গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৭
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
রেহান ধির পায়ে রিহার দিকে যেতে থাকে । রিহা রেহান কে আসতে দেখে দৌড়ে ওখানে থেকে চলে যায়। রেহান এর পা যেনো ওখানেই অবশ হয়ে আছে।
জন : স্যার ম্যামকে আটকান
রেহান এর কোনো হুস নেই ।
জন : স্যার
রেহান : হা
জন : ম্যাডাম তো চলে গেলো।
রেহান যেনো এখন হুস ফিরে পাইছে । রেহান তাড়াতাড়ি যেতে গিয়ে দেখে রিহা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে রেহান ও নিজের গাড়িতে করে বাসায় যায় ।
ফ্ল্যাশব্যাক
রেহান যখন রিহার কপালে ভালোবাসা দিয়ে বের হচ্ছিল তখন রিহার ঘুম ভেংগে যায় । রেহান কে ওভাবে বের হতে দেখে রিহা ও রেহান এর পিছনে যায় । রেহান যখন গাড়ি থেকে বের হয় রিহা একটু দূরে গাড়ি থামিয়ে রেহান এর পিছনে গিয়ে ওসব দেখে রিহা তো স্তব্ধ হয়ে গেছে। রিহা ভাবছিল রেহান #গ্যাংস্টার না রিহার কোনো ভুল হচ্ছে কিন্ত আজ নিজের চোখে দেখার পর
রিহা বাসায় ফিরে নিজের ঘরে যায় । রিহার মাথা কাজ করছে না চোখ দিয়ে পানি পড়ছে বার বার রেহান কে সুট করার দৃশ্য ভাসছে । রিহা মাটিতে বসে পড়ে
রিহা : কেনো কেন রেহান আপনাকে তো ভালোবাসতে শুরু করছিলাম আর আপনি আমাকে এই ভাবে ঠকালেন i hate u রেহান i hate u (চিৎকার করে)
রেহান : bt i love u
রিহা পিছনে তাকিয়ে দেখে রেহান দাড়িয়ে আছে । রিহা কিছুটা পিছিয়ে যায়
রিহা : দূরে যান একদম আমার কাছে আসবেন বা একদম না
রেহান : রিহা আমার কথা টা শুনে
রিহা : আপনি একটা খুনি আমি কিছুতেই আপনার মত লোকের সাথে থাকবো না আমি আজই চলে যাবো
রেহান : রিহা প্লিজ আমার কথা শুনে (রিহা কাছে যেতে যেতে )
রিহা : আমার থেকে দূরে যান বলছি
রেহান যত এগিয়ে আসছে তত রিহা পিছিয়ে যাচ্ছে এক পর্যায়ে রিহা বেলকলোনিতে যায় ।
রেহান : রিহা প্লিজ আমার কথা শুন
রিহা : আপনি যদি আর এক পা বাড়িয়েছেন তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দেবো
রেহান ওখানেই দাড়িয়ে পরে।
রেহান : রিহা প্লিজ আমার কথা একটু শুন
রিহা ফুলের টব ভেংগে ফেলে।
রিহা : কি শুনবে আপনার কথা হা আর কি বাকি আছে এখন কি নতুন গল্প বলবেন চলে যান এখান থেকে চলে যান(চিৎকার করে)
রেহান : না আমি কোথাও যাবো না তোমাকে আমার কথা শুনতে হবে তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না কোথাও না
রিহা : আপনি যদি সামনে আসেন আমি কিন্ত সত্যি সত্যি লাফ দেবো
রেহান : রিহা প্লিজ এমন কিছু করো না তোমার কাছে হাত জোড় করছি প্লিজ একটা বার আমার কথা শুন (নিচে বসে) প্লিজ রিহা আমি যা করছি সব তোমার খুশির জন্য আমাদের ভালোবাসার জন্য বিশ্বাস করো
রিহা : বিশ্বাস আর আপনাকে আপনার মত খুনি কে একটা নিরীহ মানুষকে মারতে আপনার হাত কাপলো না
