বেগম বললেন,“মাত্র তো এলি। কাল সকালে যাস। আজ যাওয়া চলবে না।”
সাকিব বলল,“না মামি। সামনেই আমার পরীক্ষা। চাইলেও এখন থাকা সম্ভব না।”
অনন্যা ভেংচি কেটে বলল,“এক রাতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে?”
সাকিব ভ্রু কুঁচকে বলল,“তুই আবার মহাভারত শুদ্ধ অশুদ্ধের কী বুঝিস? লেখাপড়ার নাম শুনলেই তো দশটা লাফ দিয়ে উঠিস।”
অনন্যা তেজ দেখিয়ে বলল,“একদম অপমান করবি না সাকিব। হতে পারে আমি তোর মতো এত বেশি মনোযোগী না। কিন্তু দশটা লাফ কবে দিলাম? ভদ্র শয়তান একটা।”
সাকিব তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,“দেখেছিস তোর শিক্ষার অবস্থা? বড়ো ভাইকে সম্মান পর্যন্ত দিতে জানিস না।”
অনন্যা মুখ বাঁকিয়ে বলল,“ওরে আমার বড়ো ভাই রে। মাত্র এক বছরের বড়ো তুই আমার থেকে। এক বছর তেমন বেশিও না।”
সাকিব আবার বাঁকা হেসে বলল,“তুই তো আসলেই অশিক্ষিত। এক বছরে কত দিন জানিস? তিনশো পঁয়ষট্টি দিন। কম হয় কীভাবে? গাধি!”
অনন্যা এবার আরও তেতে উঠল। আলিয়া বেগম ধমকে উঠে বললেন,“অনু, দিন দিন ঝগড়াটে হয়ে যাচ্ছিস। সাকিব তোর বড়ো ভাই। একদিনের হোক বা এক বছরের, বড়ো তো। একদম ঝগড়া করবি না বলে দিলাম।”
মায়ের বকুনি শুনে অনন্যা মুখ গোমড়া করে বসে রইল। সাকিব ডালিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল,“অ্যাডমিশনের পর কিন্তু চাইলেই দু’দিন পর পর এখানে আসা যাবে না। শুধু পড়াশোনায় ফোকাস করতে হবে। বুঝলি?”
ডালিয়া মাথা নেড়ে বলল,“হুম। ঠিক আছে ভাই।”
সাকিব ইলোরা আর ডালিয়াকে পড়াশোনা নিয়ে এটা ওটা বুঝাচ্ছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওরা মুখের ভাব এমন করে রেখেছে যেন ওরা খুব মনোযোগ দিয়ে ভাইয়ের কথাগুলো শুনছে। আসলে ওদের এসব শোনার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে বা আগ্রহ কোনোটাই নেই। সাকিব কিছু বুঝাচ্ছে মানে জোর করে হলেও আগ্রহী দৃষ্টি নিয়ে সেসব কথা শুনতে হবে। সবটাই সাকিবকে ভয় পাবার কারণে। এমনিতে সাকিব সবসময় সবার সাথে রাগ করে না। তবু সবাই ওর রাগকে ভয় পায়। কিন্তু তার থেকে বেশি সবাই তাকে ভালোবাসে।
•
সময় তার আপন গতিতে চলতে চলতে পেরিয়ে গেছে এক মাস। এই এক মাসে ইলোরা-এরেন দুজন দুজনের নামটাও ভুলে গেছে। এক মাস আগে এরেন মিজানুর রহমানের সাথে আবার তার বাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে শুনেছিল তারা পৌঁছনোর কয়েক মিনিট আগেই সাকিবের সাথে ইলোরা চলে গেছে। মিজানুর রহমানকে নিয়ে তার খালার জমির সব সমস্যা সমাধান করে সেও ঢাকা ফিরে যায়। তারপর কয়েকদিন ইলোরা