গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৮

গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৮
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

লোকটা শিরি দিয়ে উপরে উঠার সময় হটাৎ পিছন থেকে কেউ ডেকে উঠে

মাইশা চৌধুরী : রেহান

রেহান পিছনে একবার তাকায় কিন্ত কোনো কথা বলে না।

মাইশা চৌধুরী : রেহান কোথায় যাচ্ছিস
রেহান : যেখানে যাওয়ার কথা

কথাটা বলে রেহান উপরে উঠে । মাইশা চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন

মাইশা চৌধুরী : হে আল্লাহ তুমি কখনো তোমার বান্দা কে কষ্টে দেখতে চাও না তাহলে কেনো আমার রেহান যে এভাবে তিলেতিলে মেরে ফেলছ সব কবে ঠিক হবে

রেহান একটা ঘরে মুচকি হেসে বলে

রেহান : রিহা (মিহি কণ্ঠে)

প্রতিউত্তরে কোনো সাড়া আসলো না।

রেহান এগিয়ে বিছানার পাশে বসলো

রেহান : রিহা জান ওষুধ এর সময় হয়ে গেছে ওষুধ খেতে হবে তো

সর্ভমান্ট : স্যার ওষুধ
রেহান : হুম দাও

রেহান ওষুধ নিয়ে রিহাকে খাইয়ে দেয়। রিহা অচেতন হয়ে পরে আছে ।

রেহান ওষুধ খাইয়ে রিহার সাথে কথা বলতে লাগলো । প্রতিদিনের কাজ সারাদিন রিহার সাথে বসে কথা বলা । এই এক বছরে অনেক কিছু পাল্টে গেছে । রেহান আর আগের মত নেই অনেক টা চুপচাপ হয়ে গেছে ও শুধু কথা বলে রিহার সামনে । রুশ 6মাসের অন্তঃসত্ত্বা রিহার এই অবস্থা দেখলে আরো অসুস্থ হবে তাই অনি ওকে নিয়ে ঢাকা থাকে।

1 বছর আগে
রেহান মাটিতে বসে পড়ে । সবাই প্রায় ভেংগে পড়ে তখন

ডক্টর : রিহা বেচে আছে

রেহান এর চোখ খুশিতে চকচক করে উঠলো।সবাই অনেক টা খুশি সেই খুশি বেশিক্ষণ হলো না

ডক্টর : রিহা আগে একবার অনেক বড় একটা আঘাত পেয়েছে আর এই অ্যাকসিডেন্ট হওয়ার আগে আবারও এমন কিছু আঘাত পেয়েছে যার ফলে ওর মাথায় অনেক আঘাত লাগে আর অতিরিক্ত চাপে রিহা কোমায় চলে গেছে । এখন আমাদের হাতে কিছু নেই
আফজাল : ও কি কখনো ঠিক হবে না
ডক্টর : হবে হয়তো 1 মাসে বা 1 বছরে কিংবা আজীবন ও ঠিক না ও হতে পারে । ওর সামনে এমন কিছু অপস্থাপন করতে হবে যার ফলে ও নিজে থেকে রেসপন্স দেয়

সবাই ভেংগে পড়ে কিন্ত রেহান নিজের মনোবল ঠিক রাখছে ওর ভালোবাসা দিয়ে রিহা কে আগের মত করবে ।

সেদিনের পর থেকে রেহান এর প্রথম কাজ রিহাকে সময় দেওয়া রিহার সকল কাজ রেহান করে । রিহাকে নিয়ে এতটা বিভোর ছিল যে অন্তরার কথা মাথা থেকে চলে যায় ।

একদিন রেহান ওয়াশরুমে যায় এই ফাঁকে অন্তরা রুমে ঢুকে

অন্তরা : অনেক জ্বালিয়েছি আমাকে সে ছোট থেকে আমার রেহানকে আমার থেকে কেড়ে নিয়েছিস আজ কোমায় থেকে ও রেহান কে নিজের হাতের মুঠোয় রেখে গেছিস কিন্ত আর না আজ তোকে মরতেই হবে

কথাটা বলে অন্তরা রিহার শরীরে কিছু একটা ঢুকিয়ে দিতে যাবে তার আগেই রুশ দেখে ফেলে আর চুলের মুঠি ধরে

রুশ: তোর সাহস তো কম না আমার রিহার ক্ষতি করতে আছিস আজ আমার হাত থেকে তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না

রুশ এর চিৎকার করে কথাটা রেহান তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে ।

রেহান : কি হলো রুশ কি হইছে
রুশ : ভাইয়া ও রিহাকে মারতে চাইছিল দেখ ওর হাতে সুই

রেহান এর মুহুর্তে চোখ লাল হয়ে যায় । রেহান রুশ কে রিহার কাছে রেখে অন্তরার হাত ধরে নিয়ে যায়

অন্তরা তো বাঁচানোর চেষ্টা করছে

অন্তরা : রেহান বিশ্বাস করো আমি কিছু করতে যায়নি সত্যি বলছি

রেহান কোনো কথা পাত্তা না দিয়ে অন্তরাকে টেনে সবার মাঝে খানে ছুড়ে মারে

রাইসা খান : রেহান কি হলো ওকে এভাবে কেনো ধাক্কা দিলে
মাইশা চৌধুরী : রেহান কি ধরনের ব্যাবহার (রেগে)

রেহান : আম্মু প্লিজ চুপ করো এত দিন আমি চুপ ছিলাম কারণ ও আমার বোন কিন্ত আর না
রাইসা খান : কি করেছে কি
রেহান : বলছি

