#অবশেষে ভালোবাসি❤পার্টঃ৮+শেষ পার্ট
#writer:রোদেলা❤
রিয়াদঃ হ্যালো??
…………………….
রিয়াদঃহ্যালো??
ওপাশে কেউ একজন কান্না চাপার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা রিয়াদ বুঝতে পারে।।।রিয়াদের বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠলো।।।।সাদিয়া কাঁদছে!!!!!
রিয়াদঃ সাদিয়া??কি হয়েছে??? কিছু বলো,,,,,প্লিজ।।কাদঁছো কেনো??
সাদিয়াঃ (এবার ফুপিয়ে ওঠলো,,,নিজেকে সামলাতে পারলো না)
রিয়াদ অস্থির হয়ে ওঠেছে।।জানে না,,,এই অস্থিরতার কারন কি? শুধু জানে কান্নারত সাদিয়ার কন্ঠ শোনা তার পক্ষে সম্ভব না।।।অদিতির সাথে রিলেশনের একবছর হতে চললো,,,,,এখনো সাদিয়া কাদঁলে রিয়াদের মনটা আগের মতোই অস্থির হয়ে ওঠে,,, এটা রিয়াদেরও জানা ছিলো না।।আর সহ্য করতে না পেরে,,,,,
রিয়াদঃ প্লিজ সাদিয়া,,,স্টপ ক্রায়িং,,,এন্ড সে সামথিং ডেমেড(একটু জোরে)
সাদিয়াঃ রি,,,য়া,,য়াদ,,,,,বা,,,বা,,,বাবা(হেচকি দিয়ে)
রিয়াদঃ বাবা?মানে আঙ্কেল??কি হয়েছে আঙ্কেলের??
সাদিয়াঃ রিয়াদ,,বাবা স্টোক করেছে,,,মা বাবাকে হসপিটালে নিয়ে গেছে।।।বাবার অবস্থা ভালো নয় রিয়াদ।।।আমি বুঝতে পারছি না কি করবো।।।আপুও দুলাভাইয়ের সাথে দেশের বাইরে আছে।।।।মা ওখানে একা।।।আমি এক্ষুনি চট্টগ্রাম যাবো,,,তুমি আমাকে নিয়ে চলো প্লিজ(অঝরে কাদঁছে)
রিয়াদঃ সাদিয়া শান্ত হও ,, প্লিজ।।।।এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না,,
সাদিয়াঃ রিয়াদ,, তুমি বুঝতে পারছো না,,,,আমার বাবা হসপিটালে।।।ডাক্তার বলেছে অপারেশন করা লাগবে।।অবস্থা খারাপ।।আর তুমি আমাকে শান্ত হতে বলছো??না আমি এই মূহুর্তে যাবো,,,তোমার প্রবলেম থাকলে ইটস ওকে আমি একা চলে যেতে পারবো।।।
রিয়াদঃ এতো বেশি বুঝো কেন??আমি কি তোমাকে বলছি নিয়ে যাবো না??এই রাতে একা চট্টগ্রাম যাবা??সাহস কেমনে হয় তোমার??দিবো একটা কানের নিচে লাগিয়ে,,,,,পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমি আসছি,,,,তুমি বের হও।।।
সাদিয়ার দাদুবাড়ি চট্টগ্রাম।।সাদিয়ার বাবার চাকরির সুবাদেই ওদের ঢাকায় থাকা।।।সাদিয়ার বাবার ইচ্ছা,,, শেষ বয়সটা নিজের পৈতৃক বাড়িতেই কাটাবে,,,তাই রিটায়ার হওয়ার পর পর চট্টগ্রাম সিফট্ হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল।।।কিন্তু হঠাৎ নাদিয়ার বিয়ে ঠিক হওয়াতে আর যাওয়া হয়নি।।।।তাই নাদিয়ার বিয়ের পর পরই ওরা সিফট্ করে,,,,,, সাদিয়া পড়াশুনা কমপ্লিট করার জন্য ঢাকায় থেকে যায়।।।।এবার গল্পে ফেরা যাক,,,
