এমনও প্রেম হয় পর্ব:-২

0
1818

#এমনও_প্রেম_হয়
#লেখা__ইয়ানা_রহমান
#পর্ব:-২

আমি পড়া শেষ করে প্রায় প্রতিদিন দিন বিকেলে জিয়ানের সাথে কথা বলি। ওর সাথে কথা বলতে না পারলে আমার কিছুই ভালো লাগতো না। কোন কাজে মন বসাতে পারতাম না।

ওর সাথে কথা বলতে না পারলে থমকে যেতো আমার পৃথিবী। সব কিছু স্থবির হয়ে যেতো। তখন মনে হতো সব ধ্বংস করে দেই। আগুন ধরিয়ে দিয়ে ভস্ম করে দেই সব কিছু। না হয় নিজেকে শেষ করে দেই চিরতরে।

ওর সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করা আমার নিত্যদিনের রুটিন হয়ে গেছিলো।

সারাদিন ছট্ফট্ করতাম কখন বিকেল হবে, কখন শুনবো সেই কান শীতল করা, মন ঠাণ্ডা করা কথার আওয়াজ।

অপেক্ষা খুব খারাপ জিনিস।
অপেক্ষার প্রহর শেষ হতেই চায় না।

আগের আমি সারাদিন হাসি খুশি থাকতাম, সর্বক্ষণ হাতে থাকতো পাঠ্য বই না হয় গল্পের বই।

কখনো কানে হেডফোন গুজে পছন্দের গানের ভুবনে ডুবে যেতাম।

মায়ের কাছে নানান রকম মুখরোচক খাবার রান্না করে দেওয়ার আবদার
করতাম।

আজ এটা খাবো। তো কাল সেটা খাবো।
কোথায় সেই আমি!
এখনকার এই আমি আর সেই আমি যেন এক না, কোথায় যেন হারিয়ে গেছে সেই আমি।

এই আমি ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করি না, খিদা লাগে না।
খাওয়ার রুচি নাই।
গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে না। সেই গল্প প্রেমী লিয়া কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে।

গান না শুনলে রাতে ঘুম হতো না।
এখন গান শুনলেও ঘুম আসে না, আর গান না শুনলে ঘুম আসে না। এখন আর আগের মত
গান শুনতে ইচ্ছাও করে না।

কারো সাথে কথা বলতেও ভালো লাগে না।
শুধুই আমার মনের ঘরে ঢুকে পড়া মানুষটাকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে।

এখন শুধু একটা কাজই ভালো লাগে সেটা হলো জিয়ানের সাথে কথা বলা।
এটাই যেনো একমাত্র মুখ্য কাজ ।
মন চোর আমার শান্তি হরণ করছে। এখন আর ফোনের কথায়ও মন ভরে না। দেখতে ইচ্ছে করে। হাত ধরতে ইচ্ছা করে। ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করে।
পাশে বসে ওর সাথে গল্প করতে ইচ্ছা করে।

হায় আল্লাহ! আমার এখন কি হবে!
পরীক্ষার বাকি অল্প কিছু দিন। পড়তেও ভালো লাগে না।

যেখানে আব্বু আম্মু , বাসার টিচাররা, স্কুলের টিচাররা সবাই ধরে নিয়েছেন আমি গোল্ডেন এ+ রেজাল্ট করবো। প্রিপারেশন খুব ভালো। অনেক আগেই সিলেবাস কমপ্লিট হয়ে গেছে।

কিন্তু আমার তো এখন পড়তে ভালো লাগে না। আমি এখন কি করবো।

আমার ফেরার কোন পথ নেই।

আমায় অন্যমনস্ক দেখে আম্মু বলতো,
এতো কি ভাবিস সারাদিন। দেখিস তোর পরীক্ষা ভালোই হবে।
টেনশন করিস না। শেষে পরীক্ষার আগে অসুস্থ হয়ে পরবি।

বাসার সবাই ভাবতো আমি পরীক্ষার জন্য চিন্তিত।

আম্মু জোর জবরদস্তি করে বেশি বেশি লিকুইড খাবার, পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে লাগলো।

