আমার বোনু পর্ব-১৫

0
2533

#আমার_বোনু
#Part_15
#Writer_NOVA

— ত্যারা বাপ আয়া!

কন্ঠটা ঊষার খুব পরিচিত লাগলো। তাকিয়ে দেখলো যাকে ভাবছিলো সেই। ঈশান সিনেমাটিক ভাবে নায়কের স্টাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাইকে দেখতেই ঊষার সাহস বেড়ে গেলো। ঝাড়া মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে ঈশানের কাছে চলে গেলো। ঈশান ঊষার মাথায় একটা গাট্টা মেরে বললো,

— নিজেকে নিজে কবে রক্ষা করতে শিখবি? তুই আসলেই বলদী একটা। একেবারে হলদী খেতের বলদী।

ঊষা কপাল কুঁচকে অভিমানে গাল ফুলিয়ে রাখলো। ঈশান দুই আঙুল দিয়ে ওর গাল জোরে টান মারলো। ওমনি ঊষা দুম করে ওর পিঠে একটা কিল বসিয়ে দিলো। ঈশান পিঠে হাত দিয়ে চেচিয়ে বললো,

— তুই শুধু আমার সাথেই পারবি। কই এতখন তো ওদের সাথে পারলি না।

বখাটেদের লিডার এবার গর্জে উঠে যে ছেলেটা ওড়না ধরেছিলো তাকে বললো,
— তাকায় তাকায় কি দেহস? যা বেডারে সাইজ কর।

ছেলেটা দৌড়ে এসে ঈশানকে ঘুষি মারতে নিলেই ঈশান খপ করে হাত ধরে জোরে মোচড় লাগালো। ছেলেটা ব্যাথায় কুকিয়ে উঠলো। ঈশান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

— এই হাত দিয়ে আমার বোনুর ওড়না টেনে ধরেছিলি তাই না? অপেক্ষা কর তুই। তোর এই হাত আর সচল থাকবে না।

হাত মোচড় দিয়ে ধরে রেখেই এদিক সেদিক কিছু একটা খুঁজতে লাগলো ঈশান। বেশি সময় খুঁজতে হলো না। কাঙ্খিত বস্তুটা পায়ের কাছেই পেয়ে গেলো। বাম হাতে ইটের বড় টুকরাটা তুলে নিলো। তারপর ছেলেটার হাত নিচে রেখে ইট দিয়ে দিলো এক বারি। লাগাতার বারি দিতেই থাকলো। ঊষা ভয়ে অন্য দিকে ঘুরে গেলো। ছেলেটার আর্তনাদে বাকিগুলো ভরকে গেলো। হাতটাকে আধা থেঁতলে ঈশান তবেই ছাড়লো। ছেলেটা নিচে পরে গড়াগড়ি খেয়ে চিৎকার করতে লাগলো। ঈশান একবার সেদিক তাকিয়ে বাকিদের উদ্দেশ্য করে বললো,

— ঠোঁট চোখা করে চুমু কে দেখিয়েছিলো?

সবগুলো চুপ মেরে গেলো। ঈশান রেগে চিৎকার করে উঠলো।

— জলদী বল কে দেখিয়েছে। নয়তো সবগুলোকে পিটিয়ে আধমরা বানিয়ে ফেলবো।

লিডার ছেলেটা ভয়ে ভয়ে আঙুল দিয়ে পাশের ছেলেটাকে দেখিয়ে দিলো। ওদের লিডারের দেখাতে দেরী ঈশানের সেটাকে ধরতে দেরী না। মুখে কয়েকটা ঘুষি মেরে আগে চোখে সরিষা ফুল দেখালো। যাতে পালিয়ে যেতে না পারে। তারপর দুই আঙুল দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরে পকেট থেকে লাইটার বের করলো। আগুন জ্বালিয়ে ঠোঁটের মধ্যে অনেক সময় ধরে রাখলো। ছেলেটা ছটফট করছে। তার শক্তি না থাকায় ভালো করে নড়তেও পারছে না। বেশ কিছু সময় ধরে রাখার পর ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিয়ে লাইটার পকেটে রাখতে রাখতে বললো,

— যা আজ তোকে ছেড়ে দিলাম। কিন্তু যে হাল করেছি তাতে অন্ততপক্ষে সাত দিন ঠিকমতো খেতে পারবি না।

এবার বাকি ছেলেগুলো উঠেপড়ে দৌড় লাগাতে নিলেো। কিন্তু তা পারলো না। পাশেই ডেকোরেশনের দোকান ছিলো। সেই দোকানের ছোট, বড় অনেক বাঁশ রাস্তার পাশে রেখে দিয়েছে। ঈশান সেখান থেকে একটা মোটা বাঁশ নিয়ে একচোট সবগুলোকে পিটাতে লাগলো। কিছু সময় পিটিয়ে ঈশান ঘাড় কাত করে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,