রিয়াদঃ হুম চলো,,,ট্রেনের টিকিট করে ফেলেছি।।।৮ টায় ট্রেন,,,৭:৪০ বাজে তাড়াতাড়ি চলো।।।
সাদিয়াঃ হুম চলো।।
রিয়াদ আর সাদিয়া ট্রেনে ওঠে গেলো।।রিয়াদ সাদিয়ার একাকিত্ব দূর করতে গিয়ে যে,অদিতিকে একা ফেলে রেখে এসেছে তা ওর মাথাতেই নেই।।।রিলেশনশিপের ১বছর পূর্তিতে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ঠিক আটটায় রিয়াদকে রেস্টুরেন্টে ডেকেছিলো অদিতি।।।রিয়াদ অদিতির কাছে যাওয়ার জন্য তৈরিও হয়েছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত রিয়াদের পদক্ষেপটা সাদিয়ার দিকেই এগিয়ে গেলো,,,,আর অদিতি পরে রইলো মনের একটি কোনে নিরবে।।।।রাত দশটা বেজে গেছে অদিতি এখনো ফাঁকা রেস্টুরেন্ট টাতে বসে আছে হাজারো দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে।।।রিয়াদের কিছু হলো না তো?ফোনটা কেনো তুলছে না??কতো হাজারো প্রশ্ন।।।কিন্তুমেয়েটা জানে না ঠিক একই সময়ে তার ভালোবাসার মানুষটি অন্য একটা মেয়ের কান্না থামাতে ব্যস্ত,,,অন্য একটা মেয়ের মুখে হালকা খাবার তুলে দেওয়ার চিন্তায় মগ্ন।।মাঝরাতে কোনো মেয়ে যে তার জন্য অস্থির হয়ে ওঠছে,,,,তার একটা কল বা মেসেজের আশায় ঘুম শূন্য চোখে বসে আছে,,,,,সে খেয়াল তার নেই।।
★ ★ ★
আজ ৮ দিন হতে চললো।।।সাদিয়ার বাবা এখন অনেকটায় সুস্থ।।নাদিয়ার পাঠানো টাকায় অপারেশনও হয়ে গেছে ঠিকভাবে।।।এই কদিন রিয়াদ ওদের সাথেই ছিলো বাড়ি যায় নি।।।ঘরের ছেলের মতো সবদিক খেয়াল রেখেছে।।।ওর ওপর ভরসা রেখেই সবাই নিশ্চিত।। সাদিয়ার বাবা-মা রিয়াদের প্রশংশায় পঞ্চমুখ।।সাদিয়াও এ কদিনে রিয়াদের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।।সাদিয়ার সেনসিটিভ পয়েন্ট হলো ওর বাবা।।।আর রিয়াদ ওর বাবা – মার যে খেয়াল রাখছে তাতে সে দু্র্বল হতে বাধ্য।।নিজেকে আটকে রাখার ক্ষমতা আর তার নেই,,, ভালোবেসে ফেলেছে সে রিয়াদকে।।আজ রিয়াদ-সাদিয়া ঢাকায় ফিরছে।।।এই আটদিনে রিয়াদের অদিতির কথা মনে পড়ে নি।।।।তার ফোনে যে হাজারো মিসডকল আর মেসেজের ছড়াছড়ি তা তারর চোখে পড়েনি।।বাস্তবতা কতো নির্মম।।রিয়াদ সাদিয়াকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ফিরে যাচ্ছিল হঠাৎ সাদিয়া ডেকে ওঠলো,,,,
রিয়াদঃ কিছু বলবে?
সাদিয়াঃ বলছিলাম,,,,চার বছর আগের অফারটার মেয়াদ কি এখনো আছে নাকি এক্সপায়ারড্ হয়ে গেছে?
