গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_১৫
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রেহান এর আম্মু : আহ্ অন্তরা কি করছিস সবার সামনে (রেগে)
অন্তরা: কি করবো খালা মনি কত দিন পর রেহান কে দেখতে পেলাম আমাকে তো ভুলেই গেছে (রেহান এর দিকে তাকিয়ে )
রেহান কিছু বললো না শুধু মুচকি হাসি দিল।
রেহান এর আম্মু : মা চল রুমে চল অনেক দূর থেকে আসছিস আগে একটু রেস্ট নে পরে কথা হবে
রিহা কিছু বলতে যাবে তার আগে অন্তরা বলে
অন্তরা : খালা মনি এই মেয়ে টা কে রেহান এর সাথে আসছে নাকি ?
রেহান এর আম্মু : ওহ রিহা রেহান এর বউ
অন্তরা : বউ মানে আর কোন রিহা ?(অবাক হয়ে)
রিহা : কোন রিহা মানে রিহা কইটা কেমন সব প্রশ্ন এখানকার মানুষ গুলো সব অদ্ভুত (মনেমনে)
মাইশা : রেহান এর ভালোবাসা রিহা (রেহান এর আম্মু)
অন্তরা যেনো আকাশ থেকে পরলো অবাক হয়ে রেহান এর দিকে তাকিয়ে আছে ।
রিহা : এই মেয়ে এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো কেমন কেমন আমি মনে হয় কোনো জোকার (বিড়বিড় করে)
মাইশা : কীরে মা কি ভাবছিস ?
রিহা : না কিছু না
মাইশা : চল উপরে চল
রিহা মাইশা চৌধুরীর সাথে সাথে যেতে লাগলো রেহান যেতে চাইলে অন্তরা আটকায়
রেহান : কিহলো কিছু বলবে ?
অন্তরা : তুমি বিয়ে করলে ?(ছলছল চোখে)
রেহান : হা আমার ভালোবাসা আমার লাইফ আমার breath,need সব কিছু রিহা
অন্তরা : কিন্ত
রেহান : আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি পরে কথা হবে
কথাটা বলে রেহান উপরে যায় আর অন্তরা রেহান এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে ।
রেহান রুমে গিয়ে দেখে ওর আম্মু সব কিছু ঠিক করে রাখছে
রেহান : আম্মু তুমি কেনো করছো ?
মাইশা চৌধুরী : আমি ছাড়া কে করবে ছোটো বেলা থেকে তো আমি করে আসছি এখন বউ আসছে বলে বড়ো হয়ে গেছিস
রেহান কিছু না বলে ওর আম্মুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো
রেহান : বউ এসে আর কি বা হলো আমাকে ও কি ঘুচাবে আমি ওকে না গুছলে ওর দিন চলে না
মাইশা চৌধুরী: ছোটো তো তাই আর এমনি তে ছোটো বেলা থেকে তো তুই সব করিস ভাবতেই অবাক লাগে আমার ছোটো রিহা যে সারাক্ষণ মামনি মামনি করে আমার পিছনে পিছন ঘুরতে আজ সে আমার ছেলের বউ কত বড় হয়ে গেছে
রেহান : হুম কিন্ত আগের মতই আছে
মাইশা চৌধুরী: এখনও কি আগের মত জেদ
রেহান : টা আর বলতে
রেহান শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব বললো মাইশা চৌধুরী শুনে হাসতে হাসতে শেষ
