অবশেষে ভালোবাসি (সিজন-২)❤part: 44

৪৪ ও শেষ

#অবশেষে ভালোবাসি (সিজন-২)❤part: 44
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤

.
🍁
.
দরজার ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে রিয়া।তার মুখে কথা নেই।একদম চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সে।আয়ান ব্যাগ গুছাচ্ছে এই দেশটাতে আর একমুহূর্তও মন টিকছে না তার।অদিতি অন্যকারো হওয়ার আগেই এই দেশের মাটি ছাড়তে হবে তাকে।ছাড়তেই হবে!!ফাহিম অনেক বলেও আয়ানের মত পরিবর্তন করতে পারে নি।আর কি-ই বা বলবে সে?আয়ানের জন্য শেষ রক্ষাটাও তো করতে পারলো না সে।তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে বিছানার এককোণায়।মনে প্রচুর রাগ।এই রাগটা কার প্রতি তা জানে না ফাহিম।হয়তো নিজের প্রতি নয়তো অদিতি!!
.
.
অদিতির মা বিস্ময় নিয়ে স্টেজের দিকে তাকিয়ে আছে।একি! অদিতি এখানে কিভাবে?তবে কি সে যায় নি?এতোবড় ভুল মেয়েটা কেন করলো?এটা কি সত্যিই তার মেয়ে?অদিতির মা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না,মেয়েটা এতোটা শক্ত কবে হয়ে গেলো?এইতো কদিন আগেও পছন্দের কিছু না পেলে কেঁদে কেটে ঘর মাথায় করতো।মামনিও চোখ-মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছেন।চোখের কোটরে বিন্দু বিন্দু জল জমে চলেছে ক্রমাগত।তবে কি ছেলেকে দেওয়া কথাটা রাখতে পারলেন না উনি?ভালোবাসা নামক শব্দটা দায়বদ্ধতার আড়ালে ধেবে গেলো??কাজি সাহেব পাশ থেকে “কবুল” বলার জন্য তাড়া দিচ্ছেন।এখনই কবুল বলবে অদিতি আর শেষ হয়ে যাবে সব।সব সপ্ন,সব আশা।।অদিতির কানের পাশে ফিশফিশিয়ে অনেকেই বলছে কবুল বলার কথা। কিন্তু অদিতি অনুভূতিশূন্য হয়ে বসে আছে।অবশেষে মুখ খুললো সে।বাবার দিকে তাকিয়ে স্পষ্ট গলায় বললো-“বাবা!আমি আদনান সাহেবের সাথে একা কথা বলতে চাই।আমাকে কি দু’মিনিট দেওয়া যাবে প্লিজ?” অদিতির কন্ঠটা যেনো বজ্রপাত ঘটালো।চারদিকে পিনপতন নীরবতা।অদিতির বাবা অবাক চোখে মেয়েকে দেখছেন, কবুল বলার আগ মুহূর্তে কেউ বরের সাথে কথা বলতে চায় জানা ছিলো না তার।কি এমন বলবে সে?আদনানও বেশ অবাক।কি বলতে চাইছে অদিতি?এই মুহুর্তে কি-ই বা বলার আছে ওর?অদিতি আবারও একই কথা বলায় বাবা নিষেধ করলেও আদনান রাজি হয়।দু’জন ওঠে চলে যায় অদিতির রুমে।চারদিকে সবার দৃষ্টি ওদের দু’জনের উপরই,এমন অদ্ভুত দৃশ্য হয়তো কখনো দেখে নি কেউ।রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো অদিতি।আদনানও কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো –
.
কিছু বলবে অদিতি?এনিথিং সিরিয়াস?
.
অদিতি এবার মাথা উঁচু করে তাকালো।একটা ঢোক গিলে, জোড়ে একটা নিশ্বাস ফেলে বলে উঠলো সে-
.
আদনান সাহেব!বিয়ের আগে এমন কিছু কথা আছে যা আমি আপনাকে জানাতে চাই। না জানালে হয়তো ঠকানো হবে আপনাকে।
.
অদিতির কথায় চমকে ওঠে আদনান।কি এমন বলবে অদিতি,যা না বললে ঠকানো হবে তাকে?আদনান একটা ঢোক গিলে বললো-
.
তোমার অতিত?
.
হুম অতিত।অতিতের সাথে সাথে আমার বর্তমানও।
.
বর্তমান?(ভ্রু কুঁচকে)
.
হুম।(একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) ৪ বছর আগে নাদিয়া আপুর বিয়েতে রিয়াদকে ভালোলাগে আমার।তখন আমি ছিলাম প্রাণোচ্ছল এক তরুনী।রিয়াদকে একরকম জোর করেই আমার সাথে রিলেশনে যেতে বাধ্য করি।রিয়াদ রাজিও হয়….একটা বছর আমরা রিলেশনে ছিলাম।আমি সবসময় ভাবতাম রিয়াদ একদিন না একদিন ভালোবাসবে আমায়।কিন্তু সত্য ছিলো না।রিয়াদ আমায় ভালোবাসে নি।সবসময় ফ্রেন্ডের মতো পাশে থেকেছে কখনো নিজে থেকে হাতটাও ধরে নি।আমি ধরলেও ছাড়িয়ে দিয়ে একটা দূরত্ব বজায় রেখেছে।।আমি ভাবতাম রিয়াদ মেয়েদের সাথে আনইজি ফিল করে তাই হয়তো ওমন করে।কিন্তু না,আনইজি ফিলের জন্য নয় সাদিয়ার প্রতি ভালোবাসা থেকে এমনটা করতো রিয়াদ। তা তখন আমার জানা ছিলো না।আর যখন জানতে পারি তখন আর কিছু করারও ছিলো না।আমি অনেকটাই ভেঙে পড়ি তবু সরে আসি।দুজন ভালোবাসার মানুষের মাঝে কখনোই কাটা হয়ে থাকতে চাই নি।তারপর থেকেই আমার মধ্যে একটা রোবট রোবট ভাব চলে আসে।যেন অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়েছিলাম আমি।তারপর ৩ বছর পর আমার জীবনে আসে আয়ান!ডক্টর আয়ান! এতো বছর পর আমার মধ্যে আবাটও রাগ,কথা বলা,কান্না হাসি,জেদের মতো বিষয়গুলো ফুটে ওঠে।উনি আমার সাথে থাকলে সেই কাল অতীতের কথা মুহূর্তেই ভুলে যাই আমি।কিন্তু তখনও এই ফিলিংসটার নাম জানা ছিলো না আমার।তবে আয়ান জানতো,তাইতো দূরে সরে গিয়েছিলো হুট করে।ও ভালোবাসাকে ঘৃণ্য মনে করতো তাই দূরে সরে গিয়ে আমাকে ভুলার চেষ্টা করে।আর আমি মিস করে চলি তাকে।একদিন হঠাৎ মা এসে বিয়ের জন্য চাপ দেয়।ইমোশনাল ব্লেকম্যাল করে।সত্যি বলতে মানা করার কোনো কারণও ছিলো না।না নিজের ফিলিংসটা বুঝতে পারছিলাম না আয়ানের ফিলিংসটা জানতাম।নিজেকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছিলাম প্রতিটি মুহূর্তে। তার ফলাফল হিসেবে আবারও অনুভূতিশূন্য হয়ে পড়ি আমি।এবারও হুট করে আয়ান আসে, নিজের ভালোবাসা ঢেলে দিয়ে শুরু করে পাগলামো।আমার অনুভূতিগুলোও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।কিন্তু তবুও এই বিয়ে থেকে পিছুপা হতে পারি নি,,আপনাকে ঠকাতে পারি নি।আদনান সাহেব! আয়ান আমার বর্তমানও,ওকে ভুলা হয়তো সহজ হবে না আমার জন্য তবে আমি কথা দিচ্ছি আমার সবটা দিয়ে আপনার মনের মতো হওয়ার চেষ্টা করবো আমি।(একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) সবাই অপেক্ষা করছে আদনান সাহেব।চলুন।
.
কথাটা বলেই বেরিয়ে গেলো অদিতি।আদনান ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে।মাথাটা কেমন ভো ভো করছে তার।কোনোরকম টলে ওঠে বেরিয়ে গেলো সে।স্টেজের চারপাশে সবাই দাঁড়িয়ে আছে জিগ্যাসু দৃষ্টিতে আবারও শুরু হলো বিয়ের কার্যকলাপ।আবারও এলো কবুলের পালা।অদিতি কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে আয়ানের সব স্মৃতিকে দূরে সরিয়ে প্রথমবার কবুল বলে উঠলো। আত্মাটা কেঁপে উঠলো তার।দ্বিতীয়বার বলতে যাবে ঠিক তখনই কথা বলে উঠলো আদনান-
.
থামো অদিতি।আংকেল বিয়েটা আমি করবো না।
.
আদনানের কথায় উপস্থিত সবাই চমকে উঠলো। কি সব বলছে আদনান?কেন বিয়ে করবে না?কি করেছে অদিতি?অদিতির বাবা বিহ্বলিত কন্ঠে বলে উঠলেন-
.
কেন বাবা?এসব কি বলছো তুমি?আমার মেয়েটা সমাজে মুখ দেখাবে কিভাবে বাবা?হাতজোড় করছি এমনটা করো না।
.
ছি আংকেল।হাতজোড় করবেন না প্লিজ।আপনি আমার বাবার মতো।আমি বিয়ে না করলেও অদিতির কোনো ক্ষতি হবে না বরং ভালো হবে। অদিতি কেউ একজনকে পাগলের মতো ভালোবাসে।আর যাকে ভালোবাসে সে হয়তো নিজের থেকেও অদিতিকে বেশি ভালোবাসে।অদিতি কথাগুলো আমায় আগে না বলে অন্যায় করেছে তাই বলে আমি কোনো অন্যায় করতে পারি না।অদিতি?আয়ান সাহেবের সাথে থাকলে তুমি নিজের মতো থাকো আর আমার সাথে অনুভূতিশূন্য তাই গাড়িতে,মার্কেটে সব জায়গায় উনি তোমার অনুভূতি বুঝতে পারে আমি পারি না।দেখো অদিতি একটা ছেলে হিসেবে সবার মতো আমিও একটা প্রাণোচ্ছল জীবনসঙ্গী চাই যে আমাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসবে, মন খোলে হাসবে।কিন্তু তুমি তা পারবে না,আমার সাথে থেকে তো কখনোই না।একটা ছেলে অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিয়ের আসরে আসে….জীবনসঙ্গী নিয়ে কতো স্বপ্ন তাদের।কিন্তু তুমি হয়তো আমার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারবে না অদিতি আর না আমি পারবো আয়ানের মতো হতে।তাই এই বিয়েটা না হওয়ায় মঙ্গল। তুমি ফিরে যাও তোমার ভালোবাসার কাছে আমি অন্যকাউকে খুঁজে নিবো অদিতি… যাও।
.
আদনানের বাবা-মা আদনানের কথায় ধমকে উঠলেও আদনান তাদেরটা উল্টো ধমকে থামিয়ে দিয়ে বিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।অদিতি অবাক চোখে সবটা দেখে।জীবনটা তাকে কোন গন্ডীতে এসে দাঁড় করাতে চাইছে জানে না সে।
.
.
লাগেজ নিয়ে এয়ারপোর্টে ঢুকেই শুনলো ফ্লাইট অাধাঘন্টা লেইটে ছাড়ছে।আয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস আর একগুচ্ছ বিরক্তি নিয়ে ওয়েটিং রুমে গিয়ে বসলো।লাগেজটা পাশে রেখে সামনের দিকে তাকিয়েই চমকে উঠলো সে,অদিতি!!
.
#চলবে🍁

#অবশেষে ভালোবাসি (সিজন-২)❤
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: শেষ পর্ব
.
🍁
.
আয়ান একবার চোখ বন্ধ করে আবারও চোখ মেলে তাকালো। অদিতি এখনও বউ বেশে তার সামনে বসে আছে।এটা কি করে সম্ভব? অদিতির তো এতোক্ষনে বিয়ের স্টেজে থাকার কথা!এখানে কিভাবে?আয়ানের হিলোসিনেশন হচ্ছে না তো?অদিতির কথা অতিরিক্ত ভাবার ফলে তাকে মস্তিষ্ক কল্পনায় তার সামনে এনে হাজির করছে। আয়ান পাশে বসে থাকা পেট মোটা লোকটির দিকে তাকালো।তারপর একরকম ফিসফিস করেই বলে উঠলো –
.
এক্সকিউজ মি?আমার সামনে কি একটা বউ বেশে মেয়ে বসে আছে?
.
লোকটি ভ্রু কুঁচকালো।তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে চরম বিরক্ত।তবু বিরক্তি ধমন করে মাথা নেড়ে জানালো –
.
হ্যা আছে।
.
আয়ান এবার বিস্মিত চোখে অদিতির দিকে তাকালো।অদিতি এখনও ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।আজব তো?এটা কি করে সম্ভব? আয়ান এবার উঠে দাঁড়ালো, লাগেজ নিয়ে বের হতে নিলেই শার্টের পেছনে টান অনুভব করলো।ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়েই ব্যাপক অবাক হলো সে।অদিতি তার শার্ট খাঁমচে ধরে আছে।আয়ান মুখে বিরক্তিভাব ফুটিয়ে তুলে বলে উঠলো-
.
এক্সকিউজ মি?আপনি আমার শার্ট টেনে ধরেছেন কেন?এটা কোন ধরনের অসভ্যতা।
.
অদিতি কোন কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।ব্যাপারটায় বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে এলো আয়ানের।রাগী কন্ঠে বলে উঠলো –
.
কি হলো ছাড়ুন!
.
ছাড়বো না।
.
মানে? আজব তো ছাড়বেন না কেন?
.
ভালোবাসি তাই।
.
অদিতির কথায় আয়ানের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। নিজেকে কোনো রকম সামলে নিয়ে বলে উঠলো –
.
কিসের ভালোবাসা?আমি আপনাকে ভালোবাসি না।ছাড়ুন আমায়…ছাড়ুন বলছি।
.
বললাম না ছাড়বো না।।সবসময় শুধু পালিয়ে যাও কেন?আর তোমাকে ভালোবাসতে হবেও না।আমি ভালোবাসি সেই-ই অনেক।এখন ফটাফট চলো বিয়ে করবো।
.
বিয়ে করবো মানে?আর ইউ ম্যাড?ছাড়ুন আমায়!!(রাগী গলায়)
.
অদিতি এবার পেছন দিকের শার্টটা ছেড়ে একটানে আয়ানকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।পায়ের আঙ্গুলে ভর করে আয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে।আয়ান রীতিমতো হতবাক।অদিতি করছেটা কি?চারপাশের মানুষ যে আড়চোখে দেখছে সেদিকে কি খেয়াল নেই তার?অনেকে তো ইতোমধ্যে ভিডিও করাও শুরু করে দিয়েছে।আয়ান অদিতি থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করাতেই আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো অদিতি।ছলছল চোখে করুণ চোখে বললো-
.
সরি তো!!আর করবো না এমন।শাস্তি দিবে না আমায়?
.
আয়ান কিছু না বলে অন্যদিকে ফিরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।অদিতির মুখে তুমি ডাকটা শুনতে বেশ মিষ্টি লাগছে।ইচ্ছে হচ্ছে অদিতিকে শক্ত করে চেপে ধরে নিজের সাথে।কিন্তু তা সে করবে না।অদিতি কিছুক্ষণের জন্য এসে মায়া বাড়িয়ে চলে যাবে তা কিছুতেই হতে দেবে না সে।।পেয়েছেটা কি তাকে?যখন ইচ্ছে আসবে…যখন ইচ্ছে চলে যাবে,তার কি কষ্ট হয় না??আয়ানকে চুপ করে থাকতে দেখে আবারও বলে উঠলো অদিতি-
.
কিছু তো বলো।বিয়ে করবে না আমায়?না করলে এখানেই গলা জড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো।কোথ্থাও যাবো না হুহ।
.
অদিতি আজ তোমার বিয়ে।যাও এখান থেকে….বারবার এসে আমাকে দুর্বল করে দেওয়ার মানে হয় না।একটু পর নিশ্চয় আদনানের জন্য খারাপ লাগা শুরু করবে তোমার??ছুটে যাবে ওর কাছে।তাই বলছি এখনই যাও….আমি নিজেকে শক্ত করেছি প্লিজ দুর্বল করে দিও না।
.
আমি আদনান সাহেবকে সব বলে দিয়েছি।উনি বিয়ে ভেঙে দিয়েছে আয়ান।প্লিজ ক্ষমা করো আমায়….আমার হাতেও কিচ্ছু ছিলো না।।একবার হাতটা ধরার সুযোগ দাও।কখনো ছেড়ে যাবো না তোমায়।তোমাকেও যেতে দিবো না।প্লিজ আয়ান।
.
আয়ানকে এখনও চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে গলা ছেড়ে দু’পা পিছিয়ে দাঁড়ালো অদিতি। তারপর দু’হাতে দুই কান ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠলো –
.
কান ধরে উঠবস করি?
.
আয়ান এবার ফিরে তাকালো।কিছুক্ষণ অবাক চোখে তাকিয়ে থেকেই হেসে দিলো।একটু এগিয়ে গিয়ে অদিতির ডান হাত কান থেকে নামিয়ে একটানে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো তাকে।শক্ত করে চেপে ধরে টলমলে চোখে মুচকি হেসে বললো-
.
পাগলী!!
.
হুম তোমার জন্য।
.
ভালোবাসি মিস ঝগড়ুটে।এবার যেতে নিলে বেঁধে রেখে দিবো বলে দিলাম।(আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে)
.
তুমি তাড়িয়ে দিলেও যাচ্ছি না এবার।। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তোমার সাথেই থাকবো।।তুমি চাইলেও থাকবো।।না চাইলেও থাকবো।
.
আয়ান এবার অদিতির কপালে চুমু এঁকে দেয়।চোখে জল মুখে হাসি…. ইশশ কি সুন্দর দৃশ্য।অবশেষে জিতে গেলো তার ভালোবাসা।অদিতি অবশেষে ভালোবাসি বললো তাকে।কি প্রশান্তি এই বুকে।এবার আল্লাহ তার কথা শুনেছে।মামনি ঠিকই বলতো আল্লাহ কাউকে নিরাশ করে না।হয়তো দেরী হয় তবু ইচ্ছেগুলো ঠিক পূরণ হয়।
.
.
একসপ্তাহ পর আজ আবারও বউ সেজেছে অদিতি।।চারদিকে আনন্দ উচ্ছ্বাস তারসাথে উচ্ছ্বাসিত অদিতি -আয়ান। রিয়া এমন শরীর নিয়েই সবার সাথে তাল মেলাচ্ছে….মাঝে মাঝে উঠে নাচানাচিও শুরু করে দিচ্ছে।ফাহিমের চোখ রাঙানোতে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে আবারও তাদের সাথে মত্ত হয়ে পড়ে।সাদিয়া-রিয়াদও বেশ খুশি।এতোদিনের অপরাধবোধটা আজ অনেকটায় কম কারণ আজ অদিতি খুশি।ছোট আদ্রিতা এখন টুকিটুকি হাঁটে…..নাদিয়ার ছেলে ফারিন তাকে বেশ কড়া শাসনে রাখছে।।””অাদু এদিকে যাস না…ওদিকে যাস না।ওটা ধরিস না….আমার হাত ধরে হাঁট”” কতো আদেশ তার।।আয়ান সারা ঘরময় পায়চারী করছে…উত্তেজনায় কথা বন্ধ হয়ে গেছে প্রায়।সে বিশ্বাসই করতে পারছে না আজ তার বিয়ে!! ফাহিম একবার রিয়ার কাছে যাচ্ছে তো একবার আয়ানের কাছে আসছে….ভীষন ব্যস্ত সে।।আদনানও এসেছে বিয়েতে।সে ও হাসিমুখেই আছে।সবটা খুব সহজেই মেনে নিয়েছে সে।চারদিকে খুশির আমেজ!!সুখের ছড়াছড়ি। আয়ান-অদিতির জীবন এখন ভালোবাসার আলোয় আলোকিত।অবশেষে ভালোবাসার জয় হয়েছে তাদের।।ভালোবাসাটা আসলেই অদ্ভুত একটা বিষয় যখন পাওয়া যায় তখন তা স্বর্গীয় আর যখন পাওয়া যায় না তখন তা নরকীয়। যা অদিতি-আয়ান অনুভব করেছে প্রতিটি মুহূর্তে। হয়তো ভবিষ্যতেও নতুন নতুন ভাবে ভালোবাসার স্বাদ গ্রহণ করবে তারা।ভাসবে ভালোবাসার সাগরে….ভুলে যাবে সকল ঘৃণা।সত্যি তো ভালোবাসা কি না পারে?
.
……………★সমাপ্ত★………….
(সমাপ্তিটা ভালো হয় নি জানি।এক্চুয়েলি তাড়াহুড়ো করে শেষ করেছি আর প্রচন্ড মাথা ব্যাথা নিয়ে লিখতে বসেছিলাম।।এডিটও করা হয় নি।।সেজন্য সরি!!)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here