“হালাল প্রেম”
পর্ব- ৫৭
(নূর নাফিসা)
.
.
পরদিন সকালে শারমায়া মায়ের সাথে কথা বললো সাফওয়ানার ব্যাপারে। সাথে জোভানও কথা বলে নিলো। ইফাজকে মোটামুটি সুপাত্র হিসেবে জানেন তারা। আর ইফাজের মা যখন চাইছেন তাদের বাসায় গিয়ে দেখা করতে, শারমিন যেতে বললেন। বিয়ে হোক বা না হোক, মেহমান হিসেবে ঘুরে আসুক।
ছুটির দিন হওয়ায় জোভান বাসায় ছিলো। দুপুরের দিকে সে শারমায়া, সাফওয়ানা ও জুথিকাকে নিয়ে শহরের পথঘাট ঘুরে বেড়ালো, শিল্পকলা একাডেমিতে সময় কাটালো কিছুক্ষণ, অতঃপর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এলো। পরদিন বিকেলে সাখাওয়াত সাহেব এসেছেন মেয়ের সাথে দেখা করতে। যাওয়ার সময় সাফওয়ানাকেও সাথে নিয়ে গেলেন। জোভান অফিসে থাকায় তার সাথে দেখা হয়নি। বাকিদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। বাবা চলে যাওয়ার সময় শারমায়ারও খুব ইচ্ছে করছিলো বাবার সাথে যাওয়ার। কিন্তু তাকে কিছুদিন পর যেতে হবে তাই কিছু বলতে পারলো না।
গতকাল সাফওয়ানা চলে গেলো, আজ দুপুরের আগেই বাড়িটা পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গেলো। জেভা আপুও চলে গেলো, ছোট চাচ্চুর পরিবারও বেড়াতে চলে গেলো জুথিকার নানাবাড়ি। জোভান অফিসে, শ্বশুর কলেজে। তাদের শ্বাশুড়ি বউমার সময় কাটলো টুকটাক গল্পগুজব ও সাংসারিক কাজে। সন্ধ্যায় জোভান কল করে জানালো তার ফিরতে দেরি হবে। তাই নয়টার দিকে বাবা-মা ডিনার করে ফেললো। শারমায়া বাবামায়ের খাবার এগিয়ে দিয়েছে টেবিলে। তাকে ডিনার করার জন্য বলা হলে সে জানালো সন্ধ্যায় চিপস ভেজে খাওয়ার কারণে তার ক্ষুধা লাগেনি এখনো। জোভান এলে পরে একত্রে খেয়ে নিবে। বাবামায়ের খাওয়া শেষ হলে সব গুছিয়ে রেখে রুমে এসে বসে রইলো। ফোন ঘেটে গ্যালারিতে পূর্ব ও পরের মুহুর্তগুলোকে স্মরণ করতে লাগলো। সময়ের সাথে সাথে সকলের মাঝেই কোনো না কোনো দিক থেকে পরিবর্তন চলে এসেছে। পূর্ব ও পরের ছবি দেখে এবং পার্থক্য খুঁজে শারমায়া কখনো হাসছে কখনোবা ভাবনায় ডুবে যাচ্ছে। ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর সে অন্য এক জোভানকে দেখতে পেয়েছে। মানসিকতার পরিবর্তন তো ছিলোই, চেহারারও বেশ পরিবর্তন বিদ্যমান ছিলো। ছোট ছোট গোঁফ-দাড়ির কারণে একটু বেশিই ম্যাচিউর লাগছিলো। যেন ছোট চাচ্চুর মতো বয়স হয়েছে তার, দু-তিনটে বাচ্চার বাবা হয়ে গেছে সে। অথচ বিয়ের প্রোগ্রামের সময় গোঁফ-দাড়ি ছাটাই করে অল্পবয়সী সুযোগ্য পাত্রের রূপ গ্রহণ করেছে। চিন্তায় চিন্তায় কি তখন তার গোঁফ-দাড়ি দ্রুত গজিয়েছে নাকি শেভ করতে ভুলে গেছে তা ভাবতেই শারমায়া একা একাই হেসে উঠলো। ঘড়িতে সময় এগারোটা বাজতে চলেছে। শারমায়া জোভানের নম্বরে ডায়াল করলে জোভান কেটে দিলো। ব্যস্ত আছে ভেবে আর ট্রাই করলো না। প্রায় দশ মিনিট পর জোভান কল করলে সে রিসিভ করলো,
“আসসালামু আলাইকুম।”
“ওয়ালাইকুমুস সালাম। ডিনার করেছো?”