রেহান : শুধু কি এই কাল ত পুরো লাইভ ভিডিও করছিলো (হাসতে হাসতে)
মাইশা : আমার মেয়েটা সারাজীবন এমন থাকুক
রেহান : আমি ও চাই কিন্ত আম্মু ওর দিকে নজর রাখতে হবে ওর মাথায় যদি কোনো কারণে চাপ পড়ে তাহলে আমরা রিহা কে হারিয়ে ফেলবো
মাইশা : কিছু হবে না আল্লাহ কখনো খারাপ করবে না দেখে নিস
বলতে বলতে রিহা গোসল করে বেরিয়ে আসে । রিহা কে দেখে রেহান বলে
রেহান : এতক্ষণ লাগে মনে হচ্ছে আজ ওখানেই থাকবে বলে প্ল্যান করছ
মাইশা চৌধুরী: আহ্ রেহান যা গোসল করে আয়
রিহা তোয়ালে রেহান এর গায়ে ছুড়ে মারে
রিহা : যান গোসল করে আসেন
রেহান কিছু না বলে গোসল করতে যায় রেহান এর আম্মু রিহাকে নিজের পাশে বসিয়ে বলে
মাইশা : আমাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই আমি রেহান এর আম্মু সাথে তোর ও আমাকে
রিহা : আমার আম্মু তো একটা আমি অন্য কাউকে আম্মু বলবো না তবে মামনি বলে ডাকবো
মাইশা চৌধুরী মনে পড়ে যায় রিহা ছোটো বেলায় মামনি বলে ডাকতো।
মাইশা : আচ্ছা ঠিক আছে যা ইচ্ছা বলিস শোন আমার ছেলেটা একটু রাগী কিন্ত তোকে খুব ভালোবাসে ওর সবটা জুড়ে শুধুই তুই আমি জানি রেহান এর তোকে ওভাবে বিয়ে করা উচিৎ হয়নী কিন্ত ও তোকে খুব ভালোবাসে
রিহা : উনার আম্মু কত ভালো আর উনি আস্ত ডেভিল (মনে মনে)
মাইশা চৌধুরী: কীরে কি ভাবিস
রিহা : না কিছু না
মাইশা : খুব খুদা লাগছে তাই না চল কিছু খেয়ে নিবি সেই কখন বেরিয়েছিস
রিহা : মামনি তুমি যাও আমি আসছি
মাইশা : ওহ বুঝছি আচ্ছা আয়
মাইশা চৌধুরী হাসতে হাসতে চলে গেলো । রিহা আয়নায় চুল ঠিক করছে তখনই রেহান বের হলো । রিহাকে দেখে রেহান মুচকি হেসে
রেহান : ঘন ঘন আয়না দেখা প্রেমের লক্ষণ
রিহা : এখন কি আপনার জন্য আয়না দেখতে পারবো না
রেহান : আমি কি সেটা বলেছি সরো তো
রিহা : আরে আজব দেখছেন তো আমি চুল ঠিক করছো
রেহান কিছু না বলে চুল আচড়াতে লাগে । রিহা আগে গজগজ করতে করতে বিছানায় বসে রেহান মুচকি হাসে।
একটু পর
রেহান : কিহলো খেতে যাবে না ?
রিহা : আপনি যান আমি যাবো না (গাল ফুলিয়ে)
রেহান : ওকে
বলে চলে আসছিল
রিহা : আরে একবার না করেছি বলে কি আর বলা যায়না কেমন মানুষ কিপটা একটা এই জন্য এত বড়ো লোক হইছে পচা আলু বাসি তরকারি টিকটিকির জামাই কুমিরের নাতি নিজে একা একা সব খাবে আমার বুঝি খুদা লাগে না (মনে মনে)
রিহা এসব মনে মনে বলছে রেহান দরজার কাছে যেতে গিলে আবার ফিরে আসে
রেহান : লাস্ট বার বলছি চলো
রিহা : না যাবো না (অভিমানী সুরে)
রেহান : সত্যি তো ?
