Sunday, December 14, 2025
Home Blog Page 2

পর্ব ১১-১৫ সমাপ্তি #নসীব #পার্ট_১১ #আরবি_আরভী

0

পর্ব ১১-১৫ সমাপ্তি
#নসীব
#পার্ট_১১
#আরবি_আরভী

কাঁন্না করে খুব মিনতি করছি কিন্তু খালামনি কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না আমাকে টেনে গেইটের বাহিরে রেখে গেলেন।। খুব কান্না করছি।। বৃষ্টির ঠান্ডা পানিতে কাঁপতে শুরু করেছি রীতিমত,,,

কিছু না ভেবে হাটতে শুরু করলাম,, অনেকটা পথ যাওয়ার পর একটা গাড়ি প্রায় আমার একসিডেন্ট করতে করতে থেমে যায়।। প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে।। গাড়ির লাইট ভেদ করে একটা চেনা মুখ।। আবির মাতাল হয়ে গাড়ি থেকে নেমে ,,,

-আর ইউ ক্রেজি ,,,
-মদ খেয়েছেন,,,
-তাতে তোমার কি,,, এত রাতে কোথায় যাচ্ছ তুমি??
-আমি নীলয়কে,,,,
-নীলয় নীলয়,,, কে হয় তোমার ওঁ হুমম,, নিউ কাস্টমার তাই না ,, (আমার হাটটা শক্ত করে চেঁপে ধরে)
-একদম চুপ নীলয়কে নিয়ে আর একটা বাজে কথা বলবেন না,,, আমার হাত ছাড়ুন,,,
-কেন ছাড়বো নীলয়কে পেয়ে আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছ,,, ওঁ কি আমার থেকে বেশি আদর করে বল,,,
-উউফফফ আপনি এত নোংরা কেন,,, কেন আমার সাথেই আপনাকে এসব বলতে হবে,,,
-প্রমিস ওঁর থেকে বেশি টাকা পাবা ওকে,,

আবিরকে থাপ্পড় মেরে,,,
-আপনি একটা অমানুষ,,, ছাড়েন আমাকে ছাড়েন,,

আবির রেগে আমার ডান গালে কষে থাপ্পড় দিয়ে বলতে থাকে,,,
-হাউ ডের ইউ,,, দুটাকার মেয়ে হয়ে আমাকে শোনাচ্ছিস,,,

তার থাপ্পড়ের জোরে আমি মাটিতে ছিটকে পড়ি,,,হঠাৎ ফোনে কল,,,আমি ডুকরে কেদে উঠে,,,

-হ্যালো ডক্টর,,
-Mrs. নীলয় আপনার আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট গুলো কাল এসে নিয়ে যাবেন,,আর হ্যা বেবীর প্রতি খেয়ার রাখবেন,,,
-জি,,,ধন্যবাদ ,,

কথা শেষ হতেই আবির আমাকে টেনে উঠিয়ে মুখটা চেপে ধরে বলতে থাকেন,,,

-বেবী মানে,,, কার বেবী?? নীলয় তাহলে খুব ভালো রেখেছে,, আমার সন্তান অপারেশন করে প্রিতমের সাথে,,,
-আমি আর নিতে পারছি না প্লিজ চুপ করেন,,,
-তুমি করলে কিছু না আর আমি বলবেই দোষ,,, আমি তো চাইনি তুমি আমাকে ছেড়ে যাও আমি তো চাইনি তোমার বাবা মারা যান ,,,ভেবেছিলাম আমি তোমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছি ভেবেছিলাম আমার কারনেই তোমার বাবা আজ তোমার কাছে নেই কিন্তু কে জানতো এসবকিছুই যে তোমার নষ্টামির ফল,,,, মায়া হয়ে গিয়েছিল নীলা,,, আম্মু ঠিকই বলে তোরা কখনো ভালো হতেই পারিস না,,,তুই ঠিক তোর বাবার মতই স্বার্থপর,,,
-আপনার নাটক আর সহ্য হচ্ছে না,, প্লিজ যেতে দিন,,

আবির আমার হাতটা ধরে একটানে উনার বুকে জড়িয়ে পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে,,,

-তোমার বাবার নামে এতিমখানা করার সিধান্ত নিয়েছি আগামীকাল থেকে কাজ শুরু হবে ,,,,জানি ক্ষমা পাবো না কিন্তু তবুও বলব আই এম সরি,,সবকিছুর জন্য,, অন্য কারো পাশে তোমাকে মেনে নিতে পারিনা তারপর তুমি যখন আমার দেয়া শাড়ি পড়ে নীলয়ের সাথে ঘুরতে গেলে খুব খারাপ লাগছিল,,,,,নিলা i am sorry আমাকে ক্ষমা করো প্লিজ ,,

কথাগুলো বলে আস্তে আস্তে আবির আমার খুব কাছে চলে আসছিলেন,,,,

-ভালোবাসি নীলা,,নীলয়ের সাথে যেও না,,

এমন সময় নীলয় এসে আবিরকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়,,

-ছাড় নীলাকে,,,
-আপনি এখানে??
-নিপা আমাকে কল দিয়ে জানিয়েছে তুমি নাকি বাড়ি থেকে চলে এসেছ তাই ,,

আবির কোনো রিয়েক্ট না করে আমাকে বলতে লাগে,

-ভালো থেকু,,নীলয়ের বেবীর ক্যার নিও,,

নীলয় আবিরকে মারতে থাকলে একপর্যায়ে আবির রক্তাক্ত হয়ে যায়,,, নীলয়কে খুব রিকুয়েস্ট করছি উনাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু নীলয় কথাই শুনছেন না,,,,

-আবির মাতাল হয়ে আছেন,, উনি আমার কোনো ক্ষতি করেননি প্লিজ আর মারবেন না ,,,

নীলয় রেগে আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে বলতে লাগলেন,,,

-আবিরটাকে মেরে ফেলব,,,, নীলা কোনোদিন তোমাকে একা ছেড়ে দিব না ভালোবাসি তোমাকে,,, দাদীমা বাবাই তোমাকে দেখলে অনেক খুশি হবে,,,

উনি আমার ফোনটা জানালা দিয়ে ফেলে,,,

-আজ থেকে তোমার নতুন জীবন শুরু ওকে ,,চিন্তা করো না নতুন কিনে দিব,,,,,(মুচকি হেসে)

আমি মুখ চেপে কাঁন্না করছি।।বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছিল আমার সাথে,,।।

অনেকটা দূর ঘন্টাখানেক পর একটা বিশাল বাড়ি।। অবাক হচ্ছি এত বড় একটা বাড়িতে মাত্র দুটি লাইট।। সবকিছু প্রায় অন্ধকার।। দেখতে ভূতুরে।। নীলয় এখানে থাকে ভাবতেও ভয় লাগছে।।
-আপনার পরিবার কোথায়,,,
-কিসের পরিবার,,,,
-মানে

নীলয় সোফায় বসে ড্রিঙ্ক
করতে করতে ফোনে কথা বলতে থাকেন,,

-হুমম এনেছি সাথেই আছে,,, না সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করতে হবে,,, প্রেগন্যান্ট অপারেশন করতে হবে তারপর ডেলিভারী,,,

আমি হা করে তার কথাগুলো শুনছিলাম।। কে উনি??

চলবে,,,,,,
#নসীব
#পার্ট_১২
#আরবি_আরভী

আমি হা করে তার কথাগুলো শুনছিলাম।। কে উনি??

নীলয়ের কথা বলা শেষ হলে আমি চোখের পানি ফেলে তাকে জিজ্ঞাসা করে বলি,,,

-এসব কি নীলয়,,,আপনি এভাবে কাকে কি বলছেন,,,,

নীলয় আমাকে শক্ত করে চেপে ধরে,,

-হা হা হা এখনো বুঝতে পারোনি,,,,
-না, আমার সব গুলিয়ে যাচ্ছে দাদীমা আপনার পরিবার ওঁরা সবাই কোথায়,,,,,
-এখানে কেউ নেই তুমি এখন আমার কারাগারে বন্দী মিস.নীলা।।কথামত চললে কোনো ক্ষতি করব না আর যদি বারাবারি করেছ তাহলে ,,,,

আমার হাত পা কাপছেঁ।। তার চোখের ভেতরের এক হিংস্র থাবা আর আচরণ বলে দিচ্ছে আমার সব প্রশ্নের উত্তর।। আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলতে লাগলাম।। পেছন থেকে নীলয় আমাকে সরিয়ে গালে থাপ্পড় দিয়ে বাদা দিতে থাকেন।। আমি টেবিলের উপর ছিটকে পড়ি।। নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছে ।। একপর্যায়ে তার সাথে হাতাহাতি শুরু করলে নীলয় আমার হাতে একটা ইঞ্জেকশন পুশ করেন আর আমি সাথেসাথে জ্ঞান হয়ে ফেলি।।

আস্তে আস্তে চোখগুলো খোলা মাত্রই সামনে ঝাপ্সা কিছু দেখতে পেলাম।। জানালার ফোটো ভেদ করে আলো এসে চোখে পরছে।। দিনের আগমন বুঝতে পারলাম।। মাথাটা ঝিম ধরে আছে।। কোনোভাবে উঠে দাঁড়িয়ে কালকের কথাগুলো চিন্তা করতে লাগলাম।। খুব কান্না পাচ্ছে।। ভয়ংকর পরিবেশে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করছি আর এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়া পথ খুজছি।। কিন্তু না কেউ আমার কথায় সাড়া দিল না।।

কেটে গেলো ২ টি দিন নীলয় সন্ধ্যায় এসে আমাকে খুব জোড়াজুড়ি করে একটা করে ইঞ্জেকশন দিয়ে যান।।।। দুপুর পেরিয়ে বিকেল।। খুব খিদে পেয়েছে।। ২ দিন কিছুই খাইনি।। টেবিলে থাকা পঁচা রুটিটা কামড়ে খেতে লাগলাম।। আমার বেবীর জন্য অন্তত আমাকে বেচে থাকতে হবে।।

শুয়ে আছি।। ভাবলাম ঘরটির তল্লাশি নিলে কেমন হয়।। যেই ভাবনা সেই কাজ।। প্রত্যেকটা রুম খুব ভালো করে চেক করতে লাগলাম।। সিড়ি বেয়ে সবচেয়ে বড় রুমটায় ঢুকে আমি চিৎকার করে উঠলাম।। রুমটার সব জায়গায় রক্ত মেখে আছে।।এখানে কোনো মেয়ে থাকতো হয়তো কিন্তু ঝুলন্ত ছবিটার দিকে তাকিয়ে আমার ধারনা বদলে যায়।। কারো বিয়ের পিক মনে হচ্ছে।। আমি মুখ চেপে কান্না করতে করতে ভয়ে আলতো পায়ে পিকটার কাছে গিয়ে অবাক হয়ে যাই।।। নীলয় আর একটা মেয়ের ওয়েডিং পিক।।

রুমটার সব ফার্নিচার খালি ছিল তাই চলেই যাচ্ছিলাম হঠাৎ আমার ড্রেসিং টেবিলটার দিকে নজর যায়।।

টেবিলটার উপরে একটা রক্ত মাখা খবরের কাগজ রাখা।। পিকচারের সেম মেয়েটা সাংবাদিকের রুপে খবরের কাগজে।। আমি নিউটা বেশ মন দিয়ে পড়তে থাকি।।। রিপোর্টার ওয়ালিফা ।। তার আর্টিকেলটা ছিল নারীপাচার ও শিশু পাচার প্রতিবাদে।।

আমার হাত থেকে খবরের কাগজটা পরে যায়।। বুঝতে আর বাকি থাকে না ওয়ালিফা আসলে কে আর তার সাথে কি ঘটেছে।। চোখ বেয়ে পানি পরছে আমার।।

এসব খুজতে খুজতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে টেরও পাইনি।। নীলয় এসে আমাকে না পেয়ে খুব জোরে জোরে ডাকছেন,,,,,

-নীলা কোথায় গিয়েছিস,,,,লুকিয়ে থেকে কোনো লাভ নেই,, দেখ আমাকে রাগাবি না,,,

আমি খবরের কাগজটা হাতে নিয়ে কান্না করতে করতে বলতে লাগলাম,,,,

-ওয়ালিফাকে তুই মেরেছিস না,,,, বিয়ে করেছিলি না ওঁকে আরে তোর বউ ছিল ওঁ,, কেন মারলি বল জানোয়ার বল,,,,
-কি করব আমাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল,,, কতবার বললাম এসব থেকে দূরে থাকো কিন্তু না আমার বিরুদ্ধে কথা বলবেই শালী,,, তাই,,,
-তাই মেরে দিয়েছিস,,
-বেশি কথা বললে তোকেও শেষ করে দিব,,

কথাটা শোনা মাত্রই আমি দৌদৌড়ে সেখান থেকে পালাতে চাইলে নীলয় কাঠ দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে।। আমি মাঠিতে লুটিয়ে পড়ি তারপর সে আমাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ফোনে বলতে থাকেন,,,

-এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে ,,, ওয়ালিফার ব্যাপারটাও জেনে গেছে,,,,,ইয়ার তাড়াতাড়ি ম্যানেজ কর প্লিজ আমার আর ভালো লাগছে না ,,,

চোখ দুটো খুলে নিজেকে হসপিটালে আবিস্কার করলাম,।।।মাথায় ব্যান্ডেজ।।গায়ে পেশেন্টেদের নীল পোশাক।।

আমি উঠে বসে চারদিকটা ভালো করে দেখতে লাগলাম ।।জানি পালাতে পারবো না নীলয়ের লোক আমাকে চোখে চোখে রাখছে।। খুব চেনা চেনা লাগছে হসপিটালটা।। তারপর মনে পরলো।। এই হসপিটালেই তো নীলয়ের দাদীমা এডমিটেড ছিলেন।। ১০১ নং কেভিনে।। দাদীমা নিশ্চয় আমাকে সাহায্য করতে পারবেন।।

সেই আশায় জলদি করে উঠে।। ১০১ নং কেভিন খুজতে লাগলাম।।১০১ নং কেভিন পেয়েও গেলাম।। দরজা খুলতেই আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি।।

রুমটা সম্পুর্ণ খালি।। আমি ঘেমে যাচ্ছি।। একজন নার্সকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে,,,,

-আপনি এখানে কেন।। এই রুমটায় আমরা কোনো পেশেন্ট রাখি না চলুন এখান থেকে,,
-কি বলছেন আমি গত শুক্রবারে এখানে একজন ICU এর পেশেন্টে সাথে দেখা করে গেলাম,, বৃদ্ধ মহিলা।।
-আপনার মাথা ঠিক আছে তো আমি কোনোদিন এই রুমে কোনো রোগীকে দেখিনি আর শুক্রবারে তো আমাদের ডিউটি নেই তাহলে আপনে কিভাবে,,,,দেখুন এখান থেকে চলুন এখানে না কেউ ছিল না কেউ আছে।।

আমার মাথাটা ঘুরে যাচ্ছে।। মেঝেতে বসে কান্না করতে লাগলাম।। অনেকক্ষন পর একটা ছোট্ট ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,

-তুমি কাদছ কেন,,,

আমি কোনো কথা বলছি না,,,,
-আমি তোমাকে আগেও দেখেছি তখন তো হ্যাপি ছিলে এখন কি হল,,,

আমি চোখের পানি মুছে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম,,,

-কোথায় দেখেছ আমাকে,,,
-গত শুক্রবার এখানে,,,
-আচ্ছা বাবু বলতে পারো এখানে যে দাদীমা ছিলেন উনি কোথায় তুমি ওদের দেখেছ,,,
-হ্যা,, ওঁরা তো চলে গেছে,,,
-কখন???
-তুমি চলে যাওয়ার পর দাদীমা আরও অনেক মানুষ হাটতে হাটতে চলে গেছে,,,,, আর আসেনি,,,

আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি।। তাহলে সবকিছু মিথ্যে নাটক ছিল।। আসলে ওঁরা কেউ নীলয়ের পরিবারের সদস্য নয়।। এতটা বোকা আমি।। বিশ্বাস অর্জন করতে নীলয় এমটা করেছে আমার সাথে।।

চলবে,,,,,
#নসীব
#পার্ট_১৩
#আরবি_আরভী

আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি।। তাহলে সবকিছু মিথ্যে নাটক ছিল।। আসলে ওঁরা কেউ নীলয়ের পরিবারের সদস্য নয়।। এতটা বোকা আমি।। বিশ্বাস অর্জন করতে নীলয় এমটা করেছে আমার সাথে।।

যে করেই হোক না কেন আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে।। কথাগুলো ভেবে আর এক সেকেন্ডও অপেক্ষা করলাম পালানোর পথ খুজতে লাগলাম।। হঠাৎ কিছু লোক আমার পথ আটকিয়ে দাড়ালো।। আমি ঘাবড়ে যাই।।পেছন থেকে নীলয় বলতে থাকেন,,,

-এখনো বুঝতে পারোনি তুমি আমার হাত থেকে বাঁচতে পারবে না,,

আমি করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে উনাকে ইশারায় মিনতি করলাম আমাকে যেতে দিতে কিন্তু নিষ্টুর জানোয়ারটা আমাকে জোর করে গাড়িতে তোলে নিল।।রাস্তায় ডক্টর কাকুর সাথে দেখা,,,,,জলদি করে আমার পাশে থাকা দুটো লোক আমার মুখ চেপে ধরে যেন চিৎকার চেচাঁমেচি করতে না পারি।।

-এই দাঁড়াও দাঁড়াও তুমি নীলয় না?

নীলয় আমতা আমতা করতে করতে হ্যা তাড়াতাড়ি বলুন কি বলবেন,,,,

-তোমার স্ত্রীর রিপোর্ট গুলো নিয়ে যেও ঠিক আছে,,
-ওগুলো আপনি রেখে দিন,,
-কিছু বললে বাবা
-না কিছু না,, নিয়ে যাব
-তা তোমার স্ত্রীর শরীর ভালো তো ঔষধগুলো খাচ্ছে তো ঠিকভাবে,,
-হ্যা একদম,, আজকে আসি তাহলে,,
-হ্যা যাও

মাঝ পথে গাড়িটা বন্ধ হয়ে যায়।। নীলয় বাহিরে এসে বিরক্তির ভাব নিয়ে গাড়ি ঠিক করতে লাগে।। আবির তার গাড়ি থেকে নীলয়কে দেখে কার ব্যাক করে।। চোখ থেকে চশমাটা খুলে গাড়ি থেকে নেমে নীলয়কে জিজ্ঞাসা করে বলেন,,,

-নীলয় এনি প্রব্লেম,, কোথায় যাচ্ছ
-হুমম গাড়িটার যে কি হল,,,
-কেমন আছ,, নীলা কেমন আছে,,
-খুব ভালো ইনফেক্ট আমার বউটা তো সেই কখন থেকে কল করেই যাচ্ছে আজ নাকি আমার পছন্দের খাবার রান্না করেছে,,,,,
-বউ?? তোমরা বিয়ে করেছ??
-হ্যা সরি দাওয়াত দিতে পারিনি আসলে হুট করে হয়ে গেল তো তাই,,,
-ওও ন্যাভার মাইন্ড,, ভালো থেকো,,

আমার মুখ বাধা থাকায় আমি খুব জোরে জোরে চিৎকার করছি কিন্তু আবির কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না।।হাত দুটোও বেঁধে রেখেছে নীলয়।।

আবির চলেই যাচ্ছিলেন হঠাৎ আবার পিছ মোড়ে বলতে লাগলেন,,,

-আগামী মাসে তরীর সাথে আমার ওয়েডিং আশা করছি তুমি আর নীলা আসবে,,
-হ্যা হ্যা অবশ্যই যাব,,
-ওকে

কথাটা শোনার পর আমি আস্তে করে নেতিয়ে পড়লাম।। যাক আমি দূরে থাকায় কারো তো ভালো হল।।আমি আর নায়বা গেলাম উনার দুনিয়ায়।।

ভুতুড়ে বাড়িটায় এনে নীলয় আমাকে ইচ্ছেমত মারতে থাকে।। কাল সকালেই নাকি আমাকে এই দেশ থেকে ট্রান্সফার করে দিবেন।।

রাতের অন্ধকারে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে শুয়ে আছি।।কাল সব শেষ হয়ে যাবে ওয়ালিফার চিঠিগুলো পড়তে খুব ইচ্ছে করছে তাই চলে গেলাম ঐ ঘরটায়।। হাতে নিলাম কিছু চিঠি আর মনোযোগ দিয়ে পড়তে লাগলাম।।রাত ১২ টা।। চিঠি পড়তে পড়তে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম।। চিঠিতে ওয়ালিফা তার কলিগকে এই বাড়ির দ্বিতীয় দরজার কথা বলেছিল আর তাতে সব ডিরেকশনও দেয়া আছে।। বিশ্বাস করতে পাছি না আমি এখান থেকে মুক্ত হতে পারি।।

আর দেরী না করে সেই ডিরেকশন অনুযায়ী হাটতে লাগলাম।। অনেক ময়লা জমে আছে রাস্তাগুলোতে।। হাটতে হাটতে আমি ফাইনালি মুক্ত হলাম।। অন্ধকার চারদিক কিন্তু ভয় থেকে বেশি খুশি লাগলছিল।। দৌড়ে মেইন রোড থেকে একটা টেক্সি নিয়ে সোজা পুলিশ ইস্টেশন চলে যাই।।

নীলয়ের সব অপকর্মের বিষয়ে তাদের জানিয়ে দিলে উনারা সাথে সাথে একশন নিয়ে আমার কথামত নীলয়ের ছেলেপুলেগুলোকে ধরে আনেন এবং খুব তাড়াতাড়ি নীলয়কে এরেস্ট করবেন বলে জানান।।

সব ফরমালিটিস শেষ করতে গভীর রাত হয়ে যায়।। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই ।। রাস্তায় হাটতে হাটতে হঠাৎ মাথাটা চকর কাটতে শুরু করলে রেস্তোরাঁর কাছে এক জাটকায় আমি বসে পড়ি।।কিছুক্ষন পর একটি ছেলে বাইক থেকে নেমে ফোনে কথা বলতে বলতে রেস্তোরাঁর ঢুকে যান।।ফিরে আমার সামনে এক প্যাকেট খাবার রেখে দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন ।।আমি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছি।। বেশ লম্বা কাধে কলেজ ব্যাক কালো টিশার্টটের উপর লাল শার্ট পড়ে আছেন।। চেহারা ভালো করে দেখতে পারছিনা।। সে আমার অবস্থা দেখে বলতে থাকে,,,

-আপনি ঠিক আছেন?

