#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
১৮
.
.
.
ফাইয়ায আর কিছু বলার আগেই একটা প্রাইভেট কার এসে ধাক্কা দিল রিয়াকে!
চোখের সামনে যেন দুনিয়া দুলে উঠল তার!! টাল সামলাতে না পেরে রাস্তায় পড়ে গেল রিয়া!!! আফসা আর সুমু চিৎকার দিয়ে ছুটে এলো রিয়ার কাছে!!! ঝাপসা চোখে একপলক তাকিয়ে চোখ বুজল রিয়া!!!!
আশেপাশে লোকজন জড়ো হয়ে গেছে, কার থেকে নেমে দাড়ালো রাফাত। তার গাড়ির সাথেই এক্সিডেন্ট হয়েছে রিয়ার!
রিয়াকে সামনে দেখে তাড়াতাড়ি ব্রেক করেছিলো সে, কিন্ত গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে রিয়া।
সুমু কাদতে কাদতে রিয়াকে তোলার চেষ্টা করছে, আফসা কাদছে আর রিয়ার মুখে হালকা চড়থাপ্পড় মারছে! তবুও চোখ খুলছে না রিয়া!!
লোকজন রাফাতকে ধমকাচ্ছে আর কেউ কেউ ট্যাক্সি ঠিক করছে।
কিন্ত রাফাতের সেদিকে খেয়াল নেই, রিয়ার কপাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া রক্ত দেখে ছুটে গিয়ে রিয়াকে তুলতে তুলতে বলল,” রিয়াকে এখনই হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে!
ছেলেটার মুখে রিয়ার নাম শুনে বেশ অবাক হল আফসা আর সুমু।
তবে বুঝতে বাকি নেই ছেলেটা রিয়ার পরিচিত।
রাফাত তাড়াতাড়ি রিয়াকে নিয়ে পেছনের সিটে শুইয়ে দিল।
আফসা গিয়ে বসল রিয়ার পাশে, সুমু সামনে রাফাতের পাশে গিয়ে বসল।
হসপিটালে ঢুকেই শোভনের সাথে দেখা হয়ে গেল আফসার।
শোভন তাড়াতাড়ি সব অ্যারেঞ্জ করে ওটিতে নিয়ে গেল রিয়াকে।
.
.
.
.
.
এদিকে কিচেনে ব্রেকফাস্ট রেডি করছে মিসেস ইরা, গতকাল থেকেই কেন জানি স্বস্তি পাচ্ছে না সে।
খুব অস্থির লাগছে তার! ছুরি দিয়ে পেয়াজ কাটছে আর ভাবছে,” মেয়েটা বাসায় না থাকলে কেমন যেন ফাকা ফাকা লাগে সবকিছু! বিয়ের পর ও কানাডা চলে গেলে কিভাবে থাকবো আমি!!
হটাৎ আহ করে হাত সরিয়ে দেখল ছুরিতে আঙুলের আগা হালকা কেটে গেছে!
টুপ টুপ করে রক্ত বের হচ্ছে দেখে, মনেমনে বলল, ” আমার মেয়ে কোথায়!? এখনও বাসায় এলোনা কেন ও!!?
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে মেয়েকে কল দিল মিসেস ইরা, কল বেজেই চলেছে!
.
.
.
রিয়ার ফোন সাইলেন্ট করে ব্যাগে রেখে দিল সুমু, চোখের পানি মুছে আফসাকে বলল,” খালামনি কল দিচ্ছে রিয়াকে!
আফসা চোখমুখ মুছে বলল, ” এখন কি হবে! আংকেল আন্টিকে তো জানাতে হবে!!
সুমু মাথায় হাত দিয়ে বসে বলল, ” কিন্ত কিভাবে বলবো!? খালামনিকে কিভাবে বলবো রিয়ার এক্সিডেন্ট!! কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা আমি!!!
আফসা ফোন বের করে বলল, ” ভেঙে পড়িস না সুমু। রিয়া ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ!
সুমু মাথা নাড়িয়ে বলল, ” আমিন!
আফসা কল দিল রিয়ার আব্বুকে, এইমুহূর্তে রিয়ার আম্মুকে জানানো যাবেনা। রিয়ার আব্বুকে জানালে সেইই মিসেস ইরাকে সামলে নিয়ে আসবে।
কয়েকবার রিং বাজতেই রিসিভ করল সিরাজ সাহেব। সব শুনে হন্তদন্ত হয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য অফিস থেকে বেরিয়ে পড়ল সে।
.
.
.
.
.
আরহাম মিটিং রুমে ঢুকে দেখল সবাই এসেছে শুধু রাফাত বাদে!
