সেদিনও জ্যোৎস্না ছিল পর্ব-১৯

0
6491

#সেদিনও_জ্যোৎস্না_ছিল

#তানিয়া

পর্ব:১৯

শাহেদ আহসান খাওয়ার টেবিলে আজ সবাইকে জড়ো হতে বলেছে কারণ তার নাকি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় জানানোর আছে। খাবার টেবিলে বড় ছোট সবাই উপস্থিত। সবাই ভাবছে হঠাৎ তিনি এমন কি বলবেন যা সবাইকে এক করে জানাতে হবে।

অসুস্থতার পর থেকে শাহেদ লুৎফার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। লুৎফা বারবার স্বামীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে কিন্তু শাহেদ সেসবে কোনো রিয়েক্ট করেনি।এমনকি এক ঘরে থাকার পরেও লুৎফার কোনো কথায় রেসপন্স করে না।খুব একটা দরকার না পরলে শাহেদ লুৎফার সাথে কথা বলে না।এ নিয়ে লুৎফার মনে আহাজারির শেষ নেই। একদিকে সংসার অন্যদিকে একটা অসহায় মেয়ের জীবন সব মিলিয়ে লুৎফা অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পরেছে।এবার সে শান্তি চায়।

শাহেদ আহসান খেতে খেতে চারপাশে চোখ বুলিয়ে নেয়।দেখছে সবার উপস্থিতি ঠিক আছে কিনা?সেই হিসেবে সবাইকে দেখে নিয়ে গলা খাকড়ি দিয়ে আলাপ শুরু করে।

“আমার কথায় সবাই এক হওয়াতে খুব খুশি হলাম।খুব জরুরি বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য সবাইকে ডেকেছি।অনেকটা সময় নিয়ে ভেবে দেখলাম লুৎফা একটা মেয়ের জীবন বাঁচাতে হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হয়তো সেটা কারো কাছে যৌক্তিক আবার কারো কাছে নয়।তাছাড়া আমার মনে হলো এ সিদ্ধান্ত না নিয়ে সে চাইলে আইনের শরণাপন্ন হতো নিশ্চয়ই তারা ঠিক একটা ব্যবস্থা নিতো।যাই হোক লুৎফার যা ঠিক মনে হয়েছে তা করেছে।এবার আমি একটা সিদ্ধান্ত নিতে চাই। আমি বিদেশে ব্যবসার কাজের মাঝে আমার এক বন্ধুর মেয়ের সাথে আদ্যর বিয়ের কথা বলেছিলাম।ভেবেছিলাম দেশে ফিরে এসে সবাইকে সারপ্রাইজ দিবো কিন্তু দেশে এসে আমি যে সারপ্রাইজটা পেলাম তাতে আমার মনে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই নেই। তাই আমি ঠিক করেছি যা হয়েছে সব ভুলে গিয়ে আদ্যর জীবনটা সুন্দর করে গোছানো হোক।ভুল সিদ্ধান্তের জন্য কেনো আমার ছেলের জীবন শেষ হবে।”

শাহেদ কথা শেষ করবার আগেই লুৎফা নিজেই বলে উঠে,

“তোমার কথাটা বুঝলাম না।কি বলতে চাইছো পরিষ্কার করে বলো?আদ্যর জন্য তুমি মেয়ে দেখেছো অথচ আমাকে জানাওনি এটা কেমন কথা? ”

“সেই সুযোগ কি তুমি আমাকে দিয়েছো তার আগেই তো একটা লো ক্লাস ডিসিশান নিয়ে নিলে।আসলে তোমাকে অনেক বেশি ভরসা করতাম তাই তুমি আমাকে ঠকালে।আমাকে গুরুত্বহীনতার সাথে বিবেচনা করলে।কিন্তু আমি তোমার মতো করে সবটা ভাবতে পারবো না একটা গেয়ো আর কাজের মেয়েকে আমি এ বাড়ির বউ হিসেবে মানবো না।”

