চলো ভিজি বৃষ্টিতে পর্ব-৩০

0
959

#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
২৯ পর্বের কিছু অংশ যোগ করে দিয়েছি🙂
(৩০)





রিয়া ট্যাক্সি নিয়ে আরহামের রিসোর্টে এসে ঢুকল, হোটেলে ঢুকে খোজ নিতেই তারা জানালো আরহাম সুইমিংপুলে আছে!

রিয়া একটা স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে সুইমিংপুলের দিকে যেতে লাগল। সে জানতো আরহামকে এখানেই পাওয়া যাবে।

দ্রুত পায়ে সুইমিংপুলের দিকে যেতে যেতে দেখল কেউ একজন পানিতে উল্টো হয়ে ভাসছে!!! কে লোকটা!? সুইমিংপুলে তো আরহাম আছে বলল, তাহলে কি আরহাম!!!

আরহামের কথা ভাবতেই আঁতকে উঠল রিয়া, আর কিছু ভাবতে পারছেনা সে! ছুটে গিয়ে সুইমিংপুলে ঝাপ দিল সে!!
হটাৎ করে পানিতে ঝাপ দেওয়ার শব্দে চমকে উঠল আরহাম!! খেয়াল করল, পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে রিয়া!!! মনেমনে ভাবল,” রিয়া এখানে!? আর পানিতেই বা কি করছে!?
আরহাম সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে তাড়াতাড়ি সাতরে গিয়ে জড়িয়ে ধরল রিয়াকে। পানি খেয়ে কাশতে লাগল রিয়া, আরহাম এক হাতে রিয়ার কোমর জড়িয়ে অন্য হাত দিয়ে জোরে জোরে রিয়ার পিঠে মালিশ করতে লাগল!
এতে করে রিয়া যেটুকু পানি খেয়েছে তার অনেক টাই বেরিয়ে এসেছে!!
রিয়া কিছুটা ধাতস্থ হয়ে দেখল আরহাম তাকে জিজ্ঞেস করছে, ” আর ইউ ওকে!?

রিয়া গাল ফুলিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আরহামকে, নাক টেনে টেনে বলল,” আমি ঠিক নেই! ঠিক নেই আমি!! কেন করেন এমন!? আপনাকে ওভাবে ভেসে থাকতে দেখে জান বেরিয়ে আসছিলো আমার!!! আর আপনি জিজ্ঞেস করছেন আমি ঠিক আছি কিনা!!

আরহাম রিয়ার সামনে আসা ভেজা চুল গুলো কানে গুজে দিতে দিতে বলল, ” ওভাবে বাটারফ্লাই স্টাইলে ভেসে থাকাটা ডিপ্রেশন বা যেকোনো ধরনের টেনশন দূর করে।
একটু থেমে ভ্রু নাচিয়ে বলল, “বাই দ্যা ওয়ে, তুমি সুইমিং পারোনা আবার আমাকে বাচাতে পানিতে ঝাপ দিয়েছো!

রিয়ার এবার ভিষণ লজ্জা লাগছে, একে তো সুইমিং পারেনা সেই খোটা দিচ্ছে। আবার নিজের সাথে একেবারে জড়িয়ে ধরে আছে!

রিয়া আমতা-আমতা করে বলল, ” সুইমিং পারি না কে বলল, আমি গাউন পরেছি তাই সুইম করতে পারছিলাম না হুহ।

আরহাম রিয়াকে আরও কাছে এনে বলল,” বাট তুমি তো ফ্রক পরে আছো! আই ডোন্ট থিংক ফ্রক পরে সুইম করা যায় না!!

রিয়া নিজের দিকে তাকিয়ে দেখল সত্যিই সে গাঢ় বেগুনি রঙের লং ফ্রক পরেছে আজ! তার থেকেও বড় কথা সে আরহামের সাথে ভিজে একেবারে লেপ্টে আছে!! আরহাম তো খালি গায়ে শুধু শর্টস পরে দাঁড়িয়ে আছে!!!
আরহামের উন্মুক্ত বুকের ভেজা পশম গুলো যেন রিয়াকে টানছে!!!!
আরহাম ঝট করে রিয়াকে কোলে তুলে নিল, রিয়ার সেদিকে খেয়াল নেই, সে তো তার প্রিন্স আরহামকে দেখতেই ব্যস্ত!! আরহাম কোনো রূপকথার প্রিন্সের থেকে কোনো অংশেই কম নয়!!! কিন্ত রিয়া কি সেই রূপকথার প্রিন্সেস!!!? জানেনা সে, শুধু জানে আরহাম তার, আর তারই থাকবে আজীবন!!!!