আমি কিছু বলতে পারছিনা ।।ছেলেটা আমাকে সাহায্য করবে বলে হাত বাড়াচ্ছে ইতস্তত করে আবার হাতটা সরিয়ে নিচ্ছে।। তারপর পথের একজন মহিলার সাহায্য নিয়ে আমার মুখে পানির ছিটকে দিতে থাকেন,,,।।কিছুটা স্বাভাবিক হলে উনি বলতে থাকেন,,,

-এখন তো কোনো ডক্টর পাবো না,,,,আমার বাড়ি কাছেই আমার বাবা ডক্টর আপনি আমার সাথে চলুন,,,
-পরোক্ষনেই আমার নীলয়ের কথা মনে পড়ে গেল আমি তাকে বাধা দিচ্ছি তখনই আবার অজ্ঞান হয়ে যাই,,

চোখগুলো খুলে ডক্টর কাকুকে দেখতে পাই।। ছেলেটা দরজায় দাড়িয়ে থেকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।

-,,,সিয়াম তোমাকে এখানে এনে খুব ভালো করেছে,,,এখন কেমন আছ,,
-হ্যা ভালো কাকু

আমি উঠে বসতে চাইলে পাশ থেকে একজন মহিলা এসে আমাকে থামিয়ে দেয়,,

-শুয়ে থাক মা,, তোমার বিশ্রামের প্রয়োজন,,
-আমি,,,

ডক্টর কাকু বলেন,,,,,

-সব কথা সকালে হবে তুমি এখন ঘুমাও,,,
-না মানে কাকু,,,
-ঘুমুতে বলেছি,,,
-না আমি,,
-কোনো কথা না,,
-আন্টি আমি কিছু খাব আমার খিদে পেয়েছে,,

মহিলা ডক্টর কাকুর দিকে ভেবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছে।। পরিবেশটা খুব সুন্দর।। কোনো হৈচৈ নেই।।

চলবে,,,,,

(গল্পটা কেমন লাগছে কমেন্ট করে জানাবেন)
#নসীব
#পার্ট_১৪
#আরবি_আরভী

মহিলা ডক্টর কাকুর দিকে ভেবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছে।। পরিবেশটা খুব সুন্দর।। কোনো হৈচৈ নেই।।

সকালে ডক্টর কাকুর কাছে নীলয়ের সব অপরাধের কথা খুলে বললাম।। কিভাবে আমি আবিরের বাড়িতে এসেছি নীলয়ের সাথে পরিচয় সবকিছু। বলতে গিয়ে অনেকবার থেমে গিয়েছি চোখের পানি মুছেছি।।

কাকু বললেন আবিরের মত ছেলেদের নাকি পুলিশে দেয়া উচিত।। পাশে থাকা ভদ্র মহিলা শাড়ির আচলে চোখ মুছে আমাকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন।। আর উনাদের বাড়িতে এসেছি বলে উনি খুব খুশি হয়েছেন।।

ডক্টর কাকু বললেন উনি নাকি আমার বাবার ক্লাসমেট ছিলেন।। বাবা নাকি খুব ভালো স্টুডেন্ট ছিলেন সামান্য বদমেজাজি কিন্তু পরীক্ষার হলে সবাইকে হেল্প করতেন।।কাকু বাবার মৃত্যুর কথা শুনে খুব দুঃখ প্রকাশ করেছেন।। উনি ভাবতেও পারেননি কোনোদিন আমার সাথে উনি দেখা করতে পারবেন ।। যেহেতু আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই তাই উনারা সবাই চাচ্ছেন আমি যেন ওনাদের সাথে এক বাড়িতে থেকে যাই। আমি ইতস্তত করে বললাম,,,,

-তা কি করে হয়,, অযথা আমার জন্য আপনাদের কষ্ট হবে,, আমি চলে যাওয়াটাই ভালো,,

সিয়ামের মা,,

-তুমি তো আমার মেয়ে মীনার মতোই,,, আমাদের কোনো কষ্ট হবে না,, তাছাড়া এ সময় তোমার একটা পরিবারের দরকার,,,, তুমি না করো না,,
-কিন্তু,,,

কাকু আমাকে থামিয়ে বললেন,,,

-কোনো কিন্তু নয়,,,,এই দুনিয়াটা খুব কঠিন মা তুমি একা লড়াই করে পেরে উঠতে পারবে না,,, তোমারও নিশ্চিত ভবিষ্যতের অধিকার আছে তাই আমি ঠিক করেছি তুমি মীনার সাথে কলেজে যাবে ব্যাস,,

উনার এভাবে অনুরোধ করলেন আমি আর উনাদের বারন করতে পারলাম না।।

সিয়াম মীনার কাছে এসে ফিসফিস করে বলতে থাকেন,,,

-মিনি প্যাকেট তোর আবার হিংসা হচ্ছে নাতো দেখ দেখ তোর রাজত্ব কিন্তু বাবা-মা অন্যকারো হাতে তোলে দিচ্ছে।।

মীনা সিয়ামের কান টেনে বলে,,

-তোকে আমার কথা ভাবতে হবে না,,, তোর রাজত্ব গেল বুঝেছিস,, আমি তো একটা বেস্ট ফ্রেন্ড পেয়েছি,,তাই না আপু,, (দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে)

এখন আমিও এ বাড়ির একজন মেম্বার।।মাথার উপর একটা ছাদ খুজে পেয়েছি বটে।। মাঝে মাঝে বাবার কবর যিয়ারত করে আসি।। সিয়াম আমাকে নিয়ে যায়।। ছেলেটা সম্পূর্ণ আলাদা।। একদম অন্যরকম।। খুব স্টাইলিশ কিন্তু সময়মত নামাজ আদায় করেন।। মানুষের বিপদে এগিয়ে আসেন।। মেয়েদের থেকে সবসময় যথারীতি দূরত্ব বজায় রাখেন।।

দিন যেতে লাগল আমরা অন্য শহরে চলে যাই।। সেখানে ডক্টর কাকুর নতুন চেম্বার ।। পরিবারটা মধ্যবিত্ত হলেও খুব সুখী।। আমি হাজার খুশি ওদের সাথে আমার দেখা হয়েছে বলে।।

চা হাতে ছাদে দাড়িয়ে আছি সিয়াম কানের কাছে এসে এক বিকট শব্দ করলে আমি ভয়ে ছাদ থেকে প্রায় পড়েই যাচ্ছিলাম কিন্তু উনি আমার হাতটা ধরে ফেলেন,,,,

– ভয় পাইয়ে দিয়েছেন একদম,,
-আপনি এমন করলেন কেন,,
-সরি সরি,,
-হুমম

আমার দিকে কাঠ গোলাপ এগিয়ে দিয়ে,,,

-আপনার জন্য,,
-Wow,,,আপনি কিভাবে জানলেন আমার কাঠ গোলাপ পছন্দ,,
-আমার ভালো লাগে তাই ভাবলাম আপনারও,,,
-আপনার পছন্দ তাই আমারও পছন্দ হবে,, এমনটা কেন ভাবলেন,,,??

সিয়াম আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে গেল,, পেছন থেকে মীনা এসে আমাকে আলতো ধাক্কা দিয়ে বলে,,,

-ভাইয়া কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার জন্য গাছের পাতাও আনে নাই,,,
-তাহলে তুমি রেখে দাও,,
-না ভাবী তুমিই রাখ,,
-কি??
-অপ্স সরি,, হা হা হা

খুব হ্যাপি ছিলাম।। কিন্তু এ সুখ আমার কপালে বেশি দিন সইল না।। একদিন আন্টি বাজার থেকে এসে বিরক্তির লুক নিয়ে সোফায় বসে বলতে লাগলেন,,,,

-সব আত্মীয় স্বজনদের মুখে শুধু একটাই কথা আমার বাড়িতে মেয়েটি কে? কি তার পরিচয়? কেউ কেউ তো বলছে,,,,,,, আমার ছেলেকে নিয়ে বাজে কথা বলার সাহস পায় কোথায় ,,, উফফ কিছুই ভাবতে পারছি না,,,

মীনার সাথে বসে লুডু খেলছিলাম কিন্তু আন্টির চেঁচামেচিয়ে উঠে আসি,,,

-কি হয়েছে আন্টি,,
-নাহ নাহ কিছু নাতো,,,, দেখ তোর পছন্দের মাছ এনেছি,,, চল আমাকে সাহায্য করবি অনেক কাজ,,,
-হুমম

রাতে শুয়ে আছি।। আন্টির কথাগুলো ভাবছি।।সেই আবারও আমার জন্য একটা সুখী সংসারে আগুন লাগছে।।উনারা ভালো মানুষ তাই আমাকে কিছু বলছেন না।। আচ্ছা আমি এত অপয়া কেন।।এখানে আর থাকতে পারব না।। আমি চলে যাব।। এতেই সমার ভালো।।

সকালে এ বিষয়ে কাকু জানালে উনি খুব রেগে যান,,

-অসম্ভব,,, তুই আমার মেয়ে এই ঘরের একজন,, তোর কাছ থেকে এটা আশা করিনি মা,,
-কিন্তু কাকু আমি এখানে থাকলে আপনারা অনেক প্রব্লেমে পড়ে যাবেন অনেকে অনেক কথা শুনাবে আমি এটা সহ্য করতে পারব না তাই,,,
-মানুষের কাজই কথা বলা,,,, তাই বলে কি আমরা থেমে যাব,,,
-না কাকু কিন্তু,,,

আন্টি এসে বলে উঠেন,,,,

-একটা উপায় আছে মানুষের মুখ বন্ধ রাখার,,,
-কি উপায়
-যদি নীলাকে আমি আমার পুত্র বধূর স্বীকৃতি দেই,,,, নীলার মধ্যে সেইসব গুণ আমি পেয়েছি যা আমার বৌমার হবে বলে আশা করেছিলাম।। নীলা তুই আর না করিস না,,,
-তা বেশ তো আজকেই হয়ে যাক তাহলে কি বলিস নীলা মা,,

পাশ থেকে মীনা বলতে লাগল,,
-কিন্তু বাবা ভাইয়া কি মেনে নিবে,,,না মানে নীলার আপুর প্রেগন্যান্সি,,,,

আন্টি নীলাকে থামিয়ে দিয়ে,,,
-তুই চুপ কর আমি সিয়ামের চোখে নীলার জন্য গভীর অনুভূতি দেখেছি,, কয়েক মাস পরে নাতি/ নাত্নীর মুখ দেখতে পারব এর থেকে খুশির আর কিছু হয় নাকি,,,কি বল তুমি,,,
-হ্যা গো,,, তাই ভালো হবে,,

সবকিছুই সপ্নের মত লাগছে।। আমি নিচের দুকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলতে লাগলে আন্টি এসে আমার সামনে হাত জোড় করে করুন কন্ঠে বলতে লাগলেন,,

-দেখ সবাই কত খুশি প্লিজ রাজি হয়ে যা,,,

চলবে,,,,,,,
#নসীব
#পার্ট_১৫ #শেষ_পার্ট
#আরবি_আরভী

-দেখ সবাই কত খুশি প্লিজ রাজি হয়ে যা,,,

মনের মধ্যে ভয় কাজ করতে লাগল।।সবাই আবার আমাকে বোকা বানাচ্ছেন নাতো।।নীলয়ের পর কাউকে বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হয় আমার।। সিয়াম নিসন্দেহে ভালো ছেলে তাই বলে,,,

-অন্তত বাচ্ছাটার কথা ভেবে হ্যা বলে দে ,,,,এতেই সবার ভালো হবে দেখিস,,

চিন্তায় পড়ে গেছি।। জানি না কি হবে কিন্তু এই মানুষগুলোকে আমি কিছুতেই কষ্ট দিতে পারব না।।

৮ বছর পেরিয়ে গেল।। সাথে জীবন ধারনটাও অনেকটা বদলে গেছে ।আমার মেয়েই আমার সব।।টুশিকে ছাড়া আমরা কিছুই ভাবতে পারি না ওঁ আমাদের জীবন ।। বলে রাখা ভালো,,,, আমার ননদিনী মীনা তার বরের সাথে অস্ট্রেলিয়াতে সেটেল।। আমার শশুড় বাবা আর শাশুড়ি মায়ের মৃত্যুর পর সিয়াম আর আমি নতুন শহরে চলে আসি।।সেখানেই শুরু হয় আমার আর সিয়ামের ছোট সংসার।। বর্তমানে সিয়াম একজন সাকসেসফুল বিজনেসম্যান।। টাকা পয়সা ভালোবাসার কোনো কিছুর কমতি নেই আমাদের।।

সিয়ামের রাজকুমারী টুশি।।বয়স ৮।।অফিস থেকে ফেরার সময় সিয়ামের টুশির জন্য কিছু না কিছু আনতেই হয় তা না হলে সিয়ামকে কানে ধরে বাহিরে দাড়িয়ে রাখে সে।। খুব হাসি পায় বাবা- মেয়ের কান্ড দেখে।।ভালোবাসা কি তা উনার সাথে দেখা না হলে বুঝতেই পারতাম না।। প্রতি রাতে আমার দিকে তাকিয়ে “ভালোবাসি” না বললে নাকি উনার ঘুম হয় না।। ছুটির দিনে তিনজন একসাথে ঘুরতে যাওয়া,খেলাধুলা করা সবকিছু মিলে খুব সুখে আছি আমরা।।

এমনই একদিন টুশিকে স্কুল থেকে নিয়ে আসছি।। টুশি তার বাপ্পীর জন্য একটা কার্ড বানিয়েছে আজ নাকি বাবা দিবস তাই সে এটা দিয়ে তার বাপ্পীকে উইস করবে।। দুজন গাড়িতে উঠবো ঠিক সেই মুহূর্তে একজন লোক পেছন থেকে আমার নাম ধরে ডেকে উঠে,,,,

-নীলা,,,

আমি পেছনের দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিৎ ভয় পেলাম।। লম্বা চুল গাঢ় পর্যন্ত।। দাড়ির বাড়ে চেহারা নির্ণয় করা যাচ্ছে না।। শরীর চাদর দিয়ে ঢাকা।। সে ইশারায় কাছে যেতে বলে,,আমি আস্তে করে বলে উঠলাম,,,

– কে? সরি চিনতে পারছি না,,

সে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, ভাবলাম ভিখারী হয়তো,,

-সাহায্য প্রয়োজন?? কিছু খাবেন,,??
-আমার সন্তান কোথায়,, তুমি অপারেশন করনি তাই না,,

আমার উপর যেন আকাশটা ভেঙে পরলো বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠলো।।চোখদুটো খুব চেনা।। আমি কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বললাম,,,

-আ,,আ,,আবির,,

আবির আমার দিকে তাকিয়ে রীতিমত কাদছে।। আমি তাড়াতাড়ি করে টুশিকে নিয়ে দৌড়ে চলে এলাম।। পেছন থেকে আবির চেঁচিয়ে বারেবারে একটা কথায় বলল,,
-আমার সাথে শুধু একবার কথা বল,,প্লিজ শুধু একবার,,

গাড়িতে বসে টুশি আমাকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল,,
-পাগলটা কে মামনি??
-কেউ না বাবা,, (মাথায় হাত বুলিয়ে)

বাসায় এসে কাঁন্না করতে লাগলাম।। আমার সাজানো সংসার বুঝি এবার ধ্বংস হয়ে যাবে খুব ভয় লাগছিল।।আবির কি আমার মেয়েকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবে?? উনি সব করতে পারেন? আমি এখন কি করি।।

রাতে অন্যমনস্ক হয়ে থাকলে সিয়াম আমাকে জিজ্ঞাসা করতে থাকেন আমি কিছু না বলে চুপ করে থাকি ।।

কয়েকদিন পর আবির তখন অফিসে শুয়ে আছি হঠাৎ ছকিনা এসে বলে আমার সাথে নাকি একজন দেখা করতে এসেছে,,, নিচে এসে দেখি আবির।।মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল।। সোফায় বসে আছেন।। আমাকে দেখে উঠে দাড়ালেন আমি দৌড়ে গিয়ে উনাকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য দরজাটা দেখিয়ে দিলাম,,,,

-নীলা আমার সাথে একবার কথা বল প্লিজ আমি একবার আমার সন্তানকে দেখব,, আর কিচ্ছু না,,
– আমি আপনাকে চিনি না বেরিয়ে যান,, আমাকে পুলিশ ডাকতে বাধ্য করবেন না,,,

গেইটের দারোয়ান এসে আবিরকে বের করে দিল।।আমি স্তব্ধ হয়ে পরেছি।।এত বছর পরে কেন ফিরেছেন উনি কি চান আমার কাছে।।

বাহিরে বের হতে পারছি না উনার জন্য যেখানেই দেখা হয় উনার একটি কথা শোনার অনুরোধ রয়েই যায়।।রাতে ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ ফোনে কল আসে।। আমি ঘুম ঘুম কন্ঠে,

-হ্যালো,,
-নীলা,,
-প্লিজ দয়া করেন আমাকে আর কল দিবেন না,, আমি আপনাকে চিনি না,,
-নীলা তুমি কি ভয় পাচ্ছ আমি যদি তোমার সন্তানকে কেড়ে নেই,,, বিশ্বাস কর আমি এমন কিছুই করবনা শুধু নয়ন ভরে একবার ওঁকে দেখব প্লিজ আগামীকাল দেখা কর জাস্ট একবার প্লিজ প্লিজ আমি কোনো ক্ষতি করব না তোমাদের প্লিজ একবার তারপর আর কখনো তোমাকে বিরক্ত করব না প্রমিস,,
-ঠিক আছে আগামীকা দেখা করব কিন্তু এটাই লাস্ট বলে দিলাম,,,
-অনেক ধন্যবাদ তোমাকে অনেক,,
-টুট টুট,,

টুশিকে স্কুল থেকে নিয়ে এসে আবিরের সাথে দেখা করতে গেলাম,,,উনি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন।।টুশি আইস্ক্রিম খেতে খেতে চেয়ারে গিয়ে বসে পড়লো।। হাতে মেনু কার্ড নিয়ে অর্ডার করে আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখি আবির নয়ন ভরা জল নিয়ে টুশির দিকে তাকিয়ে আছেন,,

-চোখ দুটো আম্মুর মত, ঠোঁটের নিচের তিলটা তোমার আর ঠোঁট দুটো,,,,,

আমি বিরক্তির ভাব নিয়ে চোখ পাকিয়ে বলতে লাগলাম,,,

-ঠোঁট দুটো আপনার মত তো ওঁ আপনার মেয়ে এটাই বলতে চাচ্ছেন,,আমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবেন ওকে,,,

আবির আমার কোনো কথাই শুনছেন না টুশির কাছে গিয়ে ওঁর হাতে অনেকগুলো চকলেট দিয়ে পাগলের মত চুমু খেতে থাকেন,,,

– শুধু জন্ম দিলেই পিতা হয় না আবির,, আপনি যে দায়িত্ব কর্তব্য গুলো এড়িয়ে গিয়েছিলেন সিয়াম তা পূর্ণ করেছেন,,, ভেবেছেন সবকিছু ভুলে গেছি।। না।। আপনি আমার বাবার খুনী।।তাই আমাদের আর বিরক্ত না করে আপনার পরিবার নিয়ে আপনি সুখে থাকেন আমাদেরো ছেড়ে দিন এটাই চাই,,,
– আমার তো কেউ নেই,,হয়তো কদিন পরে আমিও থাকব না
-কেন তরী আপু খালামনি??
-বিয়ের দিন রাতে তরী অন্য কারো সাথে পালিয়ে যায়,,,,খুব ভালোবাসতাম তাকে,, এই ঘটনার পর থেকে কোনো মেয়েকে আর বিশ্বাস করে উঠতে পারিনি,,,
-খালামনি,,(আগ্রহ নিয়ে)
-যখন তুমি একদম হারিয়ে গেলে তখন নিপা আম্মুকে তোমার প্রেগন্যান্সির ব্যাপারে জানায়,, তোমাকে করা জুলুমগুলোর কথা মনে করে হঠাৎ আম্মুর হার্ট এটাক হয় তারপর পরকালে চলে যান,, সবসময় বলতো তোমাকে দেখতে চায় তোমার কাছে ক্ষমা চাইবে বলে,, কিন্তু তোমাকে খুজে পাইনি,,,
-আপনার এই অবস্থা ?আর এখানে কিভাবে এলেন??
-আম্মুর চলে যাওয়ার পর রোবট হয়ে গিয়েছিলাম দিন-রাত কাজে ব্যাস্ত থাকতাম কিন্তু আমার পিঠে চুরি দিয়ে আমার সেক্রেটারি আমাকে ধোকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করে ফেলে,,,হিসাব না পাওয়ায় অন্যান্য কম্পানি শেয়ারিং বন্ধ করে দেয়,, ফলে কম্পানি অচল হয়ে পড়ে,,, ব্যাংকের loan পরিশোধ করতে না পারায় একপর্যায়ে আমি সবকিছু হারিয়ে ফেলি,,,, তারপর ভীষণভাবে ডিপ্রেশনে চলে যাই,,, আর এখন তো,,সবকিছুই আমার কর্মের ফল।। আমি অন্য শহরে থাকি খুব কষ্ট করে তোমার ঠিকানাটা জোগাড় করেছি তোমার কাছে একটিবার ক্ষমা চাইব বলে।।জানি কখনো পারব না তবুও বলব আমাকে ক্ষমা কর,,তুমি ক্ষমা না করলে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না,,, ক্ষমা কর,,(হাত জোর করে চোখের পানি ফেলে,,

আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেছি।। মনের অজান্তেই চোখ বেয়ে পানি পড়ছে,,

-আর এখন তো কি,,?? বলেন
-আমার ভেতর এমন এক রোগ বাসা বেঁধেছে যা থেকে কখনোই মুক্তি পাবো না,, ডক্টর মিথ্যা আশা দিচ্ছে আমি তো জানি আমার আর বেশি দিন নেই,,,

তার কথাগুলো শুনে আমি যেন পাথর হয়ে গেছি।। ওয়েটার বিল দিয়ে গেলে আবির এক নজর মানিব্যাগটার দিকে তাকিয়ে আমার কাছ থেকে চোখ লুকাতে শুরু করল,,, আমি কিছু না দেখার ভান করে বিলটা প্যায় করে দেই।। তারপর উনাকে ১ লাখ টাকার চেক দিলাম।। উনি কিছুতেই নিতে চাচ্ছেন না খুব জোর করেই দিলাম।। উনি মৃদু হেসে চলে যাচ্ছেন,,,মনের মধ্যে অনেকগুলো কথা নাড়া দিতে লাগল।।এই সেই ব্যক্তি যে একসময় আমার পুরো দুনিয়াটা উলোটপালোট করে দিয়েছিলেন।। যার জন্য আমার বাবাকে হারিয়েছি।।সমাজ আমাকে অন্য নামে ডেকেছে।। মানুষ আমার দিকে বদনজরে তাকিয়েছে।।উনি চাইলেই আমাকে মেনে নিতে পারতেন কিন্তু উনি তা করেননি।। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা একজন আছেন তিনি সব দেখেন।। কাউকে কষ্ট দিয়ে কেউ কোনোদিন সুখী হতে পারে না,, আল্লাহ বিচার করেছেন,, আমিও বলব আপনাকে ক্ষমা করেছি আবির আপনি মুক্ত আপনি মুক্ত আবির,,,

হঠাৎ সিয়ামের কল,,,
-কি করছ?
-কিছু না,, (চোখের পানি মুছে)
-ভালোবাসি,,
– অনেক বেশি ভালোবাসি

(উপরের দিকে থুথু ছুড়লে সেই থুথু নিজের উপরে এসে পরে।। সময় পরিবর্তনশীল।।জীবনে চলার পথে আবিরের মত একজন আসে যে জীবনটা একদম ধ্বংস করে দেয় সেই সুযোগে মুখোশ পড়া কয়েকটা মানুষ পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ করে যে ওঁরা আসলে আমাদের বন্ধু যেমনটা করেছে নীলয় আসলে তা নয় ওরাও হতে পারে আরও বেশি ভয়ংকর তাই বলে যে ভালো মানুষ নেই তা না আমরা খারাপের সাথে পরিচয়ের ভীড়ে কিছু ভালো মানুষকেও বিশ্বাস করতে ভয় পাই যেমন সিয়াম)

♪♪♪♪♪♪সমাপ্ত ♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪

(আমি #Arobi_ArVy #নসীব গল্পটার লেখিকা,, চেষ্টা করেছি যেন গল্পটা মনের মাধুর্যতা দিয়ে লিখে উপহার দিতে পারি,, গল্পটার মধ্যে আমি সবাইকে একটা মেসেজ দিতে চেয়েছি,,,,,, যারা গল্পটা নিয়মিত পড়েছেন তাদের জানাই অনেক অনেক ভালোবাসা,, আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া আমি লিখার উৎসাহ পেতাম না,,,,,,,,,, সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ,,,, ধন্যবাদ ☺)

পর্ব ৬-১০ #নসীব #পার্ট_৬ #আরবি_আরভী

0

পর্ব ৬-১০
#নসীব
#পার্ট_৬
#আরবি_আরভী

উনি আমার হাতটা ধরে ঘুরিয়ে উমার বুকের সাথে মিশিয় এক হাত আমার হাতে আর অন্য হাত কোমরে রেখে গানের সাথে তাল মিলাতে থাকেন,,,

পরেরদিন আবিরের রুম পরিষ্কার করতে এলে উনি আমাকে তাচ্ছিল্যের সাথে বলতে থাকেন,,,

-রাতে ইচ্ছে করে আমার উপর এসে পড়েছিলে যেন কোনো একটা নাটক শুরু করতে পারো তাই না,,
-আপনার যা ইচ্ছে ভাবোন,,,
-তোমার বাবার কি সামান্যতম লজ্জাটুকু নেই কিভাবে পারলেন মেয়েকে এখানে পাঠিয়ে দিতে আত্মামর্যাদাহীন মানুষ,,, তোমার বাবা কি আমার উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছেন ,, বুড়ো বাস্টার্ড টা আমার কিছুই করতে পারবে না বলে দিও উনাকে,,
-বাবা মারা গেছে আবির,,, আমার জন্য নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন,,,প্লিজ উনাকে কিছু বলবেন না আমি পাপী যা বলার আমাকে বলেন,,