শারমায়া হাই তুলে তার জবাব দিলো,
“উহুম।”
“ঘুম পেয়েছে নাকি ঘুম থেকে উঠলে?”
“হুম, ঘুম পেয়েছে। কখন ফিরবে?”
“খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে থাকো।”
“তোমার ফিরতে কতক্ষণ লাগবে?”
“একটা কথা বললে রাগ করবে?”
“কি?”
“আমি আজ ফিরছি না। জরুরী একটা কাজে ঢাকার বাইরে চলে এসেছি।”
“হোয়াট! ঢাকার বাইরে চলে গেছো মানে! তুমি কার কাছে বলে গেছো? কথা নেই বার্তা নেই তুমি হুট করেই ঢাকার বাইরে চলে যাবে। এটা কোনো কথা?”
“রাগ করছো কেন! জরুরী ছিলো বলেই তো এসেছি।”
“জরুরী ছিলো মানে কি? তুমি আমার কাছে বলে গেছো? বাবা, মাকে জানিয়েছো কিছু? সন্ধ্যায় তোমাকে ফোন করলাম, অথচ তখনও বললে ফিরতে দেরি হবে। কেউ যে না খেয়ে তোমার অপেক্ষায় বসে আছে সেটা ভেবেছো একবার? মাথা ব্যাথা সত্ত্বেও মা না ঘুমিয়ে দুইবার এসে ঘুরে দেখে গেছে তুমি এসেছো কি না, আর তুমি এখন এই সংবাদ দাও আমাকে? ফ্যামিলির চেয়ে বড় হয়ে গেছে তোমার কাজ? কার জন্য করছো এতোসব কাজ?”
“শুনো, শুনো। হুট করেই ডিসিশন নিতে হলো, তাই জানাতে পারিনি। আগে জানলে তো বলেই আসতাম। রাগ করে না জান, আমি শীঘ্রই ফিরে আসবো। অফিসের ছেলেটাকে দিয়ে তোমার জন্য একটা গিফট পাঠিয়েছি। সে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, দরজাটা খুলে রিসিভ করো। কলিং বেল বাজালে বাবা মা দরজা খুলতে পারে, তাই বেল বাজাচ্ছে না।”
“লাগবে না আমার কোনো গিফট। গিফটের জন্য আমি মরে যাচ্ছি না। যার গিফট তার কাছেই ফিরে যাক।”
শারমায়া কল কেটে দিলো। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে জোভানের উপর। মানুষ কতটা জ্ঞানহীন হলে এমন কাজ করতে পারে! লোকটার কি কোনো কাণ্ডজ্ঞান নেই যে, সে ঢাকার বাইরে গিয়ে কল করে জানায় এই কথা! এতোটা কেয়ারলেস হয়ে গেলো কবে থেকে তার দায়িত্ববান প্রিয় লোকটা! তার এসব কর্ম পরিবারের উপর কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সেটা কি ভাবতে ভুলে গেছে সে? রাগে শরীর কাঁপছে শারমায়ার। কান্নাও আসছে হৃদ ঠেলে! দু-তিন মিনিট পর জোভান আবার কল করলো। শারমায়া কেটে দিলো। সাথে সাথেই আবার কল এলো। শারমায়া চোখ মুছে রিসিভ করে সামান্য কর্কশ কণ্ঠেই বললো,
“কি? আবার কল করেছেন কেন?”
“তুমি এখনো নাকি রিসিভ করনি গিফটটা? ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে তো বাইরে।”
“বলেছি না আমার কোনো গিফট লাগবে না। আপনার গিফটের কোনো প্রয়োজন নেই আমার। শুনেছেন?”
