ছায়া হয়ে থাকবো পাশে part- 24

0
955

ছায়া হয়ে থাকব পাশে
Partঃ 24
writer ঃ humayra khan

কিন্তু আজ আমার সেই সৌভাগ্য হয়ে উঠেছে মার হাতের খাবার খাওয়ার আর সেটা শুধুমাএ আহানের জন্য।।। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে চারু চোখ বেয়ে দুইফোঁটা জল গড়িয়ে পরে।।।
কেউ দেখে নেওয়ার আগেই চারু নিজের চোখের জল গুলো মুছে নেয় কিন্তু আহান তা ঠিকই খেয়াল করে।।।
আহানঃ জানি মার হাতের খাবার খেতে পেয়ে খুশিতে তোমার কান্না পাচ্ছে…..কিন্তু আমার চড়ই পাখির চোখ এ কান্না মোটেও ভালো লাগেনা….আজ হয়ত মা আমার কথার মান রাখার জন্য সবার সাথে তোমাকেও খাইয়ে দিচ্ছে….কিন্তু একদিন ঠিকই মা খুশি হয়ে তোমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিবে..আই প্রমিস..সেই দিন বেশ দূরে নয়………
.(.মনে মনে)
হঠাৎ আবির বলে উঠলো–
আবিরঃ উফ মার হাতের খাবারের স্বাদ ই আলাদা।।
মার হাতের রান্না যে কত মিস করেছি।।।
এখন থেকে ভালো রান্নার খাবার খাওয়ার সৌভাগ্য হবে. আমার . না হলে এতো দিন যা খেয়েছি(হেসে)
দিশাঃ ওরে শয়তান আবারও শয়তানিপানা শুরু করে দিয়েছিস বুঝি… রুমে যেয়ে নে বউ এর হাতের মাইর খেয়ে মাইরের স্বাদটাও তুই ভুলবিনা….(আনমনে)
সাবিনাঃ ইস রে আমার ছেলেটা ভালো খাবার না খেতে খেতে শুকে কাঠ হয়ে গেছে….
মিরাজ ঃ ইস রে কত ভালোবাসা মা ছেলের।।
তোমাদের ভালোবাসা দেখে আমার চোখ এ জল আসছে( নাটক করে)…
মিসেস সাবিনা বেশ রেগে যায় তার স্বামীর বলা কথা শুনে—
রেগে গিয়ে মিরাজ সাহেব কে কিছু বলতে যাবে
আহানঃ উফ মা রাগ করছ কেন এতো??বাবা তো ফান করে বলেছে কথাটা। তুমি তো জানই তোমাকে
চেতানোর জন্যই এই সব বলে……
সাবিনাঃ আচ্ছা বাবা তার কথা বাদ দে…..
নে হা কর…
আহানঃ উফফ মা আর খেতে পারব না আমি।।।
আরেকটু খেলে বেলুন এর মত ফুলে গিয়ে বাতাসের সাথে উড়ে যাব আমি….
আহানের বলা কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠে।।
রাতের ডিনার সেরে যে যার রুমে চলে যায়….
চারু ও নিজের রুমে গিয়ে বিছানা করে ঘুমের জন্য যাওয়া নিলে–
হঠাৎ ওর ফোন বেজে উঠে…….
আহানের নাম্বার টা সেভ করে না রাখায় —
আহান ফোন করলে–
এতো রাতে আননোয়ন নাম্বার থেকে কল এসেছে ভেবে চারু বেশ বিরক্ত নিয়ে ফোনটা রিসিভ করে..
চারুঃ হ্যালো কে( চেচিয়ে)
আহানঃ কে আবার আমি।।।।
চারু আহানের কন্ঠ বুঝতে পেরেও না বুঝার ভান করে-
চারু ঃ আমি কে…কোন দেশের প্রাইম মিনিস্টার নাকি??নাকি ফেমাস কোন একটোর যে আপনার কন্ঠ শুনে আপনাকে আমি চিনে নিব….আর এতো রাতে ফোন দিয়েছেন কেন??এখন জানেন আমার বাবু ফোন দিবে.. বেচারা আমাকে ফোনে বিসি পেয়ে কতই না কষ্ট পাবে…(অসহায় মুখ করে)
আহানঃ এই বাবু কে???
