ধর্মের দেয়াল পর্ব:৪

0
1530

#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ৪

– নাফিসার কাছে অপমানিত হওয়ার পর
বেশ দমে গেছে আবির। মনে মনে
ভাবল এই মেয়েকে সহজে বসে আনার
মত মেয়ে না। তারপরও হাল ছাড়ছিনা,
সহজে কাজ না হলে অন্য ব্যবস্থা।
আবির চ্যাটার্জি কে এভোইড করা।
হারে হারে টের পাইয়ে দিব আমি
কি জিনিস!
-আবির হারতে জানেনা। তারপর ফোন
হাতে নিয়ে কাকে যেন ফোন দিয়ে
বলল, মেয়েটার ফোন নাম্বার সহ
ডিটেল’স চাই।
.
.
.
রাফী বিথীর কথার দিকে কান না
দিয়ে রুমে চলে গেল আর বিথীকে বলল
টাওয়াল নিয়ে আয় কুইক……..
-চেয়ারে আধা বসা রেখে
নাফিসাকে রাফী ধরে আছে।
-বিথী টাওয়াল নিয়ে আসলে ওকে
বলে আগে চুলগুলো মুছে দে…..
নাফিসার চুলগুলো অনেক বড় ছিল সেই
চুল বয়ে পানি টুপ টুপ করে পড়েই
যাচ্ছিল।
– জাহানারা ছেলের কাছে এসে চুপ
করে দাড়িয়ে আছে তারও
চোখেমুখেও ভয়ের ছাপ স্পষ্ট বুঝা
যাচ্ছে।
.
.
– মা! তুমি কি এখনও দাড়িয়ে থাকবেই?
যাও জলদি ওর ড্রেস চেঞ্জ করে দাও।
– আমি অন্য রুমে যাচ্ছি বলে রাফী
চলে যাচ্ছিল…..
– তোর পায়ে কি হইছে বাবা!
– রাফী পিছনে ফিরে রাগের
দৃষ্টিতে হাতে ইশারা করে শুধু দেখাল
আগে ওকে চেঞ্জ করাও।
.
.
.
– বাসায় চিল্লানোর শব্দ রাফীর
বাবা সাজ্জাদ হোসেন এর ঘুম ভেঙ্গে
যায় এবং সে উঠে পরে।
রুম থেকে বেরিয়ে আসলো ডাইনিং
রুমে আর বুঝলো শব্দ নাফিসার রুম
থেকেই আসছিল।
.
.
– ১পা ২পা করে নাফিসার রুমের
দিকে এগিয়ে গেল এবং দেখলো
বিথী কাদতে কাদতে তার মাকে
বলছে, আপনি অনেক করছেন এখন যান
আপনি এখান থেকে। আপার জন্য আমরা
আছি। আপনি থাকলে আপার আরও ক্ষতি
হবে আর গিয়ে আনন্দ করুন। আপনারতো
খুশির রাত আজ।
.
.
– সাজ্জাদ হোসেন বিথীকে ধমক
দিয়ে বলল কি হইছে বলে বিছানায়
দেখে নাফিসা সুয়ে আছে আর মুখ
দিয়ে ফেনা+রক্ত অল্প অল্প বের হচ্ছে।
সেগুলো মোছায় ব্যাস্ত বিথী।
– সাজ্জাদ বলল ওর কি হয়েছে বলে
জলদি নাফিসার কাছে এসে বসে পড়ল।
-বিথী শুধু বলল জানিনা বাবা আপার
কি হইছে।
.
.
– ও ঘর থেকে রাফী জলদি চেঞ্জ করে
বলল সর একটু। বিথী সরে গিয়ে বসল।
.
.
.
-রাফী ভেবে পাচ্ছেনা এখন তার
আসলে কি করাটা উচিত!
.
.
– বিথীকে বলল ওর বুকে একটু পাম্প দে।
আর ও নাফিসার চোখে মুখে পানি
ছিটাচ্ছিল যাতে ওর ঙ্গান জলদি
ফিরে আসে।
– যদিও জানে এগুলো করে মনে হয়না ওর
ঙ্গান ফেরানো যাবে। তবুও বৃথা
চেষ্টা করছে।
আর এত্ত রাতে ডাক্তার পাওয়াও সম্ভব
নয়।
.
.
.
– রাফীর হঠাৎ মনে পড়ল ‘রাফসান’
ভাইয়ের কথা। রাফসান একজন বড়
ডাক্তার আর ওর ফুফুর ১ মাএ ছেলে
সাথে রাফীর বড় বোনের স্বামীও।
-রাফী মার দিকে তাকিয় বলল, বড়
ফুফুকে কল দাও জলদি। আর রাফসান
ভাইয়ার সাথে লাইন করে দাও জলদি।
এখন সেই ভরষা।
.
.
.
.
– রাফসান আহমেদ একজন ইয়াং ও
নামকরা ডাক্তার। এই বয়সে সে বেশ
সুনাম অর্জন করেছে। দেশের বাহিরে
থেকে পড়ালেখা তার।
-তার স্ত্রী ‘সুমি’! যে কিনা ৯ মাসের
প্রেগন্যান্ট।
-রাফসান ব্যালকুনিতে বসে সিগারেট
টানছে আর দুর থেকে সুমিকে লক্ষ্য
