মশারি পর্ব-১৩

0
1024

বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প:

♠♥♠ #মশারি ♠♥♠

♣♣পর্ব :১৩

গল্পকার : #গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
!
তারপর ঘড়িতে দেখি রাত ১০:৪৫ মিনিট।
আমি রুমে যাবো তখনি সায়লা বললো নিউজ আছে ভাবী””””
আমি বললাম কি””””””””
!
সায়লা : জানো ভাইয়া তোমার জন্য না হালকা আকাশি রংয়ের শাড়ী কিনেছে মনে হয়।
!
!
আমি : তুমি কি করে জানলে ?
!
!
সায়লা : ভাইয়া যখন খাবার খাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হয়। আর অমনি আমি রুমে ঢুকি। রুমে ঢুকে আলমারি খুলতেই শপিং ব্যাগটা দেখি। শপিং ব্যাগটা একটু ফাঁকা করে দেখলাম হালকা আকাশি রংএর কিছু একটা। তাই ভাবলাম শাড়ী ছাড়া আর কি হবে।
!
!
আমি : তা তুমি ভাল করে দেখনি কেন?
!
!
সায়লা : ভাল করেই তো দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দরজার শব্দ পেয়ে তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে পড়ি।
যাই হোক ভাবী আজ তোমাকে ঐ শাড়ীতে কি হট যে লাগবে। ভাইয়া আমার তো জ্বলেই যাবে আজ।
!
!
আমি : যাও এসব কি যে বলছো। আমার তো মনে হয় মা বাবার তোমাকে বিয়ে দেওয়াটাই ফরয ছিল।
!
!
আমি সায়লাকে good night বলে রুমের দিকে যাচ্ছি।
আজ মনটা খুশি খুশি লাগছে।
( আপনারা ভাবছেন শাড়ীর জন্য। তা মোটে ও না)
আমার খুশি লাগছে #মশারি তো ছিড়ে গিয়েছে। তাই আমাকে আজ #মশারি টানাতে হবেনা আর #মশারির নিচে ঘুমাতেও হবে না।
!
না থাকবে বাঁশ
আর না বাজাবে বাঁশুরি”””””
!
রুমে ঢুকেই দেখছি রুমটা অন্ধকার। তাই আস্তে আস্তে রুমের ভিতর ঢুকলাম।
হঠাৎ বারান্দা থেকে আমার কানে গানের সুর ভেসে আসলো।
গানটা ছিল””””
!
তুমি যে আমার কবিতা
আমারো বাঁশিরো রাগিনী
আমারো স্বপন আজো জাগোরন
চিরদিন তোমারে চিনি
তুমি যে আমার কবিতা “”””””
!
!
আমি মুগ্ধ হয়ে গানটা শুনছিলাম ।
আমার মনে হচ্ছিল যেন,গানটা আমার জন্যই গাইছে। খালি গলায় কারো গান এতোটা সুন্দর হতে পারে। আমি কোনদিন কল্পনাই করিনি। আমি চুপ মেরে শুনছি, যা তে সে বুঝতে না পারে। আমি গান শুনেছি। তবে তো গানটা ও থামিয়ে দেবে আর পরে তাকে গান গাওয়ার ছুতো দিয়ে মশারিও টানাতে পারবো না।
এরই মাঝে গানটা থেমে গেল। আমিও তাড়াতাড়ি রুমের লাইট জ্বালালাম।
যা তে সে বুঝে আমি কেবলই রুমে প্রবেশ করলাম।
সাহিল বারান্দা থেকে রুমে আসলো। আর বললো আমি তো ভেবেছি আপনি সকালের নাশতা করেই রুমে আসবেন।
এই আমার জন্য কি আপনার একটুও মন পুড়ে না।
!
!
আমি : আমার মনটা কি বারবিকিউ এর তান্দুরী মুরগী যে আপনার জন্য পুড়বে।
!
!
সাহিল : ইস্ ! তনুটাকে জাস্ট আমার মাইর দিতে ইচ্ছা করতেছে। আমার কাছে কত কিছুই না বলছে আপনার সম্পর্কে। কিন্তু আমি তো দেখছি সবি জিরো।
!
!
আমি : মুখ সামলে কথা বলুন। আপনার এত বড় সাহস আমার জানের জান তনুকে আপনি মাইর দিবেন। আর হ্যা ও যা বলবে আর আপনি তাই বিশ্বাস করবেন।
