অবশেষে_ভালোবাসি(সিজন-২) part_1+2

এক্স বয়ফ্রেন্ডের বাচ্চার নামকরণ উপলক্ষে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছে অদিতি।।।তিন তিন টা বছর পর বেস্টুর সাথে দেখা হবে ভাবতেই ব্যাপক আনন্দ লাগছে,,,কিন্তু মুহূর্তেই মনটা ভার হয়ে আসছে যখন মনে পড়ছে বস্টুর পাশে যাকে দেখতে হবে সে আর কেউ না,,,তারই ভালোবাসার মানুষটি।।।ভাগ্যটা তার সহায় হয় নি,,,তাই নিয়তিকে সে মেনে নিয়েছিল,,,এই তিনটা বছরে নিজের চোখ থেকে বৃষ্টি ঝরতে দেয় নি,,,কিন্তু আজ যেন বাঁধ মানছে না,,,চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছা করছে।।নিজের উপরই সে আজ চরম বিরক্ত,,,,যাচ্ছে বাচ্চা দেখতে আর এভাবে মুখ ফুলিয়ে রেখেছে,, এসবের মানে কি??কেন কান্না করবো?কার জন্য?অন্যের বরের জন্য?….না কখনো না।।।হঠাৎ ওড়নায় টান পড়ায় ভাবনায় ছেদ ঘটলো অদিতির।।।চরম বিরক্তি নিয়ে পেছনে ফিরে তাকালো,,,,কোনো এক ছেলের হাত ঘড়িতে নির্লজ্জ ওড়নাটা কি স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই না আটকে আছে।।।ব্যাপক মেজাজ খারাপ হচ্ছে,,, এই মুহূর্তে ওড়না নামক বস্তুটাকে অসহ্যকর বলে মনে হচ্ছে।।।বিরক্তি বিষয়টি যে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পায় তা আজ অদিতির বুঝা হয়ে গেছে।।।সব কিছুতেই বিরক্ত হচ্ছে সে,,,তাইতো সামনে থাকা কিউট এন্ড হট ছেলেটাকে তার কাছে আস্ত বিরক্তির ডিব্বা বলে বোধ হচ্ছে।।।অদিতির ইচ্ছা হচ্ছে এই ছেলেটার সবগুলো চুল টেনে টেনে ছিঁড়তে নয়তো সাদিয়া স্টাইলে উদ্ভট সব গালি দিতে কিন্তু এই মুহূর্তে সাদিয়া টাইপ কোনো গালি মনেই পড়ছে না,,,তাই ভ্রু কুঁচকে ছেলেটির দিকে তাকালো অদিতি,,,,ছেলেটি তার দিকেই তাকিয়ে আছে তাও আবার অনেকটা “হা” করে।।।ব্যাপারটা অদিতির মোটেও ভালো লাগছে না,,,রেলস্টেশনে হাজার মানুষের ভীরে একটা ছেলে হা করে তার দিকে তাকিয়ে আছে ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে বিরক্তিকর,, হাতের পানির বোতলটি ছেলেটির মুখে পুড়ে দিলে ব্যাপারটা খারাপ হবে না,,,,কিন্তু নিজের এই অদ্ভুত ইচ্ছাকে প্রশ্রয় না দিয়ে মুখ খুললো অদিতি,,,
অদিতিঃ এই যে?? মিষ্টার কানা ঢেড়স?
ছেলেটিঃ জি আমাকে বলছেন?
অদিতিঃজি হ্যা,,,আপাতত আপনাকেই বলছি।।
