#অস্তিত্বে_চাই_তোমার_ছোঁয়া পর্ব_০৩
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
ইফদিয়ার ভীতু নয়নে তাকিয়ে আছে। হৃদপিন্ড ধড়াম ধড়াম করে লাফাচ্ছে। আকস্মিক অদৃশ্য মুখোশধারী লোক সেজে কেমনে আসল যাবিয়াজ ভাই! তা ভেবে পাচ্ছে না সে। শুকনো এক ঢোক গিলে দৃষ্টি নত করে। ফাঁকা ক্লাস রুমে বেঞ্চে টেবিলের উপর বসে আছে যাবিয়াজ ভাই। তার সম্মুখে অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে আছে ইফদিয়ার। যেনো কোনো অপরাধ করে ফেলেছে সে। তার শাস্তি স্বরুপ যাবত দুঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। পা ধরে এসেছে ইফদিয়ার। দাঁড়ানোর ক্ষমতা লোপ পাচ্ছে। অন্যদিকে, যাবিয়াজ আনমনে শয়তানি হেসে কুটিকুটি অবস্থা। যখন দেখে রমণীর অবস্থা কাহিল হচ্ছে তখন হাতে স্পর্শ করে টান দিল। ইফদিয়ার এতক্ষণ স্থীর থাকায় তার পা জমে গিয়ে ছিল। অতএব টান খাওয়ায় পায়ের স্থীরতা ভেঙ্গে হুমড়ে খেয়ে পড়ে যাবিয়াজের কোলে।
কানের কাছে মুখ নিয়ে যুবকটি ফিসফিসানো কণ্ঠে বলে,
‘ডোন্ট ডেয়ার টু লাভ এনি বয়েস। রাদার আই উইল ফিনিশ ইউ।’
ইফদিয়ার রাগ চওড়া হলো। পাইছি কি তাকে কোনো গরু যে রাখালের মত কাটাবে? মনের মেজাজ বিগড়ে চেঁচিয়ে উঠে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
‘পাইছেন কি হে আমি কি আপনার বাসার পালিত গরু! যখন যা বলবেন তাই শুনব। আই লাভ ইউ ডেম। এই ছোট তিনটি শব্দ বুঝেন না। উল্টা আসছেন উপদেশ মারতে।’
যাবিয়াজ শান্ত দৃষ্টিতে রমণীকে পর্যবেক্ষণ করছে। রমণীর ঠোঁট নাড়ানো যুবকের অন্তরালে নেশা জাগিয়ে দিচ্ছে। শার্টের কলার ঠিক করে চোখ ঘুরিয়ে ভাব এনে বলে,
‘আমার কোলে থেকে আমাকেই চিল্লাচ্ছো! ইটস এ ব্যাড ম্যানার্স। চাইলে তুলে আছাড় মারতে পারি। কিন্তু পরে বোঝা আমারই উঠানো লাগবে। তাই ছাড় দিয়েছি।’
‘ধুর গিয়ে বাঁশ খা। এক ছোটি লারকি কি দিলকি বাত নাহি চামাচতা। আসলে বলদ কোথাকার।’
যাবিয়াজ শুনে গম্ভীর রক্তিম দৃষ্টি নিয়ে তাকায়। ইফদিয়ার কে আর পায় কে। তৎক্ষণাৎ রুম থেকে ছু মন্তর হয়ে গেল। যাবিয়াজ না হেসে পারল না। আনমনে দরজার দিকে পরখ করে বলে,
‘যে ব্যক্তিত্বের ধনাঢ্যে নিজের সর্বনাশ পেয়েছি সেই ধনাঢ্যের মূল অংশ তুমিতে ভরপুর। তাহলে সেই নারী কি তুমি? যার মধ্যে দেখেছি নিজের সর্বনাশ। না কখনো নয়। তুমি তো রইলে আমার এক অসভ্যসম্ভাবী নারী। এক মিনিট আমি কি কবি হয়ে গেলাম।’
যাবিয়াজ নিজের কথায় বেক্কলের মত চেহারা করে নিল। হিসেব মেলানো দ্বায়। তার মন যা চাই এর বিপরীতে গিয়ে দাঁড়ায় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্ফীত অংশ মস্তিষ্ক। আচ্ছা হৃদপিন্ডের ধুকপুক কি প্রিয় মানুষকে দেখে গভীরতার রুপে তীব্রভাবে ধুক পুক করে উঠে। নাকি এতে কোনো এক প্রকার অসুখ মিশ্রিত। যে অসুখে প্রেমিক পুরুষ সর্বগ্রাস্তিত হয়ে পড়ে। অসুখটা কি আদৌ মন্দ নাকি ভালো।
যাবিয়াজ নিজের মনে গড়া প্রশ্নের সমাধান চাই। যা পাওয়া ইতিমধ্যে দুষ্কর। মেয়েটা কোনো হৃদয়হরণী নয় বরং ইরিটেটিং। ভেবে যাবিয়াজ ফাঁকা রুম থেকে বেরিয়ে ক্লাসের উদ্দেশ্য রওনা হলো।
৬.
