জীবন সাথী💜 পর্ব-১৫

0
1221

#জীবন_সাথী💜
লেখিকা-জান্নাতুল ফারিয়া প্রত্যাশা
১৫.
~
আজ ৩ দিন পর পারভেজ আহমেদ আর আরাফ হসপিটাল থেকে রিলিজ পেয়েছে।পারভেজ সাহেব আরাফকে নিয়ে তার বাসায় যাচ্ছেন।তিনি বলে দিয়েছেন পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আরাফ তার বাসায়ই থাকবে।যদিও আরাফ যেতে রাজি হয়নি তবুও তার পি.এ আর অনুর এতো রিকোয়েস্ট ফেলতে পারেনি।
.
সেদিন আগুনের ভয়াবহতায় আনোয়ারের সাহেবের বেশ কিছু লোক দগ্ধ হয়ে মারা গেলেও তিনি সহ আরো ৪-৫ জন বেঁচে যান।তবে তাদের অবস্থাও শোচনীয়।যারা বেঁচে ফিরেছে সবাইকেই আই.সি.ইউ তে রাখা হয়েছে।যখন ডাক্তার আনোয়ার সাহেবের বাড়ির লোকের কথা বলছিলো তখন পারভেজ আহমেদ বলেছে তিনি তার আত্মীয়।কিন্তু সব চেয়ে বড় ব্যাপার হলো আনোয়ার সাহেবের আই.সি.ইউর সমস্ত খরচ আরাফ বহন করবে বলেছে।পারভেজ সাহেব আরাফের এই কথায় বেশ অবাক হয়েছিলেন।যে লোকটা তাকে এতটা কষ্ট দিয়েছে আজ আরাফ তাকেই বাঁচাচ্ছে।পৃথিবীতে সব ভালোবাসায় শুধু নিজ স্বার্থের জন্য হয় না কিছু কিছু ভালোবাসা স্বার্থহীন ভাবেও হয়ে থাকে।যেমন আরাফের ভালোবাসার;যার মধ্যে কোনো সার্থকতা নেয়।আছে শুধু মায়া;মমতা;আর একরাশ ভালোবাসা।
.
ড্রয়ইং রুমের সোফায় পাশাপাশি বসে আছে পারভেজ সাহেব আর আরাফ।আরাফ বসে বসে হালকা করে চোখ বুলাচ্ছে পুরো রুমটাতে।বেশ গুছানো সব কিছু;বড় জানালাটার পাশে একটা খাট পাতা;খাটের পাশেই ছোট্ট একটা টেবিল;তারপর তার একপাশে দেয়ালে সেট করা একটা টিভি;টিভিটার ঠিক উল্টো পাশে একটা ৩ সিটের সোফা রাখা।আর এই রুমে ঢুকতেই যেটা সবার আগে চোখে পড়ে সেটা হলো দেয়ালে টানানো পারভেজ সাহেবের পুরো পরিবারের বিশাল বড় একটা ছবি।ছবিটা অনেক আগের;ছবির মধ্যে অনুকে অনেক বাচ্চা দেখাচ্ছে।আরাফ শান্ত দৃষ্টিতে কিছুক্ষন ছবিটা দেখে তার পি.এর দিকে তাকায়।তারপর তাকে ধীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,

”পি.এ শুনলাম পুলিশ নাকি তদন্ত শুরু করেছে।কিভাবে বিল্ডিং এ আগুন লেগেছে;কে আগুন লাগিয়েছে;আর কেনই বা লাগিয়েছে এই সব কিছুই তো তারা জানতে চাইছে তাই না?”

আরাফের প্রশ্নে পারভেজ সাহেব ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে বলে ,

”হুম তা তো জানতে চাইবেই;এটা তাদের ডিউটির মধ্যে পড়ে যে।তবে তুই চিন্তা করিস না আমি ওদের বলে দিয়েছি আমরা এই ব্যাপারে এখন কোনো কথা বলতে পারবো না।আগে আমরা মানসিক আর শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়েনি তারপর আমরা উনাদের সাথে কথা বলবো।আমাদের কথা বিবেচনা করে উনারাও আমাদের সময় দিয়েছেন।তাই তুই এখন আর এসব নিয়ে ভাবিস না।এখন শুধুমাত্র নিজের খেয়াল রাখ;সুস্থ হয়ে উঠ তাড়াতাড়ি তারপর এসব নিয়ে ভাবা যাবে।”