ছেলেটিঃ তাহলে,,,what did you say??ওহ,,yeah,কানা ঢেড়স,,,,আমাকে ওই নামে কেনো ডাকলেন??i am not kidney vetch….. i am ayan Chowdhury….. ok??(মোড,নিয়ে)
অদিতিঃ তো??listen,,, এই ভাবে রেলস্টেশনে দাড়ায়ে মেয়েদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকলে,,আপনার so called আয়ান চৌধুরী নামটা,,,অতি শীঘ্রই কানা আয়ানে পরিনিত হবে,,,got it?😏
আয়ানঃ ওহ,,হ্যালো,,,আমি আর মেয়েদের দিকে তাকানো,, ইম্পসিবল,,, 😡
অদিতিঃ কেন??আপনি গে নাকি??(কনফিউজড হয়ে)
আয়ানঃ what the hell are u taking?? i’m saying that,,,,i am ayan Chowdhury,,,, so….আমি মেয়েদের দিকে নয়,, মেয়েরা আমার দিকে তাকিয়ে থাকে,,,(ভাব নিয়ে)
অদিতিঃ(ফিক করে হেসে দিয়ে) ভালো জোক ছিলো।।।হিহিহিহি,,,
আয়ানঃ hey? i am not joking ok??and stop argue with me…😠
অদিতিঃ হুহ,,যত্তোসব আবাল জনগন(বির বির করে)
আয়ানঃ what did you say?what the meaning of আবাল?
অদিতিঃ এই ব্যাটা ইংরেজ চুপপপ,,,,এই বাংলা বুঝিস না??নেকামী করিস??,ব্যাটা লুচু কোথাকার,,, মেয়েদের ওড়না ধরে টানাটানি করে,, লজ্জা করে না??আজাইরা পাবলিক সব।।।মেয়ে দেখলেই আর তর সয় না,,,,হুহ,,,,
আয়ানঃ what the hell…..😡
অদিতিঃ তোর hell এর গোষ্ঠী কিলাই।।শালা ইংরেজের বাচ্চা,,খাটাশ,কোথাকার,,
আয়ানঃ mind your language….such a cheap girl….
অদিতিঃ কিহ,,,,আমি চিপ?? তোকে তো আজ,,,(বলেই এগিয়ে গেলো অদিতি)কিন্তু মাঝ পথেই থেমে যেতে হলো তাকে,,,পরিচিত কারো ডাকে,,ভাইয়া আপনি?এখানে?
ফাহিমঃ তার আগে এটা বলো,,তুমি এখানে কি করছো,,,আর আমার নিরীহ বন্ধুর উপর হামলা,চালানোর কারন কি?(অবাক হয়ে)
অদিতিঃ নিরীহ??আর ওনি??ইম্পসিবল।। আপনার কোনো ধারনা আছে উনি আমার সাথে কি করেছেন?
ফাহিমঃ কি করেছে?ওই শালা কি করছিস রে?(আয়ানের দিকে তাকিয়ে)
অদিতিঃ আমি বলছি,,আমি বলছি,,উনি ভীরের সুযোগ নিয়ে আমার ওড়না ধরে টান দিয়েছেন,,,,আর ছাড়িয়ে দিতে বলাতে আমাকে বলছে আমি নাকি চিপ,,,, (নাক মুখ ফুলিয়ে)
আয়ান + ফাহিমঃ হোয়াটটটটট????
ফাহিমঃ ইম্পসিবল,,,আয়ান এমন নয়,,,তোমার ভুল হচ্ছে,,,
অদিতিঃ কিসের ইম্পসিবল??ছেলেদের মনের ঠিক আছে??আপনি যে সাদিয়াকে পছন্দ করতেন সেটা শুনে আমিও তো বলেছিলাম,,,ইম্পসিবল,,,,বাট সবই পসিবল,,কার মনে কি আছে কে জানে।।বিশেষ করে এসব ইংরেজদের হুহ,,
ফাহিমঃ হুমম,,,তা ঠিক।।।সবই পসিবল।।(কনফিউজড হয়ে)
