#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১৫
– নাফিসা রুপের বুকে একদম মিশে
আছে।
– আমি বললাম ছাড়ুন আমায় বলছি।
তাছারা কিন্তু ভাল হবে না ।
– রুপ মুচকি হেসে বলল তাছাড়া কি হবে
শুনি। kiss করার ইচ্ছা জাগছে বুঝি
আমায়।
– নাফিসা এবার জোরে বলে উঠল
বদজ্জাত পোলা তোমারে আজ মজা
বুুঝাচ্ছি বলে বুকের লোম খুব জোড়ে
টান দেয়।
– আউচ্ বলে রুপ ছেড়ে দিল।
– Are you mad বলে নাফিসাকে জোড়
করে ঠোটে kiss করে রুপ।
– আমি আপনার নামে মামলা দিব এই
kiss করার জন্য। আপনি পাইছেনটা কি হুম।
.
.
.
– রুপ এবার নাফিসা কে কোলে তুলে
নিয়ে শূন্যেতে ভাসতে লাগল।
– যানো আমার কত্ত দিনের আশা তুমি
আমার সত্যটা জানবে এবং আমরা
এভাবে ভেসে প্রেম করব।
.
.
.
– লুচ্চা ব্যাডা কোথাকার ছাড় বলছি
আমায়।
তোকে আজ মেরেই ফেলে দিব।
.
.
– এবার রুপ বেশ রেগে যায়। উপর থেকে
খাটে ফেলে দিল।
– আউ মা গো আমি শেষ বলেই রুপের
দিকে তাকালাম।
– রুপ বলল আসলে তুমি একটা পাগল। শুধু
পাগল না একটা ফাজিল + বেয়াদপ
মেয়ে বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেল।
.
.
– আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেল। মনে
হয় ওকে একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলছি।
কি করব জানালায় আন্টি দাড়িয়ে
আমাদের দেখছিল।
– আন্টিকে দেখে মনে হচ্ছে আমার উপর
উনি বেশ বিরক্ত।
.
.
.
– প্রায় ৬ দিন কেটে গেল রুপ একবারও
আমার সাথে কথা বলে নি।
আমিও প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে
তেমন কথা বলি না।
.
.
.
– আমি এতদিন কোন স্বাভাবিক
মানুষদের সাথে ছিলামনা ভেবেই
গা শিউরে ওঠে।
.
.
.
– আমি আর রুপম প্রায় সন্ধ্যার সময় বাগান
থেকে কিছু ফুল উঠাচ্ছি।
– আমি আকাশে তাকাতে দেখলাম কি
জানি সব আমাদের দিকে উড়ে আসছে।
– আমি রুপম কে বললাম দেখতো ওগুলো
কি?
.
.
.
– রুপম কিছুটা শিউরে উঠে আমার হাত
ধরে বলে চল sis আমরা বাসায় যাই।
– আমি বললাম কেন কি হইছে আর ওগুলো
কি!
– রুপম কোন কথা না বলে আমার হাত
ধরে মেইন গেটের দিকে দৌড়াতে
লাগল।
– আমিও নিজের ব্যালেন্স সামাল
দিতে না পেরে উষ্ঠা খেয়ে
বারান্দার সিড়ির উপর পড়ে গেলাম।
.
.
.
– রুপম আমাকে ঐ অবস্থায় রেখে
ভিতরে দৌড়ে চলে গেল।
– রুপম হাপাতে হাপাতে ডাইনিং
রুমে গিয়ে dad বলে চিৎকার দিল।
– রুপমের ডাক শুনে সবাই বের হয়ে এল
এবং বলল কি হয়েছে।
-রুপম শুধু হাতের ইশারায় বাহিরে কি
জানি দেখালো।
।
।
।
– নাফিসা পড়া থেকে উঠে দাড়াল
এবং দেখল ওর হাতের কিছু জায়গা
কেটে গেছে সেখান থেকে রক্ত
পড়ছে।
– একটা শা শা আওয়াজে দেখল কিছু
দুরেই একটা মানুষের মাথার খুলি যা
ছিল কালো মিহি রঙ্গের এবং খুলির ২
পাশে ২ টা বিশাল পাখা( এই
জিনিসটা আমি নিজের চোখে
দেখছি যেটা অবিকল গল্পে তুলে
ধরেছি)
পিছনে আরও ২ টা এরকম মাথার খুলি।
– ভেবে দেখুন আমার কি অবস্থা তখন।
– আমি চিৎকার দিয়ে উঠি। ঐ জিনিস
গুলো যখন আমায় attack করে চায় তখনই
ছিটকে ওরা চারদিকে পড়ে যায়।
– আমার গলায় মারিয়ামের দেওয়া
সেই লকেটটা জ্বলে ওঠে।
.
.
.
– আমার চিৎকারের শব্দ রুপ শুনতে পেয়ে
আমার কাছে হাজির হয় এক নিমিষে।
– শুধু রুপ না সবাই এসেছিল আর ওদের
পাখা মেলে আমাকে আড়াল করে
বিকট শব্দ করতে থাকে।
.