আবির নিস্তব্ধ হয়ে আমার কথাগুলো শুনছেন।। দুঃখ পেয়েছেন নাকি খুশি হয়েছেন তা বোঝা বড় ভাড়।।পৃথিবীতে উনি একমাত্র ব্যক্তি যাকে হয়তো আমি কোনোদিন ভালোবাসতে পারবো না।।আমি ঘৃণা করে উনাকে।।

গভীর রাতে বারান্দায় এসে দাড়িয়ে আছি।। বারান্দা থেকে আবিরের রুমটা স্পষ্ট দেখা যায়।।একটু পরেই আবির ফোনে কথা বলতে বলতে জানালার দ্বারে এসে আমাকে দেখে ফোনটা সরিয়ে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।। যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানেন না।।আমার প্রতি আবার উনার মায়া-টায়া হলো নাকি।। ধ্যাৎ।। কি যে ভাবছি।। আমি বিরক্তিকর লুক নিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম।।

পরেরদিন আমি আর নিপা বাসার খরচের জন্য বাজারে গেলে ফেরার সময় কোনো রিকশা টেক্সী কিছুই পাচ্ছি না।। বাধ্য হয়ে দুজন হাটা শুরু করলাম।।শুনশান রাস্তায় অনেকটা পথ চলে এসেছি।।পা ব্যাথায় আর হাটতে পারছি না।। হঠাৎ একটা প্রাইভেটকার দেখে নিপা প্রায় মাঝ রাস্তায় গিয়ে লিভ নেয়ার জন্য গাড়িটাকে সিগন্যাল দিয়ে থামায়,,, মেয়েটা পারেও বটে আর একটু হলেই জানে মরতো,,,।।

-হ্যালো হায় ভাইয়া আমাদের একটু সাহায্য করেন দেখেন না আমার ম্যাডাম অনেক অসুস্থ,,,, (আমার দিকে ইশারা করে )

আমি দু হাতে খরচের ব্যাগ নিয়ে ভেবাচেকা খেয়ে দাড়িয়ে আছি।। এরই মধ্যে ছেলেটা আমার দিকে এক নজর তাকিয়ে গাড়িতে উঠার পারমিশন দিয়ে দেয়,,,

-কি হয়েছে আপনার ম্যাডামের,,,
-কিচ্ছু হয়নি,,
-ওয়াট,,
-ও হ্যা প্রচন্ড মাথা ব্যাথা,,,
-আচ্ছা আপনার ম্যাডামের নাম কি,,
-এত কিছু জেনে আপনার লাভ কি,,,, এই যে এই বড় গেইটার সামনে রাখেন,,

তারাহুরা করে দুজন গাড়ি থেকে নেমে চলেই আসছিলাম লোকটা পেছন থেকে ডেকে বলল,,

-একটা থ্যাংকস তো দিতে পারতেন নাকি,,,

নিপা মুখ ঘুরিয়ে,,
-থ্যাংকু আসেন বাড়ি এসে চা কফি খেয়ে যান মন চাইলে একটু শুয়েও যেতে পারেন,, যত্তসব।। মেয়ে দেখলেই শুধু কথা বলতে ইচ্ছা করে তাই না।। লোচ্চা ছেলে কোথাকার,,

ছেলেটা নিপার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।। শতহলেও উনি আমাদের সাহায্য করেছেন।। তাই আমি গাড়ির জানালার কাছে গিয়ে বললাম,,,

-থ্যাংকস,,

সুযোগ বুজে ছেলেটা তার হাতটা বারিয়ে বলতে লাগল,,
-মাই সেল্ফ নীলয় এড ইউ,,
-নীলা,, (তার সাথে হ্যান্ডসিপ করে)
-এ বাড়িতে থাকেন,,
-জ্বি

বাসায় ফিরে দেখি আবির অফিস থেকে চলে এসেছেন।।ফ্রেশ হয়ে গ্রিন অ্যাপেল খেতে খেতে সিড়ি বেয়ে নিচে নামছেন ।। আমি উনাকে পাত্তা না দিয়ে খরচের ব্যাগগুলো গোছাতে লাগলাম।।আবির আমার কাছে এসে পাশ দিয়ে হেটে যেতে যেতে নিচু স্বরে বলতে থাকেন,,,

-আজকেই লাস্ট আর কোনোদিন যদি দেখেছি অন্য ছেলের হাত ধরেছ তাহলে হাতগুলো কেটে ফেলব বুঝেছ,,,,,নিপা এক কাপ ব্লেক কফি,,

চলবে,,,
#নসীব
#পার্ট_৭
#আরবি_আরভী

-আজকেই লাস্ট আর কোনোদিন যদি দেখেছি অন্য ছেলের হাত ধরেছ তাহলে হাতগুলো কেটে ফেলব বুঝেছ,,,,,নিপা এক কাপ ব্লেক কফি,,,,

আমি কফি হাতে উনার রুমে ডুকে দেখি রুমটা একদম বস্তি হয়ে আছে।। আলমারির সব কাপড় বিছানায় মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।। আর মহাশয় আয়নার দিকে তাকিয়ে একটার পর একটা শার্ট চেইঞ্জ করে নিজেকে পার্ফেক্ট করতে ব্যাস্ত ।। আমি বিরক্তিকর লুক নিয়ে কফিটা টেবিলে রাখতেই উনি আমাকে দেখে আঁতকে উঠে জলদি করে হাতে থাকা শার্টটা দিয়ে নিজের খালি শরীরটা কভের করার চেষ্টা করছেন আর রেগে আমাকে বলছেন,,,

-কারো রুমে প্রবেশ করার আগে যে নক করতে হয় জানো না,, বাবা সব শিক্ষা দিয়েছে শুধু এটা বলতে কি ভুলে গেছেন ,,,
-রুমের কি হাল করেছেন আপনি,, (চারদিকে তাকিয়ে)
-সন্ধ্যায় তরীর সাথে মিট করব কিন্তু নিজেকে রেডি করতে পারছি না,,
-তাই বলে রুমটাকে বস্তি করে দিবেন,,,
-তাতে তোমার কি আমার রুম আমি যা ইচ্ছে তাই করব,, bytheway হুট করে একটা হ্যান্ডসাম ছেলের রুমে আসতে তোমার লজ্জা করল না,,,,
-লজ্জা??? কিসের লজ্জা জান?? আপনার আর আমার মাঝে এই লজ্জা শব্দটা একদম বেমানান তাই না বলুন ,, (উনার কাছে গিয়ে আলতো করে উনার কপালে স্পর্শ করে)
-শেটআপ এন্ড গেট আউট,,(রেগে)

উনার হাতে একটা নীল পাঞ্জাবি ধরিয়ে,,
-দয়া করে আর রুমটা এলোমেলো না করে এটা ট্রায় করুন ঠিক আছে,,,রুম গোছাতে কষ্ট হয়,,

গভীর রাতে সবকাজ শেষ করে ঘুমুতে যাব তখনই আবির এসে আমার পথ আটকিয়ে বলে,,,
-কফি খাব,,
-এত রাতে ,,
-তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো আমি বারান্দায় আছি,,,

কি আর করার বনিকের আদেশ।। খুব বিরক্ত লাগছিল।।যদি পারতাম লোকটাকে গুলি করে মারতাম।।

যাইহোক মন মরা হয়ে মগটা উনার হাতে ধরিয়ে চলেই আসছিল হঠাৎ পেছন থেকে উনি বলে উঠলেন,,,

-থ্যাংকস
-লাগবে না,,, এটা আমার কাজ স্যার,,
-কফির জন্য না,,
-তাহলে,,
-তরী পাঞ্জাবি খুব পছন্দ করে আর নীল নাকি ওর ফেবারিট কালার,,,

২দিন পর আবিরে বোন সাফাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসে।। লোকমুখে শুনেছি ছেলের পরিবার নাকি অনেক বড়লোক।। তাছাড়াও দেশে -বিদেশে ছেলের বিজনেস আছে।। একদম আবিরদের সমতুল্য।। খালামনি তো বলেই ফেললেন উনার আদরের সাফার জন্য এমনই ছেলের তালাশে ছিলেন এতদিন ।। শুভক্ষনে আবির বাড়ি নেই বলে খালামনি খুব রাগারাগিও করছেন।।

যা শুনেছি তার থেকে বেশি দেখছি।।ছেলের পরিবার খুবই ভদ্র।।ড্রইংরুমে সবাই আলাপ করছেন।। সাফাকেও খুব সুন্দর দেখাছে।।১০০% ছেলে পক্ষের পছন্দ হবে ।। কিন্তু কিছুতেই পাত্রকে দেখতে পারছি না।। কথার ফাকে খালামনি ইশারায় আরও নাস্তা দিতে বললে নিপা নাস্তা নিয়ে রুমে উকি দিয়ে আবার ফিরে আসে।।

-কি হলো তুমি ফিরে এলে কেন,,তাড়াতাড়ি যাও খালামনি রাগ করবে কিন্তু,,
-আমার হাত পা কাঁপছে,, আমি পারবো না আপনি নিয়ে যান,,,
-কেন কি হয়েছে,,
-ঐ দিনের ছেলেটা,,উনিই হয়তো পাত্র,,।। আল্লাহ না জেনে উনাকে কত বকাঝকা করেছি,, বড় ম্যাম সাহেব এবার আমার চাকরিটা নট করেই ছাড়বেন,, (কান্না করতে করতে)
-কোন ছেলে,, আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না
-কি যেন নাম হ্যা মনে পড়েছে নীলয়,,,ম্যাডাম আমাকে বাচান,,এবার আমি শেষ,, (কেদে)
-আচ্ছা আচ্ছা আমি নিয়ে যাচ্ছি আমাকে দাও,,

সুন্দর করে গোমটা দিয়ে ড্রইং রুমে যেতেই একজন ভদ্র মহিলা আমাকে দেখে হেসে বলতে লাগলেন,,,

-ঐতো নীলা মা এসেছে,, আহ এগুলোর কি দরকার ছিল,, তুমি নীলয়ের পাশে গিয়ে বসো মা,,,

পরিবেশটা স্তব্ধ হয়ে গেছে।। যদিও আমাকে দেখে নীলয় মুচকি হেসেছে কিন্তু তাদের আচরণে আমার মতো খালামনিসহ সবাই ভেবাচেকা খেয়ে আছে।। আমি ভদ্র মহিলার কথা রাখতে যেইনা উনার পাশে বসেছি অম্নি উনি উঠিয়ে নীলয়ের কাছে ধপাস করে বসিয়ে আবার শুরু করলেন,,,

-বাহ দুজনকে কি সুন্দর মানিয়েছে,,আপনার মেয়ে সত্যি অনেক লক্ষী।। যত দ্রুত সম্ভব আমি দুজনের বিয়ে দিয়ে দিতে চাই,,

বিয়ের কথা শুনে আমি দাড়িয়ে গেলাম।। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো।। সাথে সাথে খালামনি ভীষণ রেখে নাক মুখ লাল করে বলছেন,,,

-আপনারা মাথা ঠিক আছে তো কি বলছেন এসব,,,এই কলঙ্কিনী দূর হও এখান থেকে বারন করেছিলাম না আমাদের পারিবারিক বিষয়ে নাক গলাতে ,,(আমাকে উদ্দেশ্য করে)

ভদ্র মহিলা আমার দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকলে আমি বলতে থাকি,,,

-আপনার ভুল হচ্ছে আন্টি আমি এই বাড়ির চাকর,, আপনি যাকে ভাবছেন আমি সে নই,,,

কথাটা বলে চলে যাচ্ছি হঠাৎ নীলয় আমার হাত দুটো ধরে হাটু গেড়ে বসে বলতে থাকেন,,,
-Will you mary me,,,,তোমার অতীত বর্তমান আমি কিছুই জানতে চাই না,, আমি শুধু তোমার ভবিষ্যত হতে চাই,,

চলবে

(গল্পটা কেমন লাগছে জানাতে ভুলবেন না,,) ☺
#নসীব
#পার্ট_৮
#Arobi_ArVy

কথাটা বলে চলে যাচ্ছি হঠাৎ নীলয় আমার হাত দুটো ধরে হাটু গেড়ে বসে বলতে থাকেন,,,
-Will you mary me,,,,তোমার অতীত বর্তমান আমি কিছুই জানতে চাই না,, আমি শুধু তোমার ভবিষ্যত হতে চাই,,

হাতগুলো ছাড়িয়ে চোখের পানি ফেলে বলতে লাগলাম,,,

-i am sorry আমার কোনো ভবিষ্যত নেই,,, তাছাড়া আমার ব্যাপারে আপনার কোনো ধারণাই নেই,,,,,
-আমি,,,,,

খালামনি নীলয়কে থামিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতে বলে।।নীলয় বারেবারে আমাকে কনভেস করার চেষ্টা করছেন।।কিছু না বলে চুপ করে দাড়িয়ে আছি ।।খালামনি সবটা ম্যানেজ করে নীলয়ের পরিবারকে যতটুকু সম্ভব অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।। যাওয়া সময় নীলয়ও বলে যান উনি আমাকে নিজের করেই ছাড়বেন এটা উনার চ্যালেঞ্জ ।।

খালামনি আমার উপর উনার সব রাগ ঝাড়েন।। উনার সন্দেহ হয় আমিই নাকি নীলয়কে ফুসলিয়ে -ফাসলিয় এমনটা করতে বলেছি সবকিছুই আমার প্ল্যান ছিল।।খালামনিকে কিছুতেই বোঝাতে পারছি না যে আমি নীলয়কে চিনি না পর্যন্ত।।

যাইহোক শাস্তি স্বরুপ খালামনি আমাকে অন্ধকার স্টোর রুমে আটকে রাখে।। আমি অন্ধকার ভীষণ ভয় পাই।। মনে হচ্ছে সাদা পোশাক পড়ে কেউ একজন আমার দিকে এগিয়ে আসছে ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে আমার রীতিমতো ঘামতে শুরু করেছি।। বারেবার সাহায্যের জন্য সবার কাছে অনুরোধ করছি কিন্তু কেউ দরজার লক খোলে দেয়ার সাহস পাচ্ছে না যেহেতু এটা খালামনির আদেশ।।

আবির অফিস থেকে ফিরে আমালে বলতে থাকেন,,,

-নীলা কালকের ফাইলটা নিয়ে আমার রুমে আসো,,,

গভীর রাত নিস্তব্ধ পরিবেশ।। নিজেকে খুব একা লাগছে বাবা মায়ের কথা মনে পড়ে খুব কান্না পাচ্ছে।। আজ যদি তারা বেচে থাকতেন ।।দরজার পাশে বসে বসে কথাগুলো ভেবে কাদতে থাকি।। হঠাৎ একজন আমার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে দরজায় নক করে শিউর হচ্ছিলেন রুমে কেউ আছে কি না কেননা রুমটায় মানুষ থাকার জন্য একদম অনুপযোগী।।

কারো সাড়া পেয়ে আমার মধ্যে যেন আস্থা ফিরে এলো আকুতি মিনতি করে দরজাটা খুলে দিতে বললাম।। লোকটাও আর দেরী করল না দরজাটা খোলে দিয়ে আমাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,,

-তুমি?? ওয়েট ওয়েট তুমি না আজকে নিপার বাড়িতে থাকবে বলেছিলা তাহলে গভীর রাতে এখানে কি করছ,,,

ভয়টা এত বেশি জমা হয়ে ছিল যে আবিরকে দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না উনাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলাম।। কথা বলতে পারছি না ঠোঁট দুটো কাপছে।।

-কি সমস্যা তোমার,,,
-খালামনি আমাকে আটকে,,,
-ও আচ্ছা তাহলে আম্মু এমনটা করেছে নিশ্চয়ই তুমি বেয়াদবী করেছ তাই না,,

আমার অবস্থা দেখে উনি আর বেশি কিছু বললেন না।। খালামনি আমার থাকার রুমটাও লক করে রেখেছেন।।

-ও নো আম্মু তো তোমার রুম লক করে রেখেছে,
-কোথায় থাকব আমি,, আপনে একটু রিকুয়েস্ট করেন খালামনিকে প্লিজ,,,(কাদতে কাদতে)
-আর ইউ মেড এত রাতে আম্মুকে ডাকব ??
-তাহলে কি হবে,,
-হুমমম একটা উপায় আছে,, যদি তুমি চাও,,
-কি উপায়,
-আমার রুমে আমার সাথে থাকতে পারো, ,,
-অসম্ভব কল্পনাও করবেন না কোনোদিন,,,
-ওকে কল্পনা করব না বাস্তবে করব,,,এখন হেপ্পি তো,,
-চুপ,,,

শেষমেশ সিদ্ধান্ত হল আমি উনার রুমে থাকব কিন্তু আমি মেঝেতে আর উনি বিছানায়।।।

সকালে খালামনির চেচাঁমেচিতে ঘুম ভাঙলে চোখ খোলে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করি আর আবির সোফায়।।
খুব নিষ্পাপ মায়াবী একটা চেহারা।।আমার সন্তানের পিতা।। কিন্তু এই মানুষটার জন্যই আমার বাবা আজ কবরে।। আমি চাইলেও উনার মায়ায় নিজেকে জড়াতে পারবো না।। উনি একজন খুনী।।

নিপা এসে আবিরকে ডাকছে খালামনি নাকি ভীষণ রেগে আছেন আমাকে স্টোর রুমে না পেয়ে।।

-স্যার তাড়াতাড়ি আসুন নীলা ম্যাম কোথায় যেন চলে গেছে,,, স্যার

আবির আমার হাতটা ধরে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে দেখে খালামনি চোখগুলো বড় বড় করে আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন,,,,

-এ মেয়ে তোর সাথে কেন আবির,,
-কেন কোথায় থাকার কথা ছিল আম্মু ঐ অন্ধকার অপরিষ্কার রুমটাতে,,,
-মানে,,,
-আম্মু ওঁ একজন মানুষ,,
-লক তুই খোলে দিয়েছিস,,বিশ্বাস করতে পারছি না আমার ছেলে এই মেয়ের সাইড নিয়ে কথা বলছে,,, ,আমার ছেলে,,
-হ্যা আমি করেছি,,, শুধু ওঁ না ওর জায়গায় নিপা থাকলে আমি এটাই করতাম,,,,

খালামনির বান্ধবী সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে থাকেন,,,

-নীলার রুম তো লক,, তাহলে নীলা সাড়া রাত কোথায় ছিল ,,,,

আবির নির্দিধায় বলে উঠেন,,,,
-কেন আমার রুমে আন্টি,,
-ছ্বি ছ্বি ছ্বি আবির বিয়ের আগেই এসব,,,

-আবির,,,,,,(তরী আবিরের দিকে নিথরভাবে তাকিয়ে)

তরীকে দেখার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।। খালামনি রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।। উনার সোনার ডিম দেয়া রাজহাঁস এক্ষুনি হাত ছাড়া হয়ে যাবে এটা কি মেনে নেয়া যায়।।

চলবে,,,,
#নসীব
#পার্ট_৯
#আরবি_আরভী

তরীকে দেখার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।। খালামনি রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।। উনার সোনার ডিম দেয়া রাজহাঁস এক্ষুনি হাত ছাড়া হয়ে যাবে এটা কি মেনে নেয়া যায়।।

আবির দৌড়ে তরীর কাছে গিয়ে বলতে থাকেন,,

-তুমি যা ভাবছ তা না,, ট্রাস্টমি আম্মু রাগ করবে বলে এমনটা করেছি,, আমরা একসাথে ছিলাম কিন্তু নীলা বিছানায় আর আমি সোফায়,,,

তরী আবিরকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ,,
-আই ট্রাস্ট ইউ আবির,,আমি জানি তুমি আমাকে কখনো ধোঁকা দিবে না,,,
-হুমম

আমি কিচেনে গিয়ে কাজ করতে থাকলে নিপা এসে মুচকি হেসে আমাকে আলতো ধাক্কা দিলে আমি বিরক্তির ভাব নিয়ে বলে উঠি,,

-প্লিজ তুমি শুরু কর না,, সত্যি বলছি আবির যেটা বলেছেন সেটাই ঘটেছে আমি বিছানায় আর আবির সোফায়,,,
-আহ্ তাহলে লজ্জা পাচ্ছেন কেন,,
-নাতো,, আমি কেন লজ্জা পাবো,,
-মেনে নিলাম প্রেগন্যান্সির কথাটা তো স্যারকে বলেছেন নাকি,
-বলার আর কি বাকি আছে,,,
-আপনি অপারেশন করেননি এটাই বলবেন,,,
-না,,
-উউফফ কেন বলছেন না আপনি,,,
-এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না নিপা,, আর প্লিজ তুমিও কাউকে কিছু বলতে যেও না,,
-ঠিক আছে কিন্তু,,,থাক আমি আর কিছু বলব না ,, (মন মরা হয়ে)

নিপা তার ফোনটা হাতে নিয়ে মেজাজ খারাপ করে বলতে থাকে,,,

-ধ্যাৎ আজকেও দিবে না,,

আমি সবজি কাটতে কাটতে বললাম,,
-কি দিবে না
-গল্প,,,,,(একটু রেগে)
-কিসের গল্প,,কার গল্প
-আর বলবেন না আরবি আরভী আপুর লেখা নসীব গল্পটা আমি নিয়মিত পড়ি কিন্তু লেখিকা কিছুদিন ধরে গল্পটা আর দিচ্ছেন না,,,
-তা উনি দিচ্ছেন না কেন,,,
-গল্পটা একটু পপুলার হয়েছে তো তাই লেখিকা দেমাগী হয়ে গেছেন,,(বিরক্তকর লুক নিয়ে)
-দেখ নিপা,, তুমি যেমনটি বললে গল্পটা একটু পপুলার,, হতে পারে অনেক অসাধু কপিবাজরা গল্পটা নিজেদের নামে পোস্ট করছে বলে লেখিকা তাতে বিরক্ত বা তার পারিবারিক সমস্যার কারণেও গল্প দিতে দেরী হচ্ছে তাই না,,
-হুমম ঠিক বলেছেন ম্যাডাম,, হতে পারে,,।।

তারমধ্যেই খালামনির ডাক,,
-নিপা আমার ঔষধ কোথায়,,

নিপা আমার সাথে আমতা আমতা করতে করতে,,
-ইশশ রে কালকে আমার ছোট ভাই খেলার ছলে ম্যাম সাহেবের রুমে গিয়ে তার সবগুলো পিল খুলে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে,,, ভেবেছিলাম কেউ দেখার আগেই কিনে আনবো কিন্তু ভুলে গিয়েছি,,,,,এখন কি হবে(কাদো কাদো কন্ঠে)
-আল্লাহ,,, তুমি এটা কি করলা নিপা,,

খালামনি রেগে কিচেনে এসে,,

-কি রে কথা কানে যায় না?
– খালামনি আপনার ঔষধ তো শেষ,,
-কি এত তাড়াতাড়ি,,
-কি বলছেন সেই কবে এনেছিলাম,,,, যাক কোনো ব্যাপার না আমি এক্ষুনি এনে দিচ্ছি,,
-ঠিক আছে জলদি যাও,,,,
-আমি এই যাব আর এই আসব আপনি কোনো টেনশন করবেন না,,

এদিকটা নিপার হাতে দিয়ে আমি তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পরলাম।। কিছু দূর যেতেই একটা প্রাইভেট কার আমার পিছু নেয়।।আমি যেদিকে যাচ্ছি গাড়িটাও সেদিকে আসছে।। কালো গ্লাসের ভেতরে কাউকে অনুমান করতে পারছি না।। হঠাৎ গাড়িটা থামিয়ে নীলয় বেরিয়ে এসে বলতে শুরু করেন,,

-নীলা কথা শোন,,,
-প্লিজ আর আমাকে ফলো করবেন না,,, চলে যান এখান থেকে
-দাঁড়াও প্লিজ তোমাকে আমার সাথে একটু যেতে হবে,,
-কোথায় যাবো আপনার সাথে ,,
-নীলা আমার জুলিয়েট সরি দাদীমা ICU তে ভর্তি,,সে তোমাকে একবার দেখতে চেয়েছেন,,প্লিজ না কর না,
-আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে আমি পারবো না,,, আপনাকে অনুরোধ করছি প্লিজ চলে যান,,

নীলয় আমার হাতটা ধরে খুব রিকুয়েস্ট করে বলছেন কিন্তু আমি যাবো না বলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছি।। হাতাহাতির একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পরলে নীলয় আমাকে কোলে করে গাড়িতে উঠিয়ে ডক্টরের কাছে নিয়ে আসেন,,,,

ডাক্তার সাহেব নীলয়কে কেভিনে নিয়ে বলতে থাকেন,,,

-পেশেন্ট কে হয় আপনার ,
-আমার স্ত্রী,,,,, এনিথিং সিরিয়াস ডক্টর??
-ডোন্ট ওয়ারি মি.নীলয় মা আর বেবী দুজনেই,,
-বেবী???,,,(অবাক হয়ে)
-মি.নীলয় আপনার স্ত্রী ৪মাসের প্রেগন্যান্ট আপনি কি তা জানেন না,,
-ও হ্যা ডক্টর বলুন,,,(আতংকিত হয়ে)
-হুম যা বলছিলাম মা আর বেবী দুজনেই সুস্থ কিন্তু উইক,, কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি সময়মত খাইয়ে দিবেন
-হুম,,

আমি বেড থেকে উঠে চলেই যাচ্ছিলাম।। সামনে নীলয়কে দেখে থেমে যাই।। উনি চিন্তিত চেহারা আমাকে বলে উঠেন,,

-ঠিক আছ?
-হুম,
-আচ্ছা চল তোমাকে মেডিসিন কিনে দিয়ে বাড়ি দিয়ে আসি,,

নীলয় আমার জন্য অনেক করলেন।। এতক্ষণ তাকে ইগ্নোর করছিলাম বলে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।। উনার দাদীমা জাস্ট আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছেন কিন্তু আমি মুখের উপর না করে দিলাম।।

-আপনার দাদীমার হসপিটালটি এখান থেকে কতদূর??

