#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
৫
.
.
.
.
.
মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে হনহন করে হেটে চলেছে রিয়া।
রাগও হচ্ছে আবার ভালোও লাগছে! কিছুক্ষণ আগের কথা ভাবতেই লজ্জায় আরক্তিম হয়ে যাচ্ছে সে!!
হটাৎ ইকরার সাথে সাথে ধাক্কা খেল রিয়া, ইকরা হালকা রেগে বলল, ” দেখে চলতে পারো না!! যত্তসব!!!
ইকরার এমন দেমাগ দেখে রিয়া মুখ ভেংচি কেটে বলল, “আমি কেন দেখে চলবো!? তুমি দেখে চলতে পারোনা!!? তুমি জানো আমি কে!?
রিয়ার হাবভাব দেখে ইকরা কিছুটা ভড়কে গেল, ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” কে তুমি!?
রিয়া ভাব নিয়ে বলল, ” আমি হলাম, আরহাম স্যারের এসিস্ট্যান্টের এসিস্ট্যান্ট।
রিয়ার কথা শুনে হাসবে কি কাদবে বুঝতে পারছেনা ইকরা।
কোনোরকমে হাসি চেপে বলল, ” বাহ, তোমার পোস্ট তো অনেক হাই!!! বাই দ্যা ওয়ে, তুমি জানো!? আমি কে!!?
রিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল, ” লেট মি গেস, নিশ্চয়ই আমার নিচের কোনো পোস্টে আছো। সো আমাকে রেস্পেক্ট দিয়ে কথা বলবা।
রিয়ার কথা শুনে ইকরার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! কি বলছে এই মেয়ে!!
ইকরা দাতে দাত চেপে কিছু বলতে যাবে, রিয়া ব্যস্ততা দেখিয়ে বলল, ” ওকে বায়, আমার অনেক কাজ আছে।
বলেই চলে গেল রিয়া! ইকরা কিছুক্ষণ বলদের মতো তাকিয়ে থেকে আরহামের রুমের দিকে গেল।
.
.
.
.
.
আরহামের রুমের দরজায় নক করল ইকরা, আরহাম আসতে বলে তাকিয়ে দেখল ইকরা এসেছে।
বিরক্ত হলেও বলল,” কেমন আছো ইকরা!?
ইকরা রাগে ফোসফোস করতে করতে বলল, ” ঐ মেয়ের সাহস হয় কি করে!? আমাকে বলে কি না ওর নিচের পোস্টে জব করি!!?
আরহাম ইকরার কথার কোনও আগামাথা খুজে পাচ্ছেনা।
ইকরা দাত কিড়মিড়িয়ে বলল,” তোমার ঐ এসিস্ট্যান্টের এসিস্ট্যান্টকে তো আমি দেখে নেবো!!!
আরহাম এতক্ষণে বুঝল রিয়ার কথা বলছে ইকরা!
আরহাম চেয়ার ছেড়ে উঠে ইকরার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, ” রিয়ার সাথে তোমার ঠিক কি হয়েছে বলো তো!!?
ইকরা এবার চেচিয়ে বলল, ” কি হয়নি তাই বলো, কে ঐ মেয়ে!? ও কি জানেনা! আমি কে!?
আরহাম ভাবার ভান ধরে বলল,” আসলেই তো! কে তুমি!?
ইকরা আর কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা, দাতে দাত চেপে বলল, ” তোমার সাথে বলাটাই আমার ভুল হয়েছে।
বলেই ন্যাকা কান্না করতে করতে ইকরা রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ইকরা বেরিয়ে যেতেই হেসে ফেলল আরহাম।
.
.
.
.
.
আরহামের রুম থেকে বেরিয়ে রিয়াকে খুজতে লাগল ইকরা।
আজ সে উচিৎ জবাব দেবে রিয়াকে। রিয়া কিচেন থেকে কফি বানিয়ে নিজের ডেস্কের দিকে যাচ্ছে।
কোত্থেকে ইকরা এসে রিয়ার পথ আগলে দাড়ালো।
রিয়া কিছু বলার আগেই ইকরা মুচকি হেসে বলল, ” তোমার গেস করাটা ভুল ছিলো রিয়া, কজ আমি এখানে জব করিনা। আমি তোমার বস আরহামের গার্লফ্রেন্ড!