এতকিছুর পরেও আমি নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছি।

আজ মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি জিয়ানের সাথে দেখা করবো। ।
ফ্রেন্ডদের গ্রুপ কল দিলাম।
আমার মনের সব কথা ওদের বললাম।

ওরা সবাই আমার আর জিয়ানের সব কথা আগে থেকেই জানে।

দোস্ত তোরা কেউ তোদের বাসায় আমাকে ডেট করার ব্যবস্থা করে দে।
আমি জিয়ানের সাথে দেখা করতে চাই।
একটু ব্যবস্থা করে দিতেই হবে।

কোন কফি শপ বা রেস্টুরেন্টে যেতে চাই না। কেউ দেখে ফেললে বিপদ হবে।

তোদেরকে যতটা ট্রাস্ট করি, অন্য কাউকে এতটা ট্রাস্ট করি না।

নাফিসা বলল, আমার বাসায় চলে আয়। আম্মু মামার বাসায় গেছে। ফিরতে রাত হবে।

আমি জিয়ানকে ফোন করলাম,
জিয়ান আসতে চায়নি_
বললো, আমারও তোমাকে কাছে থেকে দেখতে খুব ইচ্ছে করে। তোমাকে কল্পনায় এঁকে এঁকে যে কতো রাত ভোর হয় আমার সে কথা তুমি জানোনা।
কিন্তু নিজের মনকে শাসনে রেখেছি, কারণ
কদিন বাদেই তোমার বোর্ড পরীক্ষা। পড়াশুনায় ক্ষতি হবে। আমি তোমার কোন ক্ষতির কারণ হতে চাই না।

আমি রিকুয়েস্ট করে বললাম, পনের মিনিট সময় নিবো আপনার, এর বেশি না। প্লিজ আসুন একবার আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। না দেখলে মরে যাবো।

জিয়ান বললো, পাগলী একটা_ ঠিক আছে আমি আসছি। কোথায় দেখা করবে বলো।

আমি নাফিসার বাসার অ্যাড্রেস আর সময়টা বলে দিলাম।

জিয়ান বললো বাইরে কোথাও দেখা করতাম। কারো বাসায় দেখা করার ব্যাপারটা কেমন হয়ে যায় না?

সমস্যা নেই, নাফিসা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তাছাড়া এখন ওদের বাসায় কেউ নেই। তাই ওখানেই দেখা করবো।

ঠিক আছে আমি সময় মত পৌঁছে যাবো। তুমিও চলে এসো।

আম্মুর কাছ থেকে নাফিসার বাসায় যাওয়ার অনুমতি নিলাম।
বললাম, কিছুক্ষন আমরা সব বান্ধবীরা মিলে গ্রুপ স্টাডি করবো।

আম্মুও বারণ করেনি।

আমি আগেও নাফিসার বাসায় গেছি। নাফিসা সহ আমার সব বান্ধবীদের আমার বাসায় যাতায়াত ছিল। আম্মু সবাইকে চিনে।

আম্মু বলল, যা ঘুরে আয়। মন ভালো হবে। আর তাড়াতাড়ি ফিরিস।

আচ্ছা বলে বেরিয়ে এলাম বাসা থেকে।

নাফিসার বাসায় গিয়ে হাজির হলাম।
বুক ধুকপুক করছিল। আমার ভিতর এক অজানা ভালো লাগা কাজ করছিল। আবার ভয়ও করছিলো।

নাফিসার বাসায় পৌঁছে দেখলাম আমার গ্যাং পার্টির সব কয়টা হাজির সেখানে।

কেউ জিয়ানকে দেখেনি। ওরা জিয়ানকে দেখবে তাই সব কয়টা ফাজিল সেখানে হাজির হইছে।

জিয়ান এসে পৌঁছেনি,
আমরা ফ্রেন্ডরা বসে গল্প করছি।

নিজের মনের হীনতা দীনতা সব ওদের কাছে বলছি,
পড়ায় মন বসাতে পারছি না, এই কথাও বললাম।