আরাফ মাথা নিচু করে গম্ভীর গলায় বলে ,

”কিন্তু পি.এ এটা তো সত্যি আমিই করেছি সব কিছু।আর পুলিশ যখন সব কিছু জানবে তখন আমাকে এরেস্টও করবে।”

আরাফের কথা শুনে পি.এ উদ্বিগ্ন গলায় বলে ,

”একদম না।তুই কোনো ভুল করিসনি।আমি তোর কিছু হতে দেব না।আমি সামলাবো সবটা তোর এইসব নিয়ে ভাবতে হবে না।”
.
আরাফ আড় চোখে তার পি.এর মুখটা একবার দেখে।উনার চোখে মুখে আরাফের প্রতি ভীষণ রকম মায়াটা গাঢ় ভাবে ফুটে উঠেছে।আরাফকে তিনি আর কোনো কষ্ট পেতে দিবেন না।তিনি তার সর্বস্ব শক্তি দিয়ে তাকে আগলে রাখবে।মনে মনে এসব কিছু ভেবে আরাফের মাথায় হাত বুলালেন তিনি।আরাফও কিছু বলছে না শুধু মাথা নিচু করে ধীরে ধীরে নিশ্বাস ফেলে যাচ্ছে।
.
”বাবা স্যারের রুম রেডি।”

অনুর গলার আওয়াজে দরজার দিকে তাকায় দুজন।অনু মুখে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আরাফ অপলক চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে।হঠাৎ পারভেজ সাহেবের কথায় ধ্যান ভাঙে তার;আর সঙ্গে সঙ্গে সে চোখ নামিয়ে ফেলে।পারভেজ সাহেব আরাফের হাত ধরে বলে ,

”চল বাবা আমাদের এই ছোট্ট বাসায় ছোট্ট একটা রুমে তোর থাকার ব্যবস্থা করেছি হয়তোবা আমাদের এই রুমটা তোর রুমের মতো এতো বিশাল না;তবে তুই চিন্তা করিস না রুমটা বেশ আরামদায়ক।”

পি.এর কথায় আরাফের কপালে ভাঁজ পড়ে।কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে যায় সে।
.
আরাফ কাছে রুমটা ভীষণ পছন্দ হয়েছে।সাধারণের মধ্যে অসাধারণ বলে একটা জিনিস আছে না তা এই রুমটার মধ্যে বেশ ব্যাপক ভাবে ফুটে উঠেছে।রুমের মধ্যে একটা সিঙ্গেল খাট পাতা।আর তার ঠিক মাথার উপরে ছোট্ট একটা জানলা আর যেই জানলাটা খুললে দখিনা বাতাস ছেয়ে যাবে পুরো রুমে।খাটের পাশে একটা ছোট্ট বেড কেবিনেট রাখা।তার উল্টো পাশে রাখা একটা বুক সেলফ।দূর থেকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক রকম বই দিয়ে এটা সাজানো।বুকশেল্ফের ডান পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটা বেলকনি।সব কিছু মিলিয়ে আরাফের কাছে রুমটাকে চমৎকার লাগছে।অনু পেছন থেকে ধীর কণ্ঠে বলে,

”স্যার রুমটা পছন্দ হয়েছে?আপনার এখানে থাকতে কোনো অসুবিধা হবে না তো?”

আরাফ পেছনে ঘুরে এক পলক অনুর দিকে তাকিয়ে আবার সামনের দিকে ফিরে তারপর শান্ত কন্ঠে বলে,

”হুম খুব পছন্দ হয়েছে।আমার পছন্দটাই সাধারণ।তাই এই সাধারণ রুমটাকেও আমার এই মুহূর্তে অসাধারণ লাগছে।”

আরাফের কথায় অনু পারে না লুঙ্গি ডান্স দেয়।অনু খুশিতে গদ গদ হয়ে বলে,

”ঠিক আছে স্যার আপনি ফ্রেশ হন।আমি আসছি।”

অনু রুম থেকে বের হতেই পারভেজ সাহেব হাতে কিছু শপিং ব্যাগ নিয়ে আরাফের রুমে আসে।

”আরাফ বাবা দেখ তো এই জামা গুলো তোর পছন্দ হয় কিনা?”