ইকরার বলা শেষ কথাটা শোনা মাত্রই রিয়ার ভেতরটা কেমন করে উঠল!
ইকরা হেসে বলল, ” সো আমি তোমাকে না, তুমি আমাকে রেসপেক্ট দিয়ে কথা বলবা। গট ইট!?
বলেই মুখ ভেংচি কেটে চলে গেল ইকরা। রিয়ার চোখে পানি টলমল করছে! আরহামের জিএফ আছে!!? তাহলে আমাকে কেন!!!?
রাগে ক্ষোভে চোখ জোড়া লাল হয়ে গেল রিয়ার।
সোজা কিচেনে গিয়ে কফি ফেলে দিল বেসিনে। চোখেমুখে ভালো করে পানি দিয়ে নিজের ডেস্কে গিয়ে কাজে মন দিল।
কিন্ত কোনও কাজই ঠিক মতো করতে পারছেনা সে।
বারবার ইকরার বলা কথা গুলো ঘুরছে মাথায়। কেন জানি খুব কান্না পাচ্ছে তার!
.
.
.
.
.
সুমুর বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে রিয়া। কলিংবেলটা বাজাতেই দরজা খুলল আফসানা।
এই সাতসকালে রিয়াকে দেখে যতটা না অবাক হয়েছে, রিয়ার মলিন মুখ দেখে চিন্তিত গলায় জিজ্ঞেস করল, ” কি হয়েছে রে তোর!? চোখমুখ এতো শুকনো দেখাচ্ছে কেন!?
রিয়া জোর করে হেসে বলল, ” বাইরে দাঁড়িয়েই কথা বলবি নাকি!?
আফসা হেসে বলল, ” আরে না, আয় ভেতরে আয়।
রিয়ার মুখে আরহামের প্রতি তার ভালোলাগা আর ইকরার ব্যাপারে শুনে সুমু বলল,” শোন, এইসব রিচ বাবা-মায়ের ছেলেমেয়েরা এমনই হয়। কোম্পানির বস হয়েছে তাই কি হয়েছে! স্বভাব চরিত্র পালটায় না এদের। একদিকে গার্লফ্রেন্ডও থাকে, আবার অফিসের সুন্দরী এমপ্লয়িদের সাথেও প্রেম করে।
আফসাও সেই সাথে তাল মিলিয়ে বলল,” সুমু একদম ঠিক বলেছে রিয়া। আরহাম একে তো বড়লোক, তার উপর চেহারাও মাশাল্লাহ! আরহামের মতো হ্যান্ডসাম ছেলে দেখলে তো মেয়েরা এমনই পটে যায়!! আরহাম সেই সুযোগ নেয়, আর ঝামেলা করলে তাকে নিশ্চয়ই অফিস থেকে বের করে দেয়।
রিয়া অসহায়ের মতো কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখমুখ মুছে বলল, ” আরহাম তাহলে আমাকেও ঐ টাইপ মেয়ে ভেবেছে! ওয়েল, আমিও বুঝিয়ে দেবো আমি মোটেই ঐ টাইপের নই।
আফসা কিছু একটা ভেবে বলল, ” হুম বুঝিয়ে দিস, কিন্ত আরহামের থেকে একটু দূরে দূরে থাকিস। এই টাইপ ছেলেরা খুব চালাক হয়। তোকে নানানভাবে ইনিয়েবিনিয়ে ট্র্যাপে ফেলার ট্রাই করবে।
সুমুও সেইসাথে তাল মিলিয়ে বলল, ” হুম সেটাই, যতটা সম্ভব আরহামের থেকে দূরে থাকবি। যখন বুঝবে তুই ওকে ইগ্নোর করছিস, দেখবি ও নিজেই তোকে ছেড়ে অন্য কাউকে খুজে নেবে।
রিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মনেমনে বলল,” ফাইয়াযের সাথে এনগেজমেন্ট হওয়ার পরও ফাইয়াযকে নিয়ে কখনও কিছু ফিল করিনি। কিন্ত তুমি আরহাম! শেষমেশ তোমার মতো প্লেবয়কে নিয়ে আমি!! ছিঃ ছিঃ ছিঃ। আর না, এখন থেকে তুমি তোমার মতো থাকবে, আমি আমার মতো থাকবো।
.