নাফিসা বলল, এতো ব্যাকুল হচ্ছিস কেন? বেশি আকুলতা দেখাস না পড়ে কষ্ট পাবি।

তুই আজ জিয়ান ভাইয়ার সাথে সামনা সামনি কথা বলে মনের সব অস্থিরতা বিদেয় কর।

পরীক্ষা একদম মাথার ওপর তলোয়ারের মত ঝুলছে। পরীক্ষার আর মাত্র কদিন বাকি।

এই অবস্থা চলতে থাকলে খুব বিপদে পরে যাবি।
এখন শুধু মনযোগ দে পড়ায়। অন্য কোন কিছুতেই না।
অন্য সব কিছু বাদ দে। পরে হবে সব।

জিয়ান ভাই তো তোর সাথেই আছে, পালিয়ে তো যাচ্ছে না।
নাফিসার সাথে আমিও একমত,
তুই এত উতলা হচ্ছিস কেন? বেশি আকুলতা দেখালে ব্যকুল করে দিয়ে আবার না চলে যায়। শেষে তুই প্রাণে মারা পড়বি। বললো, বেলা।

এভাবে বলিস না তোরা।

তোরা আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ। তোদের কাছে মনের সব কথা বলছি আর তোরা আমার মনে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছিস।

আমি ওকে খুব ভালোবাসি, বিশ্বাস করি।

তোর ভালোর জন্যই বলি, আমরা ফ্রেন্ডসরা সবাই কত দুষ্টামি ফাজলামি করি কিন্তু তোর মত আগুনে হাত দেই নাই। প্রেম করার মত এতো সাহস তুই ছাড়া আমরা কেউ যোগাতে পারিনি।

হুঁ সবই বুঝি কিন্তু মন তো মানে না।
সারাক্ষণ ওর ভাবনায় ছেয়ে থাকে মন। প্রেমে কেন এতো কষ্ট? আমি আর এই কষ্ট নিতে পারছি না।

তুই মরেছিস, বললো শারমিন। এখনও সময় আছে নিজেকে সামলে নে।

নাফিসা বললো, এখন তোরা থাম। এখন আর বুঝিয়ে কোন লাভ নেই। যা ঘটার ঘটে গেছে। এখন শুধু দোয়া কর যেনো আমাদের লিয়া কোন কষ্ট না পায়। মানষিক শান্তিতে থাকে।

দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো।
নাফিসা দরজা খুলে দিল।

দেখলো হ্যান্ডসাম, টল ফিগারের একটা ছেলে দাড়িয়ে। পরনে তার কালো টিশার্ট, ব্লু জিন্সের প্যান্ট পায়ে লোফার্স সু। হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি। দেখতে ভালোই। এক হাতে রজনীগন্ধা আর অর্কিড ফুলের বাঞ্চ। অন্য হাতে স্পঞ্জ কেক আর চকলেটের বক্স নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

কে আপনি?
নাম জিজ্ঞেস করলো নাফিসা।

ছেলেটি বললো,
আমি জিয়ান। লিয়া কি এখানে এসেছে?

নাফিসা সালাম দিয়ে ভিতরে আসতে বললো।

বসার ঘরে বসিয়ে
লিয়াকে ডেকে দিল ।
নাফিসা আগে কখনো জিয়ানকে দেখেনি।
তাই চিনতে পারেনি ।
জিয়ান ঘরে ঢুকে সোফায় বসে।
লিয়া ঘরে ঢুকলে,
লিয়াকে দেখে চার চোখের মিলন হয়।

লিয়া লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়। প্রতিদিন ফোনে কথা বলা প্রিয় মানুষটার সামনে দাড়াতেই পারছে না। লজ্জাবনত চোখে দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে চুপ করে দাড়িয়ে আছে।

সেদিন চিরকুট দেয়ার পর
আজই সামনা সামনি প্রথম দেখা হলো।

আমি এই সময়টার জন্য কতো এক্সাইটেড ছিলাম।
কিন্তু এখন তো ওর চোখের দিকেও তাকাতে পারছি না।
লজ্জায় মুখ তুলে তাকাতেও পারছি না। মনে মনে বললো লিয়া এমন কেন হচ্ছে।