ইফদিয়ার কে পুরু স্কুলে খুজেঁ হয়রান হয়ে গেল তিয়ানা। গেটের বাহিরে একবার উঁকি মেরে দেখে লাভ হলো না। ইফদিয়ারের ছাঁয়ামূতিও নেই। কোথায় যে গেল মেয়েটা! চিন্তায় অসীমতা পেরিয়ে যাচ্ছে তার। ফোন বের করে কল দিল। রিসিভ হতেই গালির বর্ষণ শুরু করে তিয়ানা।
‘ঐ বা*লের শা*লী তুই আজ স্কুলের ভেতরে আয়। শু*টিয়ে যদি নোংরা*মি না বের করি আমার নাম তিয়ানা না।’
‘আচ্ছা তখন তোর নাম ফাটা বাঁশ রাখব কেমন সুন্দর না নাম?’
‘ঐ তুই আমার লগে ফাজলামী করছিস কখন থেকে খুঁজে যাচ্ছি। আত্তাপাত্তা কিছু আছে?’
‘ওবাবা তোকে আত্তাও কেন দেবো পাত্তাও কেন দেবো।’
‘তবে রে আয় সামনে হাতে নাতে একবার ধরি তারপর বুঝাব।’
‘তাহলে যা সামনেই আসমু না।’
তিয়ানা শান্ত হলো। এতোক্ষণ ডিপ্রেশনে কত কি বলে ফেলল। কলটা কানে রেখে স্বাভাবিক আহ্লাদী কণ্ঠে বলে,
‘কই এবার আয়।’
‘ভূউউউ।’
তিয়ানা এক চিৎকারে লাফিয়ে উঠে। সে স্কুলের মধ্যে থাকা বেঞ্চে বসে ছিল। পিছ থেকে ভূতের মত ভয় লাগিয়ে দিল ইফদিয়ার। তিয়ানা হা করে ভয়ার্ত চেহারা করে রেখেছে। যা দেখে পেট ফুলিয়ে হেসে চলেছে ইফদিয়ার। তিয়ানা ঠোঁট কামড়ে কাঁদো কাঁদো চেহারা করে বলে,
‘যা তোর সঙ্গে কথা নেই। আমার মত বাচ্চা মেয়েকে ভয় লাগিয়েছিস। জীবনেও তোর কের হইতো না। দেখিস বদরাগী জামাই পাইবি। একদম জ্বালাইয়া পুড়াইয়া তোকে ছাই কইরা খাবে। আমার মত বাচ্চারে কাঁদাস। কথা নাই আড়ি তোর লগে।’
ইফদিয়ার মুহুর্তেই সিরিয়াস চেহারা করে তিয়ানাকে জাপ্টে ধরে ‘সরি’ বলে। কিন্তু বেচারী সত্যি ভয় পেয়েছে। দু’তিন বার বুকে ফুঁ দিচ্ছে। ইফদিয়ার কান ধরে ‘সরি’ বলতেই তিয়ানা তার হাত নামিয়ে বলে,
‘হয়ছে হয়ছে আমি আবার সহানুভূতিশীল মানুষ। কারো সরি একসেপ্ট না করে থাকতে পারি না।’
ফিক করে হেসে দিল ইফদিয়ার। তিয়ানাও হেসে দুই বান্ধবী হাতে হাত রেখে ক্লাস রুমে প্রবেশ করে।
এদিকে,
যাবিয়াজ পড়ল মুসিবতে। বন্ধুগণ তাকে আঁটকে রেখেছে। তাদেরকে যুক্তিস্বরুপ বলতে হবে যে, ফাঁকা রুমে সে আর ইফদিয়ার কি করেছে? আর কেনোই বা ইফদিয়ার এমন ছুটে পালালো। এর উত্তর যেন তাদের চাই।