করছে। সিগারেটে সুমির প্রবলেম হবে
বলে সে ব্যালকুনিতে।
.
.
.
– রাফসানের মা ‘রেহেনা বেগম’
ঘুমিয়ে আছে তার রুমে।
এমন সমময় ফোন বেজে উঠল। রেহানা
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল তার
ভাই সাজ্জাদের ফোন।
– ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল রাত
পৌনে ১টা বাজে। রেহেনার কেমন
জানি মনে হল বাসার সবাই ঠিক
আছেতো?
-ফোন রিসিভ করা মাএ ওপার থেকে
জাহানারা সালাম দিয়ে বলল বুবু
কেমন আছেন?
-হুম ভাল। এত্ত রাতে কল!
– জাহানারা সেদিকে তোয়াক্কা
না করে বলল সুমি ভাল আছে বুবু?
– এই কথা শুনে কিছুটা অবাক হল আর
ভাবল এটা বলার জন্য এই রাতে কেউ কল
দেয়?
-হুম ভাল আছে, এটা বলার জন্য কল
দিয়েছিস?
– এমন সময় রাফী বলে উঠল মা আমাকে
জলদি দাও।
-জাহানারা আর কিছু বলতে না পেরে
ছেলেকে ফোনটি দিয়ে দিল।
– রাফী ফুফুকে সালাম দিতেও যেন
ভুলে যায়।
– ফুফু রাফসান ভাই বাসায় আছে?
– রেহেনা ভ্রু কুচকে বলল এদের মা
ছেলের কি হল যে এমন ভাবে কথা
বলছে। এমন সময় ঘুম ভাঙ্গায় কেউ তাও
জলদি খবর হলেও তা হয়।
– বেশ বিরক্তির সাথে বলল হুমম আছে,
বাসার সবাই ঠিক আছেতো?
– রাফী নাফিসা বলেই আর কিছু বলতে
পারছেনা।
-রেহেনা চমকে ওঠে নাফিসার কথা
শুনেই। বাবা-মা মরা মেয়ে তার উপর
যা অবস্থা ওর।
– রাফীর গলা ধরে আসল বলতে গিয়ে।
-ফুফু ওর অবস্থা খুব খারাপ, ঙ্গান
হারিয়ে ফেলেছে। আমরা কিছু
জানিনা….. বলে সব ঘটনা খুলে বলল।
– রেহানার মনে হল কেউ ওর
কলিজাতে টান দিল। বলল ৫ মিনিট পর
ফোন দিচ্ছি বলে কেটে দিল ফোন।
– রাফসানের রুমের সামনে গিয়ে
দাড়িয়ে পড়ল। কি করবে ভেবে
পাচ্ছিলনা।
– ছাদে কাইফকে বাধে রাখা হইছে।
কাইফ দেখল ওর বাবা খৈয়াম, মা,২
বোন সামনে দাড়িয়ে আছে।
– আব্বা আমাকে ওর কাছে যেতে দিন
না হলে ও বাচবেনা।
– খৈয়াম হুংকার দিয়ে বলল ওর এই
অবস্থার জন্য তুমিই দায়ী। আমি
তোমাকে আগেই বলছি এখানে আমরা
১ টা কাজে এসেছি। সেটা পূর্ন হলেই
চলে যাব। শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষায়।
– আর আজ তুমি যা করেছ এতক্ষনে
মালিকের কাছে খবর চলে গেছে।
মেয়েটাকে মনে হয়না আর বাচিয়ে
রাখবে। এতক্ষনে কাজ শুরু করে দিছে।
আর হতে পারে এই রাত তার শেষ রাত।
– রাফী ফুফুর ফোনের আশায় অপেক্ষায়
আছে। এমন সময় বাজজ পড়ল আর সাথে
সাথে সব লাইট অফ হয়ে গেল।
– ডাইনিং রুমে বিকট শব্দ হল। মনে হল
জানালার গ্লাস ফেটে গেল। রাফী
সহ সবাই আৎকে উঠল এবং সেদিকে
অন্ধারের দিকে এগুলো।
– রাফীর সাথে সবাই চলে গেল, ওদের
খেয়ালই নেয় রুমে একা নাফিসা।
– সবাই বেরর হতেই কারা যেন রুমে ডুকল
এবং ভয়ানক হাসি দিয়ে উঠল।
– এক পর্যায়ে অন্ধকারে শুধু ধস্তাধস্তি
এবং গোঙ্গানির শব্দ পাওয়া গেল।
চলবে……..
বিপদে সবসময় ধৈর্য এবং মাথা ঠান্ডা
রাখতে হয়। কোথায় কি হইছে
সেখানে না গিয়ে নিজের অবস্থান
থেকে মোকাবেলা করতে হয়।
বানান ভুল থাকলে অনুগ্রহ করে শুধরিয়ে
পড়ে নিবেন। আর কেউ কখনও ভুলের
উর্দ্ধে নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here