আরহাম ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল এখনো দুই মিনিট বাকি মিটিং শুরু হতে।
ইকরাও এসেছে, আজ মিটিং শেষে ইকরার সাথে কথা বলতে হবে। তারপর রিয়ার বাসায় যাবে আরহাম।
দুই মিনিট পেরিয়ে পাঁচ মিনিট হয়ে গেছে, অথচ রাফাতের আসার নামই নেই!
চিত্রা মিটিং রুমের বাইরে এসে কল দিচ্ছে রাফাতকে, বেশ কয়েবার রিং হওয়ার পর রিসিভ করল রাফাত।
আরহাম বেরিয়ে এসে চিত্রার কাছ থেকে ফোন নিয়ে বলল, ” কোথায় তুই!? কটা বাজে খেয়াল আছে তোর!!? এখানে সব ক্লায়েন্টরা বসে আছে!!!
রাফাত ওটির বাইরে পায়চারি করতে করতে বলল, ” আরহাম আমি হসপিটালে! রিয়ার এক্সিডেন্ট হয়েছে!!
কথাটা শোনা মাত্রই আঁতকে উঠল আরহাম, বাকি কথা বলতে না দিয়ে চেচিয়ে উঠল,” কোন হসপিটাল!?
ফোনটা চিত্রাকে দিয়ে ছুটে চলে গেল আরহাম। লিফটে ওঠারও টাইম পেলনা সে, সিড়ি দিয়ে ছুটে নেমে গেল। পার্কিং লট থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল!
হাই স্পিডে ড্রাইভ করছে আরহাম, এক হাত দিয়ে টেনেটেনে টাই খুলে শার্টের ওপরের কয়েকটা বোতাম খুলে ফেলল।
বারবার রিয়ার মুখটা ভেসে উঠছে চোখের সামনে। আজ রিয়ার কিছু হয়ে গেলে নিজেকে কোনোদিন মাফ করতে পারবেনা আরহাম!
.
.
.
.
.
সিরাজ সাহেব বাসায় ঢুকে ডাকল মিসেস ইরাকে, মিসেস ইরা আঙুলে মলম লাগাতে লাগাতে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।
সিরাজ সাহেব যতটা সম্ভব নিজেকে শান্ত রেখে বলল,” ইরা! আমাদের এখনই হসপিটাল যেতে হবে!!
মিসেস ইরা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” মানে!? হসপিটালে কেন যাবো!? কার কি হয়েছে!!?
সিরাজ সাহেব আমতাআমতা করে বলল, ” রিয়ার ফুড পয়জনিং হয়েছে, তাই আফসা আর সুমু ওকে
বাকিটা বলার আগেই মিসেস ইরা বলল,” কি বলছ তুমি!? মেয়েটাকে কত করে বলেছি, বাইরের আজেবাজে খাবার না খেতে। কিন্ত সে শুনলে তো!
মিসেস ইরা রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ল সিরাজ সাহেবের সাথে।
হসপিটালে ঢুকে মিসেস ইরার আগেই আফসা আর সুমুর কাছে গিয়ে সিরাজ সাহেব বলল, ” রিয়ার আম্মু কিন্ত কিছুই জানেনা, সো নিজেদেরকে স্বাভাবিক রাখো।
সুমু চোখমুখ মুছে জিজ্ঞেস করল, ” খালামনিকে তাহলে কি বলে এনেছেন খালু!?
সিরাজ সাহেব পেছনে তাকিয়ে দেখল মিসেস ইরা এসে গেছে।
তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে চিন্তিত গলায় বলল,” বাইরের আজেবাজে খাবার খেলে ফুড পয়জনিং তো হবেই!
সুমু বুঝে গেছে, মিসেস ইরাকে কি বলে এনেছে রিয়ার আব্বু!
আফসানা নিজেকে সংযত করে বলল, ” হুম! ফুড পয়জনিং হয়েছে রিয়ার!!
সিরাজ সাহেব সুমুকে একসাইডে নিয়ে বলল, “আমার মেয়ের কি অবস্থা এখন!!? ডক্টর এসেছে!!!?
সুমু বলল,” হুম, আমরা এসেই ডক্টর পেয়েছি! ওকে ওটিতে নিয়ে গেছে!!
সিরাজ সাহেব আঁতকে উঠে বলল, ” মানে!? ওটিতে কেন!? তোমরা যে বললে সিরিয়াস কিছু না!!
সুমু থমথমে গলায় বলল, ” আপনাদেরকে টেনশনে ফেলতে চাইনি খালু, আপনারা আসার পর বলতাম।
সিরাজ সাহেব ভেবে পাচ্ছেনা কি করবে! তার মেয়েকে ওটিতে নিয়ে গেছে!! মনেমনে বলল, “আল্লাহ রক্ষা করো আমার মেয়েকে!!!