“কি বলতে চাও?তুমি ভুলে যেও না মেহু আদ্যর বউ।তুমি না চাইলে তো হবে না নিয়ম বলে কথা আছে। ”

“সেসব নিয়মের আমি কোনো তোয়াক্কা করি না।আমার ছেলে আজীবন তোমার ভুলের মাশুল দিবে সেটা আমি হতে দিবো না।তাছাড়া আমি ওদের ডিভোর্স করাবো।দরকার হলে ঐ মেয়েকে প্রটেক্ট করার জন্য যা করা দরকার সব করবো কিন্তু আমার ছেলের জীবন নষ্ট করার অধিকার তোমার বা ঐ মেয়ের নেয়!”

শাহেদের কথায় লুৎফা হতভম্ব হয়ে যায়। কি বলছে শাহেদ? আদ্য আর মেহুর ডিভোর্স? লুৎফা কথা বলার মতো শব্দ পাচ্ছে না।

“শাহেদ তোমার মাথা কি ঠিক আছে? কি বলছো আবোলতাবোল, তুমি ওদের ডিভোর্স করাবে কিন্তু কেনো?”

“লুৎফা তুমি কি শুনতে পাওনি আমি কি বলেছি।আমি আদ্যর সাথে একটা কাজের মেয়ের বিয়ে মানি না।তাছাড়া হুট করে বিয়ে হওয়াটা বিয়ে নয়।এটা একধরণের বোকামি আর দায়বদ্ধতা।। তুমি ঐ মেয়েকে বাঁচাতে ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছো আর আমি ছেলেকে বাঁচাতে তাদের ডিভোর্স করাবো।তাছাড়া আমি আগেও বলেছি আদ্যর জন্য আমি আমার বন্ধুর মেয়েকে ঠিক করেছি। সে খুব শীঘ্রই দেশে আসবে আলাপ করতে।অতএব আমি এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।”

“তুমি একা তোমার মতো সিদ্ধান্ত নিলে তো চলবে না।তাছাড়া এ বিষয়ে আদ্যর মত আছে কিনা তা জানতে হবে।”

“আদ্যর আবার কি মত?তাছাড়া এ বিয়ে তো আদ্য নিজের ইচ্ছায় করে নি যে ডিভোর্স নিয়ে সে চিন্তা করবে।আর তুমি চাইলে সরাসরি সেটা আদ্যকে জিজ্ঞেস করতে পারি।কি আদ্য তোমার কোনো আপত্তি আছে তো?”

এতক্ষণ খাবার টেবিলে যা কথোপকথন হচ্ছিল সব শাহেদ আর লুৎফার মাঝে।বাকিরা দর্শক হিসেবে ছিল।কেউ একটা টু শব্দ পর্যন্ত করে নি।কারণ সবার ধারণা আজ বাড়ির গৃহকর্তা আর গৃহকর্ত্রীর মধ্যে লড়াই সেখানে কিছু বলতে যাওয়া মানেই কপাল খারাপ। তাই সবাই দুজনের তর্ক দেখছিল।আদ্যও ছিল সেখানে কিন্তু সে কিছু বলার মতো সাহস পেলো না কারণ ডাক্তার জানিয়েছে কোনোভাবে শাহেদকে উত্তেজিত করা যাবে না নাহলে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।তাই সেও অন্যদের মতো চুপ রইলো।কিন্তু বাবা যেই না মেহুর সাথে তার ডিভোর্সের কথা বললো ওমনি তার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো।সে নিরবে না খেয়ে বাকি কথায় কান দেয়।কিন্তু হঠাৎ বাবা তার সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়ায় সে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে।এ মুহুর্তে সে কি উত্তর দিবে?

“কি হলো আদ্য তোমার কি সিদ্ধান্ত বলো তো?”