আরাফ পেছনে ঘুরে দেখে তার পি.এ হাতে কিছু শপিং ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আরাফ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে

”এগুলো কি পি.এ?”

”আসলে তোর জন্য কয়েকটা জামা আগে থেকেই অনুকে দিয়ে কিনিয়ে রেখেছিলাম।এখন তো আর তুই তোর বাসায় গিয়ে তোর জামাকাপড় আনতে পারবি না তাই আপাদত এগুলো পড় পরে একদিন গিয়ে তুই তোর বাসা থেকে বেশ কিছু জামাকাপড় এখানে নিয়ে আসিস?”

পি.এর কথায় আরাফ ধীর পায়ে তার সামনে এসে দাঁড়ায়;তারপর করুন কন্ঠে বলে,

”তুমি আমার জন্য অনেক কিছু করেছো পি.এ।তোমার ঋন আমি কখনই শোধ করতে পারবো না।আর আমি ওই আনোয়ার মোহাম্মদের বাড়িতে কখনো ফিরে যাবো না।কিন্তু পি.এ আমার নিজের ফ্ল্যাট আছে।আমি সেখানেই থাকতে পারবো।তাও কেন তুমি এতো জোর করছো বলতো?”

পারভেজ সাহেব আরাফের বাহুতে হালকা করে হাত রেখে বলে,

”বাবা রে আমি জানি নিজেকে চালানোর মতো ক্ষমতা তোর আছে।আর আমি এটাও জানি এই সময়ে আমি যদি তোকে একা ছেড়ে দেই তাহলে তুই কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতেও দুবার ভাববি না।তোর মনের অবস্থাটা পুরোপুরি না বুঝতে পারলেও কিছুটা তো আন্তাজ করতে পারছি।এত বড় মানসিক আঘাত পেয়েছিস তুই তারউপর শারীরিক ভাবেও এতো দুর্বল তুই কি করে ভাবলি এই অবস্থায় তোকে আমি একা থাকতে দিবো।তোর পি.এ এখনো মারা যায়নি যে তার আরাফকে এতোটা কষ্টে থাকতে হবে।আমাদের সাথে থাকলে তুই যে তোর সমস্ত কষ্ট ভুলে যেতে পারবি আমি তা বলছি না;তবে আমাদের সাথে থাকলে তুই কিছুটা হলেও ভালো থাকতে পারবি।যেটা তুই একা থাকলে কখনোই পারবি না।আর বাকি রইলো তোর ঋন পরিশোধের কথা সেটা নাহয় আমি সময় মতো আদায় করে নিবো।”
.
কথাটা বলে আরাফের হাতে শপিং ব্যাগ গুলো দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যান পারভেজ আহমেদ।আর তার যাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আরাফ।
.
বারান্দায় দাঁড়িয়ে গুন্ গুন্ করে গান গাইছে আর জোছনা বিলাস করছে অনু।বাইরের ফুরফুরে বাতাসে তার মনটাও আজ ভীষণ ফুরফুরে।সে চোখ বন্ধ করে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে আকাশের দিকে তাকায়।হাজার হাজার তারার মাঝে এক বিশাল চাঁদ উঠেছে আকাশে।তারকাছে এই মুহূর্তে আকাশটাকে ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগছে।যেই সুন্দর্যের কোনো ব্যাখা নেয়।অনু আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে সামনে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছটার দিকে তাকায়।এই গাছটার মধ্যে কেমন যেন একটা মাদকতা আছে।আর আজ এই চাঁদের আলোয় এর মাদকতাটা যেন আরো বেড়ে গিয়েছে।কৃষ্ণচূড়া গাছের রক্তিম ফুলগুলো যেন বার বার অনুকে তাদের কাছে ডাকছে।মনে হচ্ছে তারা অনুকে তাদের এই রক্তিম লালের মাঝে ডুবিয়ে দিতে চায় ।অনুও যে চায় ডুবে যেতে।হারিয়ে যেতে চায় এই রক্তিমের মাদকতায়।প্রকতির ভয়ঙ্কর নেশা যখন ভীষন রকম ভাবে ধীরে ধীরে অনুর মস্তিস্ককে গ্রাস করতে থাকে তখনি সে নেশা ভাঙতে অনুর ফোনটা বেজে উঠে।অনু চোখ মুখ কুঁচকে পেছনের দিকে তাকায়।এই মুহূর্তে তো তার এই প্রাণের প্রিয় ফোনটাকেও আছাড় মেরে ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে ।সে একরাশ বিরক্ত নিয়ে রুমের ভেতর যায়।ফোনের দিকে তাকাতেই সে দেখে ম্যাসেঞ্জার তার ফ্রেন্ডের গ্রূপ থেকে কল আসছে।অনু বিরক্তি নিয়ে কলটা তুলে।

”হুম বল?”