আর এরেনের বারবার ঐ হঠাৎ বিয়ের ব্যাপারটা মাথায় ঘুরপাক খায়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই ভাবনা আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায়। মাঝে মাঝে দুজনেরই মনে পড়ে তারা বিবাহিত। একই শহরে দুজন বাস করছে অথচ সম্পর্ক নামক জিনিসটা তাদের বাঁধতে পারছে না। কখনও হঠাৎ যখন দুজন দুজনের কথা মনে পড়ে তখন হয় হাসি পায় নয় মুড সুইং হয়। আচ্ছা, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা তাদের জীবনে কেন ঘটল? সবকিছুর পেছনেই তো নির্দিষ্ট কোনো কারণ থাকে। তাহলে তাদের এই হঠাৎ জুড়ে যাওয়া সম্পর্কের কারণ কী? ক্ষণিকের জন্য এমন একটা সম্পর্ক তৈরি না হলে কী হতো? এর তো কোনো পরিণতি নেই। তাহলে সারাজীবন কি দুজনকেই এই ভিত্তিহীন সম্পর্কের বোঝা মাথায় নিয়ে থাকতে হবে? এর কি কোনো সমাধান নেই? এরকম হাজারো প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেয়ে একসময় আবার মিলিয়ে যায়। আজকাল আর ওসব কথা খুব একটা মনেও পড়ে না কারো। দুজনই নিজেদের মতো দিন কাটিয়ে দিচ্ছে।
আজ ভার্সিটির প্রথম ক্লাস। ডালিয়া কখন থেকে ইলোরাকে তাড়া দিয়ে চলেছে। ইলোরা বিরক্ত হয়ে বলল,“এত তাড়া কিসের তোর? মনে হচ্ছে ভার্সিটিতে ঢুকেই তোর বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হবে।”
ডালিয়া মুখ ফুলিয়ে বলল,“শুধু শুধু ফালতু বকছিস কেন? একটু তাড়াতাড়ি গিয়ে তোর ফ্রেন্ডদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিবি। আমি তো কাউকে চিনি না।”
“আশ্চর্য! আজই সবাইকে চিনে ফেলতে হবে এমন তো কোনো ব্যাপার না। এখন থেকে তো প্রতিদিনই ভার্সিটিতে যাবি। আস্তে আস্তে সবার সাথেই পরিচয় হয়ে যাবে।”
“আরে তা ঠিক আছে। তবে সবার সাথে মানিয়ে নেয়ার একটা ব্যাপার আছে তো।”
“এটা তেমন কোনো ব্যাপার না। দেখবি প্রথম দিনেই আমার ফ্রেন্ডদের সাথে তোর ভাব জমে গেছে।”
ওদের কথার মাঝেই মালিহা বেগম উচ্চস্বরে ডেকে উঠলেন খাওয়ার জন্য। ইলোরা গলা উঁচিয়ে বলল,“আসছি আম্মু।”
ডালিয়াকে নিয়ে খাবার টেবিলে বসতেই সাকিব প্রশ্ন করল,“পৌঁছে দিতে হবে?”
ইলোরা ছোট করে জবাব দিলো,“হুঁ।”
সাজিদ হোসেন বলে উঠলেন,“মেয়ে আমার বড়ো হয়েছে ঠিকই, অথচ আজ পর্যন্ত একা পথ চলতে শিখল না। যেখানেই যাবে সেখানেই হয় বাপকে সাথে যেতে হবে আর নয়তো ভাইকে। আচ্ছা অমি? কয়েক মাস আগে যে রেগেমেগে রাতদুপুরে একা কিশোরগঞ্জ রওনা দিয়েছিলি। সেদিন ভয় করে নি?”
মালিহা বেগম বললেন,“সে তো সাকিবের বন্ধু সাথে ছিল বলে। নয়তো তোমার এই মেয়ে আবার একা কিশোরগঞ্জ পৌঁছে যেতে পারতো!”