.
.
.
.
তুতে রঙের লং গাউন পরেছে রিয়া, চুল গুলো ফ্রেঞ্চ বেনি করে একসাইডে দিয়েছে।
ফোনস্ক্রিনে তাকিয়ে বারবার বিরক্ত হচ্ছে সে, ফাইয়ায কল দিচ্ছে!!
শেষমেশ রিসিভ করল রিয়া, অফিস পার্টিতে আছে বলে কল কেটে দিল।
রিয়া হটাৎ পরিচিত কন্ঠঃ পেয়ে পেছনে ফিরল, গাঢ় বেগুনি রঙের শাড়ি পরে তার সামনে দাড়িয়ে আছে আরশি।
তার ফর্সা গায়ে বেশ মানিয়েছে বেগুনি রঙটা। রিয়া মিষ্টি হেসে বলল,” আরশি আপু! কেমন আছেন!?
আরশি একগাল হেঁসে বলল, ” আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি কেমন আছো রিয়া!?
রিয়া স্মিত হেসে বলল, ” আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপু।
.
.
.
পার্টিতে কাপল এক্সচেঞ্জ ড্যান্স হচ্ছে, হটাৎ আরহাম এসে হাত বাড়িয়ে দিল রিয়ার দিকে। রিয়া ভ্রু কুচকে তাকালো, আরশি মুচকি মুচকি হাসছে।
আরহাম এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে অন্য হাত রিয়ার দিকে বাড়িয়ে বলল,” লেটস!
রিয়া কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা, এদিকে সামনে আরশি বসে আছে!! অন্যদিকে বস!!!
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে রিয়াও হাত বাড়িয়ে দিল।
.
.
.
আরহামের এতটা কাছে আসায় অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে রিয়ার।
আরহাম আজ ব্ল্যাক কালারের স্যুট প্যান্ট আর ভেতরে হোয়াইট কালারের শার্ট পরেছে।
মাথার ঘন কালো চুল গুলো একসাইড করে রেখেছে।
কাপল এক্সচেঞ্জ করছে সবাই, কিন্ত আরহাম রিয়াকে এক্সচেঞ্জ করছে না।
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রিয়াকে নেশাগ্রস্তের মতো দেখছে সে।
আরহামের প্রতিটা স্পর্শে বারবার কেপে উঠছে রিয়া।
কিন্ত আরহাম রিয়াকে দেখায় ব্যস্ত, পারেতো নিজের সাথে মিশিয়ে ফেলে রিয়াকে।
রিয়া এদিক ওদিক তাকিয়ে খেয়াল করল সবাই এক্সচেঞ্জ করছে।
আরহামের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে ফেলল সে।
আরহামের এই গভীর দৃষ্টিতে তাকাতে পারছেনা রিয়া, মনে হয় যেন সে হারিয়ে যাবে সেই গভীরতায়।
মাথা নিচু করে বলল, ” সবাই এক্সচেঞ্জ করছে।
আরহাম রিয়ার কানেকানে বলল, “যা আমার, তা আর কাউকে দেবোনা।
চমকে মুখ তুলে তাকালো রিয়া, আরহাম আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলোনা। রিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিল সে।
মুহুর্তেই চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল রিয়ার। কি হচ্ছে বুঝতে পেরে এক ঝটকায় আরহামকে দূরে সরিয়ে নিজেও সরে এলো!!
অন্য কাপলের সাথে হালকা ধাক্কা খেয়ে সামাল দিল আরহাম।
রিয়া বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে।
পার্টিতে আসা লোকজন কানাঘুঁষা শুরু করল, বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে আরহাম।
সেইসাথে প্রচন্ড রাগে কপালের শিরা ফুলে উঠেছে তার।
তবে কি রিয়া তাকে চায় না!? তাহলে কেন আরহামকে প্রথমেই বাধা দেয়নি সে!!? আরহামের ফিলিংস নিয়ে মজা করল!! আরহাম রহমানকে ইনসাল্ট করল সে!!???