রেহান : না কাপেনি যে আমার আব্বু তোমার আম্মুকে খুন করেছে তাকে মারতে আমার হাত কেনো কাপবে আমি যা করেছি ঠিক করেছি এতে আমার কোনো অনুশোচনা নেই
রিহা : আর গল্প বানান পাপ করতে করতে এত পাপী হইছেন যে এখন মানুষ খুন করতে ও আপনার হাত কাপে না । আপনার মত মানুষ এর থেকে এর থেকে বেশি আর কি আশা করা যায়
রেহান : হা আমি খুনি কিন্ত এই সব করতে আমাকে কে বলেছে। একটা মনে কি জানো কেউ খারাপ হয় না পরিস্থিতি মানুষকে খারাপ বানিয়ে দেয় আমি
আর কিছু বলার আগেই কোথা থেকে একটা গুলি এসে রিহার গায়ে লাগে আর রিহা নিচে পড়ে যায়। রেহান এর পা অবস হয়ে গেছে
রেহান :রিহা (চিৎকার করে)
রেহান এর চিৎকার পুরো বাড়ি কেপে উঠে । রেহান নিচে গিয়ে রিহার রক্তাক্ত শরীরকে জড়িয়ে ধরে ডাকতে থাকে
রেহান : রিহা এই রিহা প্লিজ উঠ প্লীজ কি হইছে তোমার আমার সাথে কথা বলো এই দেখো আমি তোমার সামনে
রিহার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে উপর থেকে নিচে পরার ফলে মাথা অনেক টা কেটে গেছে । আর গুলি টা সোজা কাধে লাগছে । রিহা পিটপিট চোখ করে তাকিয়ে আছে। এতক্ষণে বাড়ির সবাই চলে আসে
রুশ আর মাইশা চৌধুরী কেঁদে যাচ্ছে । অনি রেহান কে বুঝিয়ে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায় ।
গাড়িতে
রেহান রিহাকে নিজের বুকের সাথে রেখে পাগলের মত করে ডাকছে ।
রেহান : রিহা জান কিছু হবে না একটু পর আমরা হসপিটালে চলে আসবো আর একটু কষ্ট করো (কাদতে কাদতে)
রিহার কোনো সেন্স নেই রুশ রিহার মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছে ।
কিছুক্ষণের মধ্যে হসপিটালে পৌঁছে যায়। রেহান রিহাকে কোলে নিয়ে ডক্টর কে ডাকতে থাকে । ডক্টর এসে রিহাকে ওটিতে নিয়ে যায় ।
ডক্টর ঢুকার আগে রেহান ডক্টর এর হাত ধরে বলে
রেহান : ডক্টর আমার স্ত্রী কে প্লিজ আগের মত করে দিন ওকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না যা খুশি করেন কিন্ত আমার স্ত্রী কে বাঁচান
অনি অনেক কষ্টে রেহান কে সামলেছে । রেহান এর ইয়াশ কালারের গেঞ্জি পুরাই রক্তে লাল হয়ে গেছে । রেহান শুধু ছটপট করছে শান্তি করে বসতে পারছে না ।
মাইশা চৌধুরী আর অন্তরা ও চলে আসে। মাইশা চৌধুরী কে দেখে রেহান বলে
রেহান : আম্মু আমার রিহা কে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে বলো ওর যেনো কিছু না হয় আমি মরে যাবো
মাইশা চৌধুরী রিহার আর ছেলের এই অবস্থা দেখে নিজে কে ঠিক রাখতে পারছে না । আর কেউ না জানুক মা তো জানে রেহান রিহার জন্য কত পাগল । মাইশা চৌধুরী ছেলের মাথায় হাত রেখে বলল
মাইশা চৌধুরী : এভাবে অস্থির হস না আল্লাহ কে ডাক এখন উনি ভরসা
মায়ের কথা শুনে রেহান ছুটে যায় নামাজ পড়তে । তাহাজুদের নামাজ ।
রুশ মাইশা চৌধুরী কে ধরে কেঁদে যাচ্ছে ।