যাবিয়াজকে নিরব থাকতে দেখে শ্রেয়িতা হাতে থাকা কলম দিয়ে গুতা মারে এরফানকে। এরফান জানে যাবিয়াজের সামনে যখন সে হিংসাত্মক কথাটি বলেছিল। এর প্রতিফলেই সে ইফদিয়ারকে রুমে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। যা সকলের চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও। দ্যা গ্রেট এরফান দা ডিটেক্টিভ বয়কে দেওয়া সম্ভব না।
কিছুক্ষণ আগের ঘটনা…..
এরফানের কথায় যাবিয়াজ কোনোরুপ বনীতা করে না। বরঞ্চ শান্ত উৎফুল্ল কণ্ঠে বলে,
‘ওয়ান্ডারফুল! নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবি। আমি না হয় তখন তোর লাভসানের মজা উড়াবো।’
এরফান ঠোঁট ফুলিয়ে শ্রেয়িতার কানে ফিসফিসিয়ে বলে,
‘বলে কি,বোঝায় কি একেই বলে বলদ।’
‘হক কথার মার নেই। তাই তো বিজ্ঞ লোকে বলেছে, কারো ভালো করতে নেই।’
‘অর্কমার ঢেকি যে তুই।’
ফেরদৌস ঠাট্টা করে শ্রেয়িতাদের উদ্দেশ্যে বলে,
‘এই বলদের কথা বাদ দে তো। হের জীবনে লাবডাব হইতো না বুঝলি।’
যাবিয়াজের দলভুক্ত সব উঠে গেল পাটি থেকে। তারা উম্মুক্ত আকাশের নিচে ভার্সিটির পিছনের দিকে পাটি বিছিয়ে বসে ছিল। ফেরদৌস ক্লাসরুমে যেতে নিলে যাবিয়াজ ডাক দেয়। সে এলে তার হাতে নিজের একডজন বই ধরিয়ে বলে,
‘দোস্ত ওয়াশরুমে যাচ্ছি। আমার টেবিলে ব্যাগের উপর বইগুলো রেখে দেস।’
ফেরদৌস মাথা নেড়ে চলে গেল। যাবিয়াজ ওয়াশরুমে না গিয়ে সোজা ইফদিয়ার স্কুলের গেটে গেল। ইফদিয়ার স্কুল যাবিয়াজের ভার্সিটির খুব নিকটে। ০৫ মিনিট হেঁটে গেলেই গেটের সামনে আসা যায়। ইফদিয়ার ভাগ্যবশত গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল তিয়ানার জন্যে। আজ সকালে একবার উঁকি মেরেছিল যাবিয়াজ ভাইয়ার দিকে। কিন্তু নিজেই লজ্জায় পড়ে পালিয়ে গেল। কেননা যাবিয়াজের বন্ধুগণ তাকে দেখে যাবিয়াজ ভাইয়াকে নিয়ে মশকারী করছিল।
হঠাৎ হাতে টান পড়ায় খেয়াল করে যাবিয়াজ রক্তিম দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। ভীতু মনে ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলে,