সিরাজ সাহেবকে শান্ত করতে সুমু বলল,” খালু! প্লিজ ভেঙে পড়বেন না!! রিয়া ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ!!!
সিরাজ সাহেব নিজেকে আর শান্ত রাখতে পারছেনা, মনে হচ্ছে যেন হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তার!
রিয়া যেদিন হয়েছিলো, খুশিতে পুরো অফিসের সবাইকে মিষ্টিমুখ করিয়েছিলো সিরাজ সাহেব!
মিসেস ইরার তো আনন্দের শেষ ছিলো না সেদিন। রিয়া হওয়ার আগে সে শুধু দোয়া করত যেন তার মেয়ে হয়।
রিয়ার নানু তাই শুনে বলত, মানুষ ছেলের জন্য দোয়া করে আর তুই মেয়ের জন্য করছিস!
রিয়া হওয়ার পর যখন মিসেস ইরার কানে এলো, “ছোট্ট একটা পরী হয়েছে”! ডেলিভারির সব ব্যাথা ভুলে এক চিলতে হাসি ফুটেছিলো তার মুখে!!
সেই ছোট্ট পরীটা আজ হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে! রিয়ার এক্সিডেন্টর কথা জানতে পারলে ইরাকে সামলানো যাবেনা!!
তাই নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে সিরাজ সাহেব। মিসেস ইরা জিজ্ঞেস করল, ” সুমু! আফসা! আমার মেয়ে কোথায়!? আমি দেখতে চাই ওকে!!
আফসা স্মিত হেসে বলল, ” আন্টি ওর একটু ট্রিটমেন্ট চলছে। খাবার গুলো বের করছে তো!
মিসেস ইরা কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ” ওহ।
সিরাজ সাহেবকে বলল,” আচ্ছা, তুমি একটু ডক্টরের সাথে কথা বলো তো।
সিরাজ সাহেব আচ্ছা বলে সেখান থেকে অন্য সাইডে গেল।
মিসেস ইরার সামনে আর কিছুক্ষণ থাকলে নিজেকে শান্ত রাখতে পারতো না সে।
দুশ্চিন্তায় প্রেশার হাই হয়ে যাচ্ছে তার।
নামাজের রুম খুজে, সেখানে গিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেল সিরাজ সাহেব।
মিসেস ইরা ফাইয়াযকে কল দিয়ে জানিয়েছে। ফাইয়ায আর তার মা আসছে!
.
.
.
.
.
হসপিটালের সামনে গাড়ি রেখেই ছুটতে ছুটতে সিড়ি বেয়ে উঠে এলো আরহাম।
হটাৎ করে কাউকে এভাবে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসতে দেখে তাকিয়ে আছে অনেকে।
মিসেস ইরা উঠে বলল, ” আরহাম! এখানে!!?
আফসা আর সুমুর বুঝতে বাকি নেই যে, এই আরহামই রিয়ার অফিসের বস!
রাফাতের কাছে গিয়ে আরহাম জিজ্ঞেস করল, ” রিয়া কোথায়!?
রাফাত কিছু বলার আগেই সুমু উঠে গিয়ে আরহামকে বলল,” এখানে কি করতে এসেছেন!? রিয়াকে
সুমুকে আর কিছু বলতে না দিয়ে টেনে অন্যদিকে নিয়ে গেল আফসা।
দাতে দাত পিষে বলল, ” কি করছিস কি সুমু! এখানে আন্টি আছে!!
সুমু হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, ” কি করবো, আর সহ্য হচ্ছিলো না। আমি শিওর রিয়া ওর কথা ভাবতে ভাবতেই এক্সিডেন্ট করেছে!!
আরহামের সেদিকে খেয়াল নেই, সে এদিক ওদিক তাকিয়ে শুধু রিয়াকে খুজছে!
রাফাত আরহামকে বলল, ” টেনশন করিস না আরহাম! ইনশাআল্লাহ রিয়া ঠিক হয়ে যাবে!
আরহাম ধৈর্য্য হারিয়ে বলল,” কিভাবে! কিভাবে হল এসব!?