— একটা এখান থেকে পালাবি, তাহলে পিটিয়ে লাশ বানিয়ে ফেলবো।

ওর ঠান্ডা স্বরের হুমকিতে কেউ পালালো না। সবগুলো দৌড়ে এসে ঈশানের পা জড়িয়ে ধরলো। লিডার মতো ছোকরাটা বললো,

— ভাই ভুল হয়ে গেছে। এবারের মতো মাফ করে দেন।

ঈশান একবার ঊষার দিকে তাকিয়ে বললো,
— আমার বোনুর কাছে মাফ চা।

ঈশান বলতে দেরী হুরমুর করে ঊষার পায়ে পরতে দেরী নয়। ঊষা আচমকা এমন হওয়ায় ভড়কে গেলো। পা ছাড়াতে ছাড়াতে বললো,

— আমার পা ধরতে হবে না। আমি মাফ করে দিয়েছি।

সবগুলল পুনরায় ঈশানের সামনে এসে মাথা নিচু করে বসে বললো,
— ভাই, আফায় মাফ করে দিছে৷ এবার আপনিও করে দেন।

ঈশান হুমকির স্বরে বললো,
— আরেকদিন যদি আমি তোদের এই জায়গায় দেখি তাহলে সেদিন হবে তোদের শেষ দিন।

ঈশান আর কথা বাড়ালো না। হুমকি-ধমকি দিয়ে ঊষাকে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। একটা ছেলে ভয়ে ভয়ে মুখ কুচোমুচো করে জিজ্ঞেস করলো,

— ভাই আপনার নাম কি?

ঈশান পেছন ঘুরে মাথা চুলকে এক গাল হেসে শয়তানি করার ভঙ্গিতে বললো,
— ঈশান মির্জা!

ওর নাম শুনে যেনো সাথে সাথে সবগুলোর গলা শুকিয়ে এলো। এই ঈশানের অনেক কথা তারা শুনেছে। কিন্তু কখনো নিজের চোখে দেখেনি। ঈশানের রাগ আর পাওয়ারের বিষয় তারাও অবগত। আজকে তারা ওর বোনের দিকে নজর দিয়েছে এটা ভেবেই গলা শুকিয়ে এলো। পড়িমরি করে উল্টো দিকে দিলো ছুট। পিছু ফিরে আর তাকালো না।সেকি দৌড়! এই দৌড় শেষ হওয়ার নয়।ঈশান হাসতে হাসতে বোনকে নিয়ে গাড়ির দিকে পা বাড়ালো।

ঊষা বর্তমানে তার ছোট তিন ভাইয়ের ওপর চরম বিরক্ত। কিচেনে এসেছিলো শখ করে একটু পুডিং বানাতে৷ কিন্তু তার শয়তান তিন ভাই তাকে জ্বালিয়ে ভাজা ভাজা করছে। হুট করে তিন ভাইয়ের বিকেল বেলায় আগমন। বড় দুই ভাই না থাকায় তারা যেনো বোনকে জ্বালাতে আশকারা পেয়ে যায়। আজও তাই হয়েছে। এই তো একটু আগে ইশাত নিজের মুখের একটা চাবানো চুইংগাম ওর সামনে এনে হাত দিয়ে ইচ্ছে মতো দলা মোচড় করে ঊষাকে বললো,

— কিরে জরিনার মা, খাবি?

ঊষা হাতের খুন্তি উঁচিয়ে বললো,
— তুই কি যাবি😤?

ইশাত মুখ দিয়ে টক করে শব্দ করে বললো,
— আজকাল ভালো করলে ভালো নেই। আমি কত সুন্দর ভালোবেসে তোর জন্য এনেছিলাম।

ঊষা রাগী চোখে ওর দিকে তাকিয়ে চেচিয়ে বললো,
— খাচ্চোর ছেমড়া। সর সামনের থেকে। তোর মুখের চাবানো চুইংগাম আমি কেন খাবো? তার মধ্যে আবার হাতের ময়লা সব লাগালি। তোরটা তুই খা। নয়তো তোর বউকে দে।

ইশাত আফসোসের সুরে বললো,
— আজ একটা বউ থাকলে কি তোকে সাধি?