রাগে অগ্নিমূর্তির ন্যায় তাকালো রিয়ার দিকে, রিয়া আশপাশে একবার তাকিয়ে ছুটে বেরিয়ে গেল পার্টি থেকে।
আরশি বুঝে গেছে তার ভাইকে এখন সামলাতে কত বেগ পেতে হবে।
আরশি ধীর পায়ে আরহামের সামনে গিয়ে বলল,” বাসায় চল।
আরহাম কোনো কথা না বলে গটগট করে বেরিয়ে গেল পার্টি থেকে।
.
.
.
.
.
বাসায় ফিরে দরজা লক করে দিল রিয়া। ভিষণ কান্না পাচ্ছে তার, কিন্ত কাদতে পারছেনা।
ড্রেস চেঞ্জ করে ওয়াশরুমে ঢুকল সে, এইমুহূর্তে লং শাওয়ার নেওয়া দরকার।
মিসেস ইরা খেয়াল করল, মেয়েটা আসা থেকে রুম থেকে বের হয়নি।
রিয়ার দরজায় নক করল মিসেস ইরা, কিন্ত মেয়ের কোনো সাড়াশব্দ নেই।
বেশ চিন্তায় পড়ে গেল মিসেস ইরা, দরজায় কান পেতে শুনল ওয়াশরুমে পানি পড়ার শব্দ হচ্ছে। তারমানে রিয়া গোসলে!!
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দোলনায় বসল রিয়া।
আরহামের প্রতি দিনদিন দূর্বল হয়ে পড়ছে সে! কিন্ত আরহাম তো তাকে নিয়ে কিছুই ফিল করেনা!! অন্য মেয়েদের মতো রিয়াকেও একসময় নিশ্চয়ই ছেড়ে দেবে!!!
মনেমনে বলল, ” কিন্ত কাল অফিস যাবো কিভাবে!? বসের সাথে এমন একটা লজ্জাজনক ব্যাপার ঘটার পর কিভাবে তার অফিসে কাজ করবো আমি!? ডিসিশন নিল, সে রিজাইন দেবে।
.
.
.
.
.
ডিনার করতে বসেছে রিয়া তার ফ্যামিলির সাথে।
সিরাজ সাহেব খেতে খেতে জিজ্ঞেস করল, ” আজ না তোর অফিসে পার্টি ছিল, তা ডিনার করে আসিস নি!?
পার্টির কথা মনে পড়তেই ভিষম খেল রিয়া। মিসেস ইরা একগ্লাস পানি এগিয়ে দিল মেয়ের দিকে।
রিয়া পানি খেয়ে আমতাআমতা করে বলল, ” পার্টিতে সবার সামনে বেশি খেতে পারিনি আব্বু, তাই।
সিরাজ সাহেব হেসে বলল, ” ও আচ্ছা।
রিয়া মনেমনে ভাবছে,” রিজাইন দেওয়ার কথাটা কি এখনই বলব!? নাকি অফিস থেকে এসে তাই বলব!? এখনই বলে দেই, নাহলে ভাববে অফিস থেকেই আমাকে বের করে দিয়েছে। তা কেন ভাববে!? আমি যা বলব সেটাই সত্যি, হুহ।
.
.
.
.
.
আরহামের রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে আরশি, ঢুকবে কি ঢুকবেনা বুঝতে পারছেনা সে।
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে নক করল দরজায়। আরহাম ফ্লোরে বসে বেডে হেলান দিয়ে আছে, আরশি কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রুমে ঢুকে পড়ল।
যা ভেবেছিল তাই, ফ্লোরে কয়েকটা ওয়াইনের বোতল গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আরহামের হাতেও হাফ গ্লাস ওয়াইন!!
আরহাম দুটো কারনে এসব খায়, খুব মন খারাপ হলে নয়তো প্রচন্ডরকম রেগে থাকলে।
কিন্ত এখন ঠিক কি কারণে খাচ্ছে, ঠিক বুঝতে পারছেনা আরশি।
ধীর পায়ে আরহামের সামনে দাড়িয়ে বলল,” আবার এসব ছাইপাঁশ খাচ্ছিস!?