রাফাত চিন্তিত গলায় বলল, ” আরে আমি ড্রাইভ করে তোর অফিসে যাচ্ছিলাম। হটাৎ দেখি রিয়া আমার গাড়ির সামনে! সাথেসাথেই ব্রেক করেছিলাম কিন্ত হটাৎ ধাক্কা সামলাতে না পেরে পড়ে গেছে রিয়া। প্রথমে ভেবেছিলাম সেন্সলেস হয়ে গেছে। কিন্ত যখন দেখলাম কপালে রক্ত
আরহাম আর সহ্য করতে পারছেনা, ইচ্ছে করছে রাফাতের গাড়িটা ভেঙে গুড়িয়ে দিতে!
ওটি থেকে বেরিয়ে এসেছে একজন নার্স। একটা প্রেসক্রিপশন এনে জিজ্ঞেস করল, ” এখানে মিস রিয়ার কে আছেন!?
মিসেস ইরা উঠে বলল, ” আমি! আমি রিয়ার আম্মু!!
আফসা আর সুমু একরকম ছুটে গেল, আরহাম এগিয়ে গেল নার্সের দিকে। রাফাতও গেল তার পিছুপিছু।
ঠিক তখনই এসে দাড়ালো ফাইয়ায আর মিসেস ফাতেমা।
মিসেস ইরা নার্সকে জিজ্ঞেস করল, ” আমার মেয়ের এখন কি অবস্থা!? এখন কি দেখা করা যাবে ওর সাথে!!?
নার্স কিছু বলার আগেই ডক্টর শোভন এসে বলল, ” চিন্তার কিছু নেই, কপালে আর পায়ে চোট পেয়েছে। কয়েকদিন রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে।
মিসেস ইরা আঁতকে উঠে বলল, ” মানে!? আমার মেয়ে মাথায় চোট পেয়েছে!!? কিন্ত ওর তো
বলেই আফসা আর সুমুর দিকে তাকালো, সুমু না দেখার ভান করে প্রেসক্রিপশন নিয়ে দেখতে লাগল। আফসা অন্যদিকে তাকিয়ে নখ কামড়াচ্ছে!
মিসেস ইরা কিছুই বুঝতে পারছেনা, আরহাম জিজ্ঞেস করল, ” রিয়া এখন কেমন আছে ডক্টর !? ওর সাথে কি এখন দেখা করা যাবে না!?
ডক্টর শোভন বলল,” না, ওনার এখনও সেন্স ফেরেনি। ফিরলে আপনাদের জানানো হবে।
বলেই চলে গেল, নার্সও চলে গেল তার পিছুপিছু।
মিসেস ফাতেমা জিজ্ঞেস করল, ” রিয়ার কি তাহলে এক্সিডেন্ট হয়েছে ভাবি!?
ফাইয়ায উত্তেজিত হয়ে বলল, ” কিভাবে হল এসব!? আন্টি!?
এরমধ্যে সিরাজ সাহেব নামাজ পড়ে ফিরে এসেছে। মিসেস ইরা তাকে দেখিয়ে দাতে দাত পিষে বলল, ” ওনাকে জিজ্ঞেস করো, উনি ভাল বলতে পারবে আশা করি।
সিরাজ সাহেব জোর করে হেসে বলল, ” আমি ডক্টরকে খুজতে গেছিলাম।
মিসেস ইরা হালকা চেচিয়ে বলল,” আমার মেয়ের এক্সিডেন্ট হয়েছে আর তুমি বলছিলে ফুড পয়জনিং!?
সিরাজ সাহেব অবাক হওয়ার ভান করে বলল,” কি!? এক্সিডেন্ট!!? কিন্ত সুমু যে বলল
মিসেস ইরা বুঝল এসব আফসা আর সুমুই লুকিয়েছে! হয়তো দুশ্চিন্তায় ফেলতে চায়নি তাই, কিন্ত রিয়ার যদি কিছু হয়ে যেতো তখন!!?
.
.
.
.
.
জ্ঞান ফিরে চোখ পিটপিট করে তাকাচ্ছে রিয়া, মাথাটা কেমন যেন ব্যাথা করছে!
কিন্ত সে কোথায় এখন!? মাথায় হাত দিয়ে উঠে বসার চেষ্টা করছে রিয়া, নার্স দেখল রিয়ার জ্ঞান ফিরেছে।
রিয়াকে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিল, রিয়া জিজ্ঞেস করল, ” কে আপনি!? আর আমি কোথায়!?
নার্স বলল,” আপনি বসুন আমি ডক্টর শোভনকে ডেকে আনি।
বলেই দ্রুত পায়ে চলে গেল নার্স, ডক্টর শোভন নামটা শুনে বেশ চেনা চেনা লাগছে রিয়ার।
আফসা যে ডক্টরকে লাইক করে তার নামও তো শোভন! একি তাহলে সেই শোভন!!?
