ছায়া হয়ে থাকবো পাশে part-16

0
1213

ছায়া হয়ে থাকব পাশে
part ঃ 16
writer ঃ humayra khan

চারু আহানের কথার কোন উত্তর না দিয়ে আবারও বমি করে দেয় আহানের উপর।
আহানঃ আবারও ( অসহায় মুখ করে)
চারু ঃ আমার কি দোষ??? সবই তো আপনার দোষ। আমি তো বলেছিলাম আমি ডিনার করেছি। তাও আপনি জোড় করে খাইয়ে দিলেন।
আহানঃ আমি তো ভেবেছি তুই মিথ্যা বলছিস
চারু ঃ এতো ভাবেন কেন?? কম কম ভাব্বেন বেশি ভাবলে এমনই হবে আপনার সাথে।
কথাটি বলে জোরে জোরে হাসতে থাকে চারু।
হাসি থামিয়ে-
চারু ঃ আচ্ছা আমি চললাম তাহলে?
আহানঃ চললাম মানে??? আমার পরা জামা চেঞ্জ করে দিবে কে?? সারা রাত কি আমি বমি করা জামা পরে থাকব নাকি??
চারু ঃ থাকলেও প্রবলেম নেই।।আপনাকে এখন অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।।।
আহানঃ দেখ চারু বেশি কথা না বলে তাড়াতাড়ি করে আমার জামা চেঞ্জ করতে আমাকে হেল্প কর।
এই বমি করা জামা পরে বসে থাকতে থাকতে আমারই বমি আসছে।

