গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_১৬

গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_১৬
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

সকালে রিহা ঘুম থেকে উঠে রিহা পাশে তাকিয়ে দেখে রেহান নেই

রিহা : এ আবার কই গেলো মনে হয় নিচে গেছে

রিহা ফোন হাতে নিয়ে দেখে ৯ টা বাজে । রিহা তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় । শিরি দিয়ে নামতে নামতে দেখে রেহান আর অন্তরা কথা বলছে । রিহাকে দেখে মাইশা চৌধুরী এগিয়ে আসে

মাইশা চৌধুরী: রিহা মা ঘুম হলো ?
রিহা : হা মামনি একটু দেরি হয়ে গেলো
মাইশা চৌধুরী : আরে সমস্যা নেই রেহান ডাকতে যাচ্ছিলো কিন্ত আমি যেতে দেইনি আসো এখন নাস্তা করে নেবে
রিহা : আপনারা এখনও খান নি (অবাক হয়ে)
মাইশা চৌধুরী: রেহান আর অন্তরা খেয়ে নিছে আমি তোমার জন্য wait করছিলাম
রিহা : ওহ আচ্ছা

রাক্ষসটা আমায় রেখে খেয়ে নিল(মনে মনে)
মাইশা চৌধুরী: চলো
রিহা : জী

রিহা মাইশা চৌধুরির সাথে খেতে বসলো রেহান আর অন্তরা গল্প করছে আর টিভি দেখছে । রিহাকে মাইশা চৌধুরী খাইয়ে দিচ্ছে

রিহা : মামনি তোমার রান্না তো খুব সুন্দর একদম আমার আম্মুর মতো
মাইশা চৌধুরী : তোর আম্মুর কথা তোর মনে আছে ?
রিহা : না তবে আম্মু রান্না করতো আর বলতো এভাবে নাকি আম্মু রান্না করতো

মাইশা চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো ।
রিহা : মামনি তুমি আমাকে রান্না শিখিয়ে দিবে ?
মাইশা চৌধুরী : কেনো না
রিহা : আজকে শিখাবে আমি একটু একটু পারি (আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে)

মাইশা চৌধুরী হেসে দিলেন
মাইশা : এখনও আগের মতই আছিস (হেসে)
রিহা : আগের মত মানে

মাইশা চৌধুরী কিছুটা হতভম্ভ হয়ে গেলো তখনই রেহান বললো

রেহান : আগের মত মানে ছোটো বেলার মত তোমার আব্বুর কাছ থেকে শুনেছি তুমি এমন করতে

মাইশা চৌধুরী কিছুটা হাফ ছেড়ে বাচলেন
রিহা : আর কি কি বলেছে আব্বু (চোখ ছোটো ছোট করে)
রেহান : তোমায় কেনো বলবো
আম্মু আমি বের হচ্ছি
মাইশা চৌধুরী: কোথায় যাবি
রেহান : অনেক দিন পর আসলাম তো একটু বাইরে যেতে হবে না
মাইশা চৌধুরী : না আজ কোথাও বের হবি না বাসায় থাক
রেহান : কিন্ত
মাইশা চৌধুরী : আমি কি বলেছি

রেহান আর কিছু বলল না রিহা মুখ টিপে হাসছে ।

মাইশা চৌধুরী : ওতো হাসতে হবে না চুপ চাপ খাও
রিহা : মামনি আমি আর কত খাবো ?
রেহান : দুনিয়াটা পুরাই খেয়ে ফেলছে
রিহা : আপনাকে খেতে পারলে আরো খুশি হতাম
রেহান : সখ কত
রিহা : খুব সখ

অন্তরা আর মাইশা চৌধুরী ওদের কান্ড দেখে হাসছে

অন্তরা : তুমরা এতো ঝগড়া করতে পারো বাবা
রেহান : কথাটা ওকে বল
রিহা : আপু তুমি তো দেখছ কে বেশি ঝগড়া করে
অন্তরা : হুম আমি সব দেখছি (হালকা হেসে)
মাইশা চৌধুরী : হইছে আর কথা বলতে হবে না রিহা তুই উপরে গিয়ে রেস্ট নে
রিহা : মামনি রান্না

মাইশা চৌধুরী কিছু বলার আগেই রেহান বলে
রেহান : কে রান্না করবে তুমি তাহলে আর হইছে

রিহা রাগে সামনে থাকা সস রেহান এর গায়ে মারে ।

রিহা : এমন ভাব করছেন যেনো আমি আগে কখনো রান্না করে খাওয়ানি

রেহান : এটা তুমি কি করলে সব সস গেঞ্জি তে
রিহা : ঠিক করেছি
রেহান : তবে রে

রিহা ভা দোর সাথে রেহান ও । মাইশা চৌধুরী আর অন্তরা হাসতে হাসতে শেষ ।

মাইশা চৌধুরী: রেহান ছেরে দে বাচ্চা

রেহান : আম্মু কিছু দিন পর বাচ্চার মা হবে আর তুমি বলছো বাচ্চা (রিহার পিছে ছুটতে ছুটতে )
রিহা : হ্ন বললেও হলো আপনি হন (দৌড়াতে দৌড়াতে)