রিয়ার ভাবনায় ছেদ পড়ল শোভনের ডাকে, রিয়া যেহেতু শোভনকে আগে দেখেনি তাই ঠিক শিওর হতে পারল না।
শোভন স্মিত হেসে জিজ্ঞেস করল, ” এখন কেমন আছেন মিস রিয়া!?
রিয়া উত্তর না দিয়ে বলল, ” আমি এখানে কেন!? কি হয়েছে আমার!?
শোভন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ” আপনার এক্সিডেন্ট হয়েছিলো, চিন্তা নেই এখন সুস্থ আছেন।
রিয়া ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” এক্সিডেন্ট! কিন্ত কিভাবে!?
শোভন রিয়ার কপাল চেক করতে করতে বলল, ” এখন ওসব নিয়ে ভাবতে হবেনা। বাইরে সবাই ওয়েট করছে আপনার সাথে দেখা করবে!
রিয়া জিজ্ঞেস করল, ” কারা ওয়েট করছে!? আমার আব্বু আম্মু কোথায়!?
শোভন রিয়ার পায়ের গোড়ালির ক্ষতটা চেক করে বলল,” ওনারা বাইরে আছেন। ওয়েট আমি ডেকে দিচ্ছি।
রিয়া বাধা দিয়ে বলল, ” না না। আমি এখন কারো সাথে দেখা করতে চাইনা।
বলেই গম্ভীরমুখে বসে রইলো রিয়া, শোভন মাথা নাড়িয়ে বলল, ” ওকে।
কিছুক্ষণ রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, ” মনে হচ্ছে আপনি কিছু নিয়ে টেনশন করছেন। চাইলে আমার সাথে শেয়ার করতে পারেন।
রিয়া একবার শোভনের দিকে তাকিয়ে আবার অন্যদিকে তাকালো।
আরহামকে চাইলেও ভুলতে পারছেনা সে। আর এই ব্যাপারটা কারো সাথে শেয়ার করলে, তারা যতবার এই নিয়ে তাকে এডভাইস দিচ্ছে, ততবারই আরহামকে মনে পড়ছে রিয়ার!
তাই ঠিক করেছে, আর কারো সাথে শেয়ার করবেনা এসব।
শোভন ধীর পায়ে রিয়ার বেডের পাশে রিয়ার মুখোমুখি হয়ে বসল।
এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, ” দেখুন, আমাদের লাইফে অনেক কিছুই ঘটে, কিন্ত সবকিছু শেয়ার করা যায়না। কিন্ত সবার সাথে শেয়ার করা যায়না তা কিন্ত না। অনেকে আছে যাদের কাছে শেয়ার করলে রিল্যাক্স ফিল করা যায়। কখনও কখনও সল্যুশন বের করা যায়। ধরে নিতে পারো আমি তাদেরই একজন।
রিয়া না তাকিয়েই বলল, ” আমি এমন একজনকে ভালবাসি যে আমাকে ভালবাসেনা। তাতে আমার কোনো আফসোস নেই, কারণ এটাকে হয়তো একতরফা ভালবাসা নাম দেওয়া যেতো। কিন্ত সে রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য আমার ফিলিংস নিয়ে খেলেছে!
শোভন একটা ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ” আমি জানতে চাইবোনা কিসের রিভেঞ্জ। তবে এটা জানতে চাইবো যে, তুমি এখন কি চাও!
রিয়া চোখের জল মুছে বলল, ” আমি ওকে ভুলে যেতে চাই, ওর সাথে কাটানো সব স্মৃতি ভুলে যেতে চাই। এমন একটা লাইফ চাই যেখানে ওর কোনো অস্তিত্ব থাকবেনা আমার জীবনে।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আবার বলল, ” মুভিতে যেমন দেখায় না, মাথায় চোট পেয়ে স্মৃতি হারিয়ে যায়! আমারও যদি তেমনভাবেই ওর সাথে কাটানো সব স্মৃতি গুলো হারিয়ে যেতো!
শোভন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে রিয়ার কথা গুলো। রিয়া শোভনের দিকে তাকিয়ে বলল,” আমি ছোট থেকেই নেগেটিভ কিছু নিতে পারিনা। যেটা অসম্ভব মনে হয় সেটা নিয়ে ভাবতে চাইনা, চাই না কেউ সেটা নিয়ে আমাকে কিছু বলুক।
একটু থেমে আবার বলল, ” আমি জানি এগুলো ভুলতে আমার টাইম লাগবে। কিন্ত ততদিন যতবারই ওর কথা কেউ তুলবে আমি ভুলতে পারবোনা।
শোভন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ” আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে! শুনবে!?
রিয়া ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” কি!?