চারু ঃকে আবার আমার একমাত্র ভালোবাসা।।
আহান চারুর শয়তানি বুঝতে পেরে…..
আহানঃ সরি আন্টি আমার জিএফ কে কল দিতে গিয়ে আপনাকে ভুলে কল দিয়ে ফেলসি।।।উফ বেচারি রিয়া আমার ফোনের অপেক্ষায় বসে আছে…..
আহানের বলা কথা শুনে চারু চরম পর্যায় রেগে গিয়ে–
চারু ঃ এই রিয়া কে?? আহান ভাইয়া??
আহানঃ এই তো আসলো ম্যাডাম লাইনে।। আমাকে জ্বালিয়েছো?? না চিনার ভান করে। এখন আমার পালা।
মনে মনে।।।
আহানঃ কে আবার আমার ভালোবাসা(হেসে)
চারু আহানের বলা কথা শুনে সাথে সাথে বাচ্চাদের মতো কান্না করে দেয়…….
আহানঃ আরে আরে কান্না করছ কেন বাচ্চাদের মতো।। আমি তো শয়তানি করছিলাম বাবা।।
কান্না দামাও প্লিস….
চারু ঃ সত্যি বলছেন তো ভাইয়া….
আহানঃ হ্যা সত্যি বলছি আর দয়া করে আমাকে ভাইয়া বলা বন্ধ করো… ভালোবাসার মানুষ থেকে ভাইয়া শুনতে কেমন লাগে…..উফফ…
চারু ঃ আমি তো অলওয়েসট আপনাকে ভাইয়া বলেই ডাকব।। ভাইয়া…..
আহানঃ এই তুমি কি শুরু করলা ভাইয়া ভাইয়া…
মাথা কিন্তু খারাপ হচ্ছে চারু…(রেগে)
চারু বেশ মজা পাচ্ছে আহানকে রাগিয়ে ।।। ওকে আরও চেতানোর জন্য –
চারু ঃ আপনি তো অনেক কিউট একটা ভাইয়া আমার।।
আর আমি আপনার ছটকুসা সা বোন।।।
আহান রেগে মেগে ওর ফোনটা কেটে দেয়….
চারু ঃ উফফ রেগে গেছে দেখি…বেশি করে ফেললাম নাকি???।।।
হঠাৎ চারু সামনে তাকিয়ে দেখে আহান ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে…..
চারু ঃ আপনি??? (আমতা আমতা করে)
আহানঃ হ্যা আমি (ডেভিল হাসি হেসে)
চারু ঃ আপনি এই খানে কি করছেন???
আহানঃ বয়ফ্রেন্ড কে ভাইয়া ডাকা কতো বড় পাপ জানো।। তাই তোমাকে আমি শাস্তি দিতে এসেছি।।।
চারু বেশ ভয় পেয়ে যায় আহানের কথা শুনে–
চারু ঃ ভাইয়া কাকিমা….
আহান চারুর কথা শুনে পিছনে ঘুরে তাকালে সেই সুযোগে চারু আহান থেকে দূরে সরে যায়।।
আহান পিছনে ঘুরে কাউকে দেখতে না পেলে বুঝতে পারে চারু ওকে ভয় দেখানোর জন্য কথাটি বলেছে।
চারু ঃ উল্লু বানায়া বারা মাসা আয়া…..(হেসে)
আহানঃ ওরে বাবা আমার সাথে চালাকি দাড়াও দেখাচ্ছি…
কথাটি বলে আহান চারুর পিছু নিতে থাকে আর চারু ও আহানের শাস্তি থেকে নিজেকে বাচানোর জন্য রুমের মধ্যে মুরগির ছানার মতো দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে…
আধা ঘণ্টা মতো এইভাবে দৌড়াদৌড়ি করে দুইজনেই হাপিয়ে পরে–
আহানঃ উফফ আর শক্তি নেই এইভাবে দৌড়াদৌড়ি করার…
চারু ঃ হুম অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি( বিছানায় বসে)
আহান সুযোগ বুঝে চারুকে ধরে ফেলে–
আহানঃ হাতে এসেছে মুরগির ছানা।।।এখন দৌড়াও বাবু….