আপনার মাথায় কি নিজস্ব ঘিলু বলে কিছুই নেই।
শোনেন অনেক রাত হয়েছে আমি এখন ঘুমাবো।
!
!
সাহিল : হুম ! সবি আমার কপাল। মানুষ বিয়ে করে কিসের জন্য, আর আমি করলাম কিসের জন্য।
!
এই বলে আলমারি থেকে শপিং ব্যাগটা হাতে দিয়ে বললো এটা Only for you.
!
!
আমি : এটাতে কি আছে ?
!
!
সাহিল : খুললেই দেখতে পাবেন।
!
!
আমি প্যাকেট টা একটু খুলেই দেখছি নেট কাপড়ের যেন কি””””
মনে মনে ভেবে মরছি যদি নেটের শাড়ী হয়। আর আমাকে পড়তে বলে তবে আমি কি করবো “”’?
!
তারপর খুলে দেখে তো ৮৮০ ভোল্টর কারেন্টের ঝটকা খেলাম”””’
এ মা এ কি ?
!
শাড়ী না #মশারি””””””
!
!
সাহিল : জ্বী ম্যাম এটা শাড়ী না # মশারি।
তাও আবার ম্যাজিক #মশারি।
!
!
আমার তো রাগে কান্না পাইতেছে। শালা ফাজিলকুমার, বদমাইশ তোরে তো আমার শীল নোরায় পিষতে ইচ্ছে করছে।
আল্লাহ গো এই কি ছিলো তোমার মনে।
এজন্যই তো লোকে বলে””’
!
আশা করছি দুনিয়া জুড়িয়া
আর আল্লাহ রাখছে বেগুন পুইড়া””””””‘
!
সবি আমার কপাল।
মনে মনে বলি, কপালে যে আছে কি ঠকঠকাইলে হবে কি”””‘
!
!
আমার বরের এর পরের কথা শুনে তো মনে হল, কানের কাছে বাজ পড়লো।
!
!
সাহিল : দুষ্ট বউ আমার #মশারি টা টানিয়ে দেওনা সোনা।
!
!
ন্যাকা ষষ্ঠী ! ন্যাকামো করে আবার সোনা ডাকা হচ্ছে। আর দুষ্ট বউ বলছিস। আমি যদি দুষ্ট বউ হই নিজে তো এক নাম্বারের খাটাশ, পিচাশ, তেলাপোকা।
!
!
সাহিল : সোনা মনে মনে বকা শেষ হলে, প্লিজ #মশারি টা টানিয়ে দাওনা।
!
!
আমি : #মশারি টা টানাতে হবে কেন?
আপনিই তো বললেন এটা নাকি ম্যাজিক #মশারি।
তাই এটা একা একা যা হবার হবে।
!
!
সাহিল তো হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি দিচ্ছে।
ওর দাঁত ক্যালানো হাসি দেখে রাগে শরীর পুড়ে যাচ্ছে।
মনে হয় দিয়াশলাইটের কাঠি আমার শরীরে ধরলে,
এমনি তেই ফাত করে জ্বলে উঠবে।
আমি চুপচাপ মশারি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছি। আর ভাবছি ১টা গান শোনাতে বলি । তাই নিজে নিজেই শুড়শুড় করে #মশারি টানাবে।
!
ও আল্লাহ! এ দেখি গান ধরলো””””
!
আমার বউ ক্যানে কথা কয় না”””!!
আমার বউয়ের কি জামাই পছন্দ হয় না “””‘
!
গানটা শুতেই আমি ফিক করে হেসে উঠলাম।
এটাও নাকি গান হি হি হি।
!
সাহিল গান গাওয়া বাদ দিয়ে আমার হাসি দেখছিল।
এমনভাবে তাকিয়ে ছিল। যেন জীবনেও কোন মেয়েকে হাসেতে দেখেনি কোনদিন।
এভাবে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে থাকলে আমার বুঝি লজ্জা করেনা ।
আমি লজ্জায় আমার চোখ নামিয়ে হাসি বন্ধ করলাম।
!
!
সাহিল আমার কাছে এসে বললো । এভাবে হাসলে তোমাকে কতটা মিষ্টি লাগে। তা না তুমি সব সময় দুষ্ট দুষ্ট মুখ করে রাখো।
!
!
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম।
ও আমার কানে কানে বললো, #মশারি টানাতে যখন তোমার ভালই লাগে না। তবে আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে।