.
.
– সেদিন প্রথম আমি রুপদের জ্বীন
পরিবারের আসল চেহারা দেখি।
– ছোট্ট রুপমটাও তার শক্তি ব্যাবহার
করেছিল সেদিন।
।
।
– আমি ভয়ে কাপতে থাকি। রুপ রুপমকে
ইশারায় আমাকে নিয়ে ভিতরে
যেতে বলে।
– রুপম আমাকে নিয়ে ভিতরে আসে
এবং আমার হাত ধরে সোফায় বসে
পড়ে।
– ও sis তোমার কিচ্ছু হবেনা দেখে
নিও। ওখানে সবাই আছে।
– রুপমের কথা গুলো আমার মাথার উপর
দিয়ে যাচ্ছে। আমি শুধু ভয়ে কাপতেই
থাকি।
.
.
.
.- রুপ বলল ভাল চাওতো তোমরা নিজের
রুপে ফিরে আসো।
– একটা ব্লাক পোষাকে মেয়ে চট করে
উদয় হয় এবং পিছনে কয়েকটা জ্বীন উদয়
হয়।
.
.
.
– মিনা চমকে উঠে বলল ক্যাথরিন তুই!
– ক্যাথরিন সশব্দ করে হেসে উঠে বলল
চিনতে পেরেছিস তাহলে।
– ঐ মেয়েকে নিজেদের জিম্মাদার
করে ভুল করেছিস। তোর পরিবারের জন্য
কি তোর দয়া নাই?
.
.
.
– রুপের কাছে এসে ক্যাথরিন বলে how
sweet.
– ক্যাথরিন বলল এটা কে হয় তোর মিনা!
– মিনা বলে ও আমার ছেলে কেন কি
হইছে।
– এবার ক্যাথরিন বলল অল্প বয়স রক্তের
তেজ বেশি না!
.
.
.
.
– জীবনের মায়া থাকলে ঐ মেয়েকে
আমাদের কাছে দিয়ে দাও।
– রুপ হংকার দিয়ে বলে ওর কাছে
যেতে হলে আগে আমাকে টপকাতে
হবে তার পর ওর কথা ভেব।
.
.
.
– মিনা তোর অবুঝ sweet boy কে বলে দে
ফাদার কতটা ভয়ানক হতে পারে নিজ
কার্য সিদ্ধাতের জন্য।
– অকালে মারা পড়বে। আর একটা
মুসলিম মেয়েকে বাসায় রাখা যে কি
অপরাধ সেটা আজ হারে হারে টের
পাবি বলে আবার ঐ চেহারা ধারণ
করে ওরা চলে গেল।
.
.
.
– সবাই ডাইনিং রুমে। রোজ নাফিসা
কে কাছে নিয়ে বসে আছে।
বেচারার ভয় কেটে উঠতে এখনো
পারেনি।
.
.
.
– মিনা এবার নাফিসার সামনে বলে
উঠল ওরে আর বাসায় রাখা যাবেনা
কোন অবস্থায়।
– রুপ বলল ও এই অবস্থায় কোথায় যাবে?
– জানিনা কোথায় যাবে কিন্তু
এখানে আর এক মুহুত্বও নয়।
-এখুনি হয়ত ওরা আসবে এর আগেই ওর
ব্যবস্থা করতে হবে।
.
.
– – রুপ চট করে আমাকে নিয়ে হাওয়া
হয়ে গেল।
– রুপ বের হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে
মোট ২৭ জন পুরুষ হাজির হয়ে গেল।
– এরা ৭ ফুটের বেশি লম্বায়। দেখেই
মনে হবে এরা কেউ স্বাভাবিক মানুষ
নয়।
.
.
.
– মিনা তাদের গোপনীয় রুমে নিয়ে
গিয়ে blood দিয়ে আপ্পায়ন করে।
তারপর শুরু হয় তাদের মধ্য কথা।
.
.
.
– রুপ জানেনা সেখানে কি হচ্ছে। ও
তো নাফিসা কে ওর কাছেই রাখছে।
– নাফিসা এবার জোড়ে ধাক্কা দেয়
রুপ কে আর বলে আপনারা ভুতে ভূতে
মারামারি করবেন আর এর চিপায়
আমাকে মরতে হবে?
–
–
–
– রুপের ৬ দিনের আগের রাগতো আছেই
তার উপর ওর এই ধরনের আচরন যেন সহ্যই
করতে পারছেনা তার উপর বাসার
টেনশন।
– আমার কাছে এসে রুপ একটা ঠাটিয়ে
একটা চড় মারে। রুপের চড়ে নাফিসা
ছিটকে পড়ে যায় একটা পাথরের উপর।
.
.
.
– নাফিসার গলার সামনে কেটে যায়
এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে যায়।
– রুপের রক্তের পিপাসা পেয়ে যায় ও
ধীরে ধীরে নাফিসার দিকে এগুতে
থাকে।
– নাফিসার কাছে এসে ওর গলা
থেকে রক্ত গুলো শুষে নেয় এবং ওর গলা
ঠিক আগের মত হয়ে যায়।
.