“আমার কোনো কিছু বলার নেই তোমরা যা ভালো মনে করো করো।আজ খুব আর্জেন্ট কাজ আছে আমি উঠছি তোমার চলে এসো।”

আদ্য অর্ধেক খাওয়া শেষ করে উঠে চলে যায়। শাহেদ স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে জয়ী ভঙ্গিতে হেসে বলে,

“দেখেছো আদ্যর সিদ্ধান্ত। আশা করি আর সমস্যা থাকবে না।খুব শীঘ্রই আমি ওদের ডিভোর্স এর ব্যবস্থা করবো।”

শাহেদ বিজয়ীর হাসিতে টেবিল ছেড়ে চলে গেলো।লুৎফা মূর্তির মতো বসে রইলো।সে এখনো ভাবছে একটু আগে এসব কি হয়ে গেলো?টেবিলে সবার মুখ বিবর্ণ হয়ে গেলো।কারো মুখে কথা নেই শুধু সুজাতা মিটিমিটি হাসছে।মনে হচ্ছে তার মনের উদ্দেশ্য এবার পূরণ হবে।মনিবের সাথে মনিবের যায় কিন্তু কাজের মেয়েকে মনিব হিসেবে মানা যায় না।এতদিন সে শুধু শাহেদের অপেক্ষায় ছিল কারণ তার ধারণা ছিল এ কাজের সঠিক ফল একমাত্র শাহেদই দিতে পারে।

আমেনা মেহুকে থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু মেহুর কান্না থামছেই না।বাঁধ ভাঙা নদীর মতো ঝরঝর করে জল পড়ছে।এতক্ষণ খাওয়ার টেবিলে যা যা হলো সবই দুজনে রান্নাঘর থেকে শুনেছে আর সেই থেকে কান্না করে চলেছে মেহু।খাওয়ার সময় মেহু কখনো টেবিলে থাকে না সে শাহেদকে এতটাই ভয় পায় যে যখন নি শাহেদ বাসায় থাকে তখনি সে লুকিয়ে পড়ে। খুব কমই সে তার সামনে আসে।খাবার টেবিলে খাবার দিয়ে সে রান্নাঘরে চলে যায় আমেনা সার্ভ করে।কান্নায় মেহুর হিচকি উঠছে কিন্তু কান্না থামার নাম নেই। এতক্ষণ যা শুনলো সব যদি সত্যি হয় তাহলে হয়তো সে আরো বিপদে পরবে।

“আরে মাইয়া কান্দো ক্যান?বড় স্যার গোস্বার মাথায় কি না কি কইছে তাই বইলা তুমি কাইন্দা এহানে সাগর করবা।শোনো বড় স্যার মানুষটার রাগ বেশি তয় মনটা ভালো।তুমি এইসব ভাইবো না।বড় আপা সব ঠিক করবো।”

মেহু সেসব শুনে না সে কাঁদতে ই থাকে।লুৎফা এসে তাদের পেছনে দাঁড়ায়।আমেনা লুৎফাকে দেখে এগিয়ে যায়।

“আপা দেখছেন এ মাইয়ার কান্ড।কহোন কান্দন শুরু করছে এহোনো থামে না আপনি কিছু কন তো।”

লুৎফা নিজেই একরাশ চিন্তার মধ্যে আছে। সে কীভাবে মেহুকে সাত্বনা দিবে জানে না।তবুও মেহুর কাছে গিয়ে তাকে নিজের দিকে ঘুরালো।

“এ মেয়ে তুমি কি বাচ্চা এভাবে কাঁদছো কেনো?তোমার শ্বশুরের এখন খুব রাগ আছে তাই ওসব বলেছেন।ওনার মন ভালো দেখবে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।তুমি এখন মুখ হাত ধুয়ে নাও।কি করেছে নিজের মুখের।”

লুৎফার জোরাজোরিে মেহু বেসিনের কল ছেড়ে মুখে পানি ঝাপটা দেয় আর লুৎফা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে।শুধু মেহুর মনের চিন্তা বাদ দিতে সে ওসব বলেছে কিন্তু সে তো ভালো করে জানে শাহেদ কি করবে?আগমনি দিনগুলোর অবস্থার কথা ভেবে কাঁটা দেয় সারা শরীরে!