সাদিয়া কথাটা বলেই মুচকি হেসে চলে গেলো।।রিয়াদ যতোক্ষণে বুঝতে পারলো ততক্ষণে সাদিয়া ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।।।রিয়াদ যেন ফ্রিজড হয়ে গেছে।।নড়ার ন্যূনতম শক্তি আজ তার নেই।।।সাদিয়া কি বললো এটা? সাদিয়া ওকে ফিরে চায়?নিজের কানকে সে বিশ্বাস করতে পারছে না।। রিয়াদের চোখ টলমল করছে,,,চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে,,,এই কান্নাটা প্রাপ্তির।।১২ বছর ধরে যে মেয়েটিকে সে শুধু ভালোই বেসে এসেছে সেই মেয়েটি আজ তার দিকে হাত বাড়িয়েছে।।।।এর চেয়ে প্রাপ্তি আর কি হতে পারে???হঠাৎ মুঠো ফোনটা কেঁপে ওঠলো,,,ফোনে ভেসে ওঠা নামটা দেখে রিয়াদ চমকে ওঠলো।।।মনে পড়লো অদিতির কথা।।ফোনটা কেঁপেই চলেছে যেন তারা রিয়াদের অনুভূতিগুলোর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।।রিয়াদ ফোনটা না তুলে অফ করে ফেললো,,,অদিতির মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা আজ তার নেই।।
রিয়াদ ৩ ঘন্টা যাবৎ শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে আছে।।।কি করবে সে জানে না।।হাজারো প্রশ্নের মাঝে সে ঘোমড়ে মরছে।।আজ তার খুশির দিন নাকি দুঃখের সে তা বুঝতে পারছে না কিন্তু এটা বুঝতে পারছে সে আজ কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি।।।সে কাকে বেঁছে নিবে?সাদিয়াকে তো সে ছাড়তে পারবে না,,,সাদিয়া ওর রক্তে মিশে আছে,,পারবে না ছাড়তে।।। আবার অদিতির হাতটাও তো এভাবে মাঝপথে ছেড়ে দিতে পারে না,,,,মেয়েটা যে ওকে খুব ভালোবাসে।।।।ওওফফফ্ আর ভাবতে পারছে না রিয়াদ।।সে আজ নির্বাক।। শাওয়ার শেষে বিছানায় গাঁ এলিয়ে দেয়।।।শরীর নয় মনটা আজ অনেক ক্লান্ত তার।চোখটা ঘুম শূণ্য।।একটা উত্তরের আশায় নির্ঘুম রাত।।
★ ★ ★
সকালে ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হতেই অবাক হলো রিয়াদ।।অদিতি বিছানায় বসে আছে।।।মেয়েটার মুখটা মলিন হয়ে আছে।।।খুব রোগাটে হয়ে গেছে।।মুখটা শুকনো।।চোখের নিচে কালি।।
রিয়াদঃ অদিতি?তুমি এখানে?এতো সকালে?
অদিতি ঃ তুমি বাধ্য করলে আমায়।
রিয়াদঃ মানে?
অদিতিঃ মানেটা কি তুমি সত্যিই জানো না??নাকি ইচ্ছা করেই জানতে চাচ্ছো না?
রিয়াদঃ কি বলছো,, বুঝতে পারছি না।।
অদিতিঃ আটটা দিন রিয়াদ,,,, আটটা দিন কেটে গেলো তুমি একটা ছোট্ট মেসেজ দিয়েও জানতে চাও নি আমি কেমন আছি?এতো অবহেলা কেন রিয়াদ?জানতে পারি কি?
রিয়াদঃ সরি। বিজি ছিলাম।
#চলবে,,,,,
।
।
#অবশেষে ভালোবাসি❤
#writer: রোদেলা❤
#শেষ পার্ট
অদিতিঃ বিজি??হাহাহাহা,,,হাসালে এতো বিজি ছিলা যে ফোনটা তুলে ” আমি বিজি আছি” বলার সময়টাও তোমার হয়নি?এতো বিজি ছিলে যে,,একটা মেয়ে যে মাঝরাত পর্যন্ত রেস্টুরেন্টের এক কোনে বসে ছিলো শুধু তোমার আশায়,,,তা তোমার মনে উদয় হয়নি?এতো বিজি ছিলে যে,,,কেউ একজন যে তোমার চিন্তায় আটটি নির্ঘুম রাত্রি কাটিয়ে দিলো তা তোমার মাথায় আসে নি?এটা ব্যস্ততা নাকি অবহেলা,, বুঝতে পারছি না।।।আমাকে বুঝাবে প্লিজ?