আরহাম তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল, ” রিয়াকে ভালবেসে ফেলেছি আমি, ভেবেছিলাম আজ ওকে প্রোপোজ করবো। কিন্ত ও আমাকে ইনসাল্ট করল আপু! আমার ফিলিংসটাকে ইনসাল্ট করল রিয়া!! এর শাস্তি তো ওকে পেতেই হবে!!!
আরশি ভয়ার্ত স্বরে বলল, ” কি করবি তুই!? দেখ রিয়া
আরশিকে কিছু বলতে না দিয়েই চেচিয়ে উঠল আরহাম, চিৎকার করে বলল, ” রিয়ার হয়ে কোনো সাফাই দিবিনা বলে দিলাম।
আরশি ভয়ে ভয়ে বলল, ” ভাইয়া আমি
আরহাম নিজের রাগ কন্ট্রোল করে বলল, ” দেখ অন্যের রাগ আমি তোর ওপর ঝাড়তে চাইনা। এখন আমার সামনে থেকে যা, যা বলছি!!!
আরশি আর কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
আরশি বেরিয়ে যেতেই হাতে রাখা ওয়াইনের গ্লাসটা ফ্লোরে ছুড়ে মারল আরহাম।
সাথেসাথে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল গ্লাসটা।
আরহাম সেদিকে তাকিয়ে বলল, ” ঠিক এভাবে আমার মনটা ভেঙে দিয়েছো রিয়া, তোমার মনটাও ঠিক এভাবেই ভেঙে গুড়িয়ে দেবো আমি। জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।
বলেই বাকা হাসি ফুটে উঠল আরহামের মুখে।
.
.
.
.
.
ব্লু কালারের লং ফ্রক পরেছে রিয়া, চুল গুলো পোনিটেল করে বেধে বেরিয়ে পড়ল অফিসের উদ্দেশ্যে।
অফিসে ঢুকতে বেশ অস্বস্তি বোধ করছে তার। না জানি অফিসের স্টাফ, কলিগরা কি বলবে।
রিয়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চিত্রা এগিয়ে এসে বলল, ” তো ম্যাম! আপনি কি অফিসের সিকিউরিটির জবে জয়েন করেছেন!?
চিত্রার কথায় রিয়া থতমত খেয়ে বলল, ” নাতো!!
চিত্রা ভ্রু উঁচিয়ে বলল,” তাহলে এখানে দাঁড়িয়ে কি করছো!?? চলো আমার সাথে, কত কাজ জমা হয়ে আছে।
রিয়া বাধা দিয়ে বলল, ” আআমি আগে একটু বসের সাথে দেখা করে আসি।
চিত্রা কিছু একটা ভেবে বলল, ” ওকে।
.
.
.
আরহামের দরজায় নক করল রিয়া, ভেতর থেকে আরহাম বলল, ” কাম ইন
রিয়া বড় বড় শ্বাস নিয়ে ঢুকল ভেতরে, আরহাম বেশ ব্যস্ততার সাথে কাজ করছে।
রিয়াকে দেখে স্বাভাবিকভাবেই বলল, ” হুম, কিছু বলবে!?
রিয়া থমথমে গলায় বলল, ” কাল পার্টিতে
রিয়া কথা শেষ করার আগেই আরহাম বলল,” যা হয়েছে তা ভুলে যাওয়াই বেটার।
রিয়া অবাক হয়ে তাকালো, আরহাম আবার বলল, ” আর কিছু বলার না থাকলে, যাও কাজে মনোযোগ দাও। একটু পর একটা মিটিং আছে, চিত্রা তোমাকে সব বুঝিয়ে দেবে।
- আরহামের এমন স্বাভাবিক আচরণে রিয়ার আর বুঝতে বাকি নেই, আরহাম সত্যিই একটা প্লেবয়।
সে ভেবেছিলো আরহাম তার কাছে গতকালের ঘটনার জন্য স্যরি বলবে।
কিন্ত না, সে কেন স্যরি বলবে! তার তো এসব নিত্যকার জীবনের রুটিন!!
রিয়া মনেমনে প্রতিজ্ঞা করল, সেও রিজাইন দেবেনা, এই অফিসেই কাজ করবে সে। কিন্ত আরহামের থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকবে।
.
.
.
.
.
(চলবে)