“আচ্ছা, রাগ আমার উপর থাকুক। গিফটটা তো রিসিভ করো। রাত হয়েছে, কতক্ষণ আর দাঁড়িয়ে থাকবে! ছেলেটা বাসায় যাবে তো আবার।”
শারমায়া কল কেটে দিলো আবার। অসহ্য লাগছে সব! সে চোখ মুছে গরম মেজাজেই হনহনিয়ে বেরিয়ে এলো রুম থেকে। মেইন ডোর খুলে ওপাশে অফিসের ছেলের জায়গায় রজনীগন্ধা ও গোলাপের সমন্বিত একটা বু’কে হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো জোভানকে। জোভান তার রাগান্বিত চেহারায় তাকিয়ে মুচকি হাসির রেখা প্রশস্ত করে বু’কে টা এগিয়ে দিয়ে বললো,
“আই লাভ ইউ সো মাচ।”
শারমায়া রাগান্বিত হয়ে বিড়বিড় করতে করতে দরজা লাগিয়ে দিতে চাইলো,
“মিথ্যে বলছে কেন, আজ জায়গা দিবো না তো ঘরে।”
জোভান জিভ কেটে দ্রুত দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে ফেললো। শারমায়ার কান্না পাচ্ছে ভীষণ। সে দরজা ছেড়ে দিয়ে হনহনিয়ে রুমে চলে গেলো। জোভান দ্রুত ভেতর থেকে মেইন দরজা লক করে ছুটে চললো শারমায়ার পিছু পিছু। শারমায়া ঘুমানোর জন্য কাঁথা ছড়িয়ে নিয়েছে। জোভান রুমের দরজা চাপিয়ে তাকে খাটে উঠতে বাঁধা দিলো। তার হাত ধরতেই শারমায়া হাত ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করলো। জোভান বললো,
“এতো রাগ করে না সুইটহার্ট। আমি জাস্ট দেখতে চেয়েছিলাম, কখনো এমন হলে তোমার রিয়েকশানটা কেমন হতে পারে।”
শারমায়া তার হাত ঝাড়ি মেরে ছুটিয়ে বললো,
“কিসের রিয়েকশান? আপনি মিথ্যে বললেন কেন আমাকে? আমার ইমোশন নিয়ে খেলতে আপনার বেশ মজা লাগে?”
“মাই লাভ, এমন কিছু না। আমি সত্যিই শুধুমাত্র দেখতে চেয়েছিলাম যদি কখনো জরুরী কাজে আটকে যেতে হয় তুমি কেমন রিয়েক্ট করো।”
“মিথ্যে বলে, এসব করে করে আপনি আমার পরীক্ষা নিচ্ছেন? আপনি যদি বলতেন ফিরতে ফিরতে তিনটা বেজে যাবে, তবুও আমি অপেক্ষায় বসে থাকতাম। একটুও রাগারাগি করতাম না যে এতো দেরি কেন হলো। আপনি মিথ্যে বলে আমার ইমোশন নিয়ে খেলেছেন।”
বলতে বলতে শারমায়া শব্দযোগে কেঁদেই উঠেছে এবং কান্না জোভানের বুকে চাপাতে নিজেই জড়িয়ে ধরেছে। জোভান বুঝতে পেরেছে ফোনে তখন চলে যাওয়ার ব্যাপারটা জেনে যেই রাগটা জমেছিলো, তাকে সামনে দেখে সেটা বিলীন হতে চলেছে। তাই মৃদু হেসে তার নিয়ে আসা গিফট খাটে রেখে প্রিয়কে দু’হাতে জড়িয়ে নিলো এবং মাথায় চুমু একে দিয়ে বললো,
“টুকটুকির আম্মু, তুমি যা ভাবছো তেমন কিছুই না। টুকটুকির আব্বু তোমাকে কতটা ভালোবাসে তুমি জানো না? তোমার পরীক্ষা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে আমার? তুমি ভালো স্টুডেন্ট হলেও আমার, পঁচা স্টুডেন্ট হলেও আমারই।”
শারমায়া শার্টসহ তার পিঠে খামচে ধরে বললো,
“আমি পঁচা স্টুডেন্ট? জয় স্যার, জয় স্যার করে জাতি পাগল। কিসের জয় স্যার হয়েছেন আপনি? এই পাঁচ বছরে কি শিখিয়েছেন আমাকে?”