রিয়াদঃ (চুপ,,,,,)
অদিতিঃ না রিয়াদ না,,,,আজ নয় প্লিজ।।।আজ চুপ থেকো না,,,আজ আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে তুমি বাধ্য।।।প্লিজ বলো,,,,সত্য শোনার সাহস আমার আছে কিন্তু তোমার মিথ্যা সান্তনা সহ্য করার ধৈর্য্য আমার নেই।।প্লিজ রিয়াদ প্লিজ।।।আজ আমি আমার সব উত্তর জানতে এসেছি।।কেনো এতো অবহেলা কেনো??প্লিজ বলো প্লিজ।।।
রিয়াদঃ আদিতি আমি ক্লান্ত।।।আমি জানি না তোমাকে কি বলবো কিভাবে বলবো,,,,,আমি কিচ্ছু জানি না শুধু জানি আমি আর পারছি না।।। হাঁপিয়ে গেছি।।😒😒
অদিতিঃ হাপিয়ে গেছো?হাঁপিয়ে যাওয়ার কথা তো আমার রিয়াদ তোমার নয়,,,,,,আর কিসে হাঁপিয়ে গেলে???নাকি অন্য কাউকে পেয়ে গেছো রিয়াদ???সত্যটা যদি বলার সাহস না থাকে তাহলে তো তোমার বেঁচে থাকারই অধিকার নেই।।।কিন্তু রিয়াদ আমি ছাড়ছি না।।।।আমি আমার প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে তোমায় ছাড়ছি না।।।বলো আমায়,,,,
রিয়াদঃ (রিয়াদ অদিতিকে সব খুলে বললো।।।সাদিয়াকে প্রথমবার প্রপোজ করা থেকে শুরু করে কালকের ঘটনা পর্যন্ত)
অদিতি আর দাড়িয়ে থাকতে পারলো না।।।পড়ে যেতে নিলে রিয়াদ ধরে বিছানায় বসিয়ে দিলো।।।অদিতি রিয়াদের হাতটা ছাড়িয়ে নিলো তৎক্ষনাৎ।।রিয়াদও দূরে গিয়ে দাঁড়ালো।।।অদিতি কিছু ভাবতে পারছে না,,,,,কাকে দোষ দিবে সে??কাকে??নিজেকে??সাদিয়াকে??রিয়াদকে??নাকি নিজের ভাগ্যকে??সাদিয়াকি রিয়াদ আর অদিতির মধ্যে চলে এসেছে???নাকি অদিতি তাদের দুজনের মাঝে চলে এসেছে,,,, তা অদিতি বুঝতে পারছে না।।।তবে সে সাদিয়াকে ও দোষ দিতে পারছে না,,,কারণ সাদিয়াও তো কিছু জানে না।।।সেও তো অদিতির মতো অন্ধকারের পথিক।।।কিন্তু রিয়াদ???সে তো সব জানতো,,,কিভাবে পারলো??যদি সেদিন রাতেই রিয়াদ অদিতিকে সাদিয়ার কথা বলে দিতো তাহলে সে নিজেকে সামলে নিতো।।।কিন্তু আজ নিজেকে সামলে নেওয়ার শক্তিও সে হারিয়ে ফেলেছে।।।রিয়াদ যদি সাদিয়াকেই ভালোবাসতো তাহলে কেনো ওর হাতে হাত রেখেছিলো??কেনো??ভালোবাসার সাথে মেপে মেপে দ্বিগুণ কষ্ট আজ সে উপহার পেলো।।।তার ভাগ্যে তো এত কষ্ট থাকার কথা ছিলো না,,,,,অদিতি আর কিছু ভাবতে পারলো না,,,আজ ওর কান্না করার ন্যূনতম শক্তি পর্যন্ত নেই,,,,সে ঞ্জান হারালো।।কিছুক্ষন পরই ওর ঞ্জান ফিরলো,,,সে নিজেকে রিয়াদের কোলে আবিষ্কার করলো,,,,ঝটকা দিয়ে দূর্বল শরীরটা নিয়ে ওঠে দাড়ালো।।।আজ রিয়াদের স্পর্শ তার সহ্য হচ্ছে না,,কিছুতেই না।।রিয়াদও ওঠে দাড়ালো।।।অপরাধী চোখে তাকিয়ে আছে অদিতির দিকে।।
অদিতিঃ তো,,,মি.রিয়াদ,,,কি সিদ্ধান্ত নিলে??