শাহেদ আহসান কোর্টে গেলো উকিলের সাথে কথা বলতে কিন্তু উকিল তথ্য অনুযায়ী জানায় নতুন বিবাহ কোনোভাবে তিনমাসের আগে ডিভোর্স পাওয়া সম্ভব না।অগত্যা শাহেদ বাসায় এসে গম্ভীর চোহারা নিয়ে বসে থাকে।লুৎফা ইদানীং স্বামীর সাথে কথা বলতে ভয় পায় তাই যথাসম্ভব স্বামীর সঙ্গ নেয় না।তবে বিকেলে স্বামীর মুখ দেখে তর মনে প্রশ্ন আসে ঘটনা কি?সেই সুবাদে এক কাপ চা নিয়ে স্বামীর পাশে গিয়ে বসে।আর জিজ্ঞেস করে কারণ কি?শাহেদ ভ্রু কুঁচকিয়ে লুৎফার দিকে তাকায়।জানাবে কি জানাবে না ভেবে শেষে বলেই দেয় বিষয়টা।লুৎফা সবটা শুনে৷ মুখটা শুকনো করে রাখে।সে কিছু বলতেও পারছে না কারণ শাহেদকে বলে কিছু হবে না।তবে এ মুহুর্তে তার মনে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো কারণ তিনমাস সময় আছে। পরিবর্তন হলে এরমধ্যে অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে।

শাহেদ আহসান সন্ধ্যার পর নাশতা খেতে বসলে তিনি ডিভোর্সের কথাটা তুলে ধরেন।আদ্য ডিভোর্স এর কথা শুনে কাশি দিয়ে উঠে। মেহুও পাশে ছিল। সে তাড়াতাড়ি পানিটা এগিয়ে দিতে আদ্য পানিটা পান করে নেয়। শাহেদ আহসান সরু চোখে ছেলেকে দেখে বলে উঠে,

“আদ্য কোনো সমস্যা?”

আদ্য মাথা নেড়ে না জানায়।শাহেদ আবারও বলে,

“শোনো তোমরা নতুন দম্পতি তাই তিনমাসের আগে তোমাদের ডিভোর্স পাওয়া সম্ভব না।তবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তিনমাস পর তোমাদের ডিভোর্স হবে তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমার বন্ধুর মেয়ে সোহানা চলে আসবে।এরমধ্যে তুমি তাকে নিয়ে আলাপচারিতা করে দুজনের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং বিষয়টা ঠিক করে নিবে।যদিও ওর সাথে তোমার বোঝাপড়া অনেক ভালো পর্যায় কারণ সোহানা হচ্ছে আমার বন্ধু সাজ্জাদের মেয়ে যে কিনা ছোটকালে এ বাড়িতে আরো একবার এসেছিলো।নিশ্চয়ই তোমার মনে আছে তাকে।আর মনে না থাকলেও সমস্যা নেই সে আসলে তুমি সহজে তার সাথে কথা বলবে।তাছাড়া তোমার বিয়ে আর যা যা ঘটেছে সবটা আমি সাজ্জাদকে জানিয়েছি।সে সোহানার সাথে কথা বলে জানিয়েছে এমন দূর্ঘটনায় সে আপসেট তবে এসব বিষয় নিয়ে সে ভাবে না।তোমাকে বিয়ে করতে তার কোনো আপত্তি নেই। তাই আমি চাই যেসব সমস্যা হয়েছে সেগুলো ভুলে যাও আর খুব শীঘ্রই তৈরি হও সোহানার সাথে সাক্ষাৎ করতে।”

শাহেদ আহসান হালকা নাশতা করে টেবিল ছেড়ে উঠে। সবাই অবাক হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি অবাক আদ্য কারণ বাবা যার কথা বলেছে তাকে আদ্য একদমও পছন্দ করেনা।ছোট থাকতে মেয়েটা কেমন রোগা আর ছ্যাচড়া ধরনের ছিল।যদি সেই মেয়েটাই হয় তাহলে আদ্যকে আর পায় কে?