”দোস্ত এসব কি শুনছি;আংকেল নাকি ফিরে এসেছে আর আংকেলকে নাকি আমাদের আরাফ স্যার বাঁচিয়েছে?”(তিহা)

”আর সিটি মলটার পেছনের বিল্ডিংটাতে নাকি ভয়ংকর আগুন লেগেছিলো।আর তাতে নাকি আমাদের প্রিন্সিপাল সহ অনেক মানুষ দগ্ধ হয়েছে?অনেকে নাকি মারাও গিয়েছে এসব কি সত্যি দোস্ত?”(রুমি)

ওদের কথা শুনে অনু দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

”কিরে রিহান তুই চুপ আছিস কেন তোর কি কোনো প্রশ্ন নাই?”

”হুম।শুনলাম রিহান স্যার নাকি তোদের বাসায় আছে!সত্যি নাকি।আর আমাদের একটু প্রথম থেকে সবটা বলতো আমরা তো কিছুই বুঝতে পারছি না।”

”কাল ভার্সিটিতে আসার পর সব বলবো।এখন ফোন রাখ।আল্লাহ হাফেজ”
.
কথাটা বলেই অনু কল কেটে দিয়ে আবার বারান্দায় চলে যায়।এতো সুন্দর মুহূর্তটা এই হুনুমানগুলার সাথে আজাইরা কথা বলে কাটাতে চায় না সে।তাই আবার বারান্দায় এসে সে তার মাদকতার মাঝে ডুবে যায়।
.
ঘুমের মধ্যে অনুর মনে হচ্ছে কেউ যেন তাকে গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছে।বেশ অস্বস্তিকর লাগছে তার।কিন্তু গভীর ঘুমের কারণের চোখের পাতাও খুলতে পারছে না সে।মুখের উপর কারো গরম নিশ্বাস অনুভব করতে পারছে অনু।মনে হচ্ছে কেউ যেন তার উপর ঝুকে পড়ে তাকে দেখেই যাচ্ছে।সেই গরম নিশ্বাসটা তার চোখে মুখে ভীষণ ভাবে আঁচড়ে পড়ছে।এবার যেন অনুর অস্বস্তিটা আরো বেড়ে গিয়েছে।পিট্ পিট্ করে চোখ গুলো খুলার চেষ্টা করছে সে।কিন্তু ঘুমের কারণে চোখের পল্লব বেশ ভারী হয়ে আছে যার ফলে সে তা খুলতে পারছে না।হঠাৎ তার মনে হলো সে তার কপালে খুব গভীর ভাবে কোমল কিছু স্পর্শ পেয়েছে।আর এর ফলে তার পুরো শরীরে একরকম শিহরণ দিয়ে উঠলো।এবার অনু আর না পেরে তাড়াতাড়ি তার চোখের পাতা খুলে।প্রথমে চোখের সামনে সব কিছু ঘোলাটে মনে হলেও পরোক্ষনে ধীরে ধীরে সব ধুয়াশা কেটে যায়।অনু পুরো রুমে চোখ বুলাচ্ছে কেউ আছে কিনা।কেন যেন একটু আগে কারো অস্তিত্ব এই রুমে টের পেয়েছে সে।অনু দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে সেটা আগের মতোই হালকা চাপানো।অনু দরজা খুলেই ঘুমায়।দরজা আটকিয়ে ঘুমাতে তার ভয় করে যার ফলে সবসময় দরজাটা এমন ভাবে হালকা ফাক করে চাপিয়ে রাখে।বেশ কিছুক্ষন ধরে আসে পাশে চোখ বুলিয়ে কিছুই দেখতে পাই না সে।অনু আনমনেই তার হাতটা কপালে ছোঁয়ায়;তার কাছে মনে হচ্ছে কেউ যেন তাকে ঘুমের মধ্যে গভীর ভাবে কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়েছে।পরক্ষনেই সে ভাবে’না না এসব কিছু আমার ভুল ধারনা।আমি নিশ্চয় গভীর ঘুমে স্বপ্ন দেখছিলাম।এটা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুইনা’
কথাটা ভেবেই আবার শুয়ে পড়ে সে।
.
সকালে সূর্যের নরম আলোটা তির্যক ভাবে আরাফের মুখে পড়তেই পিট্ পিট্ করে চোখ খুলে সে।বড় করে একটা হায় তুলে উঠে বসে।কিছু একটা ভেবে আনমনেই আরাফের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে।কিন্তু পরক্ষণেই হাসিটাকে অগ্রাহ্য করে সে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়,
.
হাতে এক কাপ গরম গরম কফি নিয়ে আরাফের দরজার সামনে গিয়ে নক করে অনু।কিন্তু কয়েকবার নক করেও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সে রুমের ভেতরে ঢুকে পড়ে।রুমে গিয়ে দেখে আরাফ রুমে নেয়।ওয়াশরুম থেকে পানির আওয়াজ পেতেই অনু বুঝতে পারে আরাফ ওয়াশ রুমে।তাই অনু কফিটা আরাফের বেডের পাশে বেড কেবিনেটটার উপর রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
.
নাস্তার টেবিলে সবাই বসে নাস্তা করলেও অনু সেখানে নেয়।ব্যাপারটা কিছুক্ষন যাবৎ খেয়াল করে আরাফ।অনুকে অনেকক্ষন যাবৎ দেখতে না পেয়ে সে পি.এ কে জিজ্ঞেস করে,

