আমার_গল্পে_তুমি ২৯_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
,
মানে আপনি কি,,,, ইয়ানা আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই আর্দ্র ইয়ানার খোলা কমরে ওর হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো তারপর ইয়ানার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিলো,,প্রায় অনেক সময় পর আর্দ্র ইয়ানার ঠোঁট ছেড়ে কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে নেশা ভরা কন্ঠে বলল,, এর পর থেকে এই রূপে আমার সামনে আসার আগে ভেবে চিন্তে আসবে কেননা প্রতিবার তো আর তোমায় ছেড়ে দেবো না,, ইয়ানা কিছু বলতে পরছে না চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে একটু আগে কি হলো ওর মাথায় ঢুকছে না, ও ভাবতেও পারেনি যে আর্দ্র এমনটা করবে তখনি ওর কিছু একটা মনে হতে আর্দ্রর কাছ থেকে সরে এসে হাতের তালু দিয়ে ঠোঁট টা মুছে বলল,, অফিসে কে যেনো বলেছিলো যে তার নাকি কোনো মেয়ের প্রতি ইন্টারেস্ট নেই আবার সে নাকি কোনো মেয়েকে পাত্তা দেয় না তার নিজের উপর তার অগাত বিশ্বাস আছে, তাহলে এখন এটা কি হলো??
আর্দ্র নিজেকে ঠিক করে বলল,, হ্যাঁ তো? আমি এখনো বলছি আমার কোনো মেয়ের প্রতি ইন্টারেস্ট নেই এখন যা কিছু হলো সব কিছুর জন্য তুমি দায়ি,, এই রকম হট লুকে যদি আমি আসতাম তাহলে তুমি ও আমার মতো ভুল করে ফেলতে ওকে।
কিহ? আপনি কেনো এসব পড়তে যাবেন আর আপনাকে এই শাড়ি পড়লে ভালোই লাগবে তবে ব্লাউজ টা হবে না আপনার যে বডি বাইনা দিয়ে ব্লাউজ বানানো লাগবে।
হোয়াট আমি কেনো এসব পড়তে যাবো, আর ইউ লস্ট ইউর মাইন্ড??
বারে আপনিই তো এখনি বললেন যে আপনিও যদি এই লুকে আসেন তো আমিও এমন ভুল করে বসবো, তাই জন্যই তো বললাম, তবে আপনি শাড়িটা নিতে পারেন ব্লাউজ টা হবে না।
আরে আমি তো,,ওকে বাদ দাও তোমার ওই মোটা মাথায় আমার কথা ঢুকবে না, এই জন্যই তো আমি তোমায় ইডিয়ট বলি৷ হোয়াট এভার আমি নিচে যাচ্ছি তোমারও যদি ক্ষিদে পাই তাহলে আসতে পারো, আর হ্যাঁ এই ড্রেসে বেশিক্ষণ থেকো না তাহলে কিন্তু আমি ভুলে যাবো যে তুমি অসুস্থ,,,মজা করে কথাটা বলে বাঁকা হেসে আর্দ্র বেরিয়ে গেলো।
আর্দ্র কি বলেছে সেটা বোধগম্য হতেই ইয়ানা চোখ মুখ কুঁচকে বলল,, ছিঃছিঃ কি সব বলে গেলো লোকটা লজ্জা সরম সব ব্যাংকে রেখে আসছে নাকি,,তারপর ইয়ানাও ড্রেস চেঞ্জ করে নরমাল একটা শাড়ি পড়ে নিচে গেলো দেখল অলরেডি সবাই টেবিলে বসে গেছে তবে অন্তরা আপু নেই ওনি ওনার রুমেই আছে এই অবস্থায় বেশি উপর নীচ না করাই ভালো ,,, আজকে বিকেলেই আকাশ ভাইয়া এসেছে ওনিও ডাইনিং টেবিলেই বসে আছে পরশের পাশের চেয়ারে,, আমাকে দেখেই ওনি বলল,, আরে পরশের কিউটিপাই আর আমার সুইট ভাবি ভালো আছেন??
জি ভাইয়া,, আর আপনি আমায় অনিক ভাইয়ার মতো তুমি করেই বলতে পারেন কেননা আমি আপনার ছোট।
ওকে, এখন তাহলে তুমিও বসে পড়ো,, আর্দ্রর মা আর বাবা আগেই খেয়ে উপরে ওনাদের রুমে চলে গেছে বর্তমানে টেবিলে পরশ অনিক আর্দ্র ইয়ানা আর আকাশ আছে সবাই খাওয়াই ব্যাস্ত তখনি পরশ ফট করে বলল,, আরে চাচ্চু তুমি ঠোঁটে লাল লাল ওটা কি নিয়েছো?? এটা তো আমাদের স্কুলের মিসরা নেয় তুমি ও ওদের কাছ থেকে এনে নিয়েছো??