“এটা বলতে পারলে তুমি? কিছুই শেখাইনি আমি তোমাকে? প্রেমটা কি তুমি আমার কাছে শেখোনি?”
শারমায়া কান্নার মাঝেই ফিক করে হেসে উঠে তাকে ঠেলে সরিয়ে দিতে চাইলো। জোভান গাল গড়িয়ে পড়া অশ্রু মুছে দিয়ে কপালে উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে বললো,
“টুকটুকির আম্মু, শার্টটা খুলে দাও না।”
“পারবো না। ছাড়ুন।”
“পারবে না?”
“না।”
জোভান হুট করেই ঠোঁটে উষ্ণ ছোয়া দিয়ে বললো,
“ভালোবাসি তো। আরও লাগবে?”
শারমায়া লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলেছে। জোভানের দুষ্টুমি থেকে রক্ষা পেতে সে দ্রুত শার্টের বোতাম খুলে দিলো। জোভান তার গিফটটা আবার হাতে তুলে এগিয়ে দিতেই শারমায়া ঠোঁটে সামান্য মুচকি হাসির রেখা ফুটিয়ে নিয়ে নিলো। ড্রেসিং টেবিলের দিকে যেতে যেতে তাজা ফুলের গন্ধ নিয়ে সাদা গোলাপে ঠোঁট ছুয়ে দিলো। যদিও জোভানের দৃষ্টির অগোচরে দিয়েছে কিন্তু ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় জোভান দেখে ফেলেছে। তাই বললো,
“ওটা আমাকে দিলে কি হতো?”
শারমায়া জিভ কেটে বু’কে টা ড্রেসিং টেবিলের সামনে রাখতে রাখতে বললো,
“আপনার শাস্তি পাওনা আছে।”
জোভান মুচকি হেসে বললো,
“খাবারের প্লেট এখানে নিয়ে এসো। খায়িয়ে দিবো।”
“একদম না। টেবিলে গিয়ে খাবেন।”
“আমি খায়িয়ে দিবো তোমাকে।”
“না। যা বলছি তা করুন। আমি খাবার দিচ্ছি, হাত মুখ ধুয়ে টেবিলে আসুন।”
শারমায়া বেরিয়ে গেলো। জোভান ফ্রেশ হয়ে টেবিলে খেতে এলো। জুলেখা ইয়াসমিন বেরিয়ে এসেছেন রুম হতে।
“এতোক্ষণে ফিরলি! খাবার গরম করতে হবে, শারমায়া?”
“না, মা। গরমই আছে। তুমি ঘুমিয়ে থাকো।”
জোভান বললো,
“মাথা ব্যাথা কমেছে তোমার?”
“হুম, শারমায়া তেল লাগিয়ে দিয়েছিলো। এরপর কমেছে অনেকটা।”
“বাবা ঘুমিয়ে পড়েছে?”
“হুম, এতোক্ষণ বই পড়ছিলো। এখন ঘুমিয়েছে।”
“তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো।”
জুলেখা ইয়াসমিন চলে গেলেন। শারমায়া প্লেটে খাবার দিয়ে জোভানের পাশের চেয়ারেই বসলো। জোভান প্রথম লোকমা শারমায়ার মুখের সামনে ধরতেই শারমায়া ব্রু সামান্য কুচকে তাকালো। জোভান মুচকি হেসে মুখে নিতে ইশারা করলো। শারমায়া মুখে নিয়ে নিলো খাবার। দ্বিতীয় লোকমা নিজের মুখে দিয়ে তৃতীয়টা আবার শারমায়ার দিকে এগিয়ে দিলো। শারমায়া বললো,
“এটাই লাস্ট।”
“ইশ! এতো কন্ডিশন!”