রেহান আর রিহা সারা বাড়ি দৌড়াচ্ছে সবাই ওদের দেখছে রিহা এবার উপরে চলে যায় ।

অন্তরা : খালামণি এদের কিন্ত খুব মানায় আর রিহা একদম বাচ্চা
মাইশা চৌধুরী : ছোটো বেলায় ও ওরা দুইজন বাড়ি মাথায় করে রাখতো যা দুষ্ট ছিল রিহা তবে রিহাকে একমাত্র রেহান সামলাতে পারত
অন্তরা : ইসস আমি যদি সেই সময় থাকতাম তাহলে কত না ভালো হতো ওদের সাথে আমিও দুষ্টুমি করতে পারতাম
মাইশা চৌধুরী: রিহা দুষ্ট তাই অনেক ভালো একটা মেয়ে । যে ওর সাথে মিশবে সেই ওকে ভালোবেসে ফেলবে আমার রেহান তো ছোটো থেকে রিহার পাগল রিহার কিছু হলে রেহান বাচে না
অন্তরা : মামনি রিহার তো কিছু মনে নেই
মাইশা চৌধুরী : হা ওকে স্বাভাবিক করতে হবে (চোখের পানি মুছে )
অন্তরা : চিন্তা করো না আল্লাহ কখনো কাউকে নিরাশ করবে না রিহা ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে এতো মিষ্টি একটা মেয়ে কে আল্লাহ কখনো কষ্ট দেবে না
মাইশা চৌধুরী : তাই যেনো হয়

এদিকে
রিহা আর রেহান দৌড়িয়ে হাফিয়ে গেছে

রিহা : আমি আর পারবো না উফফ (বিছানায় শুয়ে)
রেহান : আর একটু দৌড়াও (রিহার পাশে শুয়ে)
রিহা : আপনার তো সব দোষ (হাফাতে হাফাতে)
রেহান : আমার গায়ে সস কে মারছে
রিহা : তো কি হইছে আপনি যে কত কিছু করেন আমি তো কিছু বলিনা
রেহান : যেমন ?
রিহা : যেমন আপনি সকালে আমাকে ডাকলেন না একা একা খেয়ে নিলেন অন্তরা আপুর সাথে গল্প করছিলেন কই আমি তো কিছু বলিনি

রেহান কিছুক্ষণ রিহার দিকে তাকিয়ে থাকলো
রিহা : কিহলো ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?
রেহান : আমি অন্তরার সাথে কথা বলছি বলে কি তোমার খারাপ লাগছে
রিহা : আমার কেনো খারাপ লাগতে যাবে আজব আপনি আমাকে ডাকেনি কেনো
রেহান : ইচ্ছা তাই

বিছানা থেকে উঠে। রিহা ও উঠে রেহান এর সামনে বলে

রিহা : ইচ্ছা মানে কি আমায় একটু ডাকলে কি হতো প্রতিদিন তো ডাকেন আজ নামাজ পড়তে ও ডাকলেন না
রেহান : আমি ডাকলে তো তুমি বিরক্ত বোধ করো তাই
রিহা : আজব তাই বলে
রেহান : সর আমি চেঞ্জ করবো

রিহার তো রাগ হচ্ছে একে ত ডাকেনি আবার এখন তেজ দেখাচ্ছে । রিহা রাগে পানির গ্লাস এনে রেহান এর মাথায় ঢেলে দেয়। রেহান ও কি কম রিহাকে কোলে তুলে ব্যাথটপে ফেলে দিয়ে আসে। আর রিহা বাথরুম থেকে চিল্লাচ্ছে

রিহা : অসভ্য লোক একটা নিজেকে কি ভেবেছে #গ্যাংস্টার হ্ন নিজে গ্যাংস্টার হলে আমি ও #মিসেস_গ্যাংস্টার দাড়াও দেখাচ্ছি মজা

এদিকে রেহান এর কোনো সাড়া নেই । রিহা আর কি করার গোসল করে নেয়।

গোসল করে বাইরে এসে দেখে অন্তরা আর রেহান গল্প করছে হেসে হেসে ।

অন্তরা : রিহা আসো
রেহান : আরে তুমি বাদ দাও রিহা তুমি চুল মুছে নাও আমরা বারান্দায় গল্প করছি
অন্তরা : আরে সমস্যা নেই আমি পরে আসবো

অন্তরা আর কিছু না বলে চলে গেলো রিহা কিছু না বলে চুল মুছতে লাগলো।

রেহান : বউরে যতই রাগ দেখাও নিজের স্বামীকে অন্য কারোর সাথে দেখলে কেউ সহ্য করতে পারে না আজ থেকে এটাই হবে তোমার ওষুধ (মনে মনে) কি ব্যাপার মুখটা ওমন করে রাখছ কেনো ?
রিহা : তো কি করবো আমি অনেক ভিজিয়ে দিছেন এখন যদি আমার ঠান্ডা লাগে
রেহান : আর তুমি যে পানি মারছো টার বেলায়
রিহা : হইছে আর বলা লাগবে না আমি নিচে যাচ্ছি আপনি গোসল করে আসুন