শোভন উঠে গিয়ে দরজা লক করে আবার এসে বলল, ” তুমি চাও না কেউ তোমার অপছন্দের ব্যাপার নিয়ে কথা বলুক। তোমার এসব ভুলতে টাইম লাগবে। তাই তো!?
রিয়া দ্রুত মাথা নাড়িয়ে সায় দিল, শোভন একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল, ” ভেবে নাও তোমার স্মৃতি এখন থেকে হাওয়া!
রিয়া ভ্রু কুচকে বলল, ” কিন্ত আমার তো এখনও তার কথা মনে পড়ছে!
শোভন হেসে বলল, “তোমার তো মনে পড়বে, কিন্ত বাকি সবাই জানবে যে এই এক্সিডেন্টের পর তোমার স্মৃতি চলে গেছে! তুমি সব ভুলে গেছো। তখন আর কেউ তোমাকে এসব নিয়ে কথা বলতে আসবেনা। তুমি টাইমের সাথেসাথে আরামছে তাকে ভুলে যাবে।
রিয়া কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে খুশিতে ডগমগ হয়ে বলল, ” সিরিয়াসলি! এটা সম্ভব!?
শোভন একটু ভাব নিয়ে বলল,” তুমি চাইলে অবশ্যই সম্ভব!
রিয়ার খুশি আর কে দেখে, খুশিতে জড়িয়ে ধরল শোভনকে। শোভন বেচারার তো দম আটকে গেল প্রায়! এতো জোরে কেউ জড়িয়ে ধরে!!?
রিয়া ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিল শোভনকে।
আমতাআমতা করে বলল, ” আসলে, একটু এক্সাইটেড হয়ে গেছিলাম তাই!
শোভন জোর করে হেসে বলল, ” ইটস ওকে। তুমি রেস্ট নাও, আমি বাইরে যাচ্ছি।
.
.
.
.
.
দুপুরের খাবার খেতে হসপিটালের পাশের একটা রেস্টুরেন্টে গেছে সবাই।
শুধু আরহাম আর রিয়ার আম্মু বাদে। হসপিটালের করিডরে পায়চারি করছে আরহাম।
মিসেস ইরা বেঞ্চে বসে আছে, আরহামকে ডেকে বলল,” তুমি গেলে না যে!?
আরহাম ম্লান হেসে বলল, ” খিদে নেই আন্টি। আপনার কিছু লাগবে!? এনে দেবো!?
মিসেস ইরা স্মিত হেসে বলল, ” না, আমার পাশে এসে বসো।
আরহাম গিয়ে বসল, মিসেস ইরা ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে এগিয়ে দিয়ে বলল, ” পানিটা খেয়ে নাও।
আরহামের নিজেকে এখন বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে! এই ভদ্রমহিলাকে সে মায়ের মতো ভালবাসে, সেও আরহামকে নিজের ছেলের মতোই ভাবে।
অথচ আরহাম! সে কিনা তার মেয়েকে এভাবে কষ্ট দিল!!
তার থেকে বড়কথা সে তো নিজেই রিয়াকে অসম্ভব ভালোবাসে!!! তাহলে কেন এমন করল সে!
না বুঝেই রিয়াকে অনেক কষ্ট দিয়েছে আরহাম, আবার সেইই সবকিছু ঠিক করে দেবে।
তার জন্য তাকে যা করতে হয় তাই করবে সে। তবু রিয়াকে আর কষ্ট পেতে দেবে না।
.
.
.
লাঞ্চ করে সবাই ফিরে এসেছে, ডক্টর শোভন এসে বলল, ” মিস রিয়ার সেন্স ফিরেছে, চাইলে ওনার সাথে দেখা করতে পারেন।
মিসেস ইরা দ্রুত পায়ে যেতে গেলে শোভন বাধা দিয়ে বলল, ” তবে একটা প্রবলেম আছে।
আরহাম ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” কিসের প্রবলেম!?
শোভন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ” এক্সিডেন্টের কারণে মিস রিয়ার মাথায় বেশ চোট পেয়েছে যার ফলে
ফাইয়ায উত্তেজিত হয়ে বলল, ” যার ফলে কি ডক্টর!? কি হয়েছে রিয়ার!?
শোভন বলল,” ওনার মেমোরি লস হয়ে গেছে!
কথাটা শোনা মাত্রই থ হয়ে গেল সবাই! সুমু তো চিৎকার করে বলল, ” মানে কি! ও পাগল হয়ে গেছে!!?
শোভন হেসে বলল, ” না না, পাগল হবে কেন!? মেমোরি লস মানে স্মৃতি হারিয়ে যাওয়া ।
আফসা মাথা নাড়িয়ে বলল, ” ঐ যে মুভিতে দেখায় না, তেমন আর কি!