ঊষা ওর হাতের খুন্তি রেখে ওর চুল টান দিয়ে বললো,
— ভালো চাইলে যা এখান থেকে। আমাকে কাজ করতে দে। নয়তো বড় ভাইয়ু, মেজো ভাইয়ু এলে তাদের কাছে বিচার দিবো।

ইশাত মুখটাকে কালো করে বললো,
— খাবি না ভালো কথা। তাই বলে এভাবে আমার চুইংগামকে অপমান করতে পারিস না। ওরও তো মান-সম্মান আছে।

ঊষা চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই ইশাত মুখ কুচোমুচো করে বললো,
— যাচ্ছি, যাচ্ছি। ঐভাবে চোখ রাঙিয়ে বাচ্চা ছেলেটাকে ভয় দেখাস না।

চুইংগামটা জানালা দিয়ে ছুঁড়ে মেরে ইশাত দফা হলো। ড্রয়িংরুমে গিয়ে দুটো ঘূর্ণি দিয়ে ডান্স দিয়ে ঈশান, অরূপকে বললো,

— জ্বালিয়ে রেখে এসেছি। এবার কে যাবি বল?

অরূপ হাত তুলে সামনের পাটি দাঁত দেখিয়ে বললো,
— এবার আমি যাই।

ঈশান ওর কথায় সম্মতি জানিয়ে বললো,
— জলদী আসিস। পরের ট্রিপে কিন্তু আমি।

অরূপ নাচতে নাচতে কিচেনের দিকে ছুটলো। বাইরে দাঁড়িয়ে কিছু সময় মুখ আর পেট ধরে হেসে নিলো। তারপর মুখটাকে ইনোসেন্ট করে ভেতরে ঢুকলো। ইশাত ঈশানকে তার কান্ডকারখানা বলছে আর দুই ভাই লুটোপুটি খেয়ে হাসছে। হঠাৎ দুই ভাইয়ের কানে টান পারতেই চেচিয়ে উঠলো। তাকিয়ে দেখে জিনিয়া দুজনের কান টেনে ধরেছে। জিনিয়া চোখ দুটো ছোট করে বললো,

— ওরে বিচ্ছু পোলা। আজ এই কাহিনি হচ্ছে? আমিও তো বলি হঠাৎ তিনজন বাড়িতে কেন? আমার আদুরিনী, ননদিনীকে জ্বালাতে তোমরা দল বেঁধে চলে এসেছো?

ইশাত ঈশান দুজনে একসাথে চেচিয়ে উঠলো,
— ভাবী লাগছে ছাড়ো।

— লাগুক, লাগার জন্য ধরেছি।

সিড়ির ওপর থেকে অথৈ জোরে চেচিয়ে বললো,
— আচ্ছা করে কান মলে দাও ভাবী।

অথৈ কে দেখে ইশাত, ঈশান দুজনের মুখ কালো হয়ে গেলো। ওর দিক থেকে চোখ সরিয়ে ঈশান জিনিয়াকে বললো,

— বড় ভাবী তাকে বলে দিও যতদিন অব্দি নিজেকে সে শুধরাতে না পারবে ততদিন যেনো আমাদের সামনে না আসে।

অথৈ মুখ গোমড়া করে নিজের রুমে চলে গেলো। তার পাপের শাস্তি এসব। তাই তাকে সবার কটু কথা সহ্য করতেই হবে। ইশাত জিনিয়াকে বললো,

— ছাড়ো ভাবী লাগছে তো। তুমি যদি আমাদের কান না ছাড়ো তাহলে কিন্তু এই শুক্রবার তোমাকে জ্বালিয়ে তেজপাতা করবো।

জিনিয়া কান মোচড় দিয়ে বললো,
— তবে রে পাঁজি…..

আরো কিছু বলার আগে ঊষার চিৎকারের আওয়াজ এলো কিচেন থেকে। জিনিয়া কান ছেড়ে সেদিকে ছুটলো। গিয়ে দেখে অরূপ সেখান থেকে পালিয়েছে। জিনিয়া জিজ্ঞেস করলো,

— কি হয়েছে?

ঊষা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে তেজীস্বরে বললো,
— শয়তানগুলো, আজ আমার সাথে লেগেছে। দেখো তো ক্যারামেলের কি অবস্থা করেছে। অরূপ ভাইয়ু এসে বললো, “দে বোনু তোকে আমি কাজে সাহায্য করে দেই”। আমিও ভালো মনে দিলাম। আমি কি জানি এদের মনে শয়তানি বুদ্ধি ঘুরছে।দেখো তো আমার ক্যারামেল পুড়িয়ে কি করেছে? একেবারপ কুচকুচে কালো করে ফেলছে। কার ভালো লাগে এসব? কোথায় বাদড়টা? গেলো কোথায়? আজকে আমি ওকে আলুভর্তা করবো।