রিহা : হুম
রেহান : পরে কিন্ত যেতে চাইলে হবে না
রিহা : আরে বাবা যাবো না (রেগে)
রেহান : ঠিক আছে আমিও যাবো না
রিহা : কেনো আপনি যান গিলে আসুন
রেহান : খাবো তো অবশ্যই তবে সেটা তোমাকে (চোখ মেরে)
রিহা : মানে (হাবলার মত তাকিয়ে)
রেহান : বুঝাচ্ছি ।
বলে রিহাকে জড়িয়ে ধরলো
রিহা : আরে কি করছেন ছাড়ুন (নিজেকে ছাড়াতে )
রেহান : উহু
রিহা : মানে কি
রেহান এর কোনো সাড়া নেই সে তো রিহাতে বেস্ত । রেহান রিহার ঘার থেকে মুখ উঠিয়ে বলে
রেহান : ওতো নর কেনো চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে পারো না
রিহা : না পারি না আপনি ছাড়েন না
রেহান : না
রিহা কিছু বলতে যাবে তার আগে অন্তরা হুড়মুড়িয়ে ভিতরে আসে । অন্তরা কে দেখে রেহান রিহা কে ছেরে দেয়
অন্তরা : আসলে আমি বুঝতে পারিনি(মাথা নিচু করে)
রেহান : next time থেকে নক করে আসবে
অন্তরা : খালা মনি খেতে ডাকছে
রেহান : আচ্ছা আসছি রিহা চলো
৩জন খেতে আসলো
রিহা মাইশা চৌধুরির পাশে বসছে রেহান আর অন্তরা তাদের সামনে । মাইশা চৌধুরী রিহাকে খাইয়ে দিচ্ছে ।
রিহা শান্তিতে খেতে পারছে না রেহান এর জ্বালায় রেহান বার বার চোখ মারছে রিহা বিরক্ত হয়ে গেছে এবার তাকানোর সাথে সাথেই রেহান চুমু দেখায় । রিহার তো কাশি উঠে যায়
মাইশা : আরে আস্তে পানি খা
রিহা : মামনি আমি আর খাবো না
কথাটা বলে রিহা রেহানকে একটা কঠিন লুক দিয়ে উপরে যায় ।
রেহান মিটমিট করে হাসছে
মাইশা চৌধুরী: মেয়েটা তো কিছুই খেলো না
রেহান : এর থেকে বেশি উনি খেতে পারে না
খাওয়া শেষে রেহান রুমে গিয়ে দেখে রিহা রেগে বসে আছে । রেহান কে দেখা মাত্রই বলিস ছুড়ে মারে
রেহান : রিহা আবার সেই খেলা শুরু করলে সেদিনের কথা মনে নেই তোমার পায়ে কিন্ত এখন ও ব্যাথা
রিহা : আপনি একটা অসভ্য লোক
কথাটা বলে রিহা শুয়ে পরে রেহান মুচকি হেসে সেও শুয়ে পরে। রিহা শুয়ে ফোঁসফোঁস করছে
রেহান : কি গরম উফফ এভাবে কেউ ফোঁসফোঁস করলে আরো গরম লাগবে তো
রেহান এর কথায় রিহার রাগ একটু কুমল । রিহা রেহান দিকে ফিরে বলে
রিহা : আচ্ছা আপনার পরিবারে আর কেউ নেই ?
রেহান : না এটাই আমার পরিবার আর অন্তরা আমার খালামনির মেয়ে । খালা মনি আর খালু বাইরে থাকে অন্তরা আমাদের এখানেই থাকে
রিহা : আর আপনার আব্বু ?
রেহান : আমার আব্বু মারা গেছে অ্যাকসিডেন্ট আর তুমি কখনো আম্মুকে এটা বলবে না এটাই আমার পরিবার আর এখন থেকে তুমিও এই পরিবারে অংশ
রিহা : আর আপন
আর কিছু বলতে পারলো রেহান রিহার মুখে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিল রেহান জানে এখন রিহা অনেক প্রশ্ন করবে কিন্তু রেহান এর এখন এনার্জি নেই
রেহান : কোনো কথা না চুপচাপ ঘুমিয়ে পরো
রিহা : কিন্ত
রেহান : আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তুমি ঘুমিয়ে পরো
রেহান রিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে
এদিকে
একটা অজানা কাউকে ফোন করে বলছে
অজানা : রেহান তো বিয়ে করেছে এখন কি হবে আমি কি করবো ?
……..
অজানা : আচ্ছা ঠিক আছে কিন্ত তুমি এসো আমি পারবো না
……
অজানা : আচ্ছা আমি দেখছি
আরো কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিয়ে ফুলদানি আছার মেরে ভেঙ্গে ফেলে
অজানা : কাউকে ছাড়বো না আমি কাউকে না
চলবে