চারু ঃ এক শর্তে!!!
আহানঃ কি??
চারু ঃ আপনাকে সুন্দর করে বলতে হবে আমায়।
মিস চারু ম্যাম আপনি অনেক ভালো;অনেক অনেক সুন্দর ;আপনার মতো ভালো মেয়ে আমি কখন ও দেখিনি । প্লিজ আমাকে হেল্প করুন।
রাজি তো? ( ভাব নিয়ে)
আহানঃ ওও আমার সাথে চালাকি দাড়াও গাচ্ছি তোমার সুনামের গান।।।।মনে মনে
ওকে বলছি।
মিস চারু ম্যাম আপনি অনেক শয়তান আপনার মতো ভয়নাক ফেস আমি কখন দেখিনি আপনার মতো দজ্জাল মেয়েও আমি আমার জীবনেও দেখিনি।।
প্লিজ আমাকে হেল্প করুন
এক নিশ্বাস এ কথা গুলো বলে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল আহান।।।
চারুর দিক এ চোখ পরলে আহান খেয়াল করল চারু ওর দিক এ রাগি দৃশটিতে তাকিয়ে আছে।।।।
আহান ভয়ে ঢোক গিলে-
আমি তো জাস্ট ফান করছিলাম তোমার সাথে।।
মন থেকে বলিনি।।।প্লিজ আমাকে হেল্প কর?
এই অবস্থায় আর কত ক্ষন থাকব বল???
চারু ঃ দিচ্ছি দিচ্ছি।।
তারপর চারু আহানের আলমারি থেকে একটা টি শার্ট বের করে নিল।।
চারু ঃ অই আপনার চোখ বন্ধ করুন।
আহানঃ কি? আমি কেন চোখ বন্ধ করব????
চারু ঃ করবেন নাকি চলে যাব আমি??? (চেচিয়ে)
আহানঃ করছি বাবা এতো চেচামেচি মেচি করছো কেন চড়ই পাখির মতো।
তারপর আহান নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে নেয়।
চারু ঃ ইস আমার এতো লজ্জা লাগছে কেন??
চারু উ হেভ টু ডু ইট। তোর কারনেই বেচারা বমি তে গোসল হয়ে গেছে।।।
তারপর চারু আহানের সামনে এসে আহানের ড্রেস চেঞ্জ করতে নিলে চারুর চুলের থেকে আসা সুভাস আহানকে যেন আরও মাতাল করে তুলছে।।।
আহানঃ উফফ এই সময় টা যদি এই খানেই থেমে যেত।(মনে মনে)
ভুলক্রমে চারুর হাতের নখ লেগে যায় আহানের পিঠে।
আর আহান ব্যথায় চিল্লান দিয়ে উঠে
আহ
চারু সাথে সাথে ওর হাত দ্বারা আহানের মুখ চেপে ধরে।
চারু ঃ এই কি করছেন টা কি। এই ভাবে চেচ্চাছেন কেন??
কেউ শুনতে পারলে তো মহা বিপদ হয়ে যাবে।
আর আপনার মা চলে আসলে আমাকে এই রুমে দেখলে আমার চোদ্দ গুসটি উদ্ধার করে ছারবে।
চারুর বলা কোন কথাই যেন কান পর্যন্ত পৌছাচ্ছে আহানের।।। অপলক দৃশটিতে তাকিয়ে আছে চারুর দিক এ…
চারু খেয়াল করল আহান ওর কথার কোন উত্তর না দিয়ে বোকার মতো করে চারু দিক এ তাকিয়ে আছে।
চারু ঃএই শয়তানটা এই ভাবে তাকিয়ে আছে কেন আমার দিক????মনে হচ্ছে আমাকে গিলে খাবে তার চোখ দিয়ে।।।
চারুঃ এই যে…….
আহান চারু কথায় কোন রিসপনস না করলে চারু আহানের গাঁ এ একটা চিমটি কেটে দেয়।
চারুর হাতের চিমটি খেয়ে ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে আহান।
আহানঃ উফ (ব্যথার জায়গায় হাত দিয়ে)
এই তুমি এই ভাবে চিমটি দিলে কেন আমাকে??
চারু ঃ আপনি এই ভাবে তাকিয়ে ছিলেন কেন আমার দিক এ???
চারুর প্রশ্ন শুনে আহান ভ্যাবাচেকা খেয়ে –
কই আমি তো তুমার দিক এ তাকাচ্ছিলাম না। আমি তো তোমার পরা কানের দুল গুলো দিক এ তাকিয়ে ছিলাম।।অনেক সুন্দর ভাবছি বিয়ে করলে নিজের বউ কে সেম এই রকম ইয়ারিং জোড়া গিফট করব??
চারু ঃওওওও
আহানঃ উফফ বাবা বাঁচা গেল।।। একটু হলেই ধরা খেয়ে যেতাম
এরপর চারু তাড়াতাড়ি করে আহানের পরা টি শার্ট টা চেঞ্জ করে দিল।।।
হঠাৎ আহান আর চারু কারো গলার শব্দ শুনতে পেল
চারু ঃ আল্লাহ কে আসছে?(ভয়ে)
সাবিনাঃ আহান………
আহানঃ আল্লাহ মা আসছে রুমে মধ্যে তুমি তাড়াতাড়ি পালাও।
চারু ঃ এই আপনি কি পাগল আমি এখন রুম থেকে বের হলে কাকিমা আমাকে দেখে ফেলবে।।