পরশের কথায় সবাই খাওয়া ছেড়ে আর্দ্রর দিকে তাকালো দেখলো সত্যি আর্দ্রর ঠোঁটে লিপস্টিক লেগে আছে এতোক্ষণ কেউ খেয়াল করেনি, ইয়ানা তো একবার তাকিয়ে আর তাকায়নি ওর লজ্জায় জান যায় যায় অবস্থা এখন সবাই কি ভাববে। অনিক আর্দ্র কে একটা গুঁতা দিয়ে বলল,, বলো না চাচ্চু তোমার ঠোঁটে মেয়েদের লিপস্টিক কেনো,কেউ কি তোমায় কিসিমিসি দিয়েছে নাকি,? কি বলো আকাশ, অনিক চোখ মেরে বলল।
হ্যাঁ হ্যাঁ বলো আর্দ্র ভাইয়া তোমার ঠোঁটে লিপস্টিক কেনো? আজকাল কি তুমিও ইয়ানার থেকে লিপস্টিক শেয়ার করো হুমম বলো বলো।
আর্দ্র তো পড়ে গেছে একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে তবুও মুখে রাগ এনে বলল, খাওয়ার সময় এতো কথা কিসের হুমম, আর কি কখন থেকে লিপস্টিক লিপস্টিক করছিস সবাই, কেনো ভাইয়া তোর বউ নেই তুই বুঝি তোর বউকে কিসিমিসি করিস না। আর বাচ্চার সামনে এসব কি ধরনের মজা।
পাপ্পা কিসিমিসি কি??
এই রে হয়ে গেলো, কিছু না আব্বা, তোমার তো খাওয়া শেষ তুমি যাও দাদুর কাছে যাও, এখানে থেকে আমার ইজ্জত এর বারোটা বাজাও না আমি তো ভুলেই গিছিলাম তোমার চাচ্চু একটা জিনিস আর তুমিও সেই লেভেলেরই।
ইয়ানা তো লজ্জায় মরি মরি অবস্থা এখানে দেখছি কারো কোনো লজ্জা নেই ছোট বাচ্চার সামনে কি সব কথা বলছে এদের সাথে আমার আর খাওয়া হবে না, তাই কোনো রকমে বললাম৷ আ,আামার খাওয়া শেষ, ভাইয়া আমি পরশকে নিয়ে যাচ্ছি এসো চাম্প।
তোমরাও না খাওয়ার সময় শুধু কথা বলো তোমাদের জন্য মাঝখান থেকে পরশের কিউটিপাই আর আমার সুইট ভাবির খাওয়াই হলো না,, তা আর্দ্র ভাইয়া কিসিমিসি কি গো??
আকাশের কথায় আর্দ্র আকাশের দিকে এমন ভাবে তাকালো যে আকাশ এর গলা শুকিয়ে কাট হয়ে গেছে,, না থাক আমি না হয় বিয়ের পরই বউ এর থেকে শুনে নিবো কিসিমিসি কি, দুলাভাই না মানে অনিক ভাইয়া ডালের বাটিটা দাও তো ডাল খাবো হে হে হে।
,,,,,,,,
ওফ ওনারদের জন্য তখন ভালো করে খেতেই পারিনি এখন আবার পেটের মধ্যে গুড়গুড় করছে যেনো খিদের চোটে ইঁদুর গুলো সব যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে,, ইয়ানার ভাবনার মাঝেই আর্দ্র প্লেটে করে খাবার নিয়ে রুমে আসলো,, এই যে মিসেস ইডিয়ট খাবারটা খেয়ে নিন তখন তো লজ্জায় লাল নীল গোলাপি হয়ে না খেয়েই চলে আসলেন।
খাবারটা দিলেই তো হয় সাথে এতো কথা বলার কি দরকার বুঝিনা,, আমি খাবো না।
সত্যি তো??