রিয়াদঃ আমি বুঝতে পারছি না,,,, তুমিই বলো আমি কি করবো?
অদিতিঃ একটা প্রশ্নের উত্তর দিলেই অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে রিয়াদ।।।দিবে উত্তর?
রিয়াদঃ কি প্রশ্ন?
অদিতিঃ সত্যি করে বলো তো,,,সাদিয়া তোমার জন্য কি??
রিয়াদঃ ভালেবাসা,,,,,
অদিতিঃ আর অদিতি??
রিয়াদঃ চুপ,,,,,
অদিতিঃ প্লিজ,,, উত্তর দাও,,,
রিয়াদঃ রেসপন্সিবিলিটি,,,,
অদিতিঃ রেসপন্সিবিলিটি???হাহাহাহা,,,,তুমি তো পথটা সহজ করে দিলে রিয়াদ,,,অনেক সহজ।।
রিয়াদঃমানে???
অদিতিঃ এই একটা বছরের রিলেশনের পর আজ আমি তোমার কাছে শুধু রেসপন্সিবিলিটি?রিয়াদ,,,আমি তোমার ভালোবাসা হতে চেয়েছিলাম,,,রেসপন্সিবলিটি নয়।।।তোমাকে ভালোবেসে তোমার বুকে মাথা রাখতে চেয়েছিলাম তোমার রেসপন্সিবিলিটি হয়ে গাঢ়ে চাপতে চায় নি।।।যাও রিয়াদ,,,তুমি মুক্ত।।।
রিয়াদ শুধু তাকিয়ে আছে অদিতির দিকে।।কতো সহজে রিয়াদকে মুক্তি দিয়ে দিলো।।
অদিতিঃ তুমি ভাবছো এতো সহজে ছেড়ে দিলাম কেনো??একটা বছরের বিশ্বাসটা আজ আমার ভেঙ্গে গেছে রিয়াদ।।।তোমাকে নতুন করে বিশ্বাস করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।।।এই একটা বছরে নিজে থেকে তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসি নি রিয়াদ।।সবই যে আমার জোরাজোরি ছিলো তা আজকে বু্ঝতে পারছি।।।সাদিয়া দূরে থেকে যা করতে পেরেছে তা আমি এতো কাছে থেকেও করতে পারি নি।।।সেই ব্যর্থতা আজ আমি স্বীকার করছি।।” তুমি কখনো আমার ছিলে না” এই কথাটা আজ মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি।। একটা বছর শুধু লড়ে এসেছি তোমাকে পাওয়ার যুদ্ধে।।।আজ দরজায় অন্য কোন যোদ্ধার আগমনে আজ আমি শক্তিহারা ।।আর শক্তি নেই লড়ার,,,,এবার আমি ক্লান্ত।।।।তোমাকে,,,,
হঠাৎ দরজায় টোকার শব্দে ফিরে তাকালো দুজনেই।।।
রিয়াঃভাইয়া আসবো?
রিয়াদঃ হুম,,আয়,,,কিছু বলবি?