নীলয় হাটা থামিয়ে পেছনে মোড়ে,,
-এইতো ১ঘন্টার রাস্তা,,কেন
-দাদীমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে,
-তোমার শরীর,,,
-আমি একদম ঠিক আছি আপনি আমাকে নিয়ে চলুন,,
-ওকে,,

গাড়িতে বসে আছি।।নীলয় গম্ভীর হয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছেন।। কেন জানি না মনে হচ্ছে উনার কিছু একটা হয়েছে।। আমার দিকে একবারও তাকাচ্ছেন না।।

হসপিটালে এসে আমি স্তব্ধ।। নীলয়ের গোটা পরিবার এখানে।। খুব অস্বস্তি লাগছিল।। নীলয়ের আম্মু আমাকে দেখে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে আছেন।।

নীলয় শক্ত করে আমার হাতটা ধরে,,

-জুলিয়েট নীলাকে দেখতে চেয়েছিল তাই ও এসেছে,,,

চলবে,,,,,,,
#নসীব
#পার্ট_১০
#আরবি_আরভী

নীলয় শক্ত করে আমার হাতটা ধরে,,

-জুলিয়েট নীলাকে দেখতে চেয়েছিল তাই ও এসেছে,,,

ডক্টর অনুমতি দিলে নীলয় আমাকে কেভিনের ভেতর পাঠিয়ে দিয়ে বাহিরে অপেক্ষা করতে থাকেন ।।

অক্সিজেন মাস্ক পড়া একজন বৃদ্ধা।। আমি কাছে গিয়ে উনাকে সালাম দিলে উনি চোখ খুলে আলতো হেসে,,, ইশারায় আমাকে উনার পাশে বসতে বললে আমি বসে পড়ি,,

-কেমন আছিস,
-ভালো,, আপনার শরীর এখন কেমন?
-ভালো না,, রোমিও টার জন্য সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়,,,
-জ্বি????
-হা হা হা নীলয়টার কথা বলছি,,আমার দাদুভাই,, আমার বন্ধু।।
-ও আচ্ছা,,

উনি আমার হাত দুটো আকড়ে ধরে ছলছল করে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,,,
– দাদুভাই তোকে খুব পছন্দ করে,,,তোর সাথে পরিচয় হওয়ার পর দাদুভাইকে আমি নতুন করে হাসতে দেখেছি,, বছর কয়েক আগে যে ছেলে তার প্রিয়তমাকে হারিয়ে মরতে বসেছিল সে নতুন করে বাঁচতে শিখছে শুধু তোর কারনে,,,, আমার দাদুভাই একটু রাগি কিন্তু ওঁর মনটা খুব নরম,,,,
-নীলয় কাউকে ভালোবাসতো?
-হ্যাঁ,, ওয়ালিফা নামের একটা মেয়ে দাদুভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল তারপর আস্তে আস্তে ভালোবাসা,, ১৩ বছর একসাথে অনেকটা পথ চললেছিল তারা,, কিন্তু বিয়ের এক সপ্তাহ আগে ওয়ালিফা ,,,,,(চোখ বেয়ে পানি পরছে)
-দাদীমা কি হয়েছিল ওয়ালিফার বলুন প্লিজ,,
-ওয়ালিফার কার এক্সিডেন্ট হয়ে যায়,, রোমিও তা কিছুতেই মানতে পারেনি প্রচুর ডিপ্রেশনে চলে যায় তারপর রাত করে বাড়ি ফেরা, পার্টি নেশাদ্রবে নিজেকে বিলিয়ে দেয় অনেকবার নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল,,,,কারো কোনো কথা শুনতো না পাগল হয়ে গিয়েছি দাদুভাই,,, (কাদতে কাদতে)
-প্লিজ কাদবেন না,,
-তোকে দেখার পর ওঁ জীবন ফিরে পেয়েছে তোকে ভালোবেসে কাছে পেতে চেয়েছে,, তোর মাঝে নাকি দাদুভাই ওয়ালিফার দেহের সুগন্ধ অনুভব করতে পারে,,,,,, আমি জানি আমার দাদুভাইকে তুই ঠিক করতে পারবি,, আমাকে কথা দে ওঁকে ছেড়ে কখনো যাবি না,,,

কিছু বলতে যাবো তখনই ডক্টর এসে আমাকে বের করে দেয়।। পেশেন্টর সাথে ইমোশনাল হয়ে পরলে নাকি উনার কন্ডিশন আরও খারাপ হয়ে যাবে।।

গাড়িতে বসে আছি।। নীলয় আমার মেডিসিন গুলো কিনতে ফার্মাসিতে গেলে আমি টাইম দেখতে নীলয়ের ফোনটা অন করলে ডিসপ্লেতে আমার ছবি দেখে ফোনটা অফ করে দেই।। বাসায় ফিরছি।।নীলয়ের দিকে বার বার তাকাচ্ছি বলে নীলয় মুচকি হেসে বলতে লাগল,,

-কি প্রেমে-ট্রেমে পড়ে গেলে নাকি,
-কার?
-কার আবার আমার,,,
-ইস!! চেহারা দেখেছেন আয়নায়,,
-ও হ্যালো কত মেয়ে আমার উপর ক্রাসড তুমি জানো,,
-কাউকে ভালোবাসতেন,,,
-এখনো বাসি,,খুব খুব অনেকটা বেশি,,

পৌঁছে গেলে আমি গাড়ি থেকে নামতেই নীলয় পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলল,,,

-নীলা,,
-হুমম,,
-You are most beautiful girl in the world,,

আমি ভেবাচেকা খেয়ে দাড়িয়ে থাকলে নীলয় মুচকি হেসে চলে যায়,,,

বাসায় ফিরে আমার মনে পড়ে খালামনির ঔষধের কথা।। নিপা আমাকে দেখে রাগ দেখিয়ে বলে,,,

-কোথায় ছিলেন ম্যাডাম কত চিন্তা হচ্ছিল জানেন,,
-খালামনির ঔষধ আনতে,,,
-আপনি আসতে দেরী হচ্ছিল বলে আমি নিয়ে এসেছি,,,
-থ্যাংকস নিপা,,

রাতে শুয়ে শুয়ে নিপার সাথে গল্প করছি এমন সময় অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ দিয়ে কেউ একজন আমাকে গার্ডেনে যেতে বলে।। সেখানে গিয়ে একটা গিফট বক্স খুজে পাই।।ওপেন করে অবাক ।। খুব সুন্দর একটা নীল শাড়ি।।

আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটা নীলয়ের কাজ,,ঝটপট নীলয়কে কল দিয়ে বললাম,,,

-থ্যংকস খুব সুন্দর গিফট,,
-কিসের গিফট???,, (বিস্মিত হয়ে)
– আর নাটক করতে হবে না,,,
-সরি্ বুঝতে পারছি না কি বলছ,,,
-হ্যালো হে হ্যালো,,, ধুর নেটওয়ার্ক প্রব্লেম মনে হচ্ছে।।

কয়েকদিন পর নীলয় আমাকে দাদীমার কথা বলে।। উনি নাকি আমাকে দেখতে খুব জেদ করছেন।। আমি নীলয়ের দেয়া নীল শাড়িটা পড়ে দাদীমাকে দেখতে যাচ্ছি।। যাওয়ার পথে জ্যাম পরলে আমি জানালার দ্বারে তাকিয়ে আছি।। হঠাৎ আমার নজর কালো গাড়িটার দিকে যায় যেটা আবির ড্রাইভ করছেন।।

আমি উনার দিকে তাকিয়ে থাকলে একপর্যায়ে আবিরের চোখ আমার উপর আটকা পড়ে,, আমাকে আর নীলয়কে একসাথে দেখে নিমিষেই তার চেহারার রঙ বদলে গম্ভীর হয়ে যায়,,,,

হসপিটাল থেকে ফিরতে আমাদের রাত হয়ে যায়।। প্রচুর ঝড় হচ্ছে বলে দাদীমা ছাড়ছিলেন না।। কিন্তু ঝড়ের তীব্রতা বেড়েই চলছে তাই আর দেরি করিনি।।

বাসায় সবাই চিন্তিত।। আবির নাকি এখনো অফিস থেকে ফিরেননি।।ফোনটাও অফ।। কোনো এক্সট্রা মিটিং নেই এমনকি তরীদের ওদিকেও যাননি।। কোথায় আছেন কেউ কিচ্ছু জানে না।।

এরমধ্যে আমাকে দৌড়ে কাকভেজা হয়ে রুমে ডুকতে দেখে খালামনি ভীষণ রেগে বলে,,,
-এসেছে নবাবের সাহজাদী,,
-না মানে খালামনি ,,,
-কোথায় ছিলি সারাদিন ,,বাবার প্রতিশোধ নিতে আবার আমার ছেলেটার খুন করে দিলি নাতো,,(কাদো কাদো কন্ঠে )
-কি বলছেন খালামনি,,,,
-এই একদম ন্যাকামি করবি না কার প্রাইভেটকার দিয়ে এসেছিস এত রাতে কোথা থেকে এসেছিস,, তোর মত এই নষ্টামী আমাদের বাড়িতে আর চলবে না ,,বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে,,

নিপা ভীতু কন্ঠে বলতে থাকে,,
-ম্যাম সাহেব বাহিরে অনেক বৃষ্টি,,, সকালে,,,,
-তুই চুপ কর নীলা আজকে এক্ষুনি এই মূহুর্তে বাড়ি ছেড়ে যাবে,,,

কান্না করে খুব মিনতি করছি কিন্তু খালামনি কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না আমাকে টেনে গেইটের বাহিরে রেখে গেলেন।। খুব কান্না করছি।। বৃষ্টির ঠান্ডা পানিতে কাঁপতে শুরু করেছি রীতিমত,,,

চলবে,,,,,,

নসিব #নসীব ১-৫ #নসীব #আরবি_আরভী #পার্ট_১

0

#নসিব #নসীব

১-৫

#নসীব
#আরবি_আরভী
#পার্ট_১

-আবির ছাড়েন প্লিজ ব্যাথা পাচ্ছি ছাড়েন আর কখনো এমন করব না,,খালুকে ডাকব কিন্তু প্লিজ ছাড়েন,,,
-সাওনের সাথে তোর কি হুমম,
-কিচ্ছু না বিশ্বাস করেন,, (তার হাতটা চুলের মুঠো থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টায়)
-তোর কি আমাকে ছাড়া আরও কাস্টমার আছে নাকি
-ছ্বি ও খালামনি দেখ না তোমার ছেলে আমাকে মারছে,,

আমি নিলা বয়স ১৯।। শারীরিক সম্পর্কের জন্য পার্ফেক্ট তাই না হা হা হা তা আমি বলিনি বলেছে আমার আদুরের খালাতো ভাই আবির।। ছেলেটার জন্য রুমে শান্তি মত কাপড়ও চেইঞ্জ করতে পারি না হুট করে রুমে ঢুকে বিছানায় শুয়ে পরে।। কখনো তো আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমার কাপড় চেইঞ্জ করা দেখেন।। আমার শরীরের প্রতিটি অংশ হয়তো উনার চেনা শেষ।। উউফ কবে যে দিনগুলো শেষ। সবাই বলে উনি নাকি তার অফিসের সুন্দরী কোনো এমপ্লয়িরের দিকে ফিরেও তাকান না।। কিন্তু জানি না আমার মধ্যে কি খুজে পান আমার প্রতিই কেন জুলুম করেন।।

গল্পটার শুরু হয়েছিল আমাদের ছোটকাল থেকে।। আবির আমার খালাতো ভাই আমাদের একসাথে খেলা আনন্দ হাসি ঠাট্টা কিন্তু আমার আব্বু খালামনিকে পছন্দ করত না কারন খালামনি সবার বিপক্ষে গিয়ে লাভ ম্যারেজ করেছিলেন।। আর আমার বাবা হলেন ভালোবাসার বিরুদ্ধে।। খালামনি যখনই বেড়াতে আসতেন বাবা মাকে আড়ালে নিয়ে খুব কথা শুনাতেন কিন্তু নিজের বোনকে তো আর ফেলে দেয়া যায় না,।।
সময়ের একপর্যায়ে খালামনি ভবিষ্যতে আমার আর আবিরের বিয়ের কথা বললে বাবা খুব রেগে যায় সাথে খালামনিকে কষে থাপ্পড় মারে বলতে থাকেন,,

-তোর সাহস হয়ে কিভাবে আমার মেয়েকে নিয়ে তোর এসব বলার নোংরা মেয়ে একটা পরপুরুষদের সাথে মেলামেশা করিস কে জানে তোর ছেলে আবির এটা কি বিয়ের পরে হয়েছে নাকি বিয়ের আগে,,, কে জানে বিয়ের আগে কয়েটা বাচ্চা ফালাইছিস ব্যা** কোথাকার,,
-প্লিজ থামো ,, (আম্মু)
-তুমি চুপ কর এই শুন তোই একটা বাজারের মেয়ে আর তোর ছেলের সাথে বিয়ে দিব আমার মেয়ের,,,বেরিয়ে যা,,

আম্মু শত চেষ্টার পরেও আব্বুকে থামাতে পারেন নি ঐ দিন খালামনি খুব কান্না করেছিলেন ছোট আবির রক্ত মাখা চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।। সেই দিনের পর থেকে খালামনি আর আমাদের বাসায় আসেননি কোনো কন্টেক্টও করেননি।।

১৬ বছর পেরিয়ে গেছে আমি তো ইতিমধ্যে ভুলেই গেছি আমার কোনো খালামনি আছে।। তার মধ্যে আবার আম্মুকে হারিয়ে আব্বু একদম নিরব হয়ে গেছে কারো কাছে কোনো রাগ নেই কোনো অভিমান নেই।। আব্বুর শেয়ারের বিজনেস ৩ বার ড্রপ খেয়েছে সংসার একদম অচল তাই আর পড়াশোনাটাও করা হয়নি সংসার আর আব্বুর অসুখের খরচ চালাতে দু একটা টিউশনি করি এই যা।। ডাক্তার বলেছে আব্বুর অপারেশনের জন্য অনেক অনেক টাকা লাগবে কিন্তু তা ম্যানেজ করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব।।

এমই একদিন টিউশনি শেষ করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়।। রাস্তায় কোনো গাড়ির চিহ্ন নেই হঠাৎ একটা নীল কালারের প্রাইভেট কার দেখতে পেলে আমি সিগন্যাল দেই রাস্তার একটু দূরে গিয়ে গাড়িটা থামে আমি দৌড়ে গিয়ে ড্রাইভাইকে একটু লিভ দিতে বললে সে একটু পেছনে ফিরে মালিকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমাকে আসতে বলে আমি গাড়িতে উঠে পেছনে তাকিয়ে দেখলাম একটা হ্যান্ডসাম ছেলে দেখতে আমার পছন্দের নায়ক রানবির কাপুরের মত নিচের দিকে তাকিয়ে মোবাইলে ব্যাস্ত,,, ড্রাইভার আমার চাহনি দেখে হয়তো বুঝে গেছেন উনার মালিকের ওপর আমি অলরেডি ক্রাশ খাইছি তাই মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করছেন,,

-কোথায় যাবেন,,

আমি ঠিকানা বললে ছেলেটা আতংক হয়ে আমার সম্পর্কে সব কিছু জানতে চাইলে আমি তাকে সব বলি।। তারপর উনি আমাকে একটা কার্ড এগিয়ে বলে কোনো দরকার হলে উনার অফিসে যেতে আমি একটু ভেবাচেকা খেয়ে রাজি হলাম।। এমন একটা ছেলে যাকে তাকে কার্ড দেয়ার মত না ব্যাপারটা কি,,,

বাড়ি ফিরে দেখি বাবার হার্টের ব্যথা অনেক বেড়ে গেছে নিশ্বাস নিতে পারছেন না তারাহুরা করে হসপিটাল নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান ইমার্জেন্সি অপারেশন করতে হবে তানা হলে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন মোটা অংকের টাকা।। রাতভর ভাবতে ভাবতে সকালে আমি কার্ডের ডিটেইলস অনুযায়ী তার অফিসে যাই।। উনি নাকি এই অফিসের ম্যানেজার ডিরেক্টর।। আমাকে দেখে তো উনি রীতিমতো হেসে বলতে লাগলেন,,

-রাতে কার্ড দিয়েছি আর সকালেই হাযির বাহ,,
-জ্বি মানে আমার ইমারজেন্সি একটা কাজ লাগবে,,
-কেন,,
-আমার বাবা অসুস্থ ইমারজেন্সি অপারেশন লাগবে তাই অনেক টাকার দরকার ,,
-ও হুমম তা শিক্ষাগত যোগ্যতা?
-মাধ্যমিক,,
-হা হা হা হা হা হা বাবা অনেক শিক্ষিত তুমি,,
-আমার সত্যিই টাকাটা লাগবে,,
-তুমি এসব বাদ দাও আচ্ছা তুমি জানো আমি কে,,
-না
-আমি তোমার আফরোজ খালামনির ছেলে আবির,,
-কিইই,,, (অবাক হয়ে) প্লিজ আমাকে হেল্প করেন আব্বুর শরীর অনেক খারাপ আবির
-দিব সব টাকা দিব কিন্তু তোমাকে আমার সাথে আমার বাড়িতে ৬ মাস থাকতে হবে যতক্ষন না তোমার বাবা ঠিক হয়ে যায়,,
-মানে,,
-মানে খুব সোজা তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে ফ্রিতে না যখন ইচ্ছা টাকা পেয়ে যাবে,,
রেগে আবিরকে একটা থাপ্পড় দিয়ে,
-কি ভাবছেন আমাকে,,, লজ্জা করে না ছ্বি আপনে এমন হয়ে গেছেন,,
-উউফফ ন্যাকামি বন্ধ কর বাবাকে বাচাতে চাইলে এটা তোমাকে করতেই হবে তানা হলে কিচ্ছু করার নেই আসতে পার ,,
-আমি খালামনির সাথে কথা বলব উনি নিশ্চয়ই আমাকে বুঝবেন,,,
-সেট আপ এন্ড গেট লষ্ট,,

রাস্তায় হাটতে হাটতে কথাগুলো ভেবে আর কোনো উপায় না পেয়ে তার সব শর্তে আমি রাজি হয়ে যাই।।আমার বাবার জন্য এটা আমাকে করতেই হবে।। বাবাকে কোনো রকমে বুঝিয়ে বললাম আমার একটা জব হয়েছে ওখানে থেকে আমাকে কাজ করতে হবে প্রায় ৬ মাস অনেক ভালো বেতন দিবে ।। বাবা রাজি হচ্ছিল না আমি এক প্রকার জোর করে চলে এলাম খুব কষ্ট হচ্ছে।।

ভেবেছি ওখানে খালামনি আছে ৬ মাস তা তেমন কি আর চোখের পলকে পেরিয়ে যাবে কিন্তু এখানের পরিবেশটা ছিল একদম ভিন্ন বিশাল এক বাড়ি ৬-৭ জন ইস্টার্ফ আবিরের একটা বোনও আছে আমি খালামনিকে হাজার বার নিজের পরিচয় দেয়ারপরেও উনি আমাকে চিন্তেই পারলেন না হয়তো না চিনার ভান করছেন উল্টো আবিরকে আড়ালে নিয়ে বিরবির করে বলতে লাগলেন,,,