বলেই ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরল আফসা, কথাটা এই সিচুয়েশনে বলা উচিৎ হয়নি তার!
মিসেস ইরা আতংকিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” এসব কি বলছেন ডক্টর!? তাহলে ও কি আমাদের কাউকে চিনতে পারবেনা!?
শোভন একটা ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল,” এখন কথা হচ্ছে, ওনার লং টাইম মেমোরি লস হয়েছে নাকি টেম্পোরারি। সেটা এখনই বোঝা যাচ্ছে না, হতে পারে কয়েকদিনের বা কয়েক মাসের বা কয়েক বছরের। এরকম সাধারণত খুব কমজনেরই হয়, তার মধ্যে এখন মিস রিয়াও একজন।
মিসেস ইরার চোখে পানি টলমল করছে, কাপা কাপা গলায় বলল,” আর যদি লং টাইম মেমোরি লস হয়ে থাকে তো ও ওর বাবা-মাকেও চিনতে পারবেনা তাই তো!?
শোভন স্মিত হেসে বলল, ” আপনারা এতটা টেনশন নিচ্ছেন কেন!? যেরকমই মেমোরি লস হোক না কেন, মিস রিয়া তার ফ্যামিলিকে ভুলতে পারবেনা। কারণ সে ছোট থেকেই তাদেরকে দেখে আসছে, সো রিল্যাক্স থাকেন। কয়েকদিনের স্মৃতি ভুলে যাওয়া মানে এই না যে, সে সবাইকে ভুলে যাবে।
সিরাজ সাহেব আস্বস্ত হয়ে বলল, ” তাহলে আমরা ওর সাথে দেখা করতে যাই!
শোভন মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে বলল, ” জ্বি অবশ্যই। ওনার সামনে একে একে যান, চিনতে পারলে ভালো। না চিনতে পারলে চেনানোর জন্যে বেশি প্রেশার দেবেন না। নাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে!
ডক্টরের কথা শেষ হতে না হতেই সিরাজ সাহেব আর মিসেস ইরা দ্রুত পায়ে কেবিনে ঢুকে গেল।
একে একে সবাই ঢুকল কেবিনে, কিন্ত আরহাম ঢুকবে কি ঢুকবেনা ভেবে পাচ্ছেনা।
রিয়া যদি তাকে চিনতে না পারে!? তখন কি করবে সে!!? কিন্ত এমনও তো হতে পারে রিয়া তাকে ভোলেনি!
রিয়া তো তাকে ভালবাসে, তাহলে কিভাবে ভুলে যাবে!!?
ঠিক করল, কেবিন থেকে সবাই বেরিয়ে এলে তারপর সে যেয়ে দেখে আসবে রিয়াকে। রিয়া নিশ্চয়ই তাকে চিনতে পারবে।
.
.
.
.
.
রিয়া বেডে হেলান দিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে। হটাৎ কারো পায়ের শব্দ পেয়ে ফিরে তাকালো, দরজা দিয়ে একে একে বাবা-মা, আফসানা, সুমু, ফাইয়াযের আম্মু, ফাইয়ায এসে দাড়ালো। কিন্ত তার দুচোখ খুজে বেড়াচ্ছে আরহামকে।
আরহাম কি তার এক্সিডেন্টের খবর পায়নি!? পেলেও বা কি, সে কেন আসবে!? তার তো রিভেঞ্জ নেওয়া হয়ে গেছে!!!
মিসেস ইরা বেডের পাশে এসে মেয়ের চোখেমুখে চুমু খেয়ে বলল, ” এখন কেমন আছিস আম্মু!?
রিয়া তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ” ঠিকাছি আম্মু, মাথায় একটু ব্যাথা করছে।
ফাইয়াযকে রিয়া চিনতে পেরেছে দেখে স্বস্তি পেলো মিসেস ফাতেমা।
সুমু আর আফসানা টুকটাক কথা বলে বাসায় চলে গেছে, ফ্রেশ হয়ে রাতে আবার আসবে রিয়ার সাথে থাকতে।
মিসেস ইরার পাশে এসে সিরাজ সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, ” খিদে পেয়েছে আম্মু!?
রিয়া মুচকি হেসে বাচ্চাদের মতো করে বলল, “খুব খিদে পেয়েছে!
সিরাজ সাহেব স্মিত হেসে জিজ্ঞেস করল, ” কি খাবি বল!?
রিয়া একটু ভেবে বলল, ” ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, নাগেটস, সসেজ, চিকেন মিটবল আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই!