রিয়াঃ সাদিয়া আপু ওভাবে চলে গেলো কেন??তুই কিছু বলেছিস??আমার সাথেও তো ঠিক করে কথা বললো না।।।
রিয়াদঃ কি সাদিয়া এসে ছিলো??কখন??(অবাক হয়ে)
রিয়াঃ এইতো মাত্রই,,,
সাদিয়া এসেছিলো আর রুমে না ঢুকেই চলেগেছে ভেবেই রিয়াদের বুক কেঁপে উঠলো।।।দৌড়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।।।কিন্তু সাদিয়াকে খুজে পেলো না।।।।রিয়াদ সাদিয়ার বাসায় গিয়েও দেখলো তালা ঝুলছে।।।কোথায় যেতে পারে মেয়েটা??আর কতোটুকুই বা শুনেছে??রিয়াদ কিছুই বুঝতে পারলো না।।কি করবে সে??হঠাৎ কাঁধে হাতের স্পর্শে ফিরে তাকালো।।।অদিতি দাড়িয়ে আছে।।
রিয়াদঃ তুৃমি??
অদিতিঃ অদিতি সিলেট যাচ্ছে ,ওর ছোটো খালামনির বাসায়।।।আমার এক ফ্রেন্ড ওই বাসেই আছে।।ওর থেকে খবর পেলাম।।।আর দেরি করো না,,,চলো,,,
রিয়াদঃ চলো মানে??তুমি যাবে?(অবাক হয়ে)
অদিতিঃ (দুর্বল হাসি দিয়ে)হুম,,,নয়তো সাদিয়া হয়তো তোমাকে ভুল বুঝে মেনে নেবে না।।।আমাদের মধ্যে একজন আপাদত সুখী হোক।।তাছাড়া তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি রিয়াদ।।।আমি কষ্ট পেয়েছি তাই তোমাকেও কষ্ট পেতে দিবো তা নয়।।।এবার বেশি কথা না বলে চলো।।।
রিয়াদ কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছে না।।মেয়েটাকে দেখে অবাক হচ্ছে।।।
★ ★ ★
অদিতির মুখে ১ বছরের রিলেশন কথাটা শুনেই সাদিয়া চলে আসে।।।ওর নিজেকে খুন করতে ইচ্ছা করছে।।।ও কিভাবে পারলো এমন করতে??অদিতি আর রিয়াদের মধ্যে ওর জন্য প্রবলেম হচ্ছে।।।ছি!! ভাবতেই ঘৃনা লাগছে সে অন্য একজনের ভালোবাসা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।।।কিন্তু সে কি করে জানবে যে ওদের দুজনের মধ্যে কিছু চলছে,,,, ওকে তো ওরা কেউ বলার প্রয়োজন বোধ করে নি।।।যদি সাদিয়া জানতো তাহলে কখনো রিয়াদের দিকে পা বাড়াতো না,,,কখনো না।।।কিভাবে রিয়াদ আর অদিতির সামনে দাড়াবে সে??ওদের থেকে নিজেকে দূরে রাখতেই কাউকে কিছু না বলে সিলেট চলে এসেছে।।খালামনির বাসায় এসে কারো সাথে কথা বলেনি সাদিয়া।।সোজা রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়েছে।।।খাবার খাওয়ার জন্য অনেক ডাকাডাকি করার পরও সে নিচে নামে নি,,,দরজাও খুলে নি।।।সাদিয়া এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো রাতে।।সকালে ওঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই,,,খালামনি ছাদে পাঠিয়ে দিলো গাছে পানি দিতে।।।সাদিয়াও আর কিছু বললো না।।।খালামনির যত্নে গড়া বাগানটা বেশ সুন্দর।।এমনিতেই মন ভালো হয়ে যায়।।তাই চুপচাপ ছাদে চলে গেলো।।।গিয়েই অবাক হলো,,ছাদের রেলিং এ হেলান দিয়ে দারিয়ে আছে অদিতি আর রিয়াদ।।।সাদিয়ার যনো লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছিলো।।।ও ভাবছে হয়তো অদিতি ওকে কথা শুনাতেই এসেছে।।তাই নিচে নামার জন্য ঘুরে দাঁড়াতেই কেউ একজন হাত ধরে ফেললো,,,,
অদিতিঃ কি রে পালিয়ে বেড়াচ্ছিস কেনো???