-এই মেয়ে এখানে কেন তাড়াতাড়ি বিদায় কর

চলবে,,
#নসীব
#পার্ট_২
#আরবি_আরভী
.
খালামনিকে হাজার বার আমার পরিচয় দেয়ার পরেও উনি আমাকে চিনতে পারলেন না হয়তো না চেনার ভান করছে উল্টো আবিরকে আড়ালে নিয়ে বিরবির করে বলতে লাগলেন,,,
-এই মেয়ে এখানে কেন তাড়াতাড়ি বিদায় কর,, কি রে কথা বলছিস না কেন বিয়ে টিয়ে করে নিলি নাকি,,
-উউফফ থাম তো আম্মু পৃথিবীতে যদি মেয়ের জাতি শেষ হয়ে যায় তাহলেও আমি একে বিয়ে করব না আর তুমি কি না,,,
-দেখ এই মেয়ে যেন আমাদের পারিবারিক বিষয় কখনো নাক না গলায় এই বলে দিলাম,,
-ওকে কিচ্ছু করবে না তুমি নিশ্চিত থাকো,,
তারপর আবির একটা স্টার্ফের কাছে গিয়ে আমার থাকার রুমটা দেখিয়ে দিয়ে বলে রুমটা যেন ওর রুমের সাথেই হয় যাতে উনার যখন ইচ্ছা আমার রুমে আসতে পারেন।।খুব একা একা লাগছিল ঐ দিন এত্ত মানুষ কিন্তু আমার সাথে কথা বলার কেউ নেই সবাই সবার মত।। তার পর থেকে আমি এখানে।। আবির খুব হ্যান্ডসাম একটা ছেলে খুবই স্ট্রেইট এন্ড স্মার্ট।। তাহলে কেন আমার মত একটা সাধারন মেয়ের সাথে উনি এসব করেন তাও আবার এত্ত এত্ত টাকা দিয়ে।। শুধু আমার সাথেই কেন।। কথাগুলো প্রায় আমি চিন্তা করি। কিন্তু দিনশেষে বাবার সাথে কথা বললে নিজেকে অনেকটা হালকা লাগে।।
-নিলা মা কবে আসবি তোকে দেখতে অনেক ইচ্ছা করে,,
-আসব বাবা ছুটি পেলেই চলে আসব তুমি চিন্তা কর না ঔষুধ গুলো ঠিক মত খাবা,, আচ্ছা এই সপ্তাহে চেকআপের এপয়েন্টমেন্ট আছেনা তোমার।। টাকাটা পেয়েছ তো বাবা,,
-হ্যা রে মা কিন্তু এত টাকা,,, তুই খুব হার্ডোওয়ার্ক করছিস তাই না,
-না বাবা আমার কিচ্ছু করতে হয় না,,আচ্ছা আমি রাখি ভালো থেকো,
আবির যখন তখন আমার রুমে ঢুকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে বলে ঘরের মেয়ে স্টার্ফগুলো আমার কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখে।। আমার মত চরিত্রহীন মেয়েদের জন্য নাকি হাজারো সংসার ভাঙে।। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে নিপা একটু আলাদা শুরু থেকেই তার সাথে আমার একটা পজিটিভ কনভেনশন।। আমাকে নিয়ে তার ভিন্ন এক ধারনা তার মতে আবির আমার খালাতো ভাই তাই আমার রুমে আসে তাছাড়া আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই তাই তার সাথে আমি আমার মনের কথাগুলো একজন আপন ভেবে শেয়ার করতাম কিন্তু সেদিন যখন সে আমার রুম ঝাড়ু দিচ্ছিল আর আমি ওয়াশরুমে শাওয়ার নিচ্ছিলাম তখন আবির শাওয়ার নিতে আসলে নিপা বাধা দিয়ে বলে ,,,
-আরে কোথায় যাচ্ছেন ছোট সাহেব,, ভিতরে নিলা আপু শাওয়ার নিচ্ছেন,,
কিন্তু তার কথার পাত্তা না দিয়ে আবির ওয়াশরুমে ঢুকে পরলে তার সম্পুর্ণ ধারনা বদলে যায় তাছাড়াও এক রাতে আমাকে আর আবিরকে একসাথে শুয়ে থাকতে দেখে সকালে বলেই ফেলে,,
-আপনার সাথে কি ছোট সাহেবের বিয়ে হয়েছে,,
-নাতো,, (একটু হেসে)
-ছ্বি ছ্বি ছ্বি আপনাকে ভালো ভাবছিলাম এই আপনাদের মত মেয়েদের জন্য আমাদের মেয়েজাতির এত্ত বদনাম,, আপনার কি মা বাবা নাই বেড়াতে এসে খালাতো ভাইয়ের সাথে এসব,, এখন বুঝেছি বড় ম্যাম সাহেব( খালামনি) কেন আপনাকে পছন্দ করে না,,
এভাবেই পেরিয়ে গেল ৪ টি মাস বাবা এখন কিছুটা সুস্থ।। আমাকে নিয়ে নাকি তার অনেক গর্ব হয়।। বাড়ি ফিরলে উনি আর আমাকে কাজ করতে দিবেন না একটা রাজকুমার খুজে তার সাথে উনার নিস্পাপ রাজকুমারী বিয়ে দিবেন।। বাবার মুখে কথাগুলো শুনলে সত্যি খুব কষ্ট লাগে।।
ইদানিং খুব মাথা ব্যথা অনুভব হয় তার সাথে বমি ফ্রি।। ৩ সাম পিরিয়ড অফ।। খুব ভয় ও টেনশনে আছি ।। এমন কেউ নেই যার সাথে আমার সমস্যাগুলো শেয়ার করব তাই নিজে নিজে একদিন সকালে প্রেগন্যান্সি টেস্টার দিয়ে টেস্ট করে যা দেখলাম তার জন্য একদম প্রস্তুত ছিলাম না।। আমি প্রেগন্যান্ট!!! আমার ভেতর আরেকটা প্রান।। আমি মা হব।। কিন্তু আবির কি আমাকে মেনে নিবে।। আমার কুমারীত্ব নষ্ট করে সে কি পেল জানি না কিন্তু আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে তা বলতে পারি ।।বাবা সমাজে মুখ দেখাবেন কি করে।।আমি উনার মান সম্মান সব মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি।। কথাগুলো ভেবে ডুকরে কেদে উঠলাম।।আমি আসলে মেয়ে নামে কলঙ্ক।।
সারাদিন রুমে থেকে কান্না করছি ।। অবশ্য তাতে কারো মাথা ব্যাথা নেই।। আবির অফিস থেকে এসে চেইঞ্জ করে হাতে মোবাইল আর কানে হেডফোন দিয়ে ডাইরেক্ট রুমে ঢুকে পরেন। সোফায় বসে ফোনে গেইমস খেলছে হঠাৎ আমার দিকে চোখ পরতেই ইশারায় জানতে চাইলে আমি মুখ লুকিয়ে আরও জোরে জোরে কাদতে থাকি।। তারপর উনি কাছে এসে বেখেয়ালী হয়ে বলতে লাগলেন,,
– এসব মরাকান্না থামিয়ে কি সমস্যা সেটা বল,,
-আবির আমি,,,,
-কি আরও টাকা লাগবে,,, ইট’স নট এ ফ্যাক্ট ডারলিং পেয়ে যাবা,,
-না আবির,, (কান্না করতে করতে)
-তাহলে নিশ্চয়ই আরও কাস্টমার দরকার ওকে চিন্তা কর না আমি আমার বন্ধুদের বলব কিন্তু উরা শুধু দিনে রাতটা কিন্তু আমার,,, ঠিক আছে,,
রেগে কষে উনাকে থাপ্পড় মেরে উচ্চ সুরে বলতে লাগলাম,,
-আমি প্রেগন্যান্ট ।।(জোরে জোরে কান্না করে)
-তা আর এমন কি,, কংগ্রেস, (অন্য দিকে তাকিয়ে ফোনে ব্যাস্ত হয়ে)
-বিয়ের আগেই আমি মা হয়ে গেছি বুঝতে পারছেন একমাত্র আপনার এই নোংরা অফারটার কারনে। আপনে ইচ্ছা করলেই ফ্রিতে টাকাটা দিতে পারতেন কিন্তু না আপনে একটা সরল মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন ।। আমি আমার বাবার আদর্শ মান সম্মান সব শেষ করে দিয়েছি।।
-সো সেড তোমার আব্বু জানতে পারলে অনেক রাগ করবে তাই না,
-একদম মরেই যাবেন, (কান্না করতে করতে)
-আচ্ছা চল,, (হাত ধরে উঠিয়ে)
-কোথায়,?
-তোমার আব্বুর কাছে উনার একমাত্র মেয়ে প্রেগন্যান্ট সুসংবাদটা উনাকে দিতে হবে না,,
-না আবির আপনার পায়ে পরছি প্লিজ আব্বুকে কিছু বলবেন না প্লিজ,,
-চল তো,, আমার আম্মুকে তো অনেক বড় লেকচার শুনিয়েছিলেন উনি চরিত্র নিয়ে এবার উনার মেয়ের সম্পর্কেও সবার জানা দরকার ,,
-আবির আমার প্রতি দয়া করুন প্লিজ প্লিজ আবির আমার বাবা অনেক অসুস্থ উনি এসব মেনে নিতে পারবেন না প্লিজ,,
কে শুনে কার কথা আবির আমার হাতটা ধরে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে ফুল স্পিডে ড্রাইভ করতে লাগলেন যেন টাইম ওয়েস্ট না যায়।। খুব কান্না পাচ্ছে।। বাবা জানতে পারলে কি পাগল হয়ে যাবেন।।
বাসায় এসে নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করছি।। আবির আমার হাতটা ধরে আছেন।। বাবা চেয়ারে বসে পেপার পরছিলেন হঠাৎ আমাকে দেখে মুখে এক ঝাক হাসি নিয়ে ,,,
-নিলা মা কেমন আছিস রে মা তুই এত দিন পরে মনে পরল বাবার কথা,,
আমি চুপ হয় কান্না করতে থাকলে বাবা কাছে এসে আতংকিত কন্ঠে বলতে থাকেন,,
-কি রে মা কি হয়েছে,,, আর এই ছেলে কে তোর সাথে,,,, (আবির আমার হাত ধরে আছে সেদিকে নজর দিয়ে)
-আসসালামুয়ালাইকুম আংকেল আমি আবির,,
চলবে,,
#নসীব
#পার্ট_৩_৪
#আরবি_আরভী

-কি রে মা কি হয়েছে,,, আর এই ছেলে কে তোর সাথে,,,, (আবির আমার হাত ধরে আছে সেদিকে নজর দিয়ে)
-আসসালামুয়ালাইকুম আংকেল আমি আবির,,
-ওয়ালাইকুম আসালাম তা বাবা তোমাকে তো চিনলাম না ,,
-আংকেল আপনার জন্য অনেক বড় একটা খুশির সংবাদ নিয়ে এসেছি ,,, (ঠোঁটে মিথ্যা হাসি নিয়ে)
-কি খুশির সংবাদ,,
– কনগ্রেচুলেশন আংকেল আপনে নানুভাই হতে যাচ্ছেন,, আপনার একমাত্র মেয়ে প্রেগন্যান্ট,,

বাবা হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। তার ওপর যেন আকাশটা ভেঙে পরলো।। গোটা পৃথিবী এলোমেলো হয়ে গেলো।। আমার থেকে কখনো এটা আশা করেননি তা উনার চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।। চোখ দিয়ে তার রীতিমতো পানি চলে এসেছে।। কথাটা যেন তার বিশ্বাস হয়েনি তাই নিশ্চিত হতে আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন ,

-নিলা এসব কি,,, কি বলছে ছেলেটা তুই আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে নিয়েছিস,,,

আবির ভ্রু কোচকে বাবাকে বলতে লাগল,,
-ইয়ে আংকেল আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে নিলার তো বিয়ে হয়নি,, না মানে বলতে চাচ্ছি,,,,

বাবা চোখ দুটো লাল করে রাগি লুক নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে,,

– আমার মেয়ে এসব করতে পারে না।। আমার মেয়ে ফুলের মতো নিষ্পাপ নিলা তুই বলে দে যে তুই আমার মেয়ে তুই এসব করতেই পারিস না এই ছেলে যা বলছে সব মিথ্যা,,, কি রে বল,,

বাবার কথাগুলো শুনে ডুকরে কেদে উঠলাম।। বাবা আমার অবস্থা বুঝতে পেরে কষে দু গালে থাপ্পড় দিয়ে চাবুকটা হাতে নিয়ে খুব জোরে জোরে আঘাত করতে লাগলেন।।এমন জানলে নাকি উনি অনেক আগেই আমাকে নিজ হাতে মেরে ফেলতে।।উনার আত্নসম্মানকে হীন করার আমার কোনো অধিকার ছিল না।।আমার মত মেয়ের উনার দরকার নেই।।

আবির লোকদেখানো শান্তনা দিয়ে বাবাকে আটকিয়ে বলতে লাগলেন,,

-কামডাউন কামডাউন,, মেয়ের এই অবস্থা হলে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক,,,, যেমনটা আমার লেগেছিল,, যখন আমার মায়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন,,তাকে ব্যা** বলেছিলেন আমার জন্ম নিয়ে সন্দেহ করেছিলেন,,, এখন আপনার মেয়েকে কি বলবেন মি.আকরাম সাহেব,,,
-কে তুমি,,,
-আমি আফরোজা ইমরান চৌধুরীর একমাত্র ছেলে আবির চৌধুরী,, আপনার মেয়ের আগত সন্তানের পিতা,,
-না আমি বিশ্বাস করি না চুপ কর চুপ ,, নিলা তুই তো ভালো একটা জব করে আমাদের সুদিন ফিরিয়ে আনবি বলেছিলি তাহলে এসব কি ,, এই জানোয়ারটা তোর সাথে জোর করে কিছু করেছে মা বল আমাকে তুই ভয় পাস না আমরা পুলিশের কাছে যাবো,,,
-আপনাকে নিলা এভাবে বোকা বানিয়েছে তাহলে ,, শুনুন আপনার মেয়ে টাকার বিনিময়ে আপনার কাছে মিথ্যা বলে দীর্ঘ ৪ টা মাস আমার সাথে আমার বাড়িতে ছিল।। আমরা একসাথে শুয়েছি একসাথে থেকেছি নিলা তো কয়েকদিনেই আমাকে আপন করে নিয়েছে আমার সামনে কাপড় চেইঞ্জ করতেও তার কোনো আপত্তি ছিল না তাই না নিলা,,,,,সত্যি টা হল আমার আম্মু না আপনার মেয়ে একটা চরিত্রহীনা নষ্টা,,,, একসময় মেয়ের বিয়েতে আপনার অনেক অমত ছিল আর এখন তো ফ্রিতে দিলেও আপনার এই বাজে মেয়েকে কেউ গ্রহণ করবে না কেউ না (মুচকি হেসে)

বাবা গম্ভীর হয়ে চেয়ারে বসে মেঝে দিকে তাকিয়ে আবিরের কথাগুলো শুনছে।।।বাবার রাগটা যেন আগের মত নেই নাকি শরীরের সাথে পেরে উঠছেন না।। আবির উনার সাধ্যমতো আমাকে অপদস্থ করে আমার কাছে এসে চোখ রাঙিয়ে বলে গেলেন আমি যদি কোনোদিন উনার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি তাহলে খুন করে ফেলবেন,, যাওয়ার আগে মুখের উপর টাকার বান্ডিলগুলো ছুড়ে ফেলে বলে গেলেন,,,

-ডো অ্যাবর্শন এস সোন এস পসিবল,,

তারপর চশমাটা পড়ে চলে গেলেন।। বাবা এখনও নিস্তব্ধ হয়ে আছেন।। আমি দৌড়ে গিয়ে হাটু গেড়ে বসে তার হাত দুটো ধরে আকুতি মিনতি করে আমার বাধ্যকতার কথা বলতে থাকলাম তার সাথে তার জন্য যে আমি আমার জীবনটাও দিতে পারি সেটাও বললাম,,

-বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তোমাকে আমি হারাতে চাইনি বাবা তাই নিজের অতি মুল্যবান জিনিসটার বিনিময়ে তোমাকে বাচাতে চেয়েছি,, তুমি আমার সব বাবা আমি তোমাকে খুব কষ্ট দিয়েছি মান সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি আমাকে তুমি বকা দাও মারো,,, বিশ্বাস কর বাবা আমি এখানে থাকব না অনেক দূরে চলে যাবো,,, তুমি শুধু একবার আমার সাথে কথা বল,,,

বাবা আমার চোখের দিকে তাকালে আমি ভয় পেয়ে যাই।। রক্তমাখা দুটো চোখ বেয়ে অঝোরে পানি পরছে,,,।। এই প্রথম আমি সরাসরি বাবাকে কাদতে দেখলাম।

-মা রে তুই আমাকে বাচাতে যা করেছিস সেই কাজটা করেই আমাকে মেরে ফেলেছিস,, আগে মানুষ আমাকে দেখলে শ্রদ্ধা করত আর এখন আঙুল তুলবে ছ্বি ছ্বি করবে গালি দিবে,,
-বাবা আমি,,,, (কান্না করতে কারতে)
-চুপ এই পাপি মুখে আমাকে বাবা বলবি না তোর বাবা মরে গেছে মরে গেছে,,,

কথাগুলো বলেই বাবা হাটতে হাটতে নিজের রুমে চলে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।। আমি মেঝেতে পড়ে থেকে নিজের পাপের জন্য বাবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।। সত্যি আমি যা করেছি তার কোনো ক্ষমা নেই আমার মরে যাওয়া উচিত।। এই জীবন রাখার কোনো অধিকার নেই আমার,।।।কিন্তু এখন তো আর আমি একা না,,,

রাত পেরিয়ে সকাল হল বাবা রুমের দরজা খুলছেন না অনেকবার ডাকলাম কিন্তু কোনো সারা শব্দ নেই।। মনে খুব ভয় কাজ করলে আমি কান্না করতে থাকি তারপর কয়েকজন প্রতিবেশীদের ডেকে এনে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে দেখি বাবা ফ্যানের সাথে ঝুলছেন।।

নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।।বাবার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি।। চোখ বেয়ে অনাবরত পানি পরছে।। যাক আজ থেকে আমি এতিম হয়ে গেলাম ।। এই পৃথিবীতে সম্পুর্ণ একা একজন।

#নসীব
#পার্ট_৪

বাবার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি।। চোখ বেয়ে অনাবরত পানি পরছে।। যাক আজ থেকে আমি পিউর এতিম হয়ে গেলাম ।। এই পৃথিবীতে সম্পুর্ণ একা একজন।।

বাবাকে কবর দিয়ে যখন সবাই ফিরে এলো তখন বাবার কবরের পাশে বসে খুব কান্না করেছিলাম।। বারে বারে চিৎকার করে বলছিলাম আমাকে একা রেখে কেন চলে গেলেন আমাকেও কেন উনার সাথে নিয়ে গেলেন না।। আজ আমার জন্য বাবার এই অবস্থা।। আমার পাপের মাশুল আমার বাবা দিলেন।।আমি বাবাকে ফেলেছি।। আমি আসল খুনি আমার ফাসি হওয়া চাই।।

বাবার মৃত্যুর পর আমি আমার এক দূর সম্পর্কের মামার বাড়ি চলে যাই।।মামা প্রচুর বায়না করেন।।আজ নাকি তিনি প্রতিষ্ঠিত কেবল বাবার জন্যই হতে পেরেছেন।।এক কালে বাবা উনাকে আর্থিক সাহায্য করে বাচার পথ দেখিয়েছিলেন প্রতিদানে কিচ্ছু চাননি।। এখন আমাকে উনার বাড়িতে নিজের মেয়ের মতো রাখতে পারলে নাকি বাবার কিছুটা ঋণ শোধ করার সুযোগ পাবেন ,।।

ও বাড়িতে গেলে মামানি আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন ওখানে থাকলে চাইলে আমাকে বাজার এনে দিতে হবে রান্না করতে হবে ঘর পরিষ্কার সহ নানা সাংসারিক কাজে নিয়োজিত থাকতে হবে।। আমি তার এক কথায় সব মেনে নেই।। আমার ভাগ্যে হয়তো এটাই লেখা ছিল সবাই তো আর সারাজীবন মা বাবার দোলালি হয়ে থাকতে পারে না।। তাদের মধ্যে হয়তো আমিও একজন অভাগী।।

দিন যাচ্ছিল বাড়ির সব কাজ একলা হাতে সামলিয়ে খুব ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ রিনকি এসে আমাকে ডেকে তুলে আমার কাছে টাকা আছে কি না তা জানতে চাইলে আমি আবিরের দেয়া টাকাগুলোর কথা ভেবে বলতে থাকি,,

-হ্যা আছে কিন্তু এই টাকা আমি খরচ করতে পারব না ,,
-আপু আগামীকাল আমার একটা ফ্রেন্ডের বার্ডে অনেক দামী কিছু গিফট করতে হবে প্লিজ হেল্প,,,
-ঠিক আছে তুমি ১০-২০ হাজার নিয়ে নাও,,
-না না আপু এতে কিচ্ছু হবে না প্লিজ বুঝ,,
-তাহলে কত,,
-তুমি আমাকে ১ লাখ দাও আমি জানি তোমার কাছে এর থেকেও বেশি আছে প্লিজ প্লিজ আপু না করো না,,
-হ্যা আছে কিন্তু এই টাকা আমার না যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দিব,,, তুমি বুঝ প্লিজ,,
-ঠিক আছে লাগবে না তোমার টাকা ,হূম,, (মুখ বিকিয়ে চলে গেলো)

পরের দিন ঘরের বাজার নিয়ে বাসায় ফিরে দেখি রিংকি দৌড়ে আমার রুম থেকে পালিয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা বুঝতে রুমে গিয়ে রুমের সব জিনিসপত্র এলোমেলো আবিষ্কার করি সবকিছু অগোছালো।। টাকার ড্রয়ারটাও খালি হয়ে পড়ে আছে ।। এ কাজ রিংকি ছাড়া কেউ করেনি সেই আমার টাকাগুলো চুরি করেছে তা মামানি কে জানালে উনি উল্টো আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেন।। সেদিন দু মায়ে মেয়ে মিলে খুব নির্যাতন চালায় আমার ওপর ।।তখন মা বাবার কথা খুব মনে পরছিল।। আজ যদি উনারা বেচে থাকতেন।।

আমি যদি সেই বাড়িতে থাকি তাহলে নাকি রিংকি অন্য কোথাও চলে যাবে।। কারো সুখের সংসার ভাঙতে চাই না বলে নিজেই বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় পাড়ি জমালাম।। গভীর রাত রাস্তার দুপাশে ল্যাম্পপোষ্ট নিস্তব্ধ পরিবেশ আমি হাতদুটো এক মুঠো করে একটা গাছের নিচে শুয়ে আছি।। হঠাৎ কে যেন আমার হাতটা স্পর্শ করল।। চোখ খুলে দেখি একটা মাতাল আবোলতাবোল বকছে আর আমার কাছে আসার চেষ্টা করছে।। খুব ভয় পেয়েছিলাম ।।হাতে থাকা ব্যাগ টা দিয়ে তাকে আঘাত করে কোনোরকমে নিজে বাঁচিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাই ।।

বড় রাস্তার মুড়ে এসে আমি ক্রমাগত বমি করতে থাকি।। প্রেগ্ন্যাসি অবস্থায় যা হয় আরকি।। সাহায্য করার মত কেউ নেই আমার।। ভাগ্যবশত নিপা সেখান দিয়ে যাচ্ছি হঠাৎ আমাকে দেখতে পেয়ে রিকশা থামিয়ে বলতে লাগলেন,,

-নিলা ম্যম আপনে এখানে,, কি হয়েছে একি অবস্থা আপনার,,,

আমি তাকে দেখে যেন স্বস্তি ফিরে পেলাম।।চোখ বেয়ে পানি পরতে শুরু করল।। কিছু বলব তার আগেই মাথা ঘুরে পড়ে যাই।। চোখ খুললে নিজেকে আবিরের বাসায় খুজে পাই।।বেডের পাশেই চিন্তিত চেহারায় নিপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে খালামনি কিছুটা দূরে দাড়িয়ে রাগি লুক নিয়ে গম্ভীর হয়ে বলছেন,,,

– তোমার বাবা যা করেছেন তা কি কম ছিল যে এখন বারে বারে তুমি ফিরে এসে জ্বালাতন শুরু করলে,,,,তোমার বাবা কেন বুঝতে চাইছেন না তোমাকে এভাবে আমাদের পেছনে লেলিয়ে দিয়ে কোনো লাভ নেই,,,আমরা তোমাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে চাই না।।গিয়ে হীনমন্যতা সম্পন্ন লোভী বাবাকে বলে দিবে উনার থেকে ভালো কাপড় আমাদের পোষা কুকুরটি পড়ে বুঝেছ ,,,, সামনে আবিরের এনগেজমেন্টে এর মধ্যে আমি তোমাদের কোনো ঝামেলা চাই না,,,,
আবির অফিস থেকে আসার সময় হয়ে গেছে তোমাকে এখানে দেখলে ভীষণ রাগ করবে,,, দেখ তোমার সামনে হাত জোড় করছি তুমি প্লিজ চলে যাও আর কখনো আসবে না,,,,

চলবে,,,,
#নসীব
#পার্ট_৫
#আরবি_আরভী

-দেখ তোমার সামনে হাত জোড় করছি তুমি প্লিজ চলে যাও আর কখনো আসবে না,,,, (বিরক্তি ভাব নিয়ে)

আমি আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে খালামনি হাত দুটো স্পর্শ করে ডুকরে কেদে উঠলাম ,,,

-আমার থাকার কোনো জায়গা নেই ,,যতদিন না কোনো কাজ পাচ্ছি আমাকে এখানে তোমার কাছে রেখে দাও না খালামনি ,,, বিশ্বাস করো কোনো ঝামেলা করব না ,, নিপা তরী সুমি সাজিয়া ওরা যেমন তোমার বাড়ির স্টার্ফ তেমনই মনে করো না আমিও একজন নতুন কাজে যোগ দিয়েছি,,, ও খালামনি আমাকে বেশি কিছু দিতে হবে না শুধু থাকার জায়গা আর খাবার দিলেই হবে,,, বিশ্বাস কর কাজ পেলে চলে যাবো,,
এক জাটকায় হাত দুটো ছাড়িয়ে,,,
-মাথা খারাপ খাল কেটে কুমির আনব নাকি,,, অতীতের কিছুই ফিরে আনতে চাই না,,
-আবিরের এনগেজিমেন্টে কোনো ঝামেলা হবে না,, খালামনি থাকতে দাও না প্লিজ,,আমি খুব অসহায় প্লিজ সাহায্য কর (তার পাগুলো জড়িয়ে)
-আচ্ছা আচ্ছা ছাড়ো,,, ঠিক আছে কিন্তু একজন স্টার্ফ হয়েই থাকবে কখনো যদি আমাদের ফ্যামিলির কেউ হতে চেয়েছ অথবা পারিবারিক কিছু নিয়ে আলোচনা করেছ তাহলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব,,,