রিয়ার কথা শুনে সবাই হেসে ফেলল, সিরাজ সাহেব বলল, ” আচ্ছা ঠিকাছে, বাসায় চল তোকে সব খাওয়াবো।
রিয়া চোখ জোড়া পিটপিট করে বলল, ” আমি বাসায় কখন যাবো আব্বু!?
সিরাজ সাহেব বলল, ” ডক্টর বলেছে, কাল তোকে রিলিজ দেবে।
মিসেস ইরা বলল,” আর এখন ওসব ফ্রাই ট্রাই খাওয়া চলবেনা। বাসা থেকে রান্না করে পাঠাবো সেসব খাবি।
রিয়া না চাইতেও মাথা নাড়িয়ে সায় দিল, রিয়ার আব্বু আম্মুর সাথে মিসেস ফাতেমাও চলে গেল। ফাইয়ায গেছে ডক্টরের সাথে কথা বলতে।
.
.
.
সবাই বেরিয়ে এসেছে দেখে কেবিনে ঢুকল আরহাম, রিয়া চুপচাপ বসে আনমনে কি যেন ভাবছে। হটাৎ কারো পায়ের শব্দ পেয়ে ফিরে তাকাতেই চমকে উঠল রিয়া!
মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে এলো, ” আরহাম!
আরহামকে দেখে চেনাই যাচ্ছেনা, গতরাতেও তাকে কত উৎফুল্ল লাগছিলো।
কিন্ত এখন! উষ্কখুষ্ক চুল, শার্টের ওপরের বোতাম কয়েকটা খোলা, টাইটা আধখোলা হয়ে ঝুলে আছে, চোখেমুখে স্পষ্ট ক্লান্তি!
কি হয়েছে আরহামের!? রিয়া আরহামের কাছে ছুটে যাবে বলে উঠতে গেলেই গতরাতের কথা মনে পড়ল তার!! সাথেসাথেই নিজেকে গুটিয়ে নিল সে!!
আরহাম ধীর পায়ে রিয়ার সামনে গিয়ে বলল,” কেমন আছো রিয়া!?
রিয়া নিজেকে সংযত করে না চেনার ভান ধরে জিজ্ঞেস করল , ” কে আপনি!? এখানে কেন এসেছেন!?
আরহাম হতবিহ্বলের মতো ছুটে গিয়ে রিয়ার হাত ধরে বলল, ” প্লিজ রিয়া! এমনটা করোনা আমার সাথে!! তুমি আমাকে ভুলতে পারোনা!!!
রিয়া নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, ” আশ্চর্য! আমাকে টাচ করলেন কোন সাহসে!? বেরিয়ে যান!! বেরিয়ে যান বলছি!!!
আরহাম রিয়াকে শান্ত করে বলল, ” আচ্ছা! রিল্যাক্স!! তুমি চিৎকার করোনা, আমি তোমাকে টাচ করছিনা!!!
রিয়ার বুক ফেটে কান্না আসছে! কেমন এমন করছে আরহাম!! সে তো রিয়াকে ভালইবাসেনা!!! তাহলে কেন এমন করছে!!?
আরহাম একটু থেমে আবার বলল, ” রিয়া লিসেন টু মি! তুমি আমাকে ভালবাসো, একটা এক্সিডেন্টে তোমার মেমোরি লস হয়ে গেছে দ্যাটস ইট!! প্লিজ মনে করার চেষ্টা করো রিয়া!!!
রিয়া নিজেকে শক্ত করে বলল, ” আমি একজনের বাগদত্তা! আমি কেন আপনাকে ভালবাসতে যাবো!!?
আরহাম আর সহ্য করতে পারছেনা! রিয়ার মুখে অন্য কারো নাম শুনে রাগে কপালের শিরা গুলো ফুলে উঠেছে তার!!
ফাইয়ায কেবিনে ঢুকতেই আরহামের রাগ আরও বেড়ে গেল। রিয়া বেড থেকে নেমে দ্রুত পায়ে ফাইয়াযের হাত ধরে বলল,” আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো ফাইয়ায! আমার এখানে একটুও ভাল লাগছেনা!!
ফাইয়ায রিয়াকে এক হাতে জড়িয়ে ধরল, আরহামের দিকে বাকা হেসে বলল, ” কাম অন রিয়া! মাত্র তো আজকের রাত, কাল সকালেই হসপিটাল থেকে রিলিজ দিয়ে দেবে।
আরহামের ইচ্ছে করছে ফাইয়াযের হাতটা কেটে আগুনে ঝলসে দিতে! ফাইয়াযের দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে রেগেমেগে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল আরহাম!!
.
.
.
.
.
(চলবে)