আহানঃ তাহলে কি করবা একটা কাজ কর ঘাটের নিচে গিয়ে লুকাও।
চারু ঃ ওয়াট???ঘাটের নিচে লুকাবো তা আবার আমি।
আহানঃ আচ্ছা ওয়াসরুমে গিয়ে লুকাও।
চারু ঃ আপনি গিয়ে লুকান ওয়াসরুমে??
আহানঃ প্লিজ জান কথা শুনো আমার।??
চারু ঃ অই কে তর জান( কোমড়ে হাত রেখে)
আহানঃ ওও সরি সরি নার্ভাসনেস এর কারনে ভুলে বলে ফেলেছি।।প্লিজ কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি যাও
মা চলে আসছে রুমের মধ্যে
চারু ঃ যাচ্ছি যাচ্ছি।
তারপর চারু দৌড়ে ওয়াসরুমে চলে গেলে।
আহানঃ উফ বাচলাম।
চারু আবার দৌড়ে ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে পরে।
আহানঃ কি হল আবার বেরিয়ে পরলে কেন??
চারুঃ আরে বমি করা শার্ট টা নিয়ে যাই।
কাকিমা দেখলে তো হাজার টা প্রশ্ন করবে।।।
আহানঃ ও হ্যা।
তারপর চারু বমি করা টি শার্ট টা হাতে নিয়ে–
উফফ ইয়াক কি বাজে দুর্গন্ধ।
আহানঃ নিজের বমি স্মেইল নিজেই সইতে পারছনা।
আমি তো কতক্ষন বসে ছিলাম এই টি শার্ট টা পরে।
চারু ঃ হয়েছে টপিক ক্লোস। এই ব্যাপারে আর কোন কথা শুনতে চাইনা।।।
আহান ঃ প্লিজ চারু যাওনা। মা চলে আসবে তো?
তোমাকে দেখলে মা তোমাকে কথা শুনিয়ে দিবে।
আর আমি চাইনা আমার ভালোবা…….
চারু ঃ কি ভালোবা………
আহানঃ কিছুনা আমার মা।।প্লিজ গো।
চারু আহানের কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে টি শার্ট টি নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়।।
আহানঃ সরি।।।জানি তোমার মোটেও ভালো লাগছেনা এই ভাবে ওয়াসরুমে লুকাতে।।।কিন্তু মা তোমাকে দেখলে অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে কথা শুনিয়ে দিবে তোমাকে।। আর আমি চাইনা আমার ভালোবাসার মানুষ কে কেউ আঘাত করে কথা শুনাক।।। আর এই সময় মাকে হেনডেল করাও সম্ভব না কারন সে অনেক রেগে আছে তোমার উপর।
সাবিনাঃ আহান।
মায়ের ডাক শুনে ধ্যান ভাঙে আহানের।
আহানঃ মা তুমি এই খানে এতো রাতে???
সাবিনাঃ তোর রুমে কোন মেয়ের গলা শুনতে পেলাম একটু আগে।।
আহানঃ নিশ্চয়ই তোমার বউ মার গলা শুনতে পেয়েছো।(হেসে)
সাবিনাঃ কি বউ মা?
আহানঃ আরে মা আমি কি বিয়ে করেছি নাকি যে আমার রুমে কোন মেয়ে মানুষ এর কন্ঠ শুনতে পাবে।
আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম তোমার সাথে।
সাবিনাঃ না না। আমি আমার কানে স্পষ্ট শুনেছি কোন মেয়ের গলা।
আহানঃ হায়রে পাশের বাসার বিড়াল কখন থেকে মিঞাও মিঞাও করে যাচ্ছে।।কানের বারো টা বাজিয়ে দিয়েছে আমার।তুমি হয়ত বিড়ালের ডাক শুনে ভুলে কোন মেয়ের গলা ভেবেছো।
আমার রুমে কিভাবে মেয়ে আসবে বল।??
সাবিনা ঃ হয়ত। আমি ভুল শুনেছি। বজ্জাদ বিড়াল আমার ছেলের ঘুম টা ভেঙে দিয়েছে।(আহানের মাথায় হাত রেখে)
চারু ওয়াসরুমে বসে আহান আর ওর মার কথা শুনে বেশ রেগে উঠে।
চারু ঃ আমাকে মানুষ থেকে বিড়াল বানিয়ে দিল এই শয়তান টা।। আমি নাকি বিড়াল??আমি নাকি ওর কানের বারো টা বাজিয়ে দিয়েছি।।
দাঁড়া ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে নেই এক বার। বিড়ালে মতো করেই এমন খামচি মারব তোর মুখে যে তুই নিজের ফেস চিন্ততে ভুল করবি।
আহানঃ আল্লাহ মা কি বলছে এই সব।চারু শুনতে পেলে তো আমাকে মেরে বরতা বানিয়ে দিবে।।(মনে মনে)
আহান ঃ মা…………

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here