ডালিয়া হেসে মালিহা বেগমের কথায় সায় দিয়ে বলল,“কথাটা একদম ঠিক বলেছো ফুপি।”
সাকিবের বন্ধু কথাটা কানে আসতেই ইলোরার গলায় খাবার আটকে গেল। আনমনে কিছুক্ষণ খাবার নেড়েচেড়ে হঠাৎ টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ল। মিথিলা ভ্রুকুটি করে বলল,“একি আপি! তোমার খাবার তো শেষ হয়নি। উঠলে কেন?”
ইলোরা নিজের রুমের দিকে পা বাড়িয়ে বলল,“আর খেতে ইচ্ছে করছে না রে মিথি। এই ডালিয়া, তাড়াতাড়ি খাবার শেষ কর।”
ইলোরা আর ডালিয়াকে ভার্সিটিতে পৌঁছে দিয়ে সাকিব কোথাও একটা চলে গেল। ক্যাম্পাসেই সব ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা হয়ে গেল তাদের। অনেক দিন পর দেখা হওয়ায় সবার মাঝে সেকি উচ্ছ্বাস! ইলোরা একে একে সবার সাথে ডালিয়ার পরিচয় করিয়ে দিলো। ইলোরা হঠাৎ ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল,“তাহসিন কোথায়?”
অরিশা ক্যাম্পাসের একদিকে চোখ দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে বলল,“ঐতো।”
ইলোরা সেদিকে তাকিয়ে বলল,“ও একা ওখানে কী করছে?”
অন্তর হেসে বলল,“রাগ দমন করছে।”
ইলোরা আবার প্রশ্ন করল,“কেন? কী হয়েছে?”
টুম্পা নিজের চুল ঠিক করতে করতে সহজভাবে বলল,“সবসময় যা হয়।”
ইলোরা হতাশ চোখে নাদিয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে বলল,“আবার?”
নাদিয়া কাঁদো কাঁদো মুখে উপরে নিচে মাথা দোলালো। মুনা বিরক্তি নিয়ে বলল,“ওদের এই এক কাহিনি দেখতে দেখতে জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেছে বইন। দয়া করে এবার কেউ নতুন কোনো কাহিনি দেখা। এক কাহিনি আর ভালো লাগে না।”
নাদিয়া কিঞ্চিৎ রেগে গিয়ে বলল,“এক কাহিনি মানে কী মুনা? তুই কি আমাকে খোঁচা মারছিস?”
অন্তর বলে উঠল,“মারলে মারছে। তো? গত এক বছর ধইরা দেখছি তুই ওই পোলার উপর দিনে কয়েক দফা ক্রাশ খাস, আর প্রপোজ করস। আর ও রেগেমেগে বোম হয়ে বসে থাকে। ডিসগাস্টিং!”
ইলোরা বলল,“আচ্ছা থাম তোরা। এখনই তো ক্লাস শুরু হবে। চল ওর রাগ কমাই আগে।”
ইলোরার কথায় সম্মতি জানিয়ে সবাই ক্যাম্পাসের অন্যদিকে হাঁটা দিলো। তাহসিনের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই সে একরাশ বিরক্তি নিয়ে তাকাল। ইলোরা হাসিমুখে বলল,“এখনই ক্লাস শুরু হবে আর তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস? চল তাড়াতাড়ি।”
তাহসিন মুখ গোমড়া করে বলল,“তোরা যা।”
অরিশা ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল,“তোরা যা মানে? তুই ক্লাস করবি না?”
“না।”
তাহসিনের সোজাসাপ্টা উত্তর শুনে নাদিয়া উত্তেজিত কন্ঠে বলল,“ভার্সিটিতে আজ আমাদের প্রথম ক্লাস। আর তুই বলছিস ক্লাস করবি না? প্লিজ চল। এমন করিস না। আচ্ছা আমি সরি।”
তাহসিন ধমকে উঠে বলল,“তোর এই স্বস্তা সরি বস্তায় ভরে রাখ। ভাগ এখান থেকে।”
নাদিয়া চুপ হয়ে গেল। অন্তর এবার রাগ দেখিয়ে বলল,“গেলে যাবি না গেলে নাই। ক্যাম্পাসে বসে দিনের আকাশে তারা গুনে সময় কাটা। এই তোরা কি যাবি?”