জিয়ান সব বুঝতে পেরে বসা থেকে উঠে এসে আমার হাতে ওর আনা ফুলগুলো দিলো।

হাত ধরে নিজের কাছে বসায়। নিজের হাতের মুঠোয় ভরে নিলো লিয়ার হাত।

ওর প্রথম স্পর্শে আমি কেপে উঠলাম। মনের গহীনে উথাল পাতাল শুরু হলো।
আমি হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলে জিয়ান আরো শক্ত করে ধরে রাখে।

জিয়ানও দেখলো আমি কাপছি। হেসে দিয়ে বললো, ফোনে কথা বলার সময়তো মনে হয় বাঘিনী আর এখনতো দেখছি ভীতু হরিণী।

একথা শুনে আমি লজ্জায় লাল হলাম । তারপর দুজনেই হেসে ফেললাম।

অনেক কাছাকাছি বসেছি দুজন। পারফিউমের মিষ্টি একটা গন্ধ নাকে এসে লাগছে। নেশা ধরে যাচ্ছে আমার সেই গন্ধে।

আমাকে ইজি করতে প্রথমেই ও আমার পড়াশুনার কথা জিজ্ঞেস করলো।

মুটামুটি সব পড়া হয়ে গেছে।

গুড, পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হবে সমাজে মাথা উচু করে দারাবে। এটাই আমি চাই। রেজাল্ট খারাপ করে ভালোবাসার দোষ দেয়া চলবে না।

একথা সে কথা বলে ভালবাসার শত কথায় হারিয়ে গেলাম দুজনে।

জিয়ান বললো লিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
আমি সারা জীবন তোমাকে ভালোবেসে যেতে চাই। তোমাকে নিয়ে আমি সুখী হতে চাই। তোমাকে সুখী করতে চাই।

পড়াশুনা শেষ করে তোমাকে নিয়ে তৈরি করতে চাই আমার শান্তির পৃথিবী।
তুমি থাকবে তো সারাজীবন আমার হয়ে!?

আমি কথা দিলাম হাতে হাত রেখে। আমি শুধু জিয়ানের হয়ে থাকবো। কখনো হারিয়ে যাবো না। মৃত্যু ছাড়া কেউ আলাদা করতে পারবে না।
জিয়ানও কথা দিলো_
কখনো দুজন দুজনের থেকে আলাদা হবো না। কেউ কাউকে ঠকাবো না। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবো। জীবনে মরণে এক থাকবো আমরা।

মনে হচ্ছিল থেমে যাক সময়টা। থেমে যাক পৃথিবী।
এই সময়টা যেনো কোনদিন শেষ না হয়।

নিজেকে খুব সুখী মনে হচ্ছিলো। আমার চাইতে সুখী আর কেউ না।

আমি ওর বাহুডোরে
বাধা পরলাম।
ওর বলিষ্ঠ বাহুতে আমাকে জড়িয়ে ধরে বুকের মাঝে আকড়ে ধরে রাখলো।

মনে হল অনেক দিনের প্রেম পিয়াসী দুটি তৃষ্ণার্ত তপ্ত হৃদয় প্রেমের বৃষ্টিতে ভিজে তৃপ্ত হচ্ছে।

শরীরে প্রথম কোন পুরুষের টাচ্ লাগাতে কেমন যেন একটা অনুভুতি হলো।

শরীর শিরশির করে উঠলো। গায়ের লোম দাড়িয়ে গেল। শিরদাঁড়া বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পড়লো। একটা অজানা উত্তেজনা অনুভব করলাম।

আমি জিয়ানের হার্টবিট শুনতে পাচ্ছি। ঢিপ ঢিপ ঢিপ।

আমার বুকের ভিতরও ঢিপ ঢিপ করছে অজানা আশঙ্কায়। কে যেনো বুকের ভিতর জোড়ে জোড়ে হাতুড়ি পেটাচ্ছে। হার্টবিট বেড়ে গেছে অনেক গুণ। বুকের ধুকপুকানি থামানো যাচ্ছে না কিছুতেই ।
একটু একটু ভালও লাগছে আবার ভিতরে ভিতরে লজ্জায় মরে যাচ্ছিলাম।