“আপনার শাস্তি এখনো বাকি আছে।”
“ওকে, নাও।”
শারমায়া মুখ চেপে হেসে খাবার মুখে নিয়ে নিলে জোভান ঠোঁটের কোণে দুষ্টুমি হাসি ফুটিয়ে বললো,
“খাওয়া শেষ করো, এরপর সব শুধরে নিচ্ছি।”
.
পরবর্তী শুক্রবার সকাল দশটার দিকে শারমায়া ও জোভান চলে এসেছে শারমাদের বাসায়। দুপুরে শারমায়ার শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে ইফাজের বাবা ও মা আসবে। এতোসব আয়োজন দেখে সাফওয়ানার মুড অফ হয়ে আছে যেটা সকাল থেকেই লক্ষ্যনীয়। যোহরের আযান পড়লে জোভান মসজিদে চলে গেলো। শারমিন সাফওয়ানাকে গোসল সেড়ে নিতে বললো। মায়ের সাথে শারমায়া রান্নাবান্নায় লেগে আছে। রান্নার ফাঁকে আবার ঘরটাও গুছিয়ে নিলো ঠিকমতো। কিছুক্ষণ পর কলিং বেল বেজে উঠলে শারমায়া কিচেন থেকে বেরিয়ে এলো দরজা খোলার জন্য। দেখলো সাফওয়ানা খুলে দিচ্ছে। নামাজ শেষ করে জোভান ও সাখাওয়াত সাহেব এসেছেন। শারমায়া সাফওয়ানার উদ্দেশ্যে বললো,
“গোসল করে মাথাও মুছেনি! চুল বেয়ে পানি পড়ছে কেন! নতুন জামা পরে রেডি হয়ে থাক। পরে মেহমান এলে সম্ভব না-ও হতে পারে।”
সাফওয়ানা শারমায়ার রুমের দিকে যেতে যেতে বললো,
“আপু, কিছু কথা ছিলো। রুমে এসো।”
“কি?”
শারমায়া সাফওয়ানার পিছু পিছু রুমে এলো। ওদিকে সাখাওয়াত সাহেব নিজের রুমের দিকে গেলে জোভান শারমায়ার রুমে এলো তাদের পিছু পিছুই। তবে সে তাদের এতোক্ষণ বলা কথা শোনেনি কিছুই। সাফওয়ানা রুমে এসে দৃষ্টি নত রেখেই গোমড়ামুখো হয়ে বললো,
“আমি মেহমানদের সামনে যেতে পারবো না।”
“কেন?”
“এমনি।”
“এমনি মানে!”
পেছনে জোভানকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে শারমায়া বললো,
“ওইযে, শুনো কি বলে। সে নাকি যেতে পারবে না মেহমানের সামনে।”
“কেন? কি হয়েছে?”
সাফওয়ানা বললো,
“ভাইয়া, আমার ভালো লাগে না এসব।”
“আরে বোকা, উনারা তো দূরের কেউ না। আমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ই। আসছেন বেড়াতে। তোমার কোনো সাজুগুজু করার প্রয়োজন নেই। নরমালই থাকো, নরমাল আচরণ করবে। ইটস এনাফ।”
“বেড়াতে আসুক বেড়াবে। তবে বিয়ের ব্যাপারে কথা বললে নিষেধ করে দিবেন। আমি এখন বিয়ে টিয়ে করবো না।”
কথার সাথে সাথে সাফওয়ানার গলা একরকম ধাধিয়ে এসেছে। জোভান বললো,
“ও… এই কথা! তাদের পছন্দ হয়ে গেলে, বাবা মা চাইলে বিয়ে ঠিক করে রাখবো। সমস্যা কি?”
“পছন্দ হলেও আমি রাজি না। নিষেধ করে দিবেন।”
এসময় তার এমন ভঙ্গিমা মোটেও পছন্দ হচ্ছে না শারমায়ার। সে বললো,
“কেন তোর সমস্যাটা কি? সেটা বল আমাকে?”
সাফওয়ানা জবাব না দিয়ে মেঝের দিকে তাকিয়ে হাত কচলাচ্ছে। শারমায়া বললো,
“চুপ করে আছিস কেন?”
“আমি একজনকে পছন্দ করি, আপু।”