সাদিয়াঃ……………………………….
অদিতিঃ তুই যদি ভেবে থাকিস তোর আর রিয়াদের বিয়েতে দাওয়াত দিবি না,,,,তো তুই ভুল ভাবছিস।।আমি তোর বাসার ঠিকানা জানি,,,একাই চলে যাবো(মুখে মলিন হাসি দিয়ে)
সাদিয়া যেনো চমকে ওঠলো।।অদিতি এসব কি বলছে??পাগল হয়ে গেলো নাকি???রিয়াদ তো অদিতিকে ভালোবাসে তাহলো আমাকে নিয়ে এই মজা কেন?
অদিতিঃ কি হলো চুপ কারে আছিস কেন??দিবি না দাওয়াত?
সাদিয়াঃ কি বলছিস এসব,,,,রিয়াদ তো তোকে,,,,(কাঁপা গলায়)
অদিতিঃ আরে পাগলী,,,,রিয়াদ তোকেই ভালোবাসে।।।আমি তো ১বছর ধরে চেষ্টা করেও তোর জমানো ভালোবাসাগুলো চুরি করতে পারলাম না রে,,,,,তোর ভালোবাসায় যে সিকিউরিটি সিস্টেম আছে আগে বলিস নি তো।।(ভ্রু কুঁচকে,,,হেসে দিলো)
সাদিয়া শুধু অবাক হয়ে অদিতিকে দেখছে।।কি করে পারে মেয়েটা???এতোকিছুর পরও সহজভাবে কথা বলতে???
অদিতিঃ কি হলো??আমাকে দেখা শেষ হলে তোর হিরো কে দেখ।।।আমি আর কাবাবে হাড্ডি হতে চাচ্ছি না সো বাই(জোর করে হাসলো)
অদিতি তাড়াতাড়ি নিচে নেমে গেলো।।।হয়তো আরেকটু দেরি হলে চোখের কোনের অশ্রুটা আড়াল করতে পারতো না তাই এতো তাড়াহুড়ো।।।
★ ★ ★
সাদিয়া আর রিয়াদ পাশাপাশি দাড়িয়ে আছে কারো মুখে কথা নেই।।।দুজনেই নিরব আজ।।।হঠাৎ নীরবতা ভাঙ্গলো সাদিয়া,,,
সাদিয়াঃ এই ছেলে,,,,তিন ইঞ্চি দূরে গিয়ে দাড়াও।।
রিয়াদ কিছু না বলে সরতে গেলেই সাদিয়া হাত টেনে ধরলো,,,,
সাদিয়া: কই যাও😡
রিয়াদ ঃ তুমিই তো বললা,,,তিন ইঞ্চি দূরে যায়তে।।😒
সাদিয়াঃ আগে তো কখনো আমার কথা শুনো নাই।।।দশটা চড় খেয়েও তো পিছেই পড়ে ছিলা,,,তো আজকে শুনতে হবে কেন???
রিয়াদ এবার সাদিয়াকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে,,,
সাদিয়াঃ এই তালগাছ,,,,ছাড়ো আমায়😡😡
রিয়াদঃ তুমি বললেই ছাড়তে হবে কেন??
সাদিয়াও এবার রিয়াদকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।।।আজ দুজনের মুখেই তৃপ্তির হাসি।।
রিয়াদঃ অবশেষে,,,,,,
সাদিয়াঃ ভালবাসি।।🙈🙈
সাদিয়া রিয়াদের এখন আর আমাদের প্রয়োজন নেই।।।তাই অদিতির মতো আমরাও দূরে সরে যায়,,,কাবাবে হাড্ডি হয়ে কি লাভ😁😁😁
★ সমাপ্ত ★
·