খালামনি কথাগুলো বলছে এমন সময় আবির অফিস থেকে ফিরে আমাকে দেখে রেগে একাকার হয়ে বলতে থাকেন ,,
-তুমি,,, সাহস হয় কিভাবে আমার বাড়িতে আসার,,
-আবির ও নিপাদের সাথে কাজ করবে তাছাড়াও কয়েকদিন পর তোর এনগেজমেন্টের অনেক কাজ,, লোক পেয়ে গেছি ভালোই হয়েছে বল,,
-কোনো দরকার নেই অনেক লোক আছে কাজ করার,,

তারপর আবির আমার হাতটা ধরে জোর করে টেনে বাড়ির থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করছেন ।। খালামনির কথাও শুনছেন না।। আমিও অনেক রিকুয়েস্ট করছি কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।। গেইটের সামনে এনে রেগে আঙুল দেখিয়ে বলতে লাগলেন,,

– আর কোনো দিন যদি আমার বাড়ির বরাবর দেখিছি তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না ,, যেইনা বাবা মেনে নিতে অস্বীকার করছে অম্নি আমার কাছে ফিরে আসা তাই না ,,,,তোদের মত মেয়েরা এমন কেন আচ্ছা বল আর কত টাকা দিলে তোর এই অপবিত্র শরীরটা আর আমাকে দেখতে হবে না হুম,,(ভীষণ রেগে)
-আপনার থেকে খারাপ তো এই পৃথিবীতে আর কেউ হতেই পারে না আবির আপনে অনলি ওয়ান যে কি না অযথাই একটা নোংরা গেইম খেলে আমাকে শেষ করে দিয়েছেন,,,আপনে জানোয়ার থেকেও নিকৃষ্ট ,,আল্লাহর গজব পড়ুক,,,
-স্টপ টকিং নন্সেন্স এন্ড গেড লস্ট ফ্রম হ্যার,,

কথাটা বলে চলে যাচ্ছিলেন,,,

-শুনুন আমাকে থাকতে না দিলে এক্ষুনি পুলিশের কাছে গিয়ে বলব আপনে আমার সাথে জোর করে ফিজিক্যাল রিলেশন করেছেন আমাকে বিয়ের প্ররোচনা দিয়ে এখন বিয়ে করতে অস্বীকার করছেন,,, প্রতারণার করেছেন,, তখন আপনার বিয়ের কি হবে চিন্তা করে দেখেছেন,,,

উনি ভীষণ রেগে চোখগুলো আগুনের গোলা করে ফিরে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন এরই মধ্যে খালামনি এসে আবিরকে শান্ত করার চেষ্টা করছে আর এদিকে নিপা এসে আমাকে ঘরের ভেতর নিয়ে চাচ্ছে।। আবির কিচ্ছু বলছে না তার বিয়েতে ঝামেলা হবে হয়তো এটা ভেবে মনকে শান্তনা দিচ্ছেন।। আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।খুব ভয়ংকর চাহনি পারলে যেন এক্ষুনি গিলে খেতেন আমাকে ।।

এভাবেই শুরু হল আমার জীবনের আরেকটা নতুন ধাপ।। সত্যি বলতে আমি আগে জানতামই না যে আমার মধ্যে এত ধৈর্য আছে।। ।অসুখ বমি মাথা ব্যাথা এসব কাটিয়ে সারাদিন পরিশ্রম করছি ।। খালামনি কাজে অসন্তুষ্ট হলে আমাকে যে বের করে দিবেন তখন যাবো কোথায় ।।

আমার বমি আর বারেবারে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার কারনটা সবার কাছ থেকে আড়াল করতে পারলেও নিপার কাছ থেকে করতে পারেনি।।আমার গল্পটা জেনেই ছাড়লো।। মেয়েটা রীতিমতো কেদে গলা জড়িয়ে বলতে লাগল আজ থেকে ও নাকি আমার ছোট বোন আর আমার কথামত প্রেগ্ন্যাসির ব্যাপারটা কাউকে বলবে না বলে প্রমেস করল,।। যাক এখানে সব স্বার্থপরদের ভিড়ে একটা বোন তো পেলাম,,,।।

কয়েকদিন পরই আবিরের এনগেজমেন্ট ইভেন্ট আয়োজন করা হলো।।মেয়ে আমেরিকার সিটিজেন নাম তরী। কালকেই দেশে ফিরেছে।। ৫ বছর আগে আবির অফিসের কাজে আমেরিকা গেলে সেখানের তার সাথে তরীর পরিচয় হয়।। তরীকে আর তার ফ্যামিলিকে খালামনির খুব পছন্দ হয়ে যায় বিত্তশালীর পরিবারের একমাত্র মেয়ে।। এ বিষয় আবিরের মত জানতে চাইলে উনি উনার মায়ের খুশি সবচেয়ে দামী বলে জানিয়ে দেন।।

আগামীকাল আবিরের এনগেজমেন্ট রাতে আবির আমাকে ফোন দিয়ে বলেন আমি যেন কোনোভাবেই উনার এনগেজমেন্ট পার্টি এটেন্ট না করি ঔ দিন বাবার বাসায় চলে যেতে বলছেন।। বেচারা ভয় পাচ্ছে আমি যদি আবার কোনো হট্টগোল পাকিয়ে দেই।।

যেহেতু আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই তাই আবিরের কথাটা রাখতে পারলাম না লুকিয়ে এখানেই থেকে গেলাম।। সন্ধ্যায় বেস রমরমাট পরিবেশ।। গেস্টদের অভাব নেই।। শিল্পপতি আবির চৌধুরীর এনগেজমেন্ট বলে কথা।। রিং এক্সচেঞ্জ হলে সবাই আনন্দে উতফুল্ল হয়ে উঠেন।।নিজেকে মানুষের ভিরে আড়াল করে সব দেখছি ।। সবশেষে শুরু হল কাপল ডান্স।।যে যার মত পার্টনার নিয়ে ডান্স করছে।। আবির তরীকে নিয়ে কাপল ডান্সে মগ্ন।। মন মরা করে দাড়িয়ে আছি বাবার কথা খুব মনে পরছে একমনে বাবার কথা চিন্তা করছি ।। এদিকে নিপা আমার অবস্থা দেখে ভেবেছে আবিরের জন্য মন খারাপ তাই ইচ্ছে করে আমাকে ধাক্কা দেয়।। আমি লুটে গিয়ে আবিরের উপর পড়ি।। সব অন্ধকার লাইটের ফোকাস আমাদের উপর।। উনার রাগি চোখগুলো দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে যাই।। আজকেই আমাকে এ বাড়ি থেকে বের করে দিবেন নিশ্চিত।। উনি গম্ভীর চেহারায় তাকিয়ে থাকলে আমি আমতা আমতা করে যাওয়ার জন্য যেইনা ফিরেছি অম্নি উনি আমার হাতটা ধরে ঘুরিয়ে উমার বুকের সাথে মিশিয় এক হাত আমার হাতে আর অন্য হাত কোমরে রেখে গানের সাথে তাল মিলাতে থাকেন,,,

চলবে

অপ্রত্যাশিত_বাসর… #পর্ব_৫… (শেষপর্ব)

0

#অপ্রত্যাশিত_বাসর…
#পর্ব_৫… (শেষপর্ব)

একটি মেয়েকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমি ভুল দেখছি না তো…এ কি করে সম্ভব?এ তো সেই মেয়ে যাকে তন্ময় ভালো বাসত।কিন্তু মা তো বলেছিল মেয়েটি মারা গেছে। মেয়েটির সাথে আরেকটি লোক আর একটি বাচ্চা আছে। লোকটি মায়ের সাথে কথা বলছে। আমি তাদের ওখানে গেলাম। লোক্টি মাকে বলছে….
-আর কতদিন মা মনি আমি তোমদের আর পরিববারকে ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পড়ে থাকবো…..
-যতদিন তোর ছোট ভাই সুস্থ না হয় তত দিন থাকতে হবে…..
-কিন্তু মা আমাদের যে আর বিদেশে থাকতে ভাল লাগে না। আর আপ্নাদের নাতিও আপ্নাদের জন্য খালি কান্না করে….
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না..লোকটা মাকে মামুনি বলে ডাকছে কেন..আমি মাকে জিজ্ঞাসা করলাম…
-মা এনারা কে….
-তিশা এ হল আমার বড় ছেলে নিল..আর এ হল মায়া নিলের বউ…
-কিন্তু মা আপ্নি তো বলেছিলেন এই আপুকে তন্ময়….
-হুম ঠিকি বলেছিলাম। মায়াকে তন্ময় ভালবাসত…
-মা আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না…..
-তন্ময় মায়াকে অনেক ভালোবাসত কিন্তু কোন দিন বলতে পারে নি। নিল যেইদিন মায়াকে বউ করে নিয়ে আসে তখন তন্ময় এটা সহ্য করতে পারে নাই। ও রাগ করে বাসা থেকে চলে যায়। কিন্তু রাস্তায় ওর এএক্সিডেন্ট হয়। মাথায় আঘাত পাওয়ার কারনে ওই পাগল হয়ে যায়। নিল আর মায়াকে বারবার খুন করতে আসতো। ডাক্তারকে বললে ডাক্তার বলে যতদিন না এদের দুই জনকে মারতে পারবে ততদিন ওর পাগলামো যাবে না। তাই তোমার বাবা নিল আর মায়াকে আমেরিকা পাঠিয়ে দেয়। আর তন্ময়কে এটা বুঝাই যে ওরা মারা গেছে……
এখন আমার কাছে সব ক্লিয়ার। আমার বরের ছোট বেলা থেকেই মাথায় প্রব্লেম ছিল কিন্তু এক্সিডেন্ট এর পর তার পাগ্লামো বেড়ে যায়।
-ওর ছোট বেলায় একটি রোগ হয় যার সাইড ইফেক্ট ওর ব্রেইনে পড়ে। তাই ছোট বেলা থেকেই এমন করে…..

আমি পুরাই অবাক। নিল ভাইয়া একমাত্র ভাইয়ের ভালোর জন্য নিজের পরিবার থেকে এত দূরে। আমি ভাবছি এমন সময় মায়া আপু আমার হাত ধরলো…
-জানো বোন আমি তন্ময় এর চেয়ে বয়সে পাচ বছরের বড়। সব সময় ওকে ছোট ভাইয়ের মত দেখেছি ওকে। ওহ সব সময় আমার সাথে থাকত। ভাই না থাকায় আমিও ওকে নিজের ভাই হিসেবে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু যখন নিলের সাথে আমার বিয়ে হয়য় তখন আমি জানতে পারলামম ও আমায় ভালবাসে। ওর ভালোর জন্যই এতদিন আমেরিকায় ছিলাম তোমাদের ছেড়ে। হয়ত আর কোন দিন আসতাম না। কিন্তু নিল যখন জানতে পারল ওর এই অবস্থা তখন আর থাকতে পারে নি চলে এসেছি…..
কথাগুলি বলে উনি কাদতে লাগল। আমি কি বলে আপুকে সান্তনা দিব ভেবে পেলাম না….
-কাদবেন না আপু সব ঠিক হয়ে যাবে……
-জানো তোমার নিল ভাইয়া প্রতিদিন কাদে তার ভাইয়ের জন্য….
-সব ঠিক হয়ে যাবে…..


এমন সময় ডাক্তার এসে বললল…
-আপনাদের জন্য সুখবর আছে…
-কি হয়েছে ডাক্তার…
-আসলে উনার হার্ড নস্ট হয়ে গেছে। কিন্রু একজন ব্যাক্তি মরার আগে তার হার্ড তাকে দান করে দিয়ে গেছে। আল্লাহর রহমতে অপারেশনের পর উনি সুস্থ হয়ে যাবে……
ডাক্তারের কথা শুনে আমাদের সবার চোখে সুখের পানি। আমি মায়া আপুকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলাম..
.
এখন তন্ময় অনেকটা সুস্থ। এই কয়েকদিন আমাদের কারো সাথেই দেখা করতে দেয় নি। আজ দেখা কর‍তে দিবে। আমি কেবিনে ঢুকে দেখলাম ওই আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। আমি ওর পাশে বসা মাত্রই আমার হাত ধরে বলল….
-আই লাভ ইউ….
-এমন করে বলছো আমি মনে হয় তোমায় ভালবাসি না….(বলে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগ্লাম)
এমন সময় মা বাবা সবাই আসলেন। ও সবার সাথে কথা বলতে লাগল.এমন সময় চিতকার দিয়ে বলল….
-তিশা নিল ভাইয়া…
ওর কথা শুনে দরজার আড়ালে থাকা নিল ভাইয়া চলে যেতে লাগল….
-যাস না ভাইয়া…তুই বেচে আছিস জানলে কবেই তোদের কাছে আমার অপরাধের ক্ষমা চেয়ে নিতাম…..
নিল ভাইয়া দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরল। দুই ভাই এক অপরকে জড়িয়ে ধরে কাদছে…
-আই এম সরি ভাইয়া… প্লিজ মাফ করে দাও….
-চুপপ একটা কথাও বলবি না…
দরজার ওই পাশে মায়া আপুও কাদছে তার ছেলেকে কোলে নিয়ে। তন্ময় আপুকে ডাক দিল….
-আপু আমার কাছে আসবি না…
মায়া আপু ওর কাছে গেলল…
-আমায় মাফ করে দে আপু…প্রথমে ভুল্টা বুঝি নি কিন্তু যখন বুঝলাম তখন তোরা ছিলি না। এই অপরাধবোধ আমায় ছয়টি বছর কুড়ে কুড়ে খেয়েছে। আই এম সরি আপু……
-না ভাই….এইসব বলে না….
-আমি তোকে ভাবি বলব না..আপু বলেই ডাকব…
-আচছা ডাকিস…
-এখন থেকে আমরা সবাই মিলে একসাথে থাকবো….আর কোন সাইকো গিরি করবো না….
-তারমানে তুমি…
-সরি তিশা আমি ইচ্ছা করেই অমন কর‍তাম….
-তুই আগে বাসায় চল…
আমাদের কথা শুনে সবাই হেসে দিল। নিল ভাইয়া বলল…
-ওকে বাসায় গিয়েই তন্ময় আর তিশার আবার বিয়ে দিব….
-আমিও বিয়ে কলব…(পিচ্চি শান বলল)
-ওমা তাই কাকে বিয়ে করবে সোনা…(কোলে নিয়ে কথাটা বললাম)
-কেন তুমাকে…তুমি দেখতে কত কিউট উম্মাহ….
-হি হি উম্মা সোনা……



এখন বিছানায় বসে আছি। একটু আগে বিয়ে হয়েছে। আগের বার বাসর রাতে সিগারেটের ছেকা দিছিল এইবার কি দিবে আল্লাই জানে। একটু পর আমার সাইকো বর আস্লো…আমি ঊঠে তাকে সালাম করলাম। উনি আমাকে জড়িয়ে নিল বুকের মাঝে…..
-এই খবরদার ছুবে না আমাকে….
-কিন্তু কেন বাবু…
-আমার কতগুলা ডিমান্ড আছে…
-কি কি শুনি…
-নিল ভাইয়ার সাথে অফিসে যেতে হবে,বখাটেদের সাথে ঘুরতে হবে আরেকটা…
-আরেকটা কি…
-আমার লজ্জা লাগে…
-কি বল না গো….
-আমাকে একটা জুনিয়র তন্ময় গিফট দিতে হবে….
উনি কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরল..
-কি করছ ছাড়ো….
-জুনিয়র তন্ময় দিতে হবে তাই না…
-ভাগ সাইকো কোথাকার….
লাইট অফ……..


কেবিনে শুয়ে আছি। আমার পাশে শুয়ে আছে আমার মেয়ে। উফফ আমার মেয়েটা কত্ত কিঊট হইছে। তন্ময় এসে ওকে কুলে তুলে নিল…
-দেখ কত কিউট আমাদের মেয়ে…
-তুই কোন কথা বলবি না…একটা ছেলে দেয়ার মুরত নাই আবার পিরিত দেখাইতে আসছে….
ও কিছু না বলে আমার কপালে চুমু দিল। এমন সময় নিল ভাইয়া বলে উঠলো….
-উহু উহু আমরাও আছি ভাই….
আমরা দুইজনেই লজ্জা পেলাম….

সবাই মিলে এখন আমাদের সুখি সংসার। মেয়ের নাম রেখেছি তানিসা। শান সব সময় তানিসাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আমার আব্বুটার কথা তার বোন সব সময় তার সাথেই থাকবে। আমার মেয়েটাই শান ভাইয়া বলতে অজ্ঞান। সবাইকে নিয়ে অনেক সুখেই আছি তবে আমার বরের সাইকো গিরি এখনো আছে…..
সমাপ্ত..
(তাদের সবাইকে ধন্যবাদ যারা আমার এই গল্পটি পড়ে আমাকে উতসাহিত করেছেন)

aronno joy

অপ্রত্যাশিত_বাসর… #পর্ব_৪..

0

#অপ্রত্যাশিত_বাসর…
#পর্ব_৪..
.
.
এখন আমি লোকটার বুকের মাঝে ঘুমিয়ে আছি। কিছুক্ষন পর আবির মেসজ দিল…
-প্লান সব রেডি সোনা…
-ওকে..
-আগামি কাল দেখা করবে সোনা..
-কোথায়..?
-পাতাকুড়ি পার্ক…
-ওকে..(কতগুলো চুমুর ইমোজি)
আমার বর আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আমি ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। ঘুমের মাঝে বলতেছে…
-আমায় ছেড়ে যেও না প্লিজ তিশা। আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি….
ওর কথা শুনে ওর জন্য আলাদা টান অনুভব করলাম। কখন যে এই সাইকো লোকটাকে ভালবেসে ফেলেছি নিজেও জানি না। আমি উনাকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলাম। উনি ঘুমের মাঝে আমায় জড়িয়ে ধরে আছে……


সকাল হয়ে গিয়েছে। বাসায় মা ছাড়া কেউ নেই। তন্ময় ঘুমিয়ে গেছে। আমি মা কে মিথ্যা বলে বেরিয়ে পড়লাম আবিরের সাথে দেখা করার জন্য। গিয়ে দেখি আবির আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি যাওয়া মাত্রই আবির আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি এক ধাক্কায় ওকে সরিয়ে দিলাম….
-উফ আবির ছাড়ো তো… ভাল লাগে না এইসব….
-ওকে বাবা ঠিক আছে…
-কি প্লান করলা….
-এই নাও গান। এটা দিয়ে ওই সাইকো লোক টাকে খুন করে টাকা পয়সা সব নিয়ে চলে আসবে। তারপর আমরা পালিয়ে যাব অনেক দূর…..
-ওকে ঠিক আছে বায়….
আবিরের সাথে দেখা করে চলে আসলাম। এসে দেখি তন্ময় রেগে আছে । ভয়ে আমার জান শেষ আবার যদি মারে….
-কোথায় গিয়েছিলে….
-কোন জায়গায় না…একটু ঘুরতে…
-ঠাস ঠাস…
কি মনে কর নিজেকে।যাওয়ার আগে একবার আমার অনুমতি নেয়ার প্র‍য়োজন মনে কর নি কেন….
-সরি সোনা আর হবে না…(ওর গলা জড়িয়ে ধরে)
-না আমি রাগ করছি….
-কি করতে হবে আমার বরের রাগ ভাঙাতে….
ও কিছু না বলে আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর আমার উপর উঠলো….
-যা চাব তাই দিবা তো…
-বলো সোনা কি লাগবে….(গলা জড়িয়ে ধরে)
-তোমার ওই গোলাপি ঠোট খাব….
-যাও দুস্টু সাইকো একটা….
তন্ময় কিছু না বলে ওর ঠোট আমার ঠোটের মাঝে ডুবিয়ে দিল। আমিও আমার স্বামির আদর উপভোগ করতে থাকলাম। কিছুক্ষন পর ও আমার শাড়ি খুলতে লাগল। আমি আর ওকে বাধা দিলাম না। আমাকে ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে অই….
-তুমি এত সুন্দর কেন গো…
ওর কথায় আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। ও আমায় ওর বুকের মাঝে নিয়ে বললল…
-তুমি যদি আমায় ছেড়ে চলে যাও তবে আমি মরেই যাব…
এইবার আমি রেগে গেলাম। ওর বুকের উপর উঠে একটা ছুরি ওর গলায় ধরলাম…
-আর একবার যদি মরার কথা বলছো তাহলে তোমার গলায় চালিয়ে দিব এইটা সাইকো ছেলে….
-আর বলবো না….ওই দেখ টিকটিকি…
আমি ভয়ে ছুরি ফেলে দিলাম। ওই সুযোগ মতো আমায় ওর নিচে ফেলে দিয়ে আমার উপর উঠলো। তারপর আমাকে ওর ভালবাসার আক্রমন শুরু করে দিল আমিও পাল্টা আক্রমন করলাম। ওর প্রতিটা স্পশে আমি শিহরিত হয়ে ঊঠছিলাম…..


বাবার বাসায় দিন গুলি অনেক টা হানিমুনের মত কাটলো। ও প্রতি রাতেই আমাকে অত্যাচার করত। কিন্রু তারপরেই আমাকে অনেক ভালবাসত। সত্যি বলতে ওর অত্যাচারের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। কিছুদিন পর চলে আসলাম বাসায়। আমার বর খালি আমাকে আদর করে। আমারো ভাল লাগে। কোন বউ ই বা না চায় তার বরের ভালবাসা পেতে। কিন্তু আমি আমার প্লান ভুলে যাই নি। রান্না ঘরে রান্না করছিলাম। এমন সময় ওই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমাকে চুমু খেতে শুরু করে…
-এই কি করছ কি…
-আমার সোনা বউকে আদর করছি…
-হইছে হইছে যাও আমি খাবার নিয়ে আসছি….
আমার ঠোট ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেল পাগলটা……


আজ প্লানকে সাক্সেস ফুল করব। সকালে উঠে রেডি হয়ে নিলাম। তন্ময় ঘুমুচ্ছে।আমি ওর কপালে চুমু দিয়ে বললাম….
-আমায় মাফ করে দাও সোনা…আজকের পর হয়ত আর দেখা হবে না….
শেষবারের মত ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে বেরিয়ে পড়লাম। জানি না যে কাজে যাচ্ছি বেচে ফিরতে পারব কিনা। যাওয়ার আগে পুলিশকে ফোন দিলাম। আসলে আমি একজন গোয়েন্দা। টাকা পয়সা কিছুই নেই নি শুধু আবিরেত দেয়া গান নিয়েছি….
-টাকা পয়সা কই এনেছ….
-টাকা পয়সা জানিনা কিন্তু তুমি আমার কাছে বাচবে না আবির উরফে ছোট জামান…(বলেই ওর দিকে গান ধরলাম)
-তিশা কি বলছ তুমি….
-চুপপ থাক। তুই কি মনে করছিস তোর কারনে আমি আমার বরের ক্ষতি করব। তোকে ভাল করেই চিনি। তোকে ধরার জন্যই এই প্লান আমার…..
-ওহ….ওই দেখ তন্ময়….

তন্ময় এইখানে কিভাবে আসবে। আমি পিছু ঘুরতেই আমার হাত থেকে ছো মেরে গান নিয়ে গেলল আবির…..
-যখন পরিচয় জেনেই গেছ তোমার আর বেচে থেকে লাভ নেই সোনা….
-আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। গুলির আওয়াজ পেলাম। চোখ খুলে দেখি আমার সামনে নিথর হয়ে পড়ে আছে তন্ময়। ওর বুক থেকে রক্ত ঝড়ছে। মুচকি হেসে বুকে হাত দিয়ে লাভ শেপ করে আছে। আরেকটি গুলির আওয়াজ পেলাম। পুলিশ করেছে গুলিটা। আবিরের মাথার খুলি উড়িয়ে দিয়েছে…..