লেকের পাড়ে বসে আছে আফসা, গায়ে তার গোলাপি পাড়ের নীল শাড়ি।
খোপা বাধেনি, বেনি করে একসাইডে দিয়ে রেখেছে!

হটাৎ পরিচিত কন্ঠ পেয়ে পেছনে ফিরল আফসা, দ্রুত পায়ে এদিকেই এগিয়ে আসছে শোভন! সেও আজ নীল পাঞ্জাবি পরেছে!

কি আশ্চর্য! দুজনেই আজ একই রঙে সেজেছে!! শোভন কাছাকাছি আসতেই চমকে উঠল!!! হ্যাঁ সেও ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে!!!

আফসা ইশারায় তাকে বসতে বলল, শোভন সলজ্জ হেসে বসে পড়ল।

আফসা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল, ” কি বলবেন বলে ফেলুন! আমার তাড়া আছে!!

শোভন ভেবে পাচ্ছেনা কি বলবে! সারাপথ হাজারো গল্পের ঝুলি বয়ে এনেছে সে, সব কি এই লেকের জলে ডুবে মরল!!

আফসার ডাকে ভাবনায় ছেদ পড়ল শোভনের, আমতা-আমতা করে বলল, ” না মানে, বলছিলাম যে। আপনাকে শাড়িতে বেশ সুন্দর লাগছে!

আফসা স্মিত হেসে বলল, ” থ্যাংকস! আসলে সন্ধ্যায় এক কলিগের এনগেজমেন্ট পার্টি আছে। তাই ভাবলাম একেবারে রেডি হয়েই বের হই!! তাই আর কি!!!

শোভন কিছুটা মনোক্ষুণ্ণ হলেও জোর করে হেসে বলল, ” ও আচ্ছা!

আফসা আড়চোখে শোভনকে দেখে বলল,” বাই দ্যা ওয়ে, আপনাকেও নীল রঙে বেশ লাগছে!!

শোভন স্মিত হাসল, আফসা ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল ছয়টা বাজতে যাচ্ছে!
তড়িঘড়ি করে বলল, ” সময় হয়ে যাচ্ছে, আমাকে যেতে হবে। কি বলবেন বলুন!

শোভন মাথা চুলকে বলল, ” আসলে সেদিনের জন্য স্যরি! আপনি আমার কেবিনে

শোভন বাকিটা বলার আগেই আফসা বলল,” এভাবে স্যরি বললে তো মাফ করবোনা মি. শোভন!

শোভন অবাক হয়ে বলল, ” তাহলে কিভাবে স্যরি বলবো!!?

আফসা কিছু একটা ভেবে বলল, ” আমাকে পার্টিতে নিয়ে চলুন! তাহলে মাফ করতে পারি।

শোভন যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেছে! খুশিতে ডগমগ হয়ে বলল, ” শিওর! শিওর! হোয়াই নট!?










ফোনের রিংটোন পেয়ে ঘুম ভেঙে গেল সুমুর, তখন রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে সারাপথ কাদতে কাদতে বাসায় ফিরেছে সে।
আফসা বাসায় ফিরে বেশ কয়েকবার নক করেছিলো সুমুর রুমের দরজায়।
কলিগের এনগেজমেন্ট পার্টিতে সুমুর সাথে যাবে ভেবেছিলো সে।
কিন্ত সুমু মাথাব্যথার এক্সকিউজ দিয়ে আর সামনে যায়নি আফসার।
অগত্যা আফসাও রেডি হয়ে বেরিয়ে গেছে, এদিকে সুমু কাদতে কাদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই।

ফোনস্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল সায়নের সাইত্রিশটা মিসড কল উঠে আছে!

রাগে অভিমানে ফোন অফ করে ওয়াশরুমে ঢুকল সুমু, লম্বা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে কিচেনে গেল।
দুপুরে কিছু খায়নি সে, খিদেয় পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে!

কিচ্ছু রান্না নেই, এখন রান্না করে তাই খেতে হবে!! রান্না যতক্ষণে হবে ততক্ষণে তো পেটে ইদুর মরে ভস্ম হয়ে যাবে শিওর!!!

সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে পাস্তা রান্না করতে লাগল সুমু, এখন এটাই তার ক্ষিদে মেটাবে!
কিন্ত মনের ক্ষিদে কিভাবে মিটবে!!? সায়নকে ভালবাসে তাতে কোনো সন্দেহ নেই তার, কিন্ত সায়ন এমন কেন করল!?
সেও তো সুমুকে ভালবাসে! তাহলে!!