নিজেও ছাড়তে চাচ্ছিনা আর ও আমাকে ছেড়ে দিক এও চাচ্ছি না।
কিন্তু লজ্জায় কুকরে যাচ্ছি।
আমি এক পরম শান্তি অনুভব করলাম।

প্রিয় মানুষের স্পর্শে যে এতো সুখ তা আজই জানলাম।

ওর ছোয়ায় আমি হারিয়ে যাচ্ছি।
স্বপ্নের মহা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ফেলছি ।
জিয়ান আমাকে অনেক আশার কথা ভালোবাসার কথা বললো।

ওর প্রতিটা কথা মন্ত্র মুগ্ধের মত শুনছি।

জিয়ান আরও বললো ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করবে, মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করবে।

টাইমলি নামাজ পড়ার কথাও বললো।

আমি ওকে কথা দিলাম যে আমি ওর সব কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।

নাফিসা দরজা নক করে ট্রেতে করে চা নাস্তা দিয়ে গেল।

আমাকে ইশারায় তাড়াতাড়ি মিটিং শেষ করতে বললো।

আমিও ইশারায় বললাম এখনই চলে যাবে।

জিয়ান কিছুই খেলো না শুধু চা খেলো।

যাওয়ার আগে আরেকবার জড়িয়ে ধরে আদর করলো।

আমি বললাম, এতো আস্তে ধরেছেন কেনো? অনেক জোড়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন।

জিয়ান হেসে ফেললো বললো, আচ্ছা বেবী এই যে জোড়ে জড়িয়ে ধরছি। বলে,
আমাকে নিজের সামনে দাড় করিয়ে,
ওর পেশী বহুল বাহু দিয়ে
জোড়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।

এতো জোড়ে জড়িয়ে ধরলো যেনো একে অপরের পাঁজরের হাড় ভেদ করে ভিতর ঢুকে যাবে। এমন অবস্থা,

ও আমার কপালে একটা চুমু দিলো।

ওর এই গভীর চুমুর আবেশে আমি হারিয়ে গেলাম কোন এক অচিনপুরে।

জিয়ান বিদায় নেয়ার আগে আমার ফ্রেন্ডদের ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম।

সবার সাথে পরিচিত হয়ে কিছুক্ষন গল্প করলো আমার ফ্রেন্ডদের সাথে। তারপর ও বিদায় নিয়ে চলে গেলো।

আমিও আমার পাজি গ্যাংয়ের সবার সাথে গল্প করতে বসলাম।

নাফিসা বলল , দোস্ত তাড়াতাড়ি মিটিং শেষ করতে বলছি বলে কিছু মনে করিস না।

আমি ভয়
পেয়েছিলাম যদি কেউ বাসায় এসে পড়ে তখন দুজনেই বিপদে পরবো।

না, আমি কিছু মনে করিনি, সাবধান থাকাই ভালো।

আমি জিয়ানের আনা কেক চকলেট নাফিসার হাতে দিলাম বললাম, আয় কেক কেটে আজকের দিনটা সেলিব্রেট করি।
সবাই কেক আর চকলেট খেলাম।

তো বল তোদের সবার কেমন লাগলো আমার জিয়ানকে। আমি কোন ভুল করছি না তো?

নাফিসা বলল, চালিয়ে যা আর কি করবি,

আমরা বললেই মনে হয় তুই ফিরে আসবি। যে ডুবা তুই ডুবছিস সেখান থেকে তোর পরিত্রাণ নেই।

এখন বল জিয়ান ভাইয়ার সাথে কি কি কথা হলো।

এখন বলা যাবে না কারণ আমি এখন সুখের সাগরে ভাসছি।

তারপর কিছুক্ষণ হাসাহাসি আর গল্প করে সবাই যার যার বাসায় যাওয়ার জন্য বেরিয়ে আসলাম।

বেরুবার আগে নাফিসাকে বললাম,

অনেক ধন্যবাদ দোস্ত,
একটা মধুময় বিকেল উপহার দেয়ার জন্য।

আমি আজ অনেক খুশি। মহাখুশি। এই বলে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।
———-

(বানানের ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন)

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here