মেহুর চোখে জল জমেছে মেহু সেটা আড়ালে মুছে নিলো।কারণ সেও নিজেকে শক্ত করছে এ বাড়িতে উড়ো পাখি হয়ে এসেছে তাই স্থান থাকে ছাড়তে হবে।একদিন আগে হোক বা পরে।তাই নিজেকে ভেতর থেকে প্রস্তুত করছে যেন সময় হলেই সে নিজেই এ বাড়ি ত্যাগ করতে পারে।

মেহু রুমে বসে বারবার চোখ মুছছে।তার পাশে বসে আছে সূচী আর নীলা।নীলা মেহুকে সাত্বনা দিচ্ছে কিন্তু মেহু সেসব কানে তুলছে না।

“মেহু তুমি এভাবে কেঁদে ভাসালে হবে। তোমার বর নিয়ে টানাটানি চলছে আর তুমি এখানে সমুদ্র সৃষ্টি করছো এর কোনো মানে হয়।”

‘হ্যাঁ আমিও একমত।মেজ ভাবী তোমার উচিত এ বিষয়ে দক্ষ একটা ব্যবস্থা নেওয়া।ঐ যে কি নাম মেয়েটার সোহাগা না কি সোহানা ওকে একটা শিক্ষা দিতে হবে।আগে এ বাড়িতে আসুক তারপর তাকে এমন টাইট দিবো যে বাপ বাপ করে পালাবে।তখন দেখা যাবে কি করে তোমার বরকে নেয়। ”

মেহু ফ্যাচফ্যাচে গলায় জানায়,

“তোমরা বললে তো কিছু হবে না।বাবা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর তিনিই সবটা করবেন।তাছাড়া আমার আর ওনার মাঝে তো কোনো সম্পর্ক নেই যার জোর নিয়ে আমি ওনার সাথে থাকবো।তাছাড়া আমি থাকতে চাইলও ওনিই বা কেনো রাখতে চাইবেন?হয়তো বাবার সাথে একমত হয়ে ওনিও আমাকে ডিভোর্স দিবেন।”

বলেই হু হু করে কেঁদে উঠে। সূচী আর নীলা দুজনে কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয় তবে প্রকাশ করে না।কারণ মেহুর ওপর কি যাচ্ছে তারা সেটা জানে। নীলা চট করে বলে উঠে,

“শোনো মেহু মনকে শক্ত করো।তোমাদের মধ্যে সম্পর্ক নেই তো কি হয়েছে সম্পর্ক তৈরি করতে তো বাঁধা নেয়। আচ্ছা মেহু সত্যি বলো তো আমার দেওয়ারটাকে একটু তুমি পছন্দ করো না?”

নীলার কথা শুনে মেহু চট করে চোখ তুলে তাকায়। লজ্জা ভঙ্গিতে চোখটা নামিয়ে নেয়।নীলা তাতে বুঝে নেয় আসল বিষয়।

“এতো তোমার চোখ বলে দিচ্ছে তোমার মনে আমার দেওরের জন্য কিছুটা প্রেম আছে এবার সেই প্রেমটাকে তোমায় ভালোবাসায় রূপান্তর করতে হবে।আর তা করার জন্য যা যা করা দরকার তুমি তাই করবে।সাথে আমরাও তোমার সাথে আছি।”

“আমি কি করবো ভাবী?তাছাড়া ওনার যে পাথর হৃদয় তাতে যে প্রেম জাগবে তারও নিশ্চয়তা কি?ওখানে হাতুড়ি দিয়ে পেটালেও ভালোবাসা তো দূরে থাক মায়াও তৈরি হবে না।আমার হয়তো এ বাড়িতে আর থাকা হবে না।”

বলেই মেহু হালকা আর্তনাদে চেঁচালো।নীলা আর সূচী অসহায় মুখ নিয়ে মেহুর সে কান্না দেখছে!
,
,
,
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here