তন্ময়ের এই অবস্থা দেখে আমি ঠিক থাকতে পারলাম না। ওকে আমার কোলে নিয়ে হাউমাউ করস কাদতে লাগলাম….
-কেন করলে আমার সাথে এমন…কেন নিজের এই অবস্থা করলে….
-আমি তোমায় ভালবাসি গো। তোমায় কিভাবে মরতে দিতে পারি বল…..
-আমিও ভালবাসি তোমায়…
-আমার একটা কথা রাখবে…আমায় একবার তোমার বুকে জড়িয়ে নিবে….
আমি কিছু না বলে ওকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলাম। কিছুক্ষন পর ও হাত পা ছেড়ে দিল। আমি ডাকছি তাও সাইকোটা সাড়া দিতেছে না….
-এই উঠো না প্লিজ…উঠো না তুমি আমাকে না মারলে আমি থাকবো কিভাবে….
আমি ওর বুকে মার‍তে থাকলাম। হঠাত ও শ্বাস নিতে শুরু করল। আমি ওকে মেডিকেল নিয়ে গেলাম। ফোন করে সবাইকে ডাকলাম। ওকে আই সি ইউ তে নেয়া হয়েছে। কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে বললল…
-দেখুন উনাকে আমরা বাচাতে পারবো না। উনার হার্ড বরারবর গুলি লেগেছে তাছাড়া প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে।আপ্নারা পারলে উনাকে বিদেশে নিয়ে যান….

ডাক্তারের কথা শুনে আমি কান্নায় ভেংেএ পড়লাম। আমার কারনেই আজ ওর এই অবস্থা। কিছুসময় পর একটা মেয়েকে দেখে আমি আটকে গেলাম। আমি কি সপ্ন দেখছি। এ কিভাবে সম্ভব। আমার মনে অনেক প্রশ্ন…..
চলবে…
(aronno joy)

অপ্রত্যাশিত_বাসর… পর্ব_৩.

0

#অপ্রত্যাশিত_বাসর…
পর্ব_৩..

রাতে দেখি সাইকোটা গরম লোহা আর সুচ নিয়ে ঘরে ঢুকল।চোখে আগের মত সেই পশুর ছায়া। দেখে মনে হল এখন এই লোক আমাকে খুন করবে। আমি ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যেতে লাগলাম। আমি যতই পিছিয়ে যাই জানোয়ারটা ততই আমার সামনে আসে । এক সময় আমি দেয়ালের সাথে লেগে গেলাম।উনি কিছু না বলে আমাকে কিস করা শুরু করলেন। কিছুক্ষন কিস করার পর গরম সুচ হাতে নিলেন। আমি ভয়ে কেদে দিলাম। আমার কান্নার আওয়াজে সে পৈশাচিক হাসি হাসছে…
-প্লিজ আমাকে মারবেন না…
-সোনা আমি তোমাকে মারতে পারি বল..আমি তো তোমায় ভালবাসি তাই না(আমার গালে হাত দিয়ে পাগলের মত বলছে কথা গুলো)
তার পাগলামো দেখে আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম। যেভাবেই হোক আমায় পালাতে হবে না হলে এই জানোয়ার আমাকে কবরে উঠাবে সিউর। আমি পালাতে যাব কিন্তু উনি আমার হাত ধরে ফেলে। তারপর উনি আমর ওড়নাটা বুক থেকে কেড়ে নিয়ে আমার হাত বাধতে থাকে…..
-প্লিজ আমাকে মারবেন না…আমাকে ছেড়ে দিন….
-মারবো না সোনা.. আজ আমাদের একটা ভালবাসার প্রতিক উপহার দিব তোমায়…
উনি আমার হাত বেধে ফেলললেন। তারপর আমার মুখে এক দলা কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলেন। ভয়ে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল কিন্তু আমি চিৎকার করতে পারছিলাম না কারন আমার মুখ বাধা ছিল…..


কিছুক্ষন পর গরম কিছু আমার পিঠে অনুভব করলাম। মনে হল কেউ আমার চামড়া কেটে ফেলছে। আমি যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকলাম। কিন্তু উনি কিছুই মনে করলেন না। কিছুক্ষনের মাঝে আমার মনে হল আমি জাহান্নামে চলে এসেছি। এত কস্ট, যন্ত্রনা আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। আমি প্রাথনা করতে লাগ্লাম আল্লাহর কাছে যেন এই লোকের কাছ থেকে আমার মুক্তি দেয়। কিছুক্ষন পর জানোয়ার টা কি যেন আমার পিঠে লাগিয়ে দিল। সব কস্ট চলে গেলল অল্প সময়ের মাঝে । তারপর উনি আমার বাধন খুলে দিলাম। আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে কিন্তু ভয়ে কাদতে পারছি না।এমন সময় পশুটা আমার পিঠের ছবি দেখিয়ে বলল….
-সোনা ট্যটুটা সুন্দর হইছে না…এটা আমার আর তোমার ভালবাসার প্রতিক….
আমি কিছু না বলে ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়ালাম।উনি আমাকে নিজের বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে বলল…
-আমি জানি সোনা তোমার অনেক কস্ট হয়েছে…. এই দেখ আমিও করেছি…..
বলেই উনি আমাকে উনার বুকে করা ট্যটুটা দেখাল। সেখানে খুব ভালভাবে দেখা যায় একটা লাভের মাঝে আমাদের দুই জনের নাম। উনি আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। আমি উনার বুকের মাঝে শুয়ে ভাবতে লাগ্লাম সাইকোটাকে আমি খুন করবো বা হলে এ আমায় খুন করবে…..এমন সময় বিদ্যুত চমকায়। আমি ভয় পেয়ে উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। উনি পরম আদরে আমাকে তার ভালবাসার শহরে নিয়ে গেলেন। ভালবাসে উনি কিন্ত এত কস্ট দেয় কেন আমাকে কিছুক্ষন আগে কত কস্ট দিল আর এখন আদরে ভরিয়ে দিচ্ছ আমায়।আমি ইচ্ছা করেও বাধা দিতে পারছি না তাকে। আমি আমার কান্ড জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। পাগলের মত আদর করতে লাগ্লাম এই সাইকো পশুটাকে……..
.
ভোর বেলা ঘুম থেকে ঊঠে দেখি উনি আমার দিকে একমনে তাকিয়ে আছে। চোখে ভালবাসার সমুদ্র খেলা করছে তার। মাঝে মাঝে আমি অবাক হয়ে যাই একটা মানুষ এর কিভাবে দুইটা রুপ হতে পারে। কোন সময় পশুর রুপ আর কোন সময় একজন নিভ্ররতার মানুষ এর রুপ……
আজ বাবার বাসায় যাব। কিন্তু এই লোক আরো বেশি খুশি যাওয়ার জন্য।বাবার বাসায় গিয়ে খুন করে পালাব এই লোকটাকে। আমাকে কস্ট দেয়া সব পাই পাই করে বুঝিয়ে দিব। উনাকে দেখলেই ভয়ে আমার আত্তা কেপে উঠে। কিছুক্ষন পর রুমে আস্লো। পিছিনে কিছু একটা আছে। ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম….
-সোনা এই নাও শাড়িটা পড়ে নাও…
যাক বাচা গেল। আমি ভেবেছিলাম নতুন কোন অত্যাচার করবে আবার।
-কি হল জলদি পড়। আমি তোমার শাড়ি পরা দেখব….
-আসলে আমি শাড়ি পরতে পারি না.. (মাথা নিচু করে বললাম)
উনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমার কপালে আলতো করে চুমু দিল।
-দাও আমি পড়িয়ে দেই…
উনি নিজ হাতে আমায় শাড়ি পড়িয়ে দিতেছে। আমি হাবলার মত তাকিয়ে আছি। এরপর আমায় সাজিয়ে দিল……


বাবার বাসায় আসার সময় শশুড় আব্বা উনাকে কিছু খাম আর চাবি দিল। বাবার বাসায় আসলাম কিছুক্ষনের মাঝে। আসলে আমরা ভাড়া থাকতাম একটা ফ্লাটে। উনি এসেই বাবাকে খাম দুইটা আর চাবি দিল। বাবা চিঠিটা পড়ে চোখ দিয়ে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লল।আমি চিঠি নিয়ে পড়তে থাকলাম..
প্রিয় বন্ধু…
সবাই জানে তুই আমার কর্মচারি কিন্রু আমরা তো জানি আমরা কত ভাল বন্ধু। তোকে অনেক বার বলেছি আমার জি এম হতে কিন্তু তুই হলি না। আজ তোকে আমার এমডি করলাম। ভাবিস না তোর মেয়ে আমার বউমা বলে করেছি। এটা তোর প্রাপ্য রে ভাই।অনেক দিন থেকেই ইচ্ছা ছিল তোর মেয়েকে আমার মেয়ে বানাব কিন্তু তার আগেই আমার ছেলে তোর মেয়েকে আমার মেয়ে বানিয়ে নিল। তুই আমার ছেলের উপর রাগ করিস না ও খুব ভাল ছেলে খালি একটু পাগলামি করে….
ইতি…
সেই বন্ধু….
চিঠিটা পড়ে এই পরিবারের প্রতি আমার সম্মান বেড়ে গেল। এম ডি হওয়ায় বাবাকে একটি বাংলো আর দুইটি কার গিফট করেছে বাবা….


এখন আমি প্রতিশোধ নিব। রান্নায় ঝাল দিলাম সেই রকম….
-কি করছিস কি ছেলেটা ঝালে মরে যাবে তো…..
-চুপ থাকো তো…
হি হি খেতে দিলাম রাতে। উনি খাচ্ছে আর করুন ভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছে। দেখে বুঝা যায় খুব কস্ট হচ্ছে তার। তার অমন চেহারা দেখে আমারি বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো। উনি খেয়ে রুমে চলে গেল….
.
রুমে গিয়ে দেখি কস্টে লাফাচ্ছ। ঝালে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। শাশাতে শাসাতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। আমি কিছু না বলে উনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। তারপর উনার গলা ধরে আমার ঠোট মিলিয়ে দিলাম উনার ঠোটে। উনি খুব জোড়ে জড়িয়ে ধরল আমায়। কিছুক্ষনের মাঝে আবারো ভালবাসার মাঝে ডুবে গেলাম।.
.
উনি ঘুমিয়ে গেছে। আমি উনার বুকে মাথা রাখলাম। কিছুক্ষন পর আবিরের মেসেজ আসলো…
-প্লান সব রেডি সোনা…
-ওকে.
(চলবে

aaronno joy

অপ্রত্যাশিত_বাসর… #পর্ব_২..

0

#অপ্রত্যাশিত_বাসর…
#পর্ব_২..

-প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন আমার খুব কস্ট হচ্ছে…
-তোকে আগে ভাবা উচিত ছিল… (আমাকে ছেকা দিতে লাগল আর একটা উন্মাদের মত আচরন করছে)
-ও আম্মু গো বাচাও আমাকে এই লোক আমায় মেরে ফেলবে। কেউ বাচাও আমাকে(ব্যাথায় চিৎকার করে কাদতে লাগলাম)
-ওই চুপ একদম কথা বলবি না বুঝছিস…
আমার কান্নার আওয়াজ শুনে আমার শাশুড়ি আর ননদ আসলো…দরজার অকান থেকে বললল….
-বউমা তোমার কিছু হয়েছে…তুমি কাদছো কেন….
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই জানোয়ারটা আমার মুখ চেপে ধরে। এবং আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে সাবধান করে দেয় যেন আমি বেশি চিৎকার না করি। আমি ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলাম….
-কই আম্মু কিছু হয় নাই তো। মনে হয় পাশের বাসায় আবার মারামারি লাগছে…
-অহ বউমা ঠিক আছে তো…
-হুম মা ও তো ঘুমুচ্ছে….
-ওহ…
শাশুড়ি মা চলে যাওয়ার পর উনি আমার মুখ ছেড়ে দিলেন। আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম। আর একটু হলেই হয়ত আগামি দিন আমাকে কবরে থাকতে হত। উনি আমার কাছে আসতে চাইছে…
-খবরদার আমার কাছে আসবেন না বলে দিলাম…আমি কিন্তু নিজেকে শেষ করে দিব….
-বিশ্বাস কর আমি তোমাকে খুব ভালবাসি…ছয় বছর আগে থেকে….
এই লোক পুরাই সাইকো এখন বুঝলাম। আমাদের দেখা মাত্র তিন মাস আর এই লোক বলে ছয় বছর। এমন একটা সাইকো ছেলে আমাকে দুই দিনে মেরে ফেললবে….
-যদি সতিই ভালবাসতেন তাহলে এইভাবে কস্ট দিতেন না…সরুন..(কাদতে কাদতে বিছানার একপাশে গুটি শুটি মেরে ঘুমিয়ে পড়লান)…


ঘুম আসছে না ব্যাথায়। দুই হাত জ্বলে যাচ ্ছে।চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছা হয়। কিন্রু জানোয়ারটা যদি আবার মারে। একটু পর সাইকো লোকটা আবার ঘরে আসলো, হাতে বরফ আর মলম।কিছু না বলেই আমার দিকে এগিয়ে এসে আমাকে উঠিয়ে নিজের কোলে বসালো। আমি কিছুই বলতে পারলাম না এই ভয়ে যদি আবার মারে……
-তোমার অনেক কস্ট লাগছে তাই না সোনা….(কাদছে আর বরফ লাগিয়ে বলছে)
-আমাদের কি কস্ট হয় নাকি….(রাগি হয়ে বললাম আর উঠে যেতে লাগলামম)
উনি আমায় একটানে আবার নিজের কোলের মাঝে বসিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মলম লাগিয়ে দিতে থাকলো….
-জানো এই কয়েক বছর আমি তোমাকে ছাড়া একদম ভাল ছিলাম না…সবাই আমাকে সাইকো বলে কিন্তু আমি জানি তুমি আমায় এখনো ভালবাসো…..
লোকটা পাগল নাকি। বারবার বছরের কথা বলে কেন?আমি তো এই লোকটাকে চিনিই না।তার চোখের দিকে তাকালাম কিছুক্ষন আগে যার চোখে শুধুই হিংস্রতা ছিল এখন সেই চোখে শুধুই ভালবাসা।চোখ দিয়ে খালি পানি পড়ছে তার। মনে হয় আমার কস্ট হলে এই পশুটারো কস্ট হয়…..
-ম্যাজিক দেখবা তোমার কস্ট একেবারে শেষ হয়ে যাবে সোনা…
-কিভাবে..(কাদো কাদো হয়ে)
উনি কিছু না বলে আমার দুই হাতে চুমু দেয়া শুরু করলেন। সত্তি কথা বলতে একদম সব কস্ট চলে গেল। একে কি বলে আমি জানি না। এরপর কিছু না বলেই আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমি কিছুতেই ছাড়াতে পারলাম না….


সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি তার বুকে ঘুমিয়ে আছি। পশুটা যেভাবে ঘুমিয়ে আছে কেউ বলতেই পারবে না এ একটা সাইকো……
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রুমের বাইরে আসতে যাব ঠিক তখনি উনি আমাকে দেয়ালের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। এই লোকের শক্তিতে কিছুতেই পেরে উঠা যাবে না। উনি কিছু না বলে আমাকে কিস করা শুরু করলেন। যতই ছাড়ানোর চেস্টা করি তত শক্ত করে কিস করে। আল্লাহ গো এই লোক থেকে আমাকে বাচাও। এই লোকের মাথায় কোন সময় কি চলে কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। উনার কিসে আমার দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। প্রায় পনের মিনিট পর আমাকে ছাড়লো। আমি রুমের বাইরে চলে আসি এক দৌড়ে….


বাইরে এসে দেখি মা রান্না করছে। আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন…
-আয় মা খেতে আয়…
আমার শশুড় শাশুড়ি খুব ভাল মানুষ। একজন সাধারন কর্মচারির মেয়েকে যারা হাসি মুখে একমাত্র ছেলের বউ হিসেবে মেনে নেয় তারা কখনোই খারাপ হতে পারে না। এমন সময় আমার ছোট ননদ বলে উঠলো…
-সোনা ভাবি তুমি আমার পাশে বসবে….
আমার ননদ এইবার এস এস সি দিয়েছে। দেখেই মনে হয় খুব দুস্টুমি করে। আমি গিয়ে ওর পাশে বসলান। এমন সময় বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন….
-আমাদের ক্ষমা করে দে মা। আমরা কোন দিনি এইভাবে তোকে বউ করে আনতে চাই নাই। কি করব বল ছেলেটাকে কিছুই বলতে পারি না। কিছু বললে নিজের ক্ষতি করে বসে থাকে…..
এই বাসার লোক গুলা এত ভাল কেন। আমার বাবাও বলেছে আমার শশুড় নাকি খুব ভাল মনের মানুষ।অফিসের লোক দের নাকি নিজের পরিবারের মত আগলে রাখে…..


-কি হল মা খাচ্ছিস না কেন…
-না মানে…(খাবো কিভাবে হাত আমার পুড়ে গিয়েছে)
-ভাবি তোমার হাতে কি এগুলো…(ননদ বলে উঠলো)
-কই দেখি দেখি..(মা)
-না কিছু না…
মা জোড় করে আমার হাত দেখল। আমিও বাচ্চাদের মত ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলাম….
-দেখছ তোমার ছেলের কান্ড কি করছে মেয়েটার অবস্থা….
-তন্ময় এই তন্ময় (বাবা হুংকার ছাড়ল)
-কি হয়েছে আব্বু(চোখ মুছতে মুছতে বলল)
-ঠাস ঠাস…
তুই দিন দিন জানোয়ার হয়ে যাইস কেন। কি অবস্থা করেছিস মেয়েটার….
মাইর খেয়ে উনি আমাদের সামনে আবার পাগলের মত করতে লাগলো। মা শান্ত করতে গেলে বাবা মায়ের হাত ধরে ফেলে কারন এখন কি থেকে কি করে ফেলবে বলা যায় না। ঘরের সব আসবাব ভেঙে চলে গেল। বাবা নতুন আসবাবের অর্ডার দিলেন……


এখন আমাকে মা খাইয়ে দিতেছে..
-মাফ করে দে মা আমার ছেলেটা যে কি থেকে কি করে ফেলে ও নিজেই কিছু আচ করতে পারে না…
-উনার কি কোন প্রবলেম আছে…
-ছয় বছর আগের ঘটনার পর ওর মাথায় সমস্যা হয়….ডাক্তার বলেছে আর যা খুশি করতে দিতে না হলে আমরা ওকে হারিয়ে ফেলতে পারি….
কি হয়েছিল উনার ছয় বছর আগে। আমাকে জানতেই হবে। বিকেলে দেখি ঘরে ফিরে আসছে উনি..এসেই মায়ের রুমে গেল..
-তুই মেয়েটাকে এইভাবে কস্ট দিলি কেন বাবা….
-ওহ কেন ছয় বছর আগে আমাকে কস্ট দিছে। ওহ তো জানতই আমি ওকে কত ভালবাসি….
ওহ আল্লাহ এই সাইকো আমারে ছয় বছর আগে কই পাইলো। রাতের বেলা খেয়াল করলাম লোহা গরম করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। চোখে আগের দিনের মত পশুত্ব.. আমি এক পা করে পিছু হচ ্ছি আর উনি এগিয়ে আসছে….
চলবে…

(aronno joy)

অপ্রত্যাশিত_বাসর…. #পর্ব_১…

0

#অপ্রত্যাশিত_বাসর….
#পর্ব_১…

ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছে আমার কিছুক্ষন আগে। আজ আমারর বাসর রাত। খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। কিন্তু আমার কিংবা আমার ইচ্ছাতে বিয়ে হয় নি। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। এক বখাটে যুবকের লালসার শিকার আমি। আমার বাবা,মার গলায় ছুরি ধরে আমায় বিয়ে করেছে। এর আগে বিভিন্ন ভাবে আমায় জালাতন করত ও। বড় লোক বাপের ছেলেরা যেমন হয় আর কি। এরা যতই ভাল হোক না কেন এরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। আমাকে অনেক বার প্রপোজ করেছে কিন্তু আমি তো কোন দিন কোন গুণ্ডার বউ হতে চাই নি। আমি আবির কে ভালবাসি জেনেও আমায় জোড় করে বিয়ে করেছে সে..কিছু সময় পর দরজা লাগানোর আওয়াজ পেলাম। বুঝলাম পশুটা আমার দিকেই আসছে…..
-একদম আমার কাছে আসবেন না বলে দিলাম…
-আমি তোমাকে ভালবাসি তিশা…
-ভালবাসার কি বুঝেন আপ্নারা…শুধু ভোগ করাকেই ভালবাসা এটাই মানেন আপ্নারা….
-কিন্তু তিশা…(বলে আমার দিকে এগিয়ে আস্তেছে)
আমি একটা ছুরি তার দিকে ধরলাম…
-খবরদার আমার সামনে আসবি না…আমার সামনে আসলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলব….
তন্ময় কিছু না বলে বাইরে চলে গেল…


খুব কান্না আসছে আমার। কি দোষ করেছিলাম আমি যে আমার সাথেই এমন হল।আমি কখনো ভাবতেই পারি নি এমন একটা ছেলের সাথে জীবন কাটাতে হবে আমার….


মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। বাবা মা আর আমি তিনজনের সুখি পরিবার আমাদের। ছোট বেলা থেকে খুব ইচ্ছা ছিল বি সি এস ক্যাডার হব। তাই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছি সব সময়। ইন্টার মিডিয়েট দিয়ে ঢাবিতে চান্স পাই। আমার পড়াশোনার সুবিধার জন্য পুরো পরিবার ঢাকায় চলে আসি। প্র‍থম দিন গিয়ে দেখি কিছু ছেলে মিলে একটা ছেলেকে মারছে..আমি কোন দিনি অন্যায় দেখতে পারি নি….
-কি হল আপ্নারা ছেলেটাকে এভাবে মারছেন কেন….
-তুই কে?যেখান থেকে এসেছিস ওইখানে যা…
-আপ্নারা আমার সামনে একজনকে মারবেন আর আমি চুপ করে থাকেবো নাকি?(রাগ দেখিয়ে)
-এই শোন একে যেমন দেখতেছিস ছেড়া ফাটা কাপড়..বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর একি অবস্থা হবে….
-ঠাস ঠাস…তোদের সাহস হয় কিভাবে এমন ভাবে কথা বলার…..
-তোর সাহস কিভাবে হয় মারার…বলেই আমার হাত ধরে ফেলে…..
-ছাড়ুন ছাড়ুন বলছি….
-এই ছেড়ে দে..(পেছন থেকে বলল)
কথা বলার পরি ছেলেটা আমায় ছেড়ে দেয়। পিছিনে ঘুরে দেখলাম একটা ছেলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমার মাঝে ভয় কাজ করছে….
-কি নাম তোর….
-জি তিশা…
-তোকে আমার ভাল লাগছে। আমি তোকে বিয়ে করতে চাই…
তার মুখ থেকে কথাটা শুনে ভেবাচেকা খেয়ে যাই। কোন মতে সেই খান থেকে বেরিয়ে আসি। খোজ নিয়ে জানতে পারি ছেলেটার নাম তন্ময়। বড় লোক বাপের বিগড়ে যাওয়া ছেলে। বখাটেগিরি করে বেড়ায়…..


এরপর থেকে দেখতাম কোন ছেলে আমার সাথে থাকত না। ছেলেগুলা আমাকে দেখলে ভাবি ভাবি বলে ডাকত। তন্ময় আমাকে বারবার প্রপোজ করলেও ওকে দেখে আমার খুব রাগ হইত…..
-তিশা আই লাভ ইউ…
-ঠাস ঠাস…
এই নে আমার উত্তর…
-আমি তোমাকে আমার করেই ছাড়বো…..
-এখান থেকে গেলে খুশি হব…
তন্ময় চলে গেল। আমার বান্ধুবিরা আমায় এসে বলল…
-তন্ময় ভাই মনে হয় তোকে সত্যি ভালবাসে…
-এইসব ছেলেকে আমি ভালবাসি না… তোরা ভাল করেই জানিস আমি আবির কে ভালবাসি….
-যাই হোক আজ যেটা করলি তুই কেউ থাকলে এতক্ষনে কবরে শুয়ে থাকত….