‘আ….যা..যাবিয়াজ ভা..ইয়া আ…পনি।’
পূর্ণবাক্য হওয়ার আগে হিঁচড়ে স্কুলের ফাঁকা রুমে নিয়ে গেল। সেখানে শাস্তি স্বরুপ দাঁড় করিয়ে শোধ লুটিয়ে নিল।
ইফদিয়ারকে লাজুকভাবে বের হতে দেখে ফেলে এরফান। সে ভার্সিটির দুতলায় ছিল। দুতলায় সে ক্যাটাগরি ল্যাবে একটি টবে মাটি কুড়ছিল। মাটি কুড়ে টবে ভরপুর করে। টবটা সযত্নে টেবিলের উপর রেখে দিল। নিজের শরীর থেকে এপ্রোন আর হাত থেকে গ্লাভস খুলে মুখ ধুয়ে নিল। দরজা খুলে বেরিয়ে গেল ল্যাব থেকে। দুতলার রেলিং এর কাছে এলো হালকা মৌসুমী শীতল বাতাস উপভোগ করতে। তাদের ভার্সিটি থেকে ইফদিয়ার স্কুল সরাসরি দেখা যায়। কে যায়,আসে সব। তৎক্ষণাৎ ইফদিয়ার পিছনে যাবিয়াজকে বের হতে দেখে নিজেই বোকা বনে গেল। প্রথমে মনে করল নিজের ভ্রম। পরেরবার চোখ কুঁচলে খেয়াল করতেই দৃষ্টিকোণে ধরা পড়ে গেল যাবিয়াজ।
বর্তমানে…
শ্রেয়িতা ঠোঁট কামড়ে লাজুক কণ্ঠে বলে,
‘ইশ! আমার মেহনাত স্যারও যদি এমনটা করতো। কতই না রোমান্টিক হতো।’
এরফান হা করে বলে,
‘মেহনাত স্যার হে হে হে। ঐ হিটলার দাদা আর তোর সঙ্গে রোমান্স। আরে ভাই কেউ আমারে থামা। হাসি থামে না কা?’
‘ঐ বেয়াদপ পোলা মেহনাত স্যারকে একদম হিটলার বলবি না। সেই হ্যান্ডসাম যদিও কথাবার্তায় আখরু ওয়ালা। তাও আমি বউ হিসেবে চালিয়ে নিবো।’
‘হই ঐ আখরুর জীবন ত্যানা ত্যানা করে দিবি আরকি।’
‘ধুর হাড্ডিসার।’
যাবিয়াজ এদের নানান কথোপকথন শুনে আনমনে হাসছে। তাদের বন্ধুগণের এই এক রসিকতা তার কাছে বেশ পছন্দনীয়। তারা কথায় এতটা পটু যে তাদের মাধ্যমে নিজের অজান্তে খারাপ হওয়া মনটাও বুঝি ভালো হয়ে যায়। ক্লাসরুমে ফারুক সাহেব প্রবেশ করলেন। তিনি যাবিয়াজদের প্রযুক্তিবিদ্যার স্যার। ফেরদৌস নিরব হয়ে গেল। কেননা উক্ত স্যার স্বয়ং তার বাবা। এরফান হে হে করে হেসে ফেরদৌসের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে,
‘তোর বাপরে জিগাই স্যার ফেরদৌস কইছে হের নাকি বিয়া!’