.
.
-রুপ নাফিসা কে জড়িয়ে ধরে আর বলে
স্যরি খুব লাগছে?
– নাফিসা এবার জোড়ে কেদেই
ফেলল আর বলল আপনি আমাকে দেখতেই
পারেন না। শুধু মারার ছুতো খোজেন I
heat you।
.
.
.
– But I love you my hert…….
Just for you my love বলেই কিস কলল রুপ।
.
.
– নাফিসা বলল আপনি কত দিন দাত
ব্রাশ করেননি! এমাআ কি দুর্গন্ধ…….
বলেই নাফিসা মুচকি হেসে দিল।
– রুপ ভেবে পায় না একে এই সময় কি
করা উচিত। ফাজলামির একটা সীমা
আছে।
.
.
– রুপ বলল আমার মুখের গন্ধ! আমি দাঁত
ব্রাশ করিনা! আমি খারাপ! আমি শুধু
তোমায় মারি না! বলেই কাছে আসে।
– এই আপনার মতি গতি ভাল ঠেকছেনা
আপনি এরকম করছেন কেন? আবার কি
করতে চান হু!
.
.
.
– রুপ একটু হেসে বলল আমিত কিছু করতে
চাই শুধু তোমাকে আমার কেলমা
দেখাতে চাই বলে নাফিসার কাছে
গেল।
– নাফিসা হা করে ওর দিকে যেই
তাকায় ওমনি রুপ ওর জ্বিহবাতে দাত
দিয়ে আসতে কামড় দেয়। এটারই যেন
অপেক্ষায় ছিল রুপ।
– এবার নাফিসা বলল আপনি খুব খারাপ,
খালি খারাপ না মহা খারাপ।
– তাতো আমি একটু খারাপই সেটা তুমি
ভাল করেই জান! বলেই নাফিসা কে
বুকে নিয়ে উড়াল দিল বাসার পথে।
.
.
.
– ছাদে এসে নামে ওরা এবং নিচে
নেমে যায়।
– নাফিসাকে দেখে মিনা এবার
রেগে ফেটে যায় এবং এসে কষে
একটা থাপ্পড় দেয়।
– রুপ এসে নাফিসা কে ধরে আর বলে
mom what happen.
– মিনা বলল ওকে এক্ষুনি বাসা থেকে
বের হয়ে বের হতে বল আমি আর নিতে
পারছিনা।
– আন্টির এমন ব্যবহারে আমার সব স্বপ্ন
দুমড়ে মুচরে গেল।
– রুপের দিকে শুধু তাকালাম। জানিনা
ও কি বুঝল।
– নিজের রুমে চলে আসলাম। নিজের
কাপড়গুলো ব্যাগে ভরাতে লাগলাম।
.
.
.
– mom বলবে কি হয়েছে?
– রোজ বলল হওয়ার কিছু বাকি নেই।
আমাদের সমাজ চুত্য করবে ওনারা এসে
বলে গেছে।
– mom আমি নাফিসাকে love করি।
আমি ওকে বিয়ে করব।
– এবার যেন আগুনে ঘি পড়ল। মিনা
ক্ষেপে গিয়ে বলল আমি জানতাম
এটাই হবে।
– ও মানুষ আর তুই কি! তোদের মিলন
অসম্ভব। আর সব থেকে বড় কথা ও মুসলিম
আর তুই খিষ্ট্রান। তোদের মাঝখানে
ধর্মের বিশাল দেয়াল আছে যেটা
ভাঙ্গা একদম সহজ না।
– আন্টি চিন্তা করেন না আমি চলে
যাচ্ছি এবং আপনার ছেলেকে আমি
আমার জিবনে চাইনা।
– তাই ধর্মের দেয়ালের কথার কোন
প্রশ্নই আসে না।
– নাফিসা বাসা থেকে বের হয়ে
আসার সময় রোজ, রুপম বাধা দিয়ে বলল
পাগলামি করিসনা। এই রাতে তুই কই
যাবি!
– আমি রাস্তার মেয়ে রাস্তায় থাকব।
আমাকে নিয়ে টেনশন করতে হবে না।
– নাফিসা বের হয়ে চলে গেল।
অন্ধকার রাস্তা। কিন্তু আজ আর ভয়
করছেনা।
নির্জন রাস্তায় হেটে চলছে।
– সামনে একটা গাছের নিচে বসে
পড়ে। কই যাবে , কার কাছে যাবে।
পৃথিবীতে যে কেউ নেই। কি করবে
ভেবে কেদেই যাচ্ছে।
-খুব ক্লান্ত লাগছে বলেই সেখানেই
ঘুমিয়ে পড়ে।
.
.
– সকালে পাখির ডাকে ঘুম ভেঙ্গে
দেখে একটা অচেনা ছেলে ওর পাশে
বসে পাহারা দিচ্ছে ওকে……
চলবে………
পৃথিবীতে মা-বাবা নামক ছাতা যার
নেই তার থেকে হতভাগা দুনিয়াতে
মনে হয় আর কেউ নেই……