আয়ানঃ হোয়াট? তুই ওর কথা বিশ্বাস করছিস??পাগল মেয়ে একটা।।।বানিয়ে বানিয়ে বলছে সব,,,😠( ফাহিম আয়ানের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে)এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?আমি কিছুই করি নি swear… unfortunately আমার ঘড়ির বেল্টে ওনার ওড়না আটকে গিয়েছিলো,,,দেখ? এখনো আটকে আছে।।।। আর উনি এসেই যাতা ভাষায় গালি দিচ্ছে,,, ইভেন তুই তুকারিও করছে।।।।(এবার ফাহিম অদিতির দিকে অবাক হয়ে তাকালো,,,কারন এমন কাজ অদিতির দ্বারাও পসিবল তা জানা ছিলো না ফাহিমের,,,এসব তো শুধু সাদিয়া…….)
আয়ান রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,,, মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে গিলে খাবে,,,অদিতি ঢোক গিললো……
অদিতিঃ whatever… ঘড়িটা আপনার হাতে সো দোষটাও অবশ্যই আপনার(ভয়ে ভয়ে)
আয়ানঃ shut up stupid girl,,,,(দাঁত কটমট করে)
অদিতিঃ you shut up…..
ফাহিমঃ shut up both of you…..ট্রেন চলে এসেছে চলো।।।অদিতি তুমিও নিশ্চয় সাদিয়ার কাছে যাচ্ছো???আমিও বাট সাদিয়া না রিয়াদের কাছে,,,বলেই হেসে দিলো।।।
রিয়াদের নাম টা শুনেই অদিতির বুক ধুক করে ওঠলো,,,কিছু না বলে ওড়না ছাড়িয়ে ট্রেনে ওঠে গেলো।।।অদিতি আজ নিজেই অবাক।।ও মোটেও ঝগড়াঝাঁটির মেয়ে নয়।।খুব শান্ত ও ভদ্র।।।অন্যদিন হলে,,অদিতি হয়তো এটা নিয়ে রিয়েক্টই করতো না।।।বাট আজ সব উলট পালট লাগছে।।। বুকটা দুমড়ে মোচড়ে যাচ্ছে,,,,ট্রেন চলছে,,,অবাধ্য চুলগুলো উড়ছে বাতাসের তালে তালে।।।আর অদিতি স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার ব্যাথাগুলো শীতল বাতাসে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে অনবরত।।খুব কি ক্ষতি হতো যদি,,,,,,।।।।।নাহ,,,যদির পর আর ভাবতে চায় না সে।।।যদিটাকে ডিঙানোর ইচ্ছা আর নেই।।।থাকুক কিছু না পাওয়া,,,, স্মৃতির জানালায়,,,ক্ষতি কি তাতে,????
★ ★ ★
রিয়াদঃ এই সাদিয়া??সাদিয়া??পাখিটা বের হও না প্লিজ,,,,,আর কতো টাইম নিবা???তাড়াতাড়ি আসো না,,,তোমার মেয়ে আমাকে পাগল করে দিলো।।।(ওয়াশরুমের দরজায়,নক করে)এতো কাদিস কেন বাপ??একটু তো সহানুভূতি দেখা নিজের বাপের উপর….(করুণ গলায়)একদম মায়ের মতো হয়েছে,, এতো জেদি উফফফ….সাদিয়য়য়য়য়া………(চেচিঁয়ে)