মুনা অনুরোধের সুরে বলল,“তাহসিন চল না। প্রথম দিনেই এমন রাগারাগী ভালো লাগছে না।”
পাশ থেকে ডালিয়া ঠোঁট উল্টে বলল,“ক্লাস শুরু হয়ে যাবে তো।”
অপরিচিত কন্ঠস্বর শুনে তাহসিন ভ্রু কুঁচকে তাকাল। পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেই সে খানিক থমকাল। ডালিয়ার পা থেকে মাথা পর্যন্ত নিরীক্ষণ করে প্রশ্ন করল,“এ আবার কে?”
তাহসিনের চাহনিতে ডালিয়া কিছুটা ইতস্তত বোধ করল। ইলোরা মুচকি হেসে জবাব দিলো,“ও ডালিয়া। আমার কাজিন। এখন থেকে আমাদের বাসায় থেকেই লেখাপড়া করবে।”
তাহসিন স্বাভাবিকভাবেই বলল,“ক্লাসে চল।”
তাহসিনের কথায় সবাই ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে রইল। অর্থাৎ সবাই কিছুটা অবাক হয়েছে। তাহসিন সবার চাহনি দেখে খানিক অপ্রস্তুত হয়ে বলল,“এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছিস কেন সবগুলো? আজব!”
টুম্পা চোখ বড়ো বড়ো করে একসাথে কয়েকবার পলক ফেলে বলল,“মাত্র কয়েক মুহূর্তে তোর রাগ কমে গেল? হাউ ইজ ইট পসিবল?”
নাদিয়া সন্দিহান চোখে একবার তাহসিনের দিকে তো আরেকবার ডালিয়ার দিকে তাকাল। কিন্তু কিছু বলল না। অরিশা বিস্ময় নিয়ে বলল,“তাই তো। কীভাবে সম্ভব?”
তাহসিন বিরক্ত হয়ে খানিক তেজ দেখিয়ে বলল,“তোরা কি যাবি?”
ইলোরা তাড়া দেখিয়ে বলল,“হ্যাঁ। চল চল।”
কেউ আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ ক্লাসের দিকে পা বাড়াল। অন্তর হঠাৎ টুম্পার পাশ ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে চাপা গলায় বলল,“টুম্পি শোন।”
টুম্পা ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল,“কী?”
“তুই আমার পাশে বসবি।”
অন্তরের অনুরোধ শুনে টুম্পা ভেংচি কেটে বলল,“আর কোনো কাজ নেই তো আমার। যেচে যাব বিরক্ত হতে।”
অন্তর আহত চোখে তাকিয়ে বলল,“আমি তো তোকে বিরক্ত করার মতো কোনো কথাই বলি না। তুই তো আমার স্বাভাবিক কথা শুনলেও বিরক্ত হস। এতে আমার দোষ কোথায়?”
টুম্পা কড়া গলায় বলল,“শোন অন্তু। তোকে আশেপাশে দেখলেই আমার কেন জানি বিরক্ত লাগে। এক কথা কতবার বলব?”
অন্তর বিধ্বস্ত দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ টুম্পার দিকে তাকিয়ে থেকে দ্রুত পা চালিয়ে সবার আগে ক্লাসে চলে গেল। ওর গতিবিধি দেখে সবাই সন্দিহান দৃষ্টিতে টুম্পার দিকে তাকাল। টুম্পা বিরক্তি নিয়ে বলল,“দয়া করে এখন আবার কেউ আমাকে নিয়ে পড়িস না।”
তাহসিন মুচকি হেসে বলল,“এই ব্যাপারটাও আমাদের কাছে অনেক পুরনো। এটা নিয়ে পড়ে থেকে আর কী হবে?”
তাহসিনের কথায় টুম্পা জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে নিজের বিরক্তি দমন করার চেষ্টা করল। কিন্তু সে নিজেও জানে তার এই বিরক্তি একটুও কমবে না। এটা তো তার নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলবে……….……………..🌸