দিন দিন তন্ময় এর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেল। ওর ভয়ে আবির আমার সাথে বেশি সময় থাক্ত না। একদিন আমাকে আবিরের সাথে দেখে ফেলে….সেইদিন সন্ধায় আমার বাসায় জোড় করে ঢুকে।আমার মা বাবার গলায় ছুরি ধরে বলে…
-তুমি যদি আমায় বিয়ে না করো তাহলে তোমার মা বাবাকে শেষ করে দিব….
সেইদিন ভয়ে বিয়ে করি। তারপর সে তার মা বাবাকে নিয়ে আসে। আমার বাবা তার বাবার কম্পানিতে জব করে। তারা আমাকে বউ হিসেবে মেনে নেয়। যার ফলে আজ বিয়ে হল…..


কিছু না ভেবে আবির কে ফোন দিলাম….
-আবির আমাকে এইখান থেকে নিয়ে যাও প্লিজ…
-তুমি চিন্তা করিও না সময় মতো তোমাকে আমি নিয়ে যাব….
আবিরের সাথে কথা বলে ফোন রাখা মাত্রি পেছনে ঘুরে দেখি তন্ময় দাঁড়িয়ে…
-কার সাথে কথা বলছিলে….
-আপনাকে বলতে হবে নাকি….
মুহুতেই একটা জানোয়ারের রুপ ধারন করল সে। কুকুরের মত মারতে থাকল আমাকে। সিগারেট দিয়ে আমার হাতে ছেকা দিতে লাগল সে….
-আমার খুব লাগছে প্লিজ আমায় ছেড়ে দে…
খেয়াল করলাম উন্মাদের মত করছে সে। আমাকে মনে হয় মেরেই ফেলবে সে। খুব কস্ট লাগছে
কিন্তু জানোয়ারটার চোখেও পানি।আমি কোন মতেই ছাড়াতে পারছি না ওর থাবা থেকে। ও অল্প অল্প করে আমাকে সিগারেটের ছেকা দিতে লাগল…
-প্লিজ আমায় ছেড়ে দেন আমার খুব কস্ট হচ্ছে….
চলবে.

(aronno joy)

ডেভিল – বর #অন্তিম পর্ব #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল – বর
#অন্তিম পর্ব
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে বসে।
অনেকক্ষণ দু’জন ঘুরাঘুরি করে শপিং এ যায়।

আঁচল – শপিংমল এ আসলেন কেনো?

রেহান – কিছু কেনাকাটা করতে।

আঁচল – কই! বাসায় তো বলেন নি?

রেহান – আরেহ বেশি কিছু না। জাস্ট তোমার কয়েকটা শাড়ি।

আঁচল – আমার শাড়ি তো আছেই। আর কিনতো হবে না। চলুন এখান থেকে।

রেহান রাগি চোখে আঁচলের দিকে তাকায়। আঁচল রেহানের চাহনি দেখে ভয়ে চুপ মেরে যায়।

রেহান আঁচলকে নিয়ে একটা শপে ঢুকে। হটাৎ পেছন থেকে কেউ ডাক দেয়….

— আঁচল…

আঁচল রেহান দু’জনই পেছন ফিরে তাকায়।

আঁচল মানুষ টাকে দেখে কিছুক্ষনের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। আচমকাই আঁচলের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে…..

আঁচল – জিসান….

আঁচলের মুখে জিসান নাম টা শুনেই রেহান চমকে যায়। তার মানে সামনে থাকা লোক টা জিসান। রেহান একহাতে আঁচলের কোমড় ধরে জিসানের দিকে এগুতে থাকে।

জিসান – বাহহ বিয়ে করে নিয়েছো? কতো দিন হলো?

আঁচল কিছু বলছে না শুধু একদৃষ্টিতে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।

রেহান – হেই ব্রো… আমি রেহান আঁচলের হাসবেন্ড। তুমিই জিসান!

জিসান – জ্বী।

রেহান – তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো আমার জানো তো! স্পেশালি একটা কথা বলার জন্য।

জিসান – কী কথা?

রেহান – থ্যাংকস

জিসান – কেনো?

রেহান – আঁচলকে ফিরিয়ে দিয়ে তুমি যে আমার কতোবড় উপকার করেছো নিজেও জানো না। তোমার জন্যই আঁচলকে পেলাম। না হলে হয়তো খাটি হিরে হারিয়ে ফেলতাম।

জিসান রেহানের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।

জিসান – আঁচল আপনাকে আমার সম্পর্কে বলেছে।

রেহান – আঁচল বলেনি তবে বিয়ের আগে আঁচলের মা বাবা আই মিন আমার শশুর শাশুড়ি বলেছে। আর বিয়ের পর অবশ্য আঁচল অনেক বারই তোমার নাম নিয়েছে কিন্তু এখন মনে হই তোমার নামটাও ও ভুলে গেছে। কি আঁচল তাই তো? (আঁচলের দিকে তাকিয়ে)

আঁচল এতোখন রেহানের কথা শুনছিলো। আঁচল কিছু না বুঝেই বলে দেয়….

আঁচল – হ্যা।

রেহান – দেখলে তো? এই না হলে আমার বউ। পুরনো সব কথাই ভুলে গেছে। জানো ও আমাকে অনেক ভালোবাসে। মাত্র তো কয়েক টা দিন হলো বিয়ের এর মাঝেই এতোটা ভালোবেসে ফেলেছে কি বলবো আর।
আজ অফিস গিয়েছিলাম কিছুক্ষন পরই ফোন দিয়ে বলে বাসায় চলে আসো।

আঁচল রেহানের কথা শুনে হা হয়ে যায়। বলে কি!!
এতো বড় মিথ্যে??

রেহান – বাই দ্য ওয়ে উনি কে? তোমার মিসেস? (জিসানের সাথের মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে)

আঁচল এতক্ষন জিসান কে দেখায় এতোটাই ব্যাস্ত ছিলো যে জিসানের সাথে যে আরও একজন আছে তার দিকে খেয়ালই করেনি। রেহানের মুখে শুনে আঁচল তাকিয়ে দেখে জিসানের সাথে একটা মেয়ে।
দেখতে অতোটাও সুন্দরী না যতোটা আঁচল।

জিসান – হ্যা। সায়নী।

আঁচল – কেমন আছো ভাবি? (সায়নীকে উদ্দেশ্য করে)

সায়নী – হুম ভালো। আপনি?

আঁচল – এমন একখানা বর পেয়ে কেউ কি খারাপ থাকতে পারে বলো!! আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। (রেহানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)

আঁচলের কথা শুনে জিসান অনেকটা জেলাস ফিল করছে আর রেহান বেচারা তো শেষ। সব যেনো তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।

রেহান – ( কি হলো এটা!! জিসান কে দেখে ওর মাথা খারাপ হয়ে গেলো না তো? মনে মনে)

আঁচল – আচ্ছা জিসান ভাইয়া সায়নী ভাবি ভালো থাকবেন কেমন। আল্লাহ হাফেজ।

জিসানের তো এবার রাগ উঠে যায়। চেয়েছিলো আঁচলকে ছ্যাকা দিয়ে সারা জীবন কাঁদাবে এখন তো আঁচলই উল্টো জিসানকে ছ্যাকা দিয়ে ব্যাকা করে দিলো।

আঁচল রেহানের হাত ধরে টেনে নিয়ে আসে।

রেহান আঁচলের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে….

রেহান – কি হলো বলো তো? এমন বিহেভ করলে যে!

আঁচল – ইচ্ছে হয়েছে তাই। আপনার কোনো সমস্যা?

রেহান – না না সমস্যা কিসের।

রেহান আঁচলের জন্য কিছু শাড়ি কেনে রেস্টুরেন্টে চলে আসে। তার পর দুজনে একসাথে ডিনার করে বাড়ি ফেরে।

৫ দিন পর….

আঁচল কিচেনে রান্না করছে আর রেহান আঁচলকে সাহায্য করছে। শুধু সাহায্য বললে ভুল হবে সাথে জ্বালিয়ে মারছে।

হটাৎ বেল বাজতেই আঁচল বলে…

আঁচল – দাড়ান আমি দেখে আসি।

রেহান – আমি থাকতে আমার বউ টার কষ্ট করা লাগবে না। (আঁচলের নাক টেনে)

রেহান গিয়ে দরজা খুলে দেখে রেহানের মা বাবা আর রিমি।

রেহান – মা বাবা তোমরা চলে আসলে যে।
আমাকে তো বলোনি আজ আসবে।

রেহানের বাবা – বলতাম পরে ভাবলাম আঁচল একা একা থাকবে বাড়িতে তাই বলিনি।

রেহান – বলতে তো পারতে। আর আমি অফিস গেলে আঁচল তো একাই থাকে। বাই দ্য ওয়ে আসতে অসুবিধে হয়নি তো?

রেহানের মা – একদমই না।

রেহান – আচ্ছা তোমরা ফ্রেশ হয়ে আসো।

রেহানের বাবা মা রিমি সবাই যার যার রুমে চলে যায়। আঁচল কিচেন থেকে বেরিয়ে আসে….

আঁচল – কে আসলো?

রেহান – মা বাবা।

আঁচল – তাই!! রিমি আসেনি?

রেহান – হুম। রুমে গেছে।

আঁচল মুচকি হেসে চলে আসে।

রিমি ফ্রেশ হয়ে বিছানায় রেস্ট নিচ্ছে এমন সময় আঁচল আসে…

আঁচল – রিমি…

রিমি – ওহহ ভাবি আসো।

আঁচল – কেমন কাটলো গ্রামে দিনগুলো?

রিমি – অনেক ভালো। তবে একটু টেনশনেও ছিলাম বটে।

আঁচল – কিশের টেনশন?

রিমি – আমরা চলে গেলাম। তুমি না জানি আমার ভাইটাকে কতো কষ্ট দিয়েছো। (মন খারাপ করে)

আঁচল – কষ্ট দিই নি গো। আমি তো তোমার ভাইয়ের প্রেমে পড়ে গেছি। (মুচকি হেসে)

রিমি – কিহহহহহ!!

আঁচল – হুম। গল্প পরে হবে এখন খেতে চলো।

আঁচল চলে যায় সবার জন্য খাবার রেডি করতে।
রেহানের মা বাবাও আসে।

রেহানের মা – আঁচল তোমার কোনো সমস্যা হয়নি তো?

আঁচল – না মা।

রেহানের বাবা – এই সুযোগে রেহানের অফিস যাওয়া টা শুরু হলো কি বলো।

রিমি – হ্যা বাবা একদম।

রেহান মুচকি হাসে সাথে আঁচলও।

রাতে…..

আঁচল রুমে এসে দেখে রেহান বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।

আঁচল ধীর পায়ে রেহানের কাছে গিয়ে রেহান কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

রেহান বুঝতে পারে মানুষ টা কে। কারন তার শরীরের ঘ্রান, প্রতিটা স্পর্শ রেহানের চেনা। খুব চেনা।

রেহান আঁচলের হাত দু’টো চেপে ধরে।

রেহান – আজ সূর্য কোন দিকে উঠলো বলো তো?

আঁচল – কেনো?

রেহান – এতো ভালোবাসা যে?

আঁচল – আমার বর। আমি ভালোবাসবো। এতে তোমার পারমিশন নিতে হবে বুঝি?

রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে।

রেহান – মোটেই না। তবে এতোদিন যে কষ্ট দিয়েছো তার শাস্তি তো পেতেই হবে তাই না।

আঁচল – আমি সব শাস্তির জন্যই রেডি আছি বুঝছো।

রেহান – এই ওয়েট ওয়েট….. তুমি আমাকে তুমি করে বলছো যে…!

আঁচল – হু…

রেহান – বাহ বাহ এতো পরিবর্তনের কারন কি জানতে পারি।

আঁচল – প্রেমে পড়ে গেছি।

রেহান – কার?

আঁচল – আমার ডেভিল বর এর। এমন ভাবে প্রশ্ন করছো যেনো অন্য কারো প্রেমে পড়েছি।

রেহান – অন্য কারো প্রেমে পড়ে দেখো না তুলে আছাড় মারবো।

রেহানের কথা শুনে আঁচল হেসে দেয়।

রেহান – এবার তো বলো।

আঁচল – কী?

রেহান – ভালোবাসি…

আঁচল – সব কিছুই কি মুখে বলতে হই হুহহহ…

রেহান মুচকি হেসে আঁচলকে কোলে তুলে নেয়।

রেহান – নাহ মুখে বললে তো হয়না প্র্যাক্টিকালি করে দেখাতে হয়। (চোখ মেরে)

আঁচল লজ্জায় চোখ বন্ধ করে রেহানের গলা জড়িয়ে ধরে।

সমাপ্ত

( ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ ❤)

ডেভিল – বর #পর্ব – ২০ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল – বর
#পর্ব – ২০
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
রেহান – বেইবি… এখন কিন্তু আমার কাছ থেকে পালাতে পারবে না আর… (মুচকি হেসে)

রেহানের কথা শুনে আঁচল রাগি চোখে রেহানের দিকে তাকায়…

আঁচল – ( এই ছেলেটার সমস্যা টা কি বুঝি না। একেই তো দেখতে পারছে আমার মন ভালো না তার উপর আবার উল্টো পাল্টা কথা শুরু করে দিয়েছে। ইচ্ছে করছে নাকটা ফাটিয়ে দিই। যত্তসব….)

রেহান মুচকি হেসে ড্রাইভ করতে থাকে পথে আঁচলকে আর জ্বালায় নি রেহান।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা বাড়ি পৌঁছে।

আঁচল রুমে গিয়েই শুয়ে পড়ে।

রেহান – আঁচল… ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর না হয় ঘুমাউ।

আঁচল – আমি কি বলেছি আপনাকে যে আমি ঘুমাবো? (ভ্রু কুঁচকে)

রেহান – তা বলোনি। ভাবলাম এতোটা পথ জার্নি করেছো আর তুমিই তো শুয়ে পড়লে।

আঁচল – ঘুমাবো না এমনিই শুয়েছি। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন তারপর আমি যাবো।

রেহান আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়।

কিছুক্ষন পর আঁচল বিছানা ছেড়ে উঠে হাতে নিজের কাপড় নেয়। এরি মধ্যে রেহানও বের হয়ে আসে।

রেহান – রাতের রান্না করবে? নাকি বাহিরে থেকে আনিয়ে নিবো?

আঁচল – না আমিই রান্না করবো বাহিরে থেকে আনাতে হবেনা। বাহিরের খাবার খাওয়া ঠিক না।

রেহান আঁচলের কথায় মুচকি হেসে ফ্লাই কিস দেয়। আঁচল মুখ ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।

রাতে….

আঁচল ডিনার রেডি করছে হটাৎ কেউ আঁচল কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায় পরে বুঝতে পারে এটা রেহান ছাড়া আর কারো কাজ না।

আঁচল – কি হচ্ছে টা কি! দেখতেই তো পারছেন কাজ করছি। অযথা বিরক্ত কেনো করছেন?

রেহান – ওহো…. আমি টাচ করলে তুমি ডিস্টার্ব ফিল করো তাই না? ওকে ফাইন আজ থেকে আর তোমার ধারে কাছেও ঘেঁষবো না।
যে কথাটা বলতে এসেছিলাম কাল থেকে অফিস যাবো। বাবা নেই এমনি তেও এখন সব আমাকেই সামলাতে হবে তাই।

আঁচল – বাহহ তা তো ভালো কথা।

আঁচলকে আর কিছু বলতে না দিয়েই রেহান কিচেন থেকে চলে আসে।

আঁচল – যাহ বাবা উনি তো দেখছি সত্যি সত্যি রাগ করলেন? ডেভিল টার রাগও আছে দেখছি!!

রেহান রুমে এসে শুয়ে পড়ে। আঁচল ডিনার রেডি করে রেহান কে ডাকছে কিন্তু রেহানের কোনো সাড়া নেই।

আঁচল রেগে রুমে এসে দেখে রেহান শুয়ে আছে। আঁচল বুঝতে পারে রেহান বোধহয় একটু বেশিই হার্ট হয়েছে।

আঁচল – শুয়ে পড়লেন যে! খেতে আসুন।

রেহান ——-

আঁচল – কি হলো? উঠুন

রেহান ——

রেহানের কোনো সাড়া না পেয়ে আঁচল আরও রেগে যায়। আঁচল রেহান কে টেনে উঠে বসানোর চেষ্টা করে কিন্তু বেচারি ব্যার্থ হলো। কেননা রেহানের মতো বডিবিল্ডারের কাছে আঁচলের কাঠির মতো শরীর খানা কিছুই না।

আঁচলের চেষ্টা দেখে রেহান হেসে দেয়। কিন্তু হাসিটা আঁচলকে বুঝতে দেয়নি। রেহান উঠে বসে গম্ভীর কন্ঠে বলে….

রেহান – আমি খাবো না তুমি বরং খেয়ে নাও।

আঁচল – ঐ সময়ের জন্য সরি। এবার তো চলুন।

রেহান – শুধু সরি? (মুচকি হেসে)

আঁচল – তো?

রেহান – আরও কিছু চাই।

আঁচল – কী?

রেহান – (আঙুল দিয়ে নিজের ঠোঁট ইশারা করে দেখায়।)

আঁচল – পারবো না। (রেগে)

রেহান – আমিও খাবো না। যদিও খুব ক্ষিদে পেয়েছিলো।

আঁচল অসহায় ভাবে রেহানের দিকে তাকায়। রেহান ভ্রু নাচিয়ে আঁচলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।

আঁচল রেহানের পাশে বসে দু’হাতে রেহানের মাথাটা কাছে এনে রেহানের ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ায়। রেহান আঁচলের কোমড় চেঁপে ধরে।

আঁচল – এবার হয়েছে? চলুন।

রেহান – বাবাহ আমার বউ টা দেখি আমার থেকেও বেশি রোমান্টিক। (মুচকি হেসে)

আঁচল রেহানের কথায় লজ্জা পেয়ে চলে যায়।

রেহানও আসে।

দুজনের খাওয়া শেষ হলে ঘুমাতে চলে যায়। আঁচল পাশ ফিরে শুয়ে পড়তেই রেহান টেনে আঁচলকে নিজের কাছে আনে।

আঁচল – আপনি ঘুমান। সকালে কী ডাকতে হবে?

রেহান – হুম ৯ টায় অফিস।

আঁচল – আচ্ছা ঠিক আছে।

রেহান আঁচলকে বুকে এনে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে…

আঁচলের আগেই রেহানের ঘুম ভেঙে যায়।
রেহান আঁচলের কপালে চুমু দেয়। আঁচল নড়েচড়ে উঠতেই রেহান ঘুমের ভান ধরে।

আঁচল তাকিয়ে দেখে ৭ টা বাজে। রেহানের দিকে একপলক তাকিয়ে আঁচল উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট বানাতে চলে যায়।

আঁচল ব্রেকফাস্ট রেডি করে রেহান কে ডাকতে এসে দেখে রেহান কে ডাকতে এসে দেখে রেহান ভেজা শরীরে টাওয়েল পেঁচিয়ে দাড়িয়ে চুল ঝাড়ছে।
আঁচলকে দেখা মাত্রই রেহান মুচকি হাসে।

আঁচল – রেডি হয়ে আসুন।

রেহান – হুম আসছি।

আঁচল চলে গেলে রেহান রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আসে।

রেহান – আমাকে খাইয়ে দাও।

আঁচল কিছু না বলে রেহান কে খাইয়ে দেয়।

রেহান – এবার খুশি তো? নিজের টাকায় বউ কে খাওয়াবো। (মুচকি হেসে)

আঁচল – হুহহহ এখনো তো যাননি এতেই এতো কথা বলছেন।

রেহান – যাচ্ছি তো।

রেহান আঁচলের কাছে এসে আঁচলের কপালে চুমু দেয়।

রেহান – আসি বেইবি। আমায় মিস করলে ফোন করো সাথে সাথে চলে আসবো।

আঁচল – করবো ও না মিস হুহহহ।

রেহান – হুহহ নাকি হুম দেখায় যাবে বউ।

রেহান চলে যেতেই আঁচল দরজা লক করে নিজের রুমে চলে আসে। এসে টিভি দেখা শুরু করে।

কিন্তু কিছুক্ষন কাটার পরই বেচারির বোরিং লাগছে। এতো সময় কি টিভি দেখে পার করা সম্ভব নাকি!

আঁচল বার বার ঘড়ি দেখছে। আর ভাবছে লাঞ্চের টাইমে রেহান কে ফোন করবে।

কিছুক্ষন পর রেহান নিজেই ফোন করে।

আঁচল – হ্যা বলুন।

রেহান – মিস করছো আমায়?

আঁচল – (বাপরে এই ডেভিল টা বুঝলো ক্যামনে? মনে মনে)
নাহ মিস করতে যাবো কেনো আজিব।

রেহান – হুম জানি তো। মিস করবেই। আমি আসছি কিছুক্ষনের মধ্যে।

আঁচল – আচ্ছা।

রেহানের কথায় আঁচল শুধু আচ্ছা বললেও বেচারি মনে মনে খুবই খুশি হয়।

আঁচল গিয়ে লাঞ্চ রেডি করতে থাকে। কিছুক্ষন পর বেল বাজতেই আঁচল দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।

আঁচল দরজা খুলে তো পুরাই অবাক।
রেহান হাতে অনেক গুলো আইসক্রিম, চকলেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

রেহান – কী বউ? হা করে তাকিয়ে আছো যে? নিবে না?

আঁচল মুচকি হেসে রেহানের কাছ থেকে চকলেট আর আইসক্রিম গুলো নেয়।

বিকেলে…

রেহান – আঁচল কোথাও যাবে ঘুরতে? তোমার কিছু লাগবে?

আঁচল – না কিছুই লাগবে না।

রেহান – তাহলে চলো কোথাও ঘুরে আসি। একেবারে রাতে ডিনার করে ফিরবো।

আঁচল – আচ্ছা।

রেহান – ওকে রেডি হয়ে এসো।

আঁচল রেডি হয়ে চলে যায়। রেহান ও রেডি হয়ে নেয়।
আঁচল রেডি হয়ে আসতেই রেহান আঁচলকে দেখে হা হয়ে যায়।
আরও বেশি অবাক হয় আঁচল রেহানের সাথে মিল রেখে ড্রেস পড়েছে।

রেহান – বেশি সাজতে হবেনা নরমাল সাজবা বুঝছো?

আঁচল – হুম।

আঁচল শুধু ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দেয় আর আর চোখে কাজল সাথে নরমাল জুয়েলারি। তাতেই আঁচলকে দেখতে মাশআল্লাহ বলতেই হবে।

রেহান – রিকশা করে ঘুরলে কেমন হয়?

আঁচল – হুম। মন্দ না।

রেহান আঁচলকে নিয়ে রিকশায় উঠে।

রেহান – এতো দূরত্ব বজায় রাখলে তো পড়ে যাবা। তার চেয়ে ভালো আমার কাছে এসে বসো। (চোখ মেরে)

আঁচল – এই জন্যই রিকশায় করে ঘুরতে চেয়েছেন তাই না? (রেগে)

রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে বসে।

চলবে…

(দুই একদিনের মধ্যেই গল্পটা শেষ করে দিবো। এতো তারাতারি শেষ করতে চাইছিলাম না। কিন্তু কপিবাজদের জন্য লেখতে ইচ্ছে নেই আর।
আমার গল্প কপি করে কেউ আমার নামটা বাদ দিয়েছে, কেউ নিজের নাম দিয়েছে, আরেক জন তো গল্পের নামই পালটে দিয়েছে। ” ডেভিল বর ” পালটে “জোর করেই ভালোবাসবো তোকে” নাম দিয়েছে।
ভাবা যায়! আমি তো জানি এই টাইপের গল্প গুলো ফাউল। অনেকেই এই সব গল্প পছন্দ করে না। তো আমার এই বাজে গল্প টাও যে এই ভাবে কপি করে নিজেদের নামে চালাবে আমি ভাবতেও পারিনি। অনুরোধ করলেও আমাকেই ব্লক করে দেয়।
গল্প ভালোই হোক বা ফাউল, আজাইরা হোক লিখতে একটু হলেও পরিশ্রম করতে হয়।
এই ভাবে কপি করা দেখে চাইছিলাম একে বারেই এই গল্প বাদ দিয়ে দিতে, তা পারবো না।
তাই যতো তারাতারি সম্ভব শেষ করে দিবো।

ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ ❤