সাদিয়াঃ উফফ,,,,পাঁচ মিনিট,,,জাস্ট পাঁচটা মিনিট হয়ছে আমি ওয়াশরুমে গেছি।।।এই পাঁচ মিনিটেই হাপাঁয় গেছো??কেমন বাবা তুমি,,,মেয়ে সামলায়তে পারো না(তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে,, কোমরে হাত দিয়ে দাড়ালো)আর মেয়েটাকেও বলি হারি যায়,,,এতো চেঁচাতে পারে উফফ।।।

রিয়াদঃ মেয়ের মাকেই সামলাইতে পারি না,,,মেয়েকে কিভাবে সামলাবো??একদম মায়ের মতো একরোখা হয়ছে,,,,,(ঠোঁট উলটিয়ে)

সাদিয়াঃ কিহ??কি বললা তুমি??(রাগী চোখে)

রিয়াদঃ আ,,আ,,,ব,,ব,,বলছিলাম যে,,,

সাদিয়াঃ হ্যা কি বলছিলা তাই শুনতে চাচ্ছি,,,

রিয়াদঃ বলছিলাম যে তোমার মতোই কিউট হয়ছে মেয়েটা,,,একদম স্ট্রোবেরী আইসক্রিম”!!!আর হাসিটাও তোমার মতো,,,কে জানে ফিউচারে আমার মতো কতো রিয়াদ আমার প্রিন্সেসের দিওয়ানা হবে,,,আর মেয়েটাও তার মায়ের মতো ঠাস ঠাস করে চড় বসিয়ে দিবে(গাল হাত দিয়ে)আমি খাইছি দশটা,,, আমার জামাই বাবাজি খাবে বিশটা,,,এক্কেবারে সিউর(হাত উল্টিয়ে)
রিয়াদের কথা আর বলার ভঙ্গিতে সাদিয়া,আর রাগ ধরে রাখতে পারলো না,,,,হো হো করে হেসে দিলো,,,

রিয়াদঃ তুমি হাসো??হাসবাই তো,,পড়ছে তো আমার গালে,,,,তবে আমার খুব স্যামপেথি হচ্ছে…….(মুখটা দুঃখী দুঃখী,করে)

ইনশাল্লাহ
চলবে….
#অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)
writer: রোদেলা❤

(এই গল্পটা আমার লাইফের সেকেন্ড গল্প ছিলো।।।বাট আইডি নষ্ট হওয়ার কারনে পোষ্ট করে পারি নি,,, মাত্র ৪ পার্ট পোষ্ট করতে পেরেছিলাম।)


অবশেষে ভালোবাসি(সিজন ২)❤
#writer:রোদেলা❤

রিয়াদঃ তুমি হাসো??তুমি তো হাসবাই পড়ছে তো আমার গালে,,,,,তবে আমার কিন্তু স্যামপেথি হচ্ছে,,,,(মুখে দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে)

সাদিয়াঃ কেন??স্যামপেথি কেন?কার জন্য?(ভ্রু কুচঁকে)

রিয়াদঃ আরে আমার ফিউচার,সান ইন লো এর জন্য,,,,,আমি তো বুঝতাছি তুমি কি জিনিস,,,,,মেয়ে যেহেতু তোমার কার্বন কপি সো বেচারা তো শেষ,,,,আমাকে তুমি ১২ বছর ওয়েট করাইছো,,,,আমি সিউর,,, জামাই বাবাজি কে ২৪ বছর ওয়েট করা লাগবো,,,,,হাহাহাহা

সাদিয়াঃ কিহ?তারমানে কি?কি বলতে চাও তুমি??আমি খালি প্যারা দেই তোমাকে???😠

রিয়াদঃ আরে না,,,এটা কখন বললাম??

সাদিয়াঃ মাত্র বলছো,,,(রাগী চোখ নিয়ে)

রিয়াদঃ বলেছি নাকি?(সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে ঢুক গিললো,,,,,সারছে রেগে ফায়ার,,)আরে তুমি বুঝতে ভুল করছো।।।

সাদিয়াঃ চুপপপ,,,একদম চুপপ,,,,আমি বুঝি তো,,,এখন তো পুরোনো হয়ে গেছি।এখন আর ভালো লাগবো কেন?প্যারা লাগবো(কাদোঁ কাঁদো হয়ে)

রিয়াদঃ আরে আরে টিয়াপাখি,,,লক্ষিটি কান্না করছো কেনো??? দেখো,, কান্না করছো ভালো কথা,,,চোখ থেকে পানি যেনো না পড়ে,,,,তুমি তো জানোই আমি তোমার চোখে পানি সহ্য করতে পারি না,,,,,সো সাবধান

সাদিয়াঃ হুহ,,,,হয়ছে,,এতো দরদ দেখাতে হবে না,, যাও।।।

রিয়াদঃ আরে বউ আমার রাগ হয়েছে দেখি,,,,এখনই রাগ ভাঙিয়ে দিচ্ছি,,,,(বলেই জড়িয়ে ধরলো,,,সাদিয়া বাধ্য মেয়ের মতো রিয়াদের বুকে শুয়ে আছে,,,,যেনো বুকের মাঝে ঢুকে যেতে চায়,,,,রিয়াদও আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিলো সাদিয়াকে,,,,তার ভালোবাসাটাকে,, অনেক যুদ্ধ করে পেতে হয়েছে,, আর কোনো কিছুর বিনিময়ে হারাতে রাজি না,রিয়াদ)

ভাইয়য়য়য়য়য়য়া,,,,ভাববববববববি…….
উপপপসস্ সরি……ডিস্টার্ব করলাম?