ফেরদৌস চোখজোড়া বড় করে তাকায়। সেই চোখের মধ্যে অগ্নিশর্মা ভেসে উঠেছে। সে শক্ত করে চাপড় মারে এরফানের পিঠে। সে মুখ চেপে ব্যথা প্রশমন করে বলে,
‘দেইখা নিমু হা*লা তোকে।’
স্কুল শেষে তিয়ানা রিক্সার জন্যে অপেক্ষা করছে। স্কুলের গেটের পাশ দিয়ে এরফান বাইক করে যাচ্ছিল। ইতিমধ্যে তিয়ানাকে দেখে থেমে যায়। সন্ধ্যা হতে চলেছে মেয়েটা এখনো বাসায় যায় নি। কোনো সাহায্যের প্রয়োজন নেই তো! নিজের মত ভেবে এরফান বাইক ঘুরিয়ে তিয়ানার সামনে আসে।
হঠাৎ হেলমেট পরিহিত এক যুবককে দেখে ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠে তিয়ানার। চৌপাশে চোখ ঘুরিয়ে চিৎকার দেওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিল। যদি কোনো অসভ্যতামি করে তাহলে হরতাল করে দেবে। হেলমেট মাথা থেকে খুলতেই তিয়ানার চোখজোড়া উজ্জ্বল হয়ে গেল। পলকও পড়ছে না। অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছে। এরফান মুচকি হেসে নিজের মাথার চুল নেড়ে বলে,
‘আই নো আইম চামিং। প্লিজ ক্লোজ ইউর মাউট। অন্যথায় মাছি ঢুকে যাবে।’
তিয়ানা লজ্জায় মুখ বন্ধ করে ফেলে। এরফান হালকা কেশে বলে,
‘নিড এনি হেল্প। আপনি অনেকক্ষণ যাবত অপেক্ষা করছেন দেখলাম।’
তিয়ানা খুশিতে ফটাফট মুখের বুলি শুরু করে দিল। এই আসবে,সেই হয়ছিল,ওই হয়ছিল। এরফান বিরক্ত হয়ে দিল এক ধমক। তিয়ানা চুপছে গেল। আমতা আমতা করে বলে,
‘স..সরি আসলে আমার বাসা নওরাপুরে। এই শহরে হোস্টেলে থাকি। স্কুলের বাস এখনো আসিনি। তাই অপেক্ষা করছিলাম।’
‘আর ইউ ম্যাড? এখন সন্ধ্যা হচ্ছে বাস চলে গিয়েছে সেই দুপুরে।’
তিয়ানা চমকে তাকাল। চোখজোড়া কান্নার মত করে অসহায় কণ্ঠে বলে,
‘এবার আমার কি হবে?’
‘বাইকে বসো। ঠিকানা বলো পাঠিয়ে দিব।’
তিয়ানার ভরসা করতে ইচ্ছে হচ্ছে ছেলেটার উপর। দেখতে সিনিয়র,গুড লুকিং লাগে তবে চরিত্র খারাপ হবে না ধারণা করে নিল। ঠিকানা দিয়ে বসে পড়ে।
৭.
পুকুরপাড়ে বরশি নিয়ে বসে আছে ইফদিয়ার। তার মন চাচ্ছে না আজ টিউশনী পড়তে। এর অবশ্য কারণ আছে। কারণটা যে নাহেম স্যার। তিনি কলে বলেছিলেন আজ যেন সে শাড়ি পরে পড়তে বসে। কোনো স্যারের মুখে এমন কথা শুনে কার না খারাপ লাগবে। যেখানে স্যারটা শুধু তার টিউশনী স্যার বটে। মনে মনে যাবিয়াজকে ভেবে বলে,
‘পুরান পাগলের ভাত নাই নতুন পাগলের আমদানী।’
নতুন পাগলটা যে নাহেম স্যার কে উদ্দেশ্য করা বলে দিল। স্কুল থেকে গোসল সেরে লং ফ্রক পরেছে। পানিতে ফ্রকের নিচের অংশ ভিজে টুইটুম্বর। মাছ ধরার সময় সে বেখেয়ালি হয়ে পড়ে। নানান সংলাপ নিয়ে ভাবান্তর হয়। তার এই অসাবধানতার ফলে যে বিপদ ঘটতে চলেছে এর বিন্দুমাত্র ধারণা নেই ইফদিয়ার।
যাবিয়াজ ওষুধ কিনতে ফার্মেসীতে এলো। তার বাবার জ্বর এসেছে দুপুর থেকে। ন্যাপা এক্সট্রা কিনে বের হয়ে গাড়িতে বসবে। এর পূর্বেই মেয়েলী চিৎকার শুনে থেমে যায়। চোখযুগল বিপরীত মোড়ে ঘুরিয়ে দেখে অবাক হয়ে গেল। নিজেকে দমে রাখতে না পেরে ছুটে যায়।
চলবে…..