!
!
আমি খুব আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি”””?
!
যা শুনালো তাতে তো আমার মুখ হা হয়ে মশা ঢোকার অবস্থা।
!
!
বলে কিনা বাম্পার অফার।
#মশারির চার কোনা লাগানোর জন্য নাকি তাকে
চারটা “”””Kiss♥♥♥
করতে হবে।
তাও আবার কপালে দুই গালে আর ঠোঁটে।
!
!
আমি মনে মনে বলি তোর অফারের
গুষ্টি কিলাই!”””””
!
আমি নিজেই মশারি টানালাম। আর ভাবছি, আমি যে দান দিতে চাই, সেই দান আমারি উল্টা পড়তেছে।
ভাল্লাগেনা ! এ পৃথিবী বড়ই নিষ্ঠুর।
!
লাইট বন্ধ করতে যাবো, তখন দেখছি।
তিনি সেই বোতামওয়ালা গেন্জ্ঞিটা পড়ছে।
!
আমি : এই শোনেন স্বামী মহাশয়, আপনার এ গেন্জ্ঞিটা চেন্জ্ঞ করে ঘুমান।
!
!
সাহিল : আহা! আহ! আমার বউয়ের কথা শুনিয়া আমি বড়ই প্রশান্তি পাইলাম। আমার বেগম আপনি বলিলে তো, আমি গেন্জ্ঞি না পড়িয়াও ঘুমাতে পারি।
!
!
আমি : ড্রামাবাজ কোথাকার। আর হ্যা আপনি এত বেহায়া কেন? লজ্জা শরম কি সব ভাঙ্গুরির দোকানে বিক্রি করে দিয়েছেন ।
রুমের বাহিরে তো দেখা যায় শান্তশিষ্ট কিন্তু রুমের ভিতরে আসলেই তো লেজ বিশিষ্ট।। “””’
!
!
সাহিল হি হি হি করে বলছে, শোন দুষ্ট বউ পুরুষ মানুষ তিনটা জায়গায় লজ্জা করলে, সে জীবনে ও কিছু করতে পারবে না। যেমন
★ বউ
★খাবার
আর
★ডাক্তার
বুঝলে। আর হ্যা এই গেন্জ্ঞিতে সমস্যা কি ?
!
!
আমি : ১ম ত আমাকে দুষ্ট বলবেন না। কারন আমার নাম #তাসফিয়া তিলোত্তমা মিষ্টি। এই তিন নামের যে কোন নাম ধরে ডাকতে পারেন। আর যদি আপনার সুগারে পবলেম থাকে আপনি মিষ্টি নাম বাদ দিতেই পারেন।
আর ২য় ত আপনার গেন্জ্ঞির বোতামে আবার যদি আমার চুল আটকায়। সে জন্য।
!
!
সাহিল : ১ম ত আমি আপনাকে দুষ্ট বউ বলেই ডাকবো । কারন আমি আমার বউকে শ্পেশাল নামেই ডাকবো।
২য় ত আপনার নুডুলস্ এর মত চুল যদি, কাটা চামচ ভেবে আমার বোতামে আটকায় তবে আমার কি করার।
!
!
আমি : কি আমার চুলগুলো নুডুলস্ এর মত। হায় আল্লহ রাতে ক্ষিধে পেলে আমার চুলগুলো না খেয়ে নেয়।
!
!
আমি আর তার সাথে বকবক করলাম না। রাত ১২ টার বেশি বেজে গিয়েছে। তাই লাইট অফ করে শুয়ে পরলাম।
!
!
রাতে দেখছি আমার পিঠে যেন কি যেন বিড়বিড় করছে । পরে বুঝলাম বজ্জাতটা পিঠে হাত দিয়ে শুড়শুড়ি দিতে চাইছে। অমনি আমি তার হাতে জোরে একটা চিমটি মেরে দিলাম।
এমন জোরে মেরেছি, যদি হাতে নখ থাকতো তবে তো ২৫০ গ্রাম মাংস নিশ্চিত নখের সাথে ওঠে আসতো।
!
সাহিল ব্যাথা পেয়ে বলে, ওহহহহহহহ”””””””” বউ আমার ডাকাত নাকি ?
!
আমি বললাম ভালভাবে ঘুমান। তা না হলে রাতের বেলায় ঘুঘু দেখিয়ে দিবো””‘
!
ঘুঘু দেখেছেন ফাঁদ দেখেনি “”””””
!
!
তারপর চুপচাপ দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে উঠে প্রতিদিনের মত আজকের দিনটাও কেটে রাত আসলো।
!
রাতে তো আমার জন্য কি যে অপেক্ষা করছে আল্লাহ জানে”””””””
!
!

চলবে””””””‘

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here