এদিকে বাসায় সব বলে দিয়েছে সুমু! এখন যদি তারা শোনে সায়ন তাকে বিয়ে করবেনা তখন কোন মুখে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে সুমু!!

হটাৎ নাকে পোড়া গন্ধ পেয়ে খেয়াল করল, পাস্তা রান্নার মশলা ভাজতে ভাজতে পুড়িয়ে ফেলেছে সে!!!
তাড়াতাড়ি চুলার জ্বাল কমিয়ে সেদ্ধ করা পাস্তা গুলো ঢালতে গিয়ে দেখল অতিরিক্ত সেদ্ধ হয়ে একেবারে ক্ষীর হয়ে গেছে পাস্তা গুলো !!!!

চোখের জল আর আটকাতে পারলোনা সুমু! হাউমাউ করে কাদতে কাদতে চুলা অফ করে মশলা, পাস্তা সব ময়লার বক্সে ফেলে বলল, ” আজ আমার দিনটাই খারাপ! আর কোনোদিন যদি পাস্তা খেয়েছি আমি!!! এইসব হয়েছে ঐ খচ্চর সায়নের জন্য!!!! ওকে আমি সেদ্ধ করে পাস্তা বানাবো!!!!! ব্যাটা খচ্চর!!!!!!










বেডে উলটে পড়ে আছে সায়ন, সুমুকে সেই কখন থেকে কল দিচ্ছে কিন্ত রিসিভ করছেনা!
এখন তো ফোন অফ করে দিয়েছে!! এখন আর কি করবে, সুমুকে মিস করা ছাড়া!!!

সে মাত্র জব পেয়েছে, এখনই বিয়ের কথা বাসায় কিভাবে বলবে সায়ন!
এক বছর না হোক কমপক্ষে ছয়টা মাস তো দরকার সব গুছিয়ে নেওয়ার জন্য!!

সে আরও কত প্ল্যান করে রেখেছে, এনগেজমেন্ট থেকে শুরু করে হানিমুন পর্যন্ত!
কিন্ত সেসবের জন্য তো টাকাপয়সার দরকার, সব কি আর ফ্যামিলির কাছে চাওয়া যায়!?

ছয়মাস পর সে নিজেই সুমুর কথা জানিয়ে দিতো বাসায়, তখন কেউ না করতোনা।
কিন্ত এখন বললে সব ভেস্তে যাবে! সে কথা সুমুকে বোঝাবে কে!?

হটাৎ কি ভেবে উঠে বসল সায়ন, ফোন নিয়ে তাড়াতাড়ি কল করল কাউকে!





পার্টিতে সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখছে শোভন আর আফসাকে, দেখে মনে হচ্ছে এরা নতুন দম্পতি! একসাথে দুজনকে বেশ মানিয়েছে!!

একজন তো বলেই ফেলল,” আফসানা! তুমি বিয়ে করেছো!! অথচ আমাদের বললেনা!!!

হটাৎ এমন কথা শুনে আফসানা বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গেছে।
শোভন সলজ্জ হেসে বলল, ” সেই সৌভাগ্য আমার এখনও হয়নি আপু! দোয়া করবেন যেন তাড়াতাড়ি হয়!!

আফসা চোখ পাকিয়ে বলল, ” কিসব বলছেন আপনি!?

শোভন কাচুমাচু করে বলল,” কই কি বললাম, আমি তো

শোভনকে বাধা দিয়ে আফসা বলল,” হয়েছে হয়েছে, এবার মুখটা একটু বন্ধ রাখুন!!

শোভন ইনোসেন্ট ফেস করে বলল, ” যাহ বাবা! আমি তো কথা শুরুই করতে পারলামনা!!

আফসা স্মিত হেসে সবাইকে বলল,” আসলে তেমন কিছুনা, আমরা জাস্ট ফ্রেন্ড!

আরেকজন ভ্রু নাচিয়ে বলল, ” জাস্ট ফ্রেন্ড থেকেই তো হয়ে যায় বয়ফ্রেন্ড! তারপর হাসব্যান্ড!!

আফসা আর কথা বাড়ালো না, এদের বলে লাভ নেই। শোভনের দিকে তাকিয়ে দেখল একটা মেয়ের সাথে কি নিয়ে যেন কথা বলছে!
সেদিকে যেতে গেলে ফোনের রিংটোন পেয়ে ফোনস্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল সায়ন কল দিচ্ছে!