রিহা নিচে গিয়ে দেখে অন্তরা বসে ফোন টিপছে রিহা গিয়ে অন্তরার পাশে বসলো

অন্তরা : আরে রিহা বসো
রিহা : হুম আপু
অন্তরা : রিহা তুমি এখন কিসে পরো অনার্স এ না ?
রিহা : হুম আপু
অন্তরা : আমি তোমাকে কি বলে ডাকবো ভাবি কি বলা যাবে কারণ তুমি আমার অনেক ছোটো আমি আর রেহান সমবয়সী
রিহা : কেনো আপু নাম ধরে ডাকবে
অন্তরা : আচ্ছা ঠিক আছে তুমি খুব মিষ্টি দেখতে আর কথা ও তেমন মিষ্টি
রিহা : তুমিও

কিছু সময়ের মধ্যে দুইজনের মধ্যে খুব ভালো বন্ডিং হয়ে গেছে

একটু পর রেহান আসে

রেহান : কি কথা হচ্ছে দুইজনের মধ্যে
অন্তরা : সেটা কি তোমাকে কে বলতে হবে
রিহা : আজাইরা মানুষ এর কাজ ওই

রেহান রিহার কোমর চেপে ধরে
রেহান : আমি আজাইরা মানুষ (রিহার দিকে তাকিয়ে )

রিহা কি করবে বুঝতে পারছে না রেহান আর অন্তরা গল্প করছে রিহা রেহান এর কানে কানে বলে

রিহা : কি করছেন কি ছাড়ুন আপু আছে (ফিসফিসিয়ে)
রেহান : তাতে কি আমার বউ আমি যা খুশি করতে পারি (ফিসফিসিয়ে)
অন্তরা : এই তোমরা কি কথা বলছো

রিহা কিছু বলতে যাবে তখনই রিহার ডাক পড়ে রিহা রেহান এর হাতে চিমটি কেটে উঠে মাইশা চৌধুরী কাছে যায় ।

রিহা : মামনি ডাকছিলে ?
মাইশা চৌধুরী : হুম এখন রান্না করবো তো তাই তুই শিখতে চাইছিলি
রিহা : ওহ আচ্ছা তাহলে আমি কি করবো ?
মাইশা চৌধুরী: তোকে কিছু করতে হবে না তুই শুধু দেখ
রিহা : কিন্ত আমি
মাইশা চৌধুরী : কোনো কিন্ত না চুপচাপ দেখ আমি কি করি
রিহা : আচ্ছা

একটু পর
রিহা : মামনি পুরি আমি ভেজে দেবো ?
মাইশা চৌধুরী : না অনেক তেল
রিহা ,: দি না প্লিজ
মাইশা চৌধুরী : না কোনো কথা না

রিহার অনেক জুরাজুরিতে মাইশা চৌধুরী রাজি হলো রিহা লুচি ভেজে নিল

মাইসা চৌধুরী : ওখানে দেখ তরকারি আছে ওদের দিয়ে নিজেও খা
রিহা : আচ্ছা

রিহা পুরি আর তরকারি নিয়ে রেহান দের কাছে যায় ওরা তো গল্প করতে বেস্ত ।

রিহা : পুরি আনছি খেয়ে নিন

রিহার দিকে একবার তাকিয়ে বলল
রেহান : লাগবে না এখন খিদে নেই

রিহার মন খারাপ হলো
রিহা : একটু টেস্ট করে দেখেন আলু পুরি আমি নিজে বানিয়েছি
রেহান : বললাম তো খাবো না নিয়ে যাও
অন্তরা : আহা রেহান এটা কেনো ব্যাবহার হা
রিহা : আপু মামনি ডাকছে
অন্তরা : আচ্ছা ঠিক আছে

অন্তরা চলে যেতেই রিহা রেহান এর কলার ধরে।

রিহা : তুই খাবি না তোর বাপ খাইবো

কথাটা বলে রিহা পুরি আর তরকারি রেহান এর মুখে পুরে দেয়

রিহা : নে এবার প্রাণ ভরে খা

কথাটা বলে রিহা উপরে যায় । রেহান তো না পারছে কিছু বলতে আর না সইতে অনেক কষ্টে মুখের পুরি খেয়ে পানি খেয়ে নিল

রেহান : কি মেয়েরে বাবা পুরাই ধানি লঙ্কা

অন্তরা : কীরে এমন হাফাছস কেনো ?
রেহান : না কিছু না
ম্যাডাম মনে হয় না খেয়ে রেগে উপরে চলে গেছে যাই দেখি কি করে(মনেমনে)

রেহান উপরে গিয়ে দেখে দরজা বন্ধ রেহান ডাকতে থাকে রিহার কোনো সারা নেই

অনেকক্ষণ ডাকার পর রিহা দরজা খুলে

রিহা : কিহলো এভাবে ডাকছিলেন কেনো ?

রেহান : তুমি

রেহান ভিতরে ঢুকে রিহাকে দরজার সাথে চেপে ধরে

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here