হুম।
ওকে তাহলে আমি খাবারটা নিচে রেখে আসি তুমি শুয়ে পড়ো ওকে, এই বলে আর্দ্র বেরিয়ে যেতে গেলো,, কি খারাপ লোক একবার বললাম আর ওমনি নিয়ে যাচ্ছে আর দু একবার জিগাস করলে কি হতো, মনে মনে বলল ইয়ানা।
শুনুন কাউকে একবার কিছু জিগাস করলে কুকুর কাঁমড়ায় আপনি আমায় আবার জিগাস করেন যে আমি খাবো কি না তাহলে আপনাকে আর কুকুর কাঁমড়াবে না। ইয়ানার কথায় আর্দ্র নিজের বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে কপাল চুলকে বাঁকা হেসে বিরবির করে বলল ড্রামা কুইন,, । তো মিসেস ইয়ানা আপনি কি খাবারটা খাবেন নাকি আমি রেখে আসবো।
ওকে আপনি যখন এতোবার করে বলছেন তখন খাওয়াই যায় আমি আবার কারো কথা ফেলতে পারি না, দেন প্লেটটা, আর আমি কিন্তু নিজে থেকে খাচ্ছি না আপনি এতোবার করে বললেন তাই খাচ্ছি ওকে।
হুম সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি আমি তো আর অন্ধ নই।
সকালে,,,,
আকাশ সকাল সকাল বেরিয়ে যাচ্ছে কেননা ওর আবার ভার্সিটিতে কাজ আছে যদিও আজকে শুক্রবার ভেবেছিলো আজকের দিনটা মজা করে এবাড়িতে সবার সাথে কাটাবে কিন্তু তা আর হলো না ফোন আাসায় এখন বেরিয়ে যাচ্ছে ,, তাই অন্তরা কে বলে চলে যাচ্ছে, রাতেই অবশ্য সবাইকে বলছি যে সকালে চলে যাবে। ,, আজকে বন্ধের দিন বিধায় কেউ এখনো উঠেনি শুধু আর্দ্র উঠে জগিং এ গেছে আর ইয়ানা রান্নাঘরে, তখনি কলিং বেল বেজে উঠল,,, সুইট ভাবি তোমায় কষ্ট করে আসতে হবে না আমিই খুলে দিচ্ছি, আকাশ দরজা খুলে দেখলো রোজা দাঁড়িয়ে আছে রোজাকে ভালো করে চেনে না শুধু আর্দ্র আর ইয়ানার বিয়ের দিন দেখেছিলো তাও ভাল মনে নেই।
বাবা আজকাল দেখি দিনের বেলায় ও চাঁদ উঠে,, সকাল সকাল চাঁদ মুখ দেখলাম আজকে সারাদিন মনে হয় খুব ভালো যাবে।
আকাশের কথায় রোজা ভেবাচেকা খেয়ে গেলো, চেনা নাই জানা নাই হঠাৎ করে যদি কোনো অচেনা ছেলে এভাবে বলে তাহলে অবাক হওয়ারি কথা তবুও রোজা কোনো রকমে ভাঙ্গা ভাঙ্গা সরে বলল,, ব,বলছি যে ব,,বাসা
বাসা খুঁজছেন আপনি?? এতো সকালে কেউ বাসা খুঁজতে আসে নাকি, আর এখানে আসার সময় দেখেননি গেটে বড় বড় অক্ষরে নাম লিখা আছে , এটা একটা বাড়ি এখানে বাসা পাবেন না।
কিন্তু,,,,
কি কিন্তু কিন্তু করছেন বলছি তো এখানে কেউ বাসা ভাড়া দেয় না তবে আপনি চাইলে আমি আপনাকে সাহায্য করতেই পারি।
রোজা পড়েছে বিপদে এমনিতেই একটা ঝামেলা হয়ে গেছে তার জন্য ইয়ানার কাছে এসেছে তারমধ্য এই লোকটা সেই কখন থেকে পাগলের মতো বকবক করেই যাচ্ছে কি যে করি,,, আকাশের কারো সাথে কথা বলা দেখে ইয়ানা রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এসো দরজার দিকে গেলো একি রোজা তুই এখানে??
ইয়ানা অবশেষে তোকে পেলাম এই তারছেঁড়া লোকটার জন্য তো আমি ভিতরেই ঢুকতে পারছিলাম না।
কিহ? আমি তারছেঁড়া? সুইট ভাবি এটা কে হুম এতো বড় সাহস আমাকে বলে আমি নাকি পাগল, এতো বড় সত্যি কথা ওনি জানলো কীভাবে,, না মানে ওনি কে?? হে হে।
আকাশ ভাইয়া ওর কথা আপনার হয়ত মনে নেই ও হলো আমার বান্ধবী রোজা,, তা রোজা তুই হঠাৎ এখানে তাও আবার এতো সকালে সব ঠিক আছে তো?? আম্মু কেমন আছে? আম্মুর কিছু হয়নি তো??
না না তেমন কিছু না তুই এতো উত্তেজিত হস না আন্টি ভালো আছে, আসলে আমি না বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি।
কিহ কিন্তু কেনো? আচ্ছা তুই আগে ভিতরে আয় তারপর সব কিছু শুনবো।
চলবে,,,,,,,??