উফফ এটা আবার আমাকে কল দিচ্ছে কেন!? কল রিসিভ করতেই সায়ন বলল,” আফসা! আফসা কোথায় তুমি!!? সুমু কোথায়!!?

আফসা একসাইডে সরে গিয়ে বলল,” ভাইয়া, আমি তো একটা পার্টিতে এসেছি! এখানে ভালোভাবে কিচ্ছু শোনা যাচ্ছেনা!!

সায়ন বলল, ” ওহ, আচ্ছা রিয়ার নম্বর আছে তোমার কাছে!? থাকলে প্লিজ সেন্ড করে দাও তো!! খুব আর্জেন্ট!!!

আফসা আচ্ছা বলে কল কেটে দিল, রিয়ার নম্বর টেক্সট করে শোভনকে খুজতে লাগল সে।










রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে এসেছে আরহাম আর রিয়া, আরহাম ড্রাইভ করছে রিয়া তার পাশে বসে আছে। ফোনের রিংটোন পেয়ে রিয়া ফোন হাতে নিয়ে দেখল আননোন নম্বর থেকে কল এসেছে!

আরহাম না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করল, ” কে কল দিচ্ছে!?

রিয়া বলল,” জানিনা, আননোন নম্বর!
আরহাম রিয়ার হাত থেকে ফোন নিয়ে রিসিভ করতেই সায়ন বলল,” হ্যালো রিয়া!

আরহাম একবার রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, ” রিয়ার হাসব্যান্ড বলছি! আপনি কে!?

আরহামের কথা শুনে চমকে উঠল রিয়া, আরহাম কি বলল এটা!!?

সায়ন ভ্রু কুচকে বলল,” রিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে!!

আরহাম রিয়ার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলল, ” শুধু কবুল বলার দেরি!

রিয়া লজ্জায় তাকাতে পারছেনা আরহামের দিকে! গাল দুটো টমেটোর মতো লাল হয়ে যাচ্ছে তার!!

সায়ন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ” সুমু এবার আমাকে ছাড়বেনা, তার বেস্টুরও বিয়ে হয়ে যাচ্ছে! ভাই আপনি আরেকটু ওয়েট করেন না প্লিজ!! বেশি না ছয়মাস, ছয়মাস পর দরকারে সবাই মিলে বিয়ে করবো!!! দূর!!!! মানে বলছি যে আপনি রিয়াকে আর আমি সুমুকে বিয়ে করবো!!!!

আরহাম রিয়ার ভেজা চুল গুলো কানে গুজে দিতে দিতে বলল, ” আর ওয়েট করা সম্ভব না ভাই!! বাই দ্যা ওয়ে আমাদের বিয়েতে অগ্রীম দাওয়াত রইলো, আসবেন কিন্ত!!!

বলেই কল কেটে দিল আরহাম। রিয়ার এদিকে প্রাণ যায়যায় অবস্থা, লজ্জায় দু’হাতে মুখ ঢাকতে ইচ্ছে করছে তার।
আরহামের ঐ মারাত্মক চাহনিতে তাকাতে পারছেনা রিয়া!!!

আরহাম রোডের একসাইডে গাড়ি দাড় করালো, রিয়া কাপা কাপা গলায় জিজ্ঞেস করল, ” এখানে রাখলেন কেন!?

আরহাম রিয়ার হাত দুটো নিজের হাতে নিয়ে বলল,” রিয়া আ’ম স্যরি! সেদিন পার্টিতে সবার সামনে তোমাকে কিস করাটা আমার উচিৎ হয়নি!! কিন্ত কি করবো বলো, তুমি সামনে থাকলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা!!!

রিয়া কিছু বলছেনা, টলমল চোখে তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে।

আরহাম একটু থেমে আবার বলল, ” তোমাকে সেদিন যতটা কষ্ট দিয়েছি তার চেয়ে হাজার গুন বেশি কষ্ট আমি নিজে পেয়েছি! এক্সিডেন্টের পর তুমি তো সব ভুলে গেলে কিন্ত সেদিনের পর থেকে আমি রাতে ঘুমাতে পারিনা রিয়া!! জানি তুমি আমাকে মাফ করবেনা, আমি মাফ চাইওনা!! আমি শুধু তোমাকে চাই রিয়া!!!

রিয়া কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা, আরহামের চোখে আজ প্রতিশোধ নয় ভালোবাসার গভীর সমুদ্র দেখতে পাচ্ছে সে!
আরহামের ভালবাসার থেকে নিজেকে আটকে রাখার সাধ্য নেই রিয়ার!!