ড্রয়িংরুম থেকে আবারো তিন ভাইয়ের হো হো হাসির আওয়াজ আসছে। ঊষা যতটা মুখে হুমকি-ধমকি দিলো কাজে কিছুই দেখালো না। চুপচাপ নিজের মতো করে পুডিং বানাতে মনোযোগ দিলো।তার এখন ভাইদের সাথে আগ বাড়িয়ে লাগার মুড নেই। অবশ্য তিন ভাই তাই চাচ্ছে। বোনের রান্না ভেস্তে দিতে। জিনিয়া ঊষাকে সাহায্য করতে চাইলেও সে করতে দিলো না।

প্রায় আধা ঘণ্টা কেটে গেছে। এবার জ্বালানোর পালা ঈশানের। ঈশান একটা ললিপপের খোসা ছাড়িয়ে কিচেনে ঢুকলো। ঊষার সামনে এসে সেই ললিপপ ওয়াক থু শব্দ করে একদলা থু থু ছিটালো। তারপর ঊষার মুখের সামনে ধরে বললো,

— নে বোনু খা।

ঊষা একবার দাঁত কিড়মিড় করে ওর দিকে তাকালো। সেই রাগী চাহনি তোয়াক্কা করে ঈশান বললো,

— খেয়ে দেখ অনেক মজা। তোর প্রিয় অরেঞ্জ ফ্লেভারের।

ঊষা হাত মুঠ করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

— এই তোরা এতো খাচ্চোর হইছিস কবের থেকে? তোর থু থু দেওয়া ললিপপ আমি খাবো? সরলি সামনের থেকে? নয়তো গরম দুধ শরীরে ঢেলে দিবো।

ঈশান মন খারাপের ভান করে বললো,
— এতো ভালোবেসে ললিপপটা সাধলাম তাও নিলি না।

— ওয়াক ছিঃ! তোর মুখের ঐ ললিপপ আমি খাবো?ঐ খাচ্চোর তুই এসব ভাবিস কিভাবে?

ঈশান কাঁদো কাঁদো ভান ধরে অভিনয় করে বললো,
— শ্বশুর বাড়ি না যেতেই ভাইদের পর করে দিচ্ছিস বোনু। আর শ্বশুর বাড়ি গেলে কি করবি? হু এখন তো সব তোর ঐ জামাই। আর আমরা ঠনঠনাঠন ঘন্টা।

ঊষা রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
— দূরে গিয়া মর শয়তান। তোরা সবগুলি ফন্দি করে একের পর এক আমাকে জ্বালাচ্ছিস। আমি তোদের চিনি না ভাবছিস?

— চলে যাবো আগে আমার ললিপপ নে।

— সর ঈশাইন্না।

— থাক না নিলে আর কি করার। আমার ললিপপ আমি খাই।

হাতের ললিপপটা মুখে পুরে নিয়ে শব্দ করে চেটেপুটে চাকুমচাকুম করে ঈশান খেতে লাগলো। মনে হচ্ছে না জানি কোন অমৃত খাচ্ছে। ঊষা ওর কাঁধে ধাক্কা মেরে বললো,

— কিচেন থেকে যা তো। আবার দেখা যাবে কোন আকাম করে ছুট লাগিয়েছিস।

ঈশান মুখ থেকে ললিপপ বের করে বললো,
— এটা খা তাহলে চলে যাবো।

— ছোট ভাইয়ু সর বলছি। মেজাজ এমনিতেই অনেক গরম। আর গরম করিস না।

— খাবি না?

— খাচ্চোর তোর মুখেরটা আমি খাবো কেন?

— সত্যি খাবি না?

— না খাবো না।

— আচ্ছা! তাহলে দেখ আমি কি করি।

শেষের কথাটা ঈশান আস্তে বলেছে। তাই ঊষা শুনতে পেলেও বুঝতে পারেনি৷ ঊষা আপনমনে পুডিং-এর জন্য দুধ জ্বাল করতে লাগলো। খুন্তি দিয়ে অনরবত নাড়ছিলো যাতে নিচে লেগে না যায়। আর ঈশানের সাথে কথা বলছিলো। ঈশান ফট করে ওর মুখের ললিপপটা দুধে ছুঁড়ে মেরে দিলো দৌড়। ওকে আর পায় কে! যাওয়ার আগে হাসতে হাসতে বললো,

— এবার বোঝ ঠেলা।

ঊষা রেগে গগনবিদারী এক চিৎকার দিয়ে বললো,
— ভাইয়ুরে তোদের আজকে খবর আছে🤬।

~~~মানুষ বড় অদ্ভুত জীব। কোনকিছু পাওয়ার আগে ও হারিয়ে ফেলার পর আফসোস করে। কিন্তু থাকতে মূল্য বুঝে না।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here