অনি : আমি একটা কথা বুঝতে পারছি না রিহার গুলি লাগলো কি করে বাড়ির ভিতর কড়া গার্ড থাকা সত্তে
অনির কথায় রুশ চোখের পানি মুছে অন্তরার কাছে যায় ।
অন্তরা : কি
রুশ কোনো কথা না বলে ঠাস ঠাস ঠাস করে মারতে থাকে ।
মাইশা চৌধুরী রীতিমত অবাক ।
রুশ : এই কালনাগিনী মেরেছে আমার রিহা কে একে আমি শেষ করে ফেলবো
অন্তরা কে মেরেই যাচ্ছে অনি এসে রুশ কে আটকাতে পারছে না । রুশ লাথি থাপ্পড় যা পারছে দিচ্ছে
রুশ : ছাড়বো না তোকে আমি তোর জন্য আমার বোন কষ্ট পাচ্ছে তোকে এর মাসুল দিতেই হবে ছাড়বো না কিছুতেই না (চিৎকার করে)
মাইশা চৌধুরী : রুশ কি হচ্ছে এসব অন্তরা কি করেছে
রুশ কিছু বলার আগেই অনি রুশ এর মুখে হাত দিয়ে সেখান থেকে নিয়ে যায় ।
রুশ : অনি ছাড়ো আমাকে
অনি : কি পাগলামি করছো
রুশ : আমি ওকে মেরে ফেলবো তুমি জানো না ও রিহা কে মেরে ফেলতে চাইছে
অনি : সব জানি আমরা শুধু আমি না রেহান ও জানে
রুশ : সব জেনে ও তোমরা কিছু বলছো না (অবাক হয়ে)
অনি : হুম শুধু সময়ের অপেক্ষায়
রুশ : সেই সময় কখন আসবে রিহা মরার পর একটা কথা জেনে রাখো রিহার কিছু হলে আমি কাউকে ছাড়বো না
অনি : রুশ প্লিজ ঠান্ডা হও
রুশ অনিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
মাইশা চৌধুরী রিহার আব্বুকে ও খবর দেয় । রিহার আব্বু এসে রিহার অটির সামনে দাড়িয়ে আছে নিজের একমাত্র কলিজার মেয়ে কে এভাবে কোনো বাবা দেখতে পারবে না
রেহান নামাজ পড়ে আসতেই আফজাল সাহেব রেহান কে বলে
আফজাল সাহেব : তুমি তো বলেছিলে আমার মেয়ের কিছু হতে দিবে না তাহলে ওর এই অবস্থা কি করে হলো বলো রেহান বলো
রেহান আফজাল সাহেব কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয় ।
আফজাল সাহেব ও অনেক ভেংগে পড়েছে ।
ডক্টর বেরিয়ে আসে । সবাই ছুটে যায়
রেহান: ডক্টর আমার রিহা ঠিক আছে তো ওর কিছু হয়নি তো বলেন না
আফজাল : ডক্টর মামনি ঠিক আছে
ডক্টর : i am sorry আমরা হাজার চেষ্টা করে ও কিছু করতে পারলাম না গুলি বের করা হইছে আর ওতো উপর থাকে পড়ায় মাথায় অনেক টা আঘাত পেয়েছে
রেহান নিচে বসে পরে । আফজাল সাহেব কলার ধরে বলে
আফজাল : আমার মেয়ে কে বাঁচাতে পারলেন না কেমন ডক্টর হা আপনাকে আমি শেষ করে দেবো
মাইশা চৌধুরী রেহান কে ডাকছে কিন্ত রেহান এর সাড়া নেই ও যেনো পাথর হয়ে গেছে
1 বছর পর
একটা লোক একটা ছবি হাতে নিয়ে কাদছে আর বলছে
আমাকে কেনো এভাবে একা রেখে গেলে খুব কি ক্ষতি হতো তোমার সাথে নিলে এভাবে বাঁচার চেয়ে মরা অনেক ভালো । এই পাগলী একটা বার কথা বললো শুধু একবার সত্যি বলছি আর কখনো কষ্ট দেবো না
তখনই একটা মেয়ে এসে বলে
মেয়ে : স্যার ওষুধ এর টাইম হয়ে গেছে
লোকটা চোখের পানি মুছে বলে
আমি আসছি তুমি যাও ।
মেয়েটা চলে যেতেই লোকটা ছবি তে একটা চুমু খেয়ে ঘর থাকে বের হয়
চলবে