আরহাম প্রশান্তির হাসি দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল রিয়াকে! রিয়ার চোখের বাধ ভেঙে পড়ল!! খুশিতে কাদতে কাদতে জড়িয়ে ধরল আরহামকে!!!

হটাৎ ফোনের রিংটোন পেয়ে সম্বিত ফিরল দুজনের, রিয়া নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলেও আরহাম ছাড়ল না রিয়াকে!

অগত্যা রিয়া হাতড়েপাতড়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখল ফাইয়াযের আম্মু কল দিচ্ছে!

রিয়া চমকে উঠে বলল, ” আরহাম! আরহাম!! ফাইয়াযের আম্মু কল দিচ্ছে!!!

আরহাম বিরক্ত হয়ে রিয়াকে ছেড়ে বলল, ” উফফ, যেমন ছেলে তেমন মা! এই মহিলার কি খেয়েদেয়ে আর কোনো কাজ নেই!!?

রিয়া চোখ পাকিয়ে আরহামকে চুপ থাকতে বলল, আরহাম রিয়ার গালে চুমু খেয়ে ড্রাইভ করতে লাগল।

কল রিসিভ করতেই মিসেস ফাতেমা বলল,” হ্যালো, রিয়া! কোথায় তুমি!?

রিয়া স্মিত হেসে বলল, ” এই তো আন্টি, বাসায় যাচ্ছি! কেন কি হয়েছে!?

মিসেস ফাতেমা টিভির ভলিউম কমাতে কমাতে বলল,” না, বলছিলাম যে তোমার আব্বু আম্মু ফাইয়াযকে নিয়ে শপিং এ গেছে। কাল কিন্ত আমি যাবো তোমাকে নিয়ে, সো অফিস থেকে আগে আগেই বেরিয়ে এসো কেমন!?

রিয়া জোর করে হেসে বলল, ” আচ্ছা আন্টি।

মিসেস ফাতেমা আর কিছু বলার আগেই ব্যস্ততা দেখিয়ে কল কেটে দিল রিয়া।
আরহাম জিজ্ঞেস করল, ” কি বললেন উনি!?

রিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ” কাল আমাকে নিয়ে শপিংয়ে যাবে তাই যেন কাল আগে আগেই অফিস থেকে বেরিয়ে পড়ি।

আরহাম মাথা নাড়িয়ে মনেমনে বলল, ” শপিংয়ে যাবেন! না!! দেখি কাল কিভাবে রিয়াকে শপিংয়ে নিয়ে যান!!!
রিয়ার এক হাত নিজের হাতে নিয়ে বলল,” তো, এই ফাইয়াযের ব্যাপারটা কবে শেষ করবে!?

রিয়া কাচুমাচু করে বলল,” একটু টাইম দাও আরহাম, ফাইয়াযকে কিভাবে কি বলবো বুঝতে পারছিনা!

আরহাম শয়তানি হাসি দিয়ে বলল, ” তাহলে আর কি করা! ওদিকে ইকরার ব্যাপারটা তাহলে দেখতে হবে!!

রিয়া দাতে দাত পিষে আরহামকে কিল ঘুষি মারতে মারতে বলল,” খবরদার যদি ঐ ডাইনীর নাম মুখে নিয়েছো!!

আরহাম হাসতে হাসতে বলল,” তাহলে তাড়াতাড়ি মাথা খাটাও! ফাইয়াযকে বিদায় করো !!!

রিয়া গাল ফুলিয়ে বলল,” হ্যাঁ হ্যাঁ খাটাচ্ছি!

আরহাম মনেমনে ঠিক করল কালই ইকরার বাবার সাথে কথা বলবে সে।
লোকটা বিপদে তার পাশে দাড়িয়েছিলো। আর সে আজ এভাবে তাকে ইনসাল্ট করলো!
কিন্ত আরহামই বা কি করতো, দিনদিন ইকরার কাজকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিলো সে!! আজকের ঘটনার জন্য সম্পূর্ণভাবে ইকরাই দায়ী!!!





।চলবে।

বিঃদ্রঃ নাও দিলাম গল্প😒। হ্যাপি!? ঠিক করেছি সময়ে পেলে অল্প অল্প করে লিখবো, তারপর পর্ব শেষ হলে পোস্ট করে দেবো।
সেটা হতে পারে ৩/৪ দিন পর/৭দিন/ ১৪/১৫ দিন পরপর। 🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here