আম্মু অন্তরা আমাকে পছন্দ করত সেটা কি তুমি জানতে?
মাইশা চৌধুরী : অন্তরার কথা বলতে পারবো না কিন্ত রাইসা অনেক বার আমাকে বলছে মি ওকে রিহার কথা বার বার বলছি
রেহান : অন্তরা আমাকে পছন্দ করে আর সেই জন্য ও বার বার রিহা কে মারতে চাইছে পানিতে ও অন্তরা ধাক্কা মেরেছিল

অন্তরা চিৎকার করে বলে

অন্তরা : মিথ্যে কথা রিহা মিথ্যে বলছে
রেহান : আমার রিহা মিথ্যে বলে না
মাইশা চৌধুরী : তোর কোথাও ভুল হচ্ছে অন্তরা তো
রেহান : আমি জানি অন্তরার এমন সাহস নেই কিন্ত ওর পিছনে অন্য একজন আছে
মাইশা চৌধুরী : কে (অবাক হয়ে)

রেহান রাইসা খান এর দিকে তাকায় । রাইসা খান এর মুখ শুকিয়ে গেছে

রেহান : আচ্ছা খালা মনি তুমি এখানে কিসের জন্য আসছ ?

রাইসা খান : কিসের জন্য আবার তোদের সাথে দেখা করতে
রেহান : সত্যি (বাকা হেসে)
মাইশা চৌধুরী : তাই ছাড়া কি
রেহান : আম্মু এই দেখো (বলে একটা কাগজ এগিয়ে দেয়)

মাইশা চৌধুরী : এটা তো

রেহান : খালা মনি আমাদের সাথে দেখা করতে না টাকা নিতে আসছিলো খালামণি দের ব্যাবসায় অনেক ক্ষতি হইছে সেই জন্য ওরা bd আসে । আর শুধু আসলেই ভুল হবে অন্তরা কে কু পরামর্শ দেয় সাথে রিহা কে ও আমার নামে উল্টা পাল্টা বলে

রাইসা খান : রেহান তুমি ওই দুইদিনের মেয়ের কথা

রেহান : রিহা দুই দিনের মেয়ে না তোমাদের যতটা না চিনি ওকে তার থেকে বেশি চিনি

মাইশা চৌধুরী : রাইসা

রাইসা : বিশ্বাস কর সব মিথ্যে রেহান এর মাথা ঠিক নেই
রেহান : হা আমার মাথা ঠিক নেই কিন্ত প্রমাণ তো অন্য কথা বলছে আম্মু তুমি জানো রিহাকে মেলার দিন অ্যালকোহল দিয়ে অন্য একটা ছেলে কে দিয়ে রিহার সাথে খারাপ করতে চাইছিল যাতে আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে অন্তরা কে বিয়ে করি

মাইশা চৌধুরী সোফায় বসে পড়ে। নিজের পেটের বোনের নামে আর কত কি শুনবে

রাইসা খান : সব মিথ্যে
রেহান : কি মিথ্যে তোমাদের আপন ভাবতাম কিন্ত না তুমি তো আমার আলমারি থেকে টাকা ও চুরি করেছো যেটা তোমার সামনে রিহা কে দিয়েছিলাম

মাইশা চৌধুরী আর সহ্য করতে না পেরে উঠে রাইসা খান কে একটা চর মারে

মাইশা চৌধুরী : ছি তুই এত নোংরা ছোট থেকে তোর খুব লোভ সেই লোভ এখনও যায়নি

রেহান : আম্মু তোমার কিছু করার দরকার নেই আমি পুলিশ ডাকছি ওরা এসে ধরে নিয়ে যাবে

রাইসা খান : না রেহান এমন করো না আমার মেয়েটা শেষ হয়ে যাবে । আমি তোমাদের ক্ষতি কখনো চাইনি কিন্ত আমার মেয়েটা তোমাকে বড্ড ভালোবাসে
রেহান : কিন্ত আমি তো রিহাকে ভালোবাসি আর সেটা সবাই জেনে ও

রাইসা খান : আমি ওকে বুঝিয়ে নিয়ে যাবো প্লিজ এমন করো না আমি তো তোমার খালা মনি । আমি রিহার কাছে মাপ চাইবো সত্যি বলছি

রেহান : দরকার নেই পুলিশ আসলেই হবে

রাইসা খান মাইশা চৌধুরী কে বোঝানোর চেষ্টা করে ।

শেষে অনেক কষ্টে রেহান কে বুঝতে পারে ।অন্তরা আর রাইসা খান এর বাড়ি এই দেশ ছেড়ে চলে যায় ।

মাঝে মাঝে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার চেয়ে ক্ষমা করা অনেক ভালো। কাছের মানুষ এর চোখে ছোট হওয়া কেউ মেনে নিতে পারে না । আর ভালোবাসায় সব জায়েজ ।

বর্তমান

রেহান রিহার সাথে কথা বলতে বলতে রিহার বেডের পাশে ঘুমিয়ে পড়ে ।

মাইশা চৌধুরী এসে একবার দেখে রিহা আর রেহান এর কপালে চুমু খায়

মাইশা চৌধুরী : তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যা আমার ছেলেটাকে তুই ছাড়া কে সামলাবে ।

চোখের কোনে পানি মুছে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় । এদিকে রেহান এর ঘুম মাঝ রাতে ভেংগে যায়।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here