চারু ঃ ভাইয়া আমার হাত ছাড়ুন।।।আমি কিন্তু কান্না করে দিব…
আহানঃ হয়েছে আর বোকা বানাতে পারবে না।।।
এখন তোমাকে শাস্তি দেওয়ার পালা……
কথাটি বলে আহান সাথে সাথে তার দুইহাত দিয়ে চারুকে শক্ত করে ধরে ওর গালে জোড়ে একটা কিস করে দেয়
প্রায় কয়েকমিনিট পর আহান চারুকে ছেড়ে দিয়ে–
আহানঃ আবারও ডাকবে ভাইয়া বলে(হেসে)।।।
চারু আহানের এমন আচরনে বেশ রেগে মেগে যায় বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে আহানের উপর ছুড়ে মেরে
চারু ঃ হুম একশো বার হাজার বার লাখ বার বলব ভাইয়া ভাইয়া ভাইয়া….
আহানঃ হায়রে এই মেয়েটাকে তুমি কি দিয়ে বানিয়েছ আল্লাহ। উপরে তাকিয়ে
আহানঃ প্লিস ভাইয়া ডাকা অফ করো।।।আমাকে এইভাবে ভাইয়া বলে ডাকলে তোমাকেও আমি কাকিমা খালাম্মা বলে ডাকা শুরু করব।।
চারু ঃ এক শর্তে ভাইয়া বলা বন্ধ করব
আহানঃ কি শর্ত???
চারু ঃআমাকে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে এখন….,
আহানঃ ওয়াট এতো রাতে….
চারু ঃহুম… এখনই নিয়ে যেতে হবে আমায়।।।
না নিয়ে গেলে সারাজীবন ভাইয়া বলেই ডাকব আপনাকে….
আহানঃপ্লিস চারু জিদ করো না বাচ্চাদের মতো।।
এখন জানো কতো ঠান্ডা বাইরে….
তোমার শরীর এমনিও ভালো না…তাই আজ না গিয়ে কাল যাব নে ঘুরতে দিনের বেলায়।…..
চারু ঃ উফফ ইউ আর সো বোরিং পারসোন…
রাতে ঘুরার মজাই আলাদা…উফ ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস..
ভাবলেই মনটা ময়ূরের মতো নেচে উঠে…….
তো আমরা এখনি যাব তো যাব(মুখ ফুলিয়ে)
আহানঃ আচ্ছা বাবা যাব আমরা….আমি গাড়িটা বের করি তাহলে বাইরে গিয়ে…
চারু ঃ ওয়েট মিঃ আহান আজ আমরা গাড়িতে করে ঘুরবনা।।।।
আহানঃ তো কি বাইকে করে ঘুরব আজ(উওেজিত হয়ে)।।।জানো আমার খুব ইচ্ছা ছিল নিজের ভালোবাসার মানুষটার সাথে বাইকে করে ঘুরার…
আমি বাইক চালাব আর তুমি আমাকে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরবা।।(খুশি হয়ে)
চারু ঃ আহহ কত সোনালি রুপালি সপ্ন আপনার।।।
কিন্তু মিঃ আহান আপনাকে কে বলেছে আমরা বাইকে করে ঘুরব।।।।
আহানঃ গাড়িতে না বাইকে না তো কিসে করে ঘুরবা..
তুমি????(ভ্রু কুচকিয়ে)
চারু ঃসাইকেলে করে….
আহান চারুর কথা শুনে চারশো চল্লিশ বোল্ড এর শকড খায়…..
আহানঃ ওয়াট… তুমি ফান করছো আমার সাথে তাইনা….. সব রেখে সাইকেলে করে ঘুরতে চাইছো তুমি??মেয়েরা তো সাধারণত বাইকে উঠা পছন্দ করে আর তুমি?????
চারু ঃ……….

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here