রিয়াদঃ গরুর মতো চেচাচ্ছিস কেন??তুই ওলওয়েজ আমার রোমান্সের ১৩ টা বাজাস,,৷ ফাজিল মাইয়া……

রিয়াঃ ভাববববি,,,,এ্যা এ্যা,,, দেখছো তুমি??এত্তোদিন পর আসলাম তাও এই ব্যবহার,,,,,(নেকা কান্না করে)

রিয়াদঃ (ভেঙিয়ে)ভাবি ভাবি,,,,,এহহহহ,,,,,,ভাবি কি করবে রে??আর এত্তোদিন কই গুনে গুনে ১৭ দিন পর আসছিস,,,,আর এমন ভাব করছিস যেন ২/৩ বছর পর আসছিস,,,,,

সাদিয়াঃ এই এই তুমি আমার মিষ্টি ননদীনির পিছে লাগছো কেন??যাও তো… এখন ননদ – ভাবি এপিসোড চলবে,,,,ইউ মে গো নাও,,,,,

রিয়াদঃ হুহ,,,সেই,,,😒 আমি এখন পর,,,,(বলেই জ্যাকেট গায়ে দিতে দিতে চাবি হাতে বেরিয়ে গেলো)

সাদিয়াঃ এই এই,,,রিদ,,,কোথাও যাচ্ছো??(চেচিয়ে)

রিয়াদঃ হুম,,, ফাহিম ভাইকে রিসিভ করতে,,,(সিড়িঁ দিয়ে নামতে নামতে)
রিয়াঃ ফাহিম ভাইয়া?মানে স্যার,,,মানে ভাইয়া,, মানে,৷
।।
ফাহিম হলো রিয়ার ভার্সিটির প্রফেসর।।ফাহিমকে এর আগে এক দুবার দেখলেও তেমন খেয়াল করে নি রিয়া,,,কিন্তু ভার্সিটিতে যাওয়ার পর বেচারী সেই লেবেলের ক্রাশ খেয়েছে।।।অজানা কারনে ফাহিমকে সে ব্যাপক ভয়,পায়।।।আবার ভালোও বাসে….কিন্তু ফাহিমের পাত্তা নেই বললেই চলে।।।

রিয়ার রিয়েকশন দেখে সাদিয়া হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে,,,,
সাদিয়াঃ লাইক সিরিয়াালি??রিয়া,,,তুমি ফাহিম ভাইকে এতো ভয় পাও??কিন্তু কেন?উনি তো নিরীহ জীব,,,

রিয়াঃ উনি কেনো আসছেন?(মনে মনে লাড্ডু ফুটছে রিয়ার,,উফফ ভাবতেই ভালো লাগছে,,সারাদিন তার চোখের সামনে থাকবে,,মন ভরে দেখবে রিয়া,,ইয়াহু)

সাদিয়াঃ কেনো আসছেন মানে??আমার আপুর বেস্ট ফ্রেন্ড,,,তাছাড়া ভাইয়ার সাথে আমি,রিয়াদ,অদিতি মিলে কতো মজা করেছি,,,,,তাই আবার একটু টাইম স্পেন্ড করবো সবাই মিলে,,,,দারুন হবে,,,

রিয়াঃ অদিতি আপু আসছে??

সাদিয়াঃ আসার তো কথা কিন্তু,,,

রিয়াঃ কিন্তু সিউর না তাই তো??আমার মাঝে মাঝে আপুর জন্য খুব খারাপ লাগে,,,

সাদিয়াঃ রিয়া? আমি কি ভুল করে ছি??ওদের মাঝে এসে পড়িনি তো???আমি অনেক সেলফিশ (কাদো কাদো হয়ে)

রিয়াঃ ইশশশশ,,,,,,ভাবি,,,এসব কি বলছো?সবই ভাগ্য,,,,তাছাড়া,,,,এটা ভাইয়ার ডিসিশন ছিলো,,,,আর ভাইয়ার,দিকটাও দেখো,, ভাইয়া তোমাকে কত্তো ভালোবাসে,,,,এটাই সবচেয়ে বড় ফেক্ট।।।।এখন চোখ মুছো,,,তোমার বর যদি দেখে তাহলে আমাকে খুন করবে,,,,(জড়িয়ে ধরে)
★★ ★★
।।
অদিতিঃ উফফ,,এত্তো বড় লাগেজ নিয়ে ট্রেন থেকে নামাও যেনো বিশ্বযুদ্ধ,,,, ধেৎ কোনো টেক্সিও দেখছি না,,,,, বলে পেছন ফিরেতেই কারো সাথে ধাক্কা লাগলো৷।। মানুষটার মুখের দিকে তাকিয়েই বুকটা ধুক করে উঠলো,,,,,রিয়াদ?????

রিয়াদঃ আরেহ,,,অদিতি???(অস্বস্তির সাথে)

অদিতিঃ……..(নিশ্চুপ)

রিয়াদঃ কেমন আছো???তুমি যে আজ আসছো জানাও নি তো,,,,,,

অদিতিঃ…….. (নিশ্চুপ)

রিয়াদঃ হেই অদিতি??কি হলো??(তুরি বাজিয়ে)

অদিতিঃ হ্যা,,,ওহ,,কেমন আছো??আর এখানে?

রিয়াদঃ ফাহিম ভাইয়া কে রিসিভ করতে আসছি,,,,ভালোই হলো তুমিও চলে আসছো,,,,সাদিয়া তো বারবার তুমি কবে আসবা,,কবে আসবা করে,,,কান খাচ্ছিলো।।।।

অদিতিঃ ওহ,,আর তুমি?

রিয়াদঃ সরি??

অদিতিঃ নাহ,, কিছু না,,,,তো তোমার বউ বাচ্চা কেমন আছে??(মলিন হাসি দিয়ে)

রিয়াদঃ ভালো আছে,,,,মেয়েটা ঠিক তোমার বেস্টুর মতোই হয়েছে,,,একদম কার্বন কপি,,,(প্রশান্তির হাসি হাসলো)

ওই মিয়া,,,,তুমি এখানে???

রিয়াদঃ আরে ফাহিম ভাই??আপনাদের কাছেই আসছিলাম,,,,অদিতিকে দেখতে পেয়ে থেমে গেলাম৷৷ ,, তো কেমন আছেন???আর উনি??

ফাহিমঃ ভালো আর থাকতে পারলাম কই???আমার পছন্দের মাইয়া নিয়ে তো তুমি ভাগছো,,,,বিয়ে করে বাচ্চার মা ও বানায় ফেলছো,,,ইট’স হার্টিং,,,,,(বুকে হাত দিয়ে),

রিয়াদ খুব অপ্রস্তুত ফিল করছে,,,এতোদিন পর এমন কোনো কথা আশা করে নি সে।।কি বলবে বুঝতে পারছে না।।।কিছু বলবে তখনি ফাহিম হো হো করে হেসে দিলো,,,,

ফাহিমঃ আরে,,,,আম জাস্ট জোকিং ব্রো,,,,আম নট ইন্টারেস্টেড ইন চাইল্ডস মাদার,,,,(চোখ টিপলো)তবে,,,আমি কিন্তু ভাবতেই পারি নাই,,,যে তুমি আমার লাভ স্টোরিতে লাল বাতি জ্বালাইয়া,,, সাদিয়াকে নিয়ে ভাগবা,,,,আমি ভেবেছিলাম তুমি অদিতিতে ইন্টারেস্টেট,,,,

এবার রিয়াদের রাগ লাগছে,,,সে মোটেও সাদিয়াকে নিয়ে ভাগে নি,,,ওদের বিয়েটা হুট করে হলেও পরিবারের সম্মতিতেই হয়েছে,,,এন্ড ফাহিম নিজেও ইনভাইটেট ছিলো,,,,,এদিকে অদিতিও অস্বস্তি ফিল করছে,,,,,ব্যাপারটা আয়ান বুঝতে পারে,,সবাইকে স্বাভাবিক করার জন্য বলে উঠলো,,,।

আয়ানঃ হেই মিষ্টার?আম আয়ান চৌধুরী,,,ফাহিম আর নাদিয়ার ফ্রেন্ড,,,,

রিয়াদঃ ওহ,,,হ্যালো,,,আমি রিয়াদ,,,সাদিয়ার হাজবেন্ড,,,আপুর আর,সাদিয়ার কাছে,,,আপনার কথা বেশ কয়েকবার শুনেছি,,,এনিওয়ে নাইস টু মিট ইউ,,,(হালকা হেসে হাত বাড়িয়ে দিলো)

আয়ানঃ মি টু৷৷ তো যাওয়া যাক???আমি অনেক টায়ারড।।

রিয়াদঃ ইয়াহ,,,চলুন,,,অদিতি চলো,,,,
।।।।
।।।।
রিয়াদ ড্রাইভ করছে,,, রিয়াদের পাশে ফাহিম।।।পেছনে অদিতি আর আয়ান।।সবাই চুপচাপ,,নীরবতা ভাঙলো আয়ান…
আয়ানঃ তো রিয়াদ?শুনলাম চট্টগ্রামে বেশ,ভালো বিজন্যাস জমিয়েছো,,,,অল্প বয়সে এতো সাকসেস??ইমপ্রেসিব,,,

রিয়াদঃ থেংক্স,বাট ভাইয়া,,,,প্রশংসাটা বাড়াবাড়ি হলো,,,,এনিওয়ে আপনি??

ফাহিমঃ আরে আমাদের আয়ান তো মেয়েদের ক্রাশ,খাওয়াইতেই ব্যস্ত থাকে,,,তবু পার্টটাইমে একটা কাজ করে,,,সেখানেও ভালোই নাম কামিয়েছে,,,বিখ্যাত সাইকিয়াটিস্ট আয়ান চৌধুরী,,,, এখানেও বসে বসে মেয়েদের চোখই পড়ে,,,হুহ।।।

ফাহিমের কথায়,সবাই হেসে দিলো,,,,।

রিয়াদঃওহ,,,ওহ মাই গড,,,আপনি সেই আয়ান চৌধুরী??

এভাবে কথা চলছিলো।।এবার অদিতি আড়চোখে আয়ানের দিকে তাকালো।।।ব্রাউন কালারের শার্ট,,,তারওপর কালো ব্লেজার,,,ব্ল্যাক জিন্স,,,পায়ে ব্ল্যাক কেটস,,,ডানহাতে ব্যান্ডেড ওয়াচ,,,বামহাতে কালো ব্রেসলেট,,,,সিল্কি চুলগুলো,,,কপালে পড়ে আছে,,,চোখে সানগ্লাস,,,,আর ডার্ক রেড লিপস,,, উফফ,,,জাস্ট পারফেক্ট,,,,,আয়ানের কথায়,অদিতির ভাবনার সুতো কাটলো

আয়ানঃ উহুম,,,,এই যে,, মিস ঝগড়াটে,,,,চাইলে আমাকে সামনাসামনি দেখতে পারো,,,,আড়চোখে দেখার দরকার নেই,,,,এক্চুয়েলি আমার এসব অভ্যেস আছে,,,লুচু মেয়েরা প্রায়ই আমার দিকে তাকিয়ে থাকে(ফিসফিসিয়ে)

অদিতি রাগে ফুঁসছে,,তাকে লুচু বললো,,,কি ফাজিল ছেলে,,,না হয় একটু তাকিয়েছে তাই বলে এভাবে বলতে হবে নাকি?হুহ,,,,,মিস্টার কানা ঢেড়শ,,,, জাস্ট ওয়েট,,,তোমাকে আমি যদি দিনে তারা না দেখিয়েছি,,,তো আমার নাম অদিতি না,,,,হুহ
#চলবে…….

#অবশেষে_ভালোবাসি(সিজন-২)
part_1+2
নৌশিন আহমেদ রোদেলা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here