Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
06.
ইমরান জোর করেই সিনহার হাত সরায়। দেখে হাটুতে ক্ষত হয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
” ভাইয়া তোর লজ্জা করে না জোর করে একটা মেয়ের হাটু দেখছিস.?🙁আমার তো খুব লজ্জা করছে।
ইমরান নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে সিনহার হাটু বেঁধে দিতে দিতে বলে,
” থাপ্পড় দিয়ে তোর লজ্জা আমি বের করে দিবো। গাঁধা মেয়ে একটা।
” তুই লজ্জাহীন একটা ছেলে।
” এখন এখানেই বসে থাকবি? বাসায় যাবি না?(ধমক দিয়ে)
” সুন্দর করে বললেই তো হয়৷ কথায় কথায় ধমক। ডেবিলগিরি শুরু করে আমার সাথে।
ইমরান নিজের এক হাত দিয়ে সিনহার গাল চেপে ধরে বলে,
” এতো ফটর ফটর না করে চল।
” কথায় কথায় গাল টিপবি না তো। আমার সুন্দর গাল লাল হয়ে যায়।(বিরক্তি নিয়ে)
সিনহা উঠতে গেলে বুঝতে পারে হাটুতে অনেক ব্যাথা আছে। ঠিকমতো সোজা পায়ে সে হাটতে পারবে না। তাকে বাঁকা হয়ে খুড়িয়ে চলতে হবে।
” আমার সাহায্য লাগবে?
” লাগবে বৈকি। অবশ্যই লাগবে। গাধা নাকি তুই? দেখিস না হাটতে আমার কষ্ট হচ্ছে,?কোলে করে নিয়ে যা আমাকে।
” তুই গাধা নাকি? চোখে দেখিস না, আমি নিজেই খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটতেছি। তোকে কোলে নিয়ে কি এই পিচ ঢালার রাস্তায় উষ্টা খেয়ে মরবো নাকি?
” তাহলে কী সাহায্য করবি আমাকে?
” তুই আমাকে ধর,আমি তোকে ধরি। এভাবেই দুজনে হেটে যাই, চল।
” আচ্ছা চল ইন্টারেস্টিং ব্যাপারটা।(হেসে)
সিনহা,ইমরান দুজন দুজনকে ধরে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে। ইমরান,সিনহাকে সোফায় বসিয়ে ঈশিতা ভাবীকে ডাক দেয়।
” কী হয়েছে দেবর, ডাকছো কেনো?
” সিনহা পায়ে ব্যাথা পেয়েছে। ওকে একটু সাহায্য করো।
” সেকি কীভাবে?
ঈশিতা ভাবী পেশায় একজন ডাক্তার। তিনি সিনহার কাছে যায়। সিনহার পা থেকে রুমাল টা সরিয়ে উনি ক্ষত টা দেখে।
” এই ব্যাথা কীভাবে পেলে সিনহা? অনেকখানি ক্ষত হয়েছে।
” সব দোষ তোমার দেবরের।
” আমার দেবর তোমার কী হয়?🤥
” আমার সাইয়া হয়।
” আচ্ছা। (হেসে) তা আমার দেবর কী করলো শুনি?
” আমি আমার এক ক্লাসমেটের সাথে রিক্সা করে আসছিলাম। বাসার সামনে আসতেই দেখি ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভাইয়াকে দেখে ভয় পেয়ে অমনি রিক্সা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে যায়। অন্য ছেলের সাথে রিক্সায় বসেছি দেখলে তো আমাকে মেরেই ফেলবে, তাই।🙂
” জানোই যখন তাহলে অন্য ছেলের সাথে রিক্সা করে আসো কেনো?
” রিক্সা পাচ্ছিলাম না,তাই।
” তোমরা দুজন পারোও বটে। দুজনেই পাগল।
” ও পাগল,আমি পাগলী।
” হাহাহা,হুম।
কথার ভিতরে ঈশিতা ভাবী সিনহার হাটুতে ব্যান্ডেজ করে দেয়।
” হায় হায় সিনহা একি হলো তোর? হাটুতে ব্যান্ডেজ কেনো লাগাইলি? আমি বউ দেখতে যাবো না?
চাচা উদ্ধিগ্ন হয়ে কথাটা বলল। ভাবী শান্তনা দিয়ে বলে,
” চাচা এদের দুজনের পা ঠিক হোক, তারপর আমরা দেখতে যাবো,আজকে আর যাওয়া হবে না।
” নায়া..এ হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি না।আমার বিয়া কি এবারও হবে না।
চাচার উচ্চ কন্ঠ শুনে জাফর মিয়া রান্নাঘর থেকে দৌড়ে আসে।
” চাচা কেডা মইচ্ছে?আন্নে এতো জোরে চিক্কুর মারছেন ক্যান?
” ওরে মীর জাফর, এরা আমার লগে ঘসেটি বেগমের মতো ষড়যন্ত্র করতেছে। আমি বুঝি এবারও বিয়া থেকে বাদ হয়ে যাইবো। দেখ কালকে একটা পা ব্যান্ডেজ কইরা নিয়া আসছে,আর আজকে আরেকটা হাটুতে ব্যান্ডেজ কইরা বইসা আছে। এরা আমার বিয়া হইতে দিবো না।
জাফর মিয়া কি বলবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। চাচা কিসব আবলতাবল বকতেছে। মনে হইতেছে চাচা বিয়া করতে না পারি হাগল হই গেছে।।
চাচার দশা দেখে জাফর মিয়ার মনে চিন্তা ভর করেছে,
” অল্প বয়সে বিয়া না কইল্লে বুঝি এইরকম দশা হই। তাইলে ত জরিনা বানুরে তাড়াতাড়ি বিয়া কইত্তে হয়।
আর এইদিকে চাচার কথায় কেউ কান না দিয়ে যে যার যার মতো রুমে চলে যায়। ভাবী,সিনহাকে রুমে দিয়ে আসে।
!!!
দুপুরের খাবার সিনহার রুমেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কষ্ট করে তাকে নিচে নামতে হয় না। সিনহা বিছানায় বসে মোবাইল টিপছে।
” রিক্সার ছেলেটা কে ছিলো? মানা করছি না, ছেলেদের সাথে ঘোরাঘুরি না করতে?
সিনহা মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে পাশে তাকায়। ইমরান সিনহার দিকে প্রশ্নটা ছুঁড়ে,উত্তরের অপেক্ষা করছে।
” মনে করেছিলাম ভুলে গেছে। না সে তো ভুলবে না। ঠিকি জিজ্ঞেস করতে,বকাবকি করতে চলে এসেছে।(মনে মনে)
” কী হলো কিছু জিজ্ঞেস করছি।(ধমক দিয়ে)
” আমার ক্লাসমেট ছিল। রিক্সা পাচ্ছিলাম না,তাই…
” তাই গলায় ঝুলে চলে আসবি.?
” গলায় কখন ঝুললাম?
” দেখ সিনহা পায়ে ব্যাথা পেয়েছিস দেখে আজকে আর কিছু বললাম না। নেক্সট টাইম দেখলে তোর খবর আছে বলে দিলাম।(ধমক দিয়ে)
” আমি অন্য কোনো ছেলের সাথে রিক্সায় গেলে তোর সমস্যা কী? আমি যেতেই পারি, স্বাভাবিক। তোর বউ না আমি, যে তোর কথা শুনতে হবে।
সিনহা না বুঝে কি বলে ফেললে তার সেদিকে খেয়াল নেই। এইদিকে সিনহার কথাগুলো শুনে ইমরান যে চরম রেগে গেছে সেটা সে ভালো করেই বুঝে গেছে।
ইমরান সাথে সাথে সিনহার গালে কষিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।
” আমার কথা অবশ্যই তোকে শুনতে হবে।নাহলে…..(রেগে)
ইমরান আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে যায়। সিনহা গালে হাত দিয়ে,
” শুনবো না আমি তোর কথা। উহু থাপ্পড় মেরে গাল লাল করে দিলো,আমার।😒
চলবে…
~ ইমতিহান ইমরান।