”পি.এ অনু কোথায়?ওকে দেখছি না যে?”

রাহেলা বেগম আরাফের প্লেটে একটা রুটি দিতে দিতে বলে,

”আসলে বাবা অনু আরো আগেই ভার্সিটিতে চলে গিয়েছে।এই তিন দিন তো আর ভার্সিটিতে যেতে পারেনি তাই আজ একটু তাড়াতাড়িই গিয়েছে।”

আরাফের মুখটা মলিন হয়ে যায়।কেন যেন তার এখন অনুকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু সেই ইচ্ছেটা মনের কোণে ফেলে রেখে ডান হাত দিয়ে আস্থে আস্থে রুটি ছিড়ে খায় সে।

”আরাফ আজকে ডক্টরের কাছে গিয়ে তোর বাম হাতের ব্যান্ডেজটাও খুলিয়ে আনবোনে। ডান হাতটা আগের থেকে অনেকটাই শুকিয়েছে এখন বাম হাতটা ভালোই ভালোই ঠিক হয়ে গেলেই হয়।নাস্তা শেষ করে আমরা ডক্টরের কাছে যাবো।কেমন!”

আরাফ আনমনেই বলে,

”আচ্ছা!”
.
তার মন আর মস্তিস্ক পুরোপুরি এখন অনুকে নিয়েই ভাবছে।অনুর সেই ঘুমন্ত মায়াবী মুখটা কোনো ভাবেই ভুলতে পারছে না।অনুর এই ঘুমন্ত মুখটা যে আরাফকে আরো পাগল করে তুলছে।অনুর মায়ায় যে আরাফ পুরোপুরি নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে সেটা সে বেশ বুঝতে পারছে।এই মায়ায় যে সে সারাজীবন থাকতে চায় ।কিন্তু তা কি অনু কখনো বুঝবে!!

চলবে…
(আল্লাহকে ভয় করো;পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়)

{আসসালামু আলাইকুম।কাল কে গল্প দিতে পারিনি বলে আজ অনেক তাড়াতাড়ি দিয়ে দিয়েছে।তোমরা অনেকেই বলেছো আজকের পার্টটা যেন বড় করে দেই।কিন্তু এর থেকে বড় করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি।তার জন্য দুঃখিত😥।আর হ্যাঁ দুটো লাইন এই গল্পটার ব্যাপারে লিখে যেও😓তোমরা সবাই যেভাবে নাইস;নেক্সট কেমন্ট করো তা দেখলে ভীষণ কষ্ট লাগে।আবার অনেক আপুরা অনেক ভালো ভালো